সাইয়্যিদুল আওলিয়া, মাহবূবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরিদানগণের মর্যাদা
শায়খ আবু মুহম্মদ আব্দুল লতিফ বিন শায়েখ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন- আমার আব্বাজান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন- শায়েখ হাম্মাদ দাব্বাস রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে প্রতি রাত্রে মধু মক্ষিকার শব্দের মত এক প্রকার গুঞ্জন শুনা যেত। সায়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সেই সময় উনার কাছে মুবারক ছোহবতে আসা-যাওয়া করতেন। লোকেরা উনার কাছে আরয করলেন, তিনি যেন শায়েখ হামাদ দাব্বাস রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে সেই শব্দ মুবারক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তিনি সে সম্পর্কে হযরত হাম্মাদ দাব্বাস রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বলেন- আমার বার হাজার মুরিদ আছে। আমি খুবই দ্রুততার সাথে তাদের নাম ধরে ডাকি এবং তাদের চাওয়া-পাওয়ার কিছু আছে কিনা জিজ্ঞেস করি, যেন আমি মহান আল্লাহ পাক উনার কাছ থেকে মনজুর করায়ে নিতে পারি। আমার কোন মুরিদ ততক্ষণ মৃত্যুবরন করে না, যতক্ষণ তার তওবা কবুল না হয় বা এক মাসের মধ্যে উনার গুনাহ মাফ করে দেয়া হয় না। এভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত এসব মুরিদদের উপর পড়ে থাকে, যারা শায়েখ হামাদ দাব্বাসর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাতে বাইয়াত হন। এ কথা শুনে গাউসুল আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি শায়েখ হাম্মাদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বললেন- যদি মহান আল্লাহ তায়ালা আমাকে এ মরতবা দান করেন, তাহলে আমি মহান আল্লাহ তায়ালা উনার পক্ষ থেকে এ প্রতিশ্রুতি নিয়ে নেব, যেন কিয়ামত পর্যন্ত আমার কোন মুরিদ ততক্ষণ ইন্তেকাল না করে যতক্ষণ তার তওবা কবুল করা না হবে । আমি এ প্রতিশ্রুতির জিম্মাদার হবো।
শায়খ আবুল কাসেম ওমর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন- সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- যদি কোন ব্যক্তি আপনাকে মুহব্বতের সাথে স্মরণ করে, কিন্তু আপনার মুরিদ হওয়ার সৌভাগ্য না হয় কিংবা আপনার থেকে খিলাফতের খেরকা (জামা) না পায়, সে কি আপনার সহানুভূতি তথা ফায়েজ-তাওয়াজ্জুহ লাভকারী লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবে? তিনি বলেন- যে ব্যক্তি কেবল নাম মুবারক উনার সাথে সম্পর্ক রাখবে বা অন্তরে আমার প্রতি ভাল ধারণা পোষণ করবে, মহান আল্লাহ তায়ালা তার তওবা কবুল করবেন, যদিওবা সে আমার থেকে অনেক দূরে থাকে। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার সাথে ওয়াদা করেছেন যে, তিনি আমার মুরীদ-মু’তাকিদ, মুহ্বিীন, আশিকীন, আমার নাম জপকারী ও আমার প্রতি ভাল ধারণা পোষণকারীদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তিনি আরও বলেছেন- যদি আমার নাম মুবারক স্মরণকারী কারো দোষত্রুটি বা গুনাহ পশ্চিমপ্রান্তে প্রকাশ পায় এবং আমি পূর্ব প্রান্তে থাকি, তখনও আমি তার হিফাজতের জিম্মাদার হবো এবং তার দোষ-ত্রুটি গোপন করবো। আমাকে এক চোখের পলক এক দীর্ঘ আমল নামা দেয়া হয়েছে, যার মধ্যে আমার মুরিদগণের নাম লিখা আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত আগমণকারী মুহ্বতকারীদের নাম উল্লেখ আছে। আমাকে সুসংবাদ দেয়া হয়েছে যে এসব লোকদেরকে আমার খাতিরে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। আমি হাযরত মালিক ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনাকে (দোযখের দাররক্ষী) জিজ্ঞেস করেছি, আপনার কাছে আমার মুরীদ-মু’তাকিদ, মুহিব্বীনদের কেউ আছে কি? তিনি বললেন না। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমার হাত আমার মুরিদগণের উপর ঐ রকম প্রসারিত, যেভাবে যমীনের উপর আসমানের ছায়া। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার জালালিয়াত ও ইজ্জতের কসম, আমি ততক্ষণ জান্নাতে প্রবেশ করবো না, যতক্ষণ আমি আমার সমস্ত মুরিদগণকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে না পারবো। (যুবদাতুল আছার, গাউসুল অরা-৭৫)