প্রকাশকাল
প্রথম প্রকাশ: ১২ই অক্টোবর ২০১১ইং
দ্বিতীয় প্রকাশ: ১২ই আগষ্ট ২০১৭ইং
গ্রন্থস্বত্ত্ব
লেখক কর্তৃক সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত
হাদীয়াঃ ১০০ (একশত) টাকা মাত্র।
প্রকাশনায়
আনজুমানে কাদেরীয়া চিশ্তীয়া আজিজিয়া বাংলাদেশ
সূচীক্রম
নং বিষয় পৃষ্ঠা নং
০১। ভূমিকা
০২। অনুবাদকের কথা
০৩। দ্বীন কাকে বলে❓
০৪। উমুরুদ্দ্বীন তথা দ্বীনের অস্তিত্বের নিদর্শনসমূহ কি কি❓
০৫। আক্বীদার বিশুদ্ধতা অর্থ কি❓
০৬। একনিষ্ঠ নিয়ত অর্থ কি❓
০৭। অঙ্গীকার পূরণ করা অর্থ কি❓
০৮। শাস্তিযোগ্য অপরাধ পরিহার-এর অর্থ কি❓
০৯। ইসলাম অর্থ কি❓
১০। ইসলামের শর্তসমূহ কি কি❓
১১। ইসলামের মূল ভিত্তিসমূহ কি কি❓
১২। ঈমান কি❓
১৩। ঈমানের মূল ভিত্তিসমূহ কি কি❓
১৪। শারে’ (عليه السلام) তথা আইন প্রণেতা কর্তৃক সর্বপ্রথম কোন বস্তুটি ফরয করা হয়েছে❓
১৫। মহান স্রষ্টা আল্লাহ্ তা‘আলা সমগ্র সৃষ্টি জগতের স্রষ্টা-এর প্রমাণ কি❓
১৬। মহান সত্তা আল্লাহর পরিচয় লাভ করা আমাদের পক্ষে কি সম্ভব❓
১৭। আল্লাহ্ তা‘আলার ক্ষেত্রে বান্দার ওপর কি কি ওয়াজিব❓ সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা কর
১৮। আল্লাহ্ তা‘আলার ক্ষেত্রে বান্দার ওপর কি কি ওয়াজিব বিস্তারিতভাবে বর্ণনা কর
১৯। অজুদ বা অস্তিত্ব অর্থ কি❓
২০। আল্লাহ্ তা‘আলার অস্তিত্ব বিদ্যমানের দলীল কি❓
২১। স্থায়িত্ব অর্থ কি❓
২২। আল্লাহ্ তা‘আলার স্থায়িত্বের প্রমাণ কি❓
২৩। চিরঞ্জীব অর্থ কি❓
২৪। আল্লাহ্ তা‘আলা চিরঞ্জীব হওয়ার দলীল কি❓
২৫। তাঁর সত্তা সৃষ্টির অন্য বস্তুর ন্যায় নয়
২৬। আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তা অপরিবর্তনীয় অর্থ কি❓
২৭। আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তা অপরিবর্তনীয় এর প্রমাণ কি❓
২৮। আল্লাহ্ তা‘আলা স্বয়ং বিদ্যমান হওয়ার অর্থ কি❓
২৯। আল্লাহ্ তা‘আলা স্বয়ং বিদ্যমান হওয়ার প্রমাণ কি❓
৩০। একত্ববাদের অর্থ কি❓
৩১। আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর সত্তায় একক এর অর্থ কি❓
৩২। আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর গুণাবলীতে একক এর অর্থ কি❓
৩৩। আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর কর্মে একক বা অদ্বিতীয় অর্থ কি❓
৩৪। একত্ববাদের প্রমাণ কি❓
৩৫। আল্লাহ’র কুদরত বলতে কি বুঝ❓
৩৬। আল্লাহ’র কুদরতের প্রমাণ কি❓
৩৭। আল্লাহ’র ইরাদা বলতে কি বুঝ❓
৩৮। ইরাদা বা আল্লাহ’র ইচ্ছাশক্তির প্রমাণ কি❓
৩৯। ইল্ম বা আল্লাহ’র জ্ঞান বলতে কি বুঝ❓
৪০। ইল্ম বা আল্লাহর জ্ঞানের প্রমাণ কি❓
৪১। হায়াত বা আল্লাহ্ চিরঞ্জীব বলতে কি বুঝ❓
৪২। হায়াত বা আল্লাহ্ চিরঞ্জীব হওয়ার প্রমাণ কি❓
৪৩। আল্লাহ’র শ্রবণশক্তি বলতে কি বুঝ❓
৪৪। আল্লাহ্ শ্রবণশক্তি সম্পন্ন হওয়ার প্রমাণ কি❓
৪৫। আল্লাহ’র দৃষ্টিশক্তি বলতে কি বুঝ❓
৪৬। আল্লাহ্ দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন হওয়ার প্রমাণ কি❓
৪৭। আল্লাহ’র কালাম বা বাণী বলতে কি বুঝ❓
৪৮। আল্লাহ’র কালাম বা বাণী’র দলীল কি❓
৪৯। আল্লাহ্ তা‘আলা সর্বশক্তিমান অর্থ কি এবং এর প্রমাণ কি❓
৫০। আল্লাহ্ তা‘আলা সংকল্পকারী’র অর্থ ও প্রমাণ কি❓
৫১। আল্লাহ্ তা‘আলা মহাজ্ঞানী’র অর্থ ও দলীল কি❓
৫২। আল্লাহ্ তা‘আলা চিরঞ্জীব’র অর্থ ও দলীল কি❓
৫৩। আল্লাহ্ তা‘আলা সর্বশ্রোতা’র অর্থ ও দলীল কি❓
৫৪। আল্লাহ্ তা‘আলা সর্বদ্রষ্টা’র অর্থ ও দলীল কি❓
৫৫। আল্লাহ্ তা‘আলা বক্তা এর অর্থ ও দলীল কি❓
৫৬। আল্লাহ্ তা‘আলার জন্যে অসম্ভব বিষয়গুলো কি❓ সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা কর
৫৭। আল্লাহ্ তা‘আলা সত্তার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো হওয়া অসম্ভব বিস্তারিতভাবে বর্ণনা কর
৫৮। আল্লাহ্ তা‘আলার গুণাবলী আলোচনার সাথে সাথে তার বিপরীত দিকও আলোচনা কর
৫৯। আল্লাহ্ তা‘আলার ক্ষেত্রে বৈধ বিষয়গুলো কি❓
৬০। এর প্রমাণ কি
৬১। আল্লাহ্ তা‘আলার নামগুলো কি কি❓
৬২। রাসূলগণকে প্রেরণ করা আল্লাহ্ তা‘আলার ওপর আবশ্যক কি❓
৬৩। নবী কাকে বলে❓
৬৪। রাসূল কাকে বলে❓
৬৫। সর্বপ্রথম ও সর্বশেষ রাসূল কে❓
৬৬। নবীগণের সংখ্যা কত❓
৬৭। রাসূলগণের সংখ্যা কত❓
৬৮। রাসূলগণের কতেক সংখ্যা সবিস্তারে জানা আবশ্যক❓
৬৯। আমরা অবগত হয়েছি যে, নিশ্চয়ই সমগ্র সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হলেন সাইয়্যেদুনা হযরত মুহাম্মদ আলাইহিস্ সালাতু ওয়াস্সালাম। অতঃপর শ্রেষ্ঠত্বের ধারাবাহিকতায় তাঁর পর কারা❓
৭০। আমরা অবহিত হলাম, অতঃপর রাসূলগণের ক্ষেত্রে কি ধারণা পোষণ করা ওয়াজিব বর্ণনা কর
৭১। সত্যবাদিতা অর্থ কি❓
৭২। তাঁদের (নবী) সত্যবাদিতার ওপর প্রমাণ কি❓
৭৩। আমানত অর্থ কি❓
৭৪। তাঁদের (নবীগণের) আমানতদারীর উপর দলীল কি❓
৭৫। তাবলীগ অর্থ কি❓
৭৬। তাঁদের তাবলীগের ওপর দলীল কি❓
৭৭। বুদ্ধিমত্তা অর্থ কি❓
৭৮। তাঁদের বুদ্ধিমত্তার দলীল কি❓
৭৯। রাসূলগণ (আলাইহিমুস সালাম)’র ক্ষেত্রে কি কি বিষয় অসম্ভব❓
৮০। রাসূলগণের ক্ষেত্রে উপযুক্ত গুণাবলী এবং বৈপরীত্য গুণাবলী বর্ণনা কর
৮১। রাসূলগণ (আলাইহিমুস সালাম)’র জন্য কি কি বৈধ❓
৮২। এর দলীল কি❓
৮৩। ‘আল্লাহ্ ছাড়া কোন ইলাহ নেই’ এর অর্থ কি❓
৮৪। ‘মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ’র অর্থ কি❓
৮৫। নবী মুহাম্মদ (ﷺ)’র জীবন চরিত সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা কর
৮৬। নবী (ﷺ)’র সৃষ্টিগত গুণাবলীর বিবরণ দাও
৮৭। রাসূল (ﷺ)’র কিছু চারিত্রিক গুণাবলীর আমাদের বর্ণনা কর
৮৮। নবী করীম (ﷺ)’র আহার পদ্ধতিঃ
৮৯। হুযূর (ﷺ)’র পানীয় পদ্ধতি বর্ণনা কর।
৯০। নবী করীম (ﷺ)’র পোশাক-পরিচ্ছদঃ
৯১। হুযূর (ﷺ)’র ফাছাহতে লেসান বা ভাষার সুন্দর বাচনভঙ্গী সম্পর্কে সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা কর।
৯২। নবী করীম (ﷺ)’র অলৌকিক ঘটনাবলী সম্পর্কে কিছু আমাদেরকে বর্ণনা কর
৯৩। নবী করীম (ﷺ)’র নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে কিছু আমাদেরকে বর্ণনা কর
৯৪। রাসূলে করীম (ﷺ) ’র স্বভাব সম্পর্কে কিছু আমাদেরকে বর্ণনা কর
৯৫। নবী করীম (ﷺ)’র তাবলীগ বা প্রচার সংক্রান্ত আলোচনা
৯৬। ওহী (ঐশীবাণী) কি❓
৯৭। নবী করীম (ﷺ)’র নাম মোবারক সমূহ কি কি❓
৯৮। সায়্যিদিনা মুহাম্মদ (ﷺ)’র পিতৃকুলের বংশানুক্রম বর্ণনা কর
৯৯। সায়্যিদিনা মুহাম্মদ (ﷺ)’র মাতৃকুলের বংশানুক্রম বর্ণনা কর
১০০। রাসূলে পাক ’র সন্তানের সংখ্যা কত❓
১০১। নবী করীম (ﷺ)’র সহধর্মিনীর সংখ্যা কত জন❓
১০২। রাসূলে করীম (ﷺ)’র চাচাদের সংখ্যা সম্পর্কে বর্ণনা কর
১০৩। নবী করীম (ﷺ)’র ফুফুদের সংখ্যা সম্পর্কে বর্ণনা কর
১০৪। প্রিয় নবী (ﷺ)’র খাদিমের সংখ্যা কত❓
১০৫। নবী করীম (ﷺ)’র মামার সংখ্যা কত❓
১০৬। রাসূলে করীম (ﷺ)’র খালার সংখ্যা কত❓
১০৭। পূর্বোলিখিত আলোচনায় অবহিত হয়েছি, অতএব আসমানী কিতাবের সংখ্যা কত বর্ণনা কর
১০৮। উপরোক্ত আলোচনায় আমরা উহা অনুধাবন করতে পেরেছি, অতএব ফিরিস্তার সংজ্ঞা কি❓
১০৯। ফিরিশতাদের মধ্য হতে কাদের সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত হওয়া ওয়াজিব❓
১১০। কিয়ামত দিবস কি❓ এ সম্পর্কে কি ধরনের ধারণা রাখা আবশ্যক❓
১১১। এরপর কি ঘটবে❓
১১২। পূর্বোলিখিত বিষয়াদি ব্যতীত অত্যাবশ্যকীয় আর কিছু বিষয় আছে কি❓
১১৩। উপরোলিখিত বিষয়াদি সম্পর্কে ঈমান আনয়ন করা কেবলমাত্র মাদ্রাসা ছাত্র ও শিক্ষিত সমাজের ওপর ওয়াজিব❓
১১৪। পূর্ববর্তী বিষয়াদির ওপর আত্ম বিশ্বাস রাখার উপকারিতা কি❓
تـقـدمـه
نحمده ونستعينه
الحمدلله رب العلمين والصلوة والسلام علي سيد الانبياء والمرسلين وعلى آله وصحبه اجمعين .
امّا بعد ! فهذه الرسالة المفيدد الفت على منهج الفقه الاكبر للامام ابى حنيفة النعمان بن ثابت الكوفى رحمة الله عليه وعلى ترتيب واسلوب اكابر المتقدمين والمتأخرين من اهل السنة والجماعة رحمهم الله تعالى عليهم اجمعين . لطلاب الداخل من المدارس العربية الدينية وسميتها ্থ্থعقائد الاسلام‘‘ الملقب بروح الايمان وقواعد حيات الاسلام علي اساس التوحيد والرسالة بعقيدة خالصة نقية تقية فى معرفة صفات الله عزوجل وصفات رسوله الاعظمو وقواعد شرائط الاسلام وامور الدين القيم .
بشكل سوال وجواب .
المؤلف
العبد الحقير محمد عزيز الحق القادري غفرله البارى
من الكتاب المعتبرة المتداولة
نسأل الله ان يغفرلى جميع ذنوبى، ولكل من دعالى بخيرو
آمين بجاه النبى الآمين ﷺ .
ভূমিকা
পরম করুণাময় দয়ালু আল্লাহ’র নামে আরম্ভ করছি
نحمده ونستعينه
সমস্ত প্রশংসা বিশ্ব জগতের প্রতিপালক একমাত্র আল্লাহ তা‘আলারই জন্য। পরিপূর্ণ রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক নবীকুল সম্রাটের ওপর এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কিরামসহ সকলের ওপর। অতঃপর আমি অত্যন্ত উপকারী এ গ্রন্থখানা ইমাম আযম আবু হানিফা নু‘মান বিন সাবিত আল-কুফী (رحمة الله) রচিত ‘আল-ফিকহুল আকবর’-এর রীতি ও বিন্যাসানুসারে এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী শীর্ষ আকাবির ইমামগণের পদাঙ্খানুসরণ করে আরবী দ্বীনি মাদ্রাসাসমূহের দাখিল স্তরের ছাত্রদের জন্য সংকলন করেছি। আমি এর নামকরণ করেছি ‘আকাইদুল ইসলাম’। যার উপনাম রাখা হয়েছে ‘রুহুল ঈমান ওয়া ক্বাওয়াইদু হায়াতিল ইসলাম’। তাওহীদ ও রিসালতের নির্মল পরিচ্ছন্ন ও বিশুদ্ধ আক্বিদার ওপর ভিত্তি করে আল্লাহ জাল্লা শানুহু ও তাঁর মহান রাসূলের গুণাবলির পরিচিতি, ইসলামী শর্তগুলোর মূলনীতি এবং সুদৃঢ় ও মজবুত দ্বীনের বিষয়াদি প্রশ্নোত্তর আকারে উপস্থাপন করার প্রয়াস পেয়েছি।
অত্র কিতাবখানা সর্বজনস্বীকৃত, গ্রহণযোগ্য ও নির্বাচিত কিতাবাদি হতে সংকলিত। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন আমার ও আমার কল্যাণকামীদের সমস্ত গুণাহ ক্ষমা করে দেন।
হে আল্লাহ্! আল আমিন নবী করীম (ﷺ) এর উসিলায় আমার এ দো‘আ কবুল করুন। ,আমিন!
মুহাম্মদ আজিজুল হক আল-কাদেরী
অনুবাদকের কথা
সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ্ তা‘আলার জন্য যিনি বিশ্ব ভূমন্ডলের স্রষ্টা। অসংখ্য দরূদ ও সালাম আল্লাহর প্রিয় হাবীব (ﷺ)-এর প্রতি যিনি সমগ্র সৃষ্টি জগতের প্রতি প্রেরিত হয়েছেন ‘রহমত স্বরূপ’।
বর্তমান যুগে সলফী ও বাতিলপন্থী ওলামারা ইহুদী-নাসারাদের দোসর হিসেবে ইসলামের মৌলিক আক্বীদা সমূহের ওপর বিভিন্নভাবে আঘাত হানছে। যা সরলমনা ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা সহজে বুঝতে পারছে না। তাই যুগশ্রেষ্ঠ আলেমে দ্বীন, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক, গবেষক, ওস্তাজুল ওলামা শাইখুল হাদীস ওয়াত তাফসীর, পেশোয়ায়ে আহলে সুন্নাত, শায়খে তরীকত, মুর্শীদে বরহক হযরতুলহাজ্ব আল্লামা মুহাম্মদ আজিজুল হক আল-কাদেরী (ম.জি.আ.) তাওহীদ ও রিসালতের মৌলিক বিশুদ্ধ আকীদা, আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর প্রিয় হাবীব এর গুণাবলীল পরিচিতি এবং ইসলামের মূলনীতি সমূহের ওপর ‘আকাইদুল ইসলাম’ নামক একখানা গ্রন্থ রচনা করেন। যা সাইয়্যেদুনা ইমাম আযম আবু হানিফা নু‘মান বিন সাবিত আল্-কুফী (رحمة الله) ও ইমামে গায্যালী (رحمة الله) এর রীতি ও পদ্ধতি অনুসরণে এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আকাবির ইমামগণের পদাঙ্কানুসরণে প্রণীত হয়েছে। যা বাতিল পন্থীদের ভ্রান্ত আক্বীদার মুলোৎপাটনের সাথে সাথে হানাফী মাযহাবের তায়িদও করা হয়েছে।
শায়খুল হাদীস আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন বইটির অনুবাদ নিরীক্ষণ কাজে সহযোগিতা এবং মূল্যমান সময় প্রদান করে আমাদের কৃতার্থ করেছেন। সতর্কতা সত্ত্বেও মুদ্রণ প্রমাদ ও অনুবাদ কর্মে কোনো বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হলে তা আমাদের অবহিত করলে পরবর্তী সংস্করণে সংশোধিত হবে। পরিশেষে বইটি পড়ে সর্বসাধারণ উপকৃত হলে নিজেদের ধন্য মনে করবো।
আমিন! ব-হুরমাতে সায়্যিদিল মুরসালীন।
মুহাম্মদ আবদুল অদুদ
উপাধ্যক্ষ : ছিপাতলী জামেয়া গাউছিয়া মূঈনিয়া কামিল (এম.এ) মাদ্রাসা
দ্বীন ইসলামের সাধারণ বিষয়াদি সম্পর্কিত কতিপয় প্রশ্নোত্তর
وَرَضِيْتُ لَكُمُ الْاِسْلَامَ دِيْـنًا (القرآن)
আর আমি তোমাদের জন্যে ইসলামকে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।
بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
পরম করুণাময় দয়ালু আল্লাহ’র নামে আরম্ভ করছি
اِنَّ الدِّيْنَ عِنْدَ اللهِ الْاِسْلَامُ
নিশ্চয় ইসলামই আল্লাহর নিকট একমাত্র গ্রহণযোগ্য দ্বীন।
❏ দ্বীন কাকে বলে❓
দ্বীন হলো আল্লাহ্ প্রদত্ত নিয়ম-নীতি ও বিধান যা স্বীয় নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যেমন, আল্লাহ্ তা‘আলার গুণাবলী, নামায ও যাকাতের পরিচিতি।
❏ উমুরুদ্দ্বীন তথা দ্বীনের অস্তিত্বের নিদর্শনসমূহ কি কি❓
উমুরুদ্দ্বীন তথা দ্বীনের অস্তিত্বের নিদর্শনসমূহ চারটি:
১) বিশুদ্ধ আক্বীদা ২) একনিষ্ঠ নিয়ত ৩) ওয়াদা বা অঙ্গীকার পূরণ করা এবং ৪) নিষেধাজ্ঞা পরিহার করা।
مَاهُوَ الدِّيْـنُ ؟
اَلدِّيْنُ هُوَ مَاشَرَعَهٗ اللهُ عَلٰى لِسَانِ نَبِيِّه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنَ الْاَحْكَامِ. كَمَعْرِفَةِ صَفَاتِ اللهِ تَعَالٰى وَالصَّلٰوةِ، وَالزَّكَاةِ .
مَــاهِـىَ اُمُوْرُ الـدِّيْنِ اَىْ عَلَامَاتُ وَجُوْدِه؟
اُمُوْرُ الدِّيْنِ اَرْبَـعَةٌ : صِحَّةُ العَقْدِ اَىْ اَلْعَقِيْدَةُ وَصِدْقُ الْـقَـصْدِ وَالْوَفَاءُ بِالْعَهْدِ وَاِجْتِنَابُ الحَـدِّ .
❏ আক্বীদার বিশুদ্ধতা অর্থ কি❓
এর অর্থ, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আক্বীদাসমূহে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হওয়া।
❏ একনিষ্ঠ নিয়ত অর্থ কি❓
একনিষ্ঠ নিয়তের অর্থ, বিশুদ্ধ নিয়তে ইবাদত করা এবং একাগ্রতা ও একনিষ্ঠতার সাথে আমল করা।
❏ অঙ্গীকার পূরণ করা অর্থ কি❓
অঙ্গীকার পূরণ করা অর্থ, আল্লাহর আদেশসমূহ পালন করা বা এর প্রতি বশ্যতা ও আনুগত্য প্রকাশ করা।
❏ শাস্তিযোগ্য অপরাধ পরিহার-এর অর্থ কি❓
নিষেধাজ্ঞা অর্জন অর্থ, আল্লাহ্ তা‘আলা যা নিষেধ করেছেন তা বর্জন বা পরিহার করা।
❏ ইসলাম অর্থ কি❓
আল্লাহর পক্ষ থেকে স্বীয় প্রিয় হাবীব হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) যা নিয়ে এসেছেন তা প্রকাশ্যভাবে স্বীকৃতি ও সম্মতি প্রদান করাকে ইসলাম বলে।
مَا مَعْنٰـى صِحَّةِ الْعَقْدِ ؟
مَعْنَاهُ الْجَـزَمُ بِعَقَائِدِ اَهْلِ السُّنَّةِ.
مَا مَعْنٰـى صِدْقِ الْقَـصْدِ ؟
مَعْنَاهُ اَلْعِبَادَةُ بِالنَّيَّةِ وَالْعَمَلُ بِالْاِخْلَاصِ .
مَا مَعْنٰـى الْوَفَاءِ بِالْعَهِدِ ؟
مَعْـنَاهُ اِمْـتِثَالُ مَا أَمَـرَ اللهُ بِـه .
مَا مَعْنٰـى اِجْتِنَابِ الْحَـدِّ ؟
مَعْنَاهُ تَرْكُ مَا نَهَـىٰ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ.
مَاهُـوَ الْاِسْـلَامُ ؟
اَلْاِسْلَامُ هُـوَالتَّسْلِيْمُ الظَّاهِرُ بِمَا جَاءَ مِنْ عِنْدِ اللهِ تَعَالٰى عَلٰى لِسَانِ حَبِيْبِه مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ .
❏ ইসলামের শর্তসমূহ কি কি❓
ইসলামের শর্তসমূহ ছয়টি। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া, বোধশক্তি ও ভালমন্দ উপলব্ধি করার জ্ঞান, ইচ্ছের স্বাধীনতা, সক্ষম ব্যক্তি শাহাদাতাইন মৌখিকভাবে পাঠ করা, উপরোক্ত বিষয়াদিতে ধারাবাহিকতা ও অবিচ্ছিন্নতা বজায় রাখা।
❏ ইসলামের মূল ভিত্তিসমূহ কি কি❓
ইসলামের মূল ভিত্তিসমূহ পাঁচটি। একথা সাক্ষ্য দেয়া আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন মা’বুদ নেই, নিশ্চয় সাইয়্যেদুনা মুহাম্মাদ (ﷺ) আল্লাহর রাসূল, নামায কায়েম করা, যাকাত প্রদান করা, রমযান শরীফের রোযা রাখা ও কা’বা শরীফে যাওয়া-আসায় সক্ষম ব্যক্তি হজ্ব করা।
❏ ঈমান কি❓
নবী করীম (ﷺ) যা কিছু নিয়ে এসেছেন তা বিশ্বাস করার নামই ঈমান।
مَاهِـىَ شُـرُوْطُ الْاِسْـلَامِ ؟
شُـرُوْطُ الْاِسْـلَامِ سِتَّةٌ- . اَلْبُلُوْغُ ، وَالْعَقْلُ، وَالْاِخْتِيَارُ، وَالنُّطْقُ بِالشَّهَادَتَيْنِ لِلْقَادِرِ عَلَيْهِمَا ، وَالتَّرْتِيْبُ وَالْمُوَالَاةُ .
مَاهِـىَ قَـوَاعِدُ الْاِسْلَامِ ؟
قَـوَاعِـدُ الْإِسْلَامِ خَمْسٌ : شَهَادَةُ اَنْ لَّا اِلٰــهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ سَيِّدَنَا مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ وَاِقَامُ الصَّلٰوةِ وَإِيْتَاءُ الزَّكوٰةِ، وَصَوْمُ رَمْضَانَ، وَحِـجُّ الْبَيْتِ لِـمَـنِ اسْتَطَاعَ اِلَيْهِ سَبِيْـلَا .
مَا هُـوَ الْاِيْـمَانُ ؟
الْاِيْمَانُ هُـوَ التَّصْدِيْقُ بِمَا جَآءَ بِـه النَّـبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَـلَّـمَ .
❏ ঈমানের মূল ভিত্তিসমূহ কি কি❓
ঈমানের মূল ভিত্তিসমূহ ছয়টি। আল্লাহ্ তা‘আলা এবং তাঁর ফিরিশতাগণ, তাঁর প্রদত্ত কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ এবং পরকাল ও তাক্বদীরের ভাল-মন্দের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা।
শরীয়তের হুকুম পালনে আনুগত্যকারীদের জন্যে নিম্নে বর্ণিত আবশ্যকীয় আকাইদের বিধানসমূহ সম্পর্কে ওলামায়ে কিরামগণের অভিমত,
১. যে ঈমান ও ইসলাম উভয়ই যথাযথভাবে পালন করে সে পরিপূর্ণ মু’মিন এবং যে উভয়ই বর্জন করে সে কাফির।
২. যে শুধু ইসলাম (আহকাম বাস্তবায়নে) বর্জন করে সে অপরিপূর্ণ মু’মিন।
৩. যে শুধু ঈমান (আক্বীদা-বিশ্বাস) বর্জন করে সে মুনাফিক।
৪. আল্লাহর ওপর ঈমানের অর্থ হলো, আল্লাহ একক হওয়ার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস রাখা, তাঁর সত্তা, গুণাবলী ও কার্যক্রমের কোন উপমা নেই এবং তাঁর প্রভূত্বে একত্ববাদে কোন শরীক নেই।
৫. ফেরেশতাদের ওপর ঈমানের অর্থ হলো, তাঁরা সকলই সম্মানিত, কোন অবস্থাতে
مَاهِـىَ قَـوَاعِـدُ الْاِيْـمَانِ ؟
قَوَاعِـدُ الْاِيْمَانِ سِـتَّـةٌ . وَهِـىَ: اَلْاِيْمَـانُ بِاللهِ تَعَالٰي وَمَـلَائِكَتِـه وَكُتُبِـه وَرُسُـلِـه وَالْيَـوْمِ الْآخِـرِ وَالْقَدْرِ خَـيْـرِه وَشَـرِّه .
قَالَ الْعُلَمَاءُ فِيْمَا يَلْزِمُ الْمُكَلَّفُ مِنَ الْاُمُـوْرِ الْاِعْتِقَادِيَّـةِ الْاٰتِيَـةِ :
১. مَنْ اَتَـىٰ بِالْاِيْمَانِ وَالْاِسْلَامِ جَمِيْعًا فَهُوَ مُـؤْمِنٌ كَامِلٌ وَمَنْ تَـرَكَهُمَا جَمِيْعًا فَهُوَ كَافِـرٌ .
২২২.২ وَمَنْ تَـرَكَ الْاِسْلَامَ وَحَـدَهُ فَـهُوَ مُـؤْمِنٌ نَاقِـصٌ .
৩৩. وَمَـنْ تَـرَكَ الْاِيْـمَانَ وَحَـدَهُ فَهُوَ مُنَافِـقٌ .
৪৪. وَمَعَـنٰـى الْاِيْمَانِ بِاللهِ . اِعْتِقَادُ اَنَّـهُ وَاحِـدٌ لَا نَـظِيْـرَلَـهُ فِـىْ ذَاتِـه وَصَـفَاتِـه وَافَـعَالِـه ، وَلَا شَـرِيْكَ لَـه فِـىْ الْأُلُـوْهِـيَّـةِ .
৫১৫. وَمَـعَـنىٰ الْاِيْمَانِ بِالْـمَلَائِـكَـةِ .
আল্লাহ’র অবাধ্য হয় না, সর্বাবস্থায় আল্লাহ্ তা‘আলার হুকুম যথাযথ পালন করেন এবং তাঁর (আল্লাহর) সংবাদ প্রদানে সততা অবলম্বন করেন।
৬. কিতাব সমূহের ওপর ঈমানের অর্থ হলো, ইহা আল্লাহর চিরস্থায়ী বাণী- যা তাঁর সত্তার সাথে বর্ণ ও স্বর বিহীন বিদ্যমান, এতে সকল বিষয়াদি সত্য। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বিশেষ রাসূলগণের ওপর অস্থায়ী শব্দাবলীর মাধ্যমে অবতীর্ণ করেছেন।
৭. রাসূলগণের ওপর ঈমানের অর্থ হলো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁদেরকে সৃষ্টি জগতের প্রতি প্রেরণ করেছেন এবং তাঁদেরকে সর্বপ্রকারের দোষ-ত্রুটি থেকে পুতঃপবিত্র করেছেন। অতএব তাঁরা নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বাপর নিষ্পাপ ও নিষ্কলুষ।
৮. পরকালের ওপর ঈমানের অর্থ হলো, মৃত থেকে কিয়ামত সংঘটিত হওয়া পর্যন্ত সময়ের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করা এবং এতে সংঘটিত বিষয়াদি যেমন মুনকার-নকীর ফেরেশতাদ্বয়ের প্রশ্ন, কবরের নিয়ামত ও আযাব(শাস্তি), পুনরুজ্জীবন, পরিণাম, প্রতিদান, হিসাব-নিকাশ, মিজান, পুলসিরাত, স্বর্গ-নরক সকল বিষয়ের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা।
৯. কদরের ওপর ঈমান রাখার অর্থ হলো, আদি দিবসে নির্ধারিত বিষয়াদি অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে এবং অনির্ধারিত বিষয়াদি কখনো অস্তিত্ব লাভে সক্ষম নয়। আল্লাহ্ তা‘আলা ভাল-মন্দ উভয়ই জগত সৃষ্টির পূর্বে নির্ধারিত ও সিদ্ধান্ত মোতাবেক সৃষ্টি করেছেন। আর সমগ্র জগত তাঁর (আল্লাহর) নির্ধারিত সিদ্ধান্ত ও ফয়সালা মোতাবেক অবস্থিত।
আল্লাহ সম্পর্কিত আকিদা
❏ শারে’ (عليه السلام) তথা আইন প্রণেতা কর্তৃক সর্বপ্রথম কোন বস্তুটি ফরয করা হয়েছে❓
শারে’ (عليه السلام) সর্বপ্রথম মহান স্রষ্টা আল্লাহ্ তা‘আলার পরিচিতি ফরয করেছেন। যিনি সমগ্র সৃষ্টি জগতের স্রষ্টা।
❏ মহান স্রষ্টা আল্লাহ তা‘আলা সমগ্র সৃষ্টি জগতের স্রষ্টা এর প্রমাণ কি❓
আল্লাহ্ তা‘আলা যে সমগ্র সৃষ্টি জগতের স্রষ্টা এর প্রমাণ হলো নিশ্চয়ই পৃথিবী সৃজিত। প্রত্যেক সৃষ্টির জন্য অবশ্যই স্রষ্টা আবশ্যক। এর দলীল! নিশ্চয় ‘আলম বা জগত (আল্লাহ্ ছাড়া সব কিছু) সৃষ্টি। প্রত্যেক সৃষ্টির জন্যে একজন স্রষ্টা আবশ্যক। সম্মানিত রাসূলগণ আমাদেরকে এ মর্মে নির্দেশনা দিয়েছেন যে, সমগ্র সৃষ্টি জগতের স্রষ্টা প্রজ্ঞাময় মহান আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা।
❏ মহান সত্তা আল্লাহ’র পরিচয় লাভ করা আমাদের পক্ষে কি সম্ভব❓
আল্লাহ্ তা‘আলার পরিচয় লাভ করা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো পক্ষে সম্ভব নয়। প্রত্যেকটি খেয়াল বা ধারণা যা তোমার অন্তরে জাগ্রত হয়, পক্ষান্তরে আল্লাহ্ তা‘আলা তার সম্পূর্ণ বিপরীত।
❏ আল্লাহ্ তা‘আলার ক্ষেত্রে বান্দার ওপর কি কি ওয়াজিব❓ সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা কর।
সংক্ষিপ্তভাবে আল্লাহ্ তা‘আলার ক্ষেত্রে বান্দার ওপর ওয়াজিব হলো, তিনি সকল পরিপূর্ণ গুণে গুণান্বিত।
❏ আল্লাহ্ তা‘আলার ক্ষেত্রে বান্দার ওপর কি কি ওয়াজিব❓বিস্তারিতভাবে বর্ণনা কর।
আল্লাহর বিশটি গুণাবলীর যা জানা ওয়াজিব
আল্লাহ্ তা‘আলার ক্ষেত্রে বিস্তারিতভাবে বিশটি সিফাত বা গুণাবলীর ধারণা রাখা ওয়াজিব।
اِعْتِقَادُ اَنَّهُمْ مُكْرَمُوْنَ لَا يَعْصُوْنَ اللهَ مَا اَمَرَهُمْ وَيَـفْعَلُوْنَ مَا يُؤْمَرُوْنَ، صَادِقُـوْنَ فِيْمَا اَخْبَرُوْابِه
৬. وَمَعَـنٰـى الْاِيْمَانِ بِالْكُتُبِ . اِعْتِقَادُ اَنَّهَا كَلَامُ اللهِ الْاَزَلِـىُّ الْقَائِمُ بِذَاتِـه المُنَـزَّهُ عِنِ الْحُرُوْفِ وَالْاَصْوَاتِ، وَاَنَّ كُلُّ مَا تَضَمَّنَتْهُ حَقٌ، وَاَنَّ اللهَ تَعَالٰى اَنْـزَلَهَا عَلٰى بَعْضِ رُسُلِـه بِالْفَاظٍ حَادِثَـةٍ .
৭. وَمَعَـنٰـى الْاِيْمَانِ بِالرُّسُلِ . اِعْتِقَادُ اَنَّ اللهَ اَرْسَلَهُمْ اِلٰى الْخَلْقِ وَنَزَّهَهُمْ عَنْ كُلِّ عَيْبٍ وَنُقْصٍ، فَهُمْ مَعْصُوْمُوْنَ قَبْلَ النُّبُوَّةِ وَبَعْدَهَا .
৮. وَمَعَـنٰـى الْاِيْمَانِ بِالْيَوْمِ الْاٰخِرِ. وَهُوَ مِنَ الْمَوْتِ اِلٰى اٰخِرِ مَايَقَعُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ اِعْتِقَادُ وَجُوْدِه وَاِعْتِقَادُ مَا اشْتَمَلَ عَلَيْهِ مِنْ سُوَالِ الْمَلَكَيْنِ وَنَعِيْمِ الْقَبْرِ اَوْ عَذَابِـه، وَالْبَعْثِ وَالْجَزَاءِ وَالْحِسَابِ وَالْمِيْزَانِ وَالْصِّرَاطِ وَالْجَنَّةِ وَالنَّارِ.
৯. وَمَعَـنٰـى الْاِيْمَانِ بِالْقَدْرِ. اِعْتِقَادُ اَنَّ مَا قَدَّرَهُ فِىْ الْاَزَلِ لَابُدَّ مِنْ وُقُـوْعِـه وَمَا لَمْ يُقَدِّرُهُ يَسْتَحِيْلُ وُقُوْعُهُ وَاِعْتِقَادُ اَنَّ اللهَ قَدَّرَ الْخَيْرَ وَالشَرَّ قَبْلَ خَلَقِ الْخَلْقِ، وَاَنَّ جَـمِيْعَ الْكَائِنَاتِ بِقَضَائِـه وَقَـدْرِه .
مَاهُوَ اَوَّلُ شَيْـئٍ اَوْ جَبَهُ الشَّـارِعُ ؟
اَوَّلُ شَـيْـئٍ اَوْجَـبَهُ الـشَّارِعُ ، مَـعْرِفَةُ اللهِ الْمُوْجِـدِ لِـجَمِيْـعِ الْمَـخْـلُوْقَاتِ.
مَا الدَّلِيْلُ عَـلٰى اَنَّ اللهَ تَعَالٰى أَوْجَـدَ جَمِيْعَ الْمَخْلُوْقَاتِ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ أَنَّ الْعَالَـمَ مَصْنُـوْعٌ، وَكُلُّ صَـنْـعَـةٍ لَابُـدَّ لَهَا مِـنْ صَـانِــعٍ ، وَالَّـذِيْـنَ دَلُّــوْنَا عَـلٰـى أَنَّ
الصَّـانِعَ الْحَكِيْمَ هُوَ اللهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالٰى، هُـمُ الـرُّسُـلُ الْـكِـرَامُ عَلَيْهِمُ الصَّـلوٰةُ وَالسَّـلَامُ .
هَلْ يُمْـكِـنُ لَـنَا مَعْرِفَـةُ ذَاتِ اللهِ تَـعَالٰـى ؟
لَا يَـعْرِفُ اللهَ اِلَّا اللهُ، وَكُلُّ مَاخَـطَـرَبِـبَـالِكَ فَاللهُ بِـخِلَافِ ذٰلِكَ .
مَاهُوَ الْوَاجِبُ فِـىْ حَقِّ اللهِ تَعَالٰـى اِجْمَالًا ؟
اَلْوَاجِبُ فِـىْ حَـقِّ اللهِ اِجْـمَالًا هُـوَ إِتِّـصَافُـهُ بِـكُلِّ كَـمَالٍ .
مَاهُوَ الْوَاجِبُ فِـىْ حَـقِّ اللهِ تَعَالٰـى تَفْـصِـيْلًا ؟
اَلْـوَاجِبُ فِـىْ حَـقِّ اللهِ تَـعَـالٰـى تَفْصِيْـلًا عِشْرُوْنَ صِـفَـةً وَهِـىَ: الْوَجُوْدُ وَالْقِدَمُ وَالْبَقَاءُ وَمُخَالِفَـتُـهُ
তা হলো, অস্তিত্ব, স্থায়িত্ব (যার শুরু নেই), চিরস্থায়ী (যার শেষ নেই), আর আল্লাহ’র বিপরীতই নশ্বর। তিনি স্বয়ং নিজেই বিদ্যমান (কারো কর্তৃক নয়)। একত্ব, শক্তি, ইচ্ছা, জ্ঞান, জীবন, শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, বাকশক্তি সম্পন্ন তিনি একক ক্ষমতাবান, ইচ্ছাপোষণ কারী, মহাজ্ঞানী, চিরঞ্জীব, সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা ও বক্তা।
তিনি তাঁর সত্তাগত ও কর্মে এত সুন্দর গুণাবলীর অধিকারী যা সম্পর্কে সাধারণত কেউ অবগত নন কিন্তু আল্লাহ্ তা‘আলা যাঁদেরকে অনুভূতি শক্তি দান করেছেন তারাই প্রত্যক্ষ করেন। নিশ্চয় তিনি তাঁর সত্তাতে একক, তার কোন শরীক নেই। উপমা বিহীন একক, অমুখাপেক্ষী তার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তিনি নজিরবিহীন একক সত্তাবান, তিনি একক চিরস্থায়ী যার কোন শুরু নেই। তিনি সর্বদা বিদ্যমান যার কোন শুরু নেই। তিনি সর্বত্র বিদ্যমান যার কোন শেষ নেই। তিনি চিরস্থায়ী যার কোন ইতি নেই। তিনি বিচ্ছিন্নহীন অবিনশ্বর সত্তা, তিনি অতিক্রান্তহীন চিরস্থায়ী যা শেষ হয়নি এবং হবেও না। তিনি মহান গুণাবলীর গুণে গুণান্বিত, যার ওপর কোন বিচারকের বিচারাধিকার নেই। দূরত্ব ও জীবন শেষ হওয়ার কারণে শেষ হবে না বরং তিনিই প্রথম তিনিই শেষ, তিনিই প্রকৃত প্রকাশ্য, তিনিই গোপন। তিনি সর্ব বিষয়ে পরিজ্ঞাত।
তিনিই পূত:পবিত্র সত্তা যিনি সকল ত্রুটি-বিচ্যুতি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ ও ভয়-ভীতি থেকে পবিত্র। তাঁকে তন্দ্রা-নিদ্রা স্পর্শ করে না। তিনিই মহান, তিনিই বড়। তিনি কোন কল্পিত শরীরও নন, সীমিত-পরিমিত উপাদানও (স্বীয় অস্তিত্বে কারো মুখাপেক্ষী নন) তাঁকে কোন শরীর বা বস্তুর উপমা নির্ধারণ করা যায় না। বিভক্তিকরণের যোগ্যতায়ও তুলনা করা যায় না। তিনি উপাদানও নন এবং কোন ধরণের উপাদানও তাঁর মধ্যে অবস্থান করে না। আবার তিনি আরয (বস্তু)ও নন (যা স্বীয় অস্তিত্ব বিকাশে অপরের মুখাপেক্ষী হয়) এবং ঐ মুখাপেক্ষী বস্তু তাঁর মধ্যে অবস্থানও করে না। বরং তিনি কোন সৃষ্টির তুল্য নন এবং কোন সৃষ্টিও তাঁর তুল্য নয়।
তাঁর কোন উপমা নেই এবং তিনিও কোন বস্তুর ন্যায় নন। কোন পরিমাপ তাঁর পরিমাণ বর্ণনা করতে সক্ষম নয়। কোন স্থান তাঁকে ধারণ করতে অপারগ। কোন দিকই তাকে বেষ্টন করতে পারে না। এমনকি পৃথিবী ও আকাশ সমূহও তাঁকে বেষ্ট করতে পারে না।
তিনি আরশের ওপর স্থির আছেন; মানে তিনি যা বলেছেন এবং এ অর্থে, স্থির থেকে তিনি যা উদ্দেশ্য করেছেন। তিনি স্পর্শ করা, স্থির হওয়া, কোন স্থান অধিকার করে অবস্থান করা, কোন মহলে প্রবেশ করা বা বের হওয়া থেকে পবিত্র। আরশ তাঁকে বহন করতে পারে না। বরং আরশ ও আরশ বহনকারী ফিরিশতারা তাঁর কুদরতের মেহেরবানীতে বহনকৃত এবং তাঁর ক্ষমতার অধীনে। তিনি আরশ ও আসমান এমনকি প্রত্যেক কিছুরই ঊর্ধ্বে এবং সর্বনিম্নে পর্যন্ত ব্যাপৃত। এমনভাবে ওপরে যা আরশ ও আসমানের প্রতি নিকটবর্তীও নয়, অনুরূপভাবে জমিন ও তাহ্তাচ্ছরা থেকে দূরবর্তীও নয়। বরং তিনি আরশ ও আসমান থেকে অনেক অনেক ঊর্ধ্বে। এতদসত্ত্বেও তিনি প্রত্যেক বস্তুর অতি নিকটে ও প্রত্যেক বান্দার ঘাড়ের রগের চেয়েও অতি নিকটে এবং প্রত্যেক বস্তু প্রত্যক্ষ করেন।
কোন স্থান তাঁর অবস্থানের সংকুলান যোগ্য হওয়া থেকে তিনি অনেক ঊর্ধ্বে। অনুরূপভাবে কোন কাল তাঁর সীমা নির্ধারণ করা থেকেও তিনি পবিত্র বরং তিনি কাল ও স্থান সৃষ্টির পূর্বে ছিলেন। তিনি যে অবস্থায় আছেন, পূর্বেও সে অবস্থায় ছিলেন। তিনি গুণাবলীর দিক দিয়ে নিজ সৃষ্টি থেকে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র্য। তাঁর সত্তায় তিনি ছাড়া আর কেউ নেই এবং তিনি ছাড়া অন্যতে তাঁর সত্তা নেই। তিনি স্থানান্তর, পরিবর্তন ও পরিবর্ধন থেকে সম্পূর্ণ পূত:পবিত্র।
❏ অজুদ বা অস্তিত্ব অর্থ কি❓
অজুদ অর্থ, নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলার জাত বা সত্তা বিদ্যমান।
❏ আল্লাহ্ তা‘আলার অস্তিত্ব বিদ্যমানের দলীল কি❓
এ সৃষ্টিকুলের অস্তিত্ব বিদ্যমানই এর দলীল। কেননা তিনি যদি বিদ্যমান না হতেন তাহলে অবশ্যই বিলুপ্ত হত। তিনি অস্তিত্বহীন হলে এ সৃষ্টিকুলের কোন কিছুই বিদ্যমান হত না। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, ‘অথচ আল্লাহ্ তোমাদেরকে এবং তোমাদের কর্মসমূহকে সৃষ্টি করেছেন।’৩
➖➖➖➖➖➖➖
৩. আল-কুরআন, সূরা সাফ্ফাত, আয়াত: ৯৬
تَعَالٰـى اَلْـحَوَادِثِ وَقِيَامُهُ تَعَالٰـى بِنَفْسِـه، وَالْوَحْـدَانِيَّةُ وَالْقُدْرَةُ وَالْإِرَادَةُ وَالْعِلْمُ وَالْحَيَاةُ وَالسَّـمْعُ وَالْبَصْرُ وَالْكَـلَامُ، وَكَـوْنُهُ تَعَالٰـى قَادِرًا وَمُـرِيْـدًا وَعَالِـمًا وَحَـيًّـا وَسَمِيْعًا وَبَصِيْـرًا وَمُتَكَلِّمًا، وَكَـوْنُهُ فِـىْ ذَاتِـه وَاَفْعَالِـه بِـمَحَاسِنِ اَوْصَافِـه اَلَّتِـىْ لَايُدْرِ كُهَا اِلَّا مَنْ اَلْقٰى السَّمْعَ وَهُوَ شَهِيْدٌ .
اِنَّـه فِـىْ ذَاتِـه وَاحِدٌ لَاشَرِيْكَ لَهُ، فَـرْدٌ لَا مِثْلَ لَـهُ، صَـمَدٌ لَا ضِـدَّلَهُ، مُنْـفَرِدٌ لَا نِدَّ لَهُ وَاِنَّـهُ وَاحِدٌ قَدِيْمٌ لَا اَوَّلَ لَهُ، اَزْلِـىٌّ لَا بِدَايَةَ لَهُ، مُسْتَمِرُّ الْوَجُوْدِ لَا أٰخِرَلَهُ، أَبَدِىٌّ لَانِهَايَةَ لَهُ، قَيُّوْمٌ لَا اِنْقِطَاعَ لَهُ، دَائِمٌ لَا اِنْصَرَامَ لَـهُ لَمْ يَـزَلْ وَلَايُـزَالُ، مَـوْصُـوْفًا بِنُعُوْتِ الْـجَـلَالِ لَايُـقْضٰى عَلَيْـهِ بِالْاِنْقِضَاءِ وَالْاِنْـفِصَالِ بِـتَصَرُّمِ الإِبَـادِ وَاِنْـقَـرَاضِ الْاٰجَـالِ بَــلْ هُوَالْاَوَّلُ وَالْاٰخِـرُ وَالـظَّــاهِـرُ الْـحَقِيْقِـىُّ وَالْبَاطِـنُ وَهُـوَ بِـكُلِّ شَيْـئٍ عَـلِيْمٌ .
وَاِنَّـهُ سُبْـحَانَهُ وَتَعَالٰـى اَلْمُنَـزَّهُ مِنْ كُلِّ عَيْـبٍ وَنَـقْضٍ وَكِـذْبٍ وَخَـلْفِ الْـوَعْـدِ وَالْـوَعِيْـدِ وَلَا تَأْخُذُهُ سِـنَةٌ وَلَا نَـوْمٌ وَاِنَّـهُ تَـعَالٰى عُـلُـوًّا كَـبِيْـرًا، وَاِنَّـهُ لَيْـسَ بِـجِسْمِ مُصَوَّرٍ وَلَا جَوْهَرٍ مَحْدُوْدٍ مُقَدَّرٍ، وَاِنَّـهُ لَا يُـمَـاثِـلُ الْاَجْـسَامَ فِـىْ التَّـقْدِيْـرِ وَلَا فِـىْ قَبُوْلِ الْاِنْقِـسَامِ وَاِنَّـهُ لَيْـسَ بِـجَـوْهَـرٍ وَلَا تَـحَلُّـهُ الْـجَوَاهِرُ وَلَا بِعَرْضٍ وَلَا تَـحُـلُّهُ الْاَعْـرَاضُ بَـلْ لَّا يُـمَاثِلُ مَوْجُـوْدًا وَلَا يُـمَاثِلُهُ مَـوْجُوْدٌ .
لَيْسَ كَمِثْلِـه شَيْـئٌ وَلَا هُوَ مِثْلَ شَيْـئٍ وَاِنَّـهُ لَا يَـحُدُّهُ الْمِقْدَارُ وَلَا تَحْوِيْـهِ الْاَقْطَارُ وَلَا تُحِيْطُ بِـه الْجِهَاتُ وَلَا تَكْتَنِفُهُ الْاَرْضُوْنَ وَلَا السَّمٰوَاتُ وَاِنَّـهُ مُسْتَوٍ عَلٰـى الْعَرْشِ عَلٰـى الْوَجْهِ الَّذِىْ قَالَهُ وَبِالْمَعْنٰى الَّذِىْ اَرَادَهُ اِسْتَـوَاءً مُـنَـزَّهًا عَـنِ الْمُمَاسَّـةِ وَالْاِسْتَقْرَارِ وَالتَّمَكُّـنِ وَالْـحُلُوْلِ وَالْاِنْتِقَالِ، لَا يَحْمِلُهُ الْعَرْشُ بَـلِ الْعَرْشُ وَحَمَلَتُهُ مَحْمُوْلُوْنَ بِلُطْفِ قُدْرَتِـه. وَمَقْهُوْرُوْنَ فِىْ قَبْضَتِه وَهُوَ فَوْقَ الْعَرْشِ وَالسَّمَاءِ وَفَوْقَ كُلِّ شَيْئٍ
اِلٰـى تُخُوْمِ الثَّـرٰى. فَوْقِيَّةً لَا تُزِيْدُهُ قُرْبًا اِلٰى الْعَرْشِ وَالسَّمَاءِ كَمَا لَاتُزِيْدُهُ بُعْدًا عَنِ الْاَرْضِ وَالثَّرٰى بَلْ هُـوَ رَفِـيْعُ الـدَّرَجَاتِ عَنِ الْعَـرْشِ وَالسَّمَاءِ وَهُوَ مَعَ ذٰلِكَ قَـرِيْـبٌ مِنْ كُلِّ مَـوْجُوْدٍ وَهُوَ اَقْرَبُ اِلَى الْعَبْدِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيْدِ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَـيْئٍ شَـهِـيْدٌ .
وَاِنَّهُ تَعَالٰى عَنْ اَنْ يَّحْوِيَهُ مَكَانٌ كَمَا تَقَدَّسَ عَنْ اَنْ يَّحُدَّهُ زَمَانٌ بَلْ كَانَ قَبْلَ اَنْ خَلَقَ الزَّمَانَ وَالْمَكَانَ وَهُوَ الْاٰنَ عَلٰـى مَا عَلَيْهِ كَانَ وَاِنَّهُ بَائِـنٌ مِنْ خَلْقِـه بِصِفَاتِه لَيْسَ فِـىْ ذَاتِـه سِـوَاهُ وَلَا فِـىْ سِوَاهُ ذَاتُـهُ وَاِنَّـهُ مُقَدَّسٌ وَمُـنَـزَّهٌ عَـنِ التَّغَـيُّرِ وَالْاِنْتِقَالِ .
مَا مَـعْـنَـى الْـوَجُـوْدِ ؟
مَعْنَى الْوَجُوْدِ اَنَّ ذَاتَ اللهِ تَـعَـالٰـى مَـوْجُـوْدَةٌ .
مَا لدَّلِيْلُ عَلٰـى وَجُـوْدِ اللهِ تَـعَالٰـى؟
اَلـدَّلِيْلُ عَـلٰـى ذٰلِـكَ وَجُـوْدُ هٰـذِهِ الْـمَخْلُـوْقَـاتِ لِاَنَّـهُ لَـوْلَمْ يَـكُـنْ مَـوْجُـوْدًا لَـكَـانَا مَـعْدُوْمًا وَلَـوْ كَانَ مَـعْـدُوْمًا لَـمْ يُـوْجَـدْ شَـيْـئٌ مِـنْ هٰذِهِ الْـمَخْلُوْقَاتِ . قَالَ سُـبْـحَانَـه وَتَـعَـا لٰـى وَاللهُ خَـلَـقَـكُمْ وَمَا تَعْمَلُوْنَ .
তিনি আরো বলেন, ‘আল্লাহ’র অস্তিত্বের ব্যাপারে কি কোন সন্দেহ আছে?’ ৪
অথচ তিনি তা থেকে অনেক ঊর্ধ্বে।
❏ স্থায়িত্ব অর্থ কি❓
স্থায়িত্ব অর্থ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলার অস্তিত্বের কোন শুরু নেই।
❏ আল্লাহ্ তা‘আলার স্থায়িত্বের প্রমাণ কি❓
এ সৃষ্টিকুলের অস্তিত্ব বিদ্যমানই এর প্রমাণ। কেননা তিনি অবিনশ্বর না হলে অবশ্যই নশ্বর হবেন। যদি নশ্বর হন এ সৃষ্টিকুলের কোন কিছুরই অবস্থান কল্পনাও করা যায় না। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, ‘তিনিই প্রথম’।৫
➖➖➖➖➖➖➖
৪. আল-কুরআন, সূরা ইব্রাহীম, আয়াত: ১০
৫. আল-কুরআন, সূরা হাদীদ, আয়াত: ৩
❏ চিরঞ্জীব অর্থ কি❓
বাকা অর্থ, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলার অস্তিত্বে কোন সমাপ্তি নেই।
وَقَالَ تَـعَـالٰـى أَفِـىْ اللهِ شَـكٌّ ؟ تَعَـالٰـى اللهُ عَـنْ ذٰلِـكَ عُـلُـوًّا كَـبِيْـرًا .
مَا مَـعْـنَـى الْـقِـدَمِ ؟
مَـعْـنَـى الْـقِـدَمِ اَنَّ اللهَ سُـبْـحَانَـهُ وَتَـعَالٰـى لَا اَوَّلَ لِـوَجُـوْدِه .
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰـى قِدَمِ اللهِ تَعَـالٰـى؟
اَلدَّلِيْلُ عَـلٰـى ذٰلِـكَ وَجُـوْدُ هٰـذِهِ الْـمَـخْلُوْقَاتِ لِاَنَّـهُ لَـوْلَمْ يَـكُنْ قَـدِيْمًا لَـكَانَ حَـادِثًا . لَـوْ كَانَ حَادِثًا، لَـمْ يُـوْجَدْ شَيْـئٌ مِـنْ هٰـذِهِ الْـمَخْلُوْقَاتِ ، قَالَ اللهُ تَـعَالٰـى: هُوَالْاَوَّلُ .
مَا مَـعْـنَـى الْـبَقَاءِ ؟
مَـعْـنَـى الْـبَقَاءِ اَنَّ اللهَ تَـعَالٰـى لَا آخِـرَ لِـوَجُـوْدِه .
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰـى بَـقَاءِ اللهِ تَعَالٰى؟
اَلدَّلِيْلُ عَـلٰـى ذٰلِـكَ وَجَـوْدُ هٰـذِهِ
❏ আল্লাহ্ তা‘আলা চিরঞ্জীব হওয়ার দলীল কি❓
এর দলীল এ সৃষ্টিকুলের অস্তিত্ব। কেননা তিনি চিরঞ্জীব না হলে অবশ্যই ধ্বংস ও নশ্বর হবেন। যদি নশ্বর হন এ সৃষ্টিকুলের কোন কিছুরুই অস্তিত্ব হত না।
❏ আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, ‘তিনিই প্রথম, তিনিই শেষ।’৬
❏ তিনি আরো বলেন, ‘এবং চিরস্থায়ী হচ্ছেন আপনার মহামহিম প্রতিপালকের সত্তা।’৭
➖➖➖➖➖➖➖
৬. আল-কুরআন, সূরা হাদীদ, আয়াত: ৩
৭. আল-কুরআন, সূরা আর রাহমান, আয়াত: ২৭
তাঁর সত্তা সৃষ্টির অন্য বস্তুর ন্যায় নয়।
বস্তু অর্থ, যার অস্তিত্ব শরীর ও উপাদান বিহীন এবং পর নির্ভরশীল বিহীন অস্তিত্ব বিদ্যমান। جــســم (শরীর) جـوهر (যার অস্তিত্ব অন্যের মাধ্যমে নয়) ও عرض (যার অস্তিত্ব অন্যের ওপর নির্ভরশীল) ব্যতীত বিদ্যমান। তাঁর কোন সীমারেখা, প্রতিপক্ষ, বিপরীত এবং সমকক্ষও নেই। তিনি কোন বিশেষ স্থানে অবস্থান করেন না এবং কালের হিসেবও তাঁর ওপর চলে না। তাঁর হাত, মুখ ও সত্তা আছে যেভাবে আল্লাহ্ তা‘আলা পবিত্র কোরআনে উলেখ করেছেন। কোন ধরণের রূপরেখা বিহীন তাঁর এ গুণাবলী।
الْـمَخْلُوْقَاتِ . لِاَنَّهُ لَوْلَمْ يَـكُـنْ بَاقِيًّا لَكَانَ فَانِيًا وَلَوْ كَانَ فَانِيًا لَمْ يُوْجَدْ شَيْئٌ مِنْ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ . قَالَ سُبْحَانَـهُ وَتَعَالٰى هُوَ الْاَوَّلُ وَالْاٰخِـرُ وَقَالَ تَعَالٰى : وَيَبْقٰـى وَجْهُ رَبِّكَ اَىْ ذَاتُـهُ .
هُـوَ شَيْـئٌ لَا كَالْاَشْـيَاءِ ؟
وَهُوَ شَيْـئٌ لَا كَالْاَشْيَاءِ وَمَعْـنَـى الشَّيْئٍ اِثْبَاتُهُ بِلَا جِسْمٍ وَجَوْهَرٍ وَلَا عَـرْضٍ وَلَا حَـدَّ لَهُ وَلَا ضِدَّلَـهُ وَلَا نِدَّلَهُ وَلَا مِثْلَ لَهُ وَلَا يَـتَمَكَّـنُ فِـىْ مَـكَانٍ وَلَا يَـجْرِىْ عَلَيْهِ زَمَـاَنٌ وَلَهُ يَـدٌ وَوَجْـهٌ وَنَفْسٌ كَـمَـا ذَكَــرَهُ للهُ تَعَـالٰـى فِـىْ الْـقُـرْآنِ فَـهِـىَ صِـفَاتٌ بِـلَا كَـيْـفٍ، وَلَا يُـقَـالُ اَنَّ يَـــدَهُ قُـــدْرَتَـهُ اَوْ نِــعْـمَـــتَـهُ، لِاَنَّ فِـيْـهِ
একথা বলা যাবে না তাঁর হাত মানে শক্তি বা নি‘য়ামত। কেননা এতে তাঁর গুণাবলী বাতিল হয়ে যাবে। ইহা ক্বদরিয়া ও মু’তাজিলাদের অভিমত। কিন্তু তাঁর হাত মানে হল রূপরেখাবিহীন গুণ। তাঁর ক্রোধ ও সন্তুষ্টিও রূপরেখা বিহীন দু’টি গুণ। কোরআন কালামে নফসী হিসেবে সৃষ্ট নয়, তবে উহার নির্দেশনা মতে আমাদের কর্মসমূহ সৃষ্ট। অনুরূপভাবে ঈমানও সৃষ্ট নয়, এতে আমাদের আমলসমূহ সৃষ্ট।
❏ আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তা অপরিবর্তনীয় অর্থ কি❓
আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তা অপরিবর্তনীয় ও অবিনশ্বর হওয়ার অর্থ- নিশ্চয় সত্তায়, গুণাবলীতে ও কর্মে কেউ তাঁর সাদৃশ্য নয়।
اِبْـطَـالَ الصِّفَةِ وَهُوَ قَوْلُ اَهْلِ الْقَدْرِ، وَالْاِعْتِزَالِ، وَلٰكِنْ يَدُهُ صُـفَـةٌ بِلَا كَيْفٍ، وَغَـضَبُـهُ وَرِضَاهُ صِـفَـتَانِ بِلَا كَيْفِ، وَالْقُرْآنُ غَـيْـرُ مَخْـلُـوْقِ، اَىْ كَـلَامُ نَفْسِـىٌّ وَفِـعْلُـنَـا بِهِ مَخْـلُـوْقٌ وَكَذَا الْاِيْـمَانُ غَيْرُ مَخْلُوْقٍ وَفِعْلُنَا بِه مَخْلُوْقٌ .
مَا مَعْنٰـى مُخَالَفَتِه تَعَالٰى لِلْحَوَادِثِ؟
مَعْنٰى مُخَالَفَتِه تَعَالٰى لِلْحَوَادِثِ اَنَّ اللهَ لَيْسَ مَمَاثِـلًا لَهَا فِـىْ ذَاتِـه وَلَا فِـىْ صِفَاتِـه، وَلَا فِـىْ اَفْعَالِـه .
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰى مُخَالَفَتِه تَعَالٰى لِلْحَوَادِثِ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ وُجُوْدُ هٰذِه الْمَخْلُوْقَـاتِ لِاَنَّـهُ لَـوْ لَمْ يَـكُـنْ مُـخَالِـفًا لِلْـحَوَادِثِ لَـكَانَ مَـمَاثِـلًا لَهُمْ وَلَـوْ كَـانَ مَـمَاثِلًا لَـهُمْ لَـمْ
❏ আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তা অপরিবর্তনীয় এর প্রমাণ কি❓
এর দলীল এ সৃষ্টি জগতের অস্তিত্ব। কেননা তিনি অবিনশ্বর ও অপরিবর্তনীয় না হলে, অবশ্যই তাদের মুমাছিল বা সাদৃশ্য হতেন।যদি তাদের সাদৃশ্য হন তাহলে বিদ্যমান সৃষ্টি জগতের কোন কিছুই অস্তিত্ব লাভে সক্ষম হত না। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন- ‘তাঁর সাদৃশ্য কোন বস্তুই নেই।’৮
❏ আল্লাহ্ তা‘আলা স্বয়ং বিদ্যমান হওয়ার অর্থ কি❓
আল্লাহ্ তা‘আলা স্বয়ং বিদ্যমান বলতে তিনি অবস্থান করার জন্যে নির্দিষ্ট কোন স্থানের মুখাপেক্ষী নহেন। তিনি এমন বিশেষণও নহেন যা বিশেষিতের প্রতি মুখাপেক্ষী হয় এবং তিনি তাঁর অস্তিত্বের ব্যাপারে কোন সৃষ্টির মুখাপেক্ষীও নহেন।
❏ আল্লাহ্ তা‘আলা স্বয়ং বিদ্যমান হওয়ার প্রমাণ কি❓
সৃষ্টি জগতের অস্তিত্বই হচ্ছে আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং বিদ্যমান হওয়ার দলীল। কেননা তিনি স্বয়ং বিদ্যমান না হলে অবশ্যই মুখাপেক্ষী হতেন। মুখাপেক্ষী হলেই বিদ্যমান সৃষ্টি জগতের কোন কিছুই অস্তিত্ব লাভে সক্ষম হত না। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন- ‘আল্লাহ্ এমন সত্তা যিনি ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমান।’৯
➖➖➖➖➖➖➖
৮. আল-কুরআন, সূরা শূরা, আয়াত: ১১
৯. আল-কুরআন, সূরা বাক্বারা, আয়াত: ২৫৫
يُوْجَـدْ شَـيْئٌ مِنْ هٰذِهِ الْـمَخْلُوْقَاتِ وَقَالَ تَعَالٰى : لَيْسَ كَمِثْلِـه شَيْئٌ .
مَا مَعْنٰى قِيَامِه تَعَالٰى بِنَفْسِـه ؟
مَعْنٰى قِيَامِه تَعَالٰى بِنَفْسِه اَنَّهُ لَيْسَ مُحْتَاجًا اِلٰى مَحَلٍّ يَقُوْمُ بِـه أَىْ لَيْسَ صِفَةً وَلَيْسَ مُحْتَاجًا اِلٰى مُوْجِدٍ يُـوْجِـدُهُ .
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰى قِيَامِه تَعَالٰـى بِنَفْسِه ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ وَجُوْدُ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ، لِاَنَّهُ لَوْلَمْ يَكُنْ قَائِمًا بِنَفْسِه لَكَانَ مُحْتَاجًا، وَلَوْ كَانَ مُحْتَاجًا لَمْ يُوْجَدْ شَيْئٌ مِنْ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ وَقَالَ اللهُ تَعَالٰى : اَللهُ لَا اِلٰهَ اِلَّاهُوَ الْـحَـىُّ الْقَيُّـوْمُ .
❏ একত্ববাদের অর্থ কি❓
একত্ববাদের অর্থ, আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর সত্তায়, বিশেষণে ও কর্মে একক ও অদ্বিতীয়।
❏ আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর সত্তায় একক এর অর্থ কি❓
এর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ্ তা‘আলা সংখ্যায় একাধিক নহেন। তাঁর সত্তা একাধিক অংশের সমন্বয়ে গঠিতও নয়।
❏ আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর গুণাবলীতে একক এর অর্থ কি❓
এর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ্ তা‘আলার বিশেষণসমূহে বহু সংখ্যকের অংশীদারিত্ব নেই। তাঁর গুণাবলী ও বিশেষণতুল্য করো গুণাবলী ও বিশেষণও নেই।
❏ আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর কর্মে একক বা অদ্বিতীয় অর্থ কি❓
এর অর্থ হচ্ছে, আল্লাহ্ তা‘আলা ব্যতীত কোন কর্মের সৃষ্টি ও উদ্ভাবক হিসেবে অন্যজনের কোন কর্ম নেই। তবে অন্যের দিকে কর্মকে অর্জন করা ও ইচ্ছাধীন হিসেবে সম্বন্ধ করা যায়।
مَا مَعْنَـى الْوَحْدَا نِـيَّـةِ ؟
مَعْنَى الْوَحْدَانِيَّةِ اَنَّ اللهَ تَعَالٰى وَاحِدٌ فِىْ ذَاتِه وَفِىْ صِفَاتِه وَفِىْ اَفْعَالِه
مَا مَعْنٰى كَوْنِه تَعَالٰى وَاحِدًا فِىْ ذَاتِه؟
مَعْنَاهُ اَنَّ اللهَ تَعَالٰى لَيْسَ مُتَعَدِّدًا وَلَيْسَتْ ذَاتُهُ مُرَكَّبَةً مِنْ اَجْزَاءٍ .
مَا مَعْنٰى كَوْنِه تَعَالٰى وَاحِدًا فِىْ صَفَاتِه؟
مَعْنَاهُ اَنَّهُ لَيْسَ لِصِفَاتِه تَعَالٰى تَعَدُّدٌ وَلَيْسِ لِغَيْرِه صِفَةٌ كَصِفَتِه.
مَا مَعْنٰى كَوْنِه تَعَالٰى وَاحِدًا فِىْ اَفْعَالِه؟
مَعْنَاهُ اَنَّهُ لَيْسَ لِغَيْرِه تَعَالٰى فِعْلٌ مِنَ الْاَفْعَالِ عَلٰى وَجْهِ الْاِيْجَادِ وَاِنَّمَا يُنْسَبُ ذٰلِكَ الْفِعْلُ لِلْغَيْرِ عَلٰى وَجْهِ الْكَسَبِ وَالْاِخْتِيَارِ.
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰى الْوَحْدَانِـيَّـةِ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ وَجُوْدُ هٰذِهِ
❏ একত্ববাদের প্রমাণ কি❓
একত্ববাদের দলীল হল, বিদ্যমান এ সৃষ্টি জগতের অস্তিত্ব। কেননা আল্লাহ্ তা‘আলা যদি একক না হতেন, তাহলে একাধিক হতেন। আর যদি একাধিক হতেন তাহলে সৃষ্টি জগতের কোন কিছুই অস্তিত্ব লাভ করত না। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, ‘আপনি বলুন, আল্লাহ্ একক, অদ্বিতীয়।’১০
❏ তিনি আরো বলেন- ‘যদি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য থাকত, তবে অবশ্যই উভয়ই ধ্বংস হয়ে যেতো।’১১
➖➖➖➖➖➖➖
১০. আল-কুরআন, সূরা ইখলাস, আয়াত: ১
১১. আল-কুরআন, সূরা আম্বিয়া, আয়াত: ২২
❏ আল্লাহ’র কুদরত বলতে কি বুঝ❓
কুদরত বা শক্তি আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তা সংশিষ্ট ও অবিচ্ছেদ্য একটি স্থায়ী গুণ বা বিশেষণ। যদ্বারা প্রত্যেক সম্ভাব্য বিষয়াদির অস্তিত্ব প্রদান করেন। কিংবা বিলুপ্তি সাধন তার ইচ্ছের ওপর নির্ভরশীল। আমাদের থেকে যদি চোখের আবরণ বা পর্দা উঠিয়ে নেয়া হয়, অবশ্য তা আমরা প্রত্যক্ষ করতে পারতাম।
الْمَخْلُوْقَاتِ لِاَنَّهُ لَوْلَمْ يَكُنْ وَاحِدًا لَكَانَ مُتَعَدِّدًا، وَلَوْ كَانَ مُتَعَدِّدًا لَمْ يُوْجَدْ شَيْئٌ مِنْ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ، وَقَالَ تَعَالٰى: قُلْ هُوَاللهُ اَحَدٌ وَقَالَ تَعَالٰى: لَوْ كَانَ فِيْهِمَا اٰلِهَةٌ اِلَّا اللهَ لَفَسَدَتَا .
مَا هِىَ الْقُدْرَةُ ؟
اَلْقُدْرَةُ هِىَ صِفَةٌ قَدِيْمَةٌ قَائِمَةٌ بِذَاتِه تَعَالٰى اَىْ ثَابِتَةٌ لِذَاتِه تَعَالٰى يَتَأَتَّـى بِهَا اِيْجَادُ كُلِّ مُمْكِنٍ وَاِعْدَامُهُ عَلٰى وَفْقِ الْاِرَادَةِ، لَوْ كُشِفَ عَنَّا الْحِجَابُ لَـرَأَيْنَاهَا .
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰـى الْقُـدْرَةِ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذَالِكَ وَجُوْدُ هٰذِه الْمَخْلُوْقَاتِ لِاَنَّهُ لَوْلَمْ يَكُنْ مُتَّصِفًا بِالْقُدْرَةِ لَكَانَ مُتَّصِفًا
❏ আল্লাহ’র কুদরতের প্রমাণ কি❓
এ সৃষ্টি জগতের অস্তিত্বই হল আল্লাহ’র কুদরতের বা শক্তির অকাট্য প্রমাণ। কেননা তিনি কুদরতের গুণে গুণান্বিত না হলে অবশ্যই অক্ষম হবেন। আর তিনি অক্ষম হলে এ বিশাল পৃথিবীর কিছুই অস্তিত্বে আসত না। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন- ‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা যাবতীয় বিষয়ের ওপর সর্বময় ক্ষমতাবান।’১২
➖➖➖➖➖➖➖
১২. আল-কুরআন, সূরা বাক্বারা, আয়াত: ২০
❏ আল্লাহর ইরাদা বলতে কি বুঝ❓
আল্লাহ্ তা‘আলার ইরাদা বা ইচ্ছা শক্তি নিজ সত্তা সংশিষ্ট একটি স্থায়ী গুণ বা বিশেষণ। যার মাধ্যমে বৈধ সম্ভাব্য কিছু কিছু বিষয়কে নির্দিষ্ট করেন। আমাদের থেকে যদি চোখের আবরণ উঠিয়ে নেয়া হয়, অবশ্যই তা আমরা দেখতে পারতাম।
❏ ইরাদা বা আল্লাহ’র ইচ্ছাশক্তির প্রমাণ কি❓
এর দলীল সৃষ্টি জগতের অস্তিত্ব। কেননা তিনি ইচ্ছার বিশেষণে বিশেষিত না হলে, অবশ্যই অনিচ্ছার বিশেষণে বিশেষিত হতেন।
بِالْعِجْزِ، وَلَوْ كَانَ مُتَّصِفًا بِالْعِجْزِ لَمْ يُوْجَدْ شَيْئٌ مِنْ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ، وَقَالَ تَعَالٰى: اِنَّ اللهَ عَلٰى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌ.
مَاهِىَ الْاِرَادَةُ ؟
اَلْاِرَادَةُ هِىَ صِفَةٌ قَدِيْمَةٌ قَائِمَةٌ بِذَاتِه تَعَالٰى اَىْ ثَابِتَةٌ لِذَاتِه تَعَالٰى يُخَصِّصُ اللهُ بِهَا الْمُمْكِنَ بِبَعْضٍ مَايَجُوْزُ عَلَيْهِ، لَوْ كُشِفَ عَنًّا الْحِجَابُ لَرَأَيْنَاهَا .
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰـى الْاِرَادَةِ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ وَجُوْدُ هٰذِه الْمَخْلُوْقَاتِ لِاَنَّهُ لَوْلَمْ يَكُنْ مُتَّصِفًا بِالْاِرَادَةِ لَكَانَ مُتَّصَفًا بِالْكَرَاهَةِ .
وَلَوْ كَانَ مُتَّصِفًا بِالْكَرَاهَةِ لَمْ يُوْجَدْ شَيْئٌ مِنْ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ، وَقَالَ اللهُ تَعَالٰى:
যদি অনিচ্ছার বিশেষণে বিশেষিত হতেন, তাহলে এ সৃষ্টি জগতের কোন কিছুই অস্তিত্বে আসত না। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, ‘যখন তিনি কোন কিছু করতে ইচ্ছে পোষণ করেন, তখন সেটার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘হয়ে যাও’, তখন তা হয়ে যায়।’১৩
❏ ইলম বা আল্লাহ’র জ্ঞান বলতে কি বুঝ❓
ইলম বা জ্ঞান আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তা সংশিষ্ট একটি স্থায়ী বিশেষণ। ইহার দ্বারা সূক্ষ্ম-গোপন প্রত্যেকটি বস্তুকে সংক্ষিপ্তাকারে ও বিস্তারিতরূপে জানা যায়। যদি আমাদের থেকে চোখের আবরণ উঠিয়ে নেয়া হলে অবশ্যই তা আমরা প্রত্যক্ষ করতে সক্ষম হতাম।
❏ ইলম বা আল্লাহ’র জ্ঞানের প্রমাণ কি❓
আল্লাহ্ তা‘আলার স্থায়ী জ্ঞানের দলীল বিদ্যমান এ সৃষ্টি জগতের অস্তিত্ব। কেননা তিনি স্থায়ী জ্ঞানে বিশেষিত না হলে অজ্ঞ হতেন, অথবা এর সমপর্যায়ের কিছু। যদি তিনি অজ্ঞ অথবা এর সমপর্যায়ের কিছু হতেন, এমতাবস্থায় এ সৃষ্টি জগতের কোন কিছুই অস্তিত্ব লাভ করত না। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তা‘আলার জ্ঞান সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে।’১৪
➖➖➖➖➖➖➖
১৩. আল-কুরআন, সূরা ইয়াসিন, আয়াত: ৮২
১৪. আল-কুরআন, সূরা তালাক্ব, আয়াত: ১২
اِنَّمَا اَمْرُهُ اِذَا اَرَادَ شَيئًا اَنْ يُّقُوْلَ لَهُ كُنْ فَيَكُوْنُ .
مَاهُوَ الْعِلْمُ ؟
اَلْعِلْمُ هُوَ صِفَةٌ قَدِيْمَةٌ قَائِمَةٌ بِذَاتِه تَعَالٰى اَىْ ثَابِتَةٌ لِذَاتِه تَعَالٰى يُعْلَمُ بِهَا الْاَشْيَاءُ اِجْمَالًا وَتَفْصِيْلًا مِنْ غَيْرِ سَبَقٍ خَفِـىٍّ لَوْ كُشِفَ عَنَّا الْحِجَابُ لَرَأَيْنَاهَا .
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰـى الْعِلْمِ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ وَجُوْدُ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ لِاَنَّهُ لَوْ لَمْ يَكُنْ مُتَّصِفًا بِالْعِلْمِ لَكَانَ مُتَّصِفًا بِالْجِهْلِ وَمَا فِىْ مَعْنَاهُ وَلَوْ كَانَ مُتَّصِفًا بِالْجَهْلِ وَمَا فِىْ معْنَاهُ لَمْ يُوْجَدْ شَيْئٌ مِنْ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ، وَقَالَ اللهُ تَعَالٰى: وَاِنَّ اللهَ قَدْ اَحَاطَ بِكُلِّ شَيْئٍ عِلْمًا .
❏ হায়াত বা আল্লাহ্ চিরঞ্জীব বলতে কি বুঝ❓
হায়াত বা চিরঞ্জীব আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তা সংশিষ্ট একটি স্থায়ী বিশেষণ। ইহা জ্ঞান, ইচ্ছা ও অন্যান্য প্রত্যেক পরিপূর্ণ গুণাবলীকে আবশ্যক ও বেষ্টন করে নেয়। আমাদের দৃষ্টির আবরণসমূহ উন্মোচিত করা হলে, আমরা অবশ্যই তা দেখতে সক্ষম হব।
❏ হায়াত বা আল্লাহ্ চিরঞ্জীব হওয়ার প্রমাণ কি❓
হায়াত বা আল্লাহ্ চিরঞ্জীব হওয়ার দলীল বিদ্যমান সমস্ত সৃষ্টি জগতের অস্তিত্ব। কেননা তিনি চিরঞ্জীবের গুণে গুণান্বিত না হলে অবশ্যই নশ্বর হতেন। আর নশ্বর হলে এ সৃষ্টি জগতের কোন কিছুই সৃষ্টি হত না। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন- ‘তিনিই চিরঞ্জীব, তিনি ব্যতীত অন্য কোন মা’বুদ নেই।’১৫
➖➖➖➖➖➖➖
১৫. আল-কুরআন, সূরা মু’মিন, আয়াত: ৬৫
مَاهِـىَ الْـحَـيَاةُ ؟
اَلْحَيَاةُ هِىَ صِفَةٌ قَدِيْمَةٌ قَائِمَةٌ بِذَاتِه تَعَالٰى اَىْ ثَابِتَةٌ لِذَاتِه تُوْجِبُ لَهُ الْاِتِّصَافَ بِالْعِلْمِ وَالْاِرَادَةِ وَغَيْرِهِمَا مِنْ كُلِّ كَمَالٍ، وَلَوْ كُشِفَ عَنَّا الْحِجَابُ لَرَأَيْنَاهَا.
مَا الدَّلِيْلُ عَلَى الْـحَيَاةِ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ وَجُوْدُ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ لِاَنَّهُ لَوْ لَمْ يَكُنْ مُتَّصِفًا بِالْحَيَاةِ لَكَانَ مُتَّصِفًا بِالْمَوْتِ وَلَوْ كَانَ مُتَّصِفًا بِالْمَوْتِ لَمْ يُوْجَدْ شَيْئٌ مِنْ هٰذهِ الْمَخْلُوْقَاتِ، وَقَالَ اللهُ تَعَالٰى: هُوَالْحَىُّ لَا اِلٰهَ اِلَّاهُوَ .
مَاهُـوَ السَّـمْـعُ ؟
اَلسَّمْعُ هُوَ صِفَةٌ قَدِيْمَةٌ قَائِمَةٌ بِذَاتِه تَعَالٰى اَىْ ثَابِتَةٌ لِذَاتِه تَعَالٰى يُسْمَعُ بِه
❏ আল্লাহ’র শ্রবণশক্তি বলতে কি বুঝ❓
শ্রবণশক্তি আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তার সাথে সংশিষ্ট বিদ্যমান একটি স্থায়ী গুণ। প্রত্যেক অস্তিত্বকে কর্ণদ্বয় ও কর্ণ কুহুর বিহীন (ইহা দ্বারা) শ্রবণ করেন। আমাদের থেকে চোখের আবরণ দূর করা হলে অবশ্যই আমরা ইহা প্রত্যক্ষ করতাম।
❏ আল্লাহ্ শ্রবণশক্তি সম্পন্ন হওয়ার প্রমাণ কি❓
এ সৃষ্টিকুলের অস্তিত্ব বিদ্যমানই এর প্রমাণ। কেননা তিনি শ্রবণশক্তির গুণে গুণান্বিত না হলে অবশ্যই বধির হতেন। বধির হলে এ সৃষ্টি জগতের কোন কিছুই অস্তিত্ব লাভ করত না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ্ তা‘আলা ঐ মহিলার উক্তি শ্রবণ করেছেন, যে তার স্বামীর ব্যাপারে আপনার সাথে বাদানুবাদ করেছে।’১৬
➖➖➖➖➖➖➖
১৬. আল-কুরআন, সূরা মুজা’দালাহ,আয়াত: ১
❏ আল্লাহ’র দৃষ্টিশক্তি বলতে কি বুঝ❓
দৃষ্টিশক্তি আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তা সংশিষ্ট বিদ্যমান একটি স্থায়ী গুণ। যদ্বারা চক্ষু ও চক্ষু পুতলিবিহীন প্রত্যেক অস্তিত্ব প্রত্যক্ষ করেন। আমাদের থেকে যদি চোখের আবরণ দূর করা হলে অবশ্যই আমরা তা দেখতে পাব।
كُلُّ مَوْجُوْدٍ بِغَيْرِ اُذْنَيْنِ وَصِمَاخٍ لَوْ كُشِفَ عَنَّا الْحِجَابُ لَرَأَيْنَاهَا .
مَا الدَّلِيْلُ عَلَى السَّمْـعِ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ وَجُوْدُ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ لِاَنَّهُ لَمْ يَكُنْ مُتَّصِفًا بِالسَّمْعِ لَكَانَ مُتَّصِفًا بِالصَّمَمِ، وَلَوْ كَانَ مُتَّصِفًا بِالصَّمَمِ لَمْ يُوْجَدْ شَيْئً مِنْ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ، وَقَالَ تَعَالٰى: قَدْ سَمِعَ اللهُ قَوْلَ الَّتِىْ تُجَادِلُكَ فِىْ زَوْجِهَا .
مَاهُوَ الْـبَصْرُ؟
اَلْبَصْرُ هُوَصِفَةٌ قَدِيْمَةٌ قَائِـمَةٌ بِذَاتِه تَعَالٰى يُبْصَرُ بِه كُلُّ مَوْجُوْدٍ بِغَيْرِ عَيْنَيْنِ وَحَدَقَةٍ، لَوْ كُشِفَ عَنَّا الْحِجَابُ لَـرَأَيْنَاهَا .
مَا الدَّلِيْلُ عَلَـى الْبَصْرِ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ وَجُوْدُ هٰذِهِ
❏ আল্লাহ্ দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন হওয়ার প্রমাণ কি❓
আল্লাহর দৃষ্টিশক্তির দলীল এ সৃষ্টি জগতের অস্তিত্ব। কেননা তিনি দ্রষ্টা না হলে অবশ্যই অন্ধ হতেন। অন্ধ হলে সৃষ্টি জগত অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ত। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, ‘তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’১৭
➖➖➖➖➖➖➖
১৭. আল-কুরআন, সূরা মু’মিন, আয়াত: ২০
❏ আল্লাহ’র কালাম বা বাণী বলতে কি বুঝ❓
কালাম বা বাণী আল্লাহ্ তা‘আলার সত্তা সংশিষ্ট বিদ্যমান একটি স্থায়ী গুণ। যা সমস্ত জ্ঞাত বিষয়কে বর্ণ ও আওয়াজ ব্যতীত প্রকাশ করে এবং পূর্বাপর ও অন্যান্য ধ্বংসশীল গুণাবলী থেকে পূতঃপবিত্র। আমাদের থেকে চোখের আবরণ উঠিয়ে নেয়া হলে অবশ্যই আমরা তা প্রত্যক্ষ করতে পারব।
الْمَخْلُوْقَاتِ لِاَنَّهُ لَوْلَمْ يَكُنْ مُتَّصِفًا بِالْبَصْرِ لَكَانَ مُتَّصِفًا بِالْعَمٰى، وَلَوْ كَانَ مُتَّصِفًا بِالْعَمٰى لَمْ يُوْجَدْ شَيْئٌ مِنْ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ، وَقَالَ اللهُ تَعَالٰى: وَهُوَ السَّمِيْعُ الْبَصِيْرُ.
مَاهُوَ الْكَـلَامُ ؟
اَلْكَلَامُ هُوَ صِفَةٌ قَدِيْمَةٌ قَائِمَةٌ بِذَاتِه تَعَالٰى اَىْ ثَابِتَةٌ لِذَاتِه تَعَالٰى تَدُلُّ عَلٰى مَعْلُوْمٍ لَيْسَتْ بِحَرْفٍ وَلَا صَوْتٍ مُنَـزِّهَةٌ عَنِ التَّقَدُّمِ وَالتَّأَخُّرِ وَغِيْرِهِمَا مِنْ صِفَاتِ الْحَوَادِثِ لَوْكُشِفَ عَنَّا الْحِجَابُ لَرَأَيْنَاهَا .
مَاالدَّلِيْلُ عَلٰى الْكَلَامِ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ وُجُوْدُ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ لِاَنَّهُ لَوْلَمْ يَكُنْ مُتَّصِفًا بِالْكَلَامِ لَكَانَ مُتَّصِفًا
❏ আল্লাহ’র কালাম বা বাণী, এর দলীল কি❓
এ সৃষ্টি জগতের অস্তিত্ব বিদ্যমানই এর প্রমাণ। কেননা তিনি বক্তার গুণে গুণান্বিত না হলে অবশ্যই বোবা বা এর সমপর্যায়ের কিছু হতেন। যদি তিনি বোবা বা এর সমপর্যায়ের কিছু হতেন, এমতাবস্থায় এ বিশ্বজগতের কোন কিছুই অস্তিত্ব লাভে সক্ষম হত না। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন- ‘আল্লাহ তা‘আলা হযরত মুসা (عليه السلام) এর সাথে সরাসরি কথোপকথন করেছেন।’১৮
➖➖➖➖➖➖➖
১৮. আল-কুরআন, সূরা নিসা, আয়াত:১৬৪
❏ আল্লাহ্ তা‘আলা সর্বশক্তিমান অর্থ কি এবং এর প্রমাণ কি❓
এর ভাবার্থ হচ্ছে, আল্লাহ্ তা‘আলা সকল সম্ভাব্য বস্তুর ওপর সর্বশক্তিমান। সর্বশক্তিমানই এর দলীল।
❏ আল্লাহ্ তা‘আলা সংকল্পকারী এর অর্থ ও প্রমাণ কি❓
এর ভাবার্থ হচ্ছে, আল্লাহ্ তা‘আলা সকল সম্ভাব্য বিষয়াদির ইচ্ছা পোষণকারী। ইচ্ছা শক্তিই হচ্ছে, এর দলীল।
❏ আল্লাহ্ তা‘আলা মহাজ্ঞানী এর অর্থ ও দলীল কি❓
এর ভাবার্থ হলো, আল্লাহ্ তা‘আলা প্রত্যেক বস্তু সম্যকরূপে পরিজ্ঞাত। মহাজ্ঞানী হওয়াই এর দলীল।
بِالْبُكْمِ وَمَافِى مَعْنَاهُ، وَلَوْ كَانَ مُتَّصِفًا بِالْبُكْمِ وَمَا فِىْ مَعْنَاهُ، لَمْ يُوْجَدْ شَيْئٌ مِنْ هٰذِهِ الْمَخْلُوْقَاتِ وَقَالَ اللهُ تَعَالٰى: وَكَلَّمَ اللهُ مُوْسٰى تَكْلِيْمًا .
مَا مَعْنٰى كَوْنِه تَعَالٰى قَادِرًا وَمَا دَلِيْلُهُ؟
مَعْنَاهُ اَنَّ اللهَ تَعَالٰى قَادِرٌ عَلٰى كُلِّ شَيْئٌ مُمْكِنٍ، وَدَلِيْلُهُ دَلِيْلُ الْقُدْرَةِ.
وَمَا مَعْنٰى كَوْنِه تَعَالٰى مُرِيْدًا وَمَا دَلِيْلُهُ؟
مَعْنَاهُ اَنَّ اللهَ تَعَالٰى مُرِيْدٌ لِكُلِّ شَيْئٍ مُمْكِنٍ، وَدَلِيْلُهُ دَلِيْلُ الْاِرَادَةِ.
مَا مَعْنٰى كَوْنِه تَعَالٰى عَالِمًا وَمَا دَلِيْلُهُ؟
مَعْنَاهُ اَنَّ اللهَ عَالِمٌ بِكُلِّ شَيْئٍ، وَدَلِيْلُهُ دَلِيْلُ الْعِلْمِ.
مَا مَعْنٰى كَوْنِهِ تَعَالٰى حَيًّا وَمَا دَلِيْلُهُ؟
❏ আল্লাহ্ তা‘আলা চিরঞ্জীব-এর অর্থ ও দলীল কি❓
এর অর্থ আল্লাহ তা‘আলা চিরঞ্জীব তিনি কখনো মৃত্যুবরণ করবেন না। চিরঞ্জীব হওয়াই এর দলীল।
❏ আল্লাহ তা‘আলা সর্বশ্রোতা এর অর্থ ও দলীল কি❓
এর ভাবার্থ, আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক বিষয়ের শ্রবণকারী। বর্ণিত শ্রবণের দলীল। তিনি শ্রবণকারী হওয়াই এর দলীল।
❏ আল্লাহ তা‘আলা সর্বদ্রষ্টা এর অর্থ ও দলীল কি❓
এর ভাবার্থ, আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক কিছুই প্রত্যক্ষকারী। সর্বদ্রষ্টা হওয়াই এর দলীল।
❏ আল্লাহ তা‘আলা বক্তা এর অর্থ ও দলীল কি❓
এর ভাবার্থ,আল্লাহ তা‘আলা বর্ণ ও ধ্বনি বিহীন কথক বা বক্তা। তাঁর গুণ সম্বলিত কালামই-এর দলীল।
❏ আল্লাহ তা‘আলার জন্যে অসম্ভব বিষয়গুলো কি❓ সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা কর।
আল্লাহ তা‘আলার জন্যে সংক্ষিপ্তাকারে অসম্ভব হল- তিনি প্রত্যেক অসম্পূর্ণতা থেকে পূত-পবিত্র।
আল্লাহ তা‘আলার পবিত্র সত্তার ক্ষেত্রে যা অসম্ভব
مَعْنَاهُ اَنَّ اللهَ حَىٌّ لَا يَمُوْتُ اَبَدًا وَدَلِيْلُهُ دَلِيْلُ الْحَيَاةِ .
مَا مَعْنٰى كَوْنِه تَعَالٰى سَمِيْعًا وَمَا لِيْلُهُ؟
مَعْنَاهُ اَنَّ اللهَ تَعَالٰى سَمِيْعٌ لِكُلِّ شَيْئٍ وَدَلِيْلُهُ دَلِيْلُ السَّمْعِ .
مَا مَعْنٰى كَوْنِه تَعَالٰى بَصِيْرًا وَمَا دَلِيْلُهُ؟
مَعْنَاهُ اَنَّ اللهَ بَصِيْرٌ بِكُلِّ شَيْئٍ، وَدَلِيْلُهُ دَلِيْلُ الْبَصْرِ.
مَا مَعْنٰى كَوْنِه تَعَالٰى مُتَكَلِّمًا وَمَا دَلِيْلُهُ؟
مَعْنَاهُ اَنَّ اللهَ تَعَالٰى مُتَكَلِّمٌ بِغَيْرِ حُرُوْفٍ وَاَصْوَاتٍ وَدَلِيْلُهُ دَلِيْلُ الْكَلَامِ.
مَا هُوَ الْمُسْتَحِيْلُ فِىْ حَقِّ اللهِ تَعَالٰى اِجْمَالًا؟
اَلْمُسْتَحِيْلُ فِىْ حَقِّ اللهِ تَعَالٰى اِجْمَالًا هُوَ تَنَزُّهُ عَنْ كُلِّ نُقْصٍ .
আল্লাহ তা‘আলার সত্তার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো হওয়া অসম্ভব বিস্তারিতভাবে বর্ণনা কর।
আল্লাহ তা‘আলার ক্ষেত্রে বিস্তারিতভাবে বিশটি গুণ অসম্ভব। তা হলো নশ্বর, অস্তিত্বহীন, পরিবর্তনশীল, ধ্বংসশীল, অস্থায়ী কোন বস্তুর সাদৃশ্য হওয়া, স্থানের বা উদ্ভাবনকারীর মুখাপেক্ষী হওয়া, সত্তায়, গুণাবলীতে ও কর্মে একাধিক হওয়া।অপারগতা, বাধ্যবাধকতা, অজ্ঞতা, মৃত্যু, বধির, অন্ধ, বোবা এবং আল্লাহ তা‘আলা অপারগ হওয়া, বাধ্য হওয়া, নির্বোধ, মৃত্যুবরণকারী, বধির, অন্ধ ও বোবা এসব দোষ-ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে আল্লাহর সত্তা পূত-পবিত্র ও অনেক ঊর্ধ্বে।
আল্লাহ তা‘আলার গুণাবলী আলোচনার সাথে সাথে তার বিপরীত দিকও আলোচনা কর।
অস্তিত্ব তার বিপরীত অস্তিত্বহীনতা, চিরস্থায়ী তার বিপরীত ক্ষণস্থায়ী, অবিনশ্বর তার বিপরীত নশ্বর, আল্লাহর সত্তা অপরিবর্তনীয় তার বিপরীত
مَاهُوَ الْمُسْتَحِيْلُ فِىْ حَقِّ اللهِ تَعَالٰى تَفْصِيْلًا؟
اَلْمُسْتَحِيْلُ فِىْ حَقِّ اللهِ تَعَالٰى تَفْصِيْلًا عِشْرُوْنَ صَفَةً وَهِىَ الْعَدَمُ وَالْحُدُوْثُ وَالْفَنَاءُ وَالْمُمَاثَلَةُ لِلْحَوَادِثِ وَالْاِحْتِيَاجُ اِلَى الْمَحَلِّ اَوِ الْمُوْجِدِ، وَالتَّعَدُّدُ فِىْ الذَّاتِ وَفِىْ الصِّفَاتِ وَالْاَفْعَالُ، وَالْعِجْزُ، وَالْكَرَاهَةُ، وَالْجَهْلُ، وَالْمَوْتُ، وَالصَّمَمُ، وَالْعَمٰى وَالْبُكُمْ وَكَوْنُهُ تَعَالٰى عَاجِزًا وَمُكْرَهًا، وَجَاهِلًا، وَمَيِّتًا، وَاَصَمَّ، وَاَعْمٰى ، وَاَبْكَمَ، تَعَالٰى اللهُ عَنْ ذٰلِكَ عُلُوًّا كَبِيْرًا .
اُذْكُرْ كُلَّ صِفَةٍ مِنْ صِفَاتِ اللهِ تَعَالٰى وَبِجَانَبِهَا ضِدُّهَا؟
اَلْوَجُوْدُ ضِدُّهُ الْعَدَمُ، وَالْقِدَمُ ضَدُّهُ الْحُدُوْثُ، وَالْبَقَاءُ ضِدُّهُ الْفَنَاءُ، وَمُخَالِفَتُهُ تَعَالٰى لِلْحَوَادِثِ ضِدُّهَا الْمُمَاثِلَةُ لِلْحَوَادِثِ، وَالْقِيَامُ بِالنَّفْسِ
পরিবর্তনীয় সাদৃশ্য, স্বয়ং সত্তাগত বিদ্যমান তার বিপরীত স্থান বা উদ্ভাবকের প্রতি মুখাপেক্ষী, একত্ববাদ তার বিপরীত একাধিকত্ব, পূর্ণ ক্ষমতাশীলতার বিপরীত অপারগতা, সংকল্প করা তার বিপরীত বাধ্যকরণ করা, জ্ঞান সম্পন্ন তার বিপরীত মূর্খতা, জীবিত তার বিপরীত মৃত্যু, শ্রবণশক্তি সম্পন্ন তার বিপরীত বধির, সর্বদ্রষ্টা তার বিপরীত অন্ধ, বাকশক্তি তার বিপরীত বোবা, ক্ষমতাসম্পন্ন তার বিপরীত অক্ষম, ইচ্ছুক তার বিপরীত বাধ্যবাধকতা, প্রজ্ঞাময়তার বিপরীত মূর্খ, সর্বশ্রোতা তার বিপরীত বধির, প্রত্যক্ষকারী তার বিপরীত অন্ধ, চিরঞ্জীব তার বিপরীত মৃত, বাকশক্তি সম্পন্ন তার বিপরীত বোবা।
❏ আল্লাহ তা‘আলার ক্ষেত্রে বৈধ বিষয়গুলো কি❓
সকল সম্ভাব্য বিষয়াদি আল্লাহ তা‘আলার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা এবং না করা উভয়টি বৈধ।
ضِدُّهُ الْاِحْتِيَاجُ اِلَى الْمَحَلِّ اَوِ الْمُوْجِدِ، وَالْوَاحْدَانِيَّةُ ضِدُّهَا التَّعَدُّدُ، وَالْقُدْرَةُ ضِدُّهَا الْعِجْزُ، وَالْاِرَدَةُ ضِدُّهَا اَلْكَرَاهَةُ، وَالْعِلْمُ ضَدُّهَ الْجَهْلُ، وَالْحَيَاةُ ضِدُّهَا الْمَوْتُ، وَالسَّمْعُ ضَدُّهُ الصَّمَمُ، وَالْبَصَرُ ضِدُّهُ الْعَمٰى، وَالْكَلَامُ ضِدُّهُ الْبُكْمُ، وَكَوْنُهُ تَعَالٰى قَادِرًا ضِدُّهُ كَوْنُهُ تَعَالٰى عَاجِزًا، وَكَوْنُهُ تَعَالٰى مُرِيْدًا ضِدُّهُ كَوْنُهُ تَعَالٰى مُكْرِهًا، وَكَوْنُهُ تَعَالٰى عَالِمًا ضِدُّهُ كَوْنُهُ تَعَالٰى جَاهِلًا، وَكَوْنُهُ تَعَالٰى سَمِيْعًا ضَدُّهُ كَوْنُهُ تَعَالٰى اَصَمَّ، وَكَوْنُهُ تَعَالٰى بَصِيْرًا ضِدُّهُ كَوْنُهُ تَعَالٰى اَعْمٰى وَكَوْنُهُ تَعَالٰى حَيًّا ضِدُّهُ كَوْنُهُ تَعَالٰى مَيِّتًا وَكَوْنُهُ تَعَالٰى مُتَكَلِّمًا ضَدُّهُ كَوْنُهُ تَعَالٰى اَبْكَمَ .
مَاهُوَ الْجَائِزُ فِىْ حَقِّ اللهِ تَعَالٰى؟
اَلْجَائِزُ فِىْ حَقِّ اللهِ تَعَالٰى هُوَ فِعْلُ كُلِّ مُمْكِنٍ اَوْ تَرْكُهُ .
❏ এর প্রমাণ কি❓
এর প্রমাণ চোখের মাধ্যমে দৃশ্যমান বিষয়াদি। কেননা আমরা সম্ভাব্য বিষয়াদির অস্তিত্ব ও ধ্বংসশীলতা দেখতে পাই। এগুলো চিরস্থায়ী হলে ধ্বংসশীল হত না এবং অসম্ভব হলে অস্তিত্বে আসত না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-‘আপনার প্রভু যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং পছন্দ করেন।’১৯
➖➖➖➖➖➖➖
১৯.আল-কুরআন, সূরা ক্বাসাস, আয়াত: ৬৮
❏ আল্লাহ তা‘আলার নামগুলো কি কি❓
আল্লাহ তা‘আলার অনেক নাম রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে মহিমান্বিত ও প্রসিদ্ধ নাম হচ্ছে ‘আল্লাহ’ (اللهُ)।
নবী-রাসূল সম্পর্কিত আকিদা-১
❏ রাসূলগণকে প্রেরণ করা আল্লাহ তা‘আলার ওপর আবশ্যক কি❓
মূলত: আল্লাহ তা‘আলার ওপর কোন কিছুই আবশ্যক নহে। তবে রাসূলগণকে প্রেরণ করা আল্লাহ তা‘আলার বৈধ ইখতিয়ারের অন্তর্ভূক্ত।
❏ নবী কাকে বলে❓
নবী এমন স্বাধীন মানব যিনি সকল দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত, যাঁর প্রতি আল্লাহ তা‘আলা শরীয়তের ওহী প্রেরণ করেন। যদ্বারা তিনি উহা বাস্তবায়ন করেন।
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ الْمُشَاهَدَةُ بِالْعُيُوْنِ لِاَنَّنَا نُشَاهِدُ الْمُمْكِنَاتِ وُجِدَتْ وَاِنْعَدَمَتْ، فَلَوْكَانَتْ وَاجِبَةً لَمَا اِنْعَدَمَتْ، وَلَوْ كَانَتْ مُسْتَحِيْلَةً لَمَا وُجِدَتْ وَقَالَ اللهُ تَعَالٰى: وَرَبُّكَ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ وَيَخْتَارُ.
مَاهِىَ اَسْمَاءُ اللهِ تَعَالٰى ؟
اَسْمَاءُ اللهِ تَعَالٰى كَثِيْرَةٌ، وَاَشْهَرُهَا لَفْظُ الْجَلَالَةِ ، وَهُوَ ্থاللهُ‘ .
هَلْ اِرْسَالُ الرُّسُلِ وَاجِبٌ عَلٰى اللهِ تَعَالٰى ؟
لَايَجِبُ عَلٰى اللهِ تَعَالٰى فِعْلُ شَيْئٍ اَصْلًا فَاِرْسَالُ الرُّسُلِ دَاخِلٌ فِى الْجَائِزِ فِىْ حَقِّ اللهِ تَعَالٰى .
مَنْ هُوَ النَّبِىُّ ؟
اَلنَّبِىُّ هُوَالْاِنْسَانُ الْحُرُّ السَّلِيْمُ
❏ রাসূল কাকে বলে❓
রাসূল হলেন সেই নবী যাঁর প্রতি আল্লাহ ‘প্রত্যাদেশ’ প্রেরণ করেছেন এবং সে প্রত্যাদেশ মানুষের কাছে পৌঁছানোর ব্যাপারেও আদিষ্ট হয়েছেন।
❏ সর্বপ্রথম ও সর্বশেষ রাসূল কে❓
সর্বপ্রথম রাসূল আদি পিতা হযরত আদম (عليه السلام) এবং সর্বশেষ রাসূল আমাদের প্রিয়নবী সাইয়্যেদুনা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (ﷺ), যিনি সমগ্র সৃষ্টি জগতের প্রতি প্রেরিত হয়েছেন।
❏ নবীগণের সংখ্যা কত❓
নবীগণের প্রকৃত সংখ্যা আল্লাহ তা‘আলাই সমধিক জ্ঞাত। তবে কারো কারো মতে এর সংখ্যা এক লক্ষ চব্বিশ হাজার।
❏ রাসূলগণের সংখ্যা কত❓
রাসূলগণের সংখ্যা হলো- তিনি শ’ তের বা চৌদ্দ বা পনের জন।
مِنْ كُلِّ عَيْبٍ الَّذِىْ اَوْحٰى اللهُ اِلَيْهِ لِشَرْعٍ يُعْمَلُ بِـه .
مَنْ هُوَ الرَّسُوْلُ ؟
اَلرَّسُوْلُ هُوَ النَّبِىُّ الَّذِىْ اَوْحٰى اللهُ اِلِيْهِ بِتَبْلِيْغٍ مَا اُمِرَبِـه لِلْخَلْقِ .
مَنْ اَوَّلُ الرُّسُلِ، وَمَنْ اٰخَرُهُمْ ؟
اَوَّلُهُمْ اٰدَمُ اَبُو الْبَشْرِ، وَاٰخِرُهُمْ سَيِّدُنَا وَنَبِيُّنَا وَمَوْلَانَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُرْسَلُ لِكَافَّةِ الْخَلْقِ .
كَمْ عَدَدُ الْاَنْبِيَاءِ ؟
لَا يَعْلَمُ ذٰلِكَ اِلَّا اللهُ تَعَالٰى وَقِيْلَ عَدَدُهُمْ مِائَةُ اَلْفٍ وَاَرْبَعَةُ وَّ عِشْرُوْنَ اَلْـفًا .
كَمْ عَدَدُ الْمُرْسَلِيْنَ ؟
هُمْ ثَلَاثُ مِائَةٍ وَثَلَاثَةَ عَشَرَ اَوْ اَرْبَعَةَ عَشَرَ، اَوْ خَمْسَةَ عَشَرَ .
❏ রাসূলগণের কতেক সংখ্যা সবিস্তারে জানা আবশ্যক❓
বিস্তারিতভাবে পঁচিশ জন রাসূলের পরিচিতি জানা আবশ্যক। তাঁরা হলেন- সাইয়্যেদুনা হযরত ইব্রাহিম (عليه السلام), হযরত ইসহাক (عليه السلام), হযরত ইয়াকুব (عليه السلام), হযরত নূহ (عليه السلام), হযরত দাউদ (عليه السلام), হযরত সোলাইমান (عليه السلام), হযরত আইয়ুব (عليه السلام), হযরত ইউসুফ (عليه السلام), হযরত মুসা (عليه السلام), হযরত হারুন (عليه السلام), হযরত জাকারিয়া (عليه السلام), হযরত ইয়াহিয়া (عليه السلام), হযরত ঈসা (عليه السلام), হযরত ইলিয়াছ (عليه السلام), হযরত ইসমাঈল (عليه السلام), হযরত ইয়াসাউ (عليه السلام), হযরত ইউনুস (عليه السلام), হযরত লুত (عليه السلام), হযরত ইদ্রিস (عليه السلام), হযরত হুদ (عليه السلام), হযরত সুয়াইব (عليه السلام), হযরত ছালেহ (عليه السلام), হযরত জুলকিফিল (عليه السلام), হযরত আদম (عليه السلام) ও সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ রাসূল হযরত সাইয়্যেদুনা মুহাম্মদ আলাহিমুস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম।
আমরা অবগত হয়েছি যে, নিশ্চয়ই সমগ্র সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হলেন সাইয়্যেদুনা হযরত মুহাম্মদ আলাইহিস্ সালাতু ওয়াস্সালাম। অতঃপর শ্রেষ্ঠত্বের ধারাবাহিকতায় তাঁর পর কারা?
كَمَ عَدَدُ الْمُرْسَلِيْنَ مَعْرِفَتُهُمْ مِنَ الْوَاجِبِ تَفْصِيْلًا ؟
اَلْوَاجِبُ مَعْرِفَتُهُ مِنَ الْمُرْسَلِيْنَ تَفْصِيْلًا خَمْسَةُ وَّعِشْرُوْنَ، وَهُمْ سَادَاتُنَا سَيَّدُنَا اِبْرَاهِيْمُ وَاِسْحَاقُ وَيَعْقُوْبُ وَنُوْحٌ وَدَاؤدُ وَسُلَيْمَانُ وَاَيُّـوْبُ وَيُوْسُفُ وَمُوْسٰى وَهَارُوْنَ وَزَكَرِيَا وَيَحْىٰ وَعِيْسٰى وَاِلْيَاسُ وَاِسْمَاعِيْلُ وَالْيَسَعُ وَيُوْنُسُ وَلُوْطُ وَاِدْرِيْسُ وَهُوْدٌ وَشُعَيْبٌ وَصَالِحٌ وَذُوالْكِفْلِ وَاَدَمُ وَسَيَّدُنَا مُحَمَّدٌ سَيِّدُ الْجَمِيْعِ عَلَيْهِمُ الصَّلوٰةُ وَالسَّلَامُ.
عَلِمْنَا اَنَّ اَفْضَلَ الْجَمِيْعِ سَيَّدُنَا مُحَمَّدٌ عَلَيْهِ الصَّلوٰةُ وَالسَّلَامُ، فَمِنَ الَّذِىْ يَلِيْهِ فِى الْاَفْضَلِيَّةِ ؟
يَلِيْهِ فِى الْاَفْضَلِيَّةِ : سَيِّدُنَا اِبْرَاهِيْمُ فَسَيِّدُنَا مُوْسٰى فَسَيِّدُنَا
ধারাবাহিকভাবে শ্রেষ্ঠত্বের মধ্যে রয়েছেন- সাইয়্যেদুনা হযরত ইব্রাহিম (عليه السلام), সাইয়্যেদুনা হযরত মুসা (عليه السلام), সাইয়্যেদুনা হযরত ঈসা (عليه السلام) ও সাইয়্যেদুনা হযরত নূহ (عليه السلام)। এঁরা সবাই উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন ।
আমরা অবহিত হলাম, অতঃপর রাসূলগণের (ﷺ) ক্ষেত্রে কি ধারণা পোষণ করা ওয়াজিব বর্ণনা কর।
রাসূলগণের ক্ষেত্রে চারটি বিষয়ে নিষ্কলুষ ধারণা পোষণ করা আবশ্যক। সত্যবাদিতা, আমানতদারী, ঐশী প্রত্যাদেশ যথাযথ প্রচার এবং বুদ্ধিমত্তা ও বিচক্ষণতা।
❏ সত্যবাদিতা অর্থ কি❓
এর অর্থ- তাঁদের সমস্ত কথোপকথনে মিথ্যার অবতারণা না হওয়া।
❏ তাঁদের (নবী) সত্যবাদিতার ওপর প্রমাণ কি❓
তাঁদের সত্যবাদিতার দলীল- মু’জিযা বা অলৌকিক কর্মকান্ড। যেমন, মৃতকে জীবিত করা, জন্মান্ধ ও কুষ্ঠরোগীকে নিরাময় করা, আঙ্গুলের মাঝখান থেকে ঝরণার ন্যায় পানি প্রবাহিত করা। কেননা তাঁরা সত্যবাদী না হলে, অবশ্যই মিথ্যাবাদী হতেন। আর তাঁরা মিথ্যাবাদী হলে আল্লাহ তা‘আলা তাঁদের জন্যে এরূপ
عِيْسٰى فَسَيِّدُنَا نُوْحٌ وَهُمْ اُوْلُوْالْعَزْمِ .
فَهِمْنَا ذٰلِكَ، فَمَا هُوَالْوَاجِبُ فِىْ حَقِّ الرُّسُلِ عَلَيْهِمُ الصَّلٰوةُ وَالسَّلَامُ؟
اَلْوَاجِبُ فِىْ حَقِّ الرُّسُلِ عَلَيْهِمُ الصَّلوٰةُ وَالسَّلَامُ اَرْبَعَةٌ: اَلصِّدْقُ وَالْاَمَانَةُ وَالتَّبْلِيْغُ وَالْفَطَانَةُ .
مَا مَعْنَى الصِّدْقُ ؟
مَعْنَاهُ اَنَّهُمْ لَايَكْذِبُوْنَ فِىْ جَمِيْعِ اَقْوَالِهِمْ .
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰى صِدْقِهِمْ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ-থ الْمُعْجِزَةُ مِثْلُ اِحْيَاءِ الْمَوْتٰى وَاِبْرَاءِ الْأَكْمَهِ وَالْاَبْرَصِ وَنَبِعِ الْمَاءِ مِنْ بَيْنِ الْاَصَابِـعِ .
لِاَنَّهُمْ لَوْلَمْ يَكُوْنُوْا صَادِقِيْنَ لَكَانُوْا كَاذِبِيْنَ وَلَوْ كَانُوْا كَاذِبِيْنَ
অলৌকিক মু’জিযার অবতারণা করতেন না। যেমনিভাবে আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা বলেন- ‘আমার বান্দা আমার পক্ষ থেকে তাবলীগের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যে সব বিষয়ে কথা বলেছেন সত্যই বলেছেন।’
❏ আমানত অর্থ কি❓
এর অর্থ- নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তাঁদের (নবীগণের) প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য শিশুকাল থেকে নিষিদ্ধ বিষয় তথা পাপাচারে লিপ্ত হওয়া থেকেই হিফাযত ও নিরাপত্তার বিধান করেছেন।
❏ তাঁদের (নবীগণের) আমানতদারীর উপর দলীল কি❓
এর দলীল- তাঁদের আনুগত্যের প্রতি আমরা নির্দেশিত। কেননা তাঁরা আমানতদার না হলে অবশ্যই খেয়ানতকারী হতো। আর তাঁরা খেয়ানতকারী হলে আল্লাহ তা’আলা তাঁদের আনুগত্যের নির্দেশ দিতেন না।
❏ তাবলীগ অর্থ কি❓
এর অর্থ, নিশ্চয় তাঁদের (নবীগণের) প্রতি তাবলীগের (পৌঁছায়ে দেয়ার) যে প্রত্যাদেশ দেয়া হয়েছে, তা যথাযথভাবে বান্দাদের নিকট পৌঁছিয়ে দেয়া।
لَمْ يَخْلُقِ اللهُ لَهُمُ الْمُعْجِزَةَ النَّازِلَةَ مَنْزِلَةَ قَوْلِه سُبْحَانَهُ وَتَعَالٰى: صَدَقَ عَبْدِىْ فِىْ كُلِّ مَايُبَلِّغُ عَنِّـىْ .
مَا مَعْنَى الْاَمَانَةُ ؟
مَعْنَاهَا اَنَّ اللهَ حَفِظَ ظَوَاهِرَهُمْ وَبَـوَاطِنَهُمْ وَلَوْ فِىْ حَالِ الصِّغَرِ مِنَ التَّلَبُّسِ بِمُنْهٰى عَنْهُ .
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰى اَمَانَتِهِمْ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ اُمِرْنَا بِاِتِّبَاعِهِمْ لِاَنَّهُمْ لَوْلَمْ يَكُوْنُوْا اُمَنَاءَ لَكَانُوْا خَائِنِيْنَ وَلَوْ كَانُوْا خَائِنِيْنَ مَا اَمَرَنَا اللهُ تَعَالٰى بِاِتِّبَاعِهِمْ .
مَا مَعْنٰى التُّبْلِيْـغِ ؟
مَعْنَاهُ اَنَّهُمْ يُبَلِّغُوْنَ الْخَلْقَ مَا اُمِرُوْا بِتَبْلِيْغِـه .
❏ তাঁদের তাবলীগের ওপর দলীল কি❓
এর দলীল হচ্ছে- আমাদেরকে তাঁদের প্রতি আনুগত্যের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাঁরা যদি যথাযথভাবে প্রত্যাদেশ পৌঁছিয়ে না দিতেন? তাহলে গোপনকারী হতেন। আর গোপনকারী হলে, আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে তাঁদের আনুগত্যের নির্দেশ দিতেন না।
❏ বুদ্ধিমত্তা অর্থ কি❓
এর অর্থ- নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁদেরকে প্রতিপক্ষের মোকাবিলায় অকাট্য ও প্রকাশ্য প্রমাণাদি পেশ করার এবং তাঁদের অন্তরে বিরাজমান বিষয়াদি স্পষ্ট ভাষায় বর্ণনা করার শক্তি ও ক্ষমতা প্রদান করেছেন।
❏ তাঁদের বুদ্ধিমত্তার দলীল কি❓
এর দলীল- নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলা তাঁদেরকে এ মহান পদের জন্য নির্বাচিত করেছেন। বুদ্ধিমান, যোগ্য ও সূক্ষ্মজ্ঞানী ব্যতীত অন্য কাউকে তিনি এ পদে নির্বাচিত করেন না।
নবী-রাসূল সম্পর্কিত আকিদা-২
❏ রাসুলগণের (عليه السلام) ক্ষেত্রে কি কি বিষয় অসম্ভব❓
রাসুলগণের (আঃ) জন্য চারটি বিষয় অসম্ভব। মিথ্যাচার, বিশ্বাসঘাতকতা, সত্য গোপন ও নিবুর্দ্ধিতা।
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰى تَبْلِيْغِهِمْ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ : اُمِرْنَا بِاِتِّبَاعِهِمْ لِاَنَّهُمْ لَوْلَمْ يَكُوْنُوْا مُبَلِّغِيْنَ لَكَانُوْا كَاتِمِيْنَ وَلَوْ كَانُوْا كَاتِمِيْنَ لَمَا اَمَرَنَا اللهُ تَعَالٰى بِاِتِّبَاعِهِمْ .
مَا مَعْنٰى الْفَطَانَـةِ ؟
مَعْنَاهَا اَنَّهُ يُمَكِنُّهُمْ اِقَامَةُ الْحُجَجِ الظَّاهِرَةِ عَلٰى خَصَمِهِمْ وَالتَّعْبِيْرُ عَمَّا فِىْ ضَمَائِرِهِمْ بِاَوْضَحِ عِبَارَةٍ.
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰى فَطَانَتِهِمْ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ اَنَّ اللهَ سُبْحَانَهُ وَتَعَالٰى قَدْ اِخْتَارَهُمْ لِهٰذَا الْمَنْصَبِ الشَّرِيْفِ وَلَا يَخْتَارُ اللهُ تَعَالٰى اِلَّا مَنْ كَانَ فَطَنًا نَبِيْهًا .
مَاهُوَ الْمُسْتَحِيْلُ فِىْ حَقِّ الرُّسُلِ عَلَيْهِمُ الصَّلوٰةُ وَالسَّلَامُ؟
اَلْمُسْتَحِيْلُ فِىْ حَقِّهِمْ اَرْبَعَةُ: اَلْكِذْبُ، وَالْخِيَانَةُ، وَالْكِتْمَانُ، وَالْبَلَادَةٌ.
রাসুলগণের ক্ষেত্রে উপযুক্ত গুণাবলী এবং বৈপরীত্য গুণাবলী বর্ণনা কর।
সততার বিপরীতে মিথ্যাচার, বিশ্বস্ততার বিপরীতে বিশ্বাসঘাতকতা, তাবলীগের বিপরীতে গোপন করণ এবং বুদ্ধিমত্তার বিপরীতে নিবুর্দ্ধিতা।
❏ রাসুলগণের (عليه السلام) জন্য কি কি বৈধ❓
রাসুলগণের (عليه السلام) জন্য বৈধ প্রত্যেক মানবীয় গুণাবলী যা তাঁদের উচ্চ মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করে না। যেমন- খাবার গ্রহণ করা, পান করা, ভ্রমণ করা, স্বাভাবিকভাবে অসুস্থ হওয়া, বিবাহ করা ও ক্রয়-বিক্রয় করা।
❏ এর দলীল কি❓
এর দলীল- মোশাহাদা অর্থাৎ চাক্ষুস প্রত্যক্ষ করা কেননা যারা তাদের নিকট উপস্থিত ছিলেন তারা সচক্ষে উহার প্রমাণ দেখেছেন। বস্তুত: যারা ছিলেন না তাদের নিকট বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য খবর পেঁঁৗছেছে।
اُذْكُرْ كُلَّ صِفَةٍ مِنْ صِفَاتِ الرُّسُلِ عَلَيْهِمُ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ وَبِجَانِبِهَا ضِدَّهَا ؟
اَلصِّدْقُ ضِدُّهُ اَلْكِذْبُ، وَالْاَمَانَةُ ضِدُّهَا الْخِيَانَةُ وَالتَّبْلِيْغُ ضِدُّهُ الْكِتْمَانُ، وَالْفَطَانَةُ ضِدُّهَا اَلْبَلَادَةُ .
مَاهُوَ الْجَائِزُ فِىْ حَقِّ الرُّسُلِ عَلَيْهِمُ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ؟
اَلْجَائِزُ فِىْ حَقِّ الرُّسُلِ عَلَيْهِمُ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ كُلُّ وَصْفٍ بَشَرِىٍّ لَايُؤَدِّىْ اِلٰى نُقْصِ فِىْ مَرَاتِبِهِمْ الْعُلِيَّةِ مِثْلُ الْاَكْلِ وَالشُّرْبِ وَالسَّفْرِ وَالْمَرْضِ الْخَفِيْفِ وَالتَّزَوُّجِ وَالْبَيْعِ وَالشِّرَاءِ .
مَا الدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ ؟
اَلدَّلِيْلُ عَلٰى ذٰلِكَ الْمُشَاهَدَةُ لِاَنَّ مَنْ حَضَرَهُمْ شَاهَدَ ذٰلِكَ وَمَنْ لَمْ يَحْضُرْهُمْ بَلَغَهُ الْخَبْرُ الْمُتَوَاتِرُ.
❏ ‘আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই’ এর অর্থ কি❓
‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর অর্থ বস্তুত: আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। তিনি সকল বস্তুর সৃষ্টিকর্তা। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন বরং সব কিছু তাঁরই মুখাপেক্ষী।
❏ ‘মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ’-এর অর্থ কি❓
মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ-এর অর্থ নিশ্চয় তিনি সৃষ্টিতে ও শিষ্টাচারে পরিপূর্ণ মানব। যাঁকে পূর্ববর্তী সকল শরিয়তের রহিতকারী হিসেবে এবং নতুন শরিয়ত সহকারে সৃষ্টিকুলের প্রতি প্রেরণ করা হয়েছে। যাঁর পরে কখনো আর কোন নবীর আগমন হবে না।
নবী মুহাম্মদ (ﷺ) এর জীবন চরিত সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা কর।
নবী করিম (ﷺ) পবিত্র মক্কা নগরীতে জন্ম গ্রহণ করেন। সা’দ গোত্রের হযরত হালিমা সাদিয়া (رضي الله عنه) তাঁকে দুধ পান করান এবং তাঁর কাছে তিনি চার বছর অবস্থান করেন। অত:পর তিনি তাঁর মাতা আমিনার (رضي الله عنه) নিকট তাঁকে ফিরিয়ে দেন।
مَا مَعْنٰى لَاِلٰهَ اِلَّا اللهُ ؟
مَعْنٰى لَا اِلٰهَ اِلَّا اللهُ لَا مَعْبُوْدَ بِحَقٍّ اِلَّا اللهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْئٍ وَهُوَ الْغَنِـىُّ عَنْ كُلِّ شَيْئٍ وَكُلُّ شَيْئٍ مُحْتَاجٌ اِلَيْهِ .
مَا مَعْنٰى مُحَمَّدُ رَّسُوْلُ اللهِ ؟
مَعْنٰى مُحَمَّدُ رَّسُوْلُ اللهِ اَنَّهُ اِنْسَانٌ كَامِلٌ الْخَلْقِ وَالْخُلُقِ مُرْسَلٌ لِلْخَلْقِ كُلِّهِمْ بِشَرْعٍ نَاسِخٍ لِجَمِيْعِ الْشَرَائِعِ فَـلَا نَبِىَّ بَعْدَهُ اَبَدًا .
اُذْكُرْلَنَا سِيْرَةَ النَّبِىِّ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُجْمَلَةً ؟
وَلِدَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَكَّةَ الْمُكَرَّمَةِ وَرَضَعَ فِىْ بَنِىْ سَعْدٍ اَرْضَعَتْهُ حَلِيْمَةُ السَّعْدِيَّةُ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهَا وَمَكَثَ عِنْدَهَا اَرْبَعَةَ اَعْوَامٍ ثُمَّ رَدَّتْهُ اِلٰى
অত:পর তাঁর মাতার ইন্তিকাল পর্যন্ত তিনি তার মায়ের তত্ত্বাবধানে লালিত-পালিত হন। তখন তাঁর বয়স ছিল ছয় বছর। এরপর তাঁর দাদা আবদুল মোত্তালিব তাঁর লালন-পালনের ভার গ্রহণ করেন। তিনি প্রায়ই বলতেন, “নিশ্চয় আমার এ সন্তান এক সময় বড় মর্যাদার অধিকারী হবেন। তাঁর বয়স আট বছর হলে তাঁর দাদাও মারা যান। অত:পর তাঁর চাচা আবু তালেব তাঁর লালন-পালনের দায়িত্ব নেন। তিনি তাঁকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে লালন-পালন করেন এবং তাঁকে অত্যন্ত ভালবাসতেন। এমনকি ঘুমানোর সময় তাঁকে সাথে না নিয়ে ঘুমাতেন না। কোথাও গেলে তাঁকে সাথে নিয়েই যেতেন। তিনি চাচার নিকট স্বল্পে তুষ্টির প্রবাদ স্বরূপ ছিলেন।
তিনি খেলাধুলা থেকে বিরত থাকতেন। খাওয়ার সময় চাচার সন্তানরা কাড়াকাড়ি অবস্থায় আল্লাহ সুবহানাহু তা‘আলার পক্ষ থেকে যা মিলত তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করতেন। তিনি (ﷺ) গোত্রে সবচেয়ে সুন্দর চরিত্রের অধিকারী, সর্বাধিক সত্যবাদী ও আমানতদারীতে বিরল ছিলেন।
اُمِّهه فَحَضَنَتْهُ اِلٰى اَنْ تُوُفِّيَتْ وَهُوَ اِبْنُ سِتِّ سِنِيْنَ فَكَفَّلَهُ جَدُّهُ عَبْدُ المُطَّلِبِ وَكَانَ يَقُوْلُ: لَيَكُوْنَنَّ لِاِبْنِىْ هٰذَا شَأنٌ، ثُمَّ مَاتَ جَدُّهُ وَهُوَ اِبْنُ ثَمَانِيَّةِ اَعْوَامٍ فَكَفَّلَهُ عَمُّهُ اَبُوْطَالِبٍ فَاَحْسَنَ كِفَالَتَهُ وَأَحَبَّهُ حُبًّا شَدِيْدًا حَتّٰى كَانَ لَايَنَامُ اِلَّا اِلٰى جَانِبِه وَلَا يَخْرُجُ اِلَّا مَعَهُ وَكَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ عَمِّهِ مَثَلَ الْقَنَاعَةِ، وَالْبُعْدِ عَنِ اللَّهْوِ وَالْلَّعْبِ، فَكَانَ اِذَا حَضَرَ وَقْتُ الْاَكْلِ جَاءَ الْأَوْلَادُ يَخْتَطِفُوْنَ، وَهُوَ قَانِعُ بِمَا رَزَقَهُ اللهُ سُبْحَانَهُ وَتَعَالٰى وَكَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَحْسَنَ قَوْمِه خُلُقًا، وَاَصْدَقَهُمْ حَدِيْثًا، وَاَعْظَمَهُمْ اَمَانَةً، وَاَبْعَدَهُمْ عَنِ الْفُحْشِ وَالْاَخْلَاقِ الَّتِىْ تُدَنِّسُ الرِّجَالَ حَتّٰى كَانَ اَفْضَلَ قَوْمِه مَرُوْءَةً، وَاَكْرَمَهُمْ مَخَالَطَةً ،
মানুষকে কলুষিত করে এমন চরিত্র ও অশীল কর্মকান্ড থেকে অনেক দূরে থাকতেন। মানবতায় ও সামাজিকতায় সর্বোত্তম ও সর্বাধিক সম্মানী ছিলেন। প্রতিবেশী হিসেবে উত্তম ও ধৈর্য্যে মহত্বের অধিকারী ছিলেন। এ জন্যে তারা তাঁকে ‘আল আমিন’ উপাধিতে ভূষিত করেন।
চলিশ বছর বয়সে আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে সমগ্র বিশ্বের রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেন। নবুয়তের পর মক্কায় তের বছর অবস্থান করে মদিনা মুনাওয়ারায় হিজরতের নির্দেশ আসার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত মানুষকে আল্লাহর ইবাদতের দিকে আহ্বান করেন। মদিনায় দশ বছর অবস্থানকালে মানুষদেরকে প্রজ্ঞাময় প্রভুর একত্ববাদের প্রতি আহ্বান করতে থাকেন। ফলে ইসলাম চতুর্দিকে বিস্তর প্রসার লাভ করে। ফলে প্রতিমাগুলো ধ্বংস এবং কাফির-মুশরিকদের ওপর আল্লাহর গজব নাযিল হয়। বিরামহীন দাওয়াতের মিশন চলতে চলতে পরিশেষে সুসংবাদ বহনকারী আয়াত নাযিল হয়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করে দিলাম। আর তোমাদের জন্যে ইসলামকে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।২০
➖➖➖➖➖➖➖
২০. আল-কুরআন, সূরা মাইদাহ, আয়াত: ৩
وَخَيْرُهُمْ جِوَارًا، وَاَعْظَمَهُمْ حِلْمًا، فَلِذَا سَمُّوْهُ بِالْأَمِيْنِ .
ثُمَّ اَرْسَلَهُ اللهُ تَعَالٰى رَحْمَةً لِلْعَالَمِيْنَ وَهُوَ اِبْنُ اَرْبَعِيْنَ سَنَةً وَمَكَثَ بِمَكَّةَ بَعْدَ ذٰلِكَ ثَلَاثَةَ عَشَرَ سَنَةً يَدْعُوْ النَّاسَ اِلٰى عِبَادَةِ اللهِ تَعَالٰى اِلٰى اَنْ اَتَاهُ الْاِذْنُ بِالْهِجْرَةِ اِلٰى الْمَدِيْنَةِ الْمُنَوَّرَةِ .
فَمَكَثَ بِهَا عَشَرَ سِنِيْنَ يَدْعُو النَّاسَ اِلٰى تَوْحِيْدِ الصَّانِعِ الْحَكِيْمِ فَانْتَشَرَالْاِسْلَامُ اِنْتِشَارًا كَثِيْرًا وَكُسِرَتِ الْاَصْنَامُ، وَقُهِرَتِ الْكَفَرَةُ، وَالْمُشْرِكُوْنَ، وَلَمْ يَزَلْ دَاعِيًا اِلَى اللهِ حَتّٰى نَزَلَ قَوْلُهُ تَعَالٰى ্থاَلْيَوْمَ اَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَاَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِىْ وَرَضِيْتُ لَكُمْ الْاِسْلَامَ دِيْنًا‘ .
وَتَـوَفّٰى صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَـلَّـمَ ،
আমাদের জন্য মহান গ্রন্থ আল-কুরআন রেখে তিনি তেষট্টি বছর সংগ্রামী জীবনের ইতি টানেন ও মদিনায় মুনাওয়ারায় সমাধিস্থ হন।
প্রজ্ঞাময় ও প্রশংসিত সত্তার পক্ষ হতে অবতীর্ণ কোরআনে পাকে তাঁর বর্তমান ও অবর্তমানে কোন অপশক্তি গ্রাস করতে পারেনি। তিনি আমাদের মাঝে এমন বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা পূত-পবিত্র শরীয়ত উপস্থাপন করেন- যা মধুর চেয়েও অধিক সুস্বাদু এবং সুমিষ্ট পানি থেকেও অধিকতর পরিচ্ছন্ন।
নবী (ﷺ) এর সৃষ্টিগত গুণাবলীর বিবরণ দাও।
নবী করীম (ﷺ) উঁচু টান মাঝারি আকৃতির ধবধবে উজ্জ্বল শুভ্র বর্ণের, বড় মস্তক ও সুন্দর চুলের অধিকারী ছিলেন। তাঁর চুল ও দাঁড়ি মিলে শুধু সতেরটি সাদা হয়েছিল। প্রশস্ত কপাল, প্রশস্ত চক্ষুদ্বয় খুবই সুন্দর আকৃতির চোখের পুতলি কাল অংশ অধিক কাল, সাদা অংশ অধিক সাদা লাল বর্ণযুক্ত, ঘন চুল, ঘন ব্রু, উঁচু নাক, উঁচু বিহীন মসৃণ গাল, প্রশস্ত মুখ, সামান্য ফাঁক বিশিষ্ট পরস্পরকে পার্থক্য করা যায় এমন দাঁতের অধিকারী ছিলেন।
وَدُفِـنَ بِالْمَدِيْنَةِ الْمُنَوَّرَةِ، وَهُوَ اِبْنُ ثَـلَاثِ وَسِتِّيْنَ سَنَةً بَعْدَ اَنْ تَرَكَ لَـنَا قُرْأٰنًا عَظِيْمًا . لَايَاتِيْهِ الْبَاطِلُ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَلَا مِنْ خَلْقِه تَنْـزِيْلُ مِنْ حَكِيْمٍ حِمِيْدٍ وَبَيَّنَ لَـنَا الشَّرِيْعَةَ الْمُطَهَّرَةَ بِاَحَادِيْثَ اَحْلٰى مِنَ الشَّهْدِ وَاَصْفٰى مِنَ الزُّلَالِ .
بَيِّنُ لَـنَا بَعْضَ اَوْصَافِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْخَلْقِيَّةِ ؟
كَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَبَعَةً اِلٰى الطَّوْلِ اَقْرَبَ، اَزْهَرَ الْلَّوْنِ اَىْ صَافِىَ الْبَيَاضِ عَظِيْمَ الرَّاسِ حَسْنَ الشَّعْرِ وَلَمْ يَشِبْ مِنْ رَأْسِه وَلِحْيَتِه اِلَّا سَبْعَ عَشَرَةَ شَعْرَةً، وَاسِعَ الْجَبِيْنِ اَنْجَلَ الْعَيْنَيْنِ اَىْ وَاسِعَ الْعَيْنَيْنِ مَعَ حُسْنٍ فِيْهِمَا اَشْكَلَهُمَا اَىْ فِىْ بَيَاضِ عَيْنَيْهِ حَمْرَةٌ اَدْعَجَهُمَا اَىْ شَدِيْدَ سَوَادِ الْحَدَقَةِ وَشَدِيْدَ بِيَاضِ الْبِيَاضِ
ঘন দাঁড়ি গোলাকার মুখমন্ডল পূর্ণিমার চন্দ্রের ন্যায় উজ্জ্বল ও চকচক্ করত, রৌপ্যের চেয়েও চকমকে সামান্য লম্বা গর্দানের অধিকারী ছিলেন। যেমন উম্মে মা‘বদের বর্ণিত হাদিসে এসেছে, নবুয়তের মোহর উভয় কাঁধের মাঝে সামান্য বাম দিকে ধাবিত ছিল। ইহা কবুতরের ডিমের তুল্য লাল বর্ণে ধাবিত হালকা পাতলা মাংসের টুকরা। প্রশস্ত কাঁধদ্বয়, প্রশস্ত বক্ষ, উভয় হাতে ও কাঁধে লোম বিশিষ্ট উঁচু বক্ষ তথা ঘন লোম বিশিষ্ট, উভয় হাতের গিড়া লম্বা, অনুভূতি ও অর্থে প্রশস্ত হাতের তালু, লম্বা ও মাঝারি মোটা আঙ্গুল ছিল। পেট ও বক্ষ এক বরাবর-এ অর্থে পেটে স্বল্প মাংস ও হাঁড়ের জোড়াগুলো মোটা আকারের ছিল।
বক্ষের উপরিভাগ থেকে নাভি পর্যন্ত লোমে আবৃত ছিল। পায়ের পিন্ডলী হালকা স্বল্প মাংস বিশিষ্ট ওপরের সাথে মিলানো ছিল,
أَهْدَبَ الْاَشْفَارِ اَىْ كَثِيْرُ شَعْرِ حَرُوْفِ الْاَجْفَانِ، اَقْنَى الْعَرِنَيْنِ اَىْ مُرْتَفِعَ الْأَنْفِ سَهَلَ الْخَدِّ اَىْ غَيْرَ مُرْتَفِعِ الْوَجْنَتَيْنِ وَاسِعَ الْفَمِ، مُتَفَرِّجَ الْاَسْنَانِ اَىْ مُتَمَيِّزًا بَعْضُهَا عَنْ بَعْضٍ .
كَتَّ الْلِّحْيَةِ أَىْ غَلِيْظَهَا وَمُدَوَّرَ الْوَجْهِ يَتَلَالَأُ وَجْهُهٗ كَالْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدَرِ عُنُقَهُ مِنْ صَفَاءِ الْفِضَّةِ اَزْهَرَ، وَفِيْهِ طُوْلٌ مُفْرَطٌ، كَمَا جَاءَ عَنْ اُمِّ مَعْبَدٍ فِى الْخَبْرِ وَكَانَ خَاتَمُ النَّبُوَّةِ بَيْنَ كَتِفَيْهِ لَكِنَّهُ اِلَى الْأَيْسَرِ اقْرَبُ، وَهُوَ مِنْ لَحْمٍ بَارِدٍ قَدَرَ بَيْضِ الْحَمَامَةِ يَمِيْلُ اِلٰى الْحُمْرَةِ عَظِيْمَ الْمِنْكَبَيْنِ، عَرِيْضَ الصَّدْرِ اَشْعَرَ الذِّرَاعَيْنِ وَالْمِنْكَبَيْنِ وَعَالِىَ الصَّدْرِ بِمَعْنٰى اَنَّ هٰذِه كَانَتْ كَثِيْرَةَ الشَّعْرِ طَوِيْلَ الزَّنْدَيْنِ وَاسِعَ الْكَفِّ حِسًّا وَمَعْنًى مُمْتَدَّ الْاَصَابِعِ غَلِيْظَهَا مِنْ غَيْـرِ اِفْرَاطٍ، بَـطْـنُـهُ
গোলাকৃতি মোটাসোটা ছিল না। নবী (ﷺ) এর দৈহিক গুণাবলী মধ্যম পন্থার ছিল। তিনি শক্তভাবে চলতেন যেন কোন উঁচু জায়গা থেকে নামতেছেন। এতদসত্তেও তাঁর চলাতে ধীরস্থিরতার ও ভদ্রতার অনুপম দৃষ্টান্ত ছিল। পা দ্বারা মাটিতে আঘাত করে চলতেন না। কোন দিকে ফিরলে পরিপূর্ণভাবে ফিরতেন। তিনি সর্বদা উভয় পার্শ্বকে নিম্মগামী রাখতেন। অর্থাৎ তাঁর মধ্যে নম্র, ভদ্র ভাব পরিলক্ষিত হত। আকাশের চেয়েও জমিনের দিকে বেশী বেশী দৃষ্টি রাখতেন। কেননা নিম্মগামী চিন্তা-ভাবনা, সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে অধিক সাহায্য করে। তিনি সর্বদা মুচকি হাসতেন। সদা চিন্তামগ্ন থাকতেন। তিনি বাহ্যিক চক্ষুদৃষ্টির চেয়েও অন্তর দৃষ্টিতে নিমগ্ন থাকতেন। লোভী ব্যক্তির লোভনীয় দৃষ্টির ন্যায় তাঁর দৃষ্টি ছিল না। যখন কথা বলতেন তাঁর সানায় দাঁতের ফাঁক দিয়ে জ্যোতি বের হত।
وَصَدْرُهُ سَوَاءٌ أَىْ مُسْتَوِيَانِ وَذٰلِكَ كِنَايَةٌ عَنْ ضُمُوْرِ بَطْنِه ضَخْمَ الْكَرَادِيْسِ أَىْ عَظَيْمَ عِظَامَ الْمَفَاصِلِ لَهُ شَعْرَاتُ مِنْ لَبَّتِه اِلٰى سُرَّتِه وَكَانَ فِىْ سَاقَيْهِ حُمُوْشَةٌ اَىْ دِقَّةٌ مَسِيْحَ الْقَدَمَيْنِ مُنْحَوِسَ الْعَقِبٍ: أَىْ قَلِيْلَ لَحْمِ مُؤَخَّرَ الْقَدَمِ، مُعْتَدِلَ الْخَلْقِ فِىْ جَمِيْعِ صِفَاتِ ذَاتِه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكَانَ اِذَا مَشٰى تَقَلَّعَ أَىْ مَشٰئ بِقُوَّةٍ كَاَنَّمَا يَنْحَطُّ مِنْ صَبَبِ أَىْ مَكَانٍ مُنْحَدِرٍ وَمَعَ ذٰلِكَ فَكَانَ مَشْيُهُ هَوْنًا أَىْ بِسَكِيْنَةٍ وَوَقَارٍ وَلَا يَضْرِبُ بِقَدَمِه الْاَرْضَ وَاِذَا اِلْتَفَتَ الْتَفَتَ جَمِيْعًا وَكَانَ خَافِضَ الطَّرْفِ وَهُوَ كِنَايَةٌ عَنْ لَيْنِ جَانِبِه، وَشِدَّةِ خِيَاثَةِ نَظَرِه اِلٰى الْاَرْضِ اَقْرَبَ مِنْ نَظَرِه اِلٰى السَّمَاءِ لِاَنَّهُ اَجْمَعُ لِلْفِكْرِ وَاَوْسَعُ لِلْاِعْتِبَارِ وَكَانَ ضَحِكُهُ تَبَسُّمًا مَتَوَاصِلَ
তাঁর আঙ্গুলগুলো রূপার ডালের ন্যায় ছিল। হাতের তালু রেশমী সুতার চেয়েও অধিক নরম, এত সুগন্ধিময় মনে হত যেন এ হাত আঁতর দ্বারা তৈরী করা হয়েছে। কোন শিশুর মাথায় হাত বুলালে ঐ শিশু অন্যান্য শিশুদের মাঝে হাতের সুগন্ধির কারণে পরিচিত ও প্রসিদ্ধ হয়ে যেত। তাঁর ঘাম মুক্তার ন্যায় সাদা ও মিশকের ন্যায় সুগন্ধিময় ছিল। তাঁর গুণকীর্তন বর্ণনাকারীর ভাষায়- আমি তাঁর আগে-পরে কখনো সৃষ্টিকুলে তাঁর উপমা দেখিনি।
হে মাওলা! সদা-সর্বদা রহমত ও শান্তি বর্ষণ করুন সৃষ্টিকুলের সর্বশ্রেষ্ঠ আপনার হাবীবের ওপর।
রাসূল (ﷺ)-এর কিছু চারিত্রিক গুণাবলী আমাদের বর্ণনা কর।
তিনি রহমানের গুণে গুণান্বিত ছিলেন। তাঁর স্বভাব-চরিত্র হুবহু কোরআনে পাকের অনুরূপ ছিল। সকল প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য গুণাবলী তাঁর মধ্যে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। এজন্য তিনি উভয়কালের সরদার হয়েছেন। আল্লাহর কাছেও তিনি
الْأَحْزَانِ، جَلُّ نَظَرِه الْمُلَاحَظَةُ أَىْ مُعَظَّمُ نَظْرِه بِلِحَاظِ الْعَيْنِ أَىْ شِقِّهَا وَلَمْ يَكُنْ كَنَظْرَةِ اَهْلِ الْحَرْصِ اِذَا تَكَلَّمَ رُوِّىَ الْنُوْرُ يَخْرُجُ مِنْ بَيْنِ ثَنَايَاهُ وَكَانَتْ اَصَابِعُهُ كَانَّهَا قَضْبَانُ فِضُّهُ اَلْيَنُ مِنَ الْحَرِيْرِ كَانَّهَا كَفُّ عَطَّارٍ يَضَعُ يَدَهُ عَلٰى رَأْسِ الصَّبِىِّ فَيُعْرَفُ مِنْ بَيْنِ الصِّبْيَانِ بِرِيْحِهَا، وَعِرَقُهُ كَالْلُّؤْلُؤِ فِى الْبِيَاضِ وَكَالْمِسْكِ فِى الرَّائِحَةِ يَقُوْلُ وَاصِفُهُ لَمْ اَرَ قَبْلَهُ وَلَابَعْدَهُ مِثْلَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
مَوْلَايَا صَلِّ وَسَلِّمْ دَائِمًا أبَدًا ۞
عَلٰى حَبِيْبِكَ خَيْرِ الْخَلْقِ كُلِّهِم
اُذْكُرْ لَـنَا شَيْئًا مِنْ اَوْصَافِـهِ الْخُلُقِيَّـةِ ؟
كَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُتَخَلَّقًا بِاَخْلَاقِ الرَّحْمٰنِ اِذْ كَانَ خُلُقُهُ الْقُرْآنَ قَــدْحُوِىَ الْكَمَالَاتِ الْبَاطِنِيَّةِ وَالظَّاهِرِيَّةِ وَبِهَاسَادَ اَهْلَ
সবচেয়ে দানশীল ও সর্বাধিক সম্মানিত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন-‘এবং নিশ্চয় আপনি সুমহান চরিত্রের অধিকারী।’২১
এতদসত্ত্বেও তিনি অধিক বিনয়ী ছিলেন, তিনি রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের দেখতে যেতেন, জানাযায় উপস্থিত হতেন, ফকির-মিসকিনদের ভালবাসতেন, তাদের সাথে মজলিসে বসতেন, বাজার থেকে পরিবার পরিজনের জিনিসপত্র নিজ হাতে বহন করতেন, ধনী-দরিদ্র সবার সাথে করমর্দন করতেন, যারা তাঁর সাথে সাক্ষাতে আসতেন প্রথমে সালাম দিতেন ও করমর্দান করতেন, গাধায় আরোহী হতেন, দাওয়াত গ্রহণ করতেন যদিও যবের একটি রুটির দাওয়াত হয়। তিনি বলতেন-‘ছাগলের একটি পাও হাদিয়া বা দাওয়াতে দেয়া হলে তিনি তা গ্রহণ করবেন।’ তিনি নিজ কাপড় সেলাই করতেন, ছাগলের দুধ দোহাতেন, নিজের কাজ নিজে করতেন। কেউ প্রয়োজনে কিছু চাইলে মোচন করতেন বা সান্তনা মূলক জবাব দিতেন। কোন সমাবেশে গমন করলে খালিস্থানে বসে পড়তেন। উপস্থিত সমাবেশের সদস্যবৃন্দ ও সভাসদ সকলের স্বীয় মর্যাদানুযায়ী সম্মান ও শুভেচ্ছা দিতেন।
➖➖➖➖➖➖➖
২১. আল-কুরআন, সূরা ক্বলম, আয়াত: ৪
الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ، وَكَانَ اَكْرَمَ عَلٰى اللهِ مِنْ كُلِّ كَرِيْمٍ قَالَ اللهُ تَعَالٰى وَإِنَّكَ لَعَلٰى خُلُقٍ عَظِيْمٍ وَكَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُتَوَاضِعًا يَعُوْدُ الْمَرِيْضَ وَيَشْهَدُ الْجَنَازَةَ وَيَحُبُّ الْفُقْرَاءَ وَالْمَسَاكِيْنَ وَيَجْلُسُ مَعَهُمْ وَيَحْمَلُ بِضَاعَتَهُ مِنَ السَّوْقِ اِلٰى اَهْلِه وَيُصَافِحُ الْفَقِيْرَ وَالْغَنِىَّ وَيَبْدَأُ مَنْ لَقِيَهُ بِالسَّلَامِ وَالْمُصَافَحَةِ وَيَرْكَبُ الْحَمِيْرَ وَيَجِيْبُ الدَّعْوَةَ وَلَوْ كَانَتْ اِلٰى خُبْزِ شَعِيْرٍ وَقَالَ لَوْ اُهْدِىَ اِلَىَّ كَرَاعٌ اَىْ رِجْلُ شَاةٍ لَقَبِلْتُ وَلَوْدُعِيْتُ اِلَيْهِ لَأَجَبْتُ وَكَانَ يُفَلِّـىْ ثَوْبَهُ وَيَحْلُبُ الشَّاةَ وَيَخْدُمُ نَفْسَهُ مِنْ غَيْرِ مُبَالَاةٍ وَمَنْ سَالَهُ حَاجَةً لَايَرُدُّهُ اِلَّا بِهَا. اَوْ بِقَوْلٍ مُؤْنِسٍ ، وَاِذَا اَنْتَهٰى اِلٰى قَوْمٍ جَلَسَ حَيْثُ يَنْتَهِىْ بِه الْمَجْلِسُ اَىْ جَلَسَ فِىْ الْمَكَانِ الْخَالِىْ مِنْهُ
তাই মজলিসের প্রত্যেকেই মনে করতেন তিনিই হুযুর পাকের নিকট অন্যের তুলনায় অধিক সম্মানিত ও সমাদৃত। কোন মজলিস তিনি ত্যাগ করা ব্যতীত তাঁকে কেউ ত্যাগ করে যেতেন না। কেউ কিছু বললে শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাঝখানে তিনি কিছু বলতেন না, যাতে তার বক্তব্যের বিঘ্নতা না ঘটে। সহচরদের মধ্যে কেউ অনুপস্থিত থাকলে তার খবরা-খবর নিতেন। প্রত্যেকের স্ব স্ব মান-সম্মান, জ্ঞান ও গুণ মোতাবেক তাদের ন্যায্য হাদিয়া, উপঢৌকন, সম্মান সূচক উপাধি ইত্যাদি প্রদান করতেন। কারো প্রতি ঘৃণা করতেন না। অনর্থক কথা থেকে বিরত থাকতেন। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের সম্মানিত ব্যক্তিদের যথাযথ সম্মান করতেন এবং জ্ঞান, লজ্জা, ধৈর্য্য ও আমানতদারীর মজলিস অনুরূপভাবে অন্যান্য মজলিসের পরিচালনার দায়িত্ব ও জিম্মাদারী তাদের ওপর ন্যস্ত করতেন। তিনি অন্যায়ভাবে কারো মোকাবেলা করতেন না, মন্দের শাস্তি মন্দ দ্বারা দিতেন না বরং ক্ষমা ও সমাধান করে দিতেন। জিহাদ ব্যতীত কখনো কাউকে নিজ হাতে শাস্তি দিতে না। কারো গোপনীয় বিষয় ও রক্ত তালাশ করেন নি। হ্যাঁ! তবে যে সব বিষয়ে বান্দার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে পূণ্য নিহিত রয়েছে।
তিনি বদান্যতা ও কল্যাণে সর্বাপেক্ষা
وَيَعْطِىْ كُلَّ اَحَدٍ مِنْ جُلَسَائِه نَصِيْبًا مِنَ الْاِكْرَامِ وَالْاِقْبَالِ حَتّٰى يَحْسِبُ كُلُّ مِنْهُمْ اَنَّهُ اَكْرَمُ عَلَيْهِ مِنْ كُلِّ مَنْ فِى الْمَجْلِسِ مِنَ الرِّجَالِ مَنْ جَالَسَهُ اَوْ فَاَوَضَهُ أَىْ قَابَلَهُ لَايَنْصَرِفُ عَنْهُ حَتّٰى يَكُوْنَ هُوَالْمُنْصَرِفُ وَلَا يُقْطَعُ عَلٰى اَحَدٍ حَدِيْثَهُ حَتّٰى يَسْكُتَ عَنْهُ وَيَتَفَقَّدُ اَصْحَابَهُ أَىْ يَسْأَلُ عَمَّنْ غَابَ مِنْهُمْ وَيَبْذُلُ لِكُلِّ مَا يَلِيْقُ لَـهُ مِنَ الْاَقْوَالِ وَالْاَفْعَالِ وَيُوْ فَدُهُمْ أَىْ يُعْطِيْهِمْ وَلَا يُنَفَّرُهُمْ وَيَمْنَعُ لِسَانَهُ عَمَّا لَا يَعْنِيْهِ وَيُكْرِمُ كَرِيْمَ كُلِّ قَوْمٍ وَعَلَيْهِمْ يُؤَلِّيْهِ مَجْلِسَهُ مَجْلِسَ،
عِلْمٍ وَحَيَاءٍ وَصَبْرٍ وَاَمَانَةٍ وَمَا كَانَ مِثْلَ ذٰلِكَ وَكَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَايُقَابِلُ اَحَدًا بِمَكْرُوْهٍ وَلَا يَجْزِىْ بِالسَّيِّئَةِ السَّيِّئَةَ وَلٰكِنْ يَعْفُوْ وَيَصْفَحُ وَمَا ضَـرَبَ بِيَدِه شَيْئًا قَطُّ اِلَّا فِـىْ
অগ্রগামী ছিলেন এবং কুমারী মহিলার চেয়েও অধিক লজ্জাশীল ছিলেন। উম্মুল মু’মেনীন হযরত আয়শা ছিদ্দিকা (رضي الله عنه) বলেন- ‘আমি কখনো আল্লাহর রাসুলের (ﷺ) লজ্জাস্থান দেখিনি।’ তিনি রসিকতা করতেন কিন্তু সর্বদা সত্যই বলতেন। রূপক অর্থ ব্যবহার করতেন ঠিকই কিন্তু সত্যই বলতেন। সাহাবাদের মজলিসে তিনি যখন বক্তব্য রাখতেন তাঁরা পরিপূর্ণ নিরবতা ও পূর্ণ স্থিরতার সাথে মাথা এভাবে ঝুঁকিয়ে রাখতেন যেন মাথার ওপর পাখি অবস্থান করছে। তিনি বক্তব্য শেষ করলে তাঁরা কথা বলতেন। আরববাসীদের মন্দ ব্যবহার, অশালীন ও অভদ্র আচরণে ধৈর্য্য ধারণ করতেন। খাদেমকে কখনো ধমক দেননি, কৃতকর্মের কেফিয়ত চাননি এবং একথাও বলেননি তুমি কেন এরকম করেছ❓ বর্জনকৃত বিষয়ে কখনো একথা বলেননি তুমি কেন বর্জন করেছ❓ বরং বলতেন যে ভাগ্যে থাকলে হয়ে যাবে। তাঁকে কাফিরদের ক্ষেত্রে বদ্দোয়া করার অনুরোধ করা হলে তিনি বলতেন, ‘আমাকে তো রহমত স্বরূপ প্রেরণ করা হয়েছে। হে আল্লাহ! আমার সম্প্রদায়কে হিদায়াত করুন, কেননা তারা বুঝতেছে না।’ তিনি অশালীন, কৃপণ ও কাপুরুষ ছিলেন না। মানুষকে ভয় প্রদর্শন করতে না। নিজকে তাদের অনিষ্টা
اَلْجِهَادِ وَمَا طَلَبَ عَوْرَةَ اَحَدٍ وَلَا دَمَهُ اِلَّا فِيْمَا رَجَابِه ثَوَابَ رَبِّ الْعِبَادِ.
وَكَانَ اَجْوَدَ النَّاسِ بِالْخَيْرِ وَكَانَ حَيَاءُهُ مِنَ الْبِكْرِ فِىْ خِدْرِهَا اَشَدَّ وَاَعْظَمَ وَقَدْ قَالَتْ عَائِشَةُ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا مَا رَأَيْتُ فُرْجَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَمْزَحُ وَلَايَقُوْلُ اِلَّا حَقًّا وَيُوَرِّىْ وَلَا يَقُوْلُ اِلَّا صَدْقًا اِذَا تَكَلَّمَ اَطْرَقَ جُلَسَاؤُهُ كَاَنَّمَا عَلٰى رُؤُسِهِمِ الْطَّيْرُ وَاِذَا سَكَتَ تَكَلَّمُوْا. يَصْبِرُ لِلْعَرِيْبِ عَلٰى الْجَفْوَاةِ اَىْ السَّقْطَةِ الْعَلَطَةِ فِى الْمَنْطِقِ وَلَا اِنْتَهَرَ خَادِمًا وَلَا قَالَ لَهُ فِىْ شَيْئٍ صَنَعَهُ لِمَ صَنَعْتَهُ وَلَا فِىْ شَيْئٍ تَرَكَهُ لِمَ تَرَكْتَهُ؟ بَلْ يَقُوْلُ لَوْ قُدِّرَ يَكُوْنُ، وَلَمَّا قِيْلَ لَهُ اُدْعُ عَلٰى الْكُفَّارِ قَالَ اِنَّمَا بُعِثْتُ رَحْمَةً اَللّٰهُمَّ اِهْدِ قَوْمِىْ فَاِنَّهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ. وَلَمْ يَكُنْ فَحَّاشًا اَىْ كَثِيْرَالْفَحْشِ
থেকে হিফাযতে রাখতেন। আল্লাহর জিকির ব্যতীত উঠা-বসা করতেন না। শক্রতের মাঝে একাকি চলাফেরা করতেন আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ আস্থা হেতেু তাদেরকে পরোয়া করতেন। কবর জিয়ারত করতেন, কবরবাসীদের সালাম দিতেন এবং তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করতেন। সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় থাকতেন, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সদাচরণ করতেন, এমনকি স্ত্রীদের সাথেও। শান্ত ও রাগান্বিত সর্বাবস্থায় সত্য কথাই বলতেন। যখন ওয়াজ করতেন স্বীয় চক্ষুদ্বয় লাল হয়ে যেত, আওয়াজ বড় হয়ে যেত, মনে হত যেন তিনি সৈন্যদলকে ভয় প্রদর্শন করছেন। নিজের জন্য এবং নিজের সাহায্যের জন্য রাগ করতেন না। যখন খুশি হতেন চেহারা খুবই উজ্জ্বল হত, মনে হত চন্দ্রের টুকরো। সামনের থেকে কাউকে দূরীভূত করতেন না, পিছনে চলার থেকে বারণ করতেন। তিনি বলতেন, ‘আমার পিছনে ফিরিস্তাদের জন্য খালি রাখুন।’ লাব্বাইক ব্যতীত কারো সাড়ার উত্তর দিতেন না। খাদেমদের সাথে খেতে বসতেন।
হে মাওলা! সদা-সর্বদা রহমত ও শান্তি বর্ষণ করুন সৃষ্টিকুলের সর্বশ্রেষ্ঠ আপনার হাবীবের ওপর।
নবী করীম (ﷺ)’র আহার পদ্ধতিঃ
وَلَا بَخِيْلًا وَلَا جَبَانًا وَيَحْذُرُ النَّاسَ وَيَحْتَرِسُ مِنْهُمْ لَايَجْلِسُ وَلَايَقُوْمُ اِلَّا عَلٰى ذِكْرِاللهِ تَعَالٰى وَيَمْشِىْ وَحْدَهُ بَيْنَ اَعْدَائِه لَايُبَالِىْ بِهِمْ وُثُوْقًا بِرَبِّه، وَيَزُوْرُ الْقُبُوْرَ، وَيُسَلِّمُ عَلَيْهِمْ وَيَسْتَغْفِرُ لَهُمْ وَكَانَ دَائِمَ الْبَشَرِ اَىْ طَلَقَ الْوَجْهِ، حَسَنَ الْعِشْرَةِ حَتّٰى لِاَزْوَاجِهِ وَلَا يَقُوْلُ فِى الرِّضٰى وَالْغَضَبِ اِلَّا الْحَقَّ وَاِذَا وَعَظَ اِحْمَرَّتْ عَيْنَاهُ وَعَلَا صَوْتُهُ كَاَنَّهُ مُنْذِرَ جَيْشٍ وَلَا يَغْضَبُ لِنَفْسِه وَلَا يَنْتَصِرُ لَهَا وَاِذَا سَرَّ اِسْتَنَارَ وَجْهُهُ كَاَنَّهُ قِطْعَةُ قَمَرٍ. وَلَا يَتْرُكُ اَحَدًا يَقُوْمُ بَيْنَ يَدَيْهِ وَلَا يَمْشِىْ خَلْفَهُ وَيَقُوْلُ خَلُّوْا ظَهْرِىْ لِلْمَلَائَكَةِ، لَايَدْعُوْهُ اَحَدٌ اِلَّا قَالَ لَهُ لَبَّيْكَ وَيَجْلِسُ لِلْأَكْلِ مَعَ الْعَبِيْدِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
مَوْلَا يَاصَلِّ وَسَلِّمْ دَائِمًا أَبَدًا ۞
عَلٰى حَبِيْبِكَ خَيْرِ الْخَلْقِ كُلِّهِم .
নবী করীম (ﷺ) উভয় হাঁটু মিলায়ে বাম পায়ের পেট ডান পায়ের পিটের ওপর রেখে খেতে বসতেন। তিন আঙ্গুল, বৃদ্ধাঙ্গুল, মধ্যমাঙ্গুল ও শাহাদাতাঙ্গুল দ্বারা খানা খেতেন। খাওয়ার পর উক্ত ধারাবাহিকতায় আঙ্গুল চুষে খেতেন। বেশী ক্ষুধার্ত অবস্থায় খেতেন। খাবার হিসেবে যা পেতেন তাহাই খেতেন। কখনো কোন খাবারের দুর্নাম করেননি। খেজুর ও পানি তাঁর নিত্য খাবার ছিল। মাংস সবচেয়ে প্রিয় খাদ্য ছিল। তিনি বলতেন, ’নিশ্চয়ই ইহা শ্রোতাদের শ্রবণশক্তি বৃদ্ধি করে।’ তিনি লাউ (বাংলা কদু) পছন্দ করতেন এবং বলতেন, ‘ইহা চিন্তিত আত্মাকে মজবুত করে।’ রুটি ও চিনি দ্বারা খরবুজ খেতেন। মাঝে মধ্যে রুতব (তাজা খেজুর) দিয়েও খেতেন। ছাগলের রান ও ঘাড় পছন্দ করতেন। খেজুরের মধ্যে আজওয়া (উত্তম খেজুর) পছন্দ করতেন এবং বলতেন, ‘এগুলো জান্নাতের এগুলো বিষ ও জাদু থেকে হিফাযতকারী ও প্রতিরোধকারী।”
صِفْ لَـنَا اَكْلَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟
كَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا جَلَسَ لِلْأَكْلِ جَثّٰى عَلٰى رُكْبَتَيْهِ، وَوَضَعَ بَطْنَ قَدَمِه الْيُسْرٰى عَلٰى ظَهْرِ الْيُمْنٰى وَكَانَ يَأْكُلُ بِاَصَابِعِه الثَّلَاثَةِ. اَلْوُسْطٰى وَالسَّبَّابَةِ وَالْاِبْهَامِ وَكَانَ يَلْعَقُهَا بَعْدَ الْأَكْلِ عَلٰى هٰذَا التَّرْتِيْبِ وَكَانَ لَايَأْكُلُ اِلَّا عِنْدَ شَدَّةِ الْجُوْعِ وَكَانَ يَأْكُلُ كُلَّ مَاوَجَدَ، وَمَا ذَمَّ طَعَامًا قَطُّ، وَكَانَ اَكْثَرَ طَعَامِه التَّمَرُ وَالْمَاءُ، وَاللَّحْمُ اَحَبُّ اِلَيْهِ مِنْ غَيْرِه، وَيَقُوْلُ: اِنَّهُ يَزِيْدُ فِىْ سَمْعِ السَّامِعِيْنَ وَكَانَ يُحِبُّ الْقَرْعَ وَيَقُوْلُ اِنَّهُ يَشُدُّ الْقَلْبَ الْحَزِيْنَ وَكَانَ يَأْكُلُ الْبِطِّيْخَ بِالْخُبْزِ وَبِالسَّكْرِ وَرُبَّمَا اَكَلَهُ بِالرُّطْبِ وَيُحِبُّ مِنَ الشَّاةِ الذِّرَاعَ وُالْكَتِفَ وَمِنَ التَّمَرِ الْعَجْوَةَ وَقَالَ هِىَ مِنَ الْجَنَّةِ وَهِىَ مِنَ السُّمِّ وَالسَّحْرِ وِقَايَةٌ وَجُنَّةٌ، وَكَانَ يَلْعَقُ
পেট চুষে খেতেন এবং বলতেন, ‘অধিকাংশই শেষের খাবারে বরকত থাকে।’
রসুন, পিয়াজ ও কুর্রাছ (গন্ধ সবজি) খেতেন না। আঙ্গুল তিনবার চুষে খেতেন। ভুসি (খোসা) থেকে উৎপাদিত উত্তম ময়দার রুটি ভক্ষণ না করা অবস্থায় তিনি প্রভুর সাক্ষাত করেছেন। উঁচু স্থানে রেখে খাননি। রুটি ও মাংস উদর ভরে একদিনে দু’বার খাননি। প্রভুর ডাকে সাড়া দেয়া পর্যন্ত পরস্পর লাগাতর দু’দিন যবের রুটি ভক্ষণ করেননি। লাগাতর অনেক রাত্রি খাবার বিহীন কাটাতেন এবং পরিবারবর্গও রাত্রির খাবার পেতেন না। মাসের পর মাস চলে যেত তাঁর ঘরে আগুন জলত না (খাবার পাকানো হত না)। তাঁদের জন্য শুধু পানি আর খেজুরই সম্বল ছিল। উট, ছাগল, মুরগীর মাংস, মাছ, তাজা খেজুর, খেজুর দিয়েও রুটি খেতেন। সিরকা, চর্বি ও জাইতুন তেলর সাথেও একত্রিত করে খেতেন। পনির ও ছরিদকে (রুটিকে সুরবার সাথে মিশায়ে) খেতেন। আঙ্গুর ও খরবুজ তাঁর প্রিয় ফল। তিনি একাকী খেতেন না। পাখির মাংস খেতেন কিন্তু শিকার করতেন না।
الْقَصْعَةَ وَيَقُوْلُ: اٰخِرُ الطَّعَامِ اَكْثَرُهُ بَرَكَةً. وَلَمْ يَأْكُلِ الثَّوْمَ وَلَا الْبَصَلَ وَلَاالْكُرَّاثَ وَكَانَ يَلْعَقُ اَصَابِعَهُ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ وَمَا أَكَلَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْخُبْزَ الْنَّقِىَّ مِنَ النَّخَالَةِ حَتّٰى لَقِىَ رَبَّهُ عَلٰى هٰذِهِ الْحَالَةِ وَلَمْ يَاْكُلْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلٰى خَوَانٍ . اَىْ شَيْئٍ مُرْتَفَعٍ وَلَا شَبَعَ مِنْ خُبْزٍ وَلَحْمٍ مَرَّتَيْنِ فِىْ يَوْمٍ وَاحِدٍ وَلَا مِنْ خُبْزٍ الشَّعِيْرِ يَوْمَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ حَتّٰى لَقِىَ الْوَاحِدَ. وَيَبِيْتُ الْلَّيَالِىْ الْمُتَتَابِعَةَ طَاوِيًا وَاَهْلُهُ لَا يَجِدُوْنَ عَشَاءً .
وَكَانَ يَمْضِىْ الشَّهْرَ وَمَا يُوْقَدُ فِىْ بَيْتِه الْجَمْرُ مَاهُوَ اِلَّا الْمَاءُ وَالتَّمَرُ وَأَكَلَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَحْمَ الْاِبْلِ وَالْغَنَمِ وَالدُّجَاجِ وَالسَّمَكَ وَالرُّطْبَ وَالْخُبْزَ بِتَمَرٍ وَبِخَلٍّ وَبِشَحْمٍ وَبِزَيْتٍ وَالْجُبُنَ وَالثَّرِيْدَ وَكَانَ اَحَبَّ الْفَاكِهَةِ اِلَيْهِ الْعِنَبُ
খেজুর, মাংস ও দুধ একত্রিত করেন নি। তাঁকে দুধ ও মধু একত্রে দেয়া হলে ফেরত পাঠান এবং বলেন, এক বাসনে দু’প্রকারের খাবার আমি খাব না এবং একে হারাম ও বলতেছি না। অন্যরা খাওয়ার পর দস্তর খানায় অবশিষ্ট খানা খেতেন এবং বলতেন, ‘যে ব্যক্তি এভাবে খাবে তাকে ক্ষমা করা হবে।’ খাবার শুরুতে বিসমিল্লাহ বলতেন এবং শেষে আল্লাহর প্রশংসা করতেন। ঘুমের পূর্বে সহজ হজম যোগ্য খানা খাওয়ার নির্দেশ দিতেন এবং শুধু রুটি খেতে বারণ করতেন। তিনি বলেন,‘পানি দ্বারা হলেও সূরবা তৈরী কর।’ খাবারের পর ঘুমাতেন না। তিনি বলতেন, ‘তোমাদের খাবার আল্লাহর জিকির করে হজম কর। তোমরা ঘুমাইও না তাতে অন্তর পাষাণ হয়ে যায়।’
হুযূর (ﷺ) এর পানীয় পদ্ধতি বর্ণনা কর।
হুযূর (ﷺ) টাটকা দুধ পান করতেন। তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করতেন। চুষে পান করতেন তবে এক নিঃশ্বাসে তাড়াহুড়া করে নয়। তিনি বলতেন, ‘কলিজা ব্যথা পানিতে মুখ লাগিয়ে পান করা থেকে হয়।’ পানির পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতেন না। অধিকাংশ সময় বসে পান করতেন।
وَالْبِطِّيْخُ وَكَانَ لَايَأْكُلُ وَحْدَهُ وَيَأْكُلُ لَحْمَ الطَّيْرِ وَلَا يَصِيْدُهُ . وَمَا جَمَعَ بَيْنَ رُطْبٍ وَلَحْمٍ وَحَلِيْبٍ وَاُتِـىَ لَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِلَـبَنٍ وَعَسْلٍ فَـرَدَّهُ وَقَالَ اِدَامَانِ فِىْ اِنَاءٍ لَا اكُلُهُ وَلَا اُحَرِّمُهُ وَكَانَ يَتَّبِـعُ مَا وَقَعَ مِنَ السُّفْرَةِ وَيَقُوْلُ مَنْ فَعَلَهُ غُفَرَ لَهُ وَيُسَمِّـىَ اَوَّلَ الطَّعَامِ وَيَحْمَدُ اٰخِرَهُ وَاَمَرَ بِاَكْلِ الْمُتَيَسَّرِ مِنَ الطَّعَامِ قَبْلَ النَّوْمِ وَاَنْ لَا يَأَكُلُ الْخُبْزَ وَحْدَهُ وَقَالَ اِئْتَدِمُوْا وَلَوْ بِالْمَاءِ وَلَا يَنَامُ بَعْدَ الْأَكْلِ وَقَالَ اَذِيْبُوْا طَعَامَكُمْ بِذِكْرِ اللهِ وَلَا تَنَامُوْا فَـتَقْسُوْ قُلُوْبَكُمْ .
صِفْ لَـنَا شُرْبَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟
كَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَشْرَبُ اللَّبْنَ حَلِيْبًا، وَكَانَ يَشْرَبُ الْمَاءَ فِىْ ثَـلَاثَةِ اَنْفَاسٍ، وَيَمُصُّ وَلَا يَعْتَبُ اَنْ لَّا يُتَابِـعَ الْشُّرْبَ مِنْ غَيْرِ تَنَفُّسٍ، وَيَقُوْلُ: الْكُبَادُ اَىْ وَجَعُ الْكَبِدِ مِنَ الْعَبِّ،
ঠান্ডা মিষ্টি জাতীয় পানি তাঁর প্রিয় ছিল। পানাহারে উষ্ণতা পছন্দ করতেন না। তিনি বলতেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে (পরকালের শাস্তি হিসেবে) আগুন খাওয়াবেন, তোমার খাবার শীতল কর। কেননা উষ্ণ খাবারে বরকত নেই।’
নবী করীম (ﷺ) এর পোশাক – পরিচ্ছদঃ
নবী করীম (ﷺ) মোটা সুতা, উল ও তুলার পোশাক অধিকাংশ সময় পরিধান করতেন। সাদা ও সবুজ পোশাক পছন্দ করতেন। লাল ও কাল কাপড়ের জোড়া পরিধান করেছেন। তিনি কাল পাগড়ি পরতেন এবং অধিকাংশ সময় সাদা পাগড়ি পরতেন। পাগড়িতে দু’কাঁধের মধ্যখানে সেমলা থাকত যা কষ্ট দেয়ার মত বড় নয় এবং একেবারে ছোটও নয়- যা উষ্ণতা ও শীতলতাকে প্রতিরোধ করতে পারে না। তাঁর কাপড় পায়ের গোড়লির ওপরে থাকত। কদাচিৎ হাটু ও গোড়ালীর মাঝ বরাবর থাকত।
وَكَانَ لَا يَتَنَفَّسُ دَاخِلَ الْاِنَاءِ. وَكَانَ يَشْرَبُ قَاعِدًا غَالِبًا، وَكَانَ اَحَبَّ الشَّرَابِ اِلَيْهِ الْحُلُوُّ الْبَارِدُ وَكَانَ يَكْرَهُ الْحَارَّ مِنَ الشَّرَابِ وَالطَّعَامِ وَقَالَ اِنَّ اللهَ يُطْعِمُنَا نَارًا اَبْرِدُوْا بِالطَّعَامِ فَاِنَّ الْحَارَّ غَيْرُ ذِىْ بَرَكَةٍ .
صِفْ لَـنَا لِبَاسَهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟
كَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَلْبَسُ الْكُتَّانَ وَالصُّوْفَ وَالْقُطْنَ، وَهُوَ الْغَالِبُ، وَكَانَ يُحِبُّ الْبِيْضَ مِنَ الثِّيَابِ، وَالْخُضْرَ وَلَبِسَ الْحُلَّةَ الْحَمَرَاءَ وَلَبِسَ الْاَسْوَدَ وَلَبِسَ الْعَمَامَةَ السَّوْدَاءَ، وَالْبَيْضَاءَ وَهِىَ الْاَكْثَرُ، وَيَجْعَلُ لَهُ عَذَبَةٌ بَيْنَ كَتِفَيْهِ وَلَمْ تَكُنْ كَبِيْرَةً تُؤَذِّىْ وَلَا صَغِيْرَةً لَا تَقِـى الْحَرَّ وَالْبَـرَدَ وَكَانَتْ ثِيَابُـهُ فَوْقَ الْكَعْبَيْنِ وَرُبَّمَا جَعَلَهَا لِنِصْفِ السَّاقِ
কাপড় পরিধান কালে তিনি এ দু’আ পড়তেন ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্যে যিনি আমাকে কাপড় দ্বারা লজ্জাস্থান আচ্ছাদিত’ বা ঢাকার ও সজ্জিত হওয়ার তাওফীক দান করেছেন।’ তাঁর একটি রৌপ্যের আংটি ছিল, এর নগীনাও (আংটির যে অংশে পাথর ইত্যাদি খচিত থাকে) রৌপ্যের ছিল, এর নকশা হল মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (ﷺ)। তিনি উহা ডান ও বাম হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলে পরতেন, তবে ডান হাতে বেশী পরতেন। বিছানা দাবাগতকৃত (রংকৃত) চামড়ার যা খেজুর গাছের খোসাভর্তি থাকত। কদাচিৎ চাটাই ও খালি মেঝের ওপরে শয়ন করতেন।
হুযূর (ﷺ) এর ফাছাহতে লেসান বা ভাষার সুন্দর বাচনভঙ্গী সম্পর্কে সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা কর।
নবী করীম (ﷺ) সমগ্র সৃষ্টিতে সর্বাধিক বাকপটু ও মিষ্টভাষী ছিলেন। এমনকি তার কথায় মানুষের অন্তর সমূহকে আকৃষ্ট করত।
❏ তিনি বলতেন, ‘আমি সমগ্র আরবে সর্বাধিক বাকপটুর অধিকারী।’
জান্নাতবাসীরা মুহাম্মদ (ﷺ) এর ভাষায় কথা বলবেন।
وَكَانَ يَقُوْلُ عِنْدَ لُبْسِ الثَّوْبِ . اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِىْ كَسَانِىْ مَا اَسْتُـرُ بِه عَوْرَتِىْ وَاَتَجَمَّلُ بِه. كَانَ لَهُ خَاتَمُ فِضَّةٍ، فَصَّهُ مِنْهُ، وَنَقْشُهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ وَيَتَخَتَّمُ فِىْ خِنْصَرِ يَمِيْنِه وَيَسَارِه وَالْاَكْثَرُ الْاَوَّلُ وَكَانَ فَرْشُهُ مِنْ اُدْمٍ اَىْ مِنْ جِلْدٍ مَدْبُوْغٍ حَشْوُهُ لِيْفٌ وَرُبَّمَا نَامَ عَلٰى حَصِيْرٍ وَرُبَّمَا نَامَ عَلٰى الْاَرْضِ جَرْدًا اَىْ بِغَيْرِ فِرَاشٍ .
اُذْكُرْ لَـنَا بَعْضًا مِنْ فَصَاحَةِ لِسَانِه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟
كَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَفْصَحَ خَلْقِ اللهِ وَاَعْذَبَهُمْ كَلَامًا حَتّٰى كَانَ كَلَامُهُ يَأْخُذُ الْقُلُوْبَ وَكَانَ يَقُوْلُ اَنَا اَفْصَحُ الْعَرَبِ وَاِنَّ اَهْلَ الْجَنَّةِ يَتَكَلَّمُوْنَ بِلُغَةِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَنَذْكُرُ لَكُمْ جُمْلَةً مِنْ كَلَامِه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْجَامِعِ
আমি তোমাদের জন্য ইহ ও পরকালীন জীবনে কল্যাণ বহনকারী তাঁর কণ্ঠে উচ্চারিত অসংখ্য বাণী থেকে কতিপয় বাণী বর্ণনা করতেছি।
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, মানুষ আপন প্রিয়জনের সাথে থাকবে।২২
❏ রাসূল (ﷺ) বলেন, ঈমানদারদের নিয়ত তাঁদের আমল অপেক্ষা উত্তম।২৩
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, যুদ্ধে ধোঁকাবাজির অবকাশ আছে।২৪
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, যে মানুষের থেকে জয় ছিনিয়ে নেয় সে বীর নয়, প্রকৃতপক্ষে যে আত্মার কুপ্রবৃত্তির ওপর জয় করে সে-ই বীর।২৫
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, খবর প্রত্যক্ষ করার মত নয়।২৬
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, বিপদাপদ মানুষের কথাতে অর্পিত।২৭
❏ রাসূলে করীম (ﷺ) বলেন, লজ্জাশীলতা সম্পূর্ণই উত্তম।২৮
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, মিথ্যা শপথ এমন অশুভ যা দেয়ালসমূহ ধ্বংস করে দেয়।২৯
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, জাতির সরদারই, জাতির সেবক।৩০
➖➖➖➖➖➖➖
২২. সহীহ আল-বুখারী, باب علامةُ حبّ الله عزّوجلّ পৃষ্ঠা: ১৪৫
২৩. শু‘আবুল ঈমান লিল্-বয়হাকী, باب الخامس والاربعون من شعب পৃ: ৩৯০
২৪. সহীহ আল্-বুখারী, باب الحرب خدعة পৃষ্ঠা: ২২৭
২৫. সহীহ ইবনে হাব্বান, باب الفقر والزهد পৃষ্ঠা: ৪২৮
২৬. মিশকাতুল মাসাবীহ্, باب صفة النار واهلها পৃষ্ঠা: ২৪৭
২৭. মুসনদ আশ্-শিহাবুল ক্বাযায়ী, باب البلاء مؤكل بالمنطق পৃষ্ঠা: ৩৬৮
২৮. সহীহ মুসলিম, باب بيان عدد شعب الايمان পৃষ্ঠা: ১৪৩
২৯. মুসনদ আশ-শিহাবুল ক্বাযায়ী, باب اليمين الفاجرة تدع পৃষ্ঠা: ৪১৯
৩০. মিশকাতুল মাসাবীহ, باب اداب السفر পৃষ্ঠা: ৩৯১
لِخَيْرِى الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ:
قَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمَرْءُ مَعَ مَنْ اَحَبَّ وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نِيَّةُ الْمُؤْمِنِ خَيْرٌ مِنْ عَمَلِه وَقَالَ عَلَيْهِ الصَّلوٰةُ وَالسَّلَامُ اَلْحَرْبُ خَدْعَةٌ وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ اَلشَّدِيْدُ مَنْ غَلَبَ النَّاسَ اِنَّمَا الشَّدِيْدُ مَنْ غَلَبَ نَفْسَهُ.
وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ الْخَبْرُ كَالْمَعَايَنَةِ. وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْبَلَاءُ مُؤَكَّلٌ بِالْمَنْطِقِ، وَقَالَ عَلَيْهِ الصَّلَوٰةُ وَالسَّلَامُ اَلْحَيَاءُ خَيْرٌ كُلُّهُ وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْيَمِيْنُ الْفَاجِرَةُ تَدَعُ الدِّيَارَ بِلَاقِعِ اَىْ تَتْرُكُ الدِّيَارَ خَرَابًا، وَقَالَ صَلَّى
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, সুস্থতা ও অবসর দু’টোই আল্লাহ তা‘আলার নিয়ামত।৩১
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, তোমরা সমস্যার সমাধানে গোপনীয়তা অবলম্বন করে (আল্লাহর কাছে) সাহায্য প্রার্থনা কর, কেননা প্রত্যেক নি’য়ামত প্রাপ্ত ব্যক্তি হিংসা-বিদ্বেষের কেন্দ্র বিন্দু হয়।৩২
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, ভেজালকারী আমার দলভুক্ত নয়।৩৩
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, কল্যাণময় কর্মের সন্ধানদাতা বাস্তবায়নকারীর অনুরূপ।৩৪
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, দেরীতে সাক্ষাৎ কর, ভালবাসা বৃদ্ধি পাবে।৩৫
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, নিশ্চয় তোমরা মানুষকে তোমাদের সম্পদের মাধ্যমে কখনো ধাবিত করতে পারবে না। অতএব তোমারা তাদেরকে তোমাদের নিজ চরিত্রগুণে ধাবিত কর।৩৬
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, মন্দ স্বভাব আমল ধ্বংস করে যেমন সিরকা মধুকে ধ্বংস করে।৩৭
اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيِّدُ الْقَوْمِ خَادِمُهُمْ، وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلصِّحَّةُ وَالْفَرَاغُ نِعْمَتَانِ . وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِسْتَعِيْنُوْا عَلٰى الْحَاجَاتِ بِالْكِتْمَانِ، فَاِنَّ كُلَّ ذِىْ نِعْمَةٍ مَحْسُوْدٌ . وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا، وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلدَّالُّ عَلٰى الْخَيْرِ كَفَاعِلِه .
وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زُرْغِبًّا تَزْدَدْ حُبًّا، وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّكُمْ لَنْ تَسَعُوْا النَّاسَ بِاَمْوَالِكُمْ فَسَعُوْهُمْ بِاَخْلَاقِكُمْ، وَقَالَ عَلَيْهِ الصَّلوٰةُ وَالسَّلَامُ اَلْخُلْقُ السِّيِّئُ يُفْسِدُ اَلْعَمَلَ كَمَا يُفْسِدُ الْخَلُّ الْعَسَلَ .
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৩১. সুনান আত-তিরমিযী, باب الصحة والفراغة نعمتان পৃষ্ঠা: ২৭২
৩২. আল্-মু‘জমুল আওসত লিত্-তব্রানী, باب اسمه ابراهيم পৃষ্ঠা: ৬
৩৩. সহীহ মুসলিম, باب قول النبىﷺ পৃষ্ঠা: ২৬৫
৩৪. সুনান আত্-তিরমিযী, باب ماجاء الدال على الخير পৃষ্ঠা: ২৭৯
৩৫. আল্-মু‘জমুল কবীর লিত-তবরানী, باب قطعة من المفقود পৃষ্ঠা: ১৭৮
৩৬. শামাইল শরীফ, মাওয়াহিবুল্ লুদনিয়া।
৩৭. শু‘আবুল ঈমান লিল্-বয়হাকী, باب السابع والخمسون من شعب পৃষ্ঠা: ৬২
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, সাধারণত নারীদেরকে বিবাহ করা হয় তাদের সৌন্দর্য, মাল, ধার্মিকতা ও বংশ দেখে। অতএব ধার্মিক মহিলাকে বিবাহ করা তোমার ওপর আবশ্যক। এ রকম না করে বিপরীত করলে ক্ষতিগ্রস্থ হবে।৩৮
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, শীতকাল মু’মিনদের জন্য শুভক্ষণ। এতে দিন ছোট হয় বিধায় মুমিনরা দিনের বেলায় রোজা রাখেন এবং রাত বড