এবার দেখুন- রাসূল সক্ষম- না অক্ষম?
১। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এরশাদ করেন
وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ –
অর্থাৎ- “প্রেরিত নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাহেরী ও বাতেনী সব ধরণের অপবিত্রতা থেকে লোকদেরকে পাক পবিত্র করেন এবং তাদেরকে আল্লাহর কিতাব ও নবীর হিকমত (হাদিস) শিক্ষা দেন”। (সূরা জুমুয়াঃ ২)।
বুঝা গেল, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ক্ষমতাহীন বা অক্ষম নন - বরং ক্ষমতাবান ও পাক পবিত্র করতে সক্ষম। অক্ষম হলে এরূপ করতে পারতেন না।
২। সূরা তাওবা ১০৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ পাক এরশাদ করেন –
خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِم بِهَا
“হে মাহবুব! আপনি তাদের মালামালের সদকা বা যাকাত গ্রহণ করে তাদেরকে যাহেরী ও বাতেনী অপবিত্রতা থেকে পাক পবিত্র করুন”।
বুঝা গেল- তিনি মানুষকে পাক পবিত্র করতে সক্ষম।
৩। সূরা আহাযাব। ৫১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ পাক এরশাদ করেন –
تُرْجِي مَن تَشَاءُ مِنْهُنَّ وَتُؤْوِي إِلَيْكَ مَن تَشَاءُ ۖ
”হে রাসূল! আপনি আপনার বিবিগণের মধ্যে যাকে চান- বিবাহ বন্ধনে রাখুন- আর যাকে চান আপনার থেকে পৃথক করে দিন”।
প্রতীয়মান হলো- বিবিগণকে রাখা না রাখার ব্যাপারে তিনি আল্লাহ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত।
৪। সূরা আহাযাব ৩৬ নম্বর আয়াতে এরশাদ হচ্ছে –
وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا
অর্থাৎ- “যখন আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন বিষয়ে ফয়সালা দেন- তখন কোন মু’মিন নর অথবা মু’মিন নারীর দ্বিমত পোষণ করার কোনই ইখতিয়ার নেই”।
বুঝা গেলা- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফয়সালা দিতে সক্ষম এবং তার সামনে উম্মতরা অক্ষম বা ক্ষমতাহীন।
৫। সূরা নিছা ৬৫ নম্বর আয়াতে এরশাদ হয়েছে –
فَلاَ وَرَبِّكَ لاَ يُؤْمِنُونَ حَتَّىَ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لاَ يَجِدُواْ فِي أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُواْ تَسْلِيمًا
”হে প্রিয় হাবীব! আপনার রবের শপথ। এই লোকেরা ততক্ষণ পর্যন্ত মো’মেন হতে পারবেনা- যতক্ষণ না তাদের বিবাদে আপনাকে একচ্ছত্ৰ ক্ষমতাবান বিচারক স্বীকার করবে এবং আপনার ফয়সালা মানতে তাদের হৃদয়ে সংকীর্ণতা না থাকবে- বরঞ্চ তারা অবনত মস্তকে তা স্বীকার করে নিবে”।
-অত্র আয়াতেই প্রমাণিত হলো যে- নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অপরাধ মূলক বিচারের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও ক্ষমতাবান শাসক। উম্মতের উপর তিনি ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকারী। যারা বলে- তিনি ছিলেন শুধু আল্লাহর বার্তা বাহক- তাদের মতে তিনি অক্ষম ও দূর্বল। ইসমাঈল দেহলভী তো বলেই ফেলেছে যে- “যার নাম মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- সে কোন কিছুর মালিক ও মোখতার নন”। (তাকভিয়াতুল ঈমান)।
উপরে উল্লেখিত ৫টি আয়াতই প্রমাণ করে যে, তিনি দূর্বল ও অক্ষম নন; তিনি শুধু বার্তা বাহক নন – বরং তিনি ক্ষমতাপ্রাপ্ত রাসূল। ফিরিস্তা রাসূল এই ক্ষমতার অধিকারী নয়- তারা শুধু বার্তা বহন করে নবীগণের কাছে পৌছিয়ে দেয়- প্রয়োগ করার ক্ষমতা তাদের নেই।