শাসক হয়েও যিনি বিচারের অপেক্ষায় ছিলেন।

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

অর্ধপৃথিবীর শাসক খলিফাতুল মুসলিমীন হজরত উমর ফারুক রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর শাসনামলে মসজিদে নববীতে মুসল্লীদের জায়গা সংকুলানে তিনি মসজিদের আয়তন বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এখানে একটি কথা না বললেও নয় যে ইসলামের প্রাথমিক যুগে মদিনায় মুহাজির সাহাবিদেরকে জায়গা জমিসহ সবধরনের সাহায্যে তখন এগিয়ে এসেছিলেন মদিনার আনচারী দয়ালু সাহাবীরা। আনচারীদের আথিতেয়তা ও তাদের ঐ ত্যাগের কথা অবিস্মরণীয় হয়েই থাকবে ইসলামের ইতিহাসে।

এবার মূলকথায় আসি। মদিনায় মসজিদে নববীর পাশেই ছিলো রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঘর। তার পাশেই ছিলো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয় চাচা হযরত আব্বাস এর বাড়ী। যেটি ছিলো মসজিদে নববী সংলগ্ন।

তৎকালীন শাসক হযরত উমর ফারুক রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যখন মসজিদ সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তখন তিনি হজরত আব্বাসকে প্রস্তাব করলেন “মসজিদ বাড়াতে হবে আপনি বাড়ীটি মসজিদের জন্য বিক্রী করেদিন”। হজরত আব্বাস বললেন, না, আমি এ জমি বিক্রী করবোনা।

হজরত উমর বললেন, বিক্রি না করলে তবে বাড়ীটি আপনি মসজিদের অনুকূলে দান (হিবা) করেদিন। এ প্রস্তাবেও তিনি রাজী হলেননা।

হজরত উমর পুনরায় বললেন, তাহলে আপনি নিজেই মসজিদটি সম্প্রসারণ করেদিন এবং সেখানে আপনার বাড়ীটিও অন্তর্ভুক্ত করুন। হজরত উমর বিভিন্নভাবে উনাকে প্রভাবিত করতে চাইলেন কিন্তু হজরত আব্বাস কোন মতেই এতে রাজী হলেননা।

অবশেষে একজন খলিফা হয়েও নিজের ক্ষমতাবলে সিদ্ধান্ত না নিয়ে সুমধুর কন্ঠের অধিকারী প্রজ্ঞাবান হজরত উবাই ইবনে কা’ব রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে শালিস মানলেন।

বিচারকার্যে উভয়ের কথা শুনে হজরত উবাই ইবনে কা’ব উপস্থিত সবাইকে হতভম্ব করে হজরত আব্বাসের পক্ষেই উক্ত রায়টি দিয়ে দিলেন। অর্থাৎ অনুমতি না পেলে যে যতই ক্ষমতাধর ব্যক্তি হোক কিংবা উত্তম কাজের জন্যও হোক তা গ্রহণ করা যাবেনা। সেদিন মূলত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন বিচারক।

বিচারক তথায় বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য হজরত সুলাইমান আলাইহিসসালাম কর্তৃক বাইতুল মোকাদ্দাসের প্রাচীর নির্মাণের ঘটনাটি উল্লেখ করেছিলেন। ঘটনাটি ছিলো ঠিক এমন যে প্রাচীর নির্মাণের সময় প্রাচীরের একাংশ অন্যের জমিতে নির্মিত হওয়ায় তা ধ্বসে পড়েছিলো। পরে হযরত সুলাইমান আলাইহিসসালামের নিকট ওহী এসেছিলো যে, জমির মালিকের অনুমতি নিয়ে তা পুনঃনির্মাণ করতে হবে।

বিচারকের মুখে ঘটনাটি শুনে হযরত উমর রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আর কোন কথাই এ বিষয়ে বলেননি। তিনি উক্ত রায় মেনে নিয়েছিলেন।

সভায় উপস্থিত সবাই পরিস্থিতি দেখে চুপচাপ হয়ে গেলো। ঠিক সে সময় হঠাৎ হজরত আব্বাসের হাসিমাখা জবানে বের হয় “আমি স্বেচ্ছায় মসজিদে নববীর জন্য আমার বাড়ীটি দান করে দিলাম। তিনি আরো বললেন আমি চাইছিলাম এটি যেন স্বরণীয় হয়ে থাকেন।

✍️ শাহজাদা মুহাম্মাদ ইমরান বিন বদরী।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment