শিয়াদের ঈমান বিধ্বংসী লোমহর্ষক মতবাদ সমূহ :——
সমস্ত প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামীনের জন্য । অসংখ্য-অগণিত দরুদ ও সালাম আল্লাহ্র সবচেয়ে প্রিয়ভাজন, হেদায়াতের আলোকবর্তিকা, আমাদের মত গুনাহগারদের কান্ডারী প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা’র প্রতি এবং তাঁর আহলে বায়ত এবং সকল সাহাবায়ে কিরামদের প্রতি ।
মহান রাব্বুল আলামীন কুর’আনে মাজীদে সাহাবায়ে কিরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম সম্পর্কে বলছেন-
وَالسَّابِقُونَ الأَوَّلُونَ مِنَ الْمُهَاجِرِينَ وَالأَنصَارِ وَالَّذِينَ اتَّبَعُوهُم بِإِحْسَانٍ رَّضِيَ اللّهُ عَنْهُمْ وَرَضُواْ عَنْهُ وَأَعَدَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي تَحْتَهَا الأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
“এবং সবার মধ্যে অগ্রগামী প্রথম মুহাজির ও আনসার আর যারা সৎকর্মের সাথে তাদের অনুসারী হয়েছে , আল্লাহ্ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহ্র প্রতি সন্তুষ্ট ; আর তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন বাগানসমূহ(জান্নাত সমূহ), যেগুলোর নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান । তারা সর্বদা সেগুলো মধ্যে অবস্থান করবে । এটাই হচ্ছে মহা সাফল্য ।” [সূরা তাওবা, আয়াত-১০০, অনুবাদ কানযুল ঈমান]
তাছাড়া নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা বলছেন-
ﻟَﺎ ﺗَﺴُﺒُّﻮﺍ ﺃﺻْﺤَﺎﺑِﻲْ ﻓَﻮَﺍﻟَّﺬِﻱْ ﻧَﻔْﺴِﻲْ ﺑِﻴَﺪِﻩِ ﻟَﻮْ ﺃﻧْﻔَﻖَ ﺃﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻣِﺜْﻞَ ﺟَﺒَﻞِ ﺃﺣُﺪٍ ﺫَﻫَﺒًﺎ ﻣَﺎ ﺑَﻠَﻎَ ﻣُﺪَّ ﺃﺣَﺪِﻫِﻢْ ﻭَﻟَﺎ ﻧَﺼِﻴْﻔَﻪُ .
“আমার সাহাবাদেরকে তোমরা গালি গালাজ কর না, যার হাতে আমার প্রাণ তার কসম করে বলছি- যদি তোমাদের কেউ ওহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ স্বর্ণও ব্যয় কর, তবে তাদের ব্যয় করা এক অঞ্জলি বা তার অর্ধেকের সমান পর্যন্ত ও পৌঁছোবে না”[সহিহ বুখারীঃ ৩৩৯৭ , সহিহ মুসলিমঃ ৪৬১১]
পৃথিবীর বুকে ‘শিয়া’ হচ্ছে এমন একটি সম্প্রদায়ের নাম, যাদের নিকট না আছে ‘ইসলাম’, না আছে ‘ঈমান’ । কখনো তারা সাহাবায়ে কিরামগনের অবমাননা করে, কখনো তারা হযরত আবু বকর সিদ্দীক এবং উমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু আনহুমার শানে অশোভনীয় শব্দাবলী প্রয়োগ করে । শুধু তা-ই নয়, এরা আল্লাহ্ তায়ালা এবং তাঁর হাবীব, আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা’র সম্পর্কেও চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে ।
সেদিন দেখলাম আমার এক মুসলমান ভাই বলছে যে, “যদি দুনিয়াতে শান্তি আনয়ন করতে চাও, তাহলে খমিনী’র ইসলাম(শিয়াদের ধর্ম) অনুসরণ করো ; যেমনটা খমিনী ইরানে এনেছে”।
মনে রাখবেন , খমিনী এমন এক বেয়াদব , যে নিজ গ্রন্থ সমূহে ইসলাম পরিপন্থী অনেক বিষোদগার করেছে । এতদসত্তেও কিছু লোক তাকে একজন ‘ইসলামিক স্কলার’ হিসেবে মনে করে , আবার কেউ তাকে একজন ধর্মীয় নেতা হিসেবে স্বীকার করে !! মূলত সে কোন ধর্মীয় নেতা নন , শয়তানের নেতা । বিশ্বস্থ সুত্রে জানা গিয়েছে যে, ইরানের মধ্যে ইহুদী-খ্রিষ্টানদের উপাসনালয় বিদ্যমান থাকলেও সুন্নীদের কোন মসজিদ বানাতে তারা সেখানে অনুমতি দেয় না । ইরানের মধ্যে প্রত্যেক ধর্ম প্রকাশ্যে তাদের ধর্মীয় কার্যাবলী পালন করতে পারলেও , কোন মুসলমানকে নিজ ইবাদাত এবং সত্য প্রচারের অনুমতি সেখানে প্রদান করা হয় না । এটাই কী ইসলাম?
শিয়া আলেমরা তাদের লিখিত গ্রন্থাবলীর মধ্যে আল্লাহ্ তায়ালা , আমাদের নবীজী সহ সকল আম্বিয়ায়ে কিরাম, সাহাবায়ে কিরাম , উম্মুহাতুল মু’মিনীন , আহলে বায়ত এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত সম্পর্কে এমন এমন মন্তব্য করেছে , যেগুলো শুনলে মনে হবে যে আপনার পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে ! অথচ বর্তমান সময়ে কতেক মুসলমান ভাইয়েরা সেই শিয়াদের প্রেমেই মগ্ন হয়ে গিয়েছেন । সুতরাং আমি তাদের এবং আপনাদের সমীপে শিয়াদের এসকল কু’কর্মের কিছু প্রমাণাদি উপস্থাপন করবো ; কিন্তু এর পূর্বে শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী আলাইহির রাহমাহ’র প্রণীত কিতাব “তোহফায়ে ইসনা আশারা”-এর হতে শিয়াদের ২৪ টি দলের নামগুলো কথা উল্লেখ করছি । তাদের নামগুলো উল্লেখ করার পর সেসকল প্রমাণাদি উপস্থাপন করবো, যেগুলো দ্বারা শিয়া আলেমরা ইসলামের প্রতি চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে ।
শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহিমাহুল্লাহ তাঁর কিতাব “তোহফায়ে ইসনা আশারায়” শিয়াদের ২৪ টি দলের কথা উল্লেখ করেছেন । নিম্নে তাদের নাম সমূহ উল্লেখ করা হলো ।
১। সাবা’ইয়্যাহ শিয়া (এরা আব্দুল্লাহ ইবনে সাবা’র অনুসারী)
২। মুফাদ্দালিয়্যাহ শিয়া (এরা মুফাদ্দাল সাইরাফীর সাথী)
৩। সারিগীয়্যাহ শিয়া (এরা সারিগ এর মতাদর্শ অনুসারী)
৪। বাজিইয়া শিয়া (এরা চরমপন্থী ঘালী শিয়াদের চতুর্থ দল)
৫। কামেলিয়্যাহ শিয়া (এরা আবু কামেল এর অনুসারী)
৬। মুগীরিয়্যাহ শিয়া (মুগীরাহ বিন সাঈদ আযালী’র দল এরা)
৭। জানাহিয়্যাহ শিয়া (আব্দুল্লাহ ইবনে মুয়াবিয়ার অনুসারী এরা)
৮। মানছুরিয়্যাহ শিয়া(এরা আবু মনসুর আযালীর গোত্র)
৯। গামামীয়্যাহ শিয়া (এদেরকে যবীয়্যাহও বলা হয়)
১০। উমুবিয়্যাহ শিয়া (এরা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহুল কারীমকে প্রিয় নবী মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা’র নবুয়তের সাথে অংশীদার মানে।নাউজুবিল্লাহ)
১১। তাফভিজিয়্যাহ শিয়া (এদের মধ্যে অনেকে মাওলা আলীকে পৃথিবীর স্রষ্টা বলে বিশ্বাস করে)
১২। খাত্তাবিয়্যাহ শিয়া (আবুল খাত্তাব মুহাম্মদ ইবনে রুবাইব এর গোত্র এরা)
১৩। মা’মারিয়্যাহ শিয়া (মা’মার এর দল এরা)
১৪। গোরাবিয়্যাহ শিয়া (তাদের বিশ্বাস হলো হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম ভূলবশত আমাদের প্রিয় নবীজীর নিকট ওহী নিয়ে এসেছিলেন)
১৫। যুবাবিয়্যাহ শিয়া (তারা বলে- “এক মাছি অন্য মাছির সদৃশ । তাই হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্ সদৃশ । তবে তিনি নবী ছিলেন।” নাউজুবিল্লাহ)
১৬। বায়ানিয়্যাহ শিয়া (বায়ান বিন সা’নান এর দল)
১৭। যমীয়্যাহ শিয়া (তারা নবীজীর শানে অপবাদ দেয়।)
১৮। ইসনিনিয়্যাহ শিয়া (তারা আমাদের নবীজী এবং হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু উভয়কে মান্য করে। নাউজুবিল্লাহ)
১৯। খামীয়্যাহ শিয়া (পাক পাঞ্জেতান আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালামকে খোদা মানে। নাউজুবিল্লাহ)
২০। নাসরিয়্যাহ শিয়া (এদের অপর নাম আলভী শিয়া)
২১। ইসহাকিয়্যাহ শিয়া (ইসহাক নামীয় এক ব্যক্তির অনুসারী এরা)
২২। ইলবাইয়্যাহ শিয়া (এরা ইলবা ইবনে আরওয়া আসাদীর অনুসারী)
২৩। রাযামিয়্যাহ শিয়া (এরা আবু মুসলিম খোরাসানী কে খোদা বলে । হারামকে হালাল বলাই এদের আক্বিদা । নাউজুবিল্লাহ)
২৪। মুক্কানাইয়্যাহ শিয়া (এরা ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু’র পুত্র মুকান্নাকে ‘খোদা’ বলে । নাউজুবিল্লাহ)
শিয়াদের এসকল দল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে অধ্যয়ন করুন শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দেসে দেহলভী রাহিমাহুল্লা’র লিখিত “তোহফায়ে ইসনা আশারা” এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর সাবেক পরিচালক আল্লামা এম.এ জলীল আলাইহির রাহমাহ’র “শিয়া পরিচিতি” কিতাব দুটি ।
সুহৃদ পাঠকমণ্ডলী ! এখন আপনাদের সমীপে ঐসকল প্রমাণাদি উপস্থাপন করবো, যেগুলোর মধ্যে আপনারা দেখতে পাবেন শিয়া আলেমরা আল্লাহ্ রাব্বুল ইজ্জত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা, তিন খলীফা হযরত আবু বকর ও ওমর ফারুক এবং উসমান যিন্নুরাইল রাদিয়াল্লাহু আনহুম , আহলে বায়ত সহ উম্মুহাতুল মু’মিনীন এবং অন্যান্যদের শানে কী পরিমাণ চরম বেয়াদবি করেছে !
আপনারা আপনাদের অন্তরসমূহকে স্থির রেখে এ সকল ঈমান বিধ্বংসী কথাগুলোর প্রতি লক্ষ্য করুন । এরপর আপনারাই না হয় সিদ্ধান্ত নিবেন, শিয়ারা কী আসলেই ইসলামের সীমারেখার ভিতরে আছে নাকি বাহিরে??
মহান রাব্বুল আলামীন সম্পর্কে শিয়াদের ধৃষ্টতা
মহান প্রতিপালক তাঁর সম্পর্কে কুর’আনে মাজীদে বলছেন-
ذَٰلِكَ بِأَنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلْحَقُّ وَأَنَّ مَا يَدْعُونَ مِن دُونِهِۦ هُوَ ٱلْبَٰطِلُ وَأَنَّ ٱللَّهَ هُوَ ٱلْعَلِىُّ ٱلْكَبِيرُ
“এটা এ জন্য যে, আল্লাহই সত্য এবং তিনি ব্যতীত তারা যার পূজা করছে তাই অসত্য । এবং এজন্য যে, আল্লাহ্ সমুচ্চ, মহান ।” [সূরা হাজ্ব, আয়াত-৬২, অনুবাদঃ কানযুল ঈমান]
অপরদিকে তিনি বলছেন-
أَجَعَلَ ٱلْءَالِهَةَ إِلَٰهًۭا وَٰحِدًا ۖ إِنَّ هَٰذَا لَشَىْءٌ عُجَابٌۭ
“সে কি বহু খোদাকে একটি খোদা করে নিলো? নিশ্চয় এটা এক আশ্চর্যজনক ব্যাপার ।” [সূরা সোয়াদ, আয়াত-৫, অনুবাদঃ কানযুল ঈমান]
অথচ শিয়ারা এমনই এক প্রাণী, যারা আহলে বায়ত প্রীতি দেখাতে গিয়ে আহলে বায়তের সৃষ্টিকর্তাকেই কিনা অস্বীকার করে ফেললো ! এখুন দেখুন মহান রব সম্পর্কে শিয়াদের অশোভনীয় বক্তব্য ।
আপত্তিকর মন্তব্য (১) “আমরা না সেই খোদাকে মানি, না সেই খোদার নবীকে মানি, যার খলীফা হচ্ছেন আবু বকর ।” নাউযুবিল্লাহ-আস্তাগফিরুল্লাহ (আনওয়ারুন নোমানিয়া, ইরান হতে প্রকাশিত, খন্ড-২, পৃষ্ঠা-২৭৮)
আপত্তিকর মন্তব্য (২) “আমরা সেই খোদাকে মান্য করি এবং তাঁরই ইবাদাত করি, যার সকল কার্য ত্রুটিমুক্ত বিবেকের দ্বারা সম্পাদিত এবং সে তাঁর বিবেকবর্জিত কোন কাজ করে না । সেই খোদাকে মানি না , যে তাঁর নিজের সম্মান বর্ণনা করে , ন্যায়পরায়নতা এবং ধার্মিকতার এক উঁচু প্রাচীর নির্মাণ করে , অতঃপর নিজেই সেটাকে বরবাদ করার চেষ্টা করে , ইয়াজিদ, মুয়াবিয়া এবং উসমান এর মত যালিমদেরকে মানুষদের নেতা বানায় ।” নাউজুবিল্লাহ-আস্তাগফিরুল্লাহ (কাশফুল আসরারে খমীনী, পৃষ্ঠা-১০৭)
[উল্লেখ্য যে, নবীজীর সম্মানীত দুই সাহাবী হযরত মুয়াবিয়া এবং হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহুমা কুর’আন-হাদিস এবং হক্বপন্থী ইমামগণের ঐক্যমতের ভিত্তিতে হক্ব ছিলেন । তাঁদের সমালোচনা করা হারাম । প্রিয় নবী হাদিসে পাকের মধ্যে তাঁদের সমালোচনা করতে কঠোরভাবে নিষেধ করে গিয়েছেন । এখানে অভিশপ্ত ও জাহান্নামের কুকুর হচ্ছে ইয়াজিদ । সে নবীজীর কলিজার টুকরা ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুকে কারবালার প্রান্তরে নির্মমভাবে শহীদ করেছিল । ইয়াজিদের উপর সৃষ্টিজগতের স্রষ্টা এবং তাঁর গোটা সৃষ্টিকূলের অভিসম্পাত কিয়ামত পর্যন্ত ; যা কুর’আন এবং হাদিস দ্বারা প্রমাণসিদ্ধ । অথচ এই অভাগা শিয়ারা হযরত মুয়াবিয়া এবং হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু সহ অন্যান্য সাহাবায়ে কিরামগণকে সমালোচনার কালো মালা তাঁদের গলায় পরানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত – মহিউদ্দীন]
আপত্তিকর মন্তব্য (৩) “(শিয়াদের) ইমামগণের যেকোন বস্তুকে হালাল বা হালাল বানানোর ক্ষমতা আছে ।” নাউজুবিল্লাহ-আস্তাগফিরুল্লাহ (উসূলে কাফী, পৃষ্ঠা-২৭৮) [অথচ হালাল-হারাম বানানোর অধিকার কেবল মহান রব তায়ালা এবং তাঁর অনুমতিক্রমে তাঁর প্রিয় হাবীব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা’র- ]
আপত্তিকর মন্তব্য (৪) “(শিয়াদের)ইমামগণ ছাড়া এই দুনিয়া স্থির থাকতে পারবে না ।” নাউজুবিল্লাহ (উসূলে কাফী, পৃষ্ঠা-১০৪)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা সম্পর্কে ধৃষ্টতা
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা’র রিসালাত এবং মর্যাদা সম্পর্কে কুর’আন এর মধ্যে অসংখ্য বর্ণনা এসেছে । মহান রাব্বুল আলামীন বলছেন-
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ حَسْبُكَ اللَّهُ وَمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ
“হে অদৃশ্যের সংবাদদাতা (নবী)! আল্লাহ্ আপনার জন্য যথেষ্ট এবং এ যতো সংখ্যক মুসলমান আপনার অনুসারী হয়েছে ।” [সূরা আনফাল, আয়াত-৬৪, অনুবাদঃ কানযুল ঈমান]
অপর আয়াতে মুসলমানদেরকে নবীজীর শান-মান সম্পর্কে সাবধানতা অবলম্বন করতে আল্লাহ্ তায়ালা বলছেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُقَدِّمُوا بَيْنَ يَدَيِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
“হে ঈমানদারগণ ! আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের আগে বাড়বে না এবং আল্লাহকে ভয় করো । নিশ্চয় আল্লাহ্ শুনেন , জানেন ।” [সূরা হুজুরাত, আয়াত-১, অনুবাদঃ কানযুল ঈমান]
অথচ দেখুন, এই পাপীষ্ঠ শিয়ারা আল্লাহর প্রিয় হাবীবের শানকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে ! কিসের সাথে এই পবিত্র সত্তাকে তুলনা করেছে ! শিয়ারা বলছে –
আপত্তিকর মন্তব্য (১) চার বার মুত’আহ বিবাহ করার দ্বারা সাধারণ মানুষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা’র সমান মর্যাদা লাভ করে । শিয়াদের আলেম মুল্লা ফাতহুল্লাহ তাদের শিয়া হাদিস অনুযায়ী নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা সূত্রে একটি বানোয়াট হাদিসে নিজ কিতাবে লিখছে যে, “যে একবার মুত’আহ বিবাহ করলো সে হুসাইন এর সমান মর্যাদা লাভ করলো । যে দুইবার মুত’আহ বিবাহ করলো , সে হাসান এর সম-মর্যাদার অধিকারী হলো । যে তিনবার মুত’আহ বিবাহ করলো , সে যেন হযরত আলী’র সমান মর্যাদা লাভ করলো । আর যে চারবার মুত’আহ বিবাহ করলো , সে যেন আমার সমান মর্যাদা লাভ করলো ।” আস্তাগফিরুল্লাহ-নাউজুবিল্লাহ (শিয়া তোফিয়া মানজুস সাদেক্বীন, পৃষ্ঠা ৩৫৪)
আপত্তিকর মন্তব্য (২) যে নবী-ই এসেছে, সে ন্যায় প্রতিষ্ঠার দরুন এসেছে । তাঁদের লক্ষ্য এটাই ছিল যে, গোটা দুনিয়ায় ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা । কিন্তু তারা সফল হয় নাই । এমনকি শেষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা যিনি মানুষদের সংশোধন এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য এসেছিলেন , মানুষদের শিক্ষা প্রদানে এসেছিলেন , কিন্তু তিনিও তাঁর সময়ে সফল হন নাই । নাউজুবিল্লাহ (খমীনী সূত্রে দৈনিক তেহরান টাইমস, ২৯শে জুন, ১৯৮০)
আপত্তিকর মন্তব্য (৩) খমীনী “নওরোজ খানা”(যেটা ইরানীদের ঈদের দিন)-এর সময় বলে,……হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা তখনকার সময়ে আজ থেকে বেশি মজলুম ছিলেন । তা এ কারণে যে, (সাহাবাগণ) তাঁর আনুগত্য প্রদর্শন করতো না । নাউজুবিল্লাহ (২১শে মার্চ ১৯৮৬ এর একটি বক্তব্য)
খমীনী তার উপদেশাবলীর মধ্যেও এই কথাটির পুনরাবৃত্তি করেছে যে, “এই বিষয়টি আমাদের শিয়াদের মধ্যে (বিশ্বাস করা) আবশ্যক যে, আমাদের ইমামদের সেই মর্যাদা অর্জিত হয়েছে , যেই মর্যাদা আজ অবধি কোন আল্লাহ্র নিকটতম ফেরেশতা বা কোন রাসূলেরও অর্জিত হয় নাই ।” নাউজুবিল্লাহ-আস্তাগফিরুল্লাহ (খমীনীর আল হুকুমাতুল ইসলামী, পৃষ্ঠা-৫২)
আপত্তিকর মন্তব্য (৪) আহলে বায়তের ইমামগণ(নবী সাল্লাল্লাহু আলাইই ওয়া সাল্লামা ছাড়া) সকল নবীগণের ইমাম । (আব্দুল করীম মুশতাক কর্তৃক “সিরফ এক রাস্তা”, পৃষ্ঠা-২০)
আপত্তিকর মন্তব্য (৫) “আল্লাহ্ তায়ালা হযরত জীবরাঈলকে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা’র নিকট প্রেরণ করলেন এজন্য যে, আপনি (হযরত আলী’র জন্য) খিলাফাত ঘোষণা করুন ! কিন্তু হযরত মুহাম্মদ বললেন- আমি আমার তিন সাহাবা তথা আবু বকর, উমর এবং উসমানকে ভয় পাই, তাই আমি এই ঘোষণা (মক্কাতে)করতে পারবো না । মাদীনা মুনাওয়ারায় গিয়ে করবো । এই কথা শুনে আল্লাহ্ তায়ালা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা’র উপর অসন্তুষ্ট হলেন এবং এই বিষয়টাকে লিপিবদ্ধ করে রাখলেন ।” নাউজুবিল্লাহ-আস্তাগফিরুল্লাহ (মজলিশে আযে খিলাফাতে শায়খাইন, পৃষ্ঠা-১৭)
নবীজীর পবিত্র স্ত্রীগণ সম্পর্কে শিয়াদের ধৃষ্টতা
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা’র পবিত্র স্ত্রীগণ সৃষ্টিজগতের সকল মহিলা হতে শ্রেষ্ঠ । তাঁরা হচ্ছেন কিয়ামত অবধি সকল মু’মিনগণের মাতা । তাঁদের শানে স্বয়ং মহান রাব্বুল আলামীন কুর’আনে কারীমের আয়াত অবতীর্ণ করেছেন । নরাধম শিয়ারা তাঁদেরকেও রেহাই দেয়নি । বিভিন্ন অশ্লীলতাপূর্ণ এবং চরম বেয়াদবিমূলক কথা দ্বারা তাঁদেরকে কলুষিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে তারা । শিয়াদের নিকট নবীজীর পবিত্র স্ত্রীগণের মধ্যে হযরত আয়েশা এবং হযরত হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হচ্ছে চক্ষুশূল । তাই তাঁরা এই দু’জন মহিয়সী’র বিরুদ্ধে অসংখ্য কুৎসা রটানো শুরু করে । আমরা প্রথমে মু’মিনদের এই দুই মাতার মর্যাদা সম্পর্কে দু’টি হাদিস পড়বো । এরপর দেখবো এই দু’জনের প্রতি শিয়াদের লাগামহীন ইসলাম পরিপন্থী বক্তব্যগুলো ।
আম্মাজান সাইয়্যেদা আয়েশা সিদ্দীকা রাদিয়াল্লাহু আনহা সম্পর্কে সহিহ বুখারী শরিফে এসেছে-
عَنْ أَبِي عُثْمَانَ : أَنَّ رَسُوْلَ اﷲِ صلي الله عليه وآله وسلم بَعَثَ عَمْرَو بْنَ الْعَاصِ عَلَي جَيْشٍ ذَاتِ السُّلَاسِلِ قَالَ : فَأَتَيْتُهُ فَقُلْتُ : أَيُّ النَّاسِ أَحَبُّ إِلَيْکَ؟ قَالَ : عَائِشَةُ. قُلْتُ : مِنَ الرِّجَالِ؟ قَالَ : أَبُوْهَا. قُلْتُ : ثُمَّ مَنْ؟ قَالَ : عُمَرُ. فَعَدَّ رِجَالًا فَسَکَتُّ مَخَافَةَ أَنْ يَجْعَلَنِي فِي آخِرِهِمْ. مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ.
“হযরত আবি উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত । নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা আমর বিন আসকে যাতে সালাসিল নামক যুদ্ধে সেনাপতি হিসেবে প্রেরণ করলেন । হযরত আমর ইবনুল আস বললেন , আমি নবীজীর নিকট এসে নবীজীকে জিজ্ঞাসা করলাম- হে আল্লাহ্র রাসূল ! মানুষের মধ্যে আপনার নিকট সর্বাধিক প্রিয় কে? তিনি বললেন- ‘আয়েশা’ । আমি বললাম-পুরুষদের মধ্য থেকে? তিনি বললেন- ‘আয়েশার পিতা’(অর্থা হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু)। আমি বললাম- এরপর কে? নবীজী বললেন-‘উমর’। এভাবে তিনি একেরপর এক অন্যান্য আরো অনেকের নাম বলতে লাগলেন । আমি একসময় এই ভয়ে চুপ হয়ে গেলাম , যাতে আবার আমার নাম সবার শেষে না আসে ।” [সহিহ বুখারী , কিতাবুল মাগাযী ৪/১৫৮৪ । সহিহ মুসলিম , কিতাবু ফাদ্বাইলিস সাহাবা , ৪/১৮৫৬]
তাছাড়া মু’মিনদের মাতা সাইয়্যেদা হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহা সম্পর্কে হাদিসে পাকের মধ্যে এসেছে-
عَنْ أَنَسٍ، قَالَ : قَال النَّبِيُّ صلي الله عليه وآله وسلم : يَا حَفْصَةُ، أَتَانِي جِبْرِيْلُ آنِفًا فَقَالَ : فَإِنَّهَا صَوَّامَةٌ قَوَّامَةٌ وَ هِيَ زَوْجَتُکَ فِي الْجَنَّةِ.رَوَاهُ الطَّبَرَانِيُّ فِي الْأَوْسَط
“হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা বলছেন- হে হাফসা ! আমার নিকট কিছুক্ষণ আগে জিব্রাইল এসেছিলেন । সে আমাকে বললো-“নিশ্চয় তিনি(হযরত হাফসা) অধিক রোযা পালনকারিনী এবং নামায আদায়কারিনী এবং তিনি জান্নাতেও আপনার স্ত্রী ।” [ইমাম তাবরানীর মুজামুল আওসাত্ব ১/৫৫, হাদিসঃ১৫১, ইমাম হাইছামীর মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯/২৪৪]
অথচ দেখুন শিয়ারা এই দু’জন উম্মাহাতুল মু’মিনীনদেরও কোন রেহাই দেয় নাই । তারা এই পবিত্র দুই মহিয়সী সম্পর্কে যাচ্ছে-তাই বলেছে । নিম্নে তাদের মন্তব্যগুলো দেয়া হল-
আপত্তিকর মন্তব্য (১) “যখন অদৃশ্যের ইমাম দৃশ্যমান হবেন, তখন আয়েশাকে জীবিত করে তাঁর উপর শরীয়তের শাস্তি আরোপ করবেন ।” নাউজুবিল্লাহ-আস্তাগফিরুল্লাহ (মুল্লা বাক্বের মজলিশী “হক্কুল ইয়াক্বিন, পৃষ্ঠা-৩৪৮”)
আপত্তিকর মন্তব্য (২) “হযরত আয়েশা এবং হাফসাহ মুনাফিক মহিলা ছিল । তারা নবীজীকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করেছে ।” নাউজুবিল্লাহ-আস্তাগফিরুল্লাহ (মজলিশে হায়াতুল ক্বুলুব, পৃষ্ঠা-৭৪৫)
আপত্তিকর মন্তব্য (৩) “বিবি হাফসা চরিত্রহীন ছিল । তার এই চরিত্রের দরুণ নবীজী তাকে তালাক দিয়েছিলেন ।” নাউজুবিল্লাহ-আস্তাগফিরুল্লাহ (গোলাম হোসেন নাজাফী “মাসহাফে মাসমুম” পৃষ্ঠা-৪০)
আপত্তিকর মন্তব্য (৪) “বিবি আয়েশাহ কোন আমেরিকান বা ইউরোপিয়ান মেম সাহেবা তো আর ছিলেন না ।” (হাক্বীকাতে ফিকহে হানাফিয়্যাহ, পৃষ্ঠা-৬৪)
আপত্তিকর মন্তব্য (৫) “আয়েশা যে মু’মিনাহ , সেটা প্রমাণিত নয় ।” (তাজাল্লিয়াতে সাদাক্বাত, পৃষ্ঠা-৪৭৮)
আপত্তিকর মন্তব্য (৬) “আয়েশা মানুষদেরকে উসমান হত্যার জন্য উস্কে দেয় এবং বলে, ঐ লম্বা দাঁড়িওয়ালা ইহুদিটাকে হত্যা করো ! (সে নিজেও বলে,)আল্লাহ্ তাকে হত্যা করুন !” নাউজুবিল্লাহ (ক্বালিদে মুনাযারাহ, পৃষ্ঠা-৩০৪)
শেষ পর্ব আসছে……
লেখা :—– মুহাম্মাদ মহিউদ্দিন ।
প্রচারে :—- কালাগুজা গাউছিয়া হোসাইনীয়া দরবার শরীফ, জামালগঞ্জ , সুনামগঞ্জ ।