ভয়ানক কালাে কুকুর!
কোরআনের রহস্যময় ঘটনা- ভয়ানক কালাে কুকুর! | হযরত আল্লামা ইয়াফি’ঈ (রাহমাতুল্লাহি তা’আলা আলাইহি) বলেন, “ইয়েমেন দেশে আমি এক বুর্গলােককে বলতে শুনেছি যে, এক মৃত ব্যক্তিকে দাফন করে যখন লােকেরা ফিরে আসতে লাগলাে, তখন কবর থেকে বিক্ষোণের মতাে এক বিকট শব্দ শুনা গেলাে।
ওই কবর থেকে একটি কালাে কুকুর বের হয়ে পলায়ন করলাে। একজন নেককার লােক যিনি সেখানে মওজুদ ছিলেন, তিনি ওই কুকুরকে বললেন, “তাের সর্বনাশ হােক! তুই কোন বালা?” সে বললাে, “আমি এই মৃতের মন্দ কর্ম।” তিনি বললেন, “এ’ (যে আওয়াজ আসলাে,) আঘাত কি তাের গায়ে লেগেছে , না মৃতের গায়ে?” বললাে, আমার গায়ে লেগেছে। এর কারণ এ’ ছিলাে যে, তার নিকট ‘সূরা ইয়াসীন’ ইত্যাদি, যেগুলাে সে নিয়মিত পড়তাে, এসে গেলাে এবং আমাকে তার নিকটেও ঘেঁষতে দিলােনা বরং আমাকে মেরেই বের করে দিলে?* (রওযুর রাইয়াহীন)
রহস্যময় চোর!
রহস্যময় চোর! | হযরত আবু হােরায়রা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু)। থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করেন, হুযূর তাজদৱে মদীনা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) রমযানের যাকাত, অর্থাৎ ‘সাদক্বাহ-ই-ফিতর’-এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বভার আমার হাতে অর্পণ করলেন। এক আগন্তক আসলাে এবং শস্যদানা (তার বস্তায়) ভরতে লাগলাে। আমি তাকে ধরে ফেললাম । আর বললাম, আমি তােকে হুযুর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে হাযির করবাে।” সে বলতে লাগলাে, “আমি অভাবী ও পরিবারপরিজনসম্পন লােক, খুৰ অভাবে আছি।
আমি তাকে ছেড়ে দিলাম । যখন ভাের হলাে, তখন হুযুর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী | ওয়া সাল্লাম)-এরশাদ ফরমালেন, “তােমার রাতের কয়েদীর কি হলাে?” আমি আরয করলাম,“ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)! সে খুৰ অভাৰ ও পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টের অভিযােগ করলাে। আমার দয়া হয়েছে এবং তাকে ছেড়ে দিয়েছি।”
এরশাদ ফরমালেন,“সে তােমাকে মিথ্যা বলেছে। সে আবার আসবে।” আমিও বুঝে নিলাম যে, সে অবশ্যই আসবে; কেননা, হুযূর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) তা এরশাদ ফরমায়েছেন।
পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি
আমি তার অপেক্ষায় ছিলাম। সত্যি সে আসলাে এবং শস্যদানা ভরতে লাগলাে। আমি তাকে ধরে ফেললাম। আর বললাম,”আমি তােকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে পেশ করবাে।” সে বললাে, “আমাকে ছেড়ে দাও। আমি অভাবী। পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি। আর আসবাে না।” আমার আবার দয়া হলাে এবং তাকে হেড়ে দিলাম ।
ভাের হলে হযূর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) এরশাদ ফরমালেন, “হে আৰু হোরায়রা (রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু)! তােমার কয়েদীর কি হলাে?”
” আমি আরয করলাম,“সে অভাব ও পরিবার নিয়ে কষ্টের অভিযােগ করলাে। আমার আবারও দয়া হয়েছে এবং তাকে ছেড়ে দিয়েছি।” হুযূর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) এরশাদ ফরমালেন, “সে তােমাকে মিথ্যা বলেছে। সে আবার আসবে।”
তার অপেক্ষায় ছিলাম, আমি । সে সত্যি আসলে এবং শস্যদানা ভরতে লাগলাে। আমি তাকে ধরে ফেললাম এবং বললাম, “আমি তােকে হুযূর (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে পেশ করবাে। এ পর্যন্ত তিন বার হয়েছে। তুই প্রত্যেকবার বলিস্ আর আসৰি না। পুনরায় এসে যাচ্ছি ।” সে বললো,“আমাকে ছেড়ে দাও!
আমি তােমাকে এমন কিছু কলেমা বাতলিয়ে দিচ্ছি, যেগুলাে দ্বারা আল্লাহ তা’আলা তােমাকে উপকৃত করবেন। যখন তুমি বিছানার উপর যাবে, তখন ‘আয়াতুল কুরসী (আল্লাহু লাইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়াল কাইয়্যম) শেষ পর্যন্ত পড়ে নাও ! ভাের পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা (আযযা ওয়া জাল্লার পক্ষ থেকে তােমাদের উপর রক্ষণাবেক্ষণকারী নিয়ােজিত হবে । আর শয়তান তােমার নিকটে আসবে না। আমি তাকে ছেড়ে দিলাম ।
যখন ভাের হলাে তখন সরকার (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) এরশাদ ফরমালেন, “তােমার কয়েদীর কি হলাে?” আমি আরয করলাম, “সে বললাে, কিছু কলেমা তােমাকে বাতলিয়ে দিচ্ছি, যেগুলাে দ্বারা আল্লাহ্ তা’আলা তােমাকে উপকৃত করবেন।” সরকারে মদীনা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) এরশাদ ফরমালেন,“একথাটা সে সত্য বলেছে। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে, সে বড়ই মিথক। তুমি কি জানাে আজ তিন রাত যাবত তােমার সাথে কে কথা বলেছ?
সূরা ইখলাস’-এর সাওয়াবের আশ্চর্যজনক ঘটনা
সূরা ইখলাস’-এর সাওয়াবের আশ্চর্যজনক ঘটনা !| কাযী আবূ বকর ইবনে আবদুল বাকী আনসারী সালমাহ্ ইবনে ওবাইদ থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, হাম্মাদ মক্কী (রাহমাতুল্লাহি তা’আলা আলাইহি) বলেছেন, “এক রাতে আমি মক্কা মুকাররামার কবরস্থানের দিকে চলে গেলাম এবং
একটা কররের পাশে শুয়ে পড়লাম। তখন দেখলাম, কবরবাসীগণ। বৃত্ত হয়ে দণ্ডায়মান। আমি তাদেরকে বললাম, “কিয়ামত কি কায়েম হয়ে
গেলাে?” তারা বললাে, “না, বরং আমাদের এক ভাই ‘সূরা ইখলাস’ পড়ে আমাদের জন্য সাওয়াব পৌঁছিয়েছে। সুতরাং আমরা সেটার সাওয়াব দীর্ঘ এক বছর ধরে বন্টন করে নিচ্ছি।” (শরহুস্ সুদূর)