নারী পুরুষ নামাজের পার্থক্যে সহীহ হাদীস
প্রথম পার্থক্য:-
১.হযরত ওয়ায়েল ইবনে হুজর রাঃ থেকে বর্ণিত-
عن وئلِ بن حُجْرٍ قال:قال لي رسولُ اللّٰهِ صلى اللّٰه عليه وسلم،يا وائلَ بنَ حجرٍ اذا صلَّيتَ فاجعلْ يديكَ حذاءَ أذُنيكَ،والمرأَةُ تَجعَلُ يديها خذاءَ ثدْيَيْها
হযরত ওয়ায়েল ইবনে হুজর রাঃ থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,আমি নবীজির নিকট আসলাম, তিনি আমাকে বললেন :হে ওয়ায়েল ইবনে হুজর!যখন তুমি নামাজ পডবে তখন তুমি তোমার হাত কান পর্যন্ত উঠাবে আর মহিলারা তাদের হাত বক্ষ বরাবর উঠাবে।
সুত্র:-তাবরানী-মু’জামুল কাবীর ২২/১৯, হাদীস নং ২৮;
হাইসামী-মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৯/৩৭৪,হাদীস নং ১৬০০৫;
সনদ বিশ্লেষন:-ইমাম হায়সামী বলেন এই হাদীসের সমস্ত রাবী বিশ্বস্ত।তিনি আরো বলেন মায়মুনা বিনতে হুজর হাদীসটি তার মা উম্মে ইয়াহইয়া বিনতে আব্দুল জাব্বার থেকে বর্ননা করেছেন,আমি তার সম্পর্কে পরিচিত নই।বুঝা গেলো এই সনদে কোন আপত্তিকর রাবী নাই,শুধু তিনি একজনের জীবনী পাননি।কিন্তু আলোচ্য কথাটি লিখতে তিনিতো বলেই দিলেন রাবীটির নাম “উম্মে ইয়াহইয়া বিনতে আব্দুল জাব্বার” যিনি মায়মুনা বিনতে হুজর এর মা। তারপরও আমরা দেখবো ওনার জীবনী অন্য কোথাও পাওয়া যায় কিনা!
ইমাম আবু নুয়াইম রহঃ ও ইবনে আসাকীর রহঃ তার পরিচয় তুলে ধরেছেন-
حدثنا ميمونةُ بنتُ حجرِ بنِ عبدِ الجبارِ بنِ وائلٍ،قالت سمعتُ عمَّتِيَ كبْشَةَ ام يحي بنتِ عبدِ الجبار بنِ وائلٍ،عن اُمِّها وعن علقمةَ عنهما،عن وائلِ بنِ حجرٍ قال جئتُ الى رسولِ اللّٰه صلى اللّٰه عليه وسلم
ইমাম আবু নুয়াআইম রহঃ যথাক্রমে…………
মায়মুনা বিনতে হুজর ইবনে আব্দুল জাব্বার বিন ওয়াইল তিনি বলেন,আমি উম্মে কাবসা অর্থাৎ উম্মে ইয়াইয়া বিনতে আব্দুল জাব্বার বিন ওয়ায়েল থেকে, তিনি তার মাতা এবং হযরত আলকামা রাঃ থেকে,তিনি সাহাবী ওয়ায়েল ইবনে হুজর থেকে,তিনি বলেন আমি নবিজীর নিকট গেলে….(উপরোক্ত হাদীস)।
সুত্র:-ইমাম আবু নুআইম ইস্পাহানী- মারিফাতুস সাহাবা ৫/২৭১১,হাদীস ৬৪৭৫;
ইবনে আসাকির-তারিখে দামেস্ক, ৬২/৩৯০পৃ;
তাহলে উক্ত রাবীর পরিচয় আরো ভালো করে পাওয়া গেলো যে, তিনি তাবেয়ী আলকামা রহঃ এর ছাত্রী ছিলো এবং তার সম্পুর্ন নাম হলো ‘উম্মে ইয়াহইয়া বিনতে আব্দুল জাব্বার বিন ওয়ায়েল’ অর্থাৎ প্রসিদ্ধ তাবেয়ী আব্দুল জাব্বার বিন ওয়ায়েলের মেয়ে।তাই এই হাদীসটির সকল রাবী পরিচিত।
মনে রাখতে কোন রাবীর পরিচয় একজনের কাছে না থাকলে,আমাদের খুজে দেখতে হবে অন্য কোথাও পাওয়া যায় কিনা!
যদি পাওয়া যায় এমতাবস্হায় ঐ রাবীকে আর অপরিচিত বলা যায়না।এরপরও যারা আপত্তি তুলবে বুঝতে হবে আসমাউর রিজাল সম্পর্কে তাদের কোন ধারনাই নাই।
ফলাফল কি দাডালো?
যখন উক্ত রাবীর পরিচয় পাওয়া গেলো এবং বাকী সমস্হ রাবীও বিশ্বস্হ, তাই উক্ত মারফু হাদীসটি সহীহ।
২.ইমাম ইবনে আবি শায়বাহ তার উস্তাদ ইবরাহীম ইবনে আব্দুল আ’লা রহঃ থেকে, তিনি হিশাম বিন উরওয়া রহঃ থেকে, তিনি হাসনা বসরী রহঃ থেকে,তিনি বলেন-
يُقامُ المرأةِ حيال ثدييها،ومن الرجل فوق ذالك
মহিলারা তাকবীরে তাহরীমায় হাত বুক পর্যন্ত তুলবে এবং পুরুষেরা আরও উপরে উঠাবে।
সুত্র:-মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাহ (ইমাম বুখারীর শায়েখ),৩/৬,হাদীস নং ১১৫৪৮;
সনদের মানঃ-সকল রাবী বিশ্বস্ত অর্থাৎ হাদীসটি সহীহ। ইবনে আবি শায়বার উস্তাদও বিশ্বস্ত (ইবনে হাজার আসকালানী-তাহযিবুত তাহযীব ১/১৩৭,ক্রমিক ২৪৫)।
সম্মানীত পাঠকবৃন্দ, দ্বিতীয় পার্থক্য নিয়ে ইনশাআল্লাহ অতিশিঘ্রই লিখবো।আপনারা প্রথম পার্থক্যটিকে কমপক্ষে ২০জনের কাছে শেয়ার করুন,তাহলে আপনার মাধ্যমে মানুষ সত্যটা জানতে পারবে।
দোয়া প্রার্থী:-হাসনাইন আহমদ আলকাদেরী।