নবী করীম [ﷺ] এরশাদ করেছেন- “আমাকে আল্লাহ তায়ালা বিশেষ মর্যাদা দান করেছেন- যা আমার পূর্বে কোন নবীকেই দান করেননি।” তাহচ্ছেঃ-
১। আমাকে ব্যাপক অর্থবোধক সংক্ষিপ্ত কালাম করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
২। প্রত্যেক নবী তাঁদের স্বজাতির প্রতি প্রেরীত, কিন্তু আমি নিখিল বিশ্বনবী।
৩। আমার পূর্বে যুদ্ধলব্ধ গণিমতের মাল হালাল ছিল না। কিন্তু আমার উম্মতের জন্য তা হালাল।
৪। আমার উম্মতের জন্য সমগ্র জমিনকেই সিজদার উপযুক্ত করে দেয়া হয়েছে এবং পানির অভাবে অযু গোসলের পরিবর্তে মাটি দ্বারা তৈয়ম্মুম করার অনুমতিও দেয়া হয়েছে।
৫। এক মাসের দূরত্বে আমার নামের ভয়-ভীতি সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে। (মিশকাত)
৬। আমাকে সবার জন্য শাফাআত করার অধিকার দেয়া হয়েছে। – (বোখারী শরীফ)
৭। আরশ-কুরছি, লওহ-কলম, আসমান-জমিন, চন্দ্র-সূর্য সব মাখলুক নবীজীর নূরে পয়দা আর তিনি পয়দা স্বয়ং আল্লাহর যাতী নূর হতে। মুসান্নাফ-হযরত জাবের (رضي الله عنه)
৮। আরশে আযীমে আল্লাহর নামের সাথে শুধু নবী করীম [ﷺ]-এঁর নাম মোবারক অঙ্কিত। কানযুল ওম্মাল
৯। তিনি নির্মল ও পাক পবিত্র অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেছেন। -ইবনে ছাআদ
১০। শিশুকালে চাঁদের সাথে তিনি কথা বলতেন ও খেলা করতেন। -আব্বাস (رضي الله عنه)
১১। খররৌদ্রতাপে মেঘমালা তাঁকে ছায়া দিত। -আবু নোয়াইম
১২। কোরআন মজিদে হুযুর [ﷺ]-এঁর প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গের বিবরণ রয়েছে। আল-কোরআন
১৩। তিনি সামনে, পিছনে, দিনে ও রাত্রে সমান দেখতেন। -বুখারী, বায়হাকী
১৪। তিনি নিদ্রাবস্থায়ও সবকিছু দেখতেন ও শুনতেন। -বোখারী
১৫। হুযুর [ﷺ]-এঁর ঘাম মোবারক মেশ্ক-এর চেয়েও বেশি সুগন্ধ ছিল। – আবু নোয়াইম
১৬। তাঁর দেহ মোবারকের ছায়া ছিল না। কেননা, তিনি ছিলেন আপাদমস্তক নূর। -তাফসীরে কবীর ও শিফা শরীফ
১৭। মি’রাজ রজনীতে সশরীরে ও সচক্ষে আল্লাহর দীদার লাভ। বিশ্বজগত তাঁর পদতলে। তিনি লা-মাকানের বাসিন্দা। -বোখারী ও মুসলিম এবং মুসান্নাফ
১৮। নবীগণের মধ্যে একমাত্র তিনিই উম্মী (সৃষ্টির মূল) উপাধী প্রাপ্ত। -রুহুল বয়ান
১৯। সমস্ত ধনভাণ্ডার ও ইলমে গায়েব-এর চাবি তাঁর অধিকারে। – বুখারী-মুসলিম, মাওয়াহিব
২০। তিনি পঁয়ষট্টি হাজার মোজেযার অধিকারী। অন্যান্য নবীগণ অনধিক নয়টির অধিকারী। -পয়গামে মুহাম্মদী
২১। সমস্ত নবীগণের সম্মিলিত উম্মতের চেয়ে হুযুর [ﷺ]-এঁর উম্মত বেশী। -সুরা কাউছার
২২। সমস্ত নবীগণকে নাম ধরে সম্বোধন, কিন্তু হুজুর [ﷺ]-কে তাঁর উপাধী ধরে সম্বোধন করা হয়েছে। -আল-কোরআন
২৩। সকল নবী আল্লাহর প্রেমিক, কিন্তু আল্লাহ হলেন নবীজীর প্রেমিক। তিনি একাধারে খলিলুল্লাহ ও হাবীবুল্লাহ (আল্লাহর প্রেমিক ও প্রেমাস্পদ)। -মাওয়াহিব
২৪। তিনি ভুল-ত্রুটি হতে সম্পর্ণ মুক্ত। -দিওয়ানে হাসসান ও বায়যাভী
২৫। কবরে শুধু হুযুর [ﷺ]-এঁর পরিচয় জিজ্ঞাসা করা হবে- অন্য কোন নবীর পরিচয় নয়।-তাফসীরে নাঈমী ও মাওয়াহিব
২৬। শয়তান নবী করীম [ﷺ]-এঁর সুরত ধারণ করতে পারেনা। -মেশকাত ও বুখারী
২৭। রাসূল[ﷺ]-এঁর সকল সাহাবী আদেল ও নির্ভরযোগ্য। -মাওয়াহিব
২৮। শরীয়তের বিধানে বিশেষ ব্যক্তির জন্য তিনি বিশেষ ধরণের বিধান নির্ধারনের এখতিয়ার প্রাপ্ত। যেমন- সাহাবী খোযায়মার সাক্ষী দু’জনের সমান, হযরত ফাতিমার উপর অন্য স্ত্রী গ্রহণ করা হযরত আলীর জন্য হারাম ঘোষণা। -মাওয়াহিব
২৯। বিনা ইমামে এবং চার তকবীর ব্যতিত শুধু দরূদ ও সালামের মাধ্যমে হুযুর [ﷺ]-এঁর জানাযা। -মাওয়াহিব ও বেদায়া
৩০। রওযা মোবারকে দুনিয়ার শরীর মোবারক নিয়েই জীবিত বা হায়াতুন্নবী। তিনি মদীনা শরীফ থেকেই সমস্ত উম্মতের সালাম শুনতে পান। -তাবরানী শরীফ
৩১। দিনে-রাতে একলাখ চল্লিশ হাজার ফেরেশতা রওযা পাকে কিয়াম অবস্থায় দরূদ পাঠে রত। -মিশকাত
৩২। কেয়ামতের দিনে ৭০ হাজার ফিরিস্তা বেষ্টিত হয়ে নবীজী ময়দানে হাশরে গমন করবেন। -মিশকাত-কা’ব আহ্বার
৩৩। তিনি চাঁদকে আঙ্গুলের ইশারায় দ্বি-খণ্ডিত করেছিলেন। -আল কোরআন ও হাদীস
৩৪। মাকামে সাহবায় ৭ম হিজরীতে তিনি ডুবন্ত সূর্যকে পুনরায় উদিত করেছিলেন। -বেদায়া নেহায়া-আসমা বিনতে উমায়ছ বর্ণিত হাদীস
৩৫। আল্লাহর মাহমুদ ও আহাদ নাম হতে নবীজীর নাম মুহাম্মদ ও আহমদ রাখা হয়েছে। -তাফসীর রুহুল বয়ান ও হযরত হাসসান (رضي الله عنه)
৩৬। আল্লাহর ৯৯ সিফাতি নামের মধ্যে ৭০টি নাম রাসূল [ﷺ]-কে দান করা হয়েছে। যেমন-রাহিম, করীম, রাউফ, আউয়াল, আখের, যাহের, বাতেন, নূর ইত্যাদি। -মাদারেজুন্নবুয়ত।
৩৭। রাসূল [ﷺ] সকল নবী ও উম্মতের কার্যকলাপের একমাত্র চাক্ষুস সাক্ষী, হাযির ও নাযির। -আল কোরআন ও আখবারুল আখইয়ার -আবদুল হক দেহলভী
৩৮। মাকামে মাহমুদের (শাফাআত-কুবরা) অধিকারী একমাত্র নবী করীম [ﷺ]। -আল কোরআন
৩৯। ৭০ হাজার উম্মত বিনা হিসাবে নবীজীর শাফাআতে বেহেস্তী। আবার প্রত্যেকের সাথে পুনরায় ৭০ হাজার করে সর্বমোট চারশ নব্বই কোটি বিনা হিসাবে বেহেস্তী। -হাদিকা, মাওয়াহিব, কাযী আয়ায
৪০। রওযা মোবারক আরশ হতেও উত্তম। – মাওয়াহিবে লাদুন্নিয়া, ফতোয়া শামী
৪১। নামাযের মধ্যে নবী করীম [ﷺ]-কে সম্বোধন করে ছালাম দেওয়া ওয়াজিব। অন্য কাউকে ছালাম দিলে নামায ভঙ্গ। -আলমগীরী ও শামী
৪২। ৪০টি আয়াতে আল্লাহ ও রাসূলের নাম একসাথে লিখিত। (সংযোজনী ৪ দেখুন)
বিঃ দ্রঃ-ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ুতি খাসায়েছে কোবরা গ্রন্থে ১২০০ (বার শত) বৈশিষ্ট্য লিপিবদ্ধ করেছেন। নমুনা স্বরূপ ৪২টি বৈশিষ্ট্য পেশ করা হলো।
অধম
হাফেয মুহাম্মদ আবদুল জলিল