লােকের নিকট খাদ্য প্রার্থনা

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

লােকের নিকট খাদ্য প্রার্থনা

হযরত বড় পীর সাহেবের দীর্ঘকালের সহচর শেখ আবদুল্লাহ নামক এক ব্যক্তি বর্ণনা করিয়াছেন—এক সময়ে হযরত বড় পীর দীর্ঘকাল যাবত খাদ্যাভাবে উপবাস করিতেছিলেন, অবশেষে তিনি একদা একটি বস্তী এলাকায় যাইয়া একজন লােকের নিকট কিছু খাদ্য প্রার্থনা করিলেন। লােকটি ছিলেন অত্যন্ত দয়ালু ও দাতা।

তিনি হযরত বড় পীর সাহেবকে কিছু দিতে না পারিয়া এক টুকরা কাগজ লিখিয়া তাহার হাতে দিয়া বলিলেন—আপনি ইহা লইয়া অমুক রুটি ওয়ালার দোকানে যান। তিনি সেই কাগজ খানা লইয়া উক্ত রুটি ওয়ালার নিকটে দিলে দোকানদার তাকে কিছু রুটি ও হালুয়া দিল।

তিনি রুটি ও হালুয়া লইয়া আসিয়া যে মসজিদে থাকিয়া পড়াশুনা করিতেন, সেখানে যাইয়া রুটি খাওয়ার উদ্যোগ করিয়াছেন, এমন সময় মসজিদের দেওয়ালের ফাঁকে রক্ষিত একখানা কাগজের প্রতি তাহার দৃষ্টি পড়িল। উহাতে কি লিখিত আছে তাহা জানিবার জন্য তাঁহার মনে অত্যন্ত কৌতুহলের উদ্রেক হইল। তিনি খাওয়া বন্ধ রাখিয়া কাগজখানা টানিয়া লইয়া পাঠ করিলেন।

উহাতে লিখিত আছে- যাহারা আল্লাহর রাস্তায় বাহির হয়, সুখশান্তি, আয়েশ-আরাম ও ভােগ-বিলাসের সহিত ভাহাদের কোনরূপ সম্পর্ক রাখা উচিত নহে, পানাহারকে সম্পূর্ণরূপে নিজের আয়ত্বে আনিতে না পারিলে আল্লাহর পথে সগ্রাম করিয়া সাফল্য লাভ করা সম্ভব নহে, পানাহার শুধু এইরূপ দুর্বল ঈমান লােকদের জন্যই যাহারা উহারই মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য স্বীকার ও এবাদত বন্দেগী করার সুযােগ লাভ করে।

এই সম্বন্ধে হযরত বড় পীর সাহেব নিজে বলিয়াছেন—উক্ত কাগজের লেখাটুকু পাঠ করিয়া আমার মনে এইরূপ খোদা ভীতির সঞ্চার হইল এবং আমার মনে এই রূপ অনুভূতির উদ্রেক হইল যে, আমার শরীর শিহরিয়া উঠিল।

আমার মনে পড়িয়া গেল— বাড়ী হইতে রওয়ানা হইবার সময় আমার আম্মা বলিয়া দিয়াছিলেন—বাবা । যত কঠিন বিপদেই পড় না কেন, সর্ব অবস্থায় আল্লাহর উপরে নির্ভর করিও এবং আল্লাহ ব্যতীত কোন মানুষের নিকট কিছু চাহিও না।

অতঃপর উক্ত হালুয়া ও রুটি মসজিদের বাহিরে দণ্ডায়মান জনৈক ভিক্ষুকের হাতে দিয়া আমি কূপের পাড়ে যাইয়া কিছুটা পানি পান করিয়া দুই রাকাত শোকরানা নামায পড়িয়া আমার পাঠে মনােনিবেশ করিলাম।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment