রহমতের ফুল ঝরছে

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

রহমতের ফুল ঝরছে। স্বয়ং মোস্তাফা ﷺ থেকে। সামনে বসা প্রিয় সাহাবী সায়্যিদুনা আবু যর গিফারী রা.। নিজের ঝুলিতে কুড়িয়ে নিচ্ছেন মাদানী ফুল।

যেহেতু আমাদের কাছ পর্যন্ত বরকতময় ফুলগুলো পৌঁছেছে, তাহলে আর দেরি কিসের! নিজের খালি ঝুলিকে মাদানী ফুল দিয়ে ভরপুর করে ফেলি। আর নিতে থাকি ফুলের সৌরভ। 

হযরত সায়্যিদুনা আবু যর গিফারী রা. বর্ণনা করেন, আমি হুযুর পুরনুর ﷺ কে আরয করলাম: “ইয়া রাসূলাল্লাহ ﷺ আমাকে কিছু উপদেশ দিন।” হুযুর ইরশাদ ﷺ করলেন: “আমি তােমাকে আল্লাহকে ভয় করার উপদেশ দিচ্ছি। নিঃসন্দেহে এটি তােমার দ্বীনের (ধার্মিকতার) মূল।” আমি আরয করলাম: “ আরাে কিছু উপদেশ দিন।” ইরশাদ করলেন: “কোরআন মজীদের তিলাওয়াত এবং অধিকহারে আল্লাহর যিকির করাে, কেননা তা তােমার জন্য আসমান এবং জমিনে নূর হবে।” 

আমি আরয করলাম: “ ইয়া রাসূলাল্লাহ ﷺ আমাকে আরাে কিছু উপদেশ দিন।” ইরশাদ করলেন: “ জিহাদ করাকে নিজের উপর অপরিহার্য করে নাও, কেননা তা আমার উম্মতদের জন্য (রাহবানিয়াত) স্বরূপ।” [১]

আমি আরয করলাম: ইয়া রাসূলাল্লাহ ﷺ আরাে কিছু নসিহত করুন।

ইরশাদ করলেন: “ কম হাসবে, কেননা অধিক হাসি অন্তরকে মৃত এবং চেহারাকে অনুজ্জ্বল করে দেয়।” (এখানে উচ্চস্বরে হাসাহাসিকে বুঝানো হয়েছে। কারণ আমার আক্বার চেয়ে আর কেউ বেশি মুচকি হাসেন নি। এটা সুন্নাহ)

আমি আরয করলাম: আরাে উপদেশ দিন। ইরশাদ করলেন: “ ভাল কথা বলা ব্যতিত নিরব থাকবে, কেননা নিরবতা শয়তানের বিরুদ্ধে ঢাল স্বরূপ আর দ্বীনি কাজে তােমার জন্য সহায়ক।” 

আমি আরয করলাম: “আরাে কিছু নসিহত করুন।” ইরশাদ করলেন: “ (দুনিয়াবী বিষয়ে) তােমার চেয়ে নগন্যকে দেখাে, উত্তমদের দিকে দেখাে না, কেননা এই আমলটি তা থেকে উত্তম যে, তুমি আল্লাহ পাকের নেয়ামতকে তুচ্ছ মনে করবে।” আমি আরয করলাম: ইয়া রাসূলাল্লাহ ﷺ আরাে কিছু নসিহত করুন।

ইরশাদ করলেন: “ অভাবীদেরকে ভালবাসাে আর তাদের সংস্পর্শ অবলম্বন করাে।” আমি আরয করলাম: আরাে কিছু ইরশাদ করুন। ইরশাদ করলেন: “ সত্য কথা বলাে, যদিও তা তিক্ত হয়।” আমি আরয করলাম: ইয়া রাসূলাল্লাহ ﷺ আরাে কিছু নসিহত করুন। ইরশাদ করলেন: “ আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখাে, যদিওবা তারা তােমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে।” 

আমি আর করলাম: ইয়া রাসূলাল্লাহ ﷺ আরাে কিছু নসিহত করুন। ইরশাদ করলেন: “ আল্লাহ পাকের ব্যাপারে কারাে নিন্দাকে ভয় করাে না।” আমি আরয করলাম: “আরাে কিছু নসিহত করুন।” ইরশাদ করলেন: “মানুষের জন্যও তা-ই পছন্দ করাে, যা নিজের জন্য পছন্দ করাে।” 

অতঃপর হুযুর ﷺ তাঁর হাত মােবারক আমার বুকে রাখলেন এবং ইরশাদ করলেন: “হে আবু যর! তদবীরের চাইতে কোন বুদ্ধিমত্তা নেই, গুনাহ থেকে বাঁচার চাইতে কোন পরহেযগারী নেই আর উত্তম চরিত্রের চাইতে কোন আভিজাত্য নেই।”[২]

আল্লাহু আকবার। কি অপরুপ দৃশ্য চলছিল আক্বা আর গোলামের মধ্যে। নোট করে নিন। কাগজে লিখে পড়ার টেবিলে রেখে দিন। দৈনিক একবার চোখ বুলিয়ে নিন এতে। আর চেষ্টা করুন আমল করার। যেদিন আপনার চেষ্টা সফল হবে সেদিন আপনি এক অনন্য মর্যাদায় উপনীত হবেন। 

রেফারেন্সঃ[

১] অধিকহারে ইবাদত ও রিয়াযত করা এবং লােকজন থেকে দুরে থাকাকে রাহবানিয়াত বলে। (তাফসিরে বায়যাবী, ২৭ তম পারা, ২৭ তম আয়াতের পাদটিকা, ৫/৩০৫)

[২] আত তারগীব ওয়াত তারহীব, কিতাবুল কাযা, হাদিস নং- ২৪, ৩/১৩১।

জাজাকাল্লাহু খাইরান 

স্বাধীন আহমেদ 

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment