হাত কোথায় রাখবেন?
১। নাভীর নিচে ২। নাভীর উপরে ৩। বুকের উপর (দুর্বল)
নাভীর নীচে হাত বাধার দলিল
হাদিস-১
عن علي رضي الله عنه قال
إن من السنة في الصلاة وضعَ الكَفِّ على الكف تحت السُّرَّة
নিশ্চয় নামাজের মধ্যে সুন্নাত হল নাভির নীচে কব্জির উপর কব্জি রাখা।
আবু দাউদ-১/২০, দারকুতনী-১০৭, বায়হাকী-২/৩১, আহমাদ; ফিমাসাইল ইবনু আব্দুল্লাহ-১/১১০
হাদিস-২
عن علي رضي الله عنه قال
من سنة الصلوت وضع اليمين علي الشمال تحت السرة
নামাজের মধ্যে সুন্নাত হল নাভির নীচে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা।
মুসনাদ আহমাদ ১/১১০, দা্নকুত্নী-১/২৮৬, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী-২/৩১, মুছান্নাফ ইবনু আবি শায়বাহ-১/৩৯১
হাদিস-৩
عن وايل بن حجر عن ابيه قال رايت النبي صلي الله عليه وسلم وضع يمينه علي شماله في الصلوت تحت سرته
ওয়াইল ইবনু হুজর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; আমি দেখেছি মহানবী (স) নামাজের মধ্যে নাভীর নীচে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখলেন।
মুছান্নাফ ইবনু আবি শায়বাহ-৩৯৫৯ ১ম/২৯০পষ্টা
এই হাদিসের সকল বর্ণনাকারী ‘সিকাহ’-বিশস্ত।
১। তিরমিজী শরিফের ভাষ্যকার আবুত তায়্যিব সিন্দি (র) বলেছেন, এই হাদিস ‘সনদ’ ও মতনের দিক দিয়ে ছহীহ। তাই এ হাদিস দলিল হিসেবে অবশ্যি গ্রহণযোগ্য।
২। শায়খ আবিদ সিন্দি (র) ‘তাওয়ালিউল আনওয়ার’ নামক কিতাবে লিখেছেন যে, এই হাদিসের সকল বর্ণনাকারী ‘সিকাত’-বিশস্ত।
৩। আল্লামা জা’ফর আহমদ উসমানী (র) বলেছেন, এই হাদিসের সকল বর্ণনাকারী মুসলিম শ রীফের বর্ণনাকারী, একমাত্র মুসা বিন উমাইর নাসায়ী শরীফের বিশস্ত বর্ণনাকারীদের একজন। দেখুন- ই’লাউস সুনান ২/১৯৯
৪। কাসিম বিন কুতলুবুগা বলেছেন, এই হাদিসের সনদ অত্যন্ত মজবুত (দুর্বলতা মুক্ত)।
৫। আল্লামা কায়িম সিন্দি (র) বলেছেন, যারা এই হাদিসে ‘তাহতাস সুররাহ’ –নাভীর নিচে কথাটি অতিরিক্ত বলেন, তা অবশ্যই ইনসাফ বিরোধী। কারন, আমি নিজে ‘মুসান্নাফ ইবনু আবি শায়বাহ’ এর সহীহ নুসখাতে তা পেয়েছি। শুধু তাই নয় বেশির ভাগ নুসখাতে এটি রয়েছে বিধায় আল্লামা নিমভী স্বীকার করেছেন সবকটি ছহীহ নুসখাতে এই কথাটি বিদ্যমান। মক্কা শরীফের ইমাম শেখ মুফতি আব্দুল কাদির এর নুসখাতেও তা সংরক্ষিত রয়েছে। ই’লাউস সুনান-২/১৯৯ পষ্টা।
৬। শায়খুল হিন্দ মাহমদুল হাসান (র) প্রমান করেছেন যে আব্দুল খালিক আফগানীই প্রথম মুসান্নাফে ইবনু আবি শায়বার পাক-ভারতের নুসখাহ সমূহ থেকে নতুন সংস্করণে ‘তাহতা ছুররাতিহী’ – নাভীর নীচে কথাটি হাদিস থেকে উঠিয়ে নিয়েছেন।
হাদিস-৫
عن إنس قال من اخلاق إلنبو ت ثعجيل ألافطار و تاخير ألسحور و ضع يمينك علي شمالك في الصلوت تحت ألسرت
আনাছ (রা) থেকে বর্ণীত, নবুওয়াতী চরিত্রের বেশিষ্ট হল; তাড়াতাড়ি ইফতার করা, সেহরি দেরীতে করা ও নামাজের মধ্যে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখা নাভীর নীচে বাধা।
সুনানুল কুব্রা লিল বায়হাকী ১/৩৮৩, ইবনু হাজম ফিল মুহাল্লা-২/৩০
হাদিস-৬
عن ابي هريرة رض قال أخذ الأكف علي الأكف في الصلوت تحت السرة
আবু হুরায়রাহ (রা) নামাজের মধ্যে নাভির নীচে কব্জির উপর কব্জি রাখতে হবে।
আবু দাউদ-৭৫৮।
১। উপরোক্ত হাদিস সমূহে মারফু’ হাদিসের হুকুম প্রযোজ্য। তাদরীবুর রাওয়ী-৬২।
২। জমহুর মুহাদ্দিসগনের সুস্পষ্ট কথা হল ছাহাবাদের কথা যদি ‘মিনাস সুন্নাতি’, ‘নুহীনা আ’ন কাজা’, ‘ঊ’মিরনা বিকাজা’ ও ‘মিন আখলাকিন নবুওয়াতি’ বলে বর্ণিত হয় তা হলে সে হাদিস সমূহ ‘মারফু’ হিসেবে গন্য।
৩। যদিও নীচের দু’টি হাদিসের সনদে আব্দুর রাহমান বিন ইসহাককে ইমাম আহমদ (র)দুর্বল বলেছেন তবুও এটি অন্যান্য সাওয়াহিদ (সমর্থিত হাদিস)এর কারনে ‘হাসান’ হাদিসের অন্তর্ভুক্ত।
৪। হাফিয ইবনু হাজার আ’স্কালানী (র) বলেছেন মুসনাদে আহমদের হাদিস নির্ভরযোগ্য।
৫। আল্লামা সুয়ুতী (র) বলেছেন, মুসনাদে আহমদের সকল হাদিস গ্রহণযোগ্য।
৬। আল্লামা হাইছামী (র) বলেছেন, ‘জাওয়াইদে মুসনাদে আহমদে’র হাদিস আছাহুছ ছাহীহান- সবচেয়ে ছহীহ।
৭। আল্লামা আহমদ ইবনে আব্দুল্লাহ ঈ’জলী বলেছেন, আব্দুর রাহমান ইবনু ইসহাকের হাদিস নেয়া যাবে – জা’ইজুল হাদিস । তাই হাদিসটি ‘হাসান’ এর অন্তর্ভুক্ত।
৮। ইমাম ইবনুল কায়্যিম (র) ইবনু আবী শায়বাহ থেকে হযরত আলী (রা) এর হাদিসকে ‘ছিহাহ’ বলেছেন। দেখুন- খাজাইনুস সুনান – ৩৩৬
হাদিস-৭
عن الحجاج بن حسان قال سمعت أبا مجلذ إو سالته كيف يضع؟ قال يضع با طن كف يمينه علي ظاهر كف شماله و يجعلهما أسفل عن سرة
হাজ্জাজ বিন হাসসান থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; আমি শুনেছি অথবা জিজ্ঞেস করেছি যে, কিভাবে হাত রাখতে হবে? তিনি বললেন, ডান হাতের তালু বাম হাতের পিঠের উপর রেখে নাভীর নীচে হাত বাধবে।
এ হাদিসটির সনদ ছহিহ। এ হাদিসটির সকল বর্ণনাকারী বিশশ্ত। ইবনু আবি শায়বাহ-১/৯০,৯১,৩৯৬৩
হাদিস-৮
عن ربيع عن أبي معشر عن ابراهيم قال يضع يمينه علي شماله في الصلوت تحت السرة
ইব্রাহিম থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, নামাজের মধ্যে নাভির নীচে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখবে। ‘ইস্নাদুহু হাসান’ –হাদিসের সনদটি সুন্দর– উত্তম । আসার আসসুনান-১/৭১, আসারু মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান-২৫, ইলাউস সুনান-২/৯২
নাভীর উপরে / বুকের উপর হাত বাধার দলিল
কোন ছহিহ হাদিসে বুকে হাত বাধার কথা প্রমানিত নয়। যে হাদিস সমূহ দলিল হিসেবে উপস্থাপন করা ১) তা হয়ত বুকে হাত বাধার দলিলই নয় ২) অথবা হাদিস সমূহ অত্যন্ত দুর্বল। এ জন্য চার মাজহাবের কোন ইমাম বুকের উপর হাত বাধা সুন্নাত বলেন নাই। নিম্নে নাভীর উপরে ও বুকে হাত বাধার দলিল সমূহ পর্যালোচনা সহ পেশ করা হলঃ
দলিল –১
كان الناس يؤمرون أن يضع الرجل يده اليمنى على ذراعه اليسرى في الصلاة
নামাজের মধ্য ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখার জন্য লোকদেরকে নির্দেশ দেয়া হত। বুখারী – ২১০
লক্ষ্য করুন, এ হাদিসের কোথাও বুকে হাত বাধার কথা নেই। যদিও এ হাদিসটি বুকে হাত বাধার প্রমান হিসেবে উল্লেখ করা হয়। বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার ইবনে হাজার আস্কালানী (র) ফাতহুল বারীতে বলেছেন; বাহুর কোন জায়গায় হাত রাখতেন তা হাদিসে অস্পষ্ট। আবু দাউদ ও ওয়াইল ইবনু হুজর এবং নাসায়ী বর্ণীত হাদিস স্পষ্ট করেছে যে মহানবী (স) ডান হাত বাম হাতের পিঠ, কব্জি ও বাহুর উপর রাখতেন। একই কথা আল্লামা শাওকানী (র) ‘নাইলুল আওতার’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন।
দলিল–২
رأيت علياً رضي الله عنه يمسك شماله بيمينه على الرسغ فوق السرة
ইবনু জারীর জাবিয়ী তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন; আমি আলী (রা) কে কব্জিতে ডান হাত দিয়ে বাম হাতকে ধরে নাভীর উপর রাখতে দেখেছি। হাদিসটি মাওকুফ
আবু দাউদ-৬৪৫
১। নাভীর উপর হাত রাখার এই হাদিসটিকে অনেকে দুর্বল বলেছেন।
২। এ হাদিসে নাভির উপর হাত বাধার কথা এসেছে। বুকের উপর হাত বাধার কথা বলা হয়নি। তারপরও বুকের উপর হাত রাখার দলিল হিসেবে পেশ করা হচ্ছে!
৩। আলী (রা) থেকে ‘কাওলী হাদিস’ এসেছে এটি এর বিপরীত। তিনি নাভীর নীচে হাত বাধাকে সুন্নাত বলেছেন। হাদিস শাস্ত্র নীতিমালা অনুযায়ী ‘কাওলী হাদিস’ দলিল হিসেবে ‘ফি’লী হাদিসে’র চেয়ে শক্তিশালী। সুতরাং এ হাদিস আগ্রহনযোগ্য
৪। এই হাদিসের সনদের মধ্যে ‘ইজতিরাব’ – একাধিক সমস্যা রয়েছে।
৫। ইমাম বুখারী (র) আত-তারিখুল কাবীরে এ হাদিসকে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে সাব্যস্থ করেছেন।
৬। আল্লামা ইবনু কাসীর সুরা কাওসারের তাফসীরে বলেছেন এ হাদিসটি ছহিহ নয়।
দলিল–৩
عن وايل بن حجر قال صليت مع رسول الله فوضع يده اليمني علي اليسرى علي صدره
ওয়াইল ইবনু হুজর থেকে বর্ণিত, তিনি আমি রাসুলুল্লাহ (স) এর সাথে নামায পড়েছি। অতপর তিনি (স) তাঁর ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে বুকের উপর বাধলেন।
ইবনু খুজায়মাহ-১/৪৭৯, নাইলুল আওতার-৯২
১। এই হাদিসটি শাফী’ মাজহাবে নাভীর উপর হাত রাখার দলিল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইমাম শাওকানী (র) বলেছেন, শাফী মাজহাবের জন্যে এটা দলিল হতে পারেনা।
২। শেখ নাছির উদ্দিন আলবানি নিজে এই হাদিসের সনদকে দুর্বল বলেছেন। কারন, বর্ণনাকারীদের মাধ্যে মুয়া’ম্মাল ইবনু ইসমাইল ভূলে যাওয়ার দুষে অব্যস্থ। দেখুন- শেখ আলবানীর ‘আছলু ছিফাতু ছালাতুন নবী’ (স) ।
৩। এ হাদিসটি বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে যার মধ্যে علي صدره-‘বুকের উপর’ কথাটি্র উল্লেখ নাইঃ
· ইমাম আহমদ (র), মুয়া’ম্মাল ইবনু ইসমাইল এর সাথী বর্ণনাকারী সুফিয়ান সাউরী (র) থেকে বর্ণনা করলেও علي صدره-‘বুকের উপর’ কথাটির কোন উল্লেখ করলেও নাই।
· ইমাম নাসাঈ (র) ও আহমদ (র) জায়েদার তারীক থেকে বর্ণনা করলেও علي صدره-‘বুকের উপর’ কথাটির কোন উল্লেখ নাই।
· ইমাম আবু দাউদ (র) বিশীর ইবনুল মুফাজ্জাল এর তারীক থেকে বর্ণনা করলেও علي صدره-‘বুকের উপর’ কথাটির কোন উল্লেখ নাই।
· ইমাম ইবনু মাজাহ, ইমাম আহমদ, তায়ালাসী, ইবনু হিব্বান, মুছান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, তাব্রানী ও ইবনু খুজাইমাহ সহ সকল মুহাদ্দিসীন ইবনু ফুজাইল, আব্দল্লাহ ইবনে ইদ্রিস, আব্দুল ওয়াহিদ, জুহার ইবনে মুয়াওয়ীয়াহ ও শু’বাহ যারা মুয়া’ম্মাল ইবনু ইসমাইল এর সাথী বর্ণনাকারী তাদের কারও বর্ণনায় এর উল্লেখ আসেনি। আল্লামা ইবনুল কায়্যিম (র) বলেছেন যে, একমাত্র মুয়াম্মাল ইবনু ইসমাইল ছাড়া আর কেউ علي صدره-‘বুকের উপর’ কথাটির বর্ণনা করেননি। দেখুন- ‘ই’লামুল মুওকিয়ী’ন’, ইলাউস সুনান২/১৯৬
· আল্লামা ইবনু হাজার আস্কালানী (র) বলেছেন, সুফিয়ান সাউরী থেকে বর্ণনাটি দুর্বল। ফাতুহুল বারি ২/২৩৯
· ইমাম বুখারী (র) বলেছেন, মুয়াম্মাল ইবনু ইসমাইল এর হাদিস অগ্রহণযোগ্য, পরিত্যক্ত।
· আবু হাতিম ও আবু জুরা’ বলেছেন মুয়াম্মাল ইবনু ইসমাইল ‘কাসিরুল খাতা’-অতি ভুলকারী।
· ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ান (র) বলেছেন যে মুহাদ্দিসগনের জন্য ওয়াজিব হল তার হাদিস থেকে বিরত থাকা। কারন তিনি অনির্ভরযোগ্য হাদিস বর্ণনা করেন।
· শায়খ যাকারিয়া সাজী (স) বলেছেন, তিনি অতি ভুল্কারী, অতি সন্দেহ কারী।
· মুহাম্মদ ইবনু আল মারওয়াজী (র) বলেছেন যে, যদি মুয়াম্মাল ইবনু ইস্মাইল একা বর্ণনা করেন তাহলে অবশ্য তার কাছ থেকে বিরত থাকতে হবে। কারন তিনি স্মরণ শক্তি লুপ্ত ও অতি ভুল্কারী।
· ইবনে কানি’ (র) বলেছেন মুয়াম্মাল ভুলে যাওয়ার দুষে অভ্যস্থ।
· ইমাম আহমদ (র), ইবনে সা’দ এবং দারকুত্নী বলেছেন, মুয়াম্মাল ইবনু ইস্মাইল ‘অতি ভুলকারী’। সিলসিলতুছ ছাহিহা-২/৩৮৮
· ইমাম সুফিয়ান সাউরী (র) এ হাদিসের সনদে রয়েছেন যিনি নিজে নাভীর নীচে হাত রাখার অনুসারী ছিলেন। তিনি কখনো বুকে হাত রাখেননি। তাহজিবুল কামাল ২৯/১৭৬-১৭৮
দলিল–৪
رأيت النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ينصرف عن يمينه وعن يساره ، ورأيته – قال – يضع هذه علىصدره . وصف يحيى : اليمنى على اليسرى فوق المِفصل
কাবীছাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, আমি মহানবী (স) ( নামাজের পরে) ডানে–বামে ফিরতে দেখেছি। এবং তিনি বলেন; আমি দেখেছি, এটি তিনি বুকের উপর রাখলেন এবং ডান হাত বাম হাতের জোড়ায় বাধলেন। আহমদ – ৫/২৫৫
উক্ত হাদিসে শুধু ‘সিমাক ইবনু হারব’ একাই বুকের উপর হাত রাখার কথা উল্লেখ করেছেন যা এ হাদিসের অন্যান্য বর্ণনাকারীদের কেউ এ কথা উল্লেখ করেননি। তাই দেখুন হাদিস বিশারদ্গন ‘সিমাক ইবনু হারব সম্পর্কে কি বলেছেনঃ
· ইমাম নাসায়ী (র) ও ইমাম আলী ইবনু মাদিনী (র) বলেছেন সিমাক ইবনু হারব একা বর্ণনা করলে তা অগ্রহণযোগ্য
· ইবনু হিব্বান (র) বলেছেন ‘অতি ভুলকারী’
· ইমাম আহমদ (র) বলেছেন তার হাদিস সন্দেহযোগ্য
· ইমাম শুয়বা তাকে দুর্বল বর্ণনাকারী আখ্যায়িত করেছেন
· ইমাম মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আম্মার আল মাওছীলি (র) বলেছেন যে, উনি ভুল করেন, সবিরোধী বর্ণনা করেজ
· ইমাম আহমদ ইবনে আব্দুল্লাহ আজলী বলেন যে, সুফিয়ান সাউরী (র) তাকে দুর্বল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন
· ইমাম ইবনে খাররাস বলেছেন, তার বর্ণনায় সমস্যা রেয়েছে
· আব্দুল্লাহ ইবনুল মোবারাক (র) বলেছেন, তিনি দুর্বল বর্ণনাকারী
· জারীর ইবনু আব্দুল হামিদ তার বর্ণনাকে অগ্রহণযোগ্য বলেছেন। কারন তিনি তাকে দাড়িয়ে প্রস্রাব করতে দেখেছেন
· আল্লামা নিমভী (র) বলেছেন, ‘বুকের উপর’ কথাটি অতিরিক্ত ও অসংরক্ষিত। এ হাদিস অগ্রহণযোগ্য
· সুফিয়ান সাউরী (র) এ হাদিসের সনদে রয়েছেন যিনি নাভীর নীচে হাত বাধার পক্ষে মত দিয়েছেন। সিলসিলাতুস সাহিহা- ২/২৮৬, ই’লাউস সুনান-২/১৯৪
· আবু বকর ইবনে আবু খায়সামাহ, ইমাম ইয়াহ্ইয়া ইবনে মায়িন থেকে শুনেছেন সিমাক ইবনু হারবের দোষ হল; হাদিস সমূহের সনদে একাকি বর্ণনা করেন। অন্য কেউ এ সনদে বর্ণনা করেননা
· উকাইলী তাকে দুর্বল বর্ণনাকারী বলেযাও
· ইমাম দারুকুতনী তাকে ভুলে যাওয়ার দোষে শাব্যস্ত করেছেন
· আহমদ ইবনে আব্দল্লাহ ইজলি ও ইয়াকুব ইবনে সুফিয়ার ইক্রিমা থেকে হাদিসটি ইজতেরাব রয়েছে বলে উল্লেখ করেজ
· মুগ্লতাই ও সিমাক ইবনু একাকী বর্ণনা করলে তা গ্রহণযোগ্য নয় এবং
· ছালিহ ইবনে মুহাম্মদ আল বাগদাদী দুর্বল বলেছেন। দেখুন- তাহজীবুল কামাল ১২/ ১১৮-১২১
দলিল–৫
من مرسل طاوس قال
كان رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يضع يده اليمنى على يده اليسرى ، ثم
يشد بهما على صدره وهو في الصلاة
তাউস (র) বলেন, তিনি নামাজের মধ্যে ডান হাত বাম হাতের উপর রাখতেন এবং উভয় হাত বুকের উপর বাধতেন।আবু দাউদ-৭৫৭
১। এই হাদিসটি মুরসাল, যারা কোন মাজহাবের অনুসারী নন তাদের কাছে মুরসাল হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়।
২। আল্লামা নিমভী (র) এ হাদিসকে দুর্বল বলেছেন। সিলসিলাতুস ছহিহাহ- ২/২৯১
৩। এই মুরসাল হাদিসের বিপরীত আলী (রা) ‘নাভীর নীচে হাত বাধা’র হাদিস যা একে দুর্বল করে দিয়েছে।
৪। এই হাদিসে সুলাইমান ইবনু মুসা সম্পর্কে ইমাম বুখারী (র) বলেছেন ‘আপত্তিকর বর্ণনাকারী’।
৫। ইমাম নাসাই (র) বলেছেন বর্ণনাকারী ‘অবিশস্থ’।
৬। শেখ আল্বানী বলেছেন, মুরছাল হাদিস দলিল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। দেখুন সিলসিলাতুছ ছাহিহাহ ২/২৯১
দলিল-৬
عن إبن عباس في قول الله عزوجل فصل لربك وانحر قال: وضع اليم علي الشمال في الصلوت عند النحر
ইবনু আব্বাস (রা) থেকে আল্লাহর কালাম فصل لربك وانحر সম্পর্কে বর্ণিত; তিনি বলেন, মহানবী (স) নামাজের মধ্যে ডান হাত বাম হাতের উপর দিয়ে বুকের কাছে বাধতেন। তাফসীর কুরতুবী।
১। এ হাদিসে বুকের কাছে হাত বাধার কথা রয়েছে। বুকের উপর হাত বাধা নয়
২। হাদিস বিশারদগন বলেছেন সনদের ‘রাওহ ইবনুল মুসায়ীব’ অগ্রহণযোগ্য
৩। ইবনু হিব্বান বলেছেন ‘রাওহ ইবনুল মুসায়ীব’ বিশস্থ বর্ণনাকারীদের নামে ‘মাওজু’ (জাল) হাদিস বর্ণনা করেন। সুতরাং তার হাদিস অগ্রহণযোগ্য
৪। ইবনু আদী (র) বলেছেন তার হাদিসগুলি অসংরক্ষিত
৫। আল্লামা ইবনু তারকুমানী (র) বলেছেন এই হাদিসটির সনদে ‘ইজতিরাব’ সমস্যা রয়েছে।
ইলাউস সুনান-২/২০০
হে আল্লাহ, আমাদেরকে সরল–সঠিক পথ দেখাও! আমীন!