কিতাবঃ হায়াতুল আম্বিয়া
[حَیاَة َََِِالْانبیِآَءِ علَیَھْمِ السلام فىِْ قبُوُْرِھِمْ]
[নবীগণ আলায়হিমুস্ সালাম জীবিত তাঁদের রওযাসমূহে]
মূল : ইমাম আবূ বকর আহমদ খোরাসানী বায়হাক্বী ইবনে হোসাঈন ইবনে আলী ইবনে মূসা [রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি]
বঙ্গানুবাদ : অধ্যাপক মাওলানা সৈয়দ
মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আল-আযহারী
সম্পাদনা : মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান [মহাপরিচালক, আনজুমান রিসার্চ সেন্টার ,আলমগীর খানকাহ্ শরীফ, ষোলশহর, চট্টগ্রাম ]
প্রকাশনায় : আন্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট [প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ]
৩২১, দিদার মার্কেট (৩য় তলা দেওয়ান বাজার, চট্টগ্রাম-৪০০০, বাংলাদেশ)
Text ready : মাসুম বিল্লাহ সানি, সিরাজুম মুনির তানভির
প্রকাশকাল :
০১ যিলহজ্ব, ১৪৩৬ হিজরী
০১ আশ্বিন, ১৪২২ বাংলা
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ
সর্বস্বত্ত প্রকাশকের হাদিয়া: ٢٥/- (পঁচিশ) টাকা
মুখবন্ধ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লী ওয়া নুসাল্লিমু ‘আলা হাবীবিহিল করীম ওয়া ‘আলা- আ-লিহী ওয়া সাহবিহী আজমা‘ঈন
আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর নবী ও রসূলগণকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে সৃষ্টি করেছেন। তাঁদের কোন বৈশিষ্ট্য কোন সাধারণ মানুষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়; বিশেষত নবী ও রসূলকুল সরদার হুযূর-ই আক্রাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম একেবারে অনুপম, অনন্য ও অতুলনীয়। তিনি হলেন নূরের তৈরী। বশরিয়াত তথা বাহ্যিকভাবে মানবীয় আকৃতিতে পৃথিবীতে আবিভর্‚ত হয়েছেন, যাতে পার্থিব সৃষ্টিকুল তাঁর সান্নিধ্যে গিয়ে ফুয়ূয ও বরকাত হাসিল করতে পারে এবং তাঁকে সম্ভাব্য সব বিষয়ে মডেল বা আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ও অন্যান্য নবীগণ আলায়হিমুস্ সালাম-এর ‘হায়াত’ বা ‘জীবন’ও অনন্য-অতুলনীয়। তাঁরা পার্থিব জীবদ্দশা এ ধরাবুকে অতিবাহিত করে ওফাত বা ইন্তিক্বাল বরণের পরও তাঁদের পার্থিব জীবদ্দশার মতো, বরং আরো বেশী শক্তি ও শান-শওকত সহকারে জীবিত। তাঁরা আপন আপন রওযা শরীফে তাঁদের হায়াত বা শানদার জীবন নিয়ে অবস্থান করেন, কিংবা আল্লাহর ইচ্ছানুসারে তাঁর একান্ত সান্নিধ্যে ইবাদত-বন্দেগী পালন করেন ও আল্লাহ্র বান্দাদের সাহায্য করেন ইত্যাদি। এসব বিষয় পবিত্র ক্বোরআন মজীদ ও বিশুদ্ধ হাদীস শরীফ এবং ইসলামের চর্তুদলীল দ্বারা অকাট্যভাবে প্রমাণিত। বিশুদ্ধ হাদীস শরীফে খোদ্ আল্লাহর হাবীব এরশাদ করেছেন, নবীগণ তাঁদের রওযা শরীফে জীবিত। তাঁদের নূরানী শরীর মুবারককে গ্রাস করা মাটির উপর আল্লাহ্ তা‘আলা হারাম করে দিয়েছেন। তাঁদেরকে রিয্ক্ব দেওয়া হয়। তাঁরা ইন্তিক্বালের পর নামায পড়েন, হজ্বের মৌসুমে হজ্ব করেন ইত্যাদি। আল্লাহ্ তা‘আলার বিশেষ অনুগ্রহ ও ক্ষমতায় তাঁরা ওফাতের পরও প্রয়োজনে তাঁদের ক্ষমতা প্রয়োগ করেন। ইত্যাদি।
অতি আনন্দের বিষয় যে, আহলে সুন্নাতের এ বিষয়ে অনুসৃত পাক-পবিত্র আক্বীদার সপক্ষে বিশ্ববিখ্যাত ইমাম ও মুহাদ্দিস ইমাম বায়হাক্বী ‘হায়াতুল আম্বিয়া’ (নবীগণের হায়াত বা জীবিত থাকা) -এর পক্ষে যথেষ্ট সংখ্যক বিশুদ্ধ (সহীহ্) হাদীস শরীফ সম্বলিত একটি পুস্তক ( حَیاَةُ الْانَْبِیاَءِعَلیَْھِمُ َّ السلامَُ فىِْ قبُُوْرِھِمْ) ‘হায়াতুল আম্বিয়া-ই আলায়হিমুস্ সালাম ফী-ক্বুবূরিহিম’ (নবীগণ আলায়হিমুস্ সালাম তাঁদের কবরসমূহে জীবিত) শিরোনামে প্রণয়ন করেছেন। এ পুস্তকে তিনি নবীগণের হায়াত সম্পর্কিত যে সহীহ্ হাদীসগুলো সন্নিবিষ্ট করেছেন, সেগুলো যথাযথভাবে অধ্যয়ন ও হৃদয়ঙ্গম করলে এ সম্পর্কে একেবারে স্বচ্ছ ধারণা এবং আক্বীদায় অধিকতর দৃঢ়তা, পরিপক্কতা ও ঈমানী তৃপ্তি অর্জন করা যাবে- এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। পুস্তকখানা, সাদার্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, দক্ষ আলিম-ই দ্বীন মাওলানা সৈয়্যদ মুহাম্মদ জালাল উদ্দীন আল-আযহারী সরল বাংলায় অনুবাদ করেছেন এবং সেটা হৃদয়গ্রাহী অবয়বে প্রকাশ করেছেন ‘আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট’, চট্টগ্রাম।
মোটকথা, পুস্তকখানা বর্তমানকার আক্বীদাগত ও আমলগত এ ফিৎনার যুগে একটি অতি জরুরী বিষয়ে সঠিক দিক-নির্দেশনা ও জ্ঞানগত তত্ব ও তথ্য পরিবেশনে ফলপ্রসূ ও উপকারী ভ‚মিকা পালন করবে। আল্লাহ্ তাঁর হাবীব সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সম্মানিত নবীগণ আলায়হিমুস্ সালাম-এর ওসীলায় আমাদের এ প্রয়াসকে কবূল করুন। আ-মী-ন।
(মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান) মহাপরিচালক, আনজুমান রিসার্চ সেন্টার
আলমগীর খানকাহ্ শরীফ, ষোলশহর, চট্টগ্রাম।
ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ) সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
ইমামুল মুহাদ্দিসীন, হাফেযুল হাদীস, শায়খুল ফুক্বাহা ইমাম আবূ বকর বায়হাক্বী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি বিভিন্ন ভলিয়ম সম্বলিত অনেক অনবদ্য গ্রন্থের রচয়িতা এবং ইলমে হাদীস ও ইলমে ফিক্বহ্ এর পথিকৃৎ। তাঁর পূর্ণনাম হলো- আহমদ ইবনে হোসাঈন ইবনে আলী ইবনে মূসা। তাঁর কুনিয়াত (উপনাম) আবূ বকর। উপাধি খোরাসানী ও বায়হাক্বী।
❏ জন্ম:
তিনি নিশাপুরের ‘বায়হাক্ব’ অঞ্চলের খুসরাওযিরদ নামক স্থানে ৩৮৪ হিজরীর শা’বান মাসে জন্ম গ্রহণ করেন। ইসলামের তৃতীয় খলীফা হযরত ওসমান ইবনে আফ্ফান (رضي الله عنه)র খেলাফতকালে নিশাপুর ইসলামী খেলাফতের করায়ত্ব হয়েছিলো।
❏ শিক্ষাজীবন:
জীবনী গ্রন্থাবলীতে ইমাম বায়হাক্বীর পরিবার সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়না। যতটুকু জানা যায়, তাহলো- তিনি শৈশবকাল থেকে জ্ঞানার্জনে আত্মনিয়োগ করেন এবং পনের বছর বয়স থেকেই হাদীস শরীফ শিক্ষা ও গবেষণায় ব্রতী হন।
❏ শিক্ষা অর্জন:
ইমাম বায়হাক্বী জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিখ্যাত জ্ঞানকেন্দ্রগুলোতে সফর করে যুগশ্রেষ্ঠ ফক্বীহ্, মুহাদ্দিস, দার্শনিক ও সূফীগণের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। তিনি প্রথমে খোরাসান, ত্বূস, হামদান ও নুক্বানসহ নিজ মাতৃভুমির পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতে সফর করে যুগশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদদের সান্নিধ্যে এসে নিজেকে আলোকিত করেন। অতঃপর তিনি পবিত্র হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা মুর্কারামাহ্ ও মদীনা মুনাওয়ারায় সফর করেন এবং এ দু’টি বরকতময় নগরীর প্রসিদ্ধ আলিমগণের নিকট থেকে ইল্মে দ্বীন অর্জন করেন। হজ্ব ও যিয়ারত শেষে তিনি জ্ঞানের রাজধানী বলে খ্যাত বাগদাদ ও কুফা এবং এ দু’-এর পার্শ্ববর্তী নগরীগুলোতে ইল্ম অর্জনে আত্মনিয়োগ করেন। জ্ঞানার্জনের এ দীর্ঘ পরিক্রমা শেষে তিনি নিজ জন্মভ‚মি বায়হাক্বে ফিরে আসেন এবং কিতাব রচনায় রত হন।
❏ শিক্ষকমন্ডলী:
ইমাম বায়হাক্বীর শিক্ষকমন্ডলীর সংখ্যা প্রচুর। কারণ তিনি খুব অল্প বয়স থেকে জ্ঞানার্জনের সূচনা করেন। ইমাম সুব্কীর ভাষ্য মতে তাঁর শিক্ষকগণের সংখ্যা শতাধিক। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেনঃ
১. আবূ আবদুল্লাহ্ হাকিম আন-নিশাপুরী (ওফাত-৪০৫হি.)। তাঁর সাথে সাক্ষাৎ হয়েছে বায়হাক্বীর শিক্ষার্জনের প্রাথমিক দিকে। তাঁর থেকে তিনি সর্বাধিক উপকৃত হয়েছিলেন। তিনি তাঁর রচিত ‘আস-সুনান আল-কুবরা’তে ৮,৪৯১টি হাদীস রেওয়ায়ত করেছেন।
২. আবুল ফাত্হ আল মারূযী আশ্ শাফে‘ঈ। তিনি ছিলেন শাফে‘ঈ মাযহাবের যুগশ্রেষ্ঠ ইমাম এবং ফাত্ওয়া ও মুনাযারায় প্রসিদ্ধ ব্যক্তিত্ব। তাঁর থেকে ইমাম বায়হাক্বী ইল্মে ফিক্বহ্ অর্জন করেন। তিনি ছিলেন তাঁর ফিক্বহ্-এর ওস্তাদ। তাঁর থেকে তিনি হাদীসও সংগ্রহ করেছেন এবং তাঁর ‘সুনানে কুবরা’য় তাঁর থেকে ৬৫টি হাদীসও বর্ণনা করেছেন।
৩. আবদুল ক্বাহের আল বাগদাদী। তিনি ছিলেন তাঁর যুগের একজন প্রসিদ্ধ আলেম এবং শাফে‘ঈ মাযহাবের দিকপাল। তিনি প্রসিদ্ধ কিতাব الفرق بین الفِرق -এর রচয়িতা।
৪. আবূ সা‘ঈদ ইবনুল ফদ্বল আস্-সায়রফী। তিনি ছিলেন একজন নির্ভরযোগ্য তথা সেক্বাহ্ রাভী। ইমাম বায়হাক্বী তাঁর সান্নিধ্যে দীর্ঘকাল অতিবাহিত করেন এবং অনেক হাদীস সংকলন করেন। ১১০৪টি হাদীস তিনি তাঁর থেকে ‘সুনানে কুবরা’য় বর্ণনা করেছেন।
৫. আবূ বকর ইবনে ফুরক। তাঁর থেকে তিনি ইলমে কালাম শিক্ষা করেন।
৬. আবু আলী আর রোযবারী। তিনি ছিলেন তাসাওফের একজন প্রসিদ্ধ শায়খ। তাঁরই হাতে তিনি বায়‘আত গ্রহণ করেন এবং ইলমে তরীক্বত ও তাসাওফের দীক্ষা লাভ করেন।
৭. ইবরাহীম ইবনে মুহাম্মদ ইবনে ইবরাহীম আবূ ইসহাক্ব আল ইস্ফারাঈনী (ইন্তিক্বাল: ১০ মুহাররম, ৪১৮হি)
৮. ইবরাহীম ইবনে মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহীম ইবনে ইয়ূসুফ আবূ ইসহাক্ব আল ফক্বীহ্। (ওফাত: রজব, ৪১১হি.)
