হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) কে “রসূলে পাক” বলা যাবে কিনা?
ছোটবেলা থেকে আমরা নবীজি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নাম নেয়ার সময় “রসূলে পাক” সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে থাকি।এর জন্য কখনো কোরআন, হাদিসের দলিলের প্রয়োজন মনে করিনি।কিন্তু সম্প্রতি একটি মাহফিলে এক ভাই না’তে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পড়ার সময় “রসূলে পাক” শব্দটা ব্যবহার করলে সেখানে গন্ডগোল সৃষ্টি হয়।একজনকে বলতে শুনলাম “রসূল কি পাক” নাউজুবিল্লাহ…দাঁড়ি, টুপি
,পাঞ্জাবি পড়া একজনকে মাইকে এসে বলতে শুনলাম এটা শুরুর সময় আমরা নিষেধ করতে চেয়েছিলাম, তিনি বাধা সৃষ্টি করা ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানান এবং “রসূল পাক” শব্দটা মাহফিলে ব্যবহার করার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান…
চলুন দেখি সৃষ্টজগৎতের শ্রেষ্ঠ নবী ও রসূল, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে “রসূলে পাক” বলা যাবে কিনা?
পাক মানে পবিত্র।”রসূলে পাক” মানে রসূল পবিত্র।এখন যারা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে “পাক” মনে না করেন তারা কি “নাপাক” মনে করেন? (নাউজুবিল্লাহ) কারণ যাই পাক নয় তাই নাপাক।এখন কেউ যদি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে “নাপাক” (নাউজুবিল্লাহ) বলে তার ইমান থাকবে কিনা তার জবাব মুফতিগণ দিবেন।
এখন আমরা দুইটা বিষয়ের উপর নজর দিব
১. রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পাক মানতে হবে কিনা?
২. রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে “পাক” বললে শিরক হবে কিনা?
আমার ছোট দৃষ্টিকোন থেকে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পাক বলাও আল্লাহর একটা শান বর্ণনা করা।কারণ আল্লাহ পাক নবী রসূলদের পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করার জন্য।মানুষকে অসৎ পথ থেকে সৎ পথে আনার জন্য,অপবিত্রতা বর্জন করে পবিত্রতা অর্জনের পথ দেখানোর জন্য।প্রতিনিধি যদি পবিত্র না হয় তাহলে তিনি পবিত্র পথে আহবান করবেন কি করে?আমাদের নবী তো সেই নবী, যিনি মিষ্টি খাওয়া না কমিয়ে বালককে মিষ্টি খেতে নিষেধ করেননি।তাছাড়া আল্লাহ পাক আমার নবীকে হাবিবুল্লাহ বলেছেন,আর আল্লাহর হাবিবুল্লাহকে নাপাক বললে(যেহেতু যাই পাক নয় তাই নাপাক) ঈমান থাকবে কিনা তার জন্য আবারও মুফতিগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আসুন এবার অন্যদিকে দেখি।অনেকে বলে যেহেতু আল্লাহর শানে আমরা “আল্লাহ পাক” শব্দটা ব্যবহার করি তাহলে সে পাক শব্দ নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শানে ব্যবহার করে “রসূল পাক” বললে শিরক হবে কিনা?
দেখুন!রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শানে প্রশ্ন তোলা আবু জাহেলে চরিত্রের একটি।আল্লাহ হচ্ছেন সৃষ্টিকর্তা আর বাকি সব হচ্ছে সৃষ্টি।
“পাক ” শব্দটা সৃষ্টিকর্তার শানে বসলে এর অর্থ হবে আল্লাহ সব রকম সৃষ্টিজৎতে বা সৃষ্টির যত চিন্তাভাবনা সব গুলো থেকে পাক। আর যখন এ পাক শব্দটা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শানে ব্যবহার হবে তখন এর অর্থ হবে আল্লাহর রসূল সকল অপবিত্র থেকে পাক।কারণ তিঁনি সৃষ্টিজগৎতে স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি, তিনি হাবিবুল্লাহ।আর “আল্লাহপাক” বলার কারণে যারা বলে রসূলে পাক বলা যাবে না তারাও বলে আমার কাপড় পাক আছে, আমার শরীর পাক আছে!আপনার কাপড়ের সাথে পাক লাগান আপত্তি নাই,আপনার শরীরের সাথে পাক লাগান সমস্যা নাই নবীজির সাথে পাক লাগালেই সমস্যা?
মহান আল্লাহ কোরআনে পাকের, সূরা সাফ এর ৮ নং আয়াতের বলেন ” তারা চায় আল্লাহর নূরকে মুখের ফুৎকার দিয়ে নিভিয়ে দিতে,আর আল্লাহ তাঁর নূরকে পরিপূর্ণ করবেনই,যদিও অপছন্দ করে কাফিরগণ”
আল্লাহ সবাই কে বুঝার তৌফিক দান করুক, আমিন।।
লেখক-মুহাম্মদ শওকত হোসেন চৌধুরী রিপন
চন্দনাইশ,চট্টগ্রাম।