হযরত লূত (আঃ) এর সম্প্রদায় বসবাস করত সাদ্দূম নগরীতে।। তারা ডাকাতি করত, প্রকাশ্য সভা বানিয়ে অশ্লীলতা বেহায়াপনা করত।। তারা সর্বপ্রথম এমন ১টি গর্হিত পাপ করে যা এর পূর্বে কোন আদম সন্তান করে নি।
লূত (আঃ) এর পাপী সম্প্রদায়-ই প্রথম সমকামীতা (অর্থাৎ পুরুষ-পুরুষ এবং মহিলা-মহিলা যৌন আচরণ করা) শুরু করে। লূত (আঃ) যখন তাদের-কে ইসলামের দাওয়াত দেন, তখন তারা লূত(আঃ) কে নির্বাসন দিতে চায় এবং উপহাস করে বলে -“এরা নিজেদের বেশী পবিত্র রাখতে চায়।”
তাফসীরে পাওয়া যায়, হযরত জিব্রাইল (আঃ), ইস্রাফীল (আঃ) ও মিকাঈল(আঃ)সুদর্শন পুরুষের রূপ ধরে হযরত লূত (আঃ) এর এলাকায় উপস্থিত হন, এবং মেহমান হন।। লূত(আঃ) গোপনে তাদের-কে আশ্রয় দেন, কিন্তু লূত(আঃ) এর এক স্ত্রী এই খবর পাপাচারী সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছে দেয়।
পাপাচারী সম্প্রদায় তাদের বিকৃত রুচি চরিতার্থ করার জন্য লূত (আঃ) এর বাসস্থান আক্রমন করে।। শেষ পর্যায়ে লূত (আঃ) আল্লাহের কাছে দোয়া করেন তাঁর মেহমানদের সম্ভ্রম রক্ষার জন্য, তখন ফেরেশতাগণ বলে উঠেন-
“ফেরেশতাগন বলল-হে লূত (আঃ) আমরা তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ হতে প্রেরিত ফেরেশতা। এরা কখনো তোমার দিকে পৌঁছাতে পারবে না। ব্যস তুমি কিছুটা রাত থাকতে থাকতে নিজের লোকজন নিয়ে বাইরে চলে যাও। আর তোমাদের কেউ যেন পিছনে ফিরে না তাকায়। কিন্তু নিশ্চয় তোমার স্ত্রী উপরও তা আপতিত হবে, যা ওদের উপর আপতিত হবে। ভোর বেলাই তাদের প্রতিশ্রুতির সময়, ভোর কি খুব নিকটে নয়??” -[সূরা হুদঃ আয়াত-১১]
মুফাসসিরগন বলেন- এরপর প্রথম জীব্রাইল (আঃ) তাদের সামনে আসেন এবং তাঁর ডানা দ্বারা হালকা আঘাত করেন এতেই সকল পাপাচারী অন্ধ হয়ে যায়।। এরপর জিব্রাইল (আঃ) লূত(আঃ) এর নিরাপদে সরে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।
এরপর ডানা দিয়ে সমগ্র সাদ্দূম নগরীকেই গোড়া সহ তুলে ফেলেন, এত উচুতে নিয়ে যান যে প্রথম আসমানের রক্ষী ফেরেশতা-রাও সাদ্দূম নগরীর কুকুর আর মোরগের ডাক শুনতে পাচ্ছিল।
এবার পুরো জনপদকে উল্টো করে সজোরে জমিনে ধ্বসিয়ে দেয়া হয়, এবার আল্লাহের পক্ষ থেকে প্রত্যেক পাপীর নাম লেখা পাথর বর্ষণ করা হয়, এমনকি যেসব পাপী বাসিন্দা কোন কাজে সেই নগরীর বাইরে ছিল তাদের উপর-ও প্রস্তর খন্ড এসে পড়ে। এরপর আল্লাহ সে স্থানে দূষিত পানির জলাধার প্রবাহিত করে দেন।
সমকামীতার শাস্তিঃ
———————-
১. ঈমাম এ আযম আবু হানিফা (রহঃ) এর মত সমকামিকে পাহাড় (বা উঁচু স্থান) থেকে ফেলে দিয়ে তারপর পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করতে হবে এটাই আল্লাহের বিধান।
২. ঈমাম শাফিঈ(রহঃ), ঈমাম আহমদ বিন হাম্বল(রহঃ) ও অন্যান্যদের মত কেবলমাত্র পাথর নিক্ষেপে হত্যা করাই যথেষ্ট।
[আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া]