জিজ্ঞাসা–৭৫১: আসসালামুয়ালাইকুম। আমার কিছু ভাবলে আবার কিছু ভাবা ছারাও আমার লিংগ থেকে পাতলা ধাতু বাহির হয়। অযু অবস্থায় বসার সময় প্রায় সব সময়। এখন এইরকম হলে কি আমার কাপর নষ্ট হয়ে যাবে, আবার কাপর পরিবর্তন করতে হবে?? আমার অযু অবস্থায় নামাযরত অবস্থায় এইরকম হলে তখন কি করা যাই।প্লিজ আন্সার দিলে উপক্রিত হব ইনশাআল্লাহ।– মোহাম্মাদ ওমর ফারুক।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
এক. শরিয়তের দৃষ্টিতে মযি বা কামরস নাপাক। এটি নির্গত হলে ওযূ নষ্ট হয় এবং এবং যেখানে এটি লাগে সেই জায়গা ধুয়ে পবিত্র করে নিতে হয়। আলী রাযি. বলেন,
كُنْتُ رَجُلًا مَذَّاءً فَأَمَرْتُ رَجُلًا أَنْ يَسْأَلَ النَّبِيَّ ﷺ ، لِمَكَانِ ابْنَتِهِ، فَسَأَلَ فَقَالَ: تَوَضَّأْ وَاغْسِلْ ذَكَرَكَ
আমার অধিক মযি বের হত। নবী ﷺ এর কন্যা আমার স্ত্রী হওয়া লজ্জার কারণে আমি একজনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে পাঠালাম। তিনি প্রশ্ন করলে রাসূল ﷺ তাকে বললেন যে, তুমি ওযূ কর ও লজ্জাস্থান ধুয়ে ফেল। (বুখারী ২৬৯)
সুতরাং আপনি আন্ডারওয়্যার বা টিস্যু ব্যবহার করে নাপাকি ছড়িয়ে পড়াকে নিয়ন্ত্রণ করবেন। তারপর যতটুকু তে নাপাকি লেগেছে, ততটুকু ধুয়ে নিয়ে ওযূ করে নামায আদায় করবেন।
দুই. আর আপনার রোগটা যদি এমন হয় যে, সারাক্ষণই অল্প অল্প পরিমাণ বের হতে থাকে, এতটুকু সময় পাওয়া যায় না যে, যার মাঝে ফরজ নামাযটুকু আদায় করা যায়, তাহলে শরয়ী পরিভাষায় আপনি মাজুরের অন্তর্ভুক্ত।
এমন ব্যক্তি প্রতি ওয়াক্তের নামাযের জন্য নতুন করে ওযূ করবেন এবং এ ওযূ দিয়ে ফরজ বা নফল যত রাকাত নামায পড়তে চান পড়তে পারবেন, কোরআন স্পর্শ করতে পারবেন। ওয়াক্তের ভেতরে নির্গত হতে থাকলেও কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু পরের নামাযের সময় হয়ে গেলেই ওযূটি ভেঙ্গে যাবে। আবার নতুন করে ওযূ করে নামায পড়তে হবে। এভাবে মাজুর ব্যক্তি নামায আদায় করবে।
এক্ষেত্রে যদি সম্ভব হয়, তাহলে পবিত্র কাপড় দিয়ে নামায আদায় করবেন। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে উক্ত কাপড়সহই নামায আদায় করবেন। (হাশিয়াতুত তাহতাবী আলা মারাকিল ফালাহ-১৪৮-১৫১)
এর দলিল হল, হাদিসে আছে, এক বার ফাতিমা বিনতে আবূ হুবায়শ রাযি. রাসূল ﷺ-এর নিকট এসে বললেন,
يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِنِّي لَا أَطْهُرُ أَفَأَدَعُ الصَّلاَةَ
হে আল্লাহ্র রসূল! আমার রক্তস্রাব হতেই থাকে এবং আমি কখনো পবিত্র হতে পারি না। আমি কি নামায ছেড়ে দিবো?
রাসূল ﷺ উত্তর দিলেন,
إِنَّمَا ذَلِكِ عِرْقٌ وَلَيْسَ بِالحَيْضَةِ ، فَإِذَا أَقْبَلَتِ الحَيْضَةُ فَاتْرُكِي الصَّلاَةَ ، فَإِذَا ذَهَبَ قَدْرُهَا ، فَاغْسِلِي عَنْكِ الدَّمَ وَصَلِّي
না, এটা এক প্রকার শিরাজনিত রোগ, এটা হায়েযের রক্ত নয়। তুমি তোমার হায়েযের মেয়াদকাল নামায থেকে বিরত থাকো, আর যখন তা বন্ধ হয়ে যাবে তখন রক্ত ধুয়ে ফেলবে, তারপর নামায আদায় করবে। (বুখারি ২২৮)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী