হাদিস ৩৬
عن الحسن قال قال رسؤل الله صلى الله علي وسلم – افرشوا لي قطيفتي في لحدي فإن الأرض لم تسلط على أجساد الأنبياء .
رواه ابن سعد والهندي،
হযরত হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বয়ান করেন যে, হুযূর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার জন্য আমার কবরে আমার মখমল চাদর বিছিয়ে দেবে, নিঃসন্দেহে জমিকে আম্বিয়ায়ে কেরাম আলায়হিমুস সালাম এর শরীরের উপর শক্তি প্রয়ােগের সুযােগ দেয়া হয়নি।
ইহাকে ইমাম ইবনু সা’দ এবং হিন্দী বর্ণনা করেছেন।
_______________________
ক. ইবনে সা’দ : আত্ তাবাতুল কুবরা, ২/২৯৯;
খ. হিন্দী : কানযুল উম্মাল, ১৫/৫৭৭, হাদিস : ৪২২৪৫;
গ. সুয়ূতী : শরহু আল সুনানুন নাসায়ী, ৪/৮৪; খাসায়েসুল কুবরা, ২/২৭৮;
হাদিস ৩৭
عن الحسن رضي الله تعالى عنه يقول : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لا تاكل الأرض جسد من گلمه روح القدس .
رواه الجهضمي وابن القيم ، وقال ابن كثير : مرسل حسن.
وفي رواية عنه : قال : قال رسؤل الله صلى الله عليه وسلم : من كلمه روح القدس – لم يؤذن للارض أن تأكل من لحمه .
رواه المقريزي والسيوطي .
হযরত হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন যে, হুযূর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলছেন, যার সাথে রুহুল কুদুছ জিব্রাঈল কথা বলেছেন, জমিন তার দেহ খাবে না।
ইহকে ইমাম জাহজমী এবং ইবনুল কাইয়ুম বর্ণনা করেছেন। হাফেজ ইবনু কাছির বলেছেন, এ হাদিস মুরসাল হাসান।
হযরত হাসান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে আরো বর্ণিত আছে, তিনি বলেন যে, হুযূর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যার সাথে রুহুল কুদুছ কথা বলেছেন জমিকে তাঁর গােশত খাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি।
ইহাকে ইমাম মাকুরীজি এবং সুয়ূতী বর্ণনা করেছেন।
قال العلامة الشرنبلالي في الإيضاح في فصل زيارة النبي صلى الله عليه وسلم : ومما هو مقرر عند المحققين انه صلي الله عليه وسلم حي يرزق ممتع بجميع الملاذ والعبادات غير انه حجب عن ابصار القاصرين عن شريف المقامات.
আল্লামা শরম্বালালী নিজ কিতাব ‘নুরুল ঈজাহ’ এ হুযূর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর জেয়ারত এর অধ্যায় নির্ধারণ করেছেন, সেখানে তিনি বলেন, মহাককেকীনদের নিকট ইহা মিমাংসিত বিষয় যে, হুযুর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম জীবিত। হযরত সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে (হযরত সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর শানের যােগ্য) রিজিক দেয়া হয় এবং তিনি যাবতীয় স্বাদ ও এবাদতসমূহ দ্বারা উপকৃত হন। পার্থক্য শুধু এতটুকু এসব লােকদের দৃষ্টি থেকে হযরত সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আড়ালে রয়েছেন, যে দৃষ্টি মক্বামাতে আলিয়া থেকে খাটো।
______________________
ক. যাহদামী : ফদ্বলুস সালাতু আলান্ নবী, /৩৮, হাদিস : ২৩;
খ. ইবনে কাইয়ুম : জালাউল আফহাম, ৪১, হাদিস : ৫৯;
গ. ইবনে কাসীর : তাফসীরু কুরআনিল আযীম, ৩/৫১৫;
ঘ. সাখাভী : আল কাউলুল বদী, /১৬৯;
ভ. মাকরীষী : ইমতাউল আসমা, ১০/৩০৬;
চ. সুয়ূতী : খাসায়েসুর কুবরা, ২/২৮০; দুরুল মনসুর, ১/৮৭
ক. শারনাবলালী : নুরুল ইযাহ/ ৩৯১;
হাদিস ৩৮
عن سعيد بن عبد العزيز رضي الله تعالى عنه قال : لما كان أيام الحرة لم يوذن في مسجد النبي صلي الله عليه وسلم ثلاثا ولم يقم ولم يبرح سعيد بن المسيب رضي الله تعالي عنه من المسجد ، وكان يعرف وقت الصلاة إلا بهمهمة يسمعها من قبر النبي صلى الله عليه وسلم فذكر معناه .
হযরত সাঈদ ইবনু আবদুল আজিজ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, যখন আইয়্যামে হাররাহ (যে দিনগুলােতে ইয়াজিদ মদীনা মুনাওয়ারার উপর হামলা করায়ে ছিল) এর ঘটনা ঘটেছিল তখন হুযূর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর মসজিদে তিন দিন যাবৎ আযান ও একামত বলা হয়েছিল না এবং হযরত সাঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু (যিনি বড় মর্যাদাবান তাবেয়ী ছিলেন তিনি মসজিদে নববী (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম)-তে আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং তিনি (তিন দিন পর্যন্ত) মসজিদ ছাড়া ছিলেন না। এবং তিনি নামাজের সময় জানতেন না কিন্তু একটি নীচু স্বরের মাধ্যমে, যা হুযুর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র আলােকিত কবর থেকে শুনতেছিলেন। তারপর তিনি উহার অর্থও বয়ান করলেন।
এ হাদিসকে ইমাম দারেমী এবং খতীব। তাবরিজী বর্ণনা করেছেন।
______________________
ক. দারেমী : আস্ সুনান, ১/৫৬, হাদিস : ৯৩;
খ. খতীবে তিরমিযী : মিশকাতুল মাসাবীহ, ২/৪০০, হাদিস : ৫৯৫১;
গ. সুয়ূতী : শরহু সুনানি ইবনে মাজাহ, ১/২৯১, হাদিস : ৪০২৯;
হাদিস ৩৯
وفي رواية عنه (سعيد بن عبد العزيز) ، وما يأتي وقت صلاة إلا سمعت الأذان من القبر .
رواه أبو نعيم والسيوطي .
এবং তাঁর (হযরত সাঈদ ইবনু আব্দুল আজিজ) রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত এক বর্ণনায় আছে, হযরত সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন, কোন নামাযের সময় এমন আসেনি যে, আমি হুযূর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র আলােকিত কবর থেকে আযানের শব্দ শুনিনি।
ইহাকে ইমাম আবু নাঈম এবং সায়ুতী বর্ণনা করেছেন। (৪৬)
وفي رواية عنه قال : فكنت إذا حانت الصلاة أسمع أذانا يخرج من قبل القبر الشريف .
رواه ابن سعد .
وفي رواية عنه قال : لم ازل اسمع الأذان والإقامة من قبر رسول الله صلي الله عليه وسلم ایام الحرة حتي عاد الناس .
رواه التميز والشؤط .
এবং তাঁরই রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বললেন, যখন নামাযের সময় আসতাে তখন আমি হযরত সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আলােকিত কবরের দিক থেকে আযানের শব্দ শুনতাম।
ইহাকে ইমাম ইবনু সা’দ বর্ণনা করেছেন।
তারই নিকট থেকে বর্ণিত যে, তিনি বললেন, আমি আইয়্যামে হাররার কালে অবিরত হুযুর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর আলােকিত কবর থেকে আযান এবং একামতের শব্দ শুনতে ছিলাম, এই পর্যন্ত যে, লােকদের (অবস্থা) স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসল (অর্থাৎ মসজিদে নববীতে নিয়মিত আযান ও একামত শুরু হয়ে গেল)
ইহাকে ইমাম মাকারিজী এবং সুয়ূতী বর্ণনা করেছেন। (৪৭)
_____________________
৪৬*
ক. আবু নাঈম : দালায়েলুন নবুয়ত, /৪৯৬;
খ. সুয়ূতী : খাসায়েসুল কুবরা, ২/২৮০; আল হাবী লিল ফাতওয়া, ২/২৬৬;
গ. মাকরীযী : ইমতাউল আসমা, ১৪/৬১৫;
ঘ. যুরকানী ; শরহু মাওয়াহিবুল লাদুন্নী, ৭/৩৬৫;
ঙ. আবদুল হক মুহাদ্দীস দেহলভী : জযবুল কুলুব ইলা দিয়ারিল মাহবুব, /৪৪;
৪৭*
ক. ইবনে সা’দ : আত্ ত্বাবকাতুল কুবরা, ৫/১৩২;
খ. সুয়ূতী : আর রাসয়িলুত তিস’আ, /২৩৮-২৩৯; আল হাভী লিল ফাতওয়া, ২/৬২২; আল খাসায়েসুল কুবরা, ২/২৮১;
গ. মাকরেযী : ইমতাউল আসমা, ১৪/৬১৬;
ঘ, যুরকানী ; শরহুল মাওয়াহিবুল লাদুন্নী, ৭/৩৬৫;
হাদিস ৪০
عن عروة، عن أبيه، لما سقط عليهم الحائط في زمان الوليد بن عبد الملك، أخذوا في بناءه فبدت لهم قدم، فزعوا وظوا أنها قدم النبي صلى الله عليه وسلم، فما وجدوا أحدا يعلم ذالك حتى قال لهم عروة: «لا والله ما هي قدم النبي صلى الله عليه وسلم، ما هي إلا قدم عمر رضي الله عنه»
رواه البخاري وابن سعد.
হযরত ওরওয়াহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন যে, যখন অলিদ ইবনু আবদুল মালিক এর আমলে (হুজরা মােবারক এর) দেয়াল ঐ (লােকদের) উপর পড়ে গেল তখন একটি পা প্রকাশ পেল। লােকজন ভয় পেল এবং বুঝল যে, সম্ভবত ইহা হুযূর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর পা মােবারক। ইহার কোন পরিচয়কারী পাওয়া গেল না, শেষ পর্যন্ত হযরত ওরওয়াহ (চিনে নিলেন এবং) বললেন, খােদার কসম, ইহা হুযূর নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র পা মােবারক নয় বরং হযরত ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ক্বদম।
ইহাকে ইমাম বুখারী এবং ইবনু সা’দ বর্ণনা করেছেন।
______________________
ক. বুখারী : আস্ সহীহ, কিতাবুল জানায়েয, ১/৪৬৮; হাদিস : ১৩২৬;
খ. ইবনে সা’দ : আত্ তাবকাতুল কুবরা, ৩/৩৬৮