রোজা অবস্থায় আধুনিক চিকিৎসা বিষয়ক মাসায়েল (পর্ব ১)

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

“রােজা অবস্থায় ওষুধের ব্যবহার বিধিমালা” এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান ও ফিকহী মাসায়েলের পক্ষ-বিপক্ষ বিশ্লেষণ।

[কৃতজ্ঞতায়ঃ (ডা. এস এম হানিফ) যার থেকে উক্ত সম্মেলন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের কপিটি সংগ্রহ করা হয়েছে।]
[ব্যাখ্যা সংযুক্তকরণঃ
Masum Billah Sunny,
ব্লগার, সুন্নি-বিশ্বকোষ & Studying MBBS, Southern Medical College & Hospital]

➖➖➖➖➖➖➖
জুন মাসে মরক্কোতে অনুষ্টিত নবম ফিকাহ- চিকিৎসা সম্মেলন (9th Fiqh Medical Seminar, Morocco) থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এই সম্মেলনেঃ
(১) জেদ্দা ইসলামিক ফিকাহ একাডেমী,
(২) আল-আজহার ইউনিভার্সিটি,
(৩) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আলেকজান্দ্রিয়া, মিসর এবং
(৪) ইসলামিক শিক্ষা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ISESCO- The Islamic Educational, Scientific and Cultural Organization) প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞ প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

এই সম্মেলনে মূল আলােচনার বিষয় ছিল- রােজা অবস্থায় যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ প্রয়ােগে রােজা নষ্ট হবে। বিষয়ে একটা সঠিক দিক-নির্দেশনা দেওয়া। এ লক্ষ্যে ইসলামিক চিন্তাবিদরা চিকিৎসা বিজ্ঞানে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলােচনা ও গবেষণা করে
রোজা অবস্থায় ওষুধ প্রয়ােগ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পর্কে সচিন্তত তথ্য উপস্থাপন করেন, যা ২০০৪ সালে বিখ্যাত ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ হিসেবে প্রকাশিত হয়। নিবন্ধে প্রকাশিত তথ্য নিচে তুলে ধরা হলােঃ

[তথ্যের নিচে পক্ষে-বিপক্ষে উলামায়ের কেরামের ফতোয়া ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে ফিকাহের জ্ঞানকে একত্রে নিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আল্লাহ পাক ভুল-ত্রুটি ক্ষমাকারী ও আমাদের আমলগুলো কবুল করার মালিক___Masum Billah Sunny]

➖➖➖➖➖➖➖➖➖

(১) রােজা অবস্তায় চোখ, নাক ও কানের ড্রপ, স্প্রে ব্যবহার করা যাবে। নাকের ড্রপ ও স্প্রে ব্যবহার করা যাবে তবে এক্ষেত্রে শর্ত হল এটি যাতে গলার ভিতর বা পেটের ভিতর চলে না যায়। চলে গেলে রােজা ভেঙ্গে যাবে। তবে শুধু মুখের ভেতর আসলে তা না গিলে কুলি করে বাহিরে ফেলে দিলে রােজা নষ্ট হবে না।
[অনেক উলামায়ে কেরামের মতে “নাকে বা কানে তেল বা ঔষধ প্রবেশ করানো।” হলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। বিশেষ করে নাকের ড্রপ Pharynx হয়ে গলা দিয়ে পাকস্থলিতে নামার সম্ভবনা খুবই বেশি। এমন হলে রোজা অবশ্যই ভঙ্গ হয়ে যাবে। সুতরাং উত্তম হল রোজা অবস্থায় নাকে-কানে তেল বা ওষুধ ব্যবহার না করা।]

(২) চিকিৎসার প্রয়ােজনে রােজা রেখে অক্সিজেন, নেবুলাইজেশন, ইনহেলার কিংবা চেতনানাশক গ্যাস গ্রহণে রােজা নষ্ট হবে না।

