সমাজে বসবাস করতে গেলে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের মধ্যে কখনো কখনো পারস্পরিক ভুল-বোঝাবুঝি, মন-কষাকষি বা ঝগড়াঝাঁটি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। এ অবস্থায় তৃতীয় একটি পক্ষকে এগিয়ে এসে তাদের মধ্যকার ঝগড়া-বিবাদ মিটিয়ে দিতে হবে। এটা মুসলমানদের ঈমানি দায়িত্ব। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুমিনরা পরস্পর ভাই-ভাই।সুতরাং তোমাদের ভাইদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। আশা করা যায়, তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হবে।’ (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১০)
বিবাদ মীমাংসার বিষয়টিতে ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমি কি তোমাদের সিয়াম, সালাত ও সদকার চেয়ে উত্তম মর্যাদাকর বিষয় সম্পর্কে খবর দেব না? সাহাবিরা বলেন, অবশ্যই আল্লাহর রাসুল! তিনি বলেন, বিবদমান বিষয়ে মীমাংসা করা।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯১৯, তিরমিজি, হাদিস : ২৬৪০)
সামান্য ভুলভ্রান্তির কারণে মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হলেও অনেক ক্ষেত্রে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। তাই বিবাদ মীমাংসার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ যেমন যুদ্ধের অনুমতি দিয়েছেন, তেমনি রাসুলুল্লাহ (সা.) ঝগড়া-বিবাদ নিরসনের লক্ষ্যে প্রয়োজনে যৎসামান্য মিথ্যা বলারও অনুমতি দিয়েছেন। যেমন—তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের মধ্যে আপস-মীমাংসা করে দেয়, সে মিথ্যাবাদী নয়।বস্তুত সে ভালো কথা বলে এবং উত্তম কথাই আদান-প্রদান করে।’ (বুখারি, হাদিস : ২৬৯২)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরো বলেন, ‘তিনটি ক্ষেত্র ছাড়া মিথ্যা বলা জায়েজ নয়—১. কোনো ব্যক্তি তার স্ত্রীর সঙ্গে (স্ত্রীকে খুশি করার জন্য) কথাবার্তা বলার সময়; ২. যুদ্ধের ময়দানে এবং ৩. মানুষের মধ্যে মীমাংসা করার জন্য।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৩৯)
সমঝোতার মাধ্যমে দুটি বিবদমান দল পারস্পরিক ভুলভ্রান্তি নিরসন করে ভাই-ভাই হয়ে যায়। এর পথ ধরে পরিবার ও সমাজে শান্তি নেমে আসে।