শবে বরাত বিশিষ্ট রাতগুলো মধ্যে ১টি :
★ হাদিসে বর্নিত আছে :-
ﻋَﻦْ ﺣَﻀْﺮَﺗْﺎَﺑِـﻰْﺍُﻣَﺎﻣَﺔَﺭَﺿِﻰَ
ﺍﻟﻠﻬُﺘَﻌَﺎﻟـٰﻰ ﻋَﻨْﻬُﻌَﻦْ ﺭَﺳُﻮْﻟِﺎﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻯﺎﻟﻠﻪُ
ﻋَﻠَﻴْﻬِﻮَﺳَﻞَّﻡَ ﻗَﺎﻟَﺨَـﻤْﺲُ ﻟَﻴَﺎﻟٍﻠَﺎﺗُﺮَﺩُّ
ﻓِﻴْﻬَﺎﺩَﻋْﻮَﺓٌﺍَﻭَّﻟُﻠَﻴْﻠَﺔٍﻣّﻨْﺮَّﺟَﺐَ ﻭَﻟَﻴْﻠَﺔِﺍﻟﻨّﺺ
ِﻑْ ﻣِﻨْﺸَﻌْﺒَﺎﻥَ ﻭَﻟَﻴْﻠَﺔُﺍﻟْـﺞِﺔَﻌْﻣُ ﻭَﻟَﻴْﻠَﺘَﺎﺍﻟْﻊ
ِﻳْﺪَﻳْﻦِ.
অর্থ : “হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন,
পাঁচটি রাত এমন রয়েছে যেগুলোতে দোয়া করলে তা রদ বা বাতিল হয়না । এগুলো হল :
(১) পহেলা রজবের রাত
(২) শা’বানের মধ্য রাত তথা শবে বরাত
(৩) জুমুয়ার রাত
(৪) পবিত্র ঈদুল ফিতরের রাত
(৫) পবিত্র ঈদুল আযহার রাত।” দলিল (দায়লামী শরীফ)
★ এ প্রসঙ্গে রসূল (সঃ) ইরশাদ করেনঃ
ﺍِﻥَّ ﺍﻟﺪُّﻋَﺎﺀَﻳُﺴْﺖُﺏﺎَﺟَ ﻓِـﻯْﺨَـﻤْﺲِ
ﻟَﻴَﺎﻟٍﺎَﻭَّﻝِ ﻟَﻴْﻠَﺔٍﻣّﻦْ ﺭَﺟَﺒٍﻮَﻟَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟﻨِّﺼْﻔِﻤِﻦْ
ﺷَﻌْﺒَﺎﻧَﻮَﻟَﻲْﻟَﺘَﻰ ﺍﻟْﻌِﻴْﺪَﻳْﻨِﻮَﻟَﻴْﻠَﺔِ ﺍﻟْﻘَﺪْﺭِﺍﻟْـﻢُ
ﺑَﺎﺭَﻛَﺔِ
নিশ্চয়ই দোয়া বা মুনাজাত পাঁচটি রাতে কবুল হয়ে থাকে । এগুলো হল :
(১) পহেলা রজবের রাত
(২) শা’বানের মধ্য রাত তথা শবে বরাত
(৩) ক্বদরের রাত
(৪) পবিত্র ঈদুল ফিতরের রাত
(৫) পবিত্র ঈদুল আযহার রাত।
Reference :
★ মোহাদ্দিসে দেহলভী (রহ) : মা ছাবাত বিস্ সুন্নাহ,
★ বড়পীর আব্দুল কাদির জীলানী (রা) : গুনইয়াতুত্ ত্বালিবীন,
★ মুকাশাফাতুল কুলুব
★ মুনযিরী রচিত তারগীব ওয়াত তারহীবঃ খ-২, পৃ-১৫২
★ এ কারণেই ফিকহের ইমামগণের অনেকে শাবানের পঞ্চদশ রাতে জাগরণ থাকাকে মুস্তাহাব বলে উল্লেখ করেছেন। (যার বিবরণ পরবর্তীতে দেয়া হবে)
★ হযরত ইবনে উমর (রঃ) বর্নিত :-
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: ” خَمْسُ لَيَالٍ لَا تُرَدُّ فِيهِنَّ الدُّعَاءَ: لَيْلَةُ الْجُمُعَةِ، وَأَوَّلُ لَيْلَةٍ مِنْ رَجَبٍ، وَلَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، وَلَيْلَتَيِ الْعِيدَيْنِ “
তিনি বলেন এমন পাঁচটি রাত আছে যে রাতগুলোয় দু’আ ফেরত হয়না।ওইগুলো হল-
১) জুমু’আর রাত,
২) রজব মাসের প্রথম রাত,
৩) শাবান মাসের ১৫তম রাত এবং
৪) দুই ঈদের রাত অর্থাৎ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার রাত।
Reference :
★ মুসনাদে আব্দুর রাযযাক,কিতাবুস সিয়াম হাদীস নং-৭৯২৭
★ ইমাম বায়হাকী তাঁর শুয়াবুল ঈমানে
★★★ শবে বরাতে করনীয় ও এ রাতের ফজিলত :-
হাদিসে বর্নিত আছে :-
عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِذَا كَانَتْ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ، فَقُومُوا لَيْلَهَا وَصُومُوا نَهَارَهَا، فَإِنَّ اللَّهَ يَنْزِلُ فِيهَا لِغُرُوبِ الشَّمْسِ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا، فَيَقُولُ: أَلَا مِنْ مُسْتَغْفِرٍ لِي فَأَغْفِرَ لَهُ أَلَا مُسْتَرْزِقٌ فَأَرْزُقَهُ أَلَا مُبْتَلًى فَأُعَافِيَهُ أَلَا كَذَا أَلَا كَذَا، حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْرُ
হযরত আলী ইবনে আবী তালিব রাদ্বিল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন,রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,যখন শাবানের পনেরতম রাত (শবে বরাত) হয়,তখন তোমরা রাতে নামাজ পড় এবং রোজা রাখ। কেননা ঐ দিন সূর্যাস্তের সময় আল্লাহ তা’আলা প্রথম আসমানে তাশরীফ এনে বান্দাদের উদ্দেশ্যে বলেন-ক্ষমা প্রার্থনাকারী কেও আছ,আমি তাকে ক্ষমা করব,রিজিক আন্বেশনকারী কেও আছ,আমি তাকে রিজিক দিব,আসুস্থ কেও আছ আমি তাকে সুস্থতা দান করব,এভাবে অন্যান্য বিষয়েও বলতে থাকেন ফজর পর্যন্ত।
Reference :
★ ইবনে মাজাহ ,হাদীস নং-১৩৮৮
★ মিশকাত শরীফ-১১৫ পৃঃ,
★ শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩৮২২,
★ হযরত আলা ইবনুল হারিস (রহঃ) থেকে বর্ণিত, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা) রাতে নামাযে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সেজদা করেন যে, আমার ধারণা হল তিনি হয়ত মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামায শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা অথবা বলেছেন, ও হুমাইরা, তোমার কি এই আশংকা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া রাসূলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার এই আশংকা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। নবীজী জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান এটা কোন রাত?আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন। রাসুলুল্লাহ (সা) তখন ইরশাদ করলেন,
هذه ليلة النصف من شعبان ان الله عزو جل يطلع على
عباده فى ليلة النصف من شعبان فيغفر للمستغفرين
ويرحم المشترحمين ويؤخر اهل الحقد كماهم
‘এটা হল অর্ধ শাবানের রাত (শাবানের চৌদ্দ তারিখের দিবাগত রাত)। আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে তার বান্দার প্রতি মনযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই।‘ [শুআবুল ঈমান, বাইহাকী ৩/৩৮২-৩৬৮]
সনদের মানঃ
ইমাম বাইহাকী (রহঃ) এই হাদীসটি বর্ণনার পর এর সনদের ব্যাপারে বলেছেন,
هذا مرسل جيد
★ আল্লামা ইবনে তাইয়িমাহ তাঁর স্বীয় ফতোয়া গ্রন্থে লিখেছেন-শাবানের মধ্য রাতের ফজিলত সম্পর্কে বহু হাদীস এসেছে,আছার তথা সাহাবায়ে কেরামের বর্ণনা,তাবে তাবেঈগন সালফে সালহীগনের বক্তব্য রয়েছে আর তারা এই রাতে ইবাদত করতেন[ফতোয়ায়ে তাইয়িমাহ,২৩তম খণ্ড,১৩২ পৃষ্ঠা]
★★★ মাহে শা’বান এবং শাবানের ১৫ তম রাত্রিতে এবং এর পরদিন রোযা রাখার গুরুত্বঃ
★ হযরত আব্দুল্লাহ বিন ক্বায়েস (রহঃ) হযরত আয়েশা (রঃ) হতে বর্ণনা করেনঃ
” রসূল (সঃ) এর নিকট নফল রোযার জন্য অন্যান্য মাসের তুলনায় শাবান মাস ছিল অত্যন্ত প্রিয়। অতঃপর তিনি শাবানের রোযাকে রমজানের সাথে মিলিয়ে দেয়াকে আরও বেশী পছন্দ করতেন। “
( আবু দাউদ )
★ হযরত উসামাহ বিন যাইদ (রঃ) কর্তৃক বর্ণিত, হযরত উসামা (রঃ) বলেন, হে আল্লাহর রসূল (সঃ), আমি আপনাকে রমজান ছাড়া এ পরিমাণ রোজা রাখতে অন্য কোন মাসে দেখিনি। যে পরিমাণ শাবান মাসে রাখেন। (উত্তরে) রসূল (সঃ) ফরমান, এটি রজব ও রমজানের মধ্যবর্তী একটি মাস, যে মাসের ফজীলত থেকে মানুষ বঞ্চিত থাকে। অথচ এ মাসে মানুষের আমল আল্লাহর দরবারে পেশ করা হয়। আমি রোজা অবস্থায় আমার আমল পেশ করাকে পছন্দ করি বিধায় রোজা রাখছি।
( নাসায়ী শরীফ )
★ হাদীস শরীফে উম্মুল মুমীনিন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত,
مَا رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اسْتَكْمَلَ صِيَامَ شَهْرٍ إِلَّا رَمَضَانَ، وَمَا رَأَيْتُهُ أَكْثَرَ صِيَامًا مِنْهُ فِي شَعْبَانَ
আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লামকে রমজান মাসের পর শাবান ব্যতীত অন্য কোন মাসে এত রোজা রাখতে দেখিনি। [সহিহ বুখারী, হাদীস নং-১৯৭০]
★ অপর বর্ননায় এসেছে,
لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصُومُ شَهْرًا أَكْثَرَ مِنْ شَعْبَانَ، فَإِنَّهُ كَانَ يَصُومُ شَعْبَانَ كُلَّه
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম শাবান মাসের চেয়ে অধিক রোজা অন্য কোন মাসে রাখতেননা, এমনকি তিনি পুরো শাবান মাস রোজা রাখতেন। [সহিহ বুখারী, হাদীস নং-১৯৭১, মুসলিম ]
★ হাদীস শরীফে আরও ইরশাদ হয়েছে-
রজব আল্লাহর মাস,শাবান আমার মাস আর রমজান আমার উম্মতের মাস। [ফিরদাউসুল আখবার]
★★★ এ রাতে হায়াত-মউত ও বার্ষিক বাজেটের ফয়সালা হয়ঃ
★ হযরত আয়েশা (রঃ) হযরত নবী (সঃ) থেকে বর্ণনা করেনঃ
তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন,রাসুল(দঃ) ইরশাদ করেন,তুমি কি এ রাত তথা শাবানের ১৫তম রজনী সম্পর্কে কিছু জান?তিনি আরজ করলেন এ রাতে কি রয়েছে?রাসুল(দঃ) ইরশাদ করেন,এ রাতে যে সকল বনী আদম জন্মগ্রহন করবে তাদের নাম চূড়ান্ত করা হবে আর যে সকল বনী আদম মৃত্যুবরন করবে তাদের নামও লিপিবদ্ধ করা হবে।এ রাতে তদের পুরো বছরের আমলসমূহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে পেশ করা হবে আর এ রাতে তাদের রিজিক/জিবিকা নির্ধারণ করা হবে।অতপর তিনি আরজ করলেন,নিশ্চই আল্লাহর অনুগ্রহ ব্যতীত কেও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা,রাসুল(দঃ) ইরশাদ করেন,নিশ্চই আল্লাহর অনুগ্রহ ব্যতীত কেও জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা তিনি এ বাক্য তিনবার বলেন।অতপর তিনি আরজ করলেন,আপনিও হে আল্লাহর রসূল (দ)?রাসুল(দঃ)স্বীয় হাত মুবারক মাথা মুবারকের উপর রেখে ইরশাদ করেন,নিশ্চই আমি আল্লাহর রহমতের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ করব।এ বাক্য তিনি তিনবার ইরশাদ করেন।
Reference :
★ বায়হাক্বী শরীফ-দাওয়াতে কবীর হাদীস নং-৫৩০,
★ মিশকাত শরীফ-১১৫ ]
★ অপর হাদিসে আছে :-
وعن ابن عباس إن الله يقضي الأقضية في ليلة النصف من شعبان ويسلمها إلى أربابها في ليلة القدر
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,তিনি বলেন -আল্লাহ তায়ালা শ’বানের পনেরতম রাতে সিদ্ধান্তসমুহ চুড়ান্ত করেন এবং শবে ক্বদরে তা বাস্তবায়নকারী ফেরেশতাদের সোপর্দ করেন।[তাফসীরে খাজিন ৪র্থ খণ্ড,পৃষ্ঠাঃ১১২]
★ হযরত আতা বিন ইয়াসির (রঃ) হতে বর্ণিতঃ
যখন শাবানের পঞ্চদশ রজনী আগত হয়, তখন আল্লাহর পক্ষ হতে মালাকুল মউতকে একটা তালিকা দেয়া হয় এবং হুকুম করা হয় যে, এই তালিকায় যেসব মানুষের নাম লিপিবদ্ধ আছে তাদের প্রাণ হরণ কর। কোন বান্দা বাগিচায় গাছপালা লাগাচ্ছে, কেউ বিবাহ করছে, কেউ বা নির্মাণ কাজে ব্যস্ত আছে অথচ তার নাম মৃতদের তালিকায় লেখা হয়ে গেছে।
( দেখুনঃ মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাকঃ খ – ৪, পৃ – ৩২৭ )
★★★ শবে বরাতে আল্লাহ সুবাহানু তা’আলা কত সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করেন?
★ হাদিসে আরো বর্নিত আছে:-
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: فَقَدْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ لَيْلَةٍ، فَخَرَجْتُ أَطْلُبُهُ، فَإِذَا هُوَ بِالْبَقِيعِ رَافِعٌ رَأْسَهُ إِلَى السَّمَاءِ. فَقَالَ: «يَا عَائِشَةُ أَكُنْتِ تَخَافِينَ أَنْ يَحِيفَ اللَّهُ عَلَيْكِ وَرَسُولُهُ؟» قَالَتْ، قَدْ قُلْتُ: وَمَا بِي ذَلِكَ، وَلَكِنِّي ظَنَنْتُ أَنَّكَ أَتَيْتَ بَعْضَ نِسَائِكَ، فَقَالَ: «إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْزِلُ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَغْفِرُ لِأَكْثَرَ مِنْ عَدَدِ شَعَرِ غَنَمِ كَلْبٍ
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত,তিনি বলেনন,একরাতে আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে ঘরে পেলাম না বা তাঁর খোঁজে বের হলাম।তখন দেখলাম তিনি জান্নাতুল বাক্বী কবরস্থানে আসমানেকে মাথা মুবারক উত্তোলন করে অবস্থান করছেন।আমাকে সেখানে দেখে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন-হে আয়েশা!তুমি কি এ ভয় করছ যে,আল্লাহ তাঁর রসুল(দঃ)তোমার প্রতি অবিচার করবে।তিনি বললেন আপনি বলছেন,এমন কিছু আসলে আমার কাছে নেই বরং;আমি ধারণা করেছি যে,আপনি আপনার কোন স্ত্রীর হুজরায় তাশরীফ নিয়েছেন।তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করলেন-নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা শা’বানের পনেরতম রাতে প্রথম আসমানে তাশরীফ আনেন।অতঃপর বনী ক্বলব এর মেষগুলোর লোম এর সংখ্যার চেয়েও অধিক বান্দাকে ক্ষমা করে দেন।
Reference :
★ সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-৭৩৯,
★ মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৬০২৮,
★ মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ, হাদীস নং-১৫০৯
★ সাঈদ ইবনে মনসূর প্রণীত ‘সুনান’
★ বায়হাকী কৃত ‘শুয়াবুল ঈমান’
★ রসূল (সঃ) বলেনঃ নিঃসন্দেহে মহান আল্লাহ তাআলা শা’বানের পনেরতম রজনীতে প্রথম আসমানে শুভাগমন করেন এবং কালব গোত্রের বকরীগুলোর পশম পরিমাণ মানুষকে ক্ষমা ও মাগফিরাত করে দেন।
( তিরমিযী )
★ হাদীস ব্যাখ্যাকারীগণ বলেন যে বনূ কালব্ ওই সময়
সবচেয়ে বড় গোত্র ছিল এবং এর সদস্যদের বড় বড়
ভেড়ার পাল ছিল। অতএব, এই হাদীসে শেষ
বাক্যটি ইশারা করে যে মহান আল্লাহ পাক ওই রাতে অসংখ্য
মানুষকে মাফ করে থাকেন।
★★★ ওই দিন যাদেরকে ক্ষমা করবেন না তারা হলেন :-
সংক্ষেপে নিচের সবগুলো হাদিসের মুলভাব এক নজরে :
★ আল্লাহ পাক শবে বরাতের রাতে সমস্ত বিশ্বাসী (মুমিন-মুসলমানকে) ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু ক্ষমা করবেন না :- ৮টি বর্ননা
★ শিরিককারী
★ অন্যদের প্রতি অন্তরে বিদ্বেষভাব পোষণকারীদের;
★ আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারীদেরও;
★ পায়ের গোড়ালির নিচে বস্ত্র পরিধানকারীদেরও (যারা অর্থ-
বিত্তের দম্ভের প্রতীকস্বরূপ তা পরে);
★ পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তানদেরও;
★ মদ্যপায়ীদের
★ দুরাচারে লিপ্ত ব্যভিচারিনী
★ খুনী
তাদের।
Reference :
** বায়হাকী রচিত শুয়াবুল ঈমান’
** ইবনে মাজাহ
** ইবনে মনসূর নিজ ‘সুনান’ পুস্তকে
** মুসনাদে আহমদ’
** আত্ তিরমিযী
** সহিহ ইবনে খুযায়মা
** সহিহ ইবনে হিব্বান
** ইবনে যানজুউইয়ীয়্যা,
** দারু-কুতনী কৃত ’সুনান’,
** ইবনে আদী প্রণীত ‘কামিল’
** ইবনে মূসা হতে ইবনে যানজুউইয়ীয়্যা বর্ণিত
কোন কোন হাদীছে এ তালিকার সাথে
(৯) অন্যায়ভাবে কর আদায়কারী (১০) যাদু-টোনার পেশা গ্রহণকারী (১১) গণক তথা গায়েবী খবর বর্ণনাকারী (১২) এবং বাদ্য-বাজনায় অভ্যস্ত ব্যক্তিদেরকেও উপরোক্ত তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ইমাম গজালীর مكاشفات القلوب কিতাবে উদ্ধৃত হযরত আয়েশা কর্তৃক বর্ণিত এক হাদীছে উপরোক্ত তালিকার সাথে
(১৩) ফিতনাবাজ (১৪) ফটো অংকণকারী এবং (১৫) চুগলখোরকেও সংযোজন করা হয়েছে।
( দেখুনঃ মুকাশাফাতুর কুলুব, বাংলা অনুবাদ মুফতী উবায়দুল্লাহ )
উপরোক্ত বর্ননাগুলোর বিস্তারিত হাদিস :
★ হাদিসে বর্নিত আছে :-
عَنْ أَبِي ثَعْلَبَةَ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: ” إِذَا كَانَ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ اطَّلَعَ اللهُ إِلَى خَلْقِهِ فَيَغْفِرُ لِلْمُؤْمِنِ، وَيُمْلِي لِلْكَافِرِينَ
হযরত আবু সা’অলাবা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- যখন পনেরই শাবানের রাত হয়,আল্লাহ তায়ালা তাঁর সৃষ্টির প্রতি বিশেষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন এবং মুমিনদের ক্ষমা করে দেন ও কাফিরদের অবকাশ দেন।[বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান হাদীস নং-৩৫৫১]
★ হাদিসে পাকে বর্নিত আছে যে :-
عَنْ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ لَيَطَّلِعُ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلَّا لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ
হযরত আবু মুসা আশয়ারী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বরনিত,তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন-নিশ্চই আল্লাহ তা’আলা শাবানের পনেরতম রাতে সৃষ্টির প্রতি কৃপা দৃষ্টি দেন এবং সকলকে ক্ষমা করেন,মুশরিক এবং বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীরেকে।[ইবনে মাজা শরীফ হাদীস নং-১৩৯০]
★ উছমান ইবনু আবিল আছ (রঃ) নবী করীম (সঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেনঃ যখন শা’বান মাসের ১৫ তারিখ রাত আগমন করে তখন জনৈক আহবানকারী আল্লাহর পক্ষ থেকে আহবান করতে থাকেন যে, আছ কি কোন ক্ষমার ভিখারী, তাকে আমি ক্ষমা করে দিবো। আছ কি কোন যাচনাকারী, তাকে আমি দান করব ? এরপর যে কেউ যা চায় আল্লাহ তাআলা তাকে তাই দান করেন কিন্তু ব্যভিচারিনী এবং মুশরিক ছাড়া।
( দেখুনঃ বাইহাকী শুআবুল ঈমানঃ খ-৩, পৃ-৩৮৩ )
★ হযরত আয়েশা হুযূর পূর নূর (দ:)-কে উদ্ধৃত করেন,
যিনি বলেন: “ওহে আয়েশা! তুমি কি ভেবেছ আল্লাহ ও তাঁর
রাসূল (দ:) তোমার প্রতি অন্যায্য আচরণ করবেন? বরঞ্চ
জিবরীল আমীন আমার কাছে এসে বল্লেন, ‘এটি-ই মধ্য-
শা’বানের রাত (শাবানে ১৫ তম রাত) । আল্লাহতা’লা এ রাতে বনূ কালব্ গোত্রের
সমস্ত ভেড়ার লোমের সমসংখ্যক মানুষকে জাহান্নামের
আগুন থেকে মুক্ত করে দেন। কিন্তু তিনি মাফ করেন
না মূর্তি পূজারীদের কিংবা অন্যদের
প্রতি অন্তরে বিদ্বেষভাব পোষণকারীদের;
অথবা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্নকারীদেরও; অথবা পায়ের
গোড়ালির নিচে বস্ত্র পরিধানকারীদেরও (যারা অর্থ-
বিত্তের দম্ভের প্রতীকস্বরূপ তা পরে); কিংবা পিতা-মাতার
অবাধ্য সন্তানদেরও; অথবা মদ্যপায়ীদেরও।”
[বায়হাকী রচিত
‘শুয়াবুল ঈমান’]
★ অপর হাদিসে এসেছে :-
عَنْ كَثِيرِ بْنِ مُرَّةَ: عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال: ” فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ يَغْفِرُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ لِأَهْلِ الْأَرْضِ إِلَّا الْمُشْرِكَ وَالْمُشَاحِنَ “. ” هَذَا مُرْسَلٌ “
হযরত কাসীর বিন মুররাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি অয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- শাবানের মধ্য রাত্রিতে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা মুশরিক ও কলহকারী ব্যতীত সকল দুনিয়াবাসীদের ক্ষমা করে দেন।হাদিসটি মুরসাল
[বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান হাদীস নং-৩৫৫০]
★ হযরত আয়েশা (রা:) অন্যত্র বর্ণনা নবী করীম (দ:)-এর
হাদীস, যিনি বলেন: “মধ্য-শা’বানের রাতে আল্লাহ তাঁর
বান্দাদের প্রতি নজর করেন
এবং ক্ষমাপ্রার্থীদেরকে ক্ষমা করেন; আর
যারা অন্তরে বিদ্বেষভাব পোষণ করে, তাদেরকে সেই
অবস্থাতেই ছেড়ে দেন।” [আত্ তাবারানী কৃত ‘কবীর’
পুস্তক]
★ রাসূলে খোদা (দ:) এরশাদ ফরমান, “মধ্য-শা’বানের
রাতে আল্লাহতা’লা তাঁর বান্দাদের দিকে তাকান এবং এবাদত-
বন্দেগীতে রত বান্দাদেরকে ক্ষমা করেন; তবে দুই
ধরনের লোককে তিনি ক্ষমা করেন না: ১/
অন্তরে বিদ্বেষভাব পোষণকারী এবং ২/ খুনী।”
[ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল প্রণীত ‘মুসনাদ’ ও আত্ তিরমিযী]
★ হযরত আবূ বকর (রা:) বর্ণনা করেন,
عَنْ أَبِي بَكْرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا كَانَ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ يَنْزِلُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا فَيَغْفِرُ لِعِبَادِهِ إِلَّا مَا كَانَ مِنْ مُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ لِأَخِيهِ
-রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,যখন পনেরই শাবানের রাত হয়,তখন আল্লাহ তায়ালা প্রথম আসমানে তশরীফ আনেন এবং সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেন,মুশরিক ও অপর ভাইয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত।
Reference :
★ তাগরীব,
★ বায়হাক্বী শো’আবুল ঈমান,
★ মুসনাদে বাযযার হাদীস নং-৮০
★ ইবনে খুযায়মা (রা:) ও
★ সহিহ ইবনে হিব্বান (রা:)
★ আল-কাসিম ইবনে মোহাম্মদ ইবনে আবি বকর সিদ্দিক (রহ:)
তাঁর পিতা হতে, তিনি তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন যে তাঁর পিতামহ
বলেন: “আল্লাহ তা’লা মধ্য-শা’বানের রাতে তাঁর সকল সৃষ্টির
প্রতি কৃপাদৃষ্টি করেন এবং সবাইকে ক্ষমা করে দেন; ব্যতিক্রম
শুধু যারা আল্লাহর সাথে শরীক করে এবং যাদের
অন্তরে বিদ্বেষভাব আছে।”
Reference :
★ ইবনে যানজুউইয়ীয়্যা,
★ আদ্ দারু কুতনী কৃত ’সুনান’,
★ ইবনে আদী প্রণীত ‘কামিল’
★ আল-বায়হাকী রচিত ‘শুয়াবুল ঈমান’ গ্রন্থে উদ্ধৃত]
★ রাসূলে খোদা (দ:) এরশাদ ফরমান, “শবে বরাতের
রাতে আমাদের প্রভু খোদাতা’লা পৃথিবীর
আকাশে নেমে আসেন এবং দুনিয়াবাসীকে মাফ করেন;
ব্যতিক্রম কেবল মূর্তি পূজারী ব্যক্তিবর্গ ও
অন্তরে বিদ্বেষভাব
লালনকারী লোকেরা।” [ইবনে মূসা হতে ইবনে
যানজুউইয়ীয়্যা বর্ণিত]
★ হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-অর্ধ শাবানের রাতে [শবে বরাতে]আল্লাহ তাআলা তাঁর সমস্ত মাখলুকের প্রতি মনযোগ আরোপ করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ ভাবাপন্ন ব্যক্তি ছাড়া সকলকে ক্ষমা করে দেন।
Reference :
★ সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৬৬৫,
★ মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-২৭৫৪,
★ মুসনাদে ইসহাক বিন রাহওয়াই, হাদীস নং-১৭০২,
★ তাবারানী : আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৬৭৭৬,
আলবানী তার সিলসিলাতুস সাহিহাহর ৩ নং খন্ডের ১৩৫ নং পৃষ্ঠায় বলেন। “এই হাদিসটি সহীহ” এটি সাহাবাদের এক জামাত বর্ণনা করেছেন বিভিন্ন সূত্রে যার একটি অন্যটিকে শক্তিশালী করেছে। তাদের মাঝে রয়েছেন
# মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ
# আবু সা’লাবা রাঃ
# আব্দুল্লাহ বিন আমর রাঃ
# আবু মুসা আশয়ারী রাঃ
# আবু হুরায়রা রাঃ
# আবু বকর সিদ্দীক রাঃ
# আউফ বিন মালিক রাঃ
# আয়েশা রাঃ প্রমুখ সাহাবাগণ।
মান নির্নয় :
★ আল-আরনাওত এই সনাদকে সহীহ বলেছেন;
★ আত্ তাবারানী, আল-হায়তামী যার সনদকে সহীহ
বলেছেন;
★ রাসূলে পাক (দ:) এরশাদ ফরমান: “নিশ্চয় আমাদের প্রভু
শবে বরাতে উদিত হন এবং সৃষ্টিকুলকে ক্ষমা করেন;
ব্যতিক্রম শুধু মূর্তি পূজারী ও অন্তরে বিদ্বেষ
পোষণকারী ব্যক্তিবর্গ।”
[ইবনে মাজাহ ও ইবনে মনসূর
নিজ ‘সুনান’ পুস্তকে]
★ মহানবী (দ:) এরশাদ ফরমান: “মহান আল্লাহ পাক
শবে বরাতে তাঁর সৃষ্টিকুলের প্রতি নজর করেন এবং সকল
সৃষ্টিকে মাফ করেন; মাফ করেন না শুধু মূর্তি পূজারী ও
অন্তরে বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যক্তিদের।”
[আল-
বায়হাকী কৃত ‘শুয়াবুল ঈমান’]
★ শবে বরাতে আল্লাহতা’লা যমদূত আজরাঈলের কাছে ওই বছর
যাদের জীবনাবসান চান, তাদের তালিকা প্রকাশ করেন।
[রশীদ ইবনে সা’আদ হতে আদ্ দায়নূরী নিজ ‘আল-মাজালিসা’
গ্রন্থে (মুরসালান)]
★★★ শবে বরাতের দোয়া :-
★ মাহমূদ আলূসী নিজ তাফসীর গ্রন্থে ইবনে আবি শায়বা কৃত
‘মোসান্নাফ’ পুস্তক হতে হযরত ইবনে মাসউদ (রা:)-এর
কথা উদ্ধৃত করেন, যিনি বলেন, “বান্দা আল্লাহর কাছে (নিচের)
এই দোয়া করলে তিনি তার জীবন-জীবিকা বৃদ্ধি করে দেন:
হে আল্লাহ! অফুরন্ত রহমত-বরকতের অধিকারী!
হে সর্বোচ্চ শান-শওকত, সম্মান ও ক্ষমতার মালিক!
আপনি ভিন্ন অন্য কোনো খোদা নেই। আপনি-ই
আশ্রয়হীনদের আশ্রয় এবং নৈকট্য অন্বেষীদের
প্রতিবেশী (নিকটবর্তী); মুত্তাকী (খোদাভীরু)-দের
অভিভাবক। এয়া আল্লাহ! আপনি যদি আপনার মূল লিপিতে আমার
দুর্দশা ভারাক্রান্ত হবার বিষয়টি নির্ধারণ করে থাকেন,
তবে তা অপসারণ করুন এবং আমাকে সুখ-সমৃদ্ধি দান করুন।
হে আমার প্রভু! আপনি যদি আপনার কেতাবে আমার
জন্যে আপনার রহমত (আশীর্বাদ) বাদ দেয়ার
কথা লিখে রাখেন, তবে তা মুছে দিন এবং আমার রিযক আমার
জন্যে সহজ করে দিন; আপনার দরবারে আমাকে সুখী,
সৎকর্মশীল ও সমৃদ্ধিশালী করে দিন। কেননা,
আপনি আপনার পাক কালামে এরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ যা চান
নিশ্চিহ্ন করেন এবং প্রতিষ্ঠিত করেন; এবং মূল লিপি তাঁরই
কাছে রয়েছে’।”
(আল-কুরআন, ১৩:৩৯, মুফতী আহমদ
এয়ার খান সাহেব কৃত ’নূরুল এরফান’)
★ আবদ ইবনে হুমাইদ এবং অন্যান্যরা বর্ণনা করেন যে,
হযরত উমর ফারুক (রা:) কাবা শরীফের তাওয়াফকালে দোয়া করেন:
“এয়া আল্লাহ! যদি আপনি লিখে রাখেন
আমি দুঃখী বা পাপী হবো, তবে তা (পরিণতি) মুছে দিন
এবং আমার ভাগ্যে সুখ-সমৃদ্ধি ও গুনাহ মাফের বিষয়টি লিখুন।
কেননা, আপনি যা চান নিশ্চিহ্ন করেন এবং প্রতিষ্ঠিত করেন, আর
আপনার কাছেই রয়েছে মূল লিপি।”
★ হযরত সাঈদ ইবনে জুবাইর (রা:) ও হযরত মোজাহিদ (রা:)-এর
তরীকা (পদ্ধতি) অনুসারে ইবনে জারির তাবারীর বর্ণনায়
এবং অন্যান্য রওয়ায়াত ও আল-এয়াফী’ হতে ‘আল-এবদা’আ’
পুস্তকের লেখকের বিবরণে জানা যায়,
শবে বরাতে প্রথমে যে দোয়া করা হয় তা হলো –
‘এয়া আল্লাহ, অফুরন্ত রহমত-বরকতের মালিক!’