১. হযরত আবূ হোরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ ঘুমায়, তখন শয়তান তার মাথার পশ্চাৎভাগে তিনটা গিরা লাগিয়ে দেয় এবং প্রতিটি গিরায় এ কথা বলে, ‘এখনও রাত অনেক।ঘুমিয়ে থাকো।’ অতঃপর বান্দা যদি সজাগ হয় ও আল্লাহর যিকর করে, তখন একটি গিরা খুলে যায়। তারপর যদি ওযূ করে নেয় তখন দ্বিতীয় গিরা খুলে যায়। তারপর যদি নামায পড়ে নেয়, তখন তৃতীয় গিরাও খুলে যায়। আর সে প্রফুল্ল মন ও পবিত্র অন্তর নিয়ে ভোর করে। অন্যথায় কলুষিত অন্তর ও অলস মন নিয়ে সকাল করে।
সূত্র- বোখারি ও মুসলিম শরিফ, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-১১৪৯।
২. হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নামাযের তাকবীর বলা হলো, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে স্বীয় চেহারা মুবারক ফেরালেন এবং বললেন, “তোমরা নিজেদের কাতারগুলো সোজা করো এবং পরস্পর মিলিত হয়ে দাঁড়াও। আমি তোমাদেরকে আমার পিছন দিকে দেখতে পাই।” (বোখারি শরিফ)
আর বোখারি ও মুসলিম উভয় কিতাবে আছে, হুজুর ইরশাদ করেছেন- তোমরা কাতারগুলো পূর্ণ করো; কেননা, আমি তোমাদেরকে আমার পৃষ্ঠ পিছনেও দেখতে পাই।
সূত্র- বোখারি শরিফ, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-১০১৯।
৩. হযরত ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমান, তোমাদের মধ্যে কেউ যেনো সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময় নামায পড়ার ইচ্ছা না করে।
অপর এক বর্ণনায় আছে যে, হুজুর ইরশাদ করেছেন, যখন সূর্যের কিনারা উজ্জল হয়, তখন নামায ছেড়ে দাও যতক্ষণ না উঁচু হয়ে যায়। অতঃপর যখন সূর্যের কিনারা ডুবে যাবে তখনও নামায ছেড়ে দাও, যতক্ষণ না পরিপূর্ণভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়। আর আপন নামাযের জন্য সূর্যের উদয় ও অস্তের সময়কে নির্দিষ্ট করো না।কেননা সেটা শয়তানের দু’শিং এর মধ্য দিয়ে উদিত হয়।
সূত্র- বোখারি ও মুসলিম শরিফ, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-৯৭৩।
৪. হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমান, মুআযযিনের আওয়াজের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যে কোন জিন,মানব এবং অন্যান্য জিনিসই শুনতে পাবে, (প্রত্যেকে) ক্বিয়ামত দিবসে তার (মুআযযিন) পক্ষে সাক্ষ্য দেবে।
সূত্র- বোখারি শরিফ, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-৬০৬।
৫. হযরত ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমান, যার আসরের নামায চলে গেলো তার যেনো ঘর-বাড়ি ও মাল-সামগ্রী লুন্ঠিত হয়ে গেলো।
৬. হযরত বুরায়দাহ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমান, যে ব্যক্তি আসরের নামায ছেড়ে দেয়, তার আমল বাজেয়াপ্ত হয়ে যায়।
সূত্র- বোখারি ও মুসলিম শরিফ, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-৫৪৭ ও ৫৪৮
৭. হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ‘আমর ইবনুল ‘আস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি নবি করিম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি একদিন নামাযের কথা উল্লেখ করেন। তখন ইরশাদ করলেন, যে ব্যক্তি সেটা নিয়মিতভাবে সম্পন্ন করবে, নামায তার জন্য ক্বিয়ামতের দিন আলো, প্রমাণ ও নাজাত হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি তা নিয়মিতভাবে সম্পন্ন করবে না, তার জন্য তা *না নূর হবে, না প্রমাণ, না নাজাত।* আর সে ক্বিয়ামত দিবসে ক্বারূন, ফিরআঊন, হামান ও উবাই ইবনে খালফের সাথে থাকবে।
সূত্র- মুসনাদে আহমদ, দারেমি, বায়হাক্বী-শুআবিল ঈমান, মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদিস নং-৫৩২।