৮ রাক‘আত তারাবীহ দাবীকারী রাফিউল ইয়াদাইনীদের দাবীকৃত দলিল সমুহের খন্ডন।
তাদের প্রথম দলীলঃ
বুখারী শরীফের ১ম খ- ২৬৯ নং পৃষ্ঠাতে “বাবু ফযলে মান ক্বামা রমাযান”( ﺑﺎﺏ ﻓﻀﻞ ﻣﻦ ﻗﺎﻡ ﺭﻣﻀﺎﻥ ) অধ্যায়ে আছে, হযরত আবু সালমা রা. হযরত আম্মা আয়েশা রা. কে জিজ্ঞাসা করলেন, রমযান মাসে নবীজি ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এঁর নামায কিরূপ ছিল? উত্তরে হযরত আম্মা আয়েশা রা. বলেন, নবীজি ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে এবং রমযানের বাইরে কখনও এগার রাকাতের বেশী পড়তেন না। প্রথম চার রাক‘আত এক নিয়্যতে পড়তেন এবং এত দীর্ঘ ও সুন্দর নামায পড়তেন যার বিবরণ দেয়া প্রায় অসম্ভব। তারপর একইভাবে দীর্ঘ ও সুন্দর করে চার রাক‘আত পড়তেন। তারপর কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে তিন রাক‘আত বিতির নামায পড়তেন। আম্মা আয়েশা রা. বললেন, আমি বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কি বিতির পড়ার পূর্বে ঘুমাচ্ছেন? তিনি বলেন, আয়িশা! আমার চোখ ঘুমায়। তবে আমার অন্তর জাগ্রত থাকে।
উল্লিখিত হাদীছ দ্বারা রাফিউল ইয়াদাইনীরা তারাবীর নামায ৮ রাক‘আত হওয়ার দলীল দিয়ে থাকে। অথচ এই হাদীছ দ্বারা তারাবীহর নামায আট রাক‘আত হওয়া কোনোভাবেই সাব্যস্ত হয়না।
কারণ, হযরত আবু সালমা রা. কর্তৃক হযরত আম্মা আয়েশা সিদ্দীকা রা. কে রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রমযান মাসের রাতের নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার পর হযরত আম্মা আয়েশা রা. উত্তরে বলেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম *রমযান এবং রমযান ছাড়া* অন্য কোন সময় এগারো রাক‘আত এর চেয়ে বেশী পড়তেন না। এর দ্বারা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, হযরত আবু সালমা রা. তারাবীহর নামায সম্পর্কে প্রশ্ন করেন নি বরং তাহাজ্জুদের নামায সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন।
কারণ, সবার নিকট স্পষ্ট যে, তারাবীহর নামায রমযান ছাড়া অন্য কোন মাসে পড়া যায় না।
সুতরাং উক্ত হাদীছটি তারাবীহ সম্পর্কিত নয়। তাই তা দ্বারা তারাবীহর নামায ৮ রাকআত হওয়ার উপর দলীল পেশ করা সঠিক নয়। তারাবীহ ও তাহাজ্জুদের নামায এক হওয়ার দাবী সহীহ হাদীছ বিরোধী।
উল্লিখিত হাদীছটি ইমাম বুখারী রহ. রমযান মাসে রাতে নামায পড়ার ফযীলতের অধ্যায়েও উল্লেখ করেছেন, একই রাবী থেকে তাহাজ্জুদের অধ্যায়েও রেওয়ায়ত করেছেন।
ইমাম বুখারী রহ. উভয় অধ্যায়ে একই হাদীছ রেওয়ায়ত করাতে রাফিউল ইয়াদাইনীরা দাবী করে যে, রমযান মাসে তাহাজ্জুদের নামায এবং তারাবীর নামায একই নামায। এই মর্মে তাদের দু’টি দাবী।
দাবী দু’টি হলোঃ
একটি হল, তাহাজ্জুদের নামায ও তারাবীর নামায একই নামায।
দ্বিতীয়টি হল, তারাবীর নামায ৮ রাক‘আত।
অথচ ইমাম বুখারী রহ. উভয় অধ্যায়ে হাদীছটি রেওয়ায়ত করার দ্বারা যদিও তারাবীহর ও তাহাজ্জুদের নামায বাহ্যিকভাবে একই নামায ধারণা করা যায়। কিন্তু তারাবীহর নামায ৮ রাক‘আত এটা তাঁর দাবী নয়। বরং তাঁর মতে তাহাজ্জুদ ও তারাবীহর রাকাতের সংখ্যা বিভিন্ন হতে পারে।
কারণ, ইমাম বুখারী রহ. উক্ত হাদীছের দুই হাদীছ আগে হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আব্দুল বারী রহ.এঁর বর্ণনার মাধ্যমে রেওয়ায়ত নকল করেছেন যে, হযরত উমর ইবনে খাত্তাব রা. রমযান মাসে এক রাতে মসজিদে গিয়ে মুসল্লিদের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্নভাবে নামায পড়তে দেখে। হযরত উবাই ইবনে কা’ব রা. এঁর পিছনে নামায পড়ার জন্য সবাইকে হুকুম দিয়ে তারাবীর নামায জামা‘আতের সাথে চালু করেছেন। তবে ইমাম বুখারী রহ. এঁর শর্ত অনুযায়ী না হওয়াতে তারাবীহর ২০ রাকাতের হাদীছ উল্লেখ করেননি।
ইমাম বুখারী (রঃ) এঁর নিকট হাদিস সহীহ্ হওয়ার মানদণ্ড অন্যসকল ইমাম (রঃ)-দের থেকে ভিন্নতর। এক্ষেত্রে তাঁর নিজস্ব নীতিমালা রয়েছে।
হাজার হাজার সহীহ্ হাদীছ এমন আছে যেগুলো ইমাম বুখারী রহ. এঁর শর্তমতে না হওয়ায় তিনি তা সহীহ্ বুখারী শরীফে লিখেননি।
কিন্তু অন্য মুহাদ্দিছীনে কেরাম তাঁদের হাদীছের কিতাবে তা সহীহ্ হিসেবে সংকলন করেছেন।
কিন্তু এ পর্যন্ত এমন কোন সহীহ রেওয়ায়ত পাওয়া যায়নি যার দ্বারা সাব্যস্ত হয় যে, হযরত উমর রা. উবাই ইবনে কা’ব রা. এঁর মাধ্যমে তারাবীহর নামাযের যে জামাত চালু করেছেন ঐ জামাত কোন দিন ২০ রাক‘আত থেকে কম বা ৮ রাক‘আত পড়েছেন।
বরং ইমাম বুখারী রহ. এঁর মুহতারাম উস্তাদ হযরত আবু বকর ইবনে আবী শায়বা স্বীয় কিতাব মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাতে মারফু এবং মুরসাল বিভিন্ন সহীহ্ রেওয়ায়তের মাধ্যমে তারাবীর নামায বিশ রাক‘আত সাব্যস্ত করেছেন এবং তাঁর প্রিয় শীষ্য ইমাম তিরমিযি রহ. তিরমিযি শরীফে বিশ রাক‘আত তারাবীহর ব্যাপারে দলীলসহ সলফের ও মুজতাহিদীনে কিরামের রায় নকল করেছেন।
ইমাম বুখারী রহ. সহীহ বুখারী ১ম খ- ১৫৩ পৃষ্ঠাতে তাহাজ্জুদের অধ্যায়ে হযরত মাসরূক রহ. থেকে রেওয়ায়তকৃত হযরত আম্মা আয়েশা ছিদ্দীকা রা. এঁর বর্ণনা নকল করেছেন। তিনি বলেছেন, আমি হযরত আম্মা আয়িশা রা. কে নবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লমের রাতের নামায সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলেছেন, কোন সময় বিতিরসহ সাত রাক‘আত। কোন সময় নয় রাক‘আত। আর কোন সময় এগার রাক‘আত ফজরের সুন্নত ছাড়া পড়তেন।
যারা বলে, তাহাজ্জুদের নামায আর তারাবীর নামায এক, তারা মাঝে মাঝে তারাবীর নামায চার রাক‘আত বা ছয় রাক‘আত পড়ার জন্যে বলেন নাকি? এটাতো কখনও তাদের থেকে শুনা যায় না।
তাই উভয় নামাযকে একই নামায বলা স্বয়ং বুখারী শরীফের উক্ত সহীহ হাদীছ বিরোধী মন্তব্য।
তাছাড়া বুখারী শরীফের উভয় অধ্যায়ে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিতঃ
ﺍﻝ ﻛﺎﻥ ﺻﻠﻮﺓ ﺍﻟﻨﺐ ﻯ ﺻﻠﻰ ﷲ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺛﺎﺙ ﻋﺸﺮﺓ ﺭﻛﻌﺔ – ﻳﻌﻨﻲ ﻓﻲ ﺍﻟﻠﻴﻞ
অর্থাৎ তিনি বলেছেন, রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এঁর রাতের নামায তথা তাহাজ্জুদের নামায (বিতিরসহ) তের রাক‘আত ছিল।
এ হাদীসে রাতের নামায বলতে সাব্যস্ত হয় ফজরের সুন্নত ছাড়া তের রাক‘আত।
কারণ, ফজরের দু’রাক‘আত সুন্নাতকে রাতের নামায বলা হয়না।
সহীহ্ ইবনে হিব্বান এবং মুসতাদরাকে রাতের নামায অধ্যায়ে বর্ণিত ঃ ﺍﻭﺗﺮﻭﺍ ﺑﺨﻤﺲ ﺍﻭ ﺑﺴﺒﻊ ﺍﻭ ﺑﺘﺴﻊ ﺍﻭ ﺑﺎﺣﺪﻯ ﻋﺸﺮﺓ ﺍﻭ ﺑﺎﻛﺜﺮ ﻣﻦ ﺫﺍﻟﻚ – অর্থাৎ তোমরা রাতের নামায (তাহাজ্জুদ বিতিরসহ) পাঁচ রাক‘আত পড়, সাত রাক‘আত পড়, নয় রাক‘আত পড়, এগার রাক‘আত পড় বা এর চেয়ে বেশী পড়।
[গ্রন্থ সূত্রঃ আত তানজিম ২য় খ- ১ম পৃষ্ঠাতে এবং নায়লুল আওতার ৩য় খ- ৪৩ পৃষ্ঠাতে আছে উক্ত হাদীছটি সহীহ।]
রাফিউল ইয়াদাইনীদের দাবী অনুযায়ী হযরত আম্মা আয়েশা রা. এঁর হাদীছ রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের নামায বিতিরসহ কোন সময় এগার রাক‘আত থেকে বেশি পড়তেন না। অথচ উল্লেখিত রেওয়ায়তগুলো দ্বারা পরিষ্কারভাবে সাব্যস্ত হয় যে, এগার রাক‘আত থেকে বেশী তের রাক‘আত ও আরো বেশি পড়তেন, আর এগার রাক‘আত থেকে কমও পড়তেন।
রাফিউল ইয়াদাইনীরা তারাবীহ ও তাহাজ্জুদের নামায একই নামায বলে। ৮ রাক‘আত তারাবীহ ৩ রাক‘আত বিতিরসহ ১১ রাকাতের হাদীছের উপর আমল করা আর ১৩ রাক‘আত ও তার বেশি কিংবা কম সম্পর্কিত হাদীসগুলোর উপর আমল না করা এটা তাদের মনগড়া কল্পিত মাযহাব।
কোরআন ও হাদীছের সাথে এর কোন প্রকারের মিল নাই। তারাবী ও তাহাজ্জুদ এক নয় তার কিছু প্রমাণাদি উপরে দেয়া হয়েছে।
রাফিউল ইয়াদাইনীরা তারাবীহ ও তাহাজ্জুদের নামায একই নামায বলে দাবী করে। কিন্তু উভয় নামাযের মধ্যে আসমান-জমীনের তফাৎ।
তার আরো প্রমাণাদি নিম্নে পেশ করা হলোঃ
০১. তাহাজ্জুদের বিধান রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লমের মক্কী জীবনে কোরআন দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে। তাহাজ্জুদের নামায মুসলমানদের জন্য প্রথমে ফরয ছিল। তারপর ফরযের বিধান রহিত হয়ে যায়। আর তারাবীর সম্পর্ক রমযানের সাথে, যা মাদানী জীবনের একটি সুন্নত।
০২. একবার যে হুকুমের ফরযিয়্যত (বাধ্যবাধকতা) স্পষ্ট কোরআনের আয়াত দ্বারা রহিত হয়ে যায়। তা আবার ফরয হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তাই তাহাজ্জুদ নামায আর ফরয হওয়ার আশংকা নাই।
অথচ রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযান মাসে তিনদিন বা চারদিন তারাবীর নামায জামা‘আতের সাথে আদায় করার পর ফরয হয়ে যাওয়ার আশংকায় তিনি জামাত ছেড়ে দিয়েছিলেন।
০৩. তারাবীহর সময় হল, মসজিদে এশার নামাযের পরপর জামা‘আতের সাথে। আর তাহাজ্জুদের নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। এশার পর থেকে যে কোন সময় পড়া যেতে পারে। তবে উত্তম সময় হল, রাতের দুই তৃতীয়াংশ চলে যাওয়ার পর।
৪. তারাবীহর নামায হল, জামা‘আতের সাথে মসজিদে আর তাহাজ্জুদের নামায হল, ঘরে নির্জনে ।
৫. হাদীসে তারাবীহর আলোচনা ‘কিয়ামু রমযান’ আর তাহাজ্জুদের আলোচনা ‘কিয়ামুল লাইল’ নামে এসেছে। এর দ্বারা পরিষ্কার হয়ে গেল যে, উভয়টা এক নামায নয়।
এ কারণে মুহাদ্দিছীনে কিরাম তাহাজ্জুদ ও তারাবীহকে পৃথক পৃথক অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন।
ইমাম বুখারী রহ. হযরত আম্মা আয়শা রা. কর্তৃক ৮ রাকাতের রেওয়ায়তটি সহীহ্ বুখারীতে তাহাজ্জুদ ও তারাবীহ উভয় অধ্যায়ে নকল করাতে রাফিউল ইয়াদাইনীরা দাবী করে যে, তারাবীহর নামায ও তাহাজ্জুদের নামায একই নামায।
কিন্তু ইতিপূর্বে আলোচনার দ্বারা পাঠকবৃন্দ নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন যে, তাহাজ্জুদের নামায ও তারাবীহর নামাযের মধ্যে আসমান-জমীন বরাবর পার্থক্য রয়েছে যা অকাট্য প্রমাণাদি দ্বারা সাব্যস্ত করা হয়েছে।
মোদ্দাকথা, ইমাম বুখারী রহ. হযরত আম্মা আয়শা রা. কর্তৃক ৮ রাকাতের রেওয়ায়েত যা বুখারী শরীফের তাহাজ্জুদ ও তারাবীহর অধ্যায়ে গ্রহণ করেছেন, তা দ্বারা শুধু তাহাজ্জুদ সাব্যস্ত হয়, তারাবীহ সাব্যস্ত হওয়ার কোন অবকাশ নেই।
রাফিউল ইয়াদাইনীরা তারাবীর নামায ৮ রাক‘আত সাব্যস্ত করার জন্য ইমাম বুখারী রহ. এঁর উল্লেখিত তাহাজ্জুদবিষয়ক হাদীছকে দলীল হিসেবে পেশ করে সারা বিশ্বে ফিৎনার আগুন জালাচ্ছে।
অপর দিকে বিশ রাক‘আত তারাবীর স্পষ্ট সহীহ হাদীছসমূহকে বাদ দিয়ে এবং সমস্ত মুহাদ্দিছীনে কিরাম ও মুজতাহিদীনে কিরাম, চার মাযহাবের ইমামগণের রায়কে উপেক্ষা করে এবং তাবেঈন, তাবে তাবেঈন, সাহাবায়ে কিরাম ও খোলাফায়ে রাশেদীনের ২০ রাকাতের ঐক্যবদ্ধ আমলের প্রতি কটাক্ষ করে তারা নিজেদের ভ্রান্তমতকে সারা বিশ্বের মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেয়ার হীন চেষ্টা চালাচ্ছে।
মুসলমান ভাই-বোনদেরকে এ গোমরাহ দলের প্রতারণা থেকে বেঁচে থাকতে হবে এবং তারাবীহর নামায ২০ রাক‘আত সুন্নতে মুয়াক্কাদা এর উপর বিশ্বাস রেখে আমলের উপর মজবুত থাকতে হবে।
হযরত আম্মা আয়শা রা. প্রতিবাদ করলেন না কেন?
এখানে আরও বুঝার ব্যাপার হলো, প্রকৃতপক্ষে যদি উম্মুল মু’মিনীন হযরত আম্মা আয়েশা রা. কর্তৃক ৮ রাকাতের তারাবীহর হাদীছ বর্ণিত হতো তাহলে তাঁর হুজরার পাশে তাঁর মৃত্যুকাল পর্যন্ত অর্থাৎ ৪০ বছর যাবৎ সমস্ত সাহাবায়ে কিরাম ২০ রাক‘আত তারাবীহর নামায জামা‘আতের সাথে আদায় করলেন। আর তিনি ঐ ব্যাপারে কোন প্রকারের অভিযোগ না করে নিরবতা গ্রহণ করলেন। এটা কখনও হতে পারেনা।
কারণ, অনেক সহীহ হাদীছের আলোকে জানা যায় যে, হযরত আম্মা আয়েশা রা. হকের ব্যাপারে ছিলেন স্পষ্টবাদী। হক কথার ব্যাপারে তিনি কাউকে ছাড় দিতেন না।
তারাবীহর নামায ৮ রাক‘আত হলে তারাবীহর নাম পাল্টাতে হবেঃ
তারাবীহ ‘তারবীহাতুন’ এর বহুবচন ( আরবীতে বহুবচন হয় ২ এর অধিক হলে)। এর অর্থ হল, বিশ্রাম গ্রহণ করা। যেহেতু তারাবীর নামাযের প্রত্যেক চার রাকাতের পর বিশ্রাম গ্রহণ করা হয়, আর বিশ রাক‘আতে চার তারবীহা (বিশ্রাম) হয়। এ কারণে ইহাকে বহুবচনে তারাবীহ (বিশ্রামসমূহ) বলা হয়।
কিন্তু যারা তারাবীর নামায ৮ রাক‘আত দাবী করে, তাদের দাবী নামাযের নামের সাথে, শব্দের সাথে ও আমলের সাথেও মিল নাই।
কারণ, ৮ রাকাতের মধ্যে একবার মাত্র বিশ্রাম গ্রহণ করা হয়। তাই এখানে বহুবচন শব্দে ‘তারাবীহ’ বাস্তবায়নের কোন সুযোগ নাই। এই কারণে তারাবীর নামায ৮ রাক‘আত দাবী করলে ‘তারাবীহ’ না বলে ‘তারবীহা’ বলতে হবে।
সুতরাং তাদের উক্ত দাবী হাস্যকর ও পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নয়।
1 thought on “৮ রাক‘আত তারাবীহ দাবীকারীদের খন্ডন (পর্ব ১)”