৯. ইবরাহীম ইবনে মুহাম্মদ ইবনুল হাসান আবূ ইসহাক্ব আল আরমভী। (ওফাত: শাওয়াল, ৪১৮হি.)
১০. আহমদ ইবনে ইবরাহীম ইবনে আহমদ ইবনে জানজাল। আবুল আব্বাস আস্ র্সারাম আল-মা’দিল আল-হামদানী। (ওফাত: রবিউল আওয়াল, ৪১৬হি.)
এ ছাড়াও প্রায় শতাধিক যুগশ্রেষ্ঠ আলেমের তিনি শিষ্য।
❏ ছাত্রবৃন্দ:
তিনি তাঁর অসংখ্য রচনাবলীর পাশাপাশি গর্ব করার যোগ্য অসংখ্য শিষ্যও পরবর্তী প্রজন্মের জন্য উপহার দিয়ে গেছেন, যাঁরা তাঁর জ্ঞানের গভীর সাগর থেকে মুক্তা আহরণ করে মুসলিম সমাজে বিতরণ করেছেন অকাতরে। তাঁদের মধ্যে:
১. ইমাম আবূ আবদিল্লাহ্ আন্ নিশাপূরী আশ-শাফে‘ঈ (ওফাত: ৫৩০হি.), তিনি ইমাম বায়হাক্বীর অন্যতম শিষ্য এবং তাঁর কিতাব ‘দালা-ইলুন্ নুবূওয়ত’ ‘আদ্ দাওয়াত আল কাবীর’ ও ‘আল বা’স’-এর গ্রহণযোগ্য বর্ণনাকারী।
২. ইমাম আবুল মা‘আ’লী মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল আল ফারেসী সুম্মা আন্- নিশাপুরী। তিনিও ছিলেন ইমাম বায়হাক্বীর শিষ্যদের একজন। তিনি তাঁর থেকে ‘সুনানে কুবরা’ শ্রবণ করেন, তিনি ছিলেন যুগের একজন প্রসিদ্ধ সেক্বাহ্ মুহাদ্দিস। তাঁর থেকে ইমাম ইবনুল আসাকির শেখ আবূ সা‘ঈদ আস- সাম‘আনীসহ অনেক প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস হাদীস বর্ণনা করেন।
❏ রচনাবলী:
ইমাম বায়হাক্বী বাল্যকাল থেকেই ছিলেন জ্ঞান পিপাসু ও কঠোর পরিশ্রমী। জ্ঞান অন্বেষণের লক্ষ্যে পৃথিবীর প্রত্যন্ত অঞ্চল চষে বেড়ানোর পাশাপাশি তাঁর প্রখর মেধা ও ধী-শক্তি তাঁকে বিশ্ববরেণ্য লেখকদের প্রথম সারিতে অবস্থান করে নিতে সাহায্য করেছে। তাঁর রেখে যাওয়া বিভিন্ন ভলিয়মের সহস্রাধিক গ্রন্থ পুস্তক ভান্ডার আজ বিশ্ব মুসলমানের জন্য অমূল্য সম্পদ ও গ্রন্থাগারগুলোর গৌরবের উপাদান। তিনি তাঁর গবেষণামূলক ক্ষুরধার লেখনীর বিরাট সংখ্যক পুস্তক রচনা করে চিরকালের জন্য বিশ্ব মুসলিমকে ঋণী করে রেখেছেন।
❏ নিম্নে তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থের নাম উল্লেখ করা হলঃ
১. ( السنن الكبرى ) ‘আস-সুনান আল-কুবরা’। এটা ইমাম বায়হাক্বীর সর্ব বৃহদাকারের গ্রন্থাবলীর অন্যতম, যা হাদীস শরীফের কিতাবগুরোর মধ্যে একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে রেখেছে। বিশ্ববিখ্যাত অনেক মুহাদ্দিস এ গ্রন্থটি নিজেও শ্রবণ করেছেন এবং অন্যদেরকেও পাঠ করে শুনিয়েছেন। বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিসগণ এ কিতাবটির ভ‚য়সী প্রশংসা করেছেন। ইমাম ইবনুস্ সালাহ্ (ইন্তেক্বাল: ৬৪৩হি.) কিতাবটিকে হাদীস শাস্ত্রে লিখিত কিতাবগুলোর ধারাবাহিকতায় ষষ্ঠ স্থানে রেখেছেন। এমনকি ‘সুনানে ইবনে মাজাহ্’-এর উপরে স্থান দিয়েছেন। যেমন-
১. বোখারী, ২. মুসলিম, ৩. আবূ দাঊদ, ৪. তিরমিযী ও ৫. নাসা‘ঈ শরীফ এরপর ‘সুনানে কুবরা’-এর স্থান।
ইমাম সুবকী (ওফাত: ৭৭১হি.) এ কিতাবের প্রশংসা করতে গিয়ে বলেন,
أمّا السنَنَ الكُبرى فَمَا صَنَف في علم الْحَدِيث مثله تهدِنَا وَتَرْتِيَا وَجَوَدَةً
অর্থাৎ হাদীস শাস্ত্রে, ঐতিহ্যগত, বিন্যাসগত ও মানগত দিক দিয়ে ‘সুনানে কুবরা’র মতো কিতাব প্রণয়ন করা হয়নি। মোটকথা, বিন্যাস, ধারাবাহিকতা ও গুণগতমানের দিক থেকে ইমাম বায়হাক্বীর ‘সুনানে কুবরা’ হাদীস শাস্ত্রে এক অতুলনীয় কিতাব। কিতাবটি ১০ (দশ) খন্ড সম্বলিত।
২. السنن والاثار (আস্সুনান ওয়াল আ-সা-র)। কিতাবটি ৪ (চার) খন্ডবিশিষ্ট।
৩. الاسماء والصفات (আল-আসমা ওয়াস্ সিফাত)। এটা ২ (দুই) খন্ড বিশিষ্ট।
৪. المعتقد (আল-মু’তাক্বাদ)। এটা ১ (এক) খণ্ডে লিখিত।
৫. البعث (আল-বা’স)। এটা ১ (এক) খণ্ডে প্রণীত।
৬. الترغیب والترھیب (আত-তারগীব ওয়াত্ তারহীব)। এটা ১ (এক) খণ্ডে লিখিত।
৭. الدعوات (আদ্দা’ওয়াত)। এটা ১ (এক) খণ্ডে লিখিত।
৮. الزھد (আয্ যুহ্দ)। এটা ১ (এক) খণ্ডে লিখিত।
৯. الخلافیات (আল-খিলা-ফিয়াত)। এটা ৩ (তিন) খণ্ডে লিখিত।
১০. نصوص الشافعى (নুসূসুশ্ শাফে‘ঈ)। এটা ২ (দুই) খণ্ডে লিখিত।
১১. دلائل النبوة (দালা-ইলুন নুবূয়ত)। এটা ৪ (চার) খণ্ডে লিখিত।
১২. السنن الصغیر (আস্ সুনানুস্ সগীর)। এটা ১ (এক) খণ্ডে লিখিত।
১৩. شعب الایمان ( শু’আবুল ঈমান)। এটা ২ (দুই) খণ্ড বিশিষ্ট।
১৪. المدخل الى السنن (আল্-মাদ্খাল ইলাস্ সুনান)। এটা ১ (এক) খণ্ডবিশিষ্ট।
১৫. (আল-আদাব): এটা ১ (এক) খণ্ড বিশিষ্ট ) الاداب।
১৬. حَیاَةُ الأنَْبِیآَ ِء عَلیَْھِمُ َّ السلامَُ ِفىْ قبُوُْرِ ِھمْ (ফাদ্বা-ইলুল আওক্বাত)। এটা (দুই) খণ্ড সম্বলিত فضائل الاوقات .
১৭. الاربعین الاربعین الصغیرالكبیر (আল আরবা‘ঈনুল কবীর)। এটা ২ (দুই খন্ডে)।
১৮. এটা ১ (এক)) খণ্ডের কিতাব খণ্ডবিশিষ্ট
لِلْإِمَامِ الْبَیْھَقِ ِّ ى رَحِمَھُ ﷲُ تَعَالى (আল-আরবা‘ঈনুস্ সগীর)
১৯. الرؤیة ( আর রু’ইয়াহ্)। এটা ১ (এক) খণ্ডবিশিষ্ট।
২০. الاسراء (আল-ইসরা)। এটা ১ (এক) খণ্ড সম্বলিত।
২১. مناقب الشافعى ( মানাক্বিবুশ্ শাফে‘ঈ। ১ (এক) খণ্ড বিশিষ্ট।
২২. مناقب احمد ( মানাক্বিবে আহমদ)। এটা ১ (এক) খণ্ডে লিখিত।
২৩. فضائل الصحابة ( ফাদ্বা-ইলুস্ সাহাবা)। এটা (এক) খণ্ড বিশিষ্ট।
২৪. احادیث الشافعى (আহা-দী-সুশ্ শাফে‘ঈ)। এটা ১ (এক) খণ্ড বিশিষ্ট।
২৫. ألف مسألة (আলফু মাস্আলাহ্)। এটা ১ (এক) খণ্ডে লিখিত।
২৬. بیان خطأ من أخطأ على الشافعى (বয়ানু খাত্বাই মান্ আখত্বাআ আলাশশাফে‘ঈ)। এটা ১ (এক) খণ্ড বিশিষ্ট।
২৭. (তাখরীজু আহা-দী-সিল উম্ম্)
تخریج احادیث الام (كتاب الام للشافعى)
(কিতাবুল উম্ম, ইমাম শাফে‘ঈ কৃত)। এটা ১ (এক) খণ্ড বিশিষ্ট।
২৮. معالم السنن (মা‘আ-লিমুস্ সুনান),
العقائد (আল-আক্বাইদ),
اثبات عذاب القبر (ইসবাতু আযাবিল কবর),
القراءة خلف الامام (আল-কিরাআতু খালফাল ইমাম),
২৯.( الاعتقاد والھدایة الى سبیل الرشاد (আল-কাদ্বা ওয়াল ক্বদর) القضاء والقدر .(ই’তিক্বাদু ওয়াল হিদায়াতু ইলা সাবীলির রাশাদ) الایمان (আল-ঈমান)
৩০. .احكام القران (আহকামুল করআন),حیاة الانبیاء فى قبورھم بعد وفاتھم, (হায়াতুল আম্বিয়া) ইত্যাদি।
ইমাম বাইহাক্বী প্রণীত হায়াতুল আম্বিয়া [আলায়হিস্ সালাম]
حَیاَةُ الأنَْبِیآَءِ عَلیَْھِمُ َّ السلامَُ فِىْ قبُوُْرِھِمْ لِلْإِمَامِ الْبَیْھَقِى رَحِمَھُ ﷲُ تَعَالى
بسم ﷲ الرحمن الرحیم
(বিসমিল্লাহহির রাহমানির রাহিম)
❏ হাদিস নং ১ :
رقم الحدیث: ١
َ أخبرنا أبُو سعْدٍ أحمد بْنُ مُحمد بْن الخلیل الصوفي، رحمهَ الله ، قال : أنبأ أبُو أحمدَ عبْد الله بْنُ عدي الحافظ , قال : ثنا قسْطنُّ طینُ بْنُ عبْد الله الرومي , قال : ثنا الحسنُ بْنُ عرفةَ قال : ثنا : حدثني قال الحسنُ بْن ُ قتیْبة المدَائني المُسْتلم بْنُ سعیدٍ ثنا الثقفي عن ِ الحجاج بْن الأسْود ثابتٍ البُنانيِّ عنْ أنسَ رضي الله عنھُ ، قال : قال رسُولُ الله صلى الله علیْه وسلم “الأنبیاءُ أحْیاء في قبُورھم یُصلون” ھذا حدیث یُعد في ْإفراد الحسن بْن قتیْبة المدَائنيِّ ، وقد رُوي عن ْ یحْیى بْن أبي بُكیْر ، عن المُسْتلم بْن سعیدٍ ، عن الحجاج ، عن ْ ثابتٍ ، عن أنس(١)
হযরত সাবেত আল বুনানী রাদ্বিয়ালাহু তা‘আলা আনহু হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ইরশাদ করেন,
“নবীগণ তাঁদের কবর শরীফে জীবিত এবং তারা সেখানে নামায আদায় করেন।”
1 – ( الراوي : أنس أبي نعيم الأصبهاني – ذكر خبر أصبهان – الجزء : ( ۲ ) – رقم الصفحة : ( ۸۳ ( . البزار : البحر الزخار المعروف بمسند البزار . الصفحة أو الرقم / 13 / 299 : . البيهقي / المصدر : حياة الأنبياء الصفحة أو الرقم : / 27 : الشوكاني – نيل الأوطار – الجزء : ( 5 ) – رقم الصفحة : ( ۱۷۸ ( . أبو يعلى الموصلي – مسند أبو يعلى الموصلي – الجزء : ( 6 ) – رقم الصفحة : ( ۱۶۷ ( . المناوي – فيض القدير شرح الجامع الصغير – الجزء : ( ۳ ) – رقم الصفحة : ( ۲۳۹ ( . الهيثمي – مجمع الزوائد – الجزء : ( ۸ ) – رقم الصفحة : ( ۲۱۰ ( . السيد ابن طاووس الحسني – سعد السعود – رقم الصفحة : ( ۱۰۱ ( . إبن منده الأصفهاني – الفوائد – رقم
الصفحة : ( ۷۶ ( . إبن عابدين – حاشية رد المختار – الجزء : ( 4 ) – رقم الصفحة : ( ۳۲۸ ( . البكري الدمياطي – إعانة الطالبين – الجزء : ( ۱) ورقم الصفحة : ( ۲۲۷ و ۱۳۱۳ . محمود سعيد ممدوح – رفع المنارة – رقم الصفحة : ( ۹۲ ( . عبدالله بن عدي – الكامل – الجزء : ( ۲ ) – رقم الصفحة : ( ۱۳۲۷ . إبن عساكر – تاريخ مدينة دمشق – الجزء : ( ۱۳ ) – رقم الصفحة : ( ۱۳۲۹ . إبن النجار البغدادي – ذيل تاريخ بغداد – الجزء : ( ه ) – رقم الصفحة : ( ۱۰۷ ( . الذهبي – سير أعلام النبلاء – الجزء : ( ۹ ) – رقم الصفحة : ( ۱۹۱ ( . الذهبي – ميزان الإعتدال الجزء : ( ۱ ) – رقم الصفحة : ( ۹۰ وابن حجر – لسان الميزان – الجزء : ( ۲ ) ۔ رقم الصفحة : ( ۱۷۵ و ۲۶۹ ( . الصالحي الشامي – سبل الهدى والرشاد – الجزء : ( ۱۲ ) – رقم الصفحة : ( ۳۰۹ و ۱۳۹۷ ، محمد بن الشربيني – الإقناع – الجزء – ( 1 ) : رقم الصفحة : ( 203 ) . السبكي – السيف الصقيل رد ابن زنجفيل – رقم الصفحة : ( ۱۸۲ ( . حسن بن علي السقاف – الإغاثة – رقم الصفحة : ( 4 و 5 ( . الشرواني والعبادي – حواشي الشرواني – الجزء : ( ۲ ) – رقم الصفحة : ( ۱۹۷ ( . موسى الحجاوي – الإقناع – الجزء : ( ۲ ) – رقم الصفحة : ( ۲۳۷ ( . العظيم آبادي – عون المعبود – الجزء : ( ۳ ) – رقم الصفحة : ( ۲۹۱ ( . جلال الدين السيوطي – شرح سنن النسائي – الجزء : ( 4 ) – رقم الصفحة : ( ۱۱۰ ( . الذهبي / المصدر : ميزان الاعتدال الصفحة أو الرقم / 1 / 518 : . : الذهبي / المصدر : ميزان الاعتدال , الصفحة أو الرقم / 1 / 460 : . ابن الملقن / المصدر : البدر المنير , الصفحة أو الرقم 5 / 284 : . الهيثمي 7 المصدر : مجمع الزوائد . الصفحة أو الرقم 8 / 214 : . ابن حجر العسقلاني / المصدر : فتح الباري لابن حجر , الصفحة أو الرقم / 561 / 6 : الصنعاني / المصدر : الإنصاف في حقيقة الأولياء , الصفحة أو الرقم / 79 : . البزار / المصدر : البحر الزخار المعروف بمسند البزارر الصفحة أو الرقم / 13 / 62 : ابن عدي / المصدر : الكامل في الضعفاء , الصفحة أو الرقم / 3 / 173 : . ابن القيسراني / المصدر : ذخيرة الحفاظ الصفحة أو الرقم / 2 / 1084 : والحديث رواه أبو يعلى ( ۱۹۷ / 6 ) و غيره وهو حديث حسن وله شواهد لمعناه صحيحة . قال ابن حجر : وقد جمع البيهقي كتابا لطيفا في ” حياة الأنبياء في قبورهم ” أورد فيه حديث أنس ” الأنبياء أحياء في قبورهم يصلون ” أخرجه من طريق يحيى بن أبي كثير وهو من رجال الصحيح عن المستلم بن سعيد وقد وثقه أحمد وابن حبان عن الحجاج الأسود وهو ابن أبي زياد البصري وقد وثقه أحمد وابن معين عن ثابت عنه ، وأخرجه أيضا أبو يعلى في مسنده من هذا الوجه ، وأخرجه البزار لكن وقع عنده عن حجاج الصواف وهو وهم والصواب الحجاج الأسود كما وقع التصريح به في رواية البيهقي ، وصححه البيهقي ، وأخرجه أيضا من طريق الحسن بن قتيبة عن المستلم ، وكذلك أخرجه البزار وابن عدي . )
❏ হাদীস নং ২ :
ع رقم الحدیث : ٢
وھُو فیما أخبرنا الثقة منْ أھْل العلم ، قال : أنبأ أبُو عمْرو بْنُ حمْدَان , قال : أنبأ أبُو یعْلى الموْ صلي , ثنا أبُو الجھْم الأزرق بْنُ علي ,ثنا یحْیى بْنُ أبي بُكیْر ثنا المُسْتلم بْن سعیدٍ عن الحجاج عن ْ ثابتٍ عن أنس بْن مالكٍ رضي الله عنه ، قال : قال رسُولُ الله صلى الله علیْه وسلم َ ، : “الأنبیاءُ أحياء في قبُورھم یُصلون” و قد رُوي من ْ وجْھ آخر ، عن ْ أنس بن مالكٍ رضي الله عنھُ موقوفا
بْن مالكٍ .
(٢)
-المرجع السابق(2)
হযরত সাবেত আল্ বুনানী (رضي الله عنه) হযরত আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলে করীম (ﷺ) এরশাদ করেন,
“নবীগণ তাঁদের নিজ নিজ কবর শরীফে জীবিত, তাঁরা নামায আদায় করেন।”
❏ হাদীস নং ৩ :
خرقم الحدیث: ٣
أخبرناهُ أبُو عُثمان الإمامُ رحمھُ الله ، أنبأَ زاھرُ بْنُ أحْ مدَ , ثنا أبُو جعْفر مُحمد بْنُ مُعاذٍ الماليني , ثنا الحُسیْنُ بْنُ الحسن , ثنا َمُؤ ٌمل , ثنا عُبیْد الله بْنُ أبي حُمیْدٍ الھُذلي أبي المليح ُ , عن أنس بْن مالكٍ قال : ” الأنبیاءُ في قبُورھم أحْیاء یُصلون “(٣)
-المرجع السابق(3)
হযরত আবুল মালীহ্ (رضي الله عنه) হযরত আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, “নবীগণ তাঁদের কবর শরীফে জীবিত, তাঁরা (সেখানে) নামায আদায় করেন।”
❏ হাদীস নং : ৪
رقم الحديث : 4
وروي كَمَا , أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ الْحَاهِدَ , تُنأَبُو حامد أحمَدُ بن علي الحَسَهُ نَوي ، إمْلاء , تتلو عبد اللهُ مُحَمَّدُ بْن الْعَبّاس الحصي ، بحوض , ثنا أَبُو الريّيع الزهرَانِيّ , ثل ماعيل بْن طلحة بن يزيد , ع حمد بن عبد الرحَمن بن أبي ليلى وعيّ ثابت , عنْ أَنَس , رضي الله عنه عن النبي صلى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قال : إنّ الأنبياء لا يُتركُونَ في قبورهم يعدّ أربَعِينَ لَيْلَة , ولكنهُم يُصلون بين يدي اللهِ عَزّ وَجل حَتَّى يُنْفَخَ في الصور ” وهذا إن ص بهذا اللفظ فالمراد به ، والله أعلَمُ ، لا يُتركون لا يُصلون إلا هذَا المُقد ار , تُهُ يَقُولُونَ مُصلّين فيها بين يدي اللهِ عَزّ وَجَلَّ كمَا رِو بْنَا فِي الْحَدِيث الأوّلِ وَقُدُ يُحتمل أَن يَكُونَ المُرَاد به رفع أجسادهم مع أرواحهم . ( 1 )
হযরত সাবেত আল্ বুনানী (رضي الله عنه) হযরত আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নবী করীম (ﷺ) এরশাদ করেন, “নিশ্চয় নবীগণ আলাইহিমুস্ সালামকে তাঁদের কবর শরীফে ৪০ রাত্রির পর আর রাখা হয় না, বরং তাঁরা মহান আল্লাহর কুদরতের সামনে নামায পড়তে থাকেন, যতক্ষণ না সিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে।”
এ হাদীস শরীফ যদি উপরোক্ত বাক্যে হুবহু সহীহ হয়, তা’হলে এর মর্মার্থ আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন। তবে হতে পারে শুধু এ যাবতকাল সময়ে তাঁরা তাঁদের কবর শরীফে নামায আদায় করতে পারেন না; কিন্তু এ নির্ধারিত সময়ের পর তাঁরা আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লাহ’র মহান ক্বুদরতের সমীপে সদা-সর্বদা নামায পড়তে থাকেন, যা আমরা প্রথম হাদীসে উলেখ করেছি। আবার কখনও তার উদ্দেশ্য এও হতে পারে যে, তাঁদের রূহ সহ দেহ মুবারক ঊর্ধ্ব জগতে উত্তোলিত হয়।
4 – ( وذكر الغزالي ثم الرافعي حديثا مرفوعا ” أنا أكرم على ربي من أن يتركني في قبري بعد ثلاث ولا أصلي له حديث : روي } أنه صلى الله عليه وسلم قال : أنا أكرم على ربي من أن يتركني في قبري بعد ثلاث { وكذا أورده إمام الحرمين في نهايته ، ثم قال : وروي أكثر من يومين ، لم أجده هكذا ، لكن روي الثوري في جامعه عن شيخ ، عن سعيد بن المسيب قال } : ما يمكث نبي في قبره ، أكثر من أربعين ليلة حتى يرفع . ورواه عبد الرزاق في مصنفه عن الثوري ، عن أبي المقدام ، عن سعيد بن المسيب : أنه رأى قوما يسلمون على النبي صلى الله عليه وسلم فقال : ما مكث نبي في الأرض أكثر من أربعين يوما . { وهذا ضعيف ، وقد روى عبد الرزاق عقبه حديث أنس مرفوعا : مررت بموسى ليلة أسري بي ، وهو قائم يصلي ] ص 254 : في قبره . { وأراد بذلك رد ما روي عن ابن المسيب ، ومما يقدح في هذه الأحاديث حديث أوس بن أوس } : صلاتكم معروضة علي – { الحديث – ” . وحديث أبي هريرة } : أنا أول من تنشق عنه الأرض . { والله أعلم . وروى الطبراني ، وابن حبان في الضعفاء وابن الجوزي في الموضوعات من حديث أنس مرفوعا نحو الأول ، قال ابن حبان : هذا باطل موضوع . [ التلخيص الحبير في تخريج أحاديث الرافعي الكبير « كتاب الصلاة « كتاب الجنائز – ( 47 ) – 777 وقال الإمام السيوطي في اللآلئ المصنوعة في الأحاديث الموضوعة للسيوطي رقم الحديث : 648 وقال البيهقي في كتاب حياة الأنبياء : أَنْبَأَنا أَبُو عَبْد الله الحافظ ، حَدّثنللحمد بن على الحسني ، إملاء ، حَدّلو مُحمَد بْن الْعَبّاس الحمصي ، حَدَثنا أَبُو الربيع الزهراني ، كُنْتُل ماعيل بن طلحة بن يزيد ، مُعد بن عبد الرحمن عبد الله بن أبي ليلى ، عن ثابت ، عن أنس عن النبي صلى الله عليه وَسَلَّمَ ، قَالَ : ” الأنبياء لا يُتركون في قبورهم بعد أربَعينَ ليلة ، ولكنّهُم يُضلونَ بَيْنَ يَدي الله عز وجل حتى يُنفخ في الصور . ” وروى الثوري في جامعه ،
عن شيخ ، عن سعيد بن المسيب ، قال ” ما يَمَ مكث نبي في قبره أكثر من أربعين حتى يُرفع . ورواه عَبْد الرزاق في مصنفه ، عن الثوري ، عن أبي المقدام ، عن سعيد بن المسيب ، قال ” ما مكث نبي في قبره من الأرض أكثر من أربعين يوما ” . قال الزركشي في تخريج أحاديث الرافعي : وأبو المقدام هو ابن هرمز الكوفي ، والد عمر بن أبي المقدام شيخ صالح . وقال إمام الحرمين في النهاية ، تُمَ الرافعي في الشرح روى أن النبي صلى الله عليْهِ وَسَلَّمَ ، قال : ” أنا أكرمُ عَلَى ربي من أن يتركني في قبري بعد ثلاث . ” زاد إمام الحرمين ، وروى : أكثر من يومين . قال الزركشي : ولم أجده . وقيل : إن الأزرقي رَوَاهُ . قال الزركشي وذكر أبو الحسن بن الزاغوني الحنبلي في بعض كتبه ، حديثا ” إن الله لا يترك نبيًا في قبره أكثر من نصف يوم ” . وقال الحافظ ابن حجر في تخريج الرافعي متعقباعَلى ابن حبان ، وابن الجوزي في حكمهما عَلَى حديث أنس بالبطلان : وقد أفرد البيهقي جزءًا من حياة الأنبياء وأورد فيه عدة أحاديث تؤيد هذا ، فليراجع منه . وقال في دلائل النبوة : الأنبياء أحياء عند ربهم كالشهداء . وقال في كتاب الاعتقاد : الأنبياء بعد ما قبضوا ردت إليهم أرواحهم فهم أحياء عند ربهم كالشهداء . انتهى ، والله أعلم وراجع : فتح الباري شرح صحيح البخاري , أحمد بن علي بن حجر أبو الفضل العسقلاني الشافعي , الناشر : دار المعرفة – بيروت ، ۱۳۷۹ تحقيق : أحمد بن علي بن حجر أبو الفضل العسقلاني الشافعي )
❏ হাদীস নং ৫ :
رقم الحديث : ه
فقد رُونَ سفيان الثوري , في الْجَامِع ، قال : قال شيخ لنا عن سعيد بن المُسَيّبِ ، قَال : لما مكنّ نبي في قبره أكثر من أربعين ليلة حتى يُرفع ، فعلى هذا يصيرون كسائر الأحَيَاء , يكونون حيّث يُنَزلَهُمُ اللَّهُ عَزّ وَجَلَّ ” كما روينَاً فِي حَدِيث المعراج وَغَيْرِهِ ، أَنّ النّبي صلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ” رَأى مُوسَى عليه السلام قائما يُصلي في قبره ، ثمّ رَآهُ مَعَ سَائر الأنبياء عليهم السلام في بيتِ الْمَقَيس ، تُم رآهُمْ فِي السّمَوَاتِ ” , وَاللَّهُ تَبَارَلَ تعالى فعال لما يُريد ولحَياة الأنبياء بعد موتِهمْ صَلَوَاتُ اللَّهُ عَلَيْهم شوَاهِدُ مِنَ الأحَادِيث الصَّحِيحَةٍ مِنْهَا
হযরত সা‘ঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব (رضي الله عنه) বলেন, কোন নবী আলায়হিস্ সালাম নিজ কবর শরীফে চলিশ রাতের বেশী অবস্থান করেন না; বরং তাঁদেরকে উত্তোলন করা হয়। ফলে তাঁরা হয়ে যান অন্যান্য জীবিতদের ন্যায়। তাঁরা বিচরণ করতে থাকেন ওই সকল স্থানগুলোতে, যেখানে আল্লাহ তা‘আলা তাঁদেরকে অবতরণ করান।
যেভাবে আমরা মিরাজ ও অন্যান্য হাদীসে তার বর্ণনা পেয়েছি। যেমন নবী করীম (ﷺ) মি’রাজ রজনীতে দেখতে পেলেন যে, হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম তাঁর কবর শরীফে দাঁড়িয়ে নামায পড়ছেন। আবার কিছুক্ষণ পর তাঁকে অন্যান্য নবীগণের আলায়হিস্ সালাম সাথে ‘বাইতুল মুকাদ্দাস’ শরীফে সমবেতভাবে উপস্থিত দেখতে পেলেন। আবার ওই সকল নবী রাসূলগণকে বিভিন্ন আসমানেও দেখতে
পেলেন। আল্লাহ তা‘আলা যা চান তাই করেন। নিশ্চয় নবীগণ আলায়হিস্ সালাম যে তাঁদের নিজ নিজ কবর শরীফে জীবিত এ সম্পর্কে অসংখ্য দলীল ও প্রমাণ বিশুদ্ধ হাদীস শরীফ থেকে পাওয়া যায়। তৎমধ্যে:
(٥) (بل قد جاء عنھصلى ﷲ علیھ وآلھ وسلم ما ھو أعم مما ذكرنا ، وذلك في حديث أبي ھریرة في سؤال الملكين للمؤمن في القبر : فقال لھ : اجلس ، فيجلس قد مثلت لھ الشمس وقد أذنت للغروب ، فيقال لھ : أرأيتك ھذا الذي كان فيكم ما تقول فیھ ؟ وماذا تشھد علیھ ؟ فيقول : دعوني حتى أصلي ، فيقولون : إنك ستفعل ، أخرجھ إبن حبان في ( صحیحھ ) ( ٧٨١ ) والحاكم ( ١ / ٣٧٩ – ٣٨٠ ) وقال : صحيح على شرط مسلم ، ووافقھ الذھبي ! ، فهذا الحديث صريح في أن المؤمن أیضاً ً◌ يصلي في قبره ، فبطل بذلك القول بأن الموتى لا يصلون ، )
❏ হাদীস নং-৬ :
رقم الحديث : 6
(حديث مرفوع ) مَا أَحَبَرَ أبُو الحسين علي بن مُحمَدُرِ بْن عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سُرَانَ بغداد , أباً ماعيل بن مُحمَتَ الصقار , ثنا مُحمد بن عَبْدِ الْمَلِكِ الدّقيقيّ , ثنا يزيد بن هارون , ثنا اليمان عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : لالة أسري به مرّ على مُوسى عليه السلام وَهُوَ يُصلّي في قبره ” .
হযরত সুলাইমান আত্ তাইমী (رضي الله عنه) সাহাবী হযরত আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমাকে নবী করীম(ﷺ) এর কয়েকজন সম্মানিত সাহাবী সংবাদ দিয়েছেন যে, “যে রাতে নবী করীম(ﷺ) কে মি’রাজ করানো হল সে রাতে তিনি হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম-এর পাশ দিয়ে গমন করার সময় দেখতে পেলেন তিনি (আলায়হিস্ সালাম) নিজ কবর শরীফে নামায পড়ছেন।”
(٦)وفي رواية صحيح مسلم بلفظ: عن أنس بن مالك : أن رسول ﷲصلى ﷲ علیھ وآلھ وسلم قال : أتيت وفي روایةھدابمررت على موسى ليلة أسري بي عند الكثيب الأحمر وھو قائمیصلي في قبره. (صحیح مسلم – الفضائل- من فضائل موسى – رقم الحديث( ৪৩৭৯ ) : . وفي رواية عن أنس بن مالك : أن رسول ﷲصلى ﷲ علیھ وآلھ وسلم قال :أتيت على موسى ليلة أسري بي عند الكثيب الأحمروھو قائم يصلي في قبره. (مسند أحمد – باقي مسند…. -مسند أنس – ….رقم الحديث( ১২০৪৬ ) :وفي رواية عن أنس بن مالك : أن رسول ﷲصلى ﷲ علیھ وآلھ وسلم قال :أتيت ليلة أسري بي على موسى عند الكثير بالأحمر وھو قائم يصلي في قبره. (سنن النسائي – قيام الليل.. -ذكر صلاة نبي – …رقم الحدیث( ১৬১৩ )
❏ হাদীস নং-৭ :
رقم الحديث : ۷
حديث مرفوع ( وأخْبَرَنَأَبو الحسين علي بن بشران , أنبأ إيمَاعيل , ألبيط مد بن منصور بُنِ سَيّار الرّمَادِي ثنا يَزيدُ بن أبي حكيم ثئفيان يعني الثوري ، ثنلليمان التيمي , عيّ ” أنس بن مالك رضي الله عنه قال : قال رسول اللهِ صلى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ” مررت على مُوسى وَهُوَ قَلِمْ يُصلّي في قدِردِ (٧). “
(المرجع السابق)
হযরত আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ(ﷺ) এরশাদ করেন, আমি হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম-এর পাশ দিয়ে গমন করেছি, আর তিনি নিজ কবরে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছেন।
❏ হাদীস নং-৮ :
رقم الحديث : ۸
(حديث مرفوع ) أَخَبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ الْحَافظ , ثنا أَبُو الْعَبّاس مُحمد بن يَعْقُوب , ثنا مُحَمّيْن عبيد الله بن الْمُنَادِي , ثنا يُونس بن مُحمَدَ المُؤدب , تاحمَد بْن سَلَمَةَ , ثنلياً ليمان التَيْمِيّ , وَتَابِتُ البُنَانِيّ عن أنس بن مالك رضي اللَّهُ عَنْهُ ، أن رسول الله صلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ” أَتَيْتَ عَلَى مُوسَى ليلة أسري بي عند الكثيب الأحمر وهو قائم يصلي في قبري ” أخرجه أبو الحُسين مُسلم بن الحجاج النيسابوري رحمه الله ،من حديث حَمّاد بن سَلَمَهُ عَنْهُمَوأخرجه من حديّ الثوري وعيسى بْنِ يُونُس وجرير بن عَبْدِ الْحَمِيدِ عنَ التيمي .
হযরত সাবিত আল বুনানী (رضي الله عنه) হযরত আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, মি’রাজ রজনীতে আমি একটি লাল বালির টিলার নিকট আসলাম, যেখানে হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম এর কবর শরীফ অবস্থিত, আর দেখলাম- হযরত মুসা আলায়হিস্ সালাম তাঁর নিজ কবর শরীফে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছেন।
❏ হাদীস নং-৯ :
رقم الحديث : ۹ حديث مرفوع
( أَحَبَرَنَأحمد بن أبي علي القرشي أنبأ حاجب بن أدم تنط حمد بن يدى ثمد بن خالد ال بي ثنا عبد العزيز بن أبي سَلَمَهُ عن عبد الله بن الفضل الهَاشِمِيّ عن أبي سلمة بن عبد الرحمن عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” لقد رأيتني في الحجر وأنا أخبر قريشاً عن مسراي فسألوني عن أشياء من بَيْتِ المقدّس لم أثبتها ، فكربت كربا ما كرّبت مثله قط . وَرَفَعَهُ اللَّهُ عَرَ وجل ليّ أنظر إليه ، ما يُسألوني عن شيء إلا أنبَأَنَّهُمْ به , وَقَدْ رأيتُنِي فِي جَمَاعَةٍ مِنَ الأنبياء , فَإِذَا مُوسَى فَايْمُ يُصلّى ، فإذا رجل ضرب جهد كأنه من رجل شنوءة ، وإذا عيسى بن مرَ يَمُ قائم يُتُلي أقرب الناس به شبها عُروة بن مسعود الثقفي وإذا إبراهيم قائم يصلي أشبه الناس به صاحبُكم ، يكُني لَفَسَنَةً ، فَحَانَتِ الصلاة ، فأمَمَتُهُمْ ، فَلَمَّا فَرَعْتُ مِنَ الصلاة ، قال لِى قَالَ : يَا مُحمَدُ هذاً مالي ” صاحب النّار فَسَلَهُ عَلَيْهِ ، فَالْتَفَتُ له فَبَدَأَنِي بالسلام ” (9)
হযরত আবূ হোরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)এরশাদ করেন, ইসরা ও মি’রাজ শেষে ফিরে এসে ক্বোরাইশদের নিকট এ ঘটনা বর্ণনার এক পর্যায়ে রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি আমাকে ‘হিজর’ (কা’বার অদূরে) নামক স্থানে দেখতে পেলাম যখন আমি ক্বোরাইশদের নিকট আমার ইসরা ও মি’রাজের ঘটনা বর্ণনা করছিলাম। তখন তারা আমাকে বায়তুল মুক্বাদ্দাস বিষয়ক এমন কিছু প্রশ্ন করলো যে সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। তাই আমি চিন্তিত হয়ে গেলাম। অত:পর আল্লাহ তা‘আলা বাইতুল মুক্বাদ্দাসকে আমার জন্য উন্মোচিত করে দিলেন, যাতে আমি তা দেখতে পাই। সুতরাং তারা বায়তুল মুক্বাদ্দাস নিয়ে যে কোন প্রশ্ন করল আমি তার যথাযথ উত্তর দিলাম।
এ রজনীতে আমি আমাকে নবীগণ আলায়হিস্ সালাম-এর একটি সমাবেশে দেখতে পেলাম। আবার দেখতে পেলাম যে, হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছেন। তিনি কোঁকড়ানো চুলধারী উপমাযোগ্য সুদর্শন পুরুষ, যাঁকে দেখতে শানুয়া গোত্রের লোকদের মত মনে হয়।
ওদিকে হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলায়হিস্ সালামও দাঁড়িয়ে নামায পড়ছেন, যিনি আকৃতির দিক থেকে ওরওয়া ইবনে মাস‘ঊদ আস সাক্বাফীর সদৃশ।
أوجه مُسلم في الصحيح من حدي عبد العزيز وفي حديّتِ سعيد بن المُسيّب وغيره أَنَّهُ لَقِيهُمْ في م جدِ بيْتِ المَقدِس ( صحيح مسلم برقم ( ۱۷۲ . ( و صحيح البخاري برقم ( ۳۳۹4 ) وصحيح مسلم برقم ( ۱۹۸ ) .
আবার দেখতে পেলাম, হযরত ইব্রাহীম আলায়হিস্ সালামকে, তিনিও দাঁড়িয়ে নামায আদায় করছেন, যিনি দেখতে তোমাদের সাথে যিনি আছেন [অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)] তাঁর সদৃশ। অত:পর নামাযের সময় হলো, আমি তাঁদের ইমামতি করলাম। আমি যখন নামায থেকে অবসর হলাম তখন আমাকে কেউ বলল, হে হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা! উনি হলেন ‘মালেক’, জাহান্নামের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা। তাঁর সাথে সালাম আদান-প্রদান করুন। আমি যখন তার দিকে ফিরলাম তখন তিনি আমাকে প্রথমে সালাম দিলেন।
এ হাদীস ইমাম মুসলিম তাঁর ‘সহীহ মুসলিম’-এ আবদুল আযীয থেকে বর্ণনা করেন,
وفي حديث أبي ذر وَمَالك يُن ص صعة في قصة المعراج أَنَّهُ الْقِيَهُمْ فِي جَمَاعَةٍ من الأنبياء في السموات ، وَحَلَمَهُمْ وَكَلَمُوهُ ، وكل ذلك صحيح لا يُخالف بعضه بعضا , فَقَدْ يَرَى مُوسَى عليه السلام قائما يُصلي في قردِ ثم يُسرى بمُوستي وَغَيْرِهِ إلى بيت المقدّسَ كما أسري بنبيّناً صلى اللهُ عليْهِ وَسَلَّمَ فَيَرَاهُمْ فيه ، ثم يُعرج بهم إلى السمَوَاتِ كما عرج بنبيّنا صلَّى اللَّهُ عليه وسلم فير آهم فيها كما أخبر ، وحَلَولهم في أوقات بمواضع مُختلفات جائز في العقل ، كمَا ورَدَ به خبر الصّادِق وفي كل ذلَ حَلالَهُ عَلَى حَيَاتِهِمْ , وَمِمَّا يَتَ عَلَى ذَلِك .
হযরত সা‘ঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব ও অন্যান্যদের বর্ণনা মতে- রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অন্যান্য নবীগণ আলায়হিস্ সালাম-এর সাথে বায়তুল মুক্বাদ্দাস-এর মসজিদে মিলিত হন। আর হযরত আবূ যার (رضي الله عنه) ও মালেক ইবনে সা’সা‘আহ্ (رضي الله عنه) বর্ণিত মি’রাজ সংক্রান্ত হাদীস শরীফে উলেখ রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) অন্যান্য নবীগণের সাথে আসমানগুলোতে সাক্ষাত করেন এবং তিনি (ﷺ) তাঁদের সাথে কথা বলেন তাঁরাও তাঁর সাথে কথাবার্তা বলেন।
উপরোলেখিত সব হাদীসই সহীহ ও বিশুদ্ধ।
এগুলোর পরস্পরের মধ্যে কোন বিরোধ নেই। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে এদিকে নিজ কবর শরীফে দাঁড়িয়ে নামায পড়তে দেখেছেন, আবার আসমান ও বাইতুল মুক্বাদ্দাসেও। অর্থাৎ তিনি নিজ কবর শরীফে নামাজ আদায় করার পর তাঁকে অন্যান্য নবীগণের সাথে বায়তুল মুক্বাদ্দাস-এ পরিভ্রমণ করানো হয় যেভাবে আমাদের প্রিয় নবীকে রাতের সামান্য সময়ের মধ্যে বায়তুল মুক্বাদ্দাস শরীফে উপস্থিত করা হয়। তাই তিনি তাঁদেরকে সেখানে দেখতে পান। অত:পর তাঁদেরকে আসমানের দিকে ঊর্ধ্বগমন করানো হয় যেভাবে আমাদের প্রিয়নবীকে মি’রাজ বা ঊর্ধ্বগমন করানো হয়েছে। তাই তিনি তাঁদেরকে সেখানেও
দেখতে পান, যা বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। সুতরাং তাঁদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে উপস্থিত হওয়াটা যুক্তি ও বিবেকের দিক থেকে স্বাভাবিক, কোন অবস্থাতে অসম্ভব নয়; যার সমর্থনে সর্বাধিক সত্যবাদী নবীর অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে।উপরোক্ত সকল হাদীস ইন্তিক্বালের পর নবীগণ আলায়হিস্ সালাম-এর সশরীরে জীবিত থাকার অকাট্য প্রমাণবহ। এ বক্তব্যের সমর্থনে নিম্নের হাদীস শরীফও প্রমাণ স্বরূপ পেশ করা যায়-
❏ হাদীস নং-১০:
رقم الحديث : ۱۰
مَا أَحَبَرَتَمُحمَدُ بْن عَبْدِ اللَّهِ الْحَافِظ رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى ثنا أَبُو الْعَبّاس محمد بن يَعْقُوبَ ، أبو جعفر أدمدُ بْن عَبْدِ الْحَمِيدِ الْحَارِثي ثنا الحسين بن علي الجَعَ فِي , تقباد الرحمن بُن يزيد بن جابر عن أبي الأشعث الصنّعاني أوس بن أوس الثقفي قال : قال لي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أفضل أيامكم يوْم الْجُمُعَة : فيه حَلِقُ
آدَمُ وَوَفِيه قُبض , وَفِيه النَّفَحَةً , وفيه الصنَعَقَةً , فأكثروا عَلَيَّ مِنَ الصلاة فيه فإن صلاتكم معروضةً عَلَى ” ، قَالُوا وكيف تعرض لاتناً عليْك وَقد أرمت ؟ يَقُولُونَ بَلِيتَ ، فَقَالَ : ” إِنَّ اللهَ قَد حَرّمَ على الأرض أن تأكل أجساد الأنبياء عليْهِمُ السّلام ” ، أخَرَجَهُ أَبُو دلو السجستانِي فِي كِتَاب السُنَن . ( 10 )
হযরত আওস ইবনে আওস আস-সাক্বাফী (رضي الله عنه)বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আমাকে বলেছেন, তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন, এ দিনে হযরত আদম আলায়হিস্ সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিনে তাঁর ইন্তিক্বাল হয়েছে, এ দিনেই (ক্বিয়ামতের) সিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে এবং এ দিনেই সকলে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়বে। তাই তোমরা এ দিনে আমার প্রতি অধিকহারে দুরূদ-সালাম পাঠ কর। কেননা তোমাদের সালাত-সালাম আমার নিকট পেশ করা হয়। তাঁরা বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ! কিভাবে আপনার প্রতি আমাদের সালাত-সালাম পেশ করা হবে, অথচ আপনি ইন্তিক্বাল করবেন এবং আপনার দেহ মুবারক ক্ষয়প্রাপ্ত ও জীর্ণ হয়ে যাবে? তখন উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)এরশাদ করলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা নবীগণ আলায়হিস্ সালাম-এর দেহ মোবারক গ্রাস করা (ভক্ষণ করা) জমিনের জন্য হারাম বা নিষেধ করে দিয়েছেন।
এ হাদীস ইমাম আবূ দাঊদ তাঁর সুনানে উদ্ধৃত করেছেন।
10 – أخرجه أحمد ۸ / 4 ( ۱۹۲۹۲ . والدارمي ( ۱۵۷۲ ) و \ ” أبو داود \ ” ۱۰۶۷ و \ ” ابن ماجة ” ۱۰۸۵ وأخرجه ابن ماجة ( ۱۹۳۷ مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح « كتاب الصلاة « باب الجمعة . 1361 وقال : رواه أبو داود ، والنسائي ، وابن ماجه ، والدارمي ، حياة الأنبياء في قبورهم للبيهقي , رقم الحديث – ۱۰ والبيهقي في ” الدعوات الكبير . “
মানুষ মারা গেলে তার দেহ্ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে মাটির সাথে মিশে জীর্ণ শীর্ণ হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। তাই সাহাবায়ে কেরামের এ প্রশ্ন। কারণ নবীগণের ইন্তিকালের পর তাঁদের স্বশরীরে জীবিত থাকার — বিষয়ে কোন তথ্য তাঁদের কাছে তখনও ছিল না। আর আল্লাহ ও রাসূল কর্তৃক প্রদত্ত হুকুম ও দিকনির্দেশনাই হলো শরীয়ত। তাই সাহাবায়ে কেরামের এ বক্তব্য শরীয়ত বিরোধী নয়, কারণ তখনো এ বিষয়ে কোন বর্ণনা আসেনি। ]
❏ হাদীস নং-১১:
رقم الحديث : ۱۱
حديث مرفوع :- وَلَهُ سُوَاهِدُ مِنْهَا مَا ، أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ الله الْحَافِظ ثبو بكر بن إسحاق الفقيه , أنأمدُ بْن عَلِي الأبّار أنغامد بن عبد الرحَمَن بن بُكَار الدّمَشقي ثنا الْوَلِيدُ بن مُسلِم حَدَنِي أَبُو رَافِع نَ سعيد المقبري بنِ أبي مسعُود الأنصاري رضي الله عنه عن النبي صلى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَال : أكثروا الصلاة عَلَى فَيوم الجمعة , فَإِنَّهُ ليس يُصلي علي أحَد يَوم الجمعة إلا عُرضت عَلَي صلاتُهُ . ” (١١)
হযরত আবূ মাস‘ঊদ আনসারী (رضي الله عنه) বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেছেন, তোমরা আমার প্রতি জুমার দিন অধিক পরিমাণে সালাত-সালাম প্রেরণ করো, কেননা যে কেউ আমার প্রতি জুমার দিনে দুরূদ-সালাম পাঠ করবে তার ওই দুরূদ সালাম আমার প্রতি অবশ্যই পেশ করা হবে।
11 – أخرجه أحمد ۸ / 4 ( ۱۹۲۹۲ . والدارمي ( ۱۰۷۲ ) و \ ” أبو داود \ ” ۱۰۶۷ و \ ” ابن ماجة ” ۱۰۸۰ وأخرجه ابن ماجة ( ۱۹۳۷ مرقاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح « كتاب الصلاة « باب الجمعة . 1361 وقال : رواه أبو داود ، والنسائي ، وابن ماجه ، والدارمي ، حياة الأنبياء في قبورهم للبيهقي , رقم الحديث – ۱۰ والبيهقي في ” الدعوات الكبير . “
❏ হাদীস নং-১২:
رقم الحديث : ۱۲ حديث مرفوع
وَأَحَجَليّا بن أدمدَ بن عبُدَ أن الكاتب ثنا أحمد بن عُبيد الصقار , الحسن بن سعيد , ثنا إبراهيم بن الحَجّاج ثنلحمّاد بن سَلْمَةً نَبُرد بُن سِنَان عنَ محَولِ الشامي عن أبي أُمَامَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَال قال رسول اللَّهِ صلى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ” أكثروا علي من الصلاة في كل يوم جُمُعَان صَلاة أمتي تُعرض عليّ في كل يوم جُمُعَةِ , فمن كان أكثرَهُمْ عَلَى صَلاةً كَانَ أَفَرَبَهُمْ مِنّي مَنْزِلَةً ( ۱۲ )
হযরত আবূ উমামা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, আমার প্রতি প্রত্যেক জুমার দিনে অধিক পরিমাণে দুরূদ সালাম প্রেরণ করো, কেননা আমার উম্মতের সালাত-সালামসমূহ আমার নিকট প্রত্যেক জুমাবারে পেশ করা হয়। সুতরাং আমার উম্মতের মধ্যে যে আমার প্রতি সর্বাধিক সালাত-সালাম প্রেরণকারী হবে, সে ক্বিয়ামতের দিন আমার সর্বাধিক নিকটবর্তী হবে।
12 – . ” ( رواه الترمذي ( 484 ) وقال : هذا حديث حسن غريب . وصححه ابن حبان كما نقل عنه الحافظ ابن حجر في ” بلوغ المرام ” ( 455 ) ، وحسنه الحافظ ابن حجر في ” نتائج الأفكار ” ( ، ( ۲۹۵ / ۳ )
❏ হাদীস নং ১৩ :
رقم الحديث : ۱۳ حديث مرفوع
وَأَخَبَرَنَا أبو الحسن علي بن مُحَمَدَ بْنِ عَلِيّ السقاء الإسفَرَانِيني ، قال : حَدّتَنِي وَالِدِي أَبُو عَلِيّ ثنا أَبُو رافع أسامة بَن علي بن سعيد الرّازي ، بمصر , ثنفَحمَدَ بن إسماعيل بن سَالِم الصعَلَيْهِ حَدَتُناحكمة بنت عثمَان بْنِ دِينَار أخي مالك بْنِ دِينَار ، قالت : حَدَثني أبعَثمان بن دِينار
প্রিয়নবীর খাদিম হযরত আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه)থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, ক্বিয়ামতের দিনের সকল স্থানে তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই আমার সর্বাধিক নিকটতম স্থানে থাকবে, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে আমার প্রতি সর্বাধিক সালাত-সালাম প্রেরণকারী ছিল। আর যে ব্যক্তি আমার প্রতি প্রত্যেক জুমার দিনে ও জুমার রাতে একশত বার দুরূদ পাঠ করবে, আল্লাহ তা‘আলা ওই ব্যক্তির একশ’টি চাহিদা পূরণ করবেন- সত্তরটি আখিরাতের প্রয়োজন ও চাহিদা এবং ত্রিশটি দুনিয়ার চাহিদা ও প্রয়োজন। অত:পর আল্লাহ তা‘আলা ওই সালাত- সালাম সংরক্ষণ ও পৌঁছানোর জন্য এক ফেরেশতা নিয়োজিত করবেন, যিনি তা আমার কবর শরীফে ওইভাবে প্রবেশ করাবে, যেভাবে তোমাদের কারও নিকট হাদিয়া উপঢোকনসমূহ প্রবেশ করানো হয়। আর ওই ফেরেশতা আমাকে সংবাদ দেবেন যে ব্যক্তি আমার প্রতি সালাত-সালাম প্রেরণ করেছে তার নাম, তার পিতা, বংশ, গোত্র, অঞ্চলসহ সমুদয় বিষয়ে। অত:পর তা আমি আমার নিকট রক্ষিত শ্বেত বালামে লিপিবদ্ধ করে রাখি।
13 – ( رواه ابن منده في ” الفوائد ” ( ص / ۸۲ ) ، والبيهقي في ” شعب الإيمان ” ( ۱۱۱ / 3 ) ، و ” حياة الأنبياء ” ( ۲۹ ) ، ومن طريق البيقهي : ابن عساكر في ” تاريخ دمشق ” ( ۳۰۱ / 54 ) ، وعزاه السيوطي في ” الحاوي ” ( ۱۶۰ / ۲ ) للأصبهاني في ” الترغيب . ” )
❏ হাদীস নং ১৪ :
رقم الحديث : 14
حديث مرفوع وفي هذا المعنى الحَدِيث الذي أخبَرَنَا أَبُو عَلى الحسين بن مُحتَ الرُوأَبَارِي أنبأبو بكر بن داسة ثنا أَبُو داد ثنا أحمَتُبُن صالح قال : قَرَأتُ عَلَى عبْد الله بن نافع ، قال : أَخَبَرَنِينِ أبي ذئب سعيد المقبري و أبي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ” لا تجعَلُوا بُيُوتَكُمْ فَتُورًا ولا تجعلوا قبري عيدًا ، وصلوا علي فإن صلاتكم تبَلغني حيْتُ كُنْتُمْ ” ( 14 ) “
হযরত আবূ হোরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, তোমরা তোমাদের ঘরকে কবরে পরিণত করো না এবং আমার কবর শরীফকে ঈদে রূপান্তর করো না; বরং তোমরা আমার প্রতি সালাতসালাম প্রেরণ করো, কেননা তোমরা যেখানে হওনা কেন তোমাদের সালাত-সালাম আমার প্রতি প্রেরণ করা হয়।
14 – ( أخرجه أحمد في ” مسنده ” ( ۳۶۷ / ۲ ) ، وأبو داود في ” السنن ” ( ۲۰۶۲ ) – ومن طريقه البيهقي في ” شعب الايمان ” ( 416 ) ، وفي ” حياة الأنبياء بعد وفاتهم ” ( ص 95 ) – ، وابن فيل البالسي في ” جزئه ” ( ۱۱۳ ) ، والطبراني في ” المعجم الأوسط ” ( ۸۰۳۰ . ( أخرجه أبو نعيم في ” حلية الأولياء ” ( ۲۸۳ / 6 : )
“তোমরা তোমাদের ঘরকে কবর বানিওনা” মানে কবরে যেভাবে নামাজ পড়া হয় না সেভাবে তোমাদের ঘরকেও কবরের মত নামাযবিহীন করোনা, বরং তোমরা মসজিদের পাশাপাশি তোমাদের ঘরেও কিছু নফল নামায পড়।
আর “আমার কবরকে ঈদে পরিণত কর না” মানে যেভাবে বৎসরে মাত্র দু’বার সমবেত হয়, তোমরা আমার কবর শরীফকেও তেমন করোনা; বরং বৎসরের সব সময় আমার রওযা শরীফ যেয়ারতে আস। আর যাদের পক্ষে সম্ভব না হয়, আর যখন তোমরা অনুপস্থিত থাক, তাহলে তোমরা বিশ্বের যে প্রান্তেই — থাকনা কেন তোমরা আমার প্রতি দুরূদ ও সালাম প্রেরণ করতে থাকো। কারণ তোমাদের সালাত-সালাম পৌঁছানো হয়।
❏ হাদীস নং-১৫ :
رقم الحدیث: ١٥
(حديث مرفوع ) وفي هذَا المَعْنَى الْحَدِيث الَّذِي أَخْبَرَنَا أَبُو مُحمد عَبْد اللَّه أَن يحَيَى بْن عَبْدِ الْجَبّار السُكّري يبعَدُ ادّ ، ثنا إسماعيل بن مُحَقُ الصقار , تقلياس بن عَبْد اللَّهُ الترقفي , تُللو عيْدَ الردُ مِنَ المُقرئ , تنحيوة بن شرَيْح , عن أبي صر زيد بن عبد الله بن قِسَيط عن أبي هريرةً , رضي الله عنه ، أن رسُول اللهِ صلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : ” | ما من أحد يُسلم علي إلا رد الله رُوحي حتى أردَّ عَلَيْهِ السّلام ” ( 15 ) وَإِنما أرادوالله أعلم إلا وقدَرَكَ اللَّهُ إلي روحي حَتَى أردَّ عَلَيْهِ السّلام .
হযরত আবূ হোরাইরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, যে কেউ আমার প্রতি সালাম প্রেরণ করবে, আল্লাহ তা‘আলাতখন আমার রূহকে ফিরিয়ে দেন, যাতে আমি ওই ব্যক্তির সালামের জবাব দিতে পারি।”
এ হাদীসের মর্মার্থ (আল্লাহ তা‘আলাই ভাল জানেন): ‘‘আল্লাহ তা‘আলা এর অনেক পূর্বেই আমার দেহে আমার রূহকে ফিরিয়ে দিয়েছেন, তাই আমি সালাম প্রদানকারীর সালামের উত্তর দিই।
15 – رواه أحمد ( 4۷۷ / ۱۹ ) ط الرسالة ، وأبو داود ( ۳۱۹ / ۱ ) ( ۲۰۰۱ ) وصححه النووي في ” الأذكار ” ( 154 . السلسلة الصحيحة ” 5 / ۳۳۸ : رواه أبو داود و البيهقي في ” سننه ” ( 5 / ۲45 ) و أحمد ( ۲ / ۲۲۷ و الطبراني في ” الأوسط ” ( 449 ) في ” الفتح ” ( 6 / ۲۷۹ ) : ” رجاله ثقات ” ! و قال الحافظ العراقي في ” تخريج الإحياء ” ( 1 / ۲۷۹ ) : ” سنده جيد ” . و أما النووي ، فقال في ” الرياض : ( 1409 ) ” إسناده صحيح ” ! و وافقه المناوي في ” التيسير ! ” |
❏ হাদীস নং-১৬ :
رقم الحديث: ١٦
حديث مرفوع وفي هذا المُعْنَى الحَدِيث الَّذِي أَخَبَرَنَا أَبُو القاسم علي بْن الْحَسَن بن علي الطهمَانِي ، ثنا أَبُو الْحَسَنِ مُحمدَ بْن مُحَمَ الكارزي ، ثنا علي بْن عَبْدِ الْعَزيز ثنا أَبُو تُعَيّم ثنا سفيان بنَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ السّايّب عن رَأَذانَ عن عبد الله بن مسعُود رضي اللهُ عَنْهُ ، قال : قال رسول اللَّهِ صلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِنَّ لِلَّهِ عَزّ وَجل مَلايَلَةً سَيّامِينَ فِي الأرض يُبلَعَوّني عن أَمَتِي السّلام . “(16)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (رضي الله عنه)থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলার এমন কিছু ফেরেশতা আছে। যারা সর্বদা সারা বিশ্বে বিচরণ করে। তারা আমার প্রতি আমার উম্মতদের সালাত-সালাম সমূহ পৌঁছিয়ে দেয় ।
16 – ( مسند أحمد بن حنبل , سنن النسائي و سنن الدارمي الصغرى , صحيح ابن حبان ، المستدرك على الصحيحين , المعجم الكبير للطبراني , مصنف ابن أبي شيبة مصنف عبد الرزاق مسند أبي يعلى الموصلي , البحر الزخار بمسند البزار , مسند ابن أبي شيبة )
❏ হাদীস নং-১৭ :
رقم الحديث : ۱۷
حديث مرفوع – وأخْبَرَنَا أَبُو الْحَسَيْن بْن بشران , وَأَبُو الْقَاسيم عبد الرحمن بن عُبَيْدِ اللَّهِ قَالا : أنباً حَمَزدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ الْعَنّاس ثنا أَحْمَدُ بْنُ الْوَلِيدِ ثنا أبو أحمد الزبَيْرُي ثنا إسرائيل عَنْ أبي يَحْيَى عَنْ مُجَاهد عن ابن عَبّاس رضي اللهُ عَنْهُمَا ، قال ” : ليس أَحَدَ مِن أمّة مُحَمّدِ صلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصلى عَلَيْهِ صلاة إلا وَهي تَتَلَعَه , يَقُولُ لَهُ الْمُلْك : فلان يُصلَّى عَلَيْكَ كَذَا وَكَذَا صلاه ( 17 )
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه)মা বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যে কোন উম্মত তাঁর প্রতি সালাত-সালাম পেশ করবে, অবশ্যই তা তাঁর নিকট প্রেরণ করা হবে। সালাত-সালামের জন্য নিয়োজিত ফেরেশতা তাঁকে (ﷺ) গিয়ে বলেন, ‘‘ইয়া রাসুলাল্লাহ (ﷺ)! অমুক ব্যক্তি আপনার প্রতি এ এ পরিমাণ সালাত-সালাম প্রেরণ করেছে।’’
17. ” ( المطالب العالية بزوائد المسانيد الثمانية لابن حجر: بن حجر العسقلاني. شعب الإيمان للبیھقي)
❏ হাদীস নং-১৮ :
رقم الحديث : ۱۸
حديث مرفوع – أَخَبَرَنَ عليّ بْن مُحَمَّدِ بْنِ بشران , أنبأ أَبُو جعَفَرِ الرّرَاز تنعيسى بْن عَبْدِ اللَّهِ اللَّيَالِي والعلاء بن عمر الْحَنّف ثنأو عند الرحَ مَن عَن الأعمش عن أبي صالح عن أبي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه النبي صلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ من صلى علي على قبري سمعَتُه ، ومَن صلّى على نائياً منه أبُلغه ( ۱۸ ) لب أو عبْد الرحمَن هذا هو مُحمد بُن مرّوَانَ التُدّي فيمَا أَرَى وَفِيهِ نَفَرَ , وَقَدْ مَضى مَا يُوَحَدُهُ .
হযরত আবূ হোরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি আমার রাওযা শরীফে উপস্থিত হয়ে আমার প্রতি সালাত-সালাম পেশ করে আমি তা শুনতে পাই। আর যখন কোন ব্যক্তি অনুপস্থিত থেকে আমার প্রতি সালাত-সালাম পেশ করে তা আমার নিকট পৌঁছানো হয়।
18 – ” ، ( أخرجه الخطيب البغدادي في تاريخ بغداد ( 4 / 468 ) ، و ابن البختري ( ۷۳۰ ) ، و البيهقي في حياة الأنبياء في قبورهم ( ۱۸ ) ، و السبكي في طبقات الشافعية الكبرى ( ۹۳ ، ۲۸۰ ) من طرق : عن العلاء بن عمرو عن محمد بن مروان السدي عن ( من صلى عند قبري وكل الله به ملكاً يبلغني ، و في أمر دنياه وآخرته ، وكنت شهيداً له و شفيعاً له يوم القيامة ) الأعمش عن أبي صالح عن أبي هريرة ، بلفظ ( من صلى على عند قبري سمعته ، ومن صلى علي نائياً عنه أبلغته و أخرجه البيهقي في شعب الإيمان ( ۱۰۸۳ ) ، و ابن سمعون الواعظ في أماليه ( ۲۵۵ ) ، و ابن عساكر في تاريخ دمشق ( 56 / ۳۰۱ ) ، من طرق : عن عبد الملك بن قريب الأصمعي ، عن محمد بن مروان السدي عن الأعمش عن أبي صالح عن أبي هريرة ، بلفظ
❏ হাদীস নং-১৯ :
رقم الحديث : ۱۹
وأخبرنا أَبُو عَبْدِ اللَّهِ الْحَافظ أنبأ أبو عبد الله الصقارة ثنا أَبُو بكر بن أبي الدّنْيا حوثي سويد بن سعيد حَدّتَنِي بان أبي الرجال عن سليمان بن سحيم قال ” : رأيتُ النّبيّ صلى الله عليه وسلم في النوم ، فَقُلت يا رسُول الله ، هوَ الَّذِينَ يأتونك فيُسلمون عليّ ، أتفقه لامَهُمْ ؟ قال : ” نعم ، وأرد عَلَيْهم . ” ( ۱۹ )
হযরত সুলাইমান ইবনে সুহায়ম (رضي الله عنه)বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে স্বপ্নে দেখলাম, তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! যে সমস্ত লোক আপনার রওযা পাকে উপস্থিত হয়ে আপনাকে সালাম প্রদান করেন আপনি কি তাদের সালাম বুঝতে পারেন? রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উত্তরে বললেন, হাঁ, আমি শুনতে পাই ও বুঝতে পারি এবং তাদের সালামের উত্তরও দিই।
19 – ( كتاب الشفا بتعريف حقوق المصطفى , للقاضي عياض بن موسى اليحصبي السبتي المغربي , دار الفكر , سنة النشر : 1423 هـ / ۲۰۰۲ م )
❏ হাদীস নং-২০ :
رقم الحديث : ۲۰
حديث مرفوع – وَمِمّا يَتَ عَلَى حَيَاتِهم مَا أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللهِ مُحمَد بن عَبْدِ اللَّهِ الْحَافِظ أَخْبَرَنِي أَبُو مُحمَتَ المُزنِي ثنا على بن مُحَمَّدِ بن عيسى ثنا أَبُو الْيَمَان أنبأ شعيب عن الزهري قال : أخبَرَنيو سلمة بن عبد الرد مَن وَسَعِيدُ بن المُسيّب , أنّ أبا هريرة قال استب رجلان رجل مِنَ المسلمين ورجل مِنَ اليَهُودِ , فقال المُسلِمُ : والذي اصطفى مُحَمَّدًا عَلَى الْعَالَمِينَ فَأَقسم بقسم ، فقال اليهودِيّ : وَالَّذِي اصطفى مُوسى عَلَى الْعَالَمِينَ فرفَعَ المُسَلم عن ذلك يدَهُ فَلَطم الْيَهُودِيّ , فَذَهَبَ الْيَهُودِي إلى النبي صلى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فأخبره بالذي كان من أمره وأمر المُسلِم , فقال النّبيّ صلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ” لا تخيّروني على مُوسى ، فإن الناس يُصعَقُونَ , فأكون أول من يُفيق ، فإذا مُوسي بَاطش مُتَعَلّق بجانب العرش فلا أدري أكان فيمن صعق فأفاق قبلي ، أو كانَ مِمّن استثنى اللَّهُ عَزّ وَجَ ” رواه البخاري في الصحيح عن أبي الْيَمَانِ ورِوَاه لسه عن عبد الله بن عبد الردّ مَن ، وَغَيْرِهِ ، عن أبي اليَمَان . ( ۲۰ )
হযরত আবূ হোরায়রা (رضي الله عنه) বলেন, একদা দু’ ব্যক্তির মধ্যে ঝগড়া লাগল- একজন মুসলমান আর অপরজন ইয়াহুদী। মুসলিম লোকটি বলল, ওই আল্লাহ তা‘আলার শপথ, যিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে সারা বিশ্ববাসীর জন্য চয়ন করে নিয়েছেন। এ কথার দৃঢ়তা প্রকাশের জন্য ওই ব্যক্তি নানা ধরনের ক্বসম ও শপথ করে বসেছে। অন্যদিকে ইয়াহুদী লোকটি বলল, ওই আল্লাহর শপথ, যিনি হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে বিশ্ববাসীর জন্য চয়ন করে নিয়েছেন। একথা শুনে মুসলিম লোকটি ইয়াহুদী লোকটিকে একটি চড় মেরে দিল।
তখন ওই ইয়াহুদী রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট গিয়ে তার এবং ওই মুসলমানের মধ্যে যা ঘটেছিল তা বিস্তারিতভাবে বললো। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, তোমরা আমাকে হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম-এর উপর শ্রেষ্ঠত্ব বা প্রাধান্য দিওনা। কেননা, ক্বিয়ামত দিবসে মানুষদেরকে সংজ্ঞাহীন করে ফেলা হবে। তখন আমিই সর্বপ্রথম সংজ্ঞা ফিরে পাব, দেখবো হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম আরশের পায়া ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি জানিনা, তিনি কি যারা সংজ্ঞাহীন হয়েছে তাদের সাথে সংজ্ঞাহীন হয়ে আমার পূর্বেই আবার সংজ্ঞা ফিরে পেয়েছেন, নাকি আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে এ সংজ্ঞাহীনতা থেকে মুক্ত রেখেছেন?
এ হাদীস ইমাম বোখারী তাঁর সহীহ্ বোখারীতে হযরত আবুল ইয়াশান ও ইমাম মুসলিম তাঁর সহীহ্তে হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আবদুর রহমান থেকে বর্ণনা করেছেন।
20- ( صحیح البخاری کتاب احادیث الانبیاء ২২৪৫ ومسلم২৩৭৩ )
❏ হাদীস নং-২১:
رقم الحديث : ۲۱
حديث مرفوع – وفي الحديث عَن الأعرج عن أبي هريرة رضي الله عنه ، عن النبي صلّى اللهُ عليهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ ” : تفضلوا بَيْنَ أَنْبِيَامِ اللَّهِ تَعَالَى , فَإِنَّهُ يُنْفَخُ في الصور فصعق من في الليّات ومن في الأرض إلا من شاء الله ، تُهُ نفخ فيه أخرى ، فأكون أول مَنْ بُعث ، أو في أول من بُعث فإذا مُوني آخذ بالعرش فلا أدري أدوسب بصعقة يوم الطور أم بُعث قَيْلى . ” (٢١)
হযরত আবূ হোরাইরা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন, তোমরা আল্লাহর নবীগণের মধ্যে কাউকে অন্য কারও উপর প্রাধান্য দিওনা। কেননা যখন শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন আসমান ও যমীনের সকলে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়বে, কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা যাদের চান তারা ছাড়া। অত:পর এতে পুনরায় ফুঁক দেয়া হবে। তখন আমিই সর্বপ্রথম সজাগ হবো, অথবা আমি সর্বপ্রথম যারা জাগ্রত হবে তাদের দলে থাকবো। হঠাৎ আমি দেখতে পাবো যে, হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম আরশে ‘আযীমকে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। তাই আমি জানিনা তিনি কি তূর পাহাড়ে যে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেছিলেন তার কারণে এখানে সংজ্ঞাহীন হননি, নাকি তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে আমার আগেই জাগ্রত হয়ে গেছেন?
21- ( صحیح البخاري كتاب أحادیث الأنبیاء ২২৪৫ ومسلم২৩৭৩ )
وهذا إنما يصح على أن الله جل تُناوَهُ ردّ إلى الأنْبِيَاء عَلَيْهِمْ السلام رَاحَهُم فهم أحَياء عند ربهم كالشهَدَاء , فَإِذَا تُفعَ في الصور النفخة الأولى صعقواً فيمن صعق ، ثم لا يكون ذلك موتاً في جميع معانيه إلا في ذهاب الأسدُ يَشعَار , فَإِنْ كَانَ مُوسى عَلَيْسلم ممن استثنى الله عز وجل بقوله : إلا من شاء ( سورة النمل آية ۸۷ ) فإنه عز وجل لا يذهب باستشوار في تلك الحالة وَيُحَانَهُ بصعقة يوم الطور وَيُقَال : إن الشهَمَلة جملة ما استثنى الله عز وجل بقوله : إلا من شاء الله سورة النمل آية ۵۷ وروينا فيه خبَرَا مِرَ فَوهَا , وَهُوَ مذكور مع سائر ما قيل فيه في كتاب البعث والنشور .
এ হাদীস শরীফ প্রমাণ করে যে, আল্লাহ তা‘আলা নবীগণ আলায়হিস্ সালাম এর নিকট তাঁদের রূহকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। ফলে তাঁরা মহান আল্লাহর নিকট জীবিত, শহীদগণের ন্যায়। অত:পর যখন শিঙ্গায় প্রথম ফুঁক দেয়া হবে তখন তাঁরাও অন্যান্যদের ন্যায় সংজ্ঞাহীন হয়ে যাবেন। অতএব, এটা কোন অবস্থাতেই মৃত্যু হতে পারে না; বরং তা হলো অনুভূতি শক্তি হারিয়ে ফেলা মাত্র। আর হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে এ সংজ্ঞাহীনতা থেকে আল্লাহ তা‘আলা মুক্ত রেখেছেন। কেননা আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন, “কিন্তু আল্লাহ যাকে চান সে ছাড়া।”
[সূরা নামল, আয়াত-৮৭]
সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা এ অবস্থায় হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম-এর অনুভূতি শক্তি নিয়ে নেবেন না, বরং তূর পাহাড়ের ওই সংজ্ঞাহীনতাকে এখানে গণ্য করা হবে। বলা হয়ে থাকে যে, ‘সূরা নামল’-এর আয়াতের ভাষ্য মতে- শহীদগণও এ সংজ্ঞাহীনতা থেকে মুক্ত থাকবেন এবং যার সমর্থনে মরফূ’ পর্যায়ের হাদীস শরীফ বর্ণিত রয়েছে। যার পূর্ণ বর্ণনা كتاب البعث والنشور-এ বিবৃত হয়েছে।
تَمَتُ بالحَيّر وباللَّهِ النَّوَفيق
সহায়ক গ্রন্থাবলী:
১. সিয়ারু আ’লামিন নুবালা: যাহাবী খ-১৮, পৃ. ১৬৪-১৬৯
২. মা’রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আ-সার: বায়হাক্বী খ-০১, পৃ.-২১২
৩. আল্ মাওসুয়া’ আশ্ শামিলা (ইমাম বায়হাক্বী পর্ব)
৪. ওয়াফাইয়াতুল আ’য়ান: ইবনে খাল্লিকান ১/৭৫
৫. ত্বাবাকাতুশ্ শাফে‘ইয়্যাহ্: ইমাম সুবকী ১/১২৪
৬. আল ওয়াফী বিল ওয়াফাইয়্যাত: সুফদী ২/৩১৬
৭. আল্ বিদায়াহ্ ওয়ান্ নিহায়াহ্: ইবনে আসীর ১২/১২-১৩
৮. তারীখুল ইসলাম: যাহাবী
৯. মুখতারুল ই’তিক্বাদ লিল ইমাম বায়হাক্বী: ইমাম আবদুল ওয়াহ্হাব আশ শারানী, পৃ. ১৭-১৮ ১০. আল্ জানিবুল আক্বদী ইনদাল ইমাম আল-বায়হাক্বী (পি.ইইচ.ডি গবেষণা পত্র): আবদুল্লাহ্ মুহাম্মদ আহমদ…
১১. মু’জামুল ভিলদান: ইয়াক্বুত আল হামুভভী।