হাদীসে বর্ণিত প্রশংসা সূচক রুপক শব্দের শিয়া অপব্যাখ্যার জবাব
বিশুদ্ধ হাদীসের বর্ণনায় জানা যায়, হাযরাত মুআবিয়া রাঃ হাযরাত হাসান রাঃ এর মৃত্যুকে মুসিবাত মনে করতেন এবং তাঁর মৃত্যুতে তাঁকে ঘিরে রাসূলে কারীম ﷺ এর স্নেহময় কথার স্মৃতিচারণ করেন। মজলিসে সে সময় হাযরাত মিকদাম (রাঃ)- উপস্থিত ছিলেন। তিনি হাযরাত হাসান রাঃ এর মৃত্যু সংবাদ শ্রবণ করে মুসীবাতের সময় পঠিত দূআ’ পাঠ করেন। হাযরাত মুআবিয়া রাঃ তাঁকে সেজন্যে পুরষ্কৃত করেন। তাছাড়া “মজলিসে উপস্থিত আসাদী নামের অপর এক ব্যক্তি হাযরাত হাসান রাঃ এর মৃত্যুর সংবাদ শ্রবণ করে প্রশংসা সূচক শব্দে তাঁর প্রশংসা করেন। হাযরাত মুআবিয়া রাঃ তা শ্রবণ করে হাযরাত হাসান রাঃ এর উক্ত প্রশংসাকারীকে পুরষ্কৃত করেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে হাযরাত হাসান রাঃ এর প্রশংসায় করা প্রশংসার শব্দকে অপব্যাখ্যা করে উক্ত প্রশংসাকারীকেই শিয়ারা হাযরাত হাসান রাঃ এর নিন্দাকারী বলে অপব্যাখ্যা করার ধৃষ্টতা দেখায়। আর হাযরাত মুআবিয়া রাঃ হাযরাত হাসান রাঃ এর উক্ত প্রশংসাকারীকে পুরষ্কৃত করার কারণে শিয়ারা হাযরাত মুআবিয়া রাঃ কে ও গালিগালাজ করে। শিয়ারা নাবী কারীম ﷺ এর নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে হাযরাত হাসান রাঃ এর ভুয়া প্রেমিক সাজে। অথচ রাসূলে কারীম ﷺ সাহাবায়ে কিরাম রাঃ কে গালিগালাজ বা সমালোচনা সূচক শব্দে সম্বোধন করতে নিষেধ করেছেন। কেননা সাহাবায়ে কিরাম রাঃ এর সমালোচনা করা হারাম।
হাদীসের বর্ণনায় এসেছে,
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ بْنِ سَعِيدٍ الْحِمْصِيُّ، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ، عَنْ بَحِيرٍ، عَنْ خَالِدٍ، قَالَ: وَفَدَ الْمِقْدَامُ بْنُ مَعْدِي كَرِبَ، وَعَمْرُو بْنُ الْأَسْوَدِ، وَرَجُلٌ مِنْ بَنِي أَسَدٍ مِنْ أَهْلِ قِنَّسْرِينَ إِلَى مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ، فَقَالَ مُعَاوِيَةُ لِلْمِقْدَامِ: أَعَلِمْتَ أَنَّ الْحَسَنَ بْنَ عَلِيٍّ تُوُفِّيَ؟ فَرَجَّعَ الْمِقْدَامُ، فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ: أَتَرَاهَا مُصِيبَةً؟ قَالَ لَهُ: وَلِمَ لَا أَرَاهَا مُصِيبَةً، وَقَدْ وَضَعَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حِجْرِهِ فَقَالَ: هَذَا مِنِّي وَحُسَيْنٌ مِنْ عَلِيٍّ؟، فَقَالَ الْأَسَدِيُّ: جَمْرَةٌ أَطْفَأَهَا اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ.
“খালিদ (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আল-মিকদাম ইবনু মা’দীকারীব (রাঃ), আমর ইবনুল আসওয়াদ ও কিন্নাসিরীনবাসী বনী আসাদের এক লোক মু’আবিয়াহ ইবনু আবূ সুফিয়ান (রাঃ)-এর নিকট গেলেন। মু’আবিয়াহ (রাঃ) মিকদাম (রাঃ)-কে বললেন, তুমি কি জান, হাসান ইবনু আলী মারা গেছেন? একথা শুনে মিকদাম (রাঃ) ’ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পড়লেন।
অমুক ব্যক্তি মু’আবিয়াহ (রাঃ)-কে বললেন, তাঁর (রাঃ) মৃত্যুকে আপনি কি মুসিবাত মনে করেন? তিনি বললেন, আমি এটাকে কেন মুসিবাত মনে করবো না, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাঁকে নিজের কোলে নিয়ে বলতেনঃ হাসান আমার এবং হুসাইন আলীর। আসাদি বললেন, তিনি ছিলেন এক জ্বলন্ত কয়লা যাকে আল্লাহ নিভিয়ে দিয়েছেন।”
রেফারেন্স
সুনান আবূ দাউদ, কিতাবুল লিবাস (كتاب اللباس) হাদীস ৪১৩১।
হাদীসে বর্ণিত উক্ত جَمْرَةٌ (জ্বলন্ত কয়লা) শব্দের রুপক অর্থ হচ্ছে বীর, বাহাদুর, তেজস্বী ইত্যাদি। আরবী جَمْرَةٌ (জ্বলন্ত কয়লা) এর উর্দু সমার্থক শব্দ چنگاری (চিঙ্গারী) এর ব্যক্তি বাচক রুপক অর্থ হচ্ছে ঐ বীর, বাহাদুর ইত্যাদী। যেমন উর্দুতে কোন বুযুর্গ ব্যক্তিকে সম্বোধন করা হয়ে থাকে چنگاری (চিঙ্গারী) بابا (বাবা)। আরবী جَمْرَةٌ (জ্বলন্ত কয়লা) শব্দের দ্বারা বীর, বাহাদুর অর্থে রুপকার্থে হাযরাত হাসান রাঃ এর প্রশংসায় উক্ত ব্যক্তি শব্দটি ব্যবহার করেছেন। যার অপব্যাখ্যা করে শিয়ারা তাদের বাতীল ফির্কার রসদ সংগ্রহ করেছে।
মহান আল্লাহ পাক শিয়াদের সকল মিথ্যা অপপ্রচার ও হাদিসে পাকের শব্দগত অপব্যাখ্যা থেকে মুসলমানদের হিফাজাত করুন। আমীন।