মহান আল্লাহর প্রিয় রাসুুল মহানবী হুজুর মুহাম্মাদ মুস্তাফা (صلى الله عليه و آله و سلم) নিজ মাযার শরীফ থেকে মুবাবারক হাত বের করে দিয়েছিলেন ▆ [উপস্থিত নব্বই হাজার যায়ীর যিয়ারাত লাভ করেন।
♥ হযরত ইমাম আহমাদ কবীর রেফায়ী রহঃ [মৃত্যু ৫৭৮ হিজরী] সম্পর্কে –
ইমাম যাহাবী রহঃ [মৃত্যু ৭৪৮ হিজরী] সীয়ারু আলামিন নুবালা ২১/৭৭ পৃষ্ঠায় বলেন, তিনি ইমামুল কুদওয়াহ, যাহেদ, আলআবেদ, শাইখুল আরেফীন ছিলেন।
ইমাম আহমাদ কবীর রেফায়ী রহঃ ও তাঁরই নানাজান প্রিয় নবী করীম রাসুলুল্লাহ্ (صلى الله عليه و آله و سلم) এঁর যে ঘটনাটির উপর অভিযোগ উত্থাপন করা হয়, সেটি দেখে নিনঃ
“সাইয়্যেদ আহমাদ রেফায়ী রহঃ প্রসিদ্ধ বুযুর্গ ও সুফী ছিলেন। তার কাহিনী প্রসিদ্ধ। তিনি যখন ৫৫৫ হিজরীতে হজ্ব থেকে ফারিগ হয়ে যিয়ারতের জন্য হাজির হলেন। পবিত্র কবরের সামনে দাড়ালেন। তখন এ কবিতা পাঠ করলেনঃ কবিতার অর্থঃ দূরে থাকা অবস্থায় আমি আমার রূহকে আপনার খিদমাতে পাঠাতাম। সে আমার প্রতিনিধি হয়ে আস্তানা মুবারক চুম্বন করতো। এখন সশরীরে হাজির হবার পালা এসেছে, আপন হাত মুবারক দিন, যেন আমার ঠোঁট তা চুম্বন করতে পারে।
এ কবিতার পর কবর থেকে হাত মুবারক বের হল, এবং তিনি তা চুম্বন করলেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ আলহাবী লিল ফাতাওয়া : সুয়ূতী]
ব্যাখ্যাঃ
উক্ত ঘটনাটি সংঘঠনের পরে যুগে যুগে মুহাদ্দিসিনে কিরাম আলোচনা করেছেন।
উক্ত সালাফের কিতাবের বরাতে সুত্র পরম্পরায় পরবর্তীরা উদ্ধৃত করেছেন। সালাফের কিতাবে উক্ত ঘটনাটি বিশুদ্ধ সনদে তা বিধৃত হয়েছে।
প্রথম সনদ!
ইমাম আব্দুল করীম বিন মুহাম্মদ রেফায়ী রহঃ [মৃত্যু ৬২৩ হিজরী] বলেন,
اخبرني شيخنا الامام الحجة القدوة ابو الفرج عمر الفاروثي الواسطي قال حج سيدناوشيخنا السيد احمد الرفاعي عام خمس وخمسين وخمسمائة فلما وصل المدينة…….
ইমাম রেফায়ী রহঃ। তিনি শুনেছেন, ইমাম আবুল ফরজ উমার ফারূছী থেকে। তিনি ইমাম কাবীর রেফায়ী রহঃ থেকে।
[গ্রন্থ সূত্রঃ সাওয়াদুল আইনাঈন-১০-১১]
সনদের রাবীদের হালাত!
১/ ইমাম আব্দুল করীম বিন মুহাম্মদ রেফায়ী রহঃ। [মৃত্যু ৬২৩ হিজরী]
A) ইমাম যাহাবী রহঃ তার ব্যাপারে বলেন,
شَيْخُ الشَّافِعِيَّةِ، عَالِمُ العَجمِ وَالعَربِ، إِمَامُ الدِّينِ
তিনি শাফী মাযহাবের শায়েখ, আরব আজমের শায়েখ এবং দ্বীনের ইমাম।
B) ইমাম তাজুদ্দীন সুবকী রহঃ [মৃত্যু ৬৪৩ হিজরী] বলেন,
أظنُ أنّي لم أرَ في بلاد العَجَم مثله
আমি তার মত ব্যক্তি আজমের শহরের কোথাও দেখিনি বলে মনে হয়।
C) ইমাম নববী রহঃ [মৃত্যু ৬৭৬ হিজরী] বলেন,
الرَّافعيّ من الصالحين المُتَمكّنين، كانت لَهُ كراماتٌ كثيرة ظاهرة.
ইমাম রেফায়ী রহঃ নেক বান্দা, তার অনেক জাহেরী কারামত রয়েছে।
D) ইমাম ইবনুস সাফফার রহঃ [মৃত্যু ৬৪৮ হিজরী] বলেন,
هُوَ شيخُنا، أمامُ الدِّين وناصر السُّنَّة صِدقًا.
তিনি আমাদের শায়েখ, দ্বীনের ইমাম এবং সুন্নাতের সত্যিকার সাহায্যকারী [যিন্দাকারী] ছিলেন।
Reference :
★ ইমাম যাহাবীঃ সীয়ারু আলামিন নুবালা-২২/২৫২।
★ ইমাম যাহাবীঃ তারীখুল ইসলাম-১৩/৭৪২।
২/ ইমাম ইজ্জুদ্দীন আবুল ফরজ উমর আলফারূছী রহঃ। [মৃত্যু ৫৮৫ হিজরী]
A) ইমাম রেফায়ী রহঃ [মৃত্যু ৬২৩ হিজরী] তার ব্যাপারে বলেন,
الامام الحجة القدوة
ইমাম হুজ্জাত ও কুদওয়াহ।
[গ্রন্থ সূত্রঃ সাওয়াদুল আইনাঈন-১০]
B) আরেক স্থানে বলেন,
شيخنا امام الفقهاء وسيد العلماء ابو الفرج عمر الفاروثي
আরেক স্থানে বলেন, আমাদের শায়েখ, ইমামুল ফুক্বাহা, সাইয়্যিদুল উলামা আবুল ফরজ উমর আলফারূছী রহঃ।
[গ্রন্থ সূত্রঃ সাওয়াদুল আইনাঈন-৮]
C) ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহঃ [মৃত্যু ৬৭৬ হিজরী] বলেন,
إمام الفقهاء والمحدثين وشيخ أكابر الفقهاء والعلماء العاملين الشيخ عز الدين عمر أبي الفرج الفاروثي الواسطي
ইমাম আহমাদ বিন ইবরাহীম আলফারূছী রহঃ [মৃত্যু ৬৯৪ হিজরী] বলেন,
الامام الفقيه أبي الفرج عمر الفاروثي
ইমাম, ফক্বীহ আবুল ফরজ উমর আলফারূছী রহঃ।
[গ্রন্থ সূত্রঃ ইরশাদুল মুসলিমীন-৮৮]
D) ইমাম তাক্বীউদ্দীন আব্দুর রহমান আলআনসারী রহঃ [মৃত্যু ৭৪৪ হিজরী] বলেন,
العارف الكبير ولي الله العلامة السند الثبت الفقيه المقري المحدث أبي الفرج عمر الفاروثي
আলআরেফুল কাবীর, ওয়ালীআল্লাহ, আলমুসনাদ, সাবেত, ফক্বীহ, মুকরী, আলমুহাদ্দিস, আবুল ফরজ উমর ফারূছী রহঃ।
[গ্রন্থ সূত্রঃ তরয়াকুল মুহিব্বীন-১/৮]
সুতরাং বুঝা গেল, তিনিও সিকা ও মজবুত ব্যক্তি।
৩/ ইমাম শায়েখ কাবীর আহমাদ রেফায়ী রহঃ [মৃত্যু ৫৭৮ হিজরী] তার ব্যাপারে-
A) ইমাম যাহাবী রহঃ [মৃত্যু ৭৪৮ হিজরী] বলেন,
الإِمَامُ، القُدْوَةُ، العَابِدُ، الزَّاهِدُ، شَيْخُ العَارِفِيْن
ইমাম, কুদওয়াহ, আবেদ, যাহেদ, শাইখুল আরেফীন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ সিয়ারু আলামিন নুবালা-২১/৭৭]
B) ইমাম তাযুদ্দীন সুবকী রহঃ [মৃত্যু ৭৭১ হিজরী] বলেন,
أحد أَوْلِيَاء الله العارفين والسادات المشمرين أهل الكرامات الباهرة أَبُو الْعَبَّاس بن أبي الْحسن بن الرِّفَاعِي المغربي
আল্লাহর ওলী, যাহেরী কারামতওয়ালা, আরেফীন ও সাদাতের অন্তর্ভূক্ত।
[গ্রন্থ সূত্রঃ তাবক্বাতুস শাফেয়িয়্যাহ লিসসুবকী-৬/২৩]
C) ইমাম ইবনে খাল্লিকান রহঃ [মৃত্যু ৬৮১ হিজরী] এবং ইমাম খালীল বিন আইবেক সাফাদী রহঃ [মৃত্যু ৬৮১ হিজরী এ দুই ইমাম বলেন,
كَانَ رجلا صَالحا شافعيا فَقِيها
তিনি নেক বান্দা শাফেয়ী ফক্বীহ ছিলেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ তাবক্বাতুস শাফেয়িয়্যাহ লিইবনে কাযী শাইবা-২/৫]
D) সাফাদী রহঃ আরো বলেন,
الزَّاهِد الْكَبِير سُلْطَان العارفين فِي زَمَانه
তিনি বড় যাহেদ, তার জমানার সুলতানুল আরেফীন ছিলেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ আলওয়াফী বিলওয়াফিয়্যাত-৭/১৪৩]
সুতরাং বুঝা গেল যে, এ সনদটি বিশুদ্ধ।
২য় সনদ
ইমাম রেফায়ী রহঃ [মৃত্যু ৬২৩ হিজরী]
[সিকা রাবী] যা আলোচনা ইতোপূর্বে গিয়েছে। তিনি বলেন,
A) শায়েখ আব্দুস শামী আলহাশেমী রহঃ [মৃত্যু ৫৮০ হিজরী] যাকে খোদ ইমাম রেফায়ী রহঃ সনদুল মুহাদ্দিসীন, ইমাম ইজ্জুদ্দীন আলাফারূছী রহঃ [মৃত্যু ৬৯৪ হিজরী]
→ শায়েখুশ শায়েখ এবং ইমাম আবু আব্দুল্লাহ [মৃত্যু ৬৩৭ হিজরী] তাকে শরীফ, সালেহ এবং আবেদ বলে মন্তব্য করেছেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ ইরশাদুল মুসলিমীন-২৬৫, তারীখ ইবনে দাবীছী-৭৯, নং-১৪৮]
খেয়াল করুন!
শায়েখ আব্দুস শামী আলহাশেমী রহঃ যার আসল নাম হল, মুহাম্মদ বিন আব্দুস শামী আলহাশেমী রহঃ। কিন্তু তাকে আব্দুস শামী আলহাশেমী বলা হয়ে থাকে। কোন কোন মুহাদ্দিস তাকে তার কুনিয়্যাত আবু তালিব শারফুদ্দীন বলেও উল্লেখ করেছেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ ইরশাদুল মুসলিমীন-৯০]
সিকা রাবী আব্দুস শামী রহঃ বলেন,
আমি উক্ত ঘটনার চাক্ষুস সাক্ষ্যি। যাতে হযরত কাবীর আহমাদ রেফায়ী রহঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মুসাফাহা করেছেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ সাওয়াদুল আইনাঈন-৯-১০]
সুতরাং উক্ত ঘটনাকে ভিত্তিহীন বলাটা পূর্ববর্তীদের কিতাব ও হাকীকত সম্পর্কে অজ্ঞতা ছাড়া আর কী হতে পারে?
যেসব কিতাবে উক্ত ঘটনা এসেছে!
১/
ইমাম আলী বিন আঞ্জাব রহঃ [মৃত্যু ৬৭৪ হিজরী] । যাকে উলামায়ে কেরাম, ইমাম, মুহাদ্দিস, মুআররিখে কাবীর, ফাযেল, আদীব বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
দেখুন- তারীখুল ইসলাম লিজযাহাবী-১৫/২৭৮, তাবক্বাতুল হুফফাজ লিসসুয়ুতী-১/৫১২, নং-১১২৭, তাবক্বাতুস শাফেয়িয়্যাহ লিকাযী শাইবা-২/১৪০]
তিনি তার কিতাবে ৫টি ভিন্ন সনদে কাবীর আহমাদ রেফায়ী রহঃ এর ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ মুখতাছার তারীখুল খুলাফা-৯৭-৯৯]
২/
ইমাম আলী বিন আলহাসান বিন আহমাদ আলওয়াসেতী রহঃ [মৃত্যু ৭৩৩ হিজরী]। যাকে হাফেজ জাহাবী রহঃ ইমামুল কুদওয়াহ, আলকানিত্ব, যাহেদ এবং বড় শানওয়ালা বলে মন্তব্য করেছেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ মু’জামু শুয়ুখুল কাবীর লিজযাহাবী-৩৬৫, আদদুরারুল কামীনাহ লিইবনে হাজার-৩/৩৭, নং-৮২]
তিনিও তার কিতাব “খুলাসাতুল আকছীর ফী নাসীবে সাইয়্যিদুনা রেফায়ী আলকাবীর” নামক গ্রন্থে উক্ত ঘটনা এনেছেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ খুলাসাতুল আকছীর-৩০]
৩/
মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ আলমাখজূমী রহঃ [মৃত্যু ৮৮৫ হিজরী]। যিনি নিজের সময়কার শাইখুল ইসলাম ছিলেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ আলআলাম লিযযারকালী-৬/২৩৮]
তিনিও তার কিতাব “সিহাহুল আখবার” নামক গ্রন্থে শায়েখ রেফায়ী রহঃ এর ঘটনাটি সনদসহ উল্লেখ করেছেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ সিহাউল আখবার-৬৯]
৪/
ইমাম ইজ্জুদ্দীন আহমাদ বিন ইব্রাহীম আলফারূছী রহঃ [মৃত্যু ৬৯৪ হিজরী]।
যাকে ইমাম যাহাবী রহঃ ইমাম, মুকরী, ওয়ায়েজ, মুফাসসির, খতীব, শাইখুশ শায়েখ, ফক্বীহ, সালাফী, মুদাররিস, কিরাতের অভিজ্ঞ, মুফতী, আবেদ এবং সুফী বলেছেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ তারীখুল ইসলাম-১৫/৭৮২]
এই ইমাম মুফতী শায়েখও তার কিতাব “ইরশাদুল মুসলিমীন” এ এ ঘটনা সনদসহ বর্ণনা করেছেন। [ইরশাদুল মুসলিমীন-৮৮]
৫/
শায়েখ ইজ্জুদ্দীন আহমাদ সাঈদ রহঃ। [মৃত্যু ৬৭০ হিজরী] তিনিও তার কিতাবে উক্ত ঘটনা নকল করেছেন। দেখুন-আলমাআরেফুল মুহাম্মাদিয়া-৫৯]
৬/
শায়েখ শরফুদ্দীন মুহাম্মদ বিন আব্দুস শামী রহঃ [মৃত্যু ৫৮০ হিজরী]। তিনিও তার কিতাবে উক্ত ঘটনা বর্ণনা করেছেন। দেখুন- আলবুরহানুল মুআইয়্যিদ-১২, ইরশাদুল মুসলিমীন-১৫৪]
শায়েখ মুহাম্মদ বিন আব্দুস শামী রহঃ শায়েখ কাবীর রেফায়ী রহঃ এর ছাত্র ছিলেন। সুতরাং তার বর্ণনাটির সনদেরও কোন প্রয়োজন নেই।
৭/
হাফেজ তাক্বীউদ্দীন আব্দুর রহমান আলওয়াসেতী রহঃ [মৃত্যু ৭৪৪ হিজরী] এর মত হাফিজে হাদীস ও মুহাদ্দিস তার কিতাবে উক্ত ঘটনা উদ্ধৃত করেছেন। দেখুন-তরয়াকুল মুহিব্বীন-১/১২]
৮/
ইমাম, হাফিজ, মুহাদ্দিস আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতী রহঃ [মৃত্যু ৯১১ হিজরী] যাকে উলামাগণ ইমাম, হাফিজ, তাজুল মুফাসসিরীন বলে মন্তব্য করেছেন। তিনিও তার কিতাবে উক্ত ঘটনা উদ্ধৃত করেছেন।
[দেখুন-তানবীরুল হালক লিসসুয়ূতী-৫১]
এই রেসালা সুয়ুতী রহঃ এর কিতাব “আলহাওয়ী লিলফাতাওয়া” গ্রন্থের মাঝে বিদ্যমান। যেখান থেকে শায়খুল হাদীস জাকারিয়া রহঃ ফাযায়েলে হজ্বে নকল করেছেন। সেই সাথে উক্ত কিতাবের রেফারেন্সও উল্লেখ করেছেন।
৯/
আল্লামা আহমাদ বিন মুহাম্মদ আলওয়াত্রী রহঃ [মৃত্যু ৯৮০ হিজরী]। যাকে উলামায়ে কেরাম ইমামুল কাবীর, আল্লামা, আরিফবিল্লাহ ইত্যাদি বলে মন্তব্য করেছেন।
[দেখুন- আলআলাম লিযযিরকালী-১/২৩৪, হিলয়াতুল বাশার-১৩]
তিনিও তার কিতাব “রউজাতুন নাজিরীন” এ উক্ত ঘটনা নকল করেছেন।
[দেখুন-রউজাতুন নাজিরীন-৫৪]
১০/
ইমাম মুহাম্মদ বিন আব্দুর রউফ আলমানায়ী রহঃ [মৃত্যু ১০৩১ হিজরী]। যাকে উলামাগণ আরিফবিল্লাহ, উস্তাজুল কাবীর, ইমামুল কাবীর, আলিম এবং দ্বীন ও ফুনুনের বড় উলামা বলে মন্তব্য করেছেন।
[গ্রন্থ সূত্রঃ খুলাসাতুল আছার-২/১৯৩, আলআলাম লিযযিরকালী-৬/২০৪]
তিনিও তার কিতাবে উক্ত ঘটনা নকল করেছেন।
[দেখুন- আলকাওয়াকিবুদ দুররিয়্যাহ-২/২২০]
আমরা মাত্র দশটি কিতাবের রেফারেন্স পেশ করলাম। যেসব কিতাবে উক্ত ঘটনাটি নকল করা হয়েছে। অনেকেই বিশুদ্ধ সনদসহ উল্লেখ করেছেন। লম্বা না হলে আরো পেশ করা হতো।
সালাফের কিতাবের মাঝে প্রায় ৫০টি কিতাবের উর্দ্ধে কিতাবের মাঝে উক্ত ঘটনাটি নকল করা হয়েছে।
এসব মুহাদ্দিস, মুহাক্কিক, ও বড় বড় শায়েখগণ তাদের কিতাবে সনদসহ তা নকল করেছেন। এরপরও যদি কোন অন্ধ উক্ত ঘটনাটিকে বানোয়াট বলে তাহলে আসলে আমাদের কিছু বলার নেই।
একটি সন্দেহ!
উপরোক্ত ঘটনা বিশুদ্ধ সনদে প্রমাণিত এতে কোন সন্দেহ নেই। যা আমরা উপরের বিস্তারিত দলীলসমৃদ্ধ আলোচনা ও সনদের পর্যালোচনা দ্বারা প্রতিভাত হয়ে গেছে।
কিন্তু এখানে একটি কথা বাকি রয়ে যায়। সেটি হল, নব্বই হাজার লোকজন একসাথে কিভাবে তা প্রত্যক্ষ্য করল?
জবাব
এটি মূলত পুরোটাই কারামত। কিভাবে হয়েছিল তা আল্লাহ তাআলাই ভাল জানেন। তবে এটাও বলা যেতে পারে যে, হতে পারে পরবর্তীতে কেউ উক্ত কথাটি সংযুক্ত করে দিয়েছে। কিন্তু একথাটির কারণে মূল ঘটনা তথা হাত বের হওয়া ও মুসাফাহা করার বিষয়টি অস্বিকার করার কোন সুযোগ নেই। যেহেতু তা বিশুদ্ধ সনদসহ প্রচুর কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। সেই সাথে চাক্ষুস সাক্ষ্যির বর্ণনাও বিশুদ্ধ বর্ণনায় এসেছে। তাই এ ঘটনাটিকে অস্বিকার করা অজ্ঞতা ছাড়া কিছু নয়।
পরিশেষে, উপরোক্ত ঘটনাটিকে সমর্থন ও প্রমাণ হিসেবে উপমহাদেশীয় দেওবন্দী ফির্কার দাওয়াত ও তাবলিগের সিলেবাসভূক্ত তাবলিগের উদ্দেশ্যে রচিত কিতাব,
যার পূর্বতন নাম তাবলিগী নেসাব / বর্তমান নাম ফাযায়েলে আমাল, ২য় খন্ড, ফাযায়েলে হজ্ব উর্দু-১৩০-১৩১, বাংলা ফাযায়েলে হজ্ব-২৩১পৃষ্ঠায় আহলুস সুন্নাহর আক্বিদার অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনাটি থেকে সুন্নী আক্বিদা শিক্ষার জন্যে দাওয়াত ও তাবলীগ করা হয়েছে।
আফসোস, বর্তমান দেওবন্দী আলেমরা লা মাযহাবীদের গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে ওয়াহাবী পেট্রোডলারের লোভে বিবেককে বিক্রি করার কারণে এই সকল পবিত্র ঘটনাকে শিরক, বিদা’আত বলতে দ্বিধাগ্রস্ত হয় না।
মহান আল্লাহ্ পাক সকলকে আহলুস সুন্নাহর আক্বিদায় সীরাতুল মুস্তাকিমে জীবন গড়ার তৌফীক দিন, আমীন।