হিন্দুরা মনে করে তাদের ধর্মগ্রন্থে নারীদের পর্দার কথা বলা নেই। আসলে এটা তাদের ভুল ধারণা, কারন হিন্দুদের বেশিরভাগ মানুষ নিজেদের ধর্মগ্রন্থ পড়ে দেখেনা।
আপনি যদি পড়েন তাহলে দেখতে পাবেন
[[এটার উল্লেখ আছে, ঋগবেদ, অধ্যায় নাম্বার ৮ , অনুচ্ছেদের ৩৩, পরিচ্ছেদ ১৯, বলা হয়েছেঃ-
যেহেতু ব্রহ্মা তোমাদের নারী করেছেন তাই দৃষ্টিকে অবনত রাখবে, উপরে নয়। নিজেদের পা সামলে রাখো। এমন পোষাক পড়ো যাতে কেউ তোমার দেহ দেখতে না পায়।]]
এটার উল্লেখ আছে ঋগবেদ, গ্রন্থ নম্বার ১০, অনুচ্ছেদ ৮৫, পরিচ্ছেদ ৩০ বলে হয়েছেঃ-
[[সেই লোক কে কেউ পছন্দ করেনা যে তার নিজের স্ত্রীর পোশাক দিয়ে নিজের উরু ডেকে রাখে। অর্থাৎ কোন মানুষ তার বিপরীত লিঙ্গের মানুষের পোশাক পরা নিষিদ্ধ।]]
এটার উল্লেখ আছে মহাবীর চরিত্রের অধ্যায় নাম্বার ২, পৃষ্ঠা নাম্বার ৭১, বলা হয়েছেঃ-
[[রাম বলছেন, যখন পরশুরাম আসলেন তখন তার স্ত্রী শীতাকে বললেন উনি আমাদের গুরুজন তোমার দৃষ্টি নিচু করো আর পর্দা দিয়ে ডাক।]]
বিঃদ্রঃ- আমি অনেক হিন্দু ব্যক্তির কাছে শুনেছি অথবা হিন্দু লেখকদের বই পড়েছি যেখানে তারা বলেছে ইসলাম একটা জঘন্য ধর্ম (নাউজোবিল্লাহ) কারন তারা মেয়েদের পর্দায় রাখে। আমি খুব অবাক হই তারা কি নিজেদের ধর্মগ্রন্থ গুলো একটুও পড়ে দেখেনা। আর যদি নাই পড়ে তাহলে তারা কীভাবে হিন্দু ধর্মের অনুসারী হয়।
ভেবে দেখুন উপরে যেগুলো নির্দেশ দেয়া হয়েছে সে গুলোতো ইসলামেও দেয়া হয়েছে।
শরীর ঢাকার কথা অর্থাৎ ভালো পোষাক পরার কথা। পাপ কাজ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার কথা এবং নিজেদের দৃষ্টিকে অবনত রাখার কথাও বলা হয়েছে।
হিন্দু ধর্মে পর্দার বিধান:
ইতিহাস বলে- হিন্দু সভ্যতার সময় হিন্দু মহিলাগণও পর্দা করেছে। বর্তমান হিন্দু মহিলার বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ঘোমটা এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত –
ঋগে¦দে আছে, “হে নারী! তুই নীচে দৃষ্টি রাখ, ঊর্ধ্বে দৃষ্টি করিস না। আপন পদযুগল একত্রে মিলিয়া রাখ্। তোর নাক যেন কেউ দেখতে না পায়, যদি এমনি লজ্জাবতী হতে পারিস, তাহলে নারী হয়েও তুই সম্মানের পাত্রী হতে পারবি”।