[অক্সিজেন (Oxygen): রোজা অবস্থায় ঔষধ ব্যবহৃত অক্সিজেন ব্যবহার করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। তবে শুধু বাতাসের অক্সিজেন নিলে রোযা ভাঙ্গবে না। (জাদীদ ফিকহী মাসায়েল)

সমাধানঃ যদি তরল জাতীয় স্প্রে হয়, যার ফলে স্প্রে করার পর গলা অতিক্রম করে পাকস্থলীতে পৌঁছে যায় তবে রোজা ভঙ্গ হবে। তাছাড়া Oxygen তখনই দরকার পড়ে যখন একজন মানুষ নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এমতঅবস্থায় রোগীর নিকট সব অস্বস্তিবোধ হয়। এমনকি শুয়ে থাকতেও কষ্ট হয় বলে ডাক্তারগণ রোগীকে হেলান দিয়ে বসিয়ে দেন। এতে শ্বাস-প্রশ্বাসে সুবিধা হয়। রোগাক্রান্ত  অবস্থায় রোজা ভঙ্গের অনুমতি রয়েছে।
তাই কোনটা উত্তম? এই প্রশ্নের জবাবে বলতে হয় রোগে আক্রান্ত হয়ে একদিকে জীবন ঝুঁকিপূর্ণ, অন্যদিকে ওষুধ নিলে রোজা হবে কিনা সেই আশংকা থেকে সুস্থ হয়ে রোজা কাযা করাই উত্তম। কারণ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর হাদিসে যেখানে পাওয়া যায় সফররত অবস্থায়
কষ্ট হলে রোজা ভাঙ্গা যাবে সেখানে Serious কোন রোগ হলেও রোজা ভাঙা যাবে।
কারণ একদিকে যেমন রোজার মূল্য অপরিসীম তেমনি জরুরি প্রয়োজনে কিংবা জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় উপনিত হলে রোজা ভঙ্গ করে কাযা করার ক্ষেত্রে কোন মতানৈক্য নেই।]

(৩) হার্টের এনজাইনার সমস্যার জন্য হঠাৎ বুকে ব্যথা উঠলে ব্যবহৃত নাইট্রোগ্লিসারিন ট্যাবলেট বা স্প্রে জিহ্বার নিচে ব্যবহার করলে রােজা নষ্ট হবে না। তবে খেয়াল রাখতে হবে ওষুধ যেন গিলে ফেলা না হয়। গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে।

[নাইট্রোগ্লিসারিন (Nitro Glycerin): এরোসল জাতীয় ওষুধ, যা হার্টের জন্য দুই-তিন ফোটা জিহ্বার নীচে দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখে।ওষুধ শিরার মাধ্যমে রক্তের সাথে মিশে যায় এবং ওষুধের কিছু অংশ গলায় প্রবেশ করার প্রবল সম্ভবনা রয়েছে। [গলায় প্রবেশ করলে, আর গিলে ফেললে] এতে রোজা ভেঙ্গে যাবে। (জাদীদ ফিকহী মাসায়েল)

সমাধানঃ জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রোজা না রেখে কাজা করার বিধান রয়েছে। সুতরাং এমতবস্থায় রোজা ভঙ্গ করে চিকিৎসা করা উচিত, পরবর্তীতে ইহা কাযা করতে হবে।]

(৪) হার্ট বা অন্য কোনাে অঙ্গের এনজিওগ্রাম করার জন্য কোনাে রােগ নির্ণায়ক দ্রবণ শরীরে প্রবেশ করানাে হলে তাতেও রােজার কোনাে ক্ষতি হবে না।

[এনজিওগ্রাম (Angio Gram):
“হার্ট ব্লক হয়ে গেলে উরুর গোড়া দিয়ে কেটে বিশেষ রগের ভিতর দিয়ে হার্ট পর্যন্ত যে ক্যাথেটার ঢুকিয়ে পরীক্ষা করা হয় তার নাম এনজিওগ্রাম। এ যন্ত্রটিতে যদি কোন ধরনের ঔষধ লাগানো থাকে তারপরেও রোজা ভাঙ্গবে না। (ইসলাম ও আধুনিক চিকিৎসা)]

(৫) রােগ নির্ণয়ে এন্ডােস্কোপি (I), গ্যাস্ট্রোস্কোপি (II) বা সিস্টোস্কপি (III) করলেও রােজা নষ্ট হয় না। তবে এন্ডােস্কোপি বা গ্যাস্ট্রোস্কোপি করার সময় ভিতরে তরল, ওষুধ কিংবা অন্য কোনাে কিছু প্রবেশ করানাে যাবে না, এতে করে পাকস্থলিতে পৌঁছালে রোজা ভেঙে যাবে।

[“(I) এন্ডোস্কোপি (Endoscopy): চিকন একটি পাইপ যার মাথায় বাল্ব জাতীয় একটি বস্তু থাকে। পাইপটি পাকস্থলিতে ঢুকানো হয় এবং বাইরে থাকা মনিটরের মাধ্যমে রোগীর পেটের অবস্থা নির্নয় করা হয়। এ নলে যদি কোন ঔষধ ব্যবহার করা হয় বা পাইপের ভিতর দিয়ে পানি/ঔষধ ছিটানো হয়ে থাকে তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে, আর যদি কোন ঔষধ লাগানো না থাকে তাহলে রোযা ভাঙ্গবে না। (জাদীদ ফিকহী মাসায়েল)

(II) লেপারোস্কোপি (Laparoscopy):
শিক্ জাতীয় একটি যন্ত্র দ্বারা পেট ছিদ্র করে পেটের ভিতরের কোন অংশ বা গোশত ইত্যাদি পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে বের করে নিয়ে আসার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র। এতে যদি ঔষধ লাগানো থাকে তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে অন্যস্থায় রোযা ভাঙ্গবে না। (আল মাকালাতুল ফিকহীয়া)

(III) সিস্টোসকপি (Cystoscopy):
প্রসাবের রাস্তা দিয়ে ক্যাথেটার প্রবেশ করিয়ে যে পরীক্ষা করা হয় এর দ্বারা রোজা ভাঙ্গবে না। (হেদায়ার হাশিয়া)

(IV) প্রক্টোসকপি (Proctoscopy):
পাইলস, পিসার, অর্শ, হারিশ, বুটি ও ফিস্টুলা ইত্যাদি রোগের পরীক্ষাকে প্রক্টোস্কোপি বলা হয়। মলদ্বার দিয়ে নল প্রবেশ করিয়ে পরীক্ষাটি করা হয়। রোগী যাতে ব্যথা না পায় সে জন্য নলের মধ্যে গ্লিসারিন জাতীয় কোন পিচ্ছল বস্তু ব্যবহার করা হয়। নলটি পুরোপুরী ভিতরে প্রবেশ করে না। চিকিৎসকদের মতানুসারে ঐ পিচ্ছিল বস্তুটি নলের সাথে মিশে থাকে এবং নলের সাথেই বেরিয়ে আসে, ভেতরে থাকে না। আর থাকলেও তা পরবর্তীতে বেরিয়ে আসে। যদিও শরীর তা শোষণ করে না কিন্তু ঐ বস্তুটি ভিজা হওয়ায় {GIT (Gastro intestinal Tract) এ প্রবেশ করার কারণে} রোজা ভেঙ্গে যাবে। (ফতওয়া শামীর হাশিয়া)]

(৬) রােজা রাখা অবস্থায় লিভারসহ অন্য যে কোনাে অঙ্গের বায়ােপসি করা যাবে।

(৭) রােজা রাখা অবস্থায় পেরিটোনিয়াল কিংবা মেশিনে কিডনি ডায়ালাইসিস (Dialysis) করা যাবে।

(৮) শিরাপথে খাদ্য উপাদান ছাড়া কোনাে ওষুধ ত্বক, মাংসপেশি কিংবা হাড়ের জোড়ায় ইনজেকশন হিসেবে প্রয়ােগ করলে রােজার
কোনাে ক্ষতি হবে না। (I)
তবে রােজা রাখা অবস্থায় স্যালাইন বা গ্লুকোজ বা শক্তিবর্ধক কিছু জাতীয় কোনাে তরল শিরাপথে গ্রহণ করা যাবে না। এতে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। (II)

[(I) যেমনঃ ইনসুলিন। যা subcutaneous Route এ চামড়ার নিচে নেয়া হয়।
“ইনসুলিন নিলে রোজা ভাঙ্গবে না। কারণ, ইনসুলিন রোযা ভঙ্গ হওয়ার গ্রহণযোগ্য রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করে না এবং গ্রহণযোগ্য খালী জায়গায় প্রবেশ করে না।” (জাদীদ ফিকহী মাসায়েল)

পরামর্শঃ এ বিষয়ে উলামায়ে কেরামের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। উত্তম হল সাহরির সময় ইনসুলিন নিয়ে নেয়া। এতে সারাদিন আর নেয়ার প্রয়োজন পড়বে না। কারণ মূল্যবান এই রোজা ভঙ্গ হওয়ার আশংকা মনের মধ্যে সব সময় কাজ করে।
(II) সবাই একমত]

(৯) চিকিৎসার প্রয়ােজনে যা চর্ম দ্বারা শরীরে শােষিত হয় এমন সকল ঔষধ, যেমন- ক্রিম, অয়েন্টমেন্ট, ব্যান্ডেজ, মেডিকেটেড প্লাস্টার ইত্যাদি ব্যবহার করলে রােজার কোনাে সমস্যা হবে না।

[কারণ এগুলো Locally কাজ করে অর্থাৎ, শুধুমাত্র ঐ জায়গাতেই কাজ করে অথবা তেলের মত ত্বকের নিচ পর্যন্ত পৌঁছায়। আর তেল লোমকূপ দিয়ে প্রবেশ করলে অথবা গোসলের সময় পানি লোমকূপ দিয়ে ভিতরে ঢুকলেও রোজা ভঙ্গ হয় না]

(১০) রােজা রেখে জরুরি ভিত্তিতে দাঁত তােলা যাবে এবং দাঁতের ফিলিং করা যাবে এবং ড্রিল ব্যবহার করা যাবে। এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে যেন রক্ত, পানি বা মেডিসিন যাতে গিলে না ফেলা হয়। এতে রোজা ভেঙে যাবে।
[ভেঙে গেলে কাযা আদায় করতে হবে।]

(১১) পেস্ট কিংবা মাউথওয়াশ (গার্গল/প্রে) ব্যবহার করলে রােজা ভাঙবে না। খেয়াল রাখতে হবে যেন গিলে ফেলা না হয়। এতে রোজা ভেঙে যাবে। সবচেয়ে উত্তম হল এগুলাে ব্যবহার না করে মেসওয়াক ব্যবহার করা।
[তবে উলামায়ে কেরামের মতে সর্বদা মিসওয়াক ব্যবহার সুন্নত আর রোজা অবস্থায় পেষ্ট কিংবা অন্যান্য মাজন ব্যবহারে রোজা মাকরুহ হবে]

(১২) রােজা রেখে রক্ত পরীক্ষার জন্য রক্ত দিলে এবং কাউকে রক্ত দানেও কোনাে বাধা নেই। সুস্থ সবল ব্যক্তির রক্ত দান করলে রােজা ভঙ্গ হয় না। (I) কিন্তু রক্ত গ্রহণ করলে রােজা ভাঙবে। (II) রক্তদানের পর রক্তাদাতা দুর্বল অনুভব করলে রােজা ভেঙ্গে ফেলতে পারেন। এ জন্য কাফফারা দিতে হবে না, পরে শুধু একটি রােজা কাজা করলেই হবে।

[রক্ত দেয়া বা নেয়াঃ
রোজা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত বের করলে  রোজা ভাঙ্গবে না। (আহসানুল ফতওয়া)

(I) রাসূলুল্লাহ (ﷺ) রোজা রাখা অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়ে রক্ত বের করেছেন যা অসংখ্য সহিহ হাদিসে রয়েছে। এর থেকে বোঝা যায় রক্ত বের হলে রোজা ভঙ্গ হয় না।

(II) অন্যদিকে রোজা অবস্থায় কোন ব্যক্তি যদি রক্ত গ্রহণ করে তবে তার রোজা ভেঙ্গে যাবে কারণ Blood এ আমাদের যাবতীয় পুষ্টি, খাদ্য-শক্তিবর্ধক উপাদান থাকে যা Donor থেকে (Recipient) গ্রহীতার রক্তে চলে যাবে। কাউকে খাওয়ানোর জন্য মুখে খাবার দেওয়াই জরুরি নয় Intra venous route এ অথবা Nasogastric tube দিয়েও খাওয়ানো যায়। হাসপাতালে থাকা অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য এভাবেই দিনের পর দিন খাবারের চাহিদা মিটানো হয়।]

(১৪) পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যােনিপথ কিংবা পায়ুপথে চিকিৎসক বা ধাত্রী আঙ্গুল প্রবেশ করালেও রােজা নষ্ট হবে না। এছাড়া রােজা রেখে জরায়ু পরীক্ষার জন্য হিস্টোরােস্কোপি এবং আইইউসিডি প্রতিস্থাপন ও ব্যবহার করা যাবে।

[এটি একটি চিকিৎসা প্রক্রিয়া। যেমনঃ Per Rectal Examination (যাতে পায়ুপথে আঙ্গুল প্রবেশ করানো হয়) & Per Vaginal Examination (যাতে যোনিপথে আঙ্গুল প্রবেশ করানো হয়)
এই পরীক্ষার মাধ্যমে Surgery কিংবা Gynecologist ডাক্তারগণ কতিপয় রোগ সম্পর্কে ধারণা নেন অথবা শনাক্ত করেন। যা রোজা ভঙ্গের কারণের মধ্যে পরে না।]

(১৫) জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া ও সার্জারির জন্য রােজা ভঙ্গ হয়। মেজর সার্জারির জন্য রােজা না রেখে রমজান শেষে যেকোনাে সময় এটি কাজা আদায় করে নিতে হবে। এটাই উত্তম। এই জন্য তাকে কাফফারা (একটানা ৬০টি) রােজা দিতে হবে না।

[পরামর্শঃ অপারেশন এর পর এমনিতেই রক্তের একটা ঘাটতি থাকে এমতবস্থায় রোজা রাখলে শারীরিকভাবে ঐ ব্যক্তি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। এরকম Serious অবস্থায় রোজা ভঙ্গ করে কাযা করাই শ্রেয়।]

(১৬) অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে রােজা ভঙ্গ হবে না। তবে ইচ্ছা করে বমি করলে রােজা ভেঙ্গে যাবে।

(১৭) নাক (এর বাহির) দিয়ে রক্ত পড়লে রােজা নষ্ট হবে না।
[তবে নাকের ভিতর দিয়ে রক্ত যদি Nasopharynx ➡ Oropharynx হয়ে গড়িয়ে➡ খাদ্যনালী (Esophagus) দিয়ে➡ পাকস্থলীতে পৌঁছায়। তখন রোজা ভঙ্গ হবে। এমতবস্থায় কাযা করতে হবে।]

(১৮) গর্ভবতী কিংবা বাচ্চাকে দুধ খাওয়ায় এমন মা যদি রােজার কারণে তার নিজের কিংবা সন্তানের ক্ষতির আশংঙ্কা যদি করেন, দুর্বলতা বােধ করে অথবা দুধ শুকিয়ে যায় (বা বাচ্চা দুধ কম পায়), তার জন্য রােজা রাখার বাধ্যবাধকতা নেই। তবে যে রােজাগুলাে বাদ যাবে, পরবর্তীতে যখন তার জন্য সহজ হবে এবং বাচ্চার ক্ষতির আশঙ্কা থাকবে না। তখন বাদ যাওয়া রােজাগুলাে শুধু কাজা আদায় করে নিলেই হবে। এর জন্য কাফফারা দিতে হবে না।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment