রাসূলল্লাহ্ ﷺ বলেনঃ জাহান্নাম কামনা-বাসনা (প্রবৃত্তি) দ্বারা বেষ্টিত। আর জান্নাত বেষ্টিত দুঃখ-মুছিবত দ্বারা। (সহীহ বুখারী ৬৪৮৭)
জাহান্নাম থেকে বাঁচতে হলে নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আর জান্নাতের নেয়ামত ভোগ করতে হলে দুঃখ মুসিবতে ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা বলেন,”এবং অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও ধৈর্যধারণকারীদের। যারা তাদের উপরে কোনো আপদ-বিপদ ঘটলে বলে -নিঃসন্দেহে আমরা আল্লাহ্র জন্যে, আর অবশ্যই আমরা তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তনকারী। এদের প্রতি রয়েছে তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে অনুগ্রহ ও করুণা আর এরাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। (সূরা বাক্বারাহ, আয়াত ১৫৫-১৫৭)
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেনঃ মুমিনের অবস্থা বিস্ময়কর। সকল কাজই তার জন্য কল্যাণকর। মু’মিন ছাড়া অন্য কেউ এ বৈশিষ্ট্য লাভ করতে পারে না। তারা সুখ-শান্তি লাভ করলে শুকর-গুজার করে আর অস্বচ্ছলতা বা দুঃখ-মুসীবাতে আক্রান্ত হলে সবর করে, প্রত্যেকটাই তার জন্য কল্যাণকর। (সহীহ মুসলিম ৭৩৯০)
তিনি ﷺ আরো বলেনঃ মুসলিম ব্যক্তির উপর যে কষ্ট ক্লেশ, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আসে, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে ফুটে, এ সবের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। (সহীহ বুখারী ৫৬৪১)
এক সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ﷺ! মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বেশি মুসিবতের সম্মুখীন হয় কে? তিনি ﷺ বললেনঃ নবীগণ, এরপর যারা উত্তম মানুষ তারা, এরপর যারা উত্তম তারা। একজন তার দ্বীনদারীর অনুপাতে পরীক্ষায় নিপতিত হয়। যদি সে তার দ্বীনে মজবুত হয় তবে তার পরীক্ষাও তুলনামূলকভাবে কঠোরতর হয়; আর সে যদি দ্বীনের ক্ষেত্রে দুর্বল ও হালকা হয় তবে সে তার দ্বীনদারীর অনুপাতেই পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। এভাবে বান্দা বিপদ-আপদে পড়তে থাকে শেষ পর্যন্ত সে পৃথিবীতে এমন মুক্তভাবে বিচরণ করতে থাকে যে তার উপর আর কোন গুনাহর দায় থাকে না। (সূনান আত তিরমিজী ২৩৯৮, সুনান ইবনে মাজাহ ৪০২৩)
দাও ছয়টি জামানত,
মিলবে জান্নাতের নিয়ামত…
———————————————-
প্রিয় নবী ﷺ বলেনঃ তোমরা তোমাদের পক্ষ থেকে আমাকে ছয়টি জামানাত দাও, আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের জামিন হব-
১. যখন তোমরা কথা বলবে, সত্য বলবে,
২. যখন প্রতিশ্রুতি দেবে, প্রতিশ্রুতি পালন করবে,
৩. যখন তোমাদের কাছে গচ্ছিত রাখা হবে, তা পরিশোধ করবে,
৪. নিজের লজ্জাস্থানসমূহকে হিফাযাত করবে,
৫. নিজ দৃষ্টি অবনমিত রাখবে,
৬. নিজের হস্তদ্বয়কে আয়ত্তে রাখবে।
[মানে হল, তোমাদের হাতকে জুলুম করা হতে বিরত রাখবে।— মিরকাতুল মাফাতীহ]
————
★মুসনাদে আহমাদ ২২৭৫৭
★শু‘আবুল ঈমান ৪৮০২,
★সহীহ ইবনু হিব্বান ২৭১,
★আল মুসতাদরাক ৮০৬৬
★মিশকাতুল মাসাবীহ ৪৮৭০
★আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৩০৬৬