সাহাবাকেরামের ফযীলত

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

জুমার খুতবা:

========

৫ম জুমা, ২৯ মুহাররম-১৪৩৯ হজিরী, ২০ অক্টোবর-২০১৭ সাল

ছাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম এর ফযীলত

**********************************************

সৈয়দ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল আযহারী

(বিএ. অনার্স, আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়, কায়রো, মিশর। এম.এ. এম.ফিল. কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়, মিশর। পিএইচ.ডি গবেষক,চ.বি.)

সহকারী অধ্যাপক, সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ. খতীব, মুসাফির খানা জামে মসজিদ, নন্দন কানন, চট্

بسم الله الرحمن الرحيم. الحمد لله رب العالمين والصلاة والسلام على سيد المرسلين وعلى آله وصحبه أجمعين, أما بعد!

ছাহাবায়ে কেরাম হেদায়াতের নক্ষত্র, তাকওয়ার পূর্ণচন্দ্র, দীপ্তিমান তারকা, সুদীপ্ত পূর্ণিমা; রাতের দরবেশ, দিনের অশ্বারোহী; যাঁরা আপন আঁখি যুগলকে সজ্জিত করেছেন মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নূরের সুরমায়; ইসলাম নিয়ে যারা ছুটে গেছেন পূর্বে ও পশ্চিমে, যার বদৌলতে ইসলাম ছড়িয়ে পড়েছে ভূভাগের প্রতিটি দেশে এবং প্রতিটি প্রান্তে। তাঁরা ছিলেন আনসার, যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে করেছেন নুসরাত ও সাহায্য। তাঁরা ছিলেন মুহাজির, যারা কেবলই আল্লাহর জন্য করেছেন হিজরত, বিসর্জন দিয়েছেন নিজেদের দেশ ও সহায়সম্পদ।

আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু কত সুন্দরই না বলেছেন। তিনি বলেন,

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ , رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ , قَالَ : ” إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ نَظَرَ فِي قُلُوبِ الْعِبَادِ فَوَجَدَ قَلْبَ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرَ قُلُوبِ الْعِبَادِ ، فَاصْطَفَاهُ لِنَفْسِهِ , وَابْتَعَثَهُ بِرِسَالَتِهِ ، ثُمَّ نَظَرَ فِي قُلُوبِ الْعِبَادِ بَعْدَ قَلْبِهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَآلِهِ وَسَلَّمَ فَوَجَدَ قُلُوبَ أَصْحَابِهِ خَيْرَ قُلُوبِ الْعِبَادِ بَعْدَ قَلْبِهِ ، فَجَعَلَهُمْ وُزَرَاءَ نَبِيِّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، يُقَاتِلُونَ عَلَى دِينِهِ ، فَمَا رَآهُ الْمُسْلِمُونَ حَسَنًا فَهُوَ عِنْدَ اللَّه حَسَنٌ ، وَمَا رَآهُ الْمُسْلِمُونَ سَيِّئًا فَهُوَ عِنْدَ اللَّهِ سَيِّئٌ ” .

‘আল্লাহ বান্দাদের অন্তরের প্রতি দৃষ্টি দিয়ে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্তরকে সর্বোত্তম দেখতে পান। ফলে তিনি তাঁকে নিজের (বিশেষ ভালোবাসা ও অনুগ্রহের) জন্য নির্বাচন করেন। তাঁকে তাঁর রিসালাত সমেত প্রেরণ করেন। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অন্তরের পর তিনি নযর দেন বান্দাদের অন্তরে। এ দফায় তিনি তাঁর ছাহাবীগণের অন্তরকেই সকল বান্দার অন্তরের মধ্যে সর্বোত্তম দেখতে পান। ফলে তিনি তাঁদেরকে তাঁর নবীর সাহায্যকারী বানিয়ে দেন। যারা তাঁর দীনের জন্য লড়াই করেন। অতএব মুসলিমরা (সাহাবীগণ) যে জিনিসকে সুন্দর ও ভালো মনে করে, তা আল্লাহর কাছেও পছন্দনীয় বিবেচিত হয়। আর যা তাঁদের কাছে মন্দ বিবেচিত হয় তা তাঁর কাছেও মন্দ হিসেবে গৃহীত হয়।’( )

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর তাঁরাই বহন করেছেন ইসলামের ঝা-া। ইসলামের পতাকা উড্ডীন করেছেন পৃথিবীর নানা প্রান্তে। আল্লাহ তাঁদের মাধ্যমে ইসলাম ও মুসলিমকে সম্মানিত করেছেন। এ কারণেই আমরা বিচারের দিন পর্যন্ত তাঁদের নিকট ঋণী। কবি বলেন, ‘ইসলামের সম্মান তো তাঁদের ছায়াতেই; আর মর্যাদা তো তাই, যা তাঁরা নির্মাণ করে সুদৃঢ় করেছেন!’

তাঁরাই সুন্নাহ সম্পর্কে বেশি জানতেন, কুরআনও সবচে ভালো বুঝতেন তাঁরাই। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের কাছে কুরআনের অর্থ ব্যাখ্যা করেছেন, এর অস্পষ্ট বিষয় তাঁদের সামনে স্পষ্ট করেছেন এবং এর কঠিন বিষয় তাঁদের জন্য সহজ করে বলেছেন। তাঁরাই এ কুরআনের তাফসীর সম্পর্কে সবচে বেশি জ্ঞাত। কারণ, তাঁরা কুরআন নাযিলের প্রেক্ষাপট তথা সময় ও অবস্থা প্রত্যক্ষ করেছেন( )।

ইমাম শাফেয়ী রহ. তাঁর ‘আর-রিসালা’ গ্রন্থে ছাহাবীগণের কথা আলোচনা করেন। তাঁদের যথাযোগ্য প্রশংসা করেন। অতপর তিনি বলেন,

قَالَ الشَّافِعِيُّ:أَثْنَى اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى عَلَى أَصْحَابِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْه وَسَلَّمَ فِي الْقُرْآنِ وَالتَّوْرَاةِ وَالْإِنْجيلِ وَسِيقَ لَهُمْ عَلَى لِسَانِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيه وَسَلَّمَ مِنَ الْفَضْلِ مَا لَيْسَ لِأحَدٍ بَعْدَهُمْ فَرَحِمَهُمُ اللهُ وَهَنَّأَهُمْ بِمَا آتَاهُمْ مِنْ ذَلِكَ بِبُلُوغِ أعْلَى مَنَازِلِ الصِّدِّيقِينَ وَالشّهداءِ وَالصَّالِحِينَ فَهُمْ أَدَّوْا إلْيَنَا سُنَنَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْه وَسَلَّمَ وَشَاهَدُوهُ وَالْوَحْيُ يَنْزِلُ عَلَيه فَعَلِمُوا مَا أَرَادَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيه وَسَلَّمَ عَامًّا وَخَاصًّا وَعَزْمًا وَإِرْشَادًا وَعَرَفُوا مِنْ سُنَّتِهِ مَا عَرَفْنَا وَجَهْلِنَا، وَهُمْ فَوْقَنَا فِي كُلِّ عِلْمٍ وَاجْتِهَادٍ وَوَرَعٍ وَعَقْلٍ وَأَمْرٍ اُسْتُدْرِكَ بِهِ عِلْمٌ وَاسْتُنْبِطَ بِهِ، وآراؤهم لَنَا أَحْمَدُ وَأَوْلَى بِنَا مِنْ آرائنا عندَنَا لِأَنْفَسُنَا وَاللهُ أعْلَمُ. ( )

‘তাঁরা ইলম, ইজতিহাদ, তাকওয়া ও জ্ঞান-বুদ্ধিতে আমাদের ওপরে। তাঁরা আমাদের চেয়ে উত্তম এমন বিষয়ে যে ব্যাপারে ইলম জানা গেছে কিংবা যা ইস্তিমবাত বা উদ্ভাবন করা হয়েছে। তাঁদের রায়গুলো আমাদের কাছে প্রশংসনীয়। আমাদের নিজেদের ব্যাপারেই আমাদের সিদ্ধান্তের চেয়ে তাঁরাই অগ্রাধিকার পাবার হকদার।’ ( )

আমাদের উপর তাদের বহু অনুগ্রহ রয়েছে। আমাদের পূর্বেই তারা ইসলামের এ নিয়ামত প্রাপ্ত হয়েছেন এবং আমাদের কাছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি প্রেরিত বাণী পৌঁছিয়ে দিয়েছেন ও তন্মধ্যে যা অস্পষ্ট ছিল তা স্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ; তাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন এবং তাদেরকে সন্তুষ্ট করুন।

ছাহাবা কারা? বুখারী রহ. তাঁর সহীহ গ্রন্থে ছাহাবীর সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে: ‘মুসলিমদের মধ্যে যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গ লাভ করেছেন অথবা তাঁকে দেখেছেন তিনিই ছাহাবী।’ অর্থাৎ ছাহাবী হলেন, যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঈমানসহ দেখেছেন এবং ইসলাম নিয়েই ইন্তিকাল করে গেছেন।

‘ছাহাবী’র সংজ্ঞায় এ ব্যাপকতা মূলত ছোহবত বা সাহচর্যের মর্যাদা এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মর্যাদার মহত্ত্বের প্রতি লক্ষ্য করে। কেননা নবুওতের নূর দর্শন মুমিনের অন্তরে একটি সংক্রামক শক্তি সঞ্চার করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বরকতে মৃত্যু অবধি এ নূরের প্রতিক্রিয়া দৃশ্যমান হয় দর্শকের ইবাদত-বন্দেগীতে এবং তার জীবনযাপন প্রণালীতে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি বাণীতে আমরা এর সাক্ষ্য পাই। আনাস ইবন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدَّرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” طُوبَى لِمَنْ رَآنِي وَآمَنَ بيِ ، وَطُوبَى ثُمَّ طُوبَى ثُمَّ طُوبَى لِمنْ آمَنَ بِي وَلَمْ يَرَنيِ ” ( )

‘সুসংবাদ ওই ব্যক্তির জন্য যে আমাকে দেখেছে এবং আমার প্রতি ঈমান এনেছে। আর সুসংবাদ ওই ব্যক্তির জন্য যে আমার প্রতি ঈমান এনেছে অথচ আমাকে দেখেনি।’ এ কথা তিনি সাতবার বললেন। ( )

এ সংজ্ঞা মতে ছাহাবীরা ছোহবত বা সাহচর্যের সৌভাগ্য এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দর্শনের মর্যাদায় অভিষিক্ত। আর তা এ কারণে যে, নেককারদের ছোহবতেরই যেখানে এক বিরাট প্রভাব বিদ্যমান, সেখানে সকল নেককারের সরদার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ছোহবতের প্রতিক্রিয়া ও প্রভাব কেমন হবে তা বলাই বাহুল্য। অতএব যখন কোনো মুসলিম তাঁর দর্শন লাভে ধন্য হয়, হোক তা ক্ষণিকের জন্যে, তার আত্মা ঈমানের দৃঢ়তায় টইটুম্বুর হয়ে যায়। কারণ, সে ইসলামে দীক্ষিত হবার মাধ্যমে স্বীয় আত্মাকে ‘গ্রহণ’ তথা কবুলের জন্য প্রস্তুতই রেখেছিল। ফলে যখন সে ওই মহান নূরের মুখোমুখী হয়, তখন তার কায়া ও আত্মায় এর প্রভাব ভাস্কর হয়ে ওঠে।’( )

ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন,

عَنْ نُسَيْرِ بْنِ ذُعْلُوقٍ ، قَالَ : سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ ، يَقُولُ : ” لا تَسُبُّوا أَصْحَابَ مُحَمَّدٍ فَلَمَقَامُ أَحَدِهِمْ سَاعَةً خَيْرٌ مِنْ عِبَادَةِ أَحَدِكُمْ أَرْبَعِينَ سَنَةً “( )

‘তোমরা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ছাহাবীদের গালাগাল করো না। কেননা তাদের এক মুহূর্তের (ইবাদতের) মর্যাদা তোমাদের প্রত্যেকের জীবনের আমলের চেয়ে বেশি।’ ( )

এ ব্যাপারে ইবন হাযম একটি মূল্যবান বাক্য রয়েছে, তিনি বলেন, ‘আমাদের কাউকে যদি যুগ-যুগান্তর ব্যাপ্ত সুদীর্ঘ হায়াত প্রদান করা হয় আর সে তাতে অব্যাহতভাবে ইবাদত করে যায়, তবুও তা ওই ব্যক্তির সমকক্ষ হতে পারবে না যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক সেকেন্ড বা তার চেয়ে বেশি সময়ের জন্য দেখেছেন।’( )

আল কুরআনে ছাহাবায়ে কেরাম: আল্লাহ তা‘আলা তাঁর পবিত্র গ্রন্থে অনেক স্থানে এ ছাহাবীদের কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁদের সম্মান ও শ্রেষ্ঠত্বের কথা ব্যক্ত করেছেন। আল্লাহ বলেন,

وَالسّابِقونَ الأَوَّلونَ مِنَ المُهاجِرينَ وَالأَنصارِ وَالَّذينَ اتَّبَعوهُم بِإِحسانٍ رَضِيَ اللَّـهُ عَنهُم وَرَضوا عَنهُ وَأَعَدَّ لَهُم جَنّاتٍ تَجري تَحتَهَا الأَنهارُ خالِدينَ فيها أَبَدًا ذلِكَ الفَوزُ العَظيمُ﴿التوبة-১০০﴾

‘মুহাজির ও আনছারগণের মধ্যে অগ্রবর্তী ছাহাবীগণ এবং কল্যাণকর্মের মাধ্যমে তাঁদের অনুসারীগণের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়েছেন। আর তাঁরাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন’ (তওবাহ ১০০)

ছাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে আমাদের অন্তঃকরণকে নিষ্কলুষ রাখতে হবে। তাঁদের প্রতি হৃদয়ে কোন হিংসা-বিদ্বেষ বা ঘৃণা থাকবে না; থাকবে না কোন প্রকার শত্রুতা। বরং হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান পাবে শুধু ভালবাসা, অনুগ্রহ আর সহানুভূতি। আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,

وَالَّذِينَ جَاءُوا مِن بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ﴿الحشر-১০﴾

‘যারা তাদের পরে এসেছে তারা বলে: ‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে ও আমাদের ভাই যারা ঈমান নিয়ে আমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে তাদের ক্ষমা করুন; এবং যারা ঈমান এনেছিল তাদের জন্য আমাদের অন্তরে কোনো বিদ্বেষ রাখবেন না; হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি দয়াবান, পরম দয়ালু।’ {সূরা আল-হাশর, আয়াত : ১০}

ছাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)-এর গুণকীর্তন শুধুমাত্র পবিত্র কুরআনেই আসেনি; বরং তাঁদের সৃষ্টির আগেই তাওরাত ও ইঞ্জীলে তাঁদের প্রশংসার কথা বিঘোষিত হয়েছে। সূরা আল-ফাত্হের শেষ আয়াতে মহান আল্লাহ ছাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) সম্পর্কে ইরশাদ করেন,

مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّـهِ وَالَّذِينَ مَعَهُ أَشِدَّاءُ عَلَى الْكُفَّارِ رُحَمَاءُ بَيْنَهُمْ تَرَاهُمْ رُكَّعًا سُجَّدًا يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّنَ اللَّـهِ وَرِضْوَانًا سِيمَاهُمْ فِي وُجُوهِهِم مِّنْ أَثَرِ السُّجُودِ ذَلِكَ مَثَلُهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَمَثَلُهُمْ فِي الْإِنجِيلِ كَزَرْعٍ أَخْرَجَ شَطْأَهُ فَآزَرَهُ فَاسْتَغْلَظَ فَاسْتَوَى عَلَى سُوقِهِ يُعْجِبُ الزُّرَّاعَ لِيَغِيظَ بِهِمُ الْكُفَّارَ وَعَدَ اللَّـهُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ مِنْهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْرًا عَظِيمًا ﴿الفتح-২৯﴾

‘হযরত মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর সাথে যারা আছে তারা কাফিরদের প্রতি অত্যন্ত কঠোর; পরস্পরের প্রতি সদয়, আপনি তাদেরকে রুকূকারী, সিজদাকারী অবস্থায় দেখতে পাবেন। তারা আল্লাহর করুণা ও সন্তুষ্টি অনুসন্ধান করছে। তাদের আলামত হচ্ছে, তাদের চেহারায় সিজদার চি‎হ্ন থাকে। এটাই তাওরাতে তাদের দৃষ্টান্ত। আর ইনজীলে তাদের দৃষ্টান্ত হলো একটি চারাগাছের মত, যে তার কচিপাতা উদগত করেছে ও শক্ত করেছে, অতঃপর তা পুষ্ট হয়েছে ও স্বীয় কা-ের ওপর মজবুতভাবে দাঁড়িয়েছে, যা চাষীকে আনন্দ দেয়। যাতে তিনি তাদের দ্বারা কাফিরদেরকে ক্রোধান্বিত করতে পারেন। তাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদের জন্য ক্ষমা ও মহাপ্রতিদানের ওয়াদা করেছেন।’ {সূরা আল-ফাতহ, আয়াত : ২৯}

ছাহাবায়ে কেরাম (রাঃ)-এর প্রতি সুবাসিত এই প্রশংসা ও গুণকীর্তন উল্লিখিত হয়েছে তাওরাত ও ইঞ্জীলে। এ ছাড়া আরও অনেক আয়াতে ছাহাবা রাদিয়াল্লাহু আনহুমের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে।

হাদিসে পাকে ছাহাবায়ে কেরাম:

একইভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও ছাহাবীদের অকুণ্ঠ প্রশংসা করেছেন। তাঁদের মর্যাদা ও মর্তবার কথা ব্যক্ত করেছেন। এ কথা থেকেই মানুষ তাঁদের মর্যাদা অনুধাবন করতে পারে যে, ইবাদত-বন্দেগী ও তাকওয়া-পরহেযগারীতে কেউ যতই উচ্চতায় পৌঁছুক না কেন ছাহাবীগণ যে স্তরে পৌঁছেছিলেন তার ধারে-কাছেও ঘেঁষতে পারবে না। নিচের হাদীসই সে কথা বলছে। ছাহাবী আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

وفي الصحيحين عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ : ” يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ يَغْزُونَ فِيهِ فِئَامًا مِنَ النَّاسِ ، فَيُقَالُ : هَلْ فِيكُمْ مِنْ صَحْبِ رَسُولِ اللَّهِ ؟ فَيُقَالُ : نَعَمْ . فَيُفْتَحُ لَهُمْ , ثُمَّ يَأْتِي عَلَيْهِمْ زَمَانٍ يَغْزُو فِيهِ فِئَامٌ مِنَ النَّاسِ ، فَيُقَالُ : هَلْ فِيكُمْ مِنْ صَحْبِ أَصْحَابِ رَسُولِ اللَّهِ ؟ فَيُقَالُ : نَعَمْ , فَيُفْتَحُ لَهُمْ , ثُمَّ يَأْتِي عَلَيْهِمْ زَمَانٌ يَغْزُو فِيهِ فِئَامٌ مِنَ النَّاسِ ، فَيُقَالُ : هَلْ فِيكُمْ مِنْ صَحْبِ مَنْ صَاحَبَهُمْ ؟ فَيُقَالُ : نَعَمْ . فَيُفْتَحُ لَهُمْ . ( )

‘লোকদের ওপর এমন এক যুগ আসবে যখন একদল লোক যুদ্ধ করবে, তারা বলবে, তোমাদের মধ্যে কি কেউ আছেন যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গ লাভ করেছেন? সবাই বলবে, হ্যাঁ। তখন তাদের বিজয় দান করা হবে। অতপর লোকদের ওপর এমন এক যুগ আসবে যখন একদল লোক যুদ্ধ করবে, তারা বলবে, তোমাদের মধ্যে কি কেউ আছেন যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গলাভকারী কারও ছোহবত পেয়েছেন? সবাই বলবে, জী হ্যাঁ। তখন তাদের বিজয় দান করা হবে। অতপর লোকদের ওপর এমন এক যুগ আসবে যখন একদল লোক যুদ্ধ করবে, তারা বলবে, তোমাদের মধ্যে কি কেউ আছেন যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গ লাভকারীর সোহবতপ্রাপ্ত কারও সাহচর্য পেয়েছেন? সবাই বলবে, হ্যাঁ। তখন তাদের বিজয় দান করা হবে।’( )

عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ , قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ : ” لا تَسُبُّوا أَصْحَابِي , فَوَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا أَدْرَكَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلا نَصِيفَهُ( )

আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,‘তোমরা আমার ছাহাবীদের গালমন্দ করো না। সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ। যদি তোমাদের কেউ উহুদ পরিমাণ স্বর্ণও আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তবে তা তাদের এক মুদ বা তার অর্ধেকরও সমকক্ষ হতে পারবে না।’( )

কোন একজন ছাহাবী যদি একজন মিসকীনকে এক মুদ্দ (সামান্য) পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য দান করে আর আপনি এক ওহোদ পরিমাণ স্বর্ণ দান করেন, তথাপিও আপনি ঐ ছাহাবীর এক মুদ্দ পরিমাণ দানের ধারে কাছেও যেতে পারবেন না। যদিও এটি সম্ভব নয় যে, আমাদের কারো ওহোদ পরিমাণ স্বর্ণ হবে এবং সে তা আল্লাহ্র রাস্তায় ব্যয় করবে।

ছহীহ হাদীছে এসেছে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بن مسعود رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: خَيْرُ النَّاسِ قَرْنِي، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ، ثُمَّ يَجِيءُ أَقْوَامٌ تَسْبِقُ شَهَادَةُ أَحَدِهِمْ يَمِينَهُ، وَيَمِينُهُ شَهَادَتَهُ ( )

‘আমার যুগের মানুষই সর্বোত্তম মানুষ। অতঃপর তার পরের যুগের মানুষ, অতঃপর তার পরের যুগের মানুষ’( )।

আরেক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

“النُّجُومُ أَمَنَةٌ لِلسَّمَاءِ فَإِذَا ذَهَبَتْ النُّجُومُ أَتَى السَّمَاءَ مَا تُوعَدُ وَأَنَا أَمَنَةٌ لِأَصْحَابِي فَإِذَا ذَهَبْتُ أَتَى أَصْحَابِي مَا يُوعَدُونَ وَأَصْحَابِي أَمَنَةٌ لِأُمَّتِي فَإِذَا ذَهَب أَصْحَابِي أَتَى أُمَّتِي مَا يُوعَدُونَ”. ( )

‘নক্ষত্ররাজি হলো আসমানের জন্য নিরাপত্তাস্বরূপ, তাই যখন তারকারাজি ধ্বংস হয়ে যাবে, আসমানের জন্য যা প্রতিশ্রুত ছিল তা এসে যাবে। একইভাবে আমি আমার ছাহাবীদের জন্য নিরাপত্তাস্বরূপ। অতএব আমি যখন চলে যাব তখন আমার ছাহাবীদের ওপর তা আসবে যা তাদের ওয়াদা করা হয়েছিল। আর আমার ছাহাবীরা আমার উম্মতের জন্য নিরাপত্তাস্বরূপ। যখন আমার ছাহাবীরা চলে যাবে তখন আমার উম্মতের ওপর তা আসবে যা তাদের ওয়াদা করা হয়েছিল।’ ( )

حديث أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: “افْتَرَقَتِ الْيَهُودُ عَلَى إِحْدَى أَوْ ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً، وَتَفَرَّقَتِ النَّصَارَى عَلَى إِحْدَى أَوْ ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً، وَتَفْتَرِقُ أُمَّتِى عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ فِرْقَةً” ( )

“হাদীছ শরীফে আরো উল্লেখ আছে যে, অতি শীঘ্রই আমার উমমত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে । একটি দল ব্যতীত বাহত্তরটি দলই জাহান্নামে যাবে। তখন ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ বললেন, ইয়া রসুলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যে একটি দল নাযাতপ্রাপ্ত, সে দল কোন্টি? হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি এবং আমার ছাহাবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম’র মত ও পথের উপর যারা কায়েম থাকবে । অর্থাৎ তারাই নাযাতপ্রাপ্ত দল । (তিরমিযী শরীফ) অপর এক হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে :

وحديث معاوية بن أبي سفيان رضي الله عنهما قال: ألا إن رسول الله صلى الله عليه وسلم قام فينا فقال: “أَلاَ إِنَّ مَنْ قَبْلَكُمْ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ افْتَرَقُوا عَلَى ثِنْتَيْنِ وَسَبْعِينَ مِلَّةً، وَإِنَّ هَذِهِ الْمِلَّةَ سَتَفْتَرِقُ عَلَى ثَلاَثٍ وَسَبْعِينَ ، ثِنْتَانِ وَسَبْعُونَ فِي النَّارِ، وَوَاحِدَةٌ فِي الْجَنَّةِ، وَهِي الْجَمَاعَةُ”( )

“হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে, বাহাত্তরটি দল হবে জাহান্নামী, আর একটি দল হবে জান্নাতী । আর সে দলটিই হচ্ছে জামায়াতে সাহাবা (তথা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত) । ( )

نِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : ” اللَّهَ اللَّهَ فِي أَصْحَابِي ، لا تَتَّخِذُوهُمْ غَرَضًا مِنْ بَعْدِي ، فَمَنْ أَحَبَّهُمْ فَبِحُبِّي أَحَبَّهُمْ ، وَمَنْ أَبْغَضَهُمْ فَبِبُغْضِي أَبْغَضَهُمْ ، وَمَنْ آذَاهُمْ فَقَدْ آذَانِي ، وَمَنْ آذَانِي فَقَدْ آذَى اللَّهَ ، وَمَنْ آذَى اللَّهَ فَيُوشِكُ أَنْ يَأْخُذَهُ ” .

আবদুল্লাহ ইবন মুগাফফাল রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,‘আমার ছাহাবীদের ব্যাপারে তোমরা আল্লাহকে ভয় করো আল্লাহকে ভয় কর। আমার পরবর্তীকালে তোমরা তাঁদের সমালোচনার নিশানায় পরিণত করো না। কারণ, যে তাদের ভালোবাসবে সে আমার মুহাব্বতেই তাদের ভালোবাসবে। আর যে তাঁদের অপছন্দ করবে সে আমাকে অপছন্দ করার ফলেই তাদের অপছন্দ করবে। আর যে তাঁদের কষ্ট দেবে সে আমাকেই কষ্ট দেবে। আর যে আমাকে কষ্ট দেবে সে যেন আল্লাহকেই কষ্ট দিল। আর যে আল্লাহকে কষ্ট দেবে অচিরেই আল্লাহ তাকে পাকড়াও করবেন।’( )

উপরের উদ্ধৃতিগুলো থেকে আমরা জানলাম যে, আল্লাহ তা‘আলা ছাহাবীদের প্রশংসা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁদের ওপর তাঁর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আল্লাহ কর্তৃক তাঁদের স্তুতি ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক তাঁদের ভূয়সী প্রশংসাই প্রমাণ করে যে তাঁরা হলেন ন্যায়নিষ্ঠ। সর্বোপরি আপন নবীর সঙ্গী ও তাঁর সহযোগী হিসেবে আল্লাহ যাদের ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন তাঁদের তো আর কোনো ন্যায়নিষ্ঠতা প্রমাণের প্রয়োজন নেই। এর চেয়ে বড় আর কোনো সনদ হতে পারে না। এর চেয়ে পূর্ণতার আর কোনো দলীল হতে পারে না। ( )

আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর আরেকটি উক্তি এখানে প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন,

قَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ” مَنْ كَانَ مِنْكُمْ مُتَأَسِّيًا فَلْيَتَأَسَّ بِأَصْحَابِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؛ فَإِنَّهُمْ كَانُوا أَبَرَّ هَذِهِ الأُمَّةِ قُلُوبًا وَأَعْمَقَهَا عِلْمًا وَأَقَلَّهَا تَكَلُّفًا وَأَقْوَمَهَا هَدْيًا وَأَحْسَنَهَا حَالا ، قَوْمًا اخْتَارَهُمُ اللَّهُ لِصُحْبَةِ نَبِيِّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَاعْرِفُوا لَهُمْ فَضْلَهُمْ وَاتَّبِعُوهُمْ فِي آثَارِهِمْ ؛ فَإِنَّهُمْ كَانُوا عَلَى الْهُدَى الْمُسْتَقِيمِ. “( )

“তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অনুসরণ করতে চায় তবে সে যেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ছাহাবীগণেরই অনুসরণ করে। কারণ, তাঁরাই ছিলেন এ উম্মতের মধ্যে আত্মার দিক থেকে সবচেয়ে বেশি নেককার, ইলমের দিক থেকে গভীরতর, লৌকিকতার দিক থেকে সল্পতম, আদর্শের দিক থেকে সঠিকতম, অবস্থার দিক থেকে শুদ্ধতম। তাঁরা এমন সম্প্রদায় আল্লাহ যাদেরকে আপন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সংস্পর্শধন্য হবার জন্য এবং তাঁর দ্বীন কায়েমের উদ্দেশ্যে বাছাই করেছেন। অতএব তোমরা তাঁদের মর্যাদা অনুধাবন করো এবং তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করো। কারণ, তাঁরা ছিলেন সীরাতে মুস্তাকীমের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ( )

وصلى الله على سيدنا محمد وعلى آله وصحبه أجمعين. والحمد لله رب العالمين

==============================================

– মুসনাদ আহমদ : ৩৬০০; মুসনাদ বাযযার : ১৮১৬

– ড. মুহাম্মদ আবূ শাহবা, আল-ইসরাঈলিয়্যাত ওয়াল মাওযূআত ফী কুতুবিত তাফসীর, পৃষ্ঠা : ৫২

– مناقب الشافعي للبيهقي ج১ ص ৪৪২ و درء تعارض العقل والنقل لابن تيمية ج৫ ص৭৩ و منهاج السنة النبوية في نقض كلام الشيعة القدرية لابن تيمية ج ৬ ص৮১ و مجموع الفتاوى لابن تيمية ج৪ ص১৫৮ واعلام الموقعين عن رب العالمين لابن القيم ج ১ص৬৩

-[মুকাদ্দাম ইবনু সালাহ, ড. নূরুদ্দীন ‘ঈতর সম্পাদনা, বৈরুত, প্রকাশকাল : ২০০০ ইং, পৃষ্ঠা : ২৯৭

– ،(الأمالي المطلقة لابن حجر গ্ধ طوبى لمن رآني وآمن بي ، وطوبى ثم طوبى ثم طوبى لمن .. رقم الحديث: ৪৩ مسند أحمد وابن حبان والحاكم والبخاري في التاريخ وهو حديث صحيح)

– মুসনাদ আহমাদ : ২২৪৮৯

– তাকিউদ্দীন সুবুকী, কিতাবুল ইবহাজ ফী শারহিল মিনহাজ : ১/১২

– فضائل الصحابة لأحمد بن حنبل গ্ধ فَضَائِلُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ … رقم الحديث: ১৫২৯

– ইবন মাজা : ১৬২; আহমাদ বিন হাম্বল, ফাযাইলুস ছাহাবা : ১৫

– ইবন হাযম, আল-ফাছলু ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়া ওয়ান নিহাল : ৩৩/২

– (صحيح البخاري গ্ধ كتاب فضائل الصحابة গ্ধ باب فضائل أصحاب النبي صلى الله عليه وسلم. رقم الحديث ৩৪৪৯)

– [বুখারী : ৩৬৪৯; মুসনাদ আহমদ : ২৩০১০]

– “( صحيح البخاري গ্ধ كتاب فضائل الصحابة গ্ধ باب قول النبي صلى الله عليه وسلم لو كنت متخذا خليلاصحيح البخاري – المناقب (৩৪৭০) صحيح مسلم – فضائل الصحابة (২৫৪১) سنن الترمذي – المناقب (৩৮৬১) سنن أبي داود – السنة (৪৬৫৮) سنن ابن ماجه – المقدمة (১৬১) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (৩/১১) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (৩/৫৫) مسند أحمد – باقي مسند المكثرين (৩/৬৪)

– [বুখারী : ৩৬৭৩; মুসলিম : ৬৬৫১]

– روى البخاري (২৬৫২) ، ومسلم (২৫৩৩)

– বুখারী-২৬৫২, মুসলিম-২৫৩৩

– صحيح مسلم গ্ধ كتاب فضائل الصحابة গ্ধ باب بيان أن بقاء النبي صلى الله عليه وسلم أمان لأصحابه وبقاء أصحابه أمان للأمة. رقم الحديث ২৫৩১ أخرجه أحمد (৪/৩৯৮ ، رقم ১৯৫৮৪) ، ومسلم (৪/১৯৬১ ، رقم ২৫১) . وأخرجه أيضًا : ا لبزار (৮/১০৪ ، رقم ৩১০২) ، وابن حبان (১৬/২৩৪ ، رقم ৭২৪৯).

– [মুসলিম : ৬৬২৯; মুসনাদ আহমদ : ১৯৫৬৬]

– رواه أبود داوود والترمذي وابن ماجة وأحمد ، وقال الترمذي: حسن صحيح.

– و صحّحه الترمذي، و ابن حبان (১৪।১৪০)، و الحاكم (১।১২৮)، والمنذري، و الشاطبي في الاعتصام (২।১৮৯) و السيوطي في الجامع الصغير (২।২০)، وجوّده الزين العراقي في تخريج أحاديث الإحياء.

-ইবনু হিব্বান-১৪/১৪০,হাকেম-১/১২৮

– [তিরমিযী : ৪২৩৬; সহীহ ইবন হিব্বান : ৭২৫৬]

– ইবন আবদিল বার, আল-ইস্তি‘আব ফী মা‘রিতিল আসহাব : ১/১]

– الشريعة للآجري ৪/১৬৮৬ ,كذا أخرجه أبو نعيم في الحلية (১/৩০৬،৩০৫

– আবূ নাঈম, হিলইয়াতুল আওলিয়া : ৩০৫/১; . মুহাম্মদ ইবন আবূ শাহবা, আল ইসরাঈলিয়্যাত ওয়াল মাওযূয়াত ফী কুতুবিত তাফসীর]

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment