আমীরে_মুয়াবিয়া (রা) নাকি আলী (রা) কে গালি দিয়েছেন (৪র্থ পর্ব)

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

★★লেখক : Abu Ayub Al Quadry

আমীরে মুয়াবিয়া (রা) মাওলা আলী (রা) কে গালি দিতেন শিয়ারা তাদের এই অভিযোগের সাপেক্ষে আরো একটি দলিল পেশ করে তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো

♦♦শিয়াদের দলিল

وقال أبو زرعة الدمشقي: ثنا أحمد بن خالد الذهبي أبو سعيد ثنا محمد بن إسحاق عن عبد الله بن أبي نجيح عن أبيه قال: ” لما حج معاوية وأخذ بيد سعد بن أبي وقاص فقال يا أبا إسحاق إنا قوم قد أجفانا هذا الغزو عن الحج حتى كدنا أن ننسى بعض سننه فطف نطف بطوافك، قال: فما فرغ أدخله دار الندوة فأجلسه معه على سريره ثم ذكر علي بن أبي طالب فوقع فيه فقال: أدخلتني دارك وأجلستني على سريرك ثم وقعت في علي تشتمه؟

আব্দুল্লাহ ইবনে নাজিহ তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন তার পিতা বলেন যখন হজরত আমীরে মুয়াবিয়া হজ্জ্বে গেলেন হজরত সাদ বিন আবি ওয়াক্কাসের হাত ধরলেন এবং বললেন হে আবু ইসহাক যুদ্ধ আমাদেরকে হজ্ব থেকে আঁটকে রেখেছিলো সম্ভাবনা ছিলো আমরা তার নিয়মগুলি ভুলে যেতাম। এখন আপনি তাওয়াফ করতে থাকুন আপনাকে তাওয়াফ করতে দেখে আমরাও তাওয়াফ করবো।যখন হজ্জ্ব থেকে বেরিয়ে এলেন তখন দারুল নাদওয়াতে নিয়ে গেলেন আর আমীরে মুয়াবিয়া তার ঘরের খাটে নিজের সাথে হজরত সা’দকে বসালেন। অতঃপর হজরতে আলীর কথা উঠলে তাঁর সম্বন্ধে উল্টাপাল্টা বলতে শুরু করে দেন হজরত সা’দ বললেন আপনি নিজের ঘরে খাঠের উপর নিজের সাথে বসিয়ে মওলা আলীকে গালি বলতে শুরু করে দিলেন?

আল বিদায়াহ ওয়ান নিহাইয়াহ, খন্ড-৭ পৃষ্ঠা-৩৭৬

শিয়াদের দলিলের খন্ডন :

উক্ত বর্ণনাটি আমীরে মুয়াবিয়ার প্রতি শিয়ারা তাদের অভিযোগ প্রমাণার্থে যে দলিলগুলি দেয়, তার মধ্যে এটি অন্যতম।

এই বর্ণনার উপর কয়েকটি জবাব হতে পারে, নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো,

১) উক্ত হাদিস ও এর পূর্বের হাদিস লক্ষ করলে, দেখা যায় , এর পূর্বের বর্ণনায় ছিলো আমীরে মুয়াবিয়া হজে এলে, হজরত সা’দ নিজে আমীরে মুয়াবিয়ার নিকট সাক্ষাত করতে গিয়েছিলেন কিন্তু উক্ত বর্ণনায় আছে আমীরে মুয়াবিয়া হজরত সা’দের হাত ধরে বলছেন হে আবু ইসহাক যুদ্ধ আমাদেরকে হজ থেকে আঁটকে রেখেছিলো সম্ভাবনা ছিলো আমরা তার নিয়মগুলি ভুলে যেতাম। এখন আপনি তাওয়াফ করতে থাকুন আপনাকে তাওয়াফ করতে দেখে আমরাও তাওয়াফ করবো। এবং পরে হজ্ শেষ হলে তিনি হজরত সা’দকে নিজের সাথে নিয়ে যান অথচ পূর্বের বর্ণনায় ছিলো হজরত সা’দই দেখা করতে গিয়েছিলেন আমীরে মুয়াবিয়া তাকে নিয়ে যাননি। কিন্তু উক্ত বর্ণনায় সা’দ নিজে সাক্ষাৎ করতে যাননি বরং আমীরে মুয়াবিয়া হজরত সা’দকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাছাড়া সবচেয়ে মজার বিষয় হলো সর্বক্ষেত্রে হজরত সা’দই আমীরে মুয়াবিয়াকে গালি দিতে শোনেন আর কেউ গালি দিতে শুনেননি বা সে বিষয়ে বর্ণনা করেননি।তাহলে বলা যেতে পারে আমীরে মুয়াবিয়ার উপর অপবাদ দিতে বার বার হজরত সা’দ (রা) এর নাম ব্যবহার করা হয়েছে মাত্র।

২) উক্ত বর্ণনায় একি ঘটনায় মতনের মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দিচ্ছে তাই এতে সন্দেহ থেকে যায় ।

আর এই সন্দেহকে গাড়ো করে মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক নামক এক বিতর্কিত রাবির উপস্থিতি।তার বিতর্কিত হওয়ার প্রমাণ নিম্নে দিলাম।

محمد بن إسحاق بن يسار المطلبي المدني صاحب المغازي صدوق مشهور بالتدليس عن الضعفاء والمجهولين

মুহাম্মাদ বিন ইসহাক বিন ইয়াসার আল মাতলাবি আল মাদানি সুদুক, আর জইফ ও মাজহুল বর্ণনাকারীদের হতে তাদলিস করাতে পরিচিত ছিলেন।

ইবনে হাজার আস্কালানি, তাবকাতুল মুদাল্লিসিন, পৃষ্ঠা-৫১

أخبرنا محمد بن الحسين القطان ، قال: أنبأنا دعلج بن أحمد ، قال: أنبأنا أحمد بن علي الأبار قال: نبأنا إبراهيم بن زياد سبلان قال: نبأنا حسين بن عروة قال: سمعت مالك بن أنس يقول: محمد بن إسحاق كذاب

খবর দিয়েছেন মুহাম্মাদ বিন হুসাইন কাতান তিনি বলেন আমাকে খবর দিয়েছেন দালা’জ বিন আহমাদ, তিনি বলেন আমাকে খবর দিয়েছেন আহমাদ বিন আলি আল আবার তিনি বলেন আমাকে জানিয়েছেন ইবিরাহিম বিন জিয়াদ সাবলান তিনি বলেন আমাকে জানালেন হুসাইন বিন উরওয়াহ তিনি বলেন মালিক বিন আনাসকে বলতে শুনেছি মুহাম্মদ বিন ইসহাক কাজ্জাব ছিলো।

তারিখে বাগদাদ খন্ড-১ পৃষ্ঠা-২২৩

حَدَّثَنَا مُحَمد بْنُ جَعْفَرِ بْنِ يزيد، وَمُحمد بن أحمد بن حماد، قالا: حَدَّثَنا أَبُو كلابة عَبد الملك بن مُحَمد، حَدَّثني سليمان بن داود، قَال: قَال لِي يَحْيى بْنُ سَعِيد القطان أشهد أن مُحَمد بن إسحاق كذاب،

মুহাম্মাদ বিন জা’ফার বিন ইয়াজিদ ও মুহাম্মদ বিন আহমাদ বিন হাম্মাদ বলেন আমাদের আবু কিলাবাহ আব্দুল মালিক বিন মুহাম্মাদ বর্ণনা করেন তিনি বলেন আমাকে সুলাইমান বিন দাউদ বলেন ইয়াহিয়া বিন সাইদ আলকাতান আমাকে বলেছেন মুহাম্মাদ বিন ইসহাক কাজ্জাব ছিলো।

ইবনে আদি আল কামিল ফি জৌফাউল রিজাল

উক্ত বর্ণনায় মুহাম্মাদ বিন ইসহাক বিন আলা মাতলবি আল মাদানি মুদাল্লিস এবং কাজ্জাব রাবি,তাই তার সাক্ষ্যতে সন্দেহ তো দূরের কথা তার সাক্ষ্য বা বর্ণনা গ্রহনযোগ্যই নয়। তাই বলাবাহুল্য আমীরে মুয়াবিয়ার উপর যে অভিযোগ আনে তা তাদের অপপ্রচার বৈকি।

চলবে

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment