মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার-
আজমির শরিফ সফরে, গউসে জামান তৈয়্যব শাহ’’র গোপন মিটিং দেখে ফেললেন নঈমী হুজুর। ওয়াদা নিলেন হুজুর কেবলা (র)। যেন তাঁর জীবদ্দশায় প্রকাশ না করা হয় এই ঘটনা।
পহেলা এপ্রিল ২০১৯, ঢাকার উত্তরাস্থ জসিম ভাইয়ের বাসায় আমরা ঢাকা-চট্টগ্রামের কয়েকজনের সামনে, গউসে জামান তৈয়্যব শাহ্ রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি’র সাথে সফরের সময় তাঁর দেখা বেশ কিছু অলৌকিক স্মৃতি রোমন্থন করেন চট্টগ্রাম জামেয়ার শাইখুল হাদিস, মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী (মাজিআ)। এর মধ্যে মক্কা শরিফ, মদিনা শরিফ, আজমির শরিফের ঘটনাও ছিল। আজমির শরিফের বেশ ক’টি কারামতের মধ্যে যে ঘটনাটি অধিকতর তাৎপর্যপূর্ণ সেটি ছিল এই শিরোনামের বিষয়টি।
হুজুর কিবলা তৈয়্যব শাহ্ রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি এবার প্রথমে বাগদাদ শরিফ এবং পরে আজমির শরিফ সফর করেন। ১৯৭৯ সন। হুজুর কিবলা বাগদাদ থেকে চিঠি লিখে জানালেন তিনি কবে আজমির আসবেন। খবর পেয়ে আনজুমান -জামেয়ার সিনিয়র কর্মকর্তাদের একটি দল দিল্লী গিয়ে পৌঁছেন। অধ্যক্ষ মৌলানা এম এ জলিল, মুফতি ওবাইদুল হক নঈমী সহ অনেকেই ছিলেন।
হুজুর কিবলাও দিল্লী এসে পৌঁছেন। এর পরে গেলেন আজমির শরিফ। সবাই আজমির শরিফে ওঠেন খাদেম সৈয়্যদ আলাউদ্দিন চিশতি সাহেবের কামাল মন্জিলে। এ মন্জিলের বহু খাদেম ও তাঁদের আত্মীয়স্বজন হুজুর কিবলার হাতে বায়াত গ্রহন করে ধন্য হন সেদিন। রাতে এখানেই থাকেন সবাই। যদিও থাকার ব্যবস্থা তেমনটা উন্নত ছিলনা। তবুও হুজুর কিবলা এখানেই থাকলেন। বাথরুম ব্যবস্থা, রুমের অবস্থা ছিল কোনমতে চালানোর মত, তাও তখনকার সময়ের হিসেবে। বর্তমানে ওসব মেহমানখানা একদম ব্যাকডেটেড।
হুজুর কিবলার রুমের ভিতরটাও দেখা যাচ্ছিল নঈমী সাহেবদের কামরা থেকে। টয়লেটও ছিল কমন। হুজুর কিবলা রাতে তাহাজ্জুদ আদায় করেন। তাই তাঁর বাথরুমে যাওয়া সহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য সহযোগিতার জন্য নঈমী হুজুর আগে ভাগে ওঠে অপেক্ষায় থাকলেন। হঠাৎ তাঁর কানে এল কথোপকথনের শব্দ। উঁকি দিলেন হুজুর কিবলার কামরায়। পরিষ্কার না হলেও মোটামোটি দেখা যাচ্ছে ভেতরেরটা। তিনি একেবারে অবাক হয়ে দেখলেন রুমের ভেতরে হুজুর কিবলার সাথে অপরিচিত একজন কথাবার্তা বলছেন।
কে তিনি? কীভাবে এই গভীর রাতে তিনি হুজুরের কামরায় প্রবেশ করলেন? কোন কিছুর হিসাব মেলাতে পারছিলেন না তিনি। এক পর্যায়ে একই অবস্থা স্বচক্ষে দেখে নেন পটিয়ার ভাটিখাইন নিবাসি মরহুম হাজী মোহাম্মদ শরিফ সওদাগর। হাজী সাহেব বলে ওঠেন, মুফতি সাহেব দেখেন! ভেতরে কি চলছে! নঈমী সাহেব হুজুর হাজী সাহেবকে চুপ করে দিলেন এবং নিজেও চুপ রয়ে কান লাগিয়ে শুনবার চেষ্টা করেন কথাগুলো। কিন্তু আওয়াজগুলো স্পষ্ট হলেও ভাষা বোধগম্য ছিল না। তবুও কান লাগিয়ে ছিলেন দীর্ঘক্ষণ। অনেকক্ষণ পর হঠাৎ কথা থেমে গেল। কক্ষের ভিতরের ভিন্ন লোকটিকেও আর দেখা গেল না।
তাই, নঈমী হুজুর কিবলার কক্ষে হালকা টোকা দিলেন, যেন হুজুর কিবলা অজুর জন্য বাথরুমে আসতে পারেন। হুজুর কিবলা তাহাজ্জুদ এবং সবাইকে নিয়ে ফজর আদায় করলেন। এরপর, সকালের নাস্তা হয়ে গেলে। সবাইকে আরামের জন্য যেতে একে একে অনুমতি দেওয়া হল। সর্বশেষ ব্যক্তিটি ছিলেন নঈমী হুজুর। সবাই বের হবার পর হুজুর কিবলা নঈমী সাহেব হুজুরকে কাছে ডাকলেন এবং ওয়াদা নিলেন যেন গভীর রাতে দেখা ঘটনাটি হুজুর কিবলার জীবদ্দশায় প্রকাশ না করা হয় এবং হুজুর কিবলা আরো জানালেন যে, গভীর রাতের সেই আগন্তুক ছিলেন
খোদ খাজা গরীব নওয়াজ রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি। সুবহানআল্লাহ। নঈমী হুজুর বলেন, তিনি সেই রাতের ঘটনা হুজুর কিবলার ওফাতের পূর্ব পর্যন্ত গোপন রেখেছেন। দিল্লী থেকে আজমির পর্যন্ত যাবার সময়টাতেও তিনি হুজুর কিবলার একটি জ্বলন্ত কারামত প্রত্যক্ষ করেছিলেন,
এভভোকেট মোসাহেব উদ্দিন বখতিয়ার