বিয়ের পরে স্ত্রী কতোটুকু স্বাধীনভাবে চলতে পারবে?

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

আসসালামু আলাইকুম,

আমরা যদি বিশ্বের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো, নারীরা পুরুষদের দ্বারা সবচেয়ে বেশি নিগৃতো হয়। তারা ইভটিজিং, ধর্ষণ, প্রতারণা সহ নানাভাবে নির্যাতনের শিকার। এ পরিস্থিতিতে একমাত্র ইসলামি বিধিবিধান অনুসরণই নারীদের প্রতি সহিংসতা কমাতে পারে এ কথা ১০০% নিশ্চয়তা সহকারে বলা যায়। কেনোনা, যে মহান স্রষ্টা আল্লাহ নারী এবং পুরুষকে সৃষ্টি করেছেন তিনি অবশ্যই তাদের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি অবোগতো। তাই তিনি উভয়ের জন্য বেশ কিছু নীতিমালা নির্ধারণ করেছেন। আমাদের সকলের জন্য আবশ্যক হলো, সেগুলো যথাযথোভাবে মেনে চলা। তাহলে আমরা যেমন একটি সুস্থ ও সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ করতে সক্ষম হবো তেমনি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করে প্রবেশ করতে পারবো সুখসমৃদ্ধির চিরোস্থায়ী নীড় জান্নাতে।

এখানে নারীদের সম্পর্কে প্রশ্ন করায় কেবল তাদের করণীয় বিষয়গুলো অতি সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো: বিয়ের আগে এবং পরে সর্বাবস্থায় একজন মুসলিম নারীর জন্য আবশ্যক হচ্ছে যে,

১. তারা নিজেদের স্বামী, বাবা, ভাই, দাদা, চাচা এবং মহিলা অঙ্গন ছাড়া নিজের রূপচর্চা, সৌন্দর্য ও অলঙ্কারের প্রদর্শনী করবে না।

২. স্বামী ছাড়া অন্যান্য মাহরাম পুরুষদের সামনে ভদ্র ও শালীন পোশাক পরিধান করে চলাফেরা করবে।

৩. একান্ত জরুরি দরকার না হলে বাড়ি থেকে বের হবে না। বাড়ির বাইরে যাওয়ার দরকার হলে অবশ্যই পরিপূর্ণ পর্দা করে বের হবে। দরকার শেষ হলে অনতি বিলম্বে বাড়ি ফিরে আসবে।

৪. জরুরি দরকারে বাইরে যেতে হলে এমন সুগন্ধযুক্ত পারফিউম, সেন্ট, আতর, ক্রিম, পাউডার ইত্যাদি ব্যবহার করবে না যার সুগন্ধি অন্য পরপুরুষ পর্যন্ত পৌঁছে। তবে বাড়িতে স্বামী, মাহরাম পুরুষ অথবা নারী অঙ্গনে এসব প্রসাধনী ব্যবহারে কোনো আপত্তি নাই ইনশাআল্লাহ।

৫. কোনো পর পুরুষের সাথে প্রয়োজন হীন কথাবার্তা বলবে না। এমনকি ফিতনার আশঙ্কা থাকলে সালাম দেওয়া কিংবা সালামের জবাব দেওয়া থেকেও বিরতো থাকবে।

৬. স্বামী অথবা মাহরাম পুরুষ তথা বাবা, ভাই, দাদা, চাচা প্রমুখ ব্যক্তিদের সাথে ছাড়া একাকী কোথাও দূরের সফরে যাবে না।

৭. কোনো পর পুরুষের সাথে নরম স্বরে কথা বলবে না ও হাসি-মজাক করবে না।

৮. বিশেষ করে বিয়ের পর, স্বামীর আপন ভাই (দেবর-ভাসুর) ও অন্যান্য নিকটাত্মীয় নন মাহরাম পুরুষদের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবে। কারণ হাদিসে এ জাতীয় সম্পর্কের লোকদেরকে ‘মৃত্যু সমোতুল্য’ বলা হয়েছে।

৯. পর পুরুষদের সাথে কোথাও নির্জনে একত্রিতো হবে না।

১০. ফেসবুক বা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বা পরিবারের কোনো মেয়ের ছবি আপলোড করবে না।

১১. স্বামীর বন্ধুদের সাথে রং-তামাশায় লিপ্ত হবে না ও আড্ডা দিবে না।

১২. স্বামীর সাথে অথবা একাকী অন্য মহিলাদের সাথে কোনো বিয়ের পার্টি বা এ জাতীয় অনুষ্ঠানে বেপর্দা অবস্থায় যাবে না। এ সকল বিধিবিধান বিয়ের আগে যেমন পালনীয় তেমনি বিয়ের পরেও পালনীয়। সর্বাবস্থায় একজন মুসলিম নারী নিজেকে ইসলামের অনুশাসনের মধ্যে রাখবে এবং সর্ব প্রকার প্রকাশ্য ও গোপন ফিতনা থেকে দূরে রাখবে।

সর্বোপরি মনে রাখা আবশ্যক যে, একজন বিবাহিতা নারীর জন্য তার স্বামীর আনুগত্য, সেবা ও তার সন্তুষ্টি অর্জন আখিরাতের সাফল্য ও মুক্তির কারণ এবং তার অবাধ্যতা (পাপাচার/আল্লাহর নাফরমানি এবং সাধ্যাতীত বিষয় ছাড়া) দুনিয়া ও আখিরাতের ধ্বংসের কারণ।

আল্লাহ যেন আমাদের সকলকে সঠিক বুঝ দান করেন । অমিন

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment