আল্লাহর রাসূল (ﷺ)‘র পরে পৃথিবীতে হযরত আবূ বকর (رضي الله عنه) এরপর হযরত উমরের মর্যাদা। শীয়াসহ বিভিন্ন বাতিল পন্থীগণ হযরত আলী (رضي الله عنه)‘র প্রতি ভালবাসা দেখাতে গিয়ে শাইখাইনের প্রতি খারাপ অমূলক কথা বার্তা বলে থাকেন এবং দাবি করে থাকেন যে রাসূল (ﷺ)‘র পরে মাওলা আলী (رضي الله عنه)‘ই ছিলেন খিলাফতের উপযুক্ত পুরুষ, আর প্রথম দুই খলিফা কৌশলে ক্ষমতা দখলে নিয়েছিলো। নাউযুবিল্লাহ!
অথচ রাসূল (ﷺ) বারবার বলেছেন যে, আমার পরে তোমরা আবু বকর ও উমরকে অনুসরণ করবে। হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (رضي الله عنه) ও ইরবাদ বিন সারিয়া (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত রাসুল (ﷺ) বলেন-
فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي، وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّين
-‘‘তোমরা আমার সুন্নাত ও আমার চার খলিফার সুন্নাতকে আঁকড়ে ধর।’’
➤ আহমদ, আল-মুসনাদ, ৪/১২৬ পৃষ্ঠা, হাদিস : ১৭২৭৫-৭৬, আবু দাউদ, আস্-সুনান :৫/১৩ পৃষ্ঠা, হাদিস ৪৬০৭, তিরমিযী, আস্-সনান, ৫/৪৩ পৃষ্ঠা, হাদিস : ২৬৭৬, ইবনে হিব্বান, আস্-সহিহ, ১/১৭৮ পৃষ্ঠা, হাদিস : ৫, দারেমী, আস্-সুনান, ১/৫৭ পৃ, হাদিস- ৯৫, খতিব তিবরিযী, মিশকাত, কিতাবুল ইতিসাম, ১/৪৫ পৃ, হাদিস- ১৬৫, বায়হাকী, আস্-সুনানুল কোবরা, ১০/১১৪ পৃ, ও শুয়াবুল ঈমান, ৬/৬৭ পৃ, হাদিস- ৭৫১৫-৭৫১৫, বগভী, শরহে সুন্নাহ, ১/১৮১ পৃ, হাদিস- ১০২।
অন্য আরেক বর্ণনায় হযরত হুযায়ফা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন-
اقْتَدُوا بِاللَّذَيْنِ مِنْ بَعْدِي أَبِي بَكْرٍ، وَعُمَرَ.
-‘‘আমার পরে তোমরা আবু বকর এবং উমর (رضي الله عنه) কে অনুসরণ করবে।’’
➤সুনানে তিরমিযি, ৬/৫০ পৃ, হাদিস:৩৬৬২ এবং হাদিস:৩৮০৫, সুনানে ইবনে মাযাহ, হাদিস : ৯৭,মুসনাদে আহমদ, হাদিস:২৩৩০৫, বায়হাকী, আস্-সুনানুল কোবরা, ৫/১২ পৃ, এবং ৮/১৫৩ পৃষ্ঠা, হাকেম নিশাপুরী, আল্-মুস্তাদরাক, ৩/৭৫পৃ,
তাই রাসূল (ﷺ) এর এ হাদিসের আদেশ মোতাবেক তাঁদের (চার খালিফার) অনুসরণ করাও আমাদের জন্য সুন্নাত।
হযরত উসমান (رضي الله عنه)‘র ব্যাপারে আহলে সুন্নাতের আক্বীদা
হযরত উসমান (رضي الله عنه) ইসলামের তৃতীয় খলিফা ছিলেন। তার উপরে মুনাফিকরা বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে এগুলো সব তাঁর নামে বানোয়াটি ষড়যন্ত্র ছিল। (ইমাম সুয়ূতী, তারীখুল খোলাফা)
হযরত আলী (رضي الله عنه)‘র ব্যাপারে আহলে সুন্নাতের আক্বীদা
হযরত আলী (رضي الله عنه) একজন ফকীহ সাহাবী। তিনি সর্বপ্রথম অল্প বয়স্কেদের মধ্যে মুসলমান। হযরত আলী (رضي الله عنه) এর মর্যাদা হলো রাসূল (ﷺ)‘র পরে হযরত আবু বকর, উমরের পর এবং এমনকি হযরত উসমান (رضي الله عنه)‘র পরেই তার মর্যাদা। এটাই গ্রহণযোগ্য মত। বর্তমানে শীয়া এবং কিছু ভুয়া নামধারী সুফিরাও এর বিপরীত মত পোষণ করে থাকে। আল্লামা ইবনে কাসির বলেন-
وَكَذَلِكَ عُثْمَانُ كَانَ أَفْضَلَ مِنْ عَلِيٍّ عِنْدَ أَهْلِ السُّنَّةِ وَالْجَمَاعَةِ،
-‘‘হযরত উসমান (رضي الله عنه)‘র মর্যাদা হযরত মাওলা আলী (رضي الله عنه)‘র উপরে, এটাই আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অভিমত।’’
➤ইবনে কাসির, বেদায়া ওয়ান নিহায়া, ৮/২০৩ পৃষ্ঠা,
ইমাম খালেদ বিন সালেম নিশাপুরী সুলাইমী (ওফাত.৪১২হি.) বলেন-
أبو الحسنِ يقولُ: عثمانُ بنُ عفَّانَ أفضلُ من عليِّ بنِ أبي طالبٍ باتِّفاقِ جماعةِ أصحابِ رسولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم، هذا قولُ أهلِ السنةِ-‘‘ইমাম আবুল হাসান আশ‘আরী (رحمة الله) বলেন, হযরত উসমান (رضي الله عنه)‘র মর্যাদা হযরত মাওলা আলী (رضي الله عنه)‘র উপরে, এ বিষয়ে রাসূল (ﷺ)‘র এক জামাত সাহাবিরা একমত পোষণ করেছেন এবং এটাই আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অভিমত।’’ ➤সুলামী, সাওয়ালাত লিল দারেকুতনী, ১/২৩৮ পৃষ্ঠা, ক্রমিক:২৫৬