“মহিলারা পুরুষদের মতো পোশাক পরিধান করবে না এবং পুরুষরাও তাদের স্ত্রীদের পোশাক পরিধান করবে না।” (ঋগে¦দ গ্রন্থ নং ১০ – অনুচ্ছেদ ৮৫ – পরিচ্ছেদ – ৩০)
হিন্দু ধর্মে নারীদের জীবন বিধান ও পর্দা যে কত কঠোর তার প্রমাণ পাওয়া যায় হিন্দুদের পবিত্র সংস্কৃত ধর্মগ্রন্থ মনুসংহিতায়-
১. “কি বালিকা, কি যুবতী, কি বৃদ্ধা কোন স্ত্রীলোকেরই নিজ গৃহেও স্বাধীনভাবে কোন কার্য করা উচিত নয়।” (স্ত্রী ধর্ম: ১৪৭)
২. “স্ত্রীলোক শৈশবে পিতার বশে, যৌবনে স্বামীর বশে এবং স্বামীর দেহান্ত হইলে পুত্রদিগের বশে থাকিবে।” (স্ত্রী ধর্ম: ১৪৭)
৩. “স্ত্রীলোকগণ পিতা, স্বামী, পুত্রগণ হইতে বিভিন্ন থাকিতে ইচ্ছা করিবে না। যেহেতু স্ত্রী লোকেরা ইহাদের নিকট হইতে পৃথক থাকিলে অকার্যানুষ্ঠান দ্বারা পিতৃকুলও শ্বশুরকুল কলঙ্কিত করিতে পারে।” (স্ত্রী ধর্ম : ১৪৯)
৪. “স্ত্রী, পতির দেহান্ত হইলে পবিত্র পুষ্প, ফল মূলাদি দ্বারা, স্বল্প আহার দ্বারা, ইচ্ছাক্রমে নিজ দেহ ক্ষীণ করিবে, পর-পুরুষের নাম পর্যন্তমনে গ্রহণ করিবে না।” (স্ত্রী ধর্ম : ১৫৭)
৫. “পতি নিদ্রিত হইলে, মনে মনে পতিকে চিন্তা করিতে করিতে তাহার পার্শ্বে নিদ্রা যাইবে। সেই সময় বিবস্ত্রা হইবে না, সতর্ক হইয়া শয়ন করিবে, অন্য কামনা-শূন্য (ঝবী) জিতেন্দ্রিয় হইয়া থাকিবে।” (স্ত্রী ধর্ম : ১৫৭)
(স্ত্রীগণ পর-পরুষের সাথে তো দূরের কথা, নিজ স্বামীর সামনেও বিবস্ত্রা হইতে পারিবে না।)
‘হিন্দু মনীষীদের উপদেশাবলী’ গ্রন্থের কয়েকটি উপদেশ নিম্নে সন্নিবেশিত হলো :
১. ওহে কুমারী সকল, তোমরা নিজেদেরকে বহু পুরুষের ভোগের বস্তুতে পরিণত করিও না।
২. তোমরা তোমাদের ঐ শরীরকে বহু পুরুষের চক্ষু-ইন্দ্রিয় হইতে সর্বদা আগলিয়া রখিবে।
৩. এমন স্থানে স্নান সমাপ্তি করিও যেখানে কোন পুরুষের দৃষ্টি নিবদ্ধ হইবে না।
পর্দা বিদ্বেষী লেখক মাহমুদ শামসুল হক তার ‘নারী কোষ’ বই এর ১৭৭-১৭৮ পৃষ্ঠায় লিখেছেন; এক সময় হিন্দু নারীরাও মশারীর ভেতরে বসে গঙ্গাস্নানে যেত। ভারত বর্ষীয় হিন্দু-মুসলিম নারী অসুখেও ডাক্তার দেখাতো ঘেরা টোপের আড়াল থেকে। প্রাচীনকাল থেকে হিন্দু সমাজে ‘অসূর্যস্পর্শ্যা’ নামক একটি শাস্ত্রীয় শব্দ চালু আছে। অর্থাৎ সূর্যালোকও নারীদের ছোঁবে না।
#সংগৃহীত
সকল ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষ সহনশীল হোক, পরমতসহিষ্ণুতা জাগ্রত হোক।