মানবদেহে ৪টি বস্তু রয়েছে। যথাঃ (১) দেহ (২) উপশিরা (৩) ক্বলব ও (৪) রূহ বা আত্মা। ক্বলব শরীরে রক্ত সঞ্চালন করে শিরা উপশিরার মাধ্যমে আবার ক্বলবকে পরিচালনা করে রূহ। তদ্রূপ আল্লাহ তায়ালা রাসূলে পাকের মাধ্যমে আমাদেরকে চারটি জিনিস দান করেছেন। (১) শরিয়ত (২) তরিকত (৩) হাক্বীক্বত ও (৪) মারেফাত। শরীয়ত দ্বারা তিনি আমাদের শরীর পাক করার শিক্ষা দিয়েছেন। তরিকত দ্বারা আমাদের চিন্তা চেতনা পবিত্র করেছেন। হাক্বীক্বত দ্বারা পাক করেছেন ক্বলবকে এবং মারেফাত দ্বারা পাক করেছেন আত্মাকে। এই জন্য এক বর্ণনায় এসেছে –
الشريعة أقوالى – والطريقة أفعالى- والحقيقة احوالی- والمعرفة اسنزاری
অর্থাৎ- ”শরিয়ত আমার বাণী, তরিকত আমার কার্যাবলী, হাক্বীক্বত আমার বিশেষ হাল (ঐশী উন্মাদনা) এবং মারেফাত আমার গুপ্ত রহস্য”।
এটা জানা একান্ত প্রয়োজন – শরীয়তের কেন্দ্র হলো নবী মোস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর জবান মোবারক। তরিকতের কেন্দ্র হলো নবীজীর সিনা মোবারক। হাক্বীক্বতের কেন্দ্র হলো নবীজীর রূহ মোবারক। মারেফাতের কেন্দ্র হলো নবীজির গোপন ভেদ বা হাক্বীক্বতে মোহাম্মদীর তত্বজ্ঞান।
আমাদের দেহে নফসে আম্মারা নামক একটি কুপ্রবৃত্তি রয়েছে। এটাকে পানি দ্বারা পাক করা যায় না। এটাকে পাক করা যায় একমাত্র এশকে রাসূল বা হুব্বে রাসূল দ্বারা।
সৃষ্টির জন্য রাসূলের এত বেশী প্রয়াজন- যেমন প্রয়াজন মৃত জমীনের জন্য বৃষ্টির। জমির কোন অংশই যেমন পানিমুক্ত হতে পারে না তেমনিভাবে আমাদের হায়াত, মাউত, কবর, হাশর, নশর- সবকিছুই রাসূলবিহীন অবস্থায় থাকতে পারেনা। ইহজগত ও পরজগতে রাসূল ছাড়া গতি নেই। কবরে রাসূল সম্পর্কে পরীক্ষা হবে। হাশরে রাসূলের সুপারিশেই বিচার অনুষ্ঠান শুরু হবে। দোজখীরা রাসূলের সুপারিশে নাজাত পাবে। বেহেস্তীরা রাসূলের সুপারিশে উচ্চ মর্যাদা লাভ করবে। ৪৯০ কোটি লোক শুধু রাসূলের সুপারিশেই বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (হাদিকতুন নাদিয়া- আল্লামা আবদুল গণী নাবলুহী)।