নবীজীবনী গ্রন্থের নির্ভরযোগ্য কিতাব ’মাওয়াহেবে লাদুন্নিয়া’, ’বেদায়া-নেহায়া’, ’তারিখুল খোলাফা’ প্রভৃতি গ্রন্থে নূরে মুহাম্মদী [ﷺ]-এঁর পৃথিবীতে আগমন এবং বংশ পরম্পরায় আবর্তন করার পর অবশেষে হযরত আবদুল্লাহর ঔরসে এবং বিবি আমেনার গর্ভে সে নূর স্থানান্তরিত হয়ে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সোমবার প্রত্যুষে সোব্হে সাদেকের সময় জগতকে উদ্ভাসিত করে আত্মপ্রকাশ করা- ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত বিশদ বর্ণনা রয়েছে। আমরা ধারাবাহিকতা রক্ষা করে সংক্ষেপে তা বর্ণনা করার চেষ্টা করব।
কাজী আয়াযের শিফা নামক গ্রন্থে বর্ণিত একটি হাদীসে নবী করিম [ﷺ] বলেছেনঃ- اِنِّى اُهْبِطْتُ اِلَى الاَرْضِ مَعَ آدَمُ
অর্থঃ- “আমি হযরত আদম (عليه السلام)-এঁর সাথেই পৃথিবীতে নেমে এসেছি।”
মাওয়াহেব গ্রন্থে উল্লেখ আছে- “হযরত আদম ও বিবি হাওয়া (عليهما السلام)-এঁর জোড়ায় জোড়ায় সন্তান হতো। প্রতি প্রসবে এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম গ্রহণ করতো। এভাবে বিশ জোড়া সন্তানের জন্ম হওয়ার কথা। কিন্তু যখন হযরত শিষ (عليه السلام) জন্ম গ্রহণ করেন, তখন তিনি একা জন্মগ্রহণ করেন। কেননা নবী করিম [ﷺ]-এঁর নূর মোবারক হযরত আদম (عليه السلام) থেকে হযরত শিষ (عليه السلام)-এঁর মধ্যে স্থানান্তরিত হওয়ার কারণে শিষ (عليه السلام) একা জন্মগ্রহণ করেন। হযরত আদম (عليه السلام) নিজপুত্র শিষ (عليه السلام) কে অসিয়ত করেছিলেন যে, “তিনি যেন ঐ নূরের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন এবং বংশ পরম্পরায় যেন পবিত্র নর-নারীগণের মাধ্যমে ঐ নূর স্থানান্তরিত করা হয়।” হযরত আদম (عليه السلام) শিষ (عليه السلام) কে উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন- “আমি বেহেস্তের প্রতিটি দরজায় এবং হুর ও ফিরিশতাদের স্কন্ধদেশে আল্লাহর নামের সাথে মুহাম্মদ [ﷺ]-এঁর নাম মোহরাঙ্কিত দেখেছি। সুতরাং তুমি যখনই আল্লাহর নাম উচ্চারণ করবে, তাঁর সাথে মুহাম্মদ [ﷺ]-এঁর নামও উল্লেখ করবে।”
এই ছিল আমাদের আদি পিতা হযরত আদম (عليه السلام)-এঁর অসিয়ত নিজ সন্তানের প্রতি। কিন্তু আফসোস! আমরা আদমসন্তান হয়েও পিতার সে উপদেশ ভুলে গেছি। এখন শুধু আল্লাহর নাম নিচ্ছি ও বিভিন্ন জায়গায় লিখছি। কিন্তু মুহাম্মদ [ﷺ]-এঁর নাম বাদ দিয়েছি।