পবিত্র ক্বোরআনে কারীম এবং হাদীসে নবভী শরীফে হজ্জ শব্দটি ‘হা’ তে যবর ও যের সহকারে অর্থাৎ حَج এবং حِج উভয়রূপে উল্লিখিত হয়েছে। কেউ কেউ বলেন হজ্জ শব্দটি যবর যোগে ‘মাসদার’ (ক্রিয়ামূল) আর যের সহকারে ‘ইসম’ বা বিশেষ্য। আবার কোন কোন মুহাক্বক্বিক্ব বলেন, যবর সহকারে হজ্জ শব্দটি ‘ইসম’ বা বিশেষ্য এবং যের সহকারে হজ্ব শব্দটি ‘মাসদার’ বা ক্রিয়ামূল। হজ্জ শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো قَصْدُ الشَّىْءِ الْعَظِيْمِ الْفَخِيْمِ অর্থাৎ আযীমুশ্বান কোন বিষয় বা বস্তু অর্জনের সংকল্প করা, ইচ্ছা করা। আর ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় হজ্বের মাসসমূহে ইহরাম পরিধান করে ৯ জিলহজ্জ আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা এবং বায়তুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ করার সংকল্প করাকে হজ্জ বলা হয়। -সুত্রঃ গাউসিয়া তারবিয়াতী নেসাব-
হজ্জে বায়তুল্লাহ
হজ্জ ইসলামের অন্যতম বুনিয়াদী ইবাদত। আল্লাহ-প্রেমের পরম নিদর্শন এবং এক ব্যতিক্রমর্ধমী ইবাদত এ হজ্জ। ইসলামের সকল ইবাদত নামায, রোয, যাকাত, জিহাদ, সদক্বাহ-খয়রাত, যিকর-আযকার এবং তরীক্বতের সবক্ব পালন ইত্যাদি সর্বত্র আদায়যোগ্য। কিন্তু হজ্জ ব্যতিক্রম। এটা একমাত্র নির্দিষ্ট মওসুমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের মেহমানরূপে মর্যাদাবান হয়ে খানায়ে কা’বা বায়তুল্লাহ শরীফ উপস্থিত হয়েই শ্তধু আদায় করা যায়।
কোন কোন ইবাদত দৈহিক; যেমন নামায, রোযা, যিকর- আযকার’ আর কোন কোন ইবাদত মালী বা আর্থিক; যেমন যাকাত-ফিতরা, সাদক্বাহ-খায়রাত ইত্যাদি। কিন্তু হজ্জ এমন একটি ইবাদত যা শারীরিক শ্রম-সাধনা এবং আর্থিক ক্বোরবানী উভয়ের সমন্বয়ে আদায় করতে হয়। অন্যান্য সকল ইবাদত রিয়াযতে আনুগত্যের প্রাধান্যই পরিদৃষ্ট হয় আর হজ্জে বায়তুল্লাহর বিধি-বিধান পালনকালে আল্লাহর প্রেমের প্রধান্যই পরিলক্ষিত হয়। তাই হজ্জে মাক্ববূলের প্রতিদান হলো জান্নাত।
হজ্জ এমন একটি আমল যার বদৌলতে আন্তর্জাতিক ইসলামী ভ্রাতৃত্ব বন্ধুত্ব এবং সংহতিও সূচিত হয় বিশ্ব মুসলিমের মধ্যে। কেননা, প্রতি বছর নির্দিষ্ট তারিখে নির্দিষ্ট সময়ে লক্ষ-লক্ষ মু’মিন নর-নারী আরাফাত, মিনা-মুয্দালিফায় সমবেত হয়ে এক আল্লাহর মহত্ব-বড়ত্ব ও গুণগানে মত্ত হয়ে উঠে। ভাষা, বর্ণ, বাসভূমি ইত্যাদি কারণে বিক্ষিপ্ত মুসলিম মিল্লাত হজ্জের বরকতে ও বদৌলতে আরাফাতের ময়দানে একক মুসলিম জাতি সত্তায় পরিণত হয়। এভাবেই বিশ্ব মুসলিম ঐক্যের ভিত সুদৃঢ় ও সুসংহত হয়। হজ্জ এমন একটি গুরুত্ববহ রিয়াযত যার বরকতে মানব হৃদয়ে বিনয় নম্রতা ও কোমলতা আর চরিত্রে পবিত্রতা পরিশুদ্ধি অর্জিত হয়। যা হজ্জে মাকবূলেরই নমুনা ও নিদর্শন। এহেন অপরিসীম পার্থিব ও পারলৌকিক কল্যাণ, মঙ্গল ও উপকার নিহিত রয়েছে পবিত্র হজ্জে বায়তুল্লাহর মধ্যে। এজন্য ক্বোরআনে কারীমের অনেক আয়াতে এবং হাদীসে নবভী শরীফের অনেক রেওয়ায়ত বারংবার তাগিদ দেয়া হয়েছে সামর্থ্যবান মু’মিন নর-নারীর প্রতি হজ্জ সম্পন্ন করার বিষয়ে। -সুত্রঃ গাউসিয়া তারবিয়াতী নেসাব-
হজ্জ কখন ফরয হয়
হজ্জ কখন ফরয হয় এ বিষয়ে মুহাদ্দিসীন মুফাসসিরীন এবং ফক্বীহগণের মধ্যে মাতানৈক্য রয়েছে। মুহাক্বক্বেক্বীন ওলামাই কেরামের মধ্যে কেউ কেউ বলেন হজ্জ হিজরী তৃতীয় সালে ফরয হয় যে বছর ওহুদ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। [তাফসীরে ইবনে কাসীর]
আবার কোন কোন মুহাক্বক্বিক্ব বলেন, হজ্জ হিজরী ষষ্ঠ সালে ফরয হয়। তবে অধিকাংশ মুহাদ্দিসীন এবং ফক্বীহর মতে হজ্জ হিজরী নবম সনে ফরয হয়। [আলমগীরী ও দুররে মুখতার]
দলে দলে লোকজনের ইসলাম গ্রহণ এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি দলের আগমনের কারণে আল্লাহর হাবীব সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যস্ত থাকায় ওই বছর হজ্বে যাননি; বরং সাইয়্যেদুনা আবূ বকর সিদ্দিক রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুকে ‘আমীরুল হুজ্জাজ’ মানোনীত করে মক্কা শরীফে প্রেরণ করেন হজ্জ আদায়ের লক্ষে। হুযুর-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরবর্তী বছর ১০ম হিজরীতে হজ্জ সম্পন্ন করেন, যা ঐতিহাসিক ‘বিদায় হজ্জ’ হিসেবে প্রসিদ্ধ। -সুত্রঃ গাউসিয়া তারবিয়াতী নেসাব-
হজ্জের প্রকারভেদ
১. হজ্জে আসগরঃ ওমরাহকে হজ্জে আসগর বা ছোটতর হজ্জ বলা হয়। বছরে যতবার যখনই ইচ্ছা ওমরাহ পালন করা যায়।
২. হজ্জে ইফরাদঃ শুধু হজ্জের নিয়্যতে ইহরাম বাঁধা। এ হজ্জে ওমরাহ নেই।
৩. হজ্জে তামাত্তুঃ পৃথক পৃথক ইহরাম দ্বারা হজ্জের মাসে ওমরাহ ও হজ্জ সম্পন্ন করা। এ হজ্জ আফাক্বী অর্থাৎ মীক্বাতের বাইরে অবস্থানকারীদের জন্য।
৪. হজ্জে ক্বিরানঃ অর্থাৎ হজ্জের মাসে ওমরাহ ও হজ্জ একই ইহরামে একত্রিত করা। এটাও কেবল আফাক্বীদের জন্য।
হজ্জের ফযীলত সমূহ
পবিত্র ক্বোরআনে কারীম এবং হাদীসে নবভী শরীফে বায়তুল্লাহর গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফযীলত-বরকত, মরতবা-মহিমা অপরিসীম। নিম্নে তার কিছুটা বিবৃত হলো-
ক্বোরআন কারীমে আল্লাহ পাক এরশাদ করেছেন-وَاَتِمُّوْا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ لِلهِ অর্থাৎ (হে মুমিনগণ!) আর তোমরা একমাত্র আল্লাহর জন্য হজ্জ ও ওমরাহ পরিপূর্ণ করো।
অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে-وَلِلهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ اِلَيْهِ سَبِيْلًاً অর্থাৎ মানুষের জন্য একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই ঘরের হজ্জ করা তার জন্য ফরয যার সেখানে পৌঁছার সামর্থ আছে।
উপরোক্ত আয়াতাংশের আলোকে প্রতীয়মান হয় ঈমানদারের জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিশ্চিত মাধ্যম হলো আল্লাহর ঘরের হজ্জ।
হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে-
عَنْ اَبِى هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ حَجَّ لِلّهِ فَلَمْ يَرْفَث وَلَمْ يَفْسُقْ رَجَعَ كَيَوْمٍ وَلَدَتْهُ اُمُّه‘ (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
অর্থাৎ (সার্বাধিক হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবী) সাইয়্যেদুনা হযরত আবূ হুরায়রাহ রাদ্বিয়াল্লাহ তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে কারীম রঊফুর রহীম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোনরূপ অশ্লীল কর্মকান্ড কিংবা পাপাচারে লিপ্ত হওয়া ব্যতিরেকে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হজ্জ পালন করবে সে মাতৃগর্ভে হতে ভূমিষ্ঠ হওয়ার দিনের ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে প্রত্যাবর্তন করবে।
وَعَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْعُمْرَةُ اِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِّمَا بَيْنَهُمَا وَالْحَجُّ الْمَبْرُوْرُ لَيْسَ لَه‘ جَزَ آءٌ اِلَّا الْجَنَّةُ (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)
অর্থাৎ (নবী প্রেমে নিবেদিত প্রাণ সাহাবী) সাইয়েদুনা হযরতে আবূ হুরায়রাহ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলে পাক সাহেবে লাওলাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন- একটি ওমরাহ কাফফারা হয়ে যায় (অর্থাৎ আমলনামা থেকে গুনাহসমূহ মোচন করে দেয়) আরেকটি ওমরাহ পালন করা পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ে সংঘটিত গুনাহসমূহের। আর হজ্জে মাবরূরের প্রতিদান জান্নাতই।
উল্লেখ্য যে হজ্জে মাবরূর বলা হয় ওই হজ্জকে যার সাথে কোন রুপ পাপাচার লৌকিকতা লোকদেখানো ইত্যাদি যুক্ত হয় নি।
وَ عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّهُ قَالَ اَلْحُجَّاجُ وَالْعُمَّارُ وَفْدُ اللهِ اِنْ دَعَوْهُ اَجَابَهُمْ وَاِنِ اسْتَغْفَرُوْهُ غَفَرَلَهُمْ(رواه ابن ماجة)
অর্থাৎ (প্রসিদ্ধ হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবী সাইয়েদুনা) হযরত আবূ হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলে আকরাম নূরে মুজাসসাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন- আল্লাহর ঘরের হজ্জ এবং ওমরা পালনকারীরা আল্লাহর প্রতিনিধি স্বরূপ। তারা যদি আল্লাহর নিকট দোয়া-ফরিয়াদ করে আল্লাহ পাক তা কবূল করেন এবং তারা আল্লাহর নিকট মাগফিরাত চাইলে আল্লাহ পাক তাদের (গুনাহসমূহ) মার্জনা করেন। [ইবনে মাজাহ শরীফ]
وَعَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ فَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ وَفْدُ اللهِ ثَلثَةٌ اَلْغَازِىْ وَالْحَاجُّ وَالْمُعْتَمِرُ (رواه النسائى والبيهقى فى شعب الايمان)
অর্থাৎ সাইয়্যেদুনা হযরত আবূ হুরায়রাহ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলে খোদা হাবীবে কিবরিয়া সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এরশাদ করতে শুনেছি- আল্লাহর প্রতিনিধি তিনজন যথা-
১। আল্লাহর পথে জিহাদকারী
২। আল্লাহর ঘরের হজ্জ আদায়কারী এবং
৩। ওমরাহ পালনকারী।
[নাসাঈ শরীফ ও বায়হাক্বী শুআবুল ঈমান]
وَعَنْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُمَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا لَقِيْتَ الْحَاجَّ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ وَصَافِحْهُ وَمُرْهُ اَنْ يَسْتَغْفِرَ لَكَ قَبْلَ اَنْ يَدْخُلَ بَيْتَه‘ فَاِنَّه‘ مَغْفُوْرٌ(رواه احمد)
অর্থাৎ প্রখ্যাত সাহাবী-ই রাসূল সাইয়্যেদুনা হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে আকরাম হাবীবে রহমান সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন- যখন তুমি কোন হাজীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে, তখন তাকে সালাম করবে, তার সঙ্গে করমর্দন করবে এবং তাকে বলবে যেন তার ঘরে প্রবেশ করার পূর্বেই তোমার জন্য মাগফিরাত কামনা করে। কেননা, হাজীর মাগফিরাত হয়ে গেছে। [মুসনাদে আহমদ]
وَعَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ خَرَجَ حَاجًّا اَوْ مُعْتَمِرًا اَوْ غَزِيًا ثُمَّ مَاتَ فِىْ طَرِيْقِه كَتَبَ اللهُ لَه‘ اَجْرَ الْحَاجِّ اَوِ الْغَازِىِّ اَوِ الْمُعْتَمِرِ (رواه البيهقى فى شعب الايمان)
অর্থাৎ সাইয়্যেদুনা হযরত আবূ হুরায়রাহ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে খোদা হাবীবে কিবরিয়া সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছন, যে ব্যক্তি আল্লাহর ঘরের হজ্জ কিংবা ওমরাহ পালন করার উদ্দেশ্যে অথবা আল্লাহর পথে জেহাদ করার সংকল্পে ঘর হতে বের হয়ে পথিমধ্যে ইন্তেকাল করলো, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তার আমলনামায় আল্লাহর ঘরের হজ্জ কিংবা ওমরাহ আদায়কারীর অথবা জেহাদকারীর সাওয়াব লিপিবদ্ধ করে দেবেন। [বায়হাক্বী শুআবুল ঈমান]
وَعَنْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَرَادَ الْحَجَّ فَلْيَتَعَجَّلْ (رواه ابو دؤد والدارمى)
অর্থাৎ মুফাসসিরকুল সরদার সাহাবী-ই রাসূল সাইয়্যেদুনা আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে আকরাম রহমতে আলম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হজ্জ করার ইচ্ছে করে সে যেন তাড়াতাড়ি আদায় করে নেয়। [আবূ দাউদ শরীফ ও দারেমী শরীফ।]
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حُجُّوا فَاِنَّ الْحَجَّ يَغْسِلُ الذُّنُوْبَ كَمَا يَغْسِلُ الْمَاءُ الدَّرَنَ
অর্থাৎ রাসূলে খোদা আশরাফে আম্বিয়া সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, তোমরা হজ্জ পালন করো। কেননা হজ্জ গুনাহসমূহকে এমনভাবে ধৌত করে ফেলে যেভাবে পানি ময়লা ধৌত করে (পরিচ্ছন্ন করে)।
উপরোক্ত রেওয়ায়কতসমূহের আলোকে প্রমাণিত হয় যে হজ্জ ও ওমরাহ এমন তাৎপর্যবহ ও মহিমান্বিত ইবাদত, যার বদৌলতে বান্দা আল্লাহর প্রতিনিধি হওয়ার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়, হজ্জ ও ওমরাহ আদায়কারীর সমুদয় গুনাহ মাফ হয়ে যায়, ইহকালীন জীবন পূত-পবিত্র ও পরিশুদ্ধি হয়ে যায় এবং পরকালীন জীবনে বেহেশতী ও দীদারে ইলাহীর উপযোগী হয়। -সুত্রঃ গাউসিয়া তারবিয়াতী নেসাব-