দোয়া পড়া ইবাদত। তবে সে দোয়া প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশিত মতে হতে হবে। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী সহবাসের আগে কেন দোয়া পড়বেন? এ দোয়া কি শুধুই সহবাসের নাকি নিরাপত্তার?
প্রিয়নবি কেন স্বামী-স্ত্রীর মিলনের আগে দোয়া পড়তে বলেছেন? এর কারণই বা কী? আর এ দোয়ায় মানুষ কী বলে থাকেন? আসুন জেনে নেয়া যাক :
স্বামী-স্ত্রী মিলনের আগে যে দোয়া পড়তে হয়-
بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَ جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বানা ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাযাক্বতানা।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তোমার নামে (যৌন মিলন বা সহবাস) আরম্ভ করছি, তুমি আমাদের (স্বামী-স্ত্রী উভয়ের) কাছ থেকে শয়তানকে দূরে রাখ। আমাদের এ মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবেন, সে সন্তানকেও শয়তান (যাবতীয় আক্রমণ) থেকে দূরে রাখ।’
স্বামী-স্ত্রীর যে বিষয়গুলো মনে রাখা জরুরি
শয়তান যৌনতাকে ভালোবাসে। লজ্জাস্থান দেখতেও ভালোবাসে। কেননা শয়তান এ যৌনতায় নিজেকে জড়িয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যেই স্বামী-স্ত্রীর মিলনের সময় সেখানে উপস্থিত হয়।
যখনই কোনো মানুষ মিলনের সময় প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো এ দোয়া পড়ে, তখন সেখানে শয়তান থাকতে পারে না। ফলে স্বামী-স্ত্রীর মিলন হয় নিরাপদ ও শয়তানের প্রভাবমুক্ত।
এ যৌন মিলন তথা স্বামী-স্ত্রীর সহবাসে যদি সন্তান জন্ম নেয়, পরবর্তী জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এ সন্তান শয়তানের যাবতীয় প্রভাব থেকে নিরাপদ থাকে।
আর এ দোয়া না পড়ে স্বামী-স্ত্রী মিলন করলে শয়তান সে মিলনে অংশগ্রহণ করে এবং স্বামী-স্ত্রীর মনে খারাপ সংকল্প তৈরি করে। যা দাম্পত্য জীবনে কলহ বয়ে আনে। আর সে মিলনে যদি কোনো সন্তান জন্ম নেয়, সে সন্তানও শয়তানের প্রভাবমুক্ত হতে পারে না।
তাই শয়তানের প্রভাবমুক্ত পরিবার গড়তে স্বামী-স্ত্রী মিলনের আগে প্রিয়নবির শেখানো এ দোয়া পড়া আবশ্যক। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ নিজ স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা করে তখন উক্ত দোয়া পড়ে যেন মিলিত হয়। এ মিলনের ফলে যদি তাদের কোনো সন্তান আসে, শয়তান সে সন্তানের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ (বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত)।
স্বামী-স্ত্রী মিলনের আগে দোয়া পড়া কিংবা তা জেনে নেয়া কোনো লজ্জার বিষয় নয়, বরং সুন্দর পরিবার গঠন ও বংশ বৃদ্ধির জন্য এটা একটা উত্তম পরিকল্পনাও বটে।
কারণ যারা সহবাসে লিপ্ত হয় তারা এ কথা নিশ্চিতভাবে জানে না যে, কোন মিলনে সন্তান জন্ম নেবে। তাই প্রত্যেক মিলনের আগেই স্বামী-স্ত্রী এ দোয়া পড়ে নেবে। এ কারণেই হজরত আলি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন-
‘যে ব্যক্তি সহবাসের ইচ্ছা করে তার নিয়ত যেন এমন হয় যে, আমি ব্যভিচার থেকে দূরে থাকবো। আমার মন এদিক-ওদিক ছুটে বেড়াবে না আর জন্ম নেবে নেককার ও সৎ সন্তান। এই নিয়তে স্বামী-স্ত্রী মিলনে লিপ্ত হলে, তাতে সাওয়াব তো হবেই বরং সঙ্গে সঙ্গে তাদের নেক উদ্দেশ্যও পূরণ হয়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সব বিবাহিত দম্পতিকে মিলনের আগে প্রিয়নবির শেখানো দোয়া পড়ার মাধ্যমে শয়তানের যাবতীয় ক্ষতি থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।