হাদিস পর্যালোচনাঃ আহলে বাইত পুতঃপবিত্র

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

আহলে বাইত পুতঃপবিত্রঃ

❏ হাদীস ১:

 عن أنس بن مالك رضي الله عنه: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يمر بباب فاطمة ستة أشهر إذا خرج إلى

 صلاة الفجر، يقول: الصلاة! يا أهل البيت: (إِنَّمَا يُرِيدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا

আনস ইবনে মালিক (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন যে, যখন মহানবী (ﷺ) ফজর (সালাম) এর নামাযের জন্য বের হতেন, তখন তিনি ফাতেমা (رضي الله عنه) এর দরজা দিয়ে অতিক্রম করার সময় বলতেন, “হে আহলে বাইত।” সালাত আদায় করুন “এবং তারপর তিনি পবিত্র কুরআন থেকে নিম্নলিখিত আয়াতটি তেলাওয়াত করতেন,

“হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পরিপূর্ণরূপে পূতঃপবিত্র রাখতে। [ সুরা আহযাব ৩৩:৩৩ ]

তথ্যসূত্রঃ

●তিরমিজি, আল জামি-উস-সহীহ (৫: ৩৫২ # ৩২০৬)

●আহমাদ বিন হাম্বল, আল-মুসনাদ (৩: ২৫৯,২৮৫)

●আহমাদ বিন হাম্বল, ফাদাইল-উস-সাহাবাহ (২: ১ ৭৬১ # ১৩৪০, ১৩৪১)

●ইবনে আবী শায়বাহ, আল-মুসান্নাফ (৬: ৩৮৮ # ৩২২৭২)

●শায়বানী, আল-আহাদ ওয়াল-মাসানী (৫: ৩৬০ # ২৯৫৩)

●আব্দ বিন হুমাইদ, আল-মুসনাদ (পৃষ্ঠা.৩৬৭ # ১২২৩)

●হাকিম, আল-মুস্তাদরাক (৩: ১৭২ # ৪৭৪৮)

●তবারানী, আল-মুজাম-উল-কাবীর (৩: ৫৬ # ২৬৭১)

●বুখারী এটি আল-কুনায় আবুল হামরা থেকে বর্ণনা করেছেন (পৃষ্ঠা.২৫ # ২০৫)। 

●আবদ বিন হুমাইদ আল-মুসনাদে বুখারী থেকে বর্ণনা করেছেন (পৃষ্ঠা.১৭৩ # ৪৭৫)।

 ❏ হাদীস ২:

 عن صفية بنت شيبة، قالت: قالت عائشة رضي الله عنها: خرج النبي صلى الله عليه وسلم غداة وعليه مرط مرحل

 من شعر أسود. فجاء الحسن بن علي فأدخله، ثم جاء الحسين فدخل معه ثم جاءت فاطمة رضي الله عنها فأدخلها، ثم

 جاء علي فأدخله، ثم قال: (إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا

অতঃপর মহানবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এই আয়াতটি আবৃত্তি করলেন,”হে নবী পরিবারের সদস্যবর্গ। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পরিপূর্ণরূপে পূতঃপবিত্র রাখতে। [ সুরা আহযাব ৩৩:৩৩ ]

তথ্যসূত্রঃ

●মুসলিম, আস-সহিহ (৪: ১৮৮৩ # ২৪২৪)

●ইবনে আবী শায়বাহ, আল-মুসান্নাফ (৬: ৩৭০ # ৩৬১০২)

●আহমাদ বিন হাম্বল, ফাদাইল-উস-সাহাবাহ (২: ২ ৬৭২ # ১১৪৯)

●ইবনে রাহওয়াহ, আল-মুসনাদ (৩: ৬৭৮ # ১২৭১)

●হাকিম, আল-মুস্তাদরাক (৩: ১৫৯ # ৪৭০৫)

●বায়হাকী, আস-সুনান-উল-কুবরা (২: ১৪৯)

●বাবারী, জামে-উল-বায়ান ফী তাফসীর আল-কুরআন (২২: ,,৭)

●বাগবী, মালিম-উত-তানজিল (৩: ৫২৯)

●ইবনে কাসির, তাফসির-কুরআন আল-আজিম (৩: ৪৮৫)

●সুয়ুতি, আদ-দুর-উল-মনসুর (৫০৫)

❏ হাদীস ৩:

মহানবী (ﷺ) হযরত আলী (عليه السلام), হযরত ফাতেমা (عليه السلام), ইমাম হাসান (عليه السلام), ইমাম হোসাইন (عليه السلام) সবাইকে একই চাদরের নিচে ঢেকে নিলেন এবং বললেন, “হে আল্লাহ!  এরা আমার আহলে বাইত সুতরাং তাদেরকে অপবিত্রতা থেকে দূরে রাখুন এবং তাদেরকে পরিপূর্ণরূপে পবিত্র করুন।”

তথ্যসূত্রঃ

●তিরমিজি, আল জামি-উস-সহীহ (৫: ৩৫১,৬৬৩ # ৩২০৫,৩৭৮৭)

●আহমাদ বিন হাম্বল, আল-মুসনাদ (:: ২৯২)

●আহমাদ বিন হাম্বল, ফাদাইল-উস-সাহাবাহ (২: ৫৭৭ # ​​৯৯৪)

●বায়হাকী এটিকে সুনান-উল-কুবরায় (২: ১৫০) 

●হাকিম, আল-মুস্তাদরাক (২: ৪৫১ # ৩৫৫৮)

●হাকিম, আল-মুস্তাদরাক (৩: ১৫৮ # ৪৭০৫)

●তবারানী, আল-মুজাম-উল-কবির (৩: ৫৪ # ২৬৬২)

●তবারানী, আল-মুজাম-উল-কবির (৯: ২৫ # ৮২৯৫)

●তাবারানী, আল-মুজাম-উল-আওসাত (৪: ১৩৪ # ৩৭৯৯)

●বায়হাকী, আল-ইতিকাদ (পৃষ্ঠা ৩৩২)

❏ হাদীস ৪:

 عن أبي سعيد الخدري رضي الله عنه في قوله: (إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ) قال: نزلت في خمسة: في رسول الله صلى الله عليه وسلم و علي و فاطمة و الحسن و الحسين رضى الله عنهم

আবু সাইদ খুদরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, হে আহলে বাইত! আল্লাহ তোমাদের থেকে (সমস্ত প্রকারের) অপবিত্রতা দূরে রাখতে চান এবং আপনাদেরকে সম্পূর্ণ পবিত্র করতে চান,’ (আল আহজাব ৩৩:৩৩) “এটি নিম্নলিখিত পাঁচ ব্যক্তির সম্মানে প্রকাশিত হয়েছিল:  রাসূলুল্লাহ (ﷺ), আলী (كرم الله وجهه), ফাতেমা (سلام الله علیھا), হাসান (عليه السلام) এবং হোসাইন (عليه السلام)।

 তথ্যসূত্রঃ

●তবারানী, আল-মুজাম-উল-আওসাত (৩: ৩৮০ # ৩৪৫৬)

●তবারানী, আল-মুজাম-উস-সাগীর (১: ২৩১ # ৩৭৫)

●ইব্বান হায়ান, তাবকাত-উল-মুহাদ্দিসি দ্বি আসভান (৩ # ৩৮৪)

●খতিব বাগদাদী, তারেখ বাগদাদ (১০: ২৭৮)

●তাবারী, জামে-উল-বায়ান ফা তাফসীর আল-কুরআন (২২:)

ইমামগণের বিবৃতিঃ

❏ পবিত্র আহলে বাইতের শানে আল্লাহ্ তাআলা পারা ২২, সূরা আহযাবের ৩৩নং আয়াতে ইরশাদ করেন:

“আল্লাহ্ তাে এটাই চান, হে নবীর পরিবারবর্গ যে, তােমাদের থেকে প্রত্যেক অপবিত্রতা দূরীভূত করে দেবেন এবং তােমাদেরকে পবিত্র করার মত পবিত্র করবেন।

❏ অধিকাংশ মুফাসরিনে কিরামের মতে এই আয়াতে মােবারকা হযরত সায়্যিদুনা আলীউল মুরতাদ্বা, হযরত সায়্যিদাতুনা ফাতেমা যাহরা (عليه السلام) , হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হাসান (عليه السلام) এবং হযরত সায়্যিদুনা ইমাম হােসাইন (عليه السلام) দের শানে নাযিল হয়েছে। ইমাম আহমদ (رحمة الله) আবু সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন; এই আয়াত পাঞ্জাতন পাকের শানে নাযিল হয়। পাঞ্জাতন দ্বারা উদ্দেশ্য হুযুর নবী করীম (ﷺ)  এবং হযরত আলী, হযরত ফাতেমা, হযরত ইমাম হাসান ও হযরত ইমা হােসাইন (عليه السلام) ।

[ইমাম নঈমুদ্দীন মুরাদাবাদী (رحمة الله) – সাওয়ানেহে কারবালা, ৭৯,৮০]

❏ অন্য এক বর্ণনায় এও রয়েছে যে, হুযুর (ﷺ) এদের সাথে নিজের অন্য শাহজাদা আর নিকটাত্মীয় এবং পবিত্র বিবিদেরও অন্তর্ভুক্ত করেন।

(আস সাওয়ায়েকে মুহরিকা আল বাবুল হাদী আশার, ফসলুল আউয়াল, ১৪৪ পৃষ্ঠা)

❏ আয়াতে মােবারকার তাফসীরে ইমাম তাবারানী (رحمة الله) বলেন: অর্থাৎ হে আলে রাসূল (ﷺ)! আল্লাহ্ তাআলা চায় যে, আপনাদের নিকট থেকে মন্দ কথা, খারাপ বিষয় সমূহ দূরে রাখবেন এবং আপনাদের গুনাহের ময়লা আবর্জনা থেকে পুতঃ পবিত্র করে দেবেন।

(তারাবানী, পারা- ২২, আহযাব, আয়াত- ৩৩, ১০ম খন্ড, ২৯৬ পৃষ্ঠা)

❏ সদরুল আফাযীল ইমাম সায়্যিদ মুফতি মুহাম্মদ নাঈম উদ্দিন মুরাদাবাদী (رحمة الله) বলেন:

এই আয়াত আহলে বাইতে কিরামদের ফযীলতের উৎস এবং জানা গেল যে, সকল মন্দ চরিত্র এবং অবস্থা থেকে এদের বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। অনেক হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে যে, আহলে বাইত জাহান্নামের জন্য হারাম (অর্থাৎ আহলে বাইতরা জান্নাতি) এবং এটাই সেই পবিত্রকরণের উপকারীতা এবং এটিই পরিণাম। আর যা তাঁদের পবিত্র অবস্থার যােগ্য নয় তা থেকে আল্লাহ্ তাআলা তাঁদের বাঁচিয়ে রাখতেন।

(ইমাম নঈমুদ্দীন মুরাদাবাদী (رحمة الله) – সাওয়ানেহে কারবালা, ৮২ পৃষ্ঠা)

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment