মিজানুর রহমান আজহারী সম্পর্কে –
আগে পোস্টি পড়ুন। তারপর যত গালাগালি দিতে থাকুন।কারণ, এখনকার মানুষ সারাদিন নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। ইসলামী জ্ঞান অর্জনে তার সময় কোথায়। সারাদিন কাজ করে সন্ধ্যায় ইউটিউব নিয়ে বসে। ঢুকতেই ইস্কিনে ভেসে ওঠে ওমুক আজহারী। স্মার্ট বডি ল্যাংগু আর চেহারায় ঝিলিক(আমার তালতো হলকিউব এর মত) প্লে করতেই সুমধুর কন্ঠ, কথার যে স্টাইল, একটু পরেই আবার গান! আহ! কত বড় ইস্কলার। এই হচ্ছে আমাদের বর্তমান অবস্থা।যাক সে সব কথা,
আচ্ছা আজহারী কি গাজা খায়? মনে হয় মেয়াদ উত্তীর্ণ খায়। সেকি মাতলামি করে? মনে হয় করে কারণ, সে খাদিজাতুল কুবরা (রা) কে গালি দিয়েছিল। কি? ভুল করে দিয়েছিল? দিন, আপনি আপনার মাকে ভুল করে গালি দিন। হাজার মা খাজিদা (রা) কদমে কোরবান হোক। মাতাল ছাড়া কেউ মাকে গালি দিতে পারে না। আপনি কি আজহারী কে ভালবাসেন? হ্যাঁ, আমিও ভালবাসি আম্মাজান খাদিজা (রা) কে। আমার কথায় আপনার খারাপ লাগতেছে? হ্যাঁ, আমারও লেগেছে, যখন আজহারী নেশার ঘোরে মাওলা আলী (রা) কে মাতাল বলেছে! আমিতো কোন আলেম কে ভালবাসি আল্লাহ ও রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর জন্য। আপনি কেন বাসেন? গুড লুকিং? নাকি সুমধুর গানের জন্যে(আদো রাতে যদি ঘুম ভেঙ্গে,…. চোর আসে) ? যদি ইসলামের জন্য বাসেন তবে আপনার খারাপ লাগার কথা নয়। এবার আসুন মাতলামির দিকে?
তিরমিজি শরীফে একটা হাদীস আছে আলী রাঃ বলেন,
صَنَعَ لَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ طَعَامًا فَدَعَانَا وَسَقَانَا مِنْ الْخَمْرِ فَأَخَذَتْ الْخَمْرُ مِنَّا وَحَضَرَتْ الصَّلَاةُ فَقَدَّمُونِي فَقَرَأْتُ
“অর্থাৎ মদ হারাম হওয়ার আগে আব্দুর রহমান ইবনে আউফ মদ তৈরি করে আমাদের ডাকলেন আমরা খেলাম, এমন সময় মাগরিবের নামাজের আযান হল আমি ইমামতির জন্য অগ্রসর হলাম। তারপর কেরাত পড়তে ভুল করি।”
এখন আপনারা বলবেন হাদীসতো আছেই। তাহলে আজহারীর বিরুদ্ধে শত্রুতা কেন? এই কেন এর জবাব শূনুন।
আহলে হাদীছের ইমাম শ্ওকানী তার নাইলুল আওতারে এই হাদীসের ব্যাপারে ইমাম মুনযিরি এর ক্ওল উল্লেখ করেন
قال المنذري : وقد اختلف في إسناده ومتنه
অর্থাৎ এই হাদীসের সনদ মতনে মত বিরোধ আছে। নাইলুল আওতার, কিতাবুশ শরাব।
অনেক পর্যালোচনা থেকে শুধু একটা দিলাম।
এবার আসুন সুনান বাজ্জার এবং আবু দাউদ শরীফে,
صلى بهم علي رضى الله عنه
অর্থাৎ আলী রাঃ তাদের সাথে নামাজ পড়েছেন।
এই হাদীস পুরোটা দেইনি যতটুকু দরকার ততটুকু দিয়েছি।এখানে আলী রাঃ ইমাম নেই।
আবার সুনান নাসাযী দেখুন,
أن المصلي بهم عبد الرحمن بن عوف
এখানে ইমাম আব্দুর রহমান ইবনে আউফ।
চলেন সংশয় দুর করি,
ইমাম হাকেম তার মুসতাদরেকে উল্লেখ করেন,
وأخرج الحاكم في تفسير سورة النساء عن عطاء بن السائب عن أبي عبد الرحمن عن علي رضي الله عنه دعانا رجل من الأنصار قبل تحريم الخمر فحضرت صلاة المغرب فتقدم رجل فقرأ : { قل يا أيها الكافرون } فألبس عليه , فنزلت { لا تقربوا الصلاة وأنتم سكارى } ثم قال : صحيح .
অর্থাৎ আলী রাঃ বলেন মদ হারাম হওয়ার আগে আনসারী এক সাহাবি দাওয়াত করে। ওখানেই মাগরিবের সময় উপস্থিত হয়। অতঃপর এক ব্যক্তি ইমামতি করে এবং কেরাতে ভূল পড়ে।
তারপর তিনি আরও বলেন
وفي هذا الحديث فائدة كبيرة وهي أن الخوارج تنسب هذا السكر وهذه القراءة إلى أمير المؤمنين علي بن أبي طالب دون غيره
অর্থাৎ এবং এই হাদীসে অনেক বড় উপকার আছে আর সেটা হল খারিজি এবং অন্যান্য মহাশয় মদ এবং কেরাতর বিষয়ে আলী রাঃ এর দিকে নিসবত করে সেটার মিমাংশা হল।
দেখুন, আমি আলী রাঃ এর গোলাম তো দাবী করার মর্যাদা রাখিনা কিন্তু উনার গোলামরা যেই গলিতে হাটে ওই গলির কুকুর আমি তাই গেউ গেউ করি। কারণ, গলিতে মোফাস্সীর বেশে চোর ঢুকছে।
চলেন আরেকটা হাদীস দেখি
حدثنا : يعقوب ، حدثنا : أبي ، عن ابن إسحاق ، قال : فحدثني عبد الله بن عبد الرحمن بن معمر ابن حزم ، عن سليمان بن محمد بن كعب بن عجرة ، عن عمته زينب بنت كعب وكانت عند أبي سعيد الخدري ، عن أبي سعيد الخدري ، قال : اشتكى عليا الناس ، قال : فقام رسول الله (ص) فينا خطيبا فسمعته ، يقول : أيها الناس لا تشكوا عليا ، فوالله إنه لأخيشن في ذات الله أو في سبيل الله.
অর্থাৎ আবু সাঈদ খুদরী রাঃ বলেন
এক লোক রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এর দরবারে আলী রাঃ এর নামে অভিযোগ করলো। আক্বা বসা ছিলেন দাড়িয়ে গেলেন।আর বললেন, তোমরা আলীর নামে অভিযোগ করোনা। আল্লাহর কসম নিশ্চই সে আল্লাহর জাত এবং তার রাস্তায় বড় কঠিন। মুসনাদে আহমদ, মুসতাদরেকে হাকেম।
এই হাদীস বর্ননা করে ইমাম হাকেম বলেন :সহীহ।
এই হাদীসের অনেকগুলো সনদ আছে। তার মধ্যে ইমাম হাকেম হাদীস বর্ননা করে বলেন :বোখারী ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ।
আপনারাতো বলবেন আজহারী এত বড় ইসকুলার আমরা তার পিছনে কেন লাগি। সেকি এই হাদীস দেখেনি?
হিংসুক ছাড়া কেউ আজহারীর পেছনে লাগে না! আমি বলি রাখুন আপনার চাপাবাজি। সে আলী রাঃ এর পেছনে লাগলো কেন? মুনাফিকি নয় তো?
قال الحافظ في الفتح ” وقد ثبت في صحيح مسلم عن علي أن النبي صلى الله عليه وآله وسلم قال له: لا يحبك إلا مؤمن ولا يبغضك إلا منافق.
অর্থাৎ হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেন: হে আলী, তোমাকে মুমিন ছাড়া ভালবাসবেনা আর মুনাফিক ছাড়া ঘৃনা করবে না।সহীহ মুসলিম।
এখন কেউ বলবে উঁহহ হেতে ফতোয়াবাজি করে। না আমি ফতোয়াবাজি করছি না। কিন্তু, যে তার মাকে ভালবাসে সে লোকের কান কথায় মায়ের স্কুল লাইফের প্রেম কাহিনি সমাজে বলে বেড়াবেনা। মাকে দিয়ে উদাহরণ দিলাম। এখন আবার কেউ বলে উঠবে ভাই আপনি কি শিয়া? না হুব্বে(মহব্বত) আলী রাঃ কে কেউ শিয়া বলে না। বুগজে(ঘৃনা) সাহাবা-ই-কিরামকে শিয়া বলে।
আরেক হাদীসে আক্বা ইরশাদ করেন
قال رسول الله صلّى الله عليه وسلّم لعليّ: يا عليّ طوبى لمن أحبك وصدق فيك، وويل لمن أبغضك وكذب فيك. أخرجه الحاكم (3/ 135)، والطبراني في (الأوسط) _ (مجمع الزوائد) (9/ 132) – والخطيب في (تاريخ بغداد) (9/ 72)
হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেন:হে আলী, মোবারকবাদ জানাই তাকে যে তোমাকে ভালবাসে এবং তা সত্য মনে করে এবং অভিশাপ দেই তাকে যে তোমাকে যে তোমাকে ঘৃণা করে। মুসতাদরেকে হাকেম।
গালি দিন কারণ কুকুর যখন গেউ গেউ করে তখন সবাই গালি দেয়। চোরকে দেয় না কারণ চোরতো সাধু সেজে আছে।