শিয়ারা বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার করে হযরত আলী (রাঃ) ও হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) এর মধ্যকার বিরোধকে কেন্দ করে এখন সুন্নী মুসলমানদেরও পথভ্রষ্ট করছে। এই ঘটনার হাকিকত কি ছিল? এটা বুঝার জন্য এই পোস্টটি পড়ুন। ইনশাআল্লাহ পোস্টটি উপকারে আসবে।
1.
আমিরুল মু’মিনিন মাওলা হযরত ‘আলী (তাঁর প্রতি সালাম) ইবনে আবি তালিব (আল্লাহ্ তাঁকে উপযুক্ত মর্যাদা প্রদান করুন) হযরত মুয়াবিয়া (তাঁর প্রতি সালাম) সম্পর্কে তদীয় রচনা হিসেবে প্রসিদ্ধ
“নাহযুল বালাগা“ পত্র সম্ভার কিতাবের ৫৮ নং. পত্রে উভয়ের সিদক্ব (কুফরের উপর নয়) প্রসঙ্গে বলেন :
(তিনি এই পত্রটিতে উভয়ের অবস্থা তুলে ধরে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রেরন করেছিলেন)
উভয়ই হক্বের উপর প্রতিষ্ঠিত।
وَكَانَ بَدْءُ أَمْرِنَا أَنَّا الْتَقَيْنَا وَالْقَوْمُ مِنْ أَهْلِ الشَّامِ، وَالظَّاهِرُ أَنَّ رَبَّنَا وَاحِدٌ (1) ، وَنَبِيَّنَا وَاحِدٌ، وَدَعْوَتَنَا فِي الْإِِسْلاَمِ وَاحِدَةٌ، لاَ نَسْتَزِيدُهُمْ (2) فِي الْإِيمَانِ باللهِ وَالتَّصْدِيقِ بِرَسُولِهِ، وَلاَ يَسْتَزِيدُونَنَا: الْأَمْرُ وَاحِدٌ، إِلاَّ مَا اخْتَلَفْنَا فِيهِ مِنْ دَمِ عُثْمانَ، وَنَحْنُ مِنْهُ بَرَاءٌ! فَقُلْنَا: تَعَالَوْا نُدَاوِ مَا لاَ يُدْرَكُ الْيَوْمَ بِإِطْفَاءِ النَّائِرَةِ (3) ، وَتَسْكِينِ الْعَامَّةِ، حَتَّى يَشْتَدَّ الْأَمْرُ وَيَسْتَجْمِعَ، فَنَقْوَى عَلَى وَضْعِ الْحَقِّ مَوَاضِعَهُ. فَقَالُوا: بَلْ نُدَاوِيهِ بِالْمُكَابَرَةِ (4) ! فَأَبَوْا حَتَّى جَنَحَتِ (5) الْحَرْبُ وَرَكَدَتْ (6) ، وَوَقَدَتْ (7) نِيرَانُهَا وَحَمِشَتْ (8) . فَلَمَّا ضَرَّسَتْنَا (9) وَإِيَّاهُمْ، وَوَضَعَتْ مَخَالِبَهَا فِينَا وَفِيهِمْ، أَجَابُوا عِنْدَ ذلِكَ إِلَى الَّذي دَعَوْنَاهُمْ إِلَيْهِ، فَأَجَبْنَاهُمْ إِلَى مَا دَعَوْا، وَسَارَعْنَاهُمْ (10) إِلَى مَا طَلَبُوا، حَتَّى اسْتَبَانَتْ عَلَيْهِمُ الْحُجَّةُ، وَانْق َطَعَتْ مِنْهُمُ الْمَعْذِرَةُ. فَمَنْ تَمَّ عَلَى ذلِكَ مِنْهُمْ فَهُوَ الَّذِي أَنْقَذَهُ اللهُ مِنَ الْهَلَكَةِ، وَمَنْ لَجَّ وَتَمَادَى فَهُوَ الرَّاكِسُ (11) الَّذِي رَانَ (12) اللهُ عَلَى قَلْبِهِ، وَصَارَتْ دَائِرَةُ السَّوْءِ عَلَى رَأْسِهِ
আমাদের মধ্যে সূচিত ঘটনার প্রারম্ভে আমরা এবং শামের লোকেরা পরষ্পর সাক্ষাতে মিলিত হয়েছিলাম; নি:সন্দেহে আমাদের মা’বুদ একক, আমাদের প্রতি প্রেরিত আল্লাহর রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) অভিন্ন। আর ইসলামে আমাদের দা’ওয়াতও অভিন্ন। আমরা ও তাঁরা কেউই নিজেদের আল্লাহর প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপনে ও তাঁর রাসূল (صلى الله عليه و آله وسلم) এর প্রতি সত্যায়নে অাধিক্য সম্পন্ন মনে করি না। আমাদের উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন, কেবল আমীরুল মু’মিনিন হযরত উসমান যিন্নুরাইন (তাঁর প্রতি সালাম) এর রক্তের প্রতিশোধের ব্যাপার ব্যতীত; আর আমরা উভয়ই তাঁর শাহাদাৎ এর ব্যাপারে নির্দোষ-মাসূম। (সংক্ষেপিত)
[গ্রন্থ সূত্রঃ নাহযুল বালাগা, কৃত আমিরুল মু’মিনিন মাওলা হযরত ‘আলী (তাঁর প্রতি সালাম); পত্র নং. ৫৮।]
2.
আমিরুল মু’মিনিন মাওলা হযরত ‘আলী (তাঁর প্রতি সালাম) ইবনে আবি তালিব (আল্লাহ্ তাঁকে উপযুক্ত মর্যাদা প্রদান করুন) তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধরতদের সম্পর্কে শির্ক-কুফরকারী না বলে তিনি বলেন :
وسائلالشيعة جزء15صفحة83 – باب حكم قتال البغاة
– عبد الله بن جعفر الحميري في (قرب الاسناد) عن هارون بن مسلم، عن مسعدة بن زياد، عن جعفر، عن أبيه ان عليا (عليه السلام) لم يكن ينسب أحدا من أهل حربه إلى الشرك ولا إلى النفاق، ولكنه كان يقول: هم إخواننا بغوا علينا.
আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরতরা আমাদের ভাই।
[গ্রন্থ সূত্র : ওয়াসায়িল আল-শিয়া; খণ্ড ১৫, পৃষ্ঠা ৮৩।]
3.
হাসান সনদে ইমাম বায়হাকী রহ. কৃত সূনান এ উদ্ধৃত হয়েছে :
أبو عبد الله الحافظ وأبو سعيد بن أبى عمرو قالا ثنا أبو العباس محمد بن يعقوب ثنا احمد بن عبد الجبار ثنا حفص ابن غياث عن عبد الملك بن سلع عن عبد خير قال سئل على رضى الله عنه عن اهل الجمل فقال اخواننا بغوا علينا فقاتلناهم وقد فاؤا وقد قبلنا منهم.
السنن الكبرى ج8 ص182
আমিরুল মু’মিনিন মাওলা হযরত ‘আলী (তাঁর প্রতি সালাম) ইবনে আবি তালিব (আল্লাহ্ তাঁকে উপযুক্ত মর্যাদা প্রদান করুন) জঙ্গে জামালে ও জঙ্গে সিফফিনে তাঁর বিরোধী লোকদের ব্যাপারে বলেন : আমাদের বিরুদ্ধে যাঁরা যুদ্ধ করেছেন তাঁরা আমাদের ভাই।
[গ্রন্থ সূত্র : ইমাম বায়হাকী রহ., আস সূনানুল কুবরা, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৮২।]
অনূরুপ বর্ণনা মুসান্নাফ ইবন আবূ শায়বা শরীফেও উদ্ধৃত হয়েছে :
37763 – حدثنا يزيد بن هارون عن شريك عن أبي العنبس عن أبي البختري قال سئل علي عن أهل الجمل قال قيل أمشركون هم قال من الشرك فروا قيل أمنافقون هم قال إن المنافقين لا يذكرون الله إلا قليلا قيل إخواننا بغوا علينا
ইমাম বায়হাকী রহ. কৃত “সূনানুল কুবরা” খণ্ড ৮, পৃষ্ঠা ১৭৩ :
16490 – أخبرنا أبو عبد الله الحافظ أنبأ أبو الوليد الفقيه ثنا الحسن بن سفيان ثنا أبو بكر بن أبي شيبة ثنا يزيد بن هارون عن شريك عن أبي العنبس عن أبي البختري قال سئل علي رضي الله عنه عن أهل الجمل أمشركون هم قال من الشرك فروا قيل أمنافقون هم قال إن المنافقين لا يذكرون الله إلا قليلا قيل فما هم قال إخواننا بغوا علينا
তাছাড়া সহীহ্ সনদে “মুসান্নাফ ইবন আবূ শায়বা” তে বর্ণিত হয়েছে :
روى ابن أبي شيبة في مصنفه بسند صحيح : حدثنا أبو أسامة قال حدثنا مسعر عن ثابت بن عبيد قال : سمعت أبا جعفر يقول : لم يكفر أهل الجمل
. المصنف ج8 ص708 يقصد علي
এই বর্ণনায় বলা হয়েছে “জঙ্গে জামাল”-এর যুদ্ধে যাঁরা ছিলেন তাঁরা কেউই যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার কারনে কুফরে পতিত ছিলেন না, অর্থাৎ তাঁরা কেউই কাফীর নন।
[গ্রন্থ সূত্র : মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা; খণ্ড ৮, পৃষ্ঠা ৭০৮।]
কাজেই সহীহ্ সনদে প্রমানিত; তাঁদের বিরুদ্ধে কুফরীর অভিযোগ মিথ্যা প্রচারনা।
4.
শিয়া ফির্কার ইমাম মাজলিসী তদীয় প্রসিদ্ধ পুস্তক “বিহারুল আনওয়ার“, ৩২/৩২৪ এ বলেন : ইমামুল মু’মিনিন জাফর আস সাদিক্ব (তাঁর প্রতি সালাম) বলেছেন,
إن عليا لم يكن ينسب أحدا من أهل حربه إلى الشرك ولا إلى النفاق ولكنه كان يقول: هم أخواننا بغوا علينا
رواه الحميري رحمه الله في الحديث : ” 297 و 302 ” من كتاب قرب الاسناد ، ص 45 ط 1
আমিরুল মু’মিনিন মাওলা হযরত ‘আলী (তাঁর প্রতি সালাম) ইবনে আবি তালিব (আল্লাহ্ তাঁকে উপযুক্ত মর্যাদা প্রদান করুন) জঙ্গে জামালে তাঁর বিরুদ্ধে বিবাদকারীদের প্রতি কোন প্রকারের শির্ক-কুফর বা ভণ্ডামীর হুকুম আরোপ করেন নি; বরং তিনি বলেন : আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরতরা আমাদের ভাই।
[গ্রন্থ সূত্র : মাজলিসী কৃত প্রসিদ্ধ পুস্তক “বিহারুল আনওয়ার“, ৩২/৩২৪।]
____________
তাঁদের মধ্যকার বিষয়টি ছিল ইজতিহাদি misunderstanding/ভূল বুঝাবুঝি; আর এই বিভেদের কারন বর্তমানের ন্যায় ইসলামের দুষমনদের নিয়োজিত নও মুসলিম, তখন মুনাফিক ইবনে উবাই (লা’নাতুল্লাহি ‘আলাইহি)।
মুরতাদ ও শিয়া থেকে সাবধান:
*****************************
এদের সম্পর্কে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পূর্বেই সতর্ক করে ভবিষ্যতবানী করেছেন:
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِنَّ اللَّهَ اخْتَارَنِي ، وَاخْتَارَ أَصْحَابِي ، وَإِنَّهُ سَيَجِيءُ قَوْمٌ يَنْتَقِصُونَهُمْ ، وَيُعِيبُونَهُمْ ، وَيَسُبُّونَهُمْ ، فَلا تُجَالِسُوهُمْ ، وَلا تُؤَاكِلُوهُمْ ، وَلا تُشَارِبُوهُمْ ، وَلا تُصَلُّوا مَعَهُمْ ، وَلا تُصَلُّوا عَلَيْهِمْ ” .
“অতি শীঘ্রই একটি দল বের হবে, যারা আমার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগনকে গালি দিবে, উনাদের নাকিছ বা অপূর্ন বলবে। সাবধান ! সাবধান ! তোমরা তাদের মজলিসে বসবে না, তাদের সাথে পানাহার করবে না, তাদের সাথে বিয়ে-শাদীর ব্যবস্থা করবে না। অন্য রেওয়াতে আছে, তাদের পেছনে নামাজ পড়বে না এবং তাদের জন্য দোয়া করবে না ও তাদের জানাযায় অংশ গ্রহন করবেনা।”
(. الجامع لأخلاق الراوي وآداب السامع للخطيب গ্ধ بَابُ : اتِّخَاذِ الْمُسْتَمْلِي গ্ধ إِمْلاءُ فَضَائِلِ الصَّحَابَةِ وَمَنَاقِبِهِمْ ، … رقم الحديث:
১৩৮২) কানযুল উম্মাল-৩২৪৬৮ )