রসূলে পাকের শানে বেয়াদবীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি!

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

ইতিহাস সাক্ষী আছে এ মর্মে যে, যখনই দ্বীন-ই ইসলামের শত্রুরা নবী-রসূলগণ আলায়হিমুস্ সালামকে কষ্ট দিয়েছে, তাঁদের প্রতি ঠাট্টা-মযাক্ব করেছে, মিথ্যাচার করেছে, তাঁদের মধ্যে তথাকথিত দোষত্রুটি অন্বেষণ করেছে, তাঁদের শানে অপবাদ রটিয়েছে, তাঁদের উপর যুগ্ম- নির্যাতন করেছে, তাঁদের চলার পথে ঘৃণা ও শত্রুতার কাঁটা বিছিয়েছে এবং তাঁদের শানে অসম্মান ও অবমাননাকর শব্দাবলী বা বচন ব্যবহার করেছে, তখনই আসমান- যমীনের মহান স্রষ্টা তাদেরকে তাঁর জ্বহর ও গযবে গ্রেফতার করে নিয়েছেন; কাউকে নানা বিপদাপদের চাক্কির নিচে নিষ্পেষণ করে চিরদিনের জন্য অস্তিত্বের পাতা থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন, কাউকে যমীনের গর্ভে ধ্বসে ফেলে ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য শিক্ষা ও নসীহতের উপকরণ সৃষ্টি করে দিয়েছেন, কাউকে নীল/বাহরে কুলযমের মাধ্যমে জাহান্নামে পৌছিয়ে দিয়েছেন। এসবের উদাহরণ পবিত্র ক্বোরআনে মওজুদ রয়েছে।

সূরা আনকাবূত: ২০তম পারায় দেখুন! আল্লাহ্ রব্বুল ‘আলামীন এরশাদ করেছেন, “কারূন, ফির’আউন ও হামানকে আমি ধ্বংস করেছি। আর (হযরত) মূসা তাঁদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন সমূহ নিয়ে এসেছেন। তখন তারা রাজ্যে অহংকারী হয়ে গেছে। আর তারা আমার আয়ত্ব/পাকড়াও থেকে বের হয়ে যাবার ছিলো না। তখন তাদের মধ্যকার প্রত্যেককে আমি তার গুনাহর জন্য পাকড়াও করেছি। সুতরাং আমি তাদের থেকে কাউকে যমীনের গর্ভে ধ্বসিয়ে ফেলেছি, কারো উপর পাথর বর্ষণ করেছি, কাউকে মহানাদ পেয়ে বসেছে, কাউকে পানিতে ডুবিয়ে মেরেছি, তবে আল্লাহর শান এ ছিলোনা যে, তিনি তাদের উপর যুগ্ম করেছিলো।”

১৯তম পারায় সূরা আল হাক্বক্বায় আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা’আলা এরশাদ করেছেন, সামুদ ও ‘আদ গোত্র দু’টি রোজ ক্বিয়ামতকে অস্বীকার করেছে। সুতরাং সামুদ গোত্র তো এক প্রচণ্ড মহানাদের কারণে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে, আর আদ গোত্র এক তীব্র গতিসম্পন্ন বাতাসের মাধ্যমে ধ্বংসের অতল গহবরে নিক্ষিপ্ত হয়েছে, যেই তীব্র গতি সম্পন্ন বাতাসকে আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা’আলা সাত রাত ও আট দিন যাবৎ তাদের উপর লাগাতার প্রবহমান করে রেখেছিলেন।

তাছাড়া, ক্বোরআন মজীদে আরো এমন এমন শিক্ষণীয় ঘটনা মওজুদ রয়েছে, যেগুলো পড়া ও শোনার পর গা শিয়রে ওঠে। কলেবর বৃদ্ধি এড়ানোর নিমিত্তে এখানে এ পর্যন্ত লিখে ক্ষান্ত হলাম এবং এর মাধ্যমে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট করার প্রয়াস পেলাম যে, অন্যান্য সম্মানিত নবীগণ আলায়হিমুস্ সালাম-এর শানের যখন এ অবস্থা যে, তাঁদের শানে ক্বারূন, নমরূদ, শাদ্দাদ, হামান, ফির’আউন আর আদ ও সামুদ প্রমুখের সামান্য অবমাননা ও বেয়াদবী আল্লাহ্ তা’আলার মহান দরবারে বরদান্ত করা হয়নি, তখন নবীকুল সরদার, হাবীবে কিবরিয়া, আহমদ মুজতাবা, মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শানে কোন প্রকার অবমাননা ও মানহানি কিভাবে বরদাস্ত করা হবে?

এ কারণেই আসমানসমূহ ও যমীনের মহান স্রষ্টা মুসলমানদেরকে রসূল-ই আকরামের মহান দরবারের আদব ও সম্মান প্রদর্শনের নিয়ম শিক্ষা দিয়ে এরশাদ করেছেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لا تَرْفَعُوا أَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ وَلَا تَجْهَرُوا له بالقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ أَن تَحْبَط أَعْمَالُكُمْ وَأَنتُمْ لَا تَشْعُرُونَ

তরজমা: হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের কণ্ঠস্বরকে নবীর কন্ঠস্বর শরীফের উপর বুলন্দ করো না। আর তোমরা তাঁর দরবারে এভাবে উঁচু কণ্ঠস্বর সহকারে কথোপকথন করো না, যেভাবে তোমরা পরস্পরের মধ্যে একে অপরের সাথে উঁচু আওয়াজে কথোপকথন করে থাকো, অন্যথায় তোমাদের সমস্ত আমল নিস্ফল করে দেয়া হবে, আর তোমরা অনুধাবনও করতে পারবে না।

[সূরা হুজুরাত: আয়াত-২, কানযুল ঈমান]

আল্লাহ্! আল্লাহ্! রসূলে পাকের মহান দরবারের এ কেমন আদব! কোন কবি বলেছেন-

ادب گاهیست زیر آسمان از عرش نازک تر نفس گم کرده میاید جنید و بایزید ایں جا

https://googleads.g.doubleclick.net/pagead/ads?gdpr=1&us_privacy=1—&gdpr_consent=CP62DgAP62DgAEsACBENApEoAP_gAEPgAAIYINJD7D7FbSFCwHpzaLsAMAhHRsCAQoQAAASBAmABQAKQIAQCgkAQFASgBAACAAAAICZBIQAECAAACUAAQAAAAAAEAAAAAAAIIAAAgAEAAAAIAAACAAAAEAAIAAAAEAAAmAgAAIIACAAAhAAAAAAAAAAAAAAAAgAAAAAAAAAAAAAAAAAAAQOhQD2F2K2kKFkPCmQWYAQBCijYEAhQAAAAkCBIAAgAUgQAgFIIAgAIFAAAAAAAAAQEgCQAAQABAAAIACgAAAAAAIAAAAAAAQQAAAAAIAAAAAAAAEAAAAAAAQAAAAIAABEhCAAQQAEAAAAAAAQAAAAAAAAAAABAAA&addtl_consent=2~2072.70.89.93.108.122.149.196.2253.2299.259.2357.311.313.323.2373.338.358.2415.415.449.2506.2526.486.494.495.2568.2571.2575.540.574.2624.609.2677.864.981.1029.1048.1051.1095.1097.1126.1201.1205.1211.1276.1301.1344.1365.1415.1423.1449.1451.1570.1577.1598.1651.1716.1735.1753.1765.1870.1878.1889.1958~dv.&gpp_sid=-1&client=ca-pub-6568038288665158&output=html&h=280&adk=2266649691&adf=2462332238&pi=t.aa~a.413747291~i.14~rp.4&w=752&abgtt=3&fwrn=4&fwrnh=100&lmt=1716037833&num_ads=1&rafmt=1&armr=3&sem=mc&pwprc=5403416227&ad_type=text_image&format=752×280&url=https%3A%2F%2Fwww.getstudyonline.com%2Frasulepaker-shane-beadobir-sasti-islamipost%2F%3Ffbclid%3DIwZXh0bgNhZW0CMTAAAR2RQHFXpKrJOI71TaezAzBfaUPG04HO1-3STbpgI2ni5DXLJ0bP-2WyrG4_aem_AdSwUxEMipFPpEmELYI7rUXi0msEZIZHRLD9VolTdJv5iqsvbBXbPJmRY1Xd1Si6TSxUpuz8KqNbEXb7ZDP6xJhP&host=ca-host-pub-2644536267352236&fwr=0&pra=3&rh=188&rw=752&rpe=1&resp_fmts=3&wgl=1&fa=27&uach=WyJXaW5kb3dzIiwiMTUuMC4wIiwieDg2IiwiIiwiMTI0LjAuNjM2Ny4yMDkiLG51bGwsMCxudWxsLCI2NCIsW1siQ2hyb21pdW0iLCIxMjQuMC42MzY3LjIwOSJdLFsiR29vZ2xlIENocm9tZSIsIjEyNC4wLjYzNjcuMjA5Il0sWyJOb3QtQS5CcmFuZCIsIjk5LjAuMC4wIl1dLDBd&dt=1716037831632&bpp=3&bdt=6192&idt=3&shv=r20240515&mjsv=m202405140101&ptt=9&saldr=aa&abxe=1&cookie=ID%3De1953d7fe7ffecb8%3AT%3D1709397021%3ART%3D1716037829%3AS%3DALNI_MbpK83Fnt3YnAyTp0_Tg_f3U8do6w&gpic=UID%3D00000d3ab102d224%3AT%3D1709397021%3ART%3D1709641388%3AS%3DALNI_MYC2TuPPd9GYjuJvzrbYvj1rO83TQ&eo_id_str=ID%3D77d3c751d8c56b09%3AT%3D1709397021%3ART%3D1716037829%3AS%3DAA-AfjbXHuXy7EX3XwgeCfWXPUhq&prev_fmts=1200×280%2C768x192%2C0x0%2C392x280%2C392x280%2C752x280%2C752x280%2C1903x945%2C200x355%2C1005x124&nras=7&correlator=5047406576192&frm=20&pv=1&ga_vid=1907337949.1709397018&ga_sid=1716037830&ga_hid=802830329&ga_fc=1&u_tz=60&u_his=1&u_h=1080&u_w=1920&u_ah=1032&u_aw=1920&u_cd=24&u_sd=1&dmc=8&adx=368&ady=5239&biw=1903&bih=945&scr_x=0&scr_y=1800&eid=44759876%2C44759927%2C44759837%2C31083359%2C31083698%2C44795922%2C95331696%2C95331982%2C95331712%2C95331954%2C95332416%2C31078663%2C31078665%2C31078668%2C31078670&oid=2&psts=AOrYGskvKZMvg9SVDC6YyXeNExK1TXg1boIH53p1_BbqAbuJFr7wXHcUV2vi54I0gp4D44tIMmGM1tZBLpr5MvFG7BHr1g%2CAOrYGsk4_vkzJxUTTf20s7yVFXAWehSsHtaetHSXxPcc60NSJlcb35PpMhm52ZHNaB820wqXqYhprhZ2V1e05ZeOlwW9fsRlb2MYzTFxCnilW3xHXRHSBw%2CAOrYGsmoFujmrjQ6e3-6gf9z74IcJUTga4cNDo8hiyPPCLl8CeddIdZ-Z4J9YEJQrqPTdr006AFERjC5hyx1qK2Qe1x55P-A6glylS7ki8Vdn20F-JeN6A%2CAOrYGsnyktmJacgXRtNfDZSFggf8QAtdDqzHrsuTansok7hCTApfjsANHdn9SJYKAKkjQMQEnR8KL1fkH1Oq2G53lyhRBg%2CAOrYGsn9TLoxFGkenjSx446ikM_aOJ_a1iDbfL2EEsjR2NIop5SN-i-zykBSMzVTEwRzujXqcoWFJ6ffcsXkAihK9wKqmQ&pvsid=3516520998585783&tmod=1567063378&uas=0&nvt=1&ref=https%3A%2F%2Fl.facebook.com%2F&fc=384&brdim=0%2C0%2C0%2C0%2C1920%2C0%2C1920%2C1032%2C1920%2C945&vis=1&rsz=%7C%7Cs%7C&abl=NS&fu=128&bc=31&bz=1&td=1&psd=W251bGwsbnVsbCxudWxsLDFd&nt=1&ifi=11&uci=a!b&btvi=7&fsb=1&dtd=1566

অর্থ: আসমানের নিচে আদব-সম্মানের এমন এক উচ্চ মর্যাদাশীল স্থানও আছে, যা আরশ অপেক্ষাও বেশী নাজুক (স্পর্শকাতর)। আমরা-আপনারা কোন্ কাতারের? হযরত জুনায়দ বাগদাদী ও হযরত বায়েযীদ বোস্তামী, বেলায়ত- সমুদ্রের ডুবুরী এবং কারামতের বিস্তৃত ময়দানের অশ্বারোহী, শরীয়ত ও ত্বরীক্বতের মাজমা’উল বাহরাইন (দু’সমুদ্রের মিলনস্থল)ও এ স্থানে পৌছে উচ্চস্বরে কথা বার্তা বলা তো দূরের কথা, নিজেদের নিঃশ্বাসকে পর্যন্ত রুখে রাখেন। এখানে সজোরে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করাও আদব ও সম্মানের বরখেলাফ।
আক্বা-ই নি’মাত, ইমামে আহলে সুন্নাত আ’লা হযরত রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু কেমন শানদার তরীক্বাহ্ বলে দিয়েছেন-

حرم کی زمین اور قدم رکه کے چلنا ارے سرکا موقع ہے او جان والے

অর্থ: এটা (মদীনা মুনাওয়ারার) হেরমের যমীন এবং পদযুগল রেখে রেখে চলছো। আরে! এটা কদম রাখার জায়গা নয়, বরং মাথার উপর ভর করে চললেই এটার প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো হবে- ওহে এ পবিত্র ভূখন্ডের দিকে যাত্রাকারী!

خدا جب دین لیتا هے تو عقلیں چھین لیتا هے

অর্থ: খোদা তা’আলা যখন কারো থেকে দ্বীন ছিনিয়ে নেন, তার নিকট থেকে আজ্বল (বিবেক-বুদ্ধি) নিয়ে নেন।
একারণেই তারা এমন বিপজজ্জক পথে পা বাড়ায়। নবীর শানে বেয়াদবদের বেয়াদবীর ফলে আল্লাহ্র যেসব গযব তাদের উপর আপতিত হয়েছে, সেগুলো লিপিবদ্ধ করলে এক বিরাট গ্রন্থ হয়ে যাবে। এ নিবন্ধে শুধু তিনটি ঘটনা উল্লেখ করার প্রয়াস পাচ্ছি, যেগুলো পাঠ করে হয়তো শানে রিসালতের গোস্তাখগণ হিদায়ত পেয়ে যাবে। আ- মী-ন।

রসূলে পাকের শানে বেয়াদবীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি!

॥ এক ॥

একবার হুযূর-ই আকরাম সরওয়ার-ই কা-ইনাত সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার জন্য সাফা পর্বতে আরোহণ করে মক্কাবাসীদেরকে আহ্বান জানালেন। মক্কাবাসীরা ভীত-সন্ত্রস্থ হয়ে পড়ে এবং কাল বিলম্ব না করে তাঁর চতুর্পাশে একত্রিত হয়ে গেলো। হুযূর-ই আকরাম তাদের উদ্দেশে বললেন, ‘যদি আমি বলি এ পাহাড়ের ওপাশে শত্রুদের এক বিরাট সৈন্যবাহিনী আত্মগোপন করে আছে, যারা অবিলম্বে তোমাদের উপর হামলাকারী, তবে কি তোমরা আমার কথা মেনে নেবে?’

সবাই এক বাক্যে বললো, “আপনি আল-আমীন, সাদিকু (একান্ত বিশ্বাসী ও সত্যবাদী)। আপনি কখনো মিথ্যা বলেননি। সুতরাং আমরা আমাদের চোখ দেখা ঘটনাকে অবিশ্বাস করতে পারি, কিন্তু আপনার মুখ নিঃসৃত বাণীকে কখনো অবিশ্বাস বা অস্বীকার করতে পারি না।
এরপর হুযূর-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করলেন-

إِنِّي لَكُمْ نَذِيرٌ بَيْنَ يَدَى عَذَابٍ شَدِيدٍ –

“নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে এ থেকেও কঠিন শাস্তির খবর দিচ্ছি, যা তোমাদের মাথার উপর ঘুরপাক খাচ্ছে। যদি তোমরা কল্যাণ চাও, তবে কুফর ও শির্ক থেকে তাওবা করে ইসলামের গণ্ডিতে এসে যাও। এখানে তোমাদের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ও শান্তি রয়েছে।”
নবী-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম- এর এ নূরানী তাক্বরীর শুনে আবু লাহাবের চেহারা ক্রোধে লাল হয়ে গেলো। অগ্নিশ্মর্মা হয়ে সে বললো, “তুমি ধ্বংস হও, তুমি কি এ কথা শোনানোর জন্য আমাদেরকে এখানে একত্রিত করেছো?” আবু লাহাবের কথা এখনো শেষ হয়নি, এদিকে সিদরাতুল মুস্তাহার অধিবাসী হযরত জিব্রাঈল আমীন আলায়হিস্ সালাম কুহর ও মহত্বে ভরা আয়াত সরকার-ই দু’আলম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে শুনাতে লাগলেন-

تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ الخ

তরজমা: ধ্বংস হোক আবু লাহাবের উভয় হাত এবং ধ্বংস হয়েই গেছে। (আযাব থেকে রক্ষা পাবার জন্য) না তার সম্পদ কাজে আসবে না তার উপার্জন। এখন প্রবেশ করবে লেলিহান আগুনে সে; এবং তার স্ত্রী, লাকড়ির বোঝা মাথায় বহনকারীনী, তার গলায় খেজুরের বাকলের রশি। [সূরা লাহাব]

আল্লাহ্! আল্লাহ্! আল্লাহর প্রিয় রসূল সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শানে পাকে বিন্দুমাত্র গোস্তাখী বরদান্ত করা হয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে পরওয়ারদিগার-ই আলাম জাল্লাশানুহু আবূ লাহাবের দুনিয়া ও আখিরাতের পরিণতি শুনিয়ে দিলেন। যার ফলাফল এ হলো যে, বদরের যুদ্ধের আটদিন পর ওই গোস্তাখ-ই রসূলের দেহ ফোঁড়ায় ভর্তি হয়ে যায়। সেগুলোর ব্যাথার চোটে যবেহকৃত মোরগের ন্যায় আছাড় খেতে খেতে সে জাহান্নামে পৌছে গেছে।

রসূলে পাকের শানে বেয়াদবীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি!

॥ দুই ॥

দরবার-ই রিসালতের দুঃসাহসী বেয়াদব আবুল আস নামের এক ব্যক্তি মক্কা মুকারামায় বসবাস করতো। এ নাপাক (খবীস) যখনই হুযূর পুরনূর, শাফে’ই ইয়াউমিন্ নুশূর সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে দেখতো, তখন মুখ বাঁকা করে ঠাট্টা-মযাক করতো। একদিন ওই বিকৃতের অশালীন আচরণের কারণে হুযূর-ই আকরামের নূরানী কোমল হৃদয়ে খুব কষ্ট পেলেন। হুযূর সরকার-ই দু’আলম ‘জালাল’-এ এসে বলে ফেললেন,

كن كذالك(তুমি তেমনি হয়ে যাও!)

আল্লাহু আকবার! রসূলে আকরামের মুখ মুবারক থেকে এ শব্দগুলো উচ্চারিত হবার সাথে সাথে ওই বেয়াদব আবুল আসের মুখ বাঁকা হয়ে গিয়েছিলো এবং তার মুখ আমৃত্যু বাঁকাই থেকে গেলো।

রসূলে পাকের শানে বেয়াদবীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি!

॥তিন ॥

এক খ্রিস্টান মুসলমান হয়ে রসূল-ই আকরামের দরবারে এমন নৈকট্যধন্য হয়ে গিয়েছিলো যে, ওহী লিখকের পদ- মর্যাদা লাভ করলো। কিন্তু হঠাৎ তার মাথার উপর দুর্ভাগ্যের এমন ভূত আরোহণ করে বসলো যে, সে হুযূর-ই আকরামের মানহানি করতে লাগলো। আর সে বলতে লাগলো, “মুহাম্মদ তো শুধু ততটুকু জানে, যতটুকু আমি লিখে দিই।” এভাবে এ মহান দরবার থেকে মুর্তাদ্দ হয়ে পালিয়ে গেলো। ওই মরদুদের মৃত্যুর পর যখন খ্রিস্টানগণ তাকে দাফন করলো, তখন কবর ওই নাপাক হতভাগার লাশকে গ্রহণই করলো না; বরং বাইরে নিক্ষেপ করলো।

রসূলে পাকের শানে বেয়াদবীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি!

খ্রিস্টানগণ যখন তার লাশকে কবরের বাইরে নিক্ষিপ্ত অবস্থায় দেখলো, তখন তাদের সন্দেহ হলো- সাহাবা-ই কেরাম তার লাশকে কবর থেকে বের করে নিক্ষেপ করলেন কিনা। এ কারণে খ্রিস্টানগণ পুনরায় গভীর কবর খনন করে তাকে দাফন করলো। কিন্তু আবারো তার লাশ নিজে নিজে করব থেকে বের হয়ে যমীনের উপরভাগে এসে গেলো। এর ফলে খ্রিস্টানদের নিকটও একথা স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, এটা কোন মানুষের কাজ নয়, বরং পরওয়ারদিগার-ই আলমের কুহর ও গযবই। তারা তাকে পুনরায় দাফন না করে নিজ নিজ ঘরে ফিরে গেলো। তাকে দাফন করার প্রতি কোন গুরুত্বই দিলো না।

এ ঘটনাগুলো থেকে রসূলে পাকের শানে এবং ওলীগণের শানে গোস্তাখী প্রদর্শনকারীদের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিৎ। তাদের জানা উচিৎ উভয় জাহানে তারাই সাফল্য লাভ করে, যারা বিশ্বনবীর প্রতি পুর্ণাঙ্গ ঈমান এনেছে ও তাঁকে অনুসরণ করেছে।

রসূলে পাকের শানে বেয়াদবীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি!

লেখক: মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান,

বিশিষ্ট মহাপরিচালক, আনজুমান রিসার্চ সেন্টার, চট্টগ্রাম।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment