পবিত্র মাহে রামাদান। এ যেন গুনাহগারদের মাগফিরাতের জন্য সুযোগের ছড়াছড়ি। হযরতে আবু যর গিফারী রাদ্বী. কে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নসিহত করেন, ‘হে আবু যর! গুনাহ থেকে বাঁচার চাইতে বড় কোনো পরহেজগারিতা নেই।’
এবং এই পবিত্র মাহে রামাদান তাকওয়া ও পরহেজগারিতা অর্জনের এক বিরাট সুযোগ। গুনাহ থেকে বাঁচা এবং তওবার ওপর অটলতার জন্য ওলামায়ে কেরামগণ যেই পদ্ধতিগুলো বর্ণনা করেন সেগুলোর মধ্যে- নফসের চাহিদাকে দমন করা একটি অন্যতম পয়েন্ট। এই পদ্ধতিটা আমার লেখা ‘তওবার ওপর অটলতা- ০২’ এ আমি উল্লেখ করেছি।
প্রতিদিন যেকোনো একটি মুবাহ কাজ থেকে বাঁচা, এভাবে ৬ সপ্তাহ কন্টিনিউ করা। এটা অন্যান্য মাস গুলো থেকে রামাদানে আমল করা সহজ। কারণ রামাদানে সারাদিন একজন মুসলিম ব্যক্তি পানাহার থেকে বিরত থাকে। ফলে সে অনেকগুলো মুবাহ, প্রয়োজনীয় জায়েজ কাজ গুলো থেকেও বিরত থাকে। নফস তার চাহিদা মতো তাকে চালাতে পারে না। বান্দা এক মাস পর্যন্ত এ আমল জারি রাখার দ্বারা নফস কাবু হয়ে যায়।
তখন নফস চাইলেই তাকে দিয়ে গুনাহ করাতে পারে না। বান্দা বুঝে জায়েজ কাজ থেকেই বিরত থেকেছি আল্লাহ তায়ালার হুকুম এর কারণে। তাহলে যখন হুকুম হয়েছে হারাম কাজ থেকে বিরত থাকার তখন কেন নয়?
দ্বিতীয়ত, ওয়াসওয়াসা প্রদানকারী মুমিনের প্রকাশ্য শত্রু শয়তানকেও এই পবিত্র মাসে বন্দি করে রাখা হয়। তাই শয়তানের দিক থেকেও নিশ্চিন্ত। শুধু মাত্র যুদ্ধ এখন একটি শত্রুর বিরুদ্ধে। তাছাড়া এই মাসে নেক আমলের সাওয়াবও বাড়িয়ে দেয়া হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ হয়ে যায়। জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়।
এই মাসে এমন একটি রাত আছে যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। এটি পবিত্র কালামুল্লাহ নাযিলের রাত।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এত সুযোগ করে দেয়ার পরও যদি এই মাসের ফয়েজ বরকত আমাদের নসিব না হয়, যদি নিজেদের মাগফিরাত করাতে না পারি তাহলে আমাদের চেয়ে হতভাগ্য আর কে?
হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম বলেছিলেন, ‘যারা রামাদানকে পেল, কিন্তু নিজেদের ক্ষমা করাতে পারল না তারা আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হোক।’ আমার রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বলেছিলেন, ‘আমিন।’
রহমাতুল্লিল আলামীন এর আমিন বলার দ্বারা বুঝা যায় তাদের জন্য কতটুকু লাঞ্ছনা রয়েছে।