আল্লাহর ওলিদের নিয়ে সূরা আরাফের ৩নং আয়াতে কারীমার অপব্যাখ্যার জবাব

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

আল্লাহরওলিদের নিয়ে সূরা আরাফের ৩নং আয়াতে কারীমার অপব্যাখ্যার জবাব
====================
কিছু লোক সূরা আরাফের ৩নং আয়াতে কারীমার ভুল অর্থ করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। তারা এর অর্থ করছে, “তোমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে তোমাদের কাছে যা নাযিল হয়েছে – তার অনুসরণ করো এবং তাঁকে ছাড়া কোন ওলি বা পীরের অনুসরণ করো না।”
আসলে এই আয়াতে কারীমার প্রকৃত তরজমা হবে, “তোমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে তোমাদের কাছে যা নাযিল হয়েছে – তার অনুসরণ করো এবং তাঁকে ছাড়া ওলীদের (আওলিয়ার) অনুসরণ করো না। তোমরা কমই খেয়াল করে থাকো।”
প্রথমত, তাফসীরে ইবনে আব্বাসে এ আয়াতে কারীমার তাফসীরে হুবহু যা লেখা আছে – তার বাংলা হচ্ছে, “তোমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে তোমাদের কাছে না নাযিল হয়েছে – তার অনুসরণ করো”, এর মানে হচ্ছে, কুরআনে নিদের্শিত হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম জানো। আর “তাঁকে ছাড়া ওলীদের (আওলিয়ার) অনুসরণ করো না”, এর মানে হলো, আল্লাহুতা’লা ছাড়া মূর্তিদের প্রভু হিসেবে গ্রহণ করে তাদের ইবাদত করবে না। আর “তোমরা কমই খেয়াল করে থাকো”, এর মানে হচ্ছে, তোমরা অল্প বা বেশি কোনো উপদেশই গ্রহণ করো না।” সুতরাং রইসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসের (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা ’আনহু) এ তাফসীরের মোকাবেলায় এই আয়াতে কারীমার অন্য কোনো তাফসীর আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।
দ্বিতীয়ত, ওলী বা আওলিয়া শব্দকে কোনো আয়াতে আল্লাহুতা’লা টার্গেট করলে – কেউ ভয় পাবেন না। জেনে রাখুন, ওলী (বহুবচনে আওলিয়া) শব্দটিকে আল্লাহুতা’লা আল-কুরআনে তাঁর নিজের এবং শয়তান – উভয়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন। যেমন-
যারা ঈমান এনেছে – তাদের ওলী হচ্ছেন, আল্লাহ; তিনি তাদের আঁধার রাশি থেকে নূরের দিকে বের করে আনেন; আর যারা কুফরি করেছে – তাদের আওলিয়া হচ্ছে, তাগুতরা (শয়তানরা); ওরা ওদের নূর থেকে আঁধার রাশির দিকে নিয়ে যায়। ওরাই দোযখবাসী (আসহাবুন নার) – সেখানে ওরা চিরকাল থাকবে (সূরা আল-বাকারাহ: ২৫৭)
কাজেই, “ওলী” শব্দটি আল-কুরআনে ভালো-মন্দ সবার ক্ষেত্রে কম-বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। উল্লিখিত আয়াতে কারীমায় (সূরা আরাফ:৩) মন্দের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। আবার ওলীআল্লাহদের ক্ষেত্রেও বলা হয়েছে,
আল্লাহর ওলীদের (আওলিয়াউল্লাহু) কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। (সূরা ইউনুস:৬২)
সুতরাং ওলী শব্দ নিয়ে বিভ্রান্তির কোনোই অবকাশ নেই। আল-কুরআনে এর প্রয়োগবিধি লক্ষ্য করলেই এ সংক্রান্ত সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিরসন হয়ে যায়।
তৃতীয়ত, আল্লাহুতা’লা পরিষ্কার করেই বলেছেন: যারা ঈমান এনেছো – তাদেরকে বলছি! তোমরা আল্লাহর তাবেদারী করো এবং রাসূল ও তোমাদের হুকুমদাতাদের তাবেদারী করো। তবে কোন ব্যাপারে তোমাদের মাঝে মতবিরোধ হলে – তোমরা যদি আল্লাহ্ ও আখেরাতে বিশ্বাসী হও – তাহলে তা (মতবিরোধের বিষয়টি) আল্লাহ ও রাসূলের সমীপে পেশ করো। ওটাই কল্যাণকর এবং এর ফলাফল খুবই ফলপ্রসূ। (৪:৫৯)
এ আয়াতে কারীমায় ৩টি আনুগত্য বা তাবেদারীর কথা পরিষ্কার করেই বলা আছে। কাজেই, আল-কুরআনে ওলী শব্দের নেতিবাচক প্রয়োগের উদাহরণ টেনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কোনোই সুযোগ নেই। ধন্যবাদ।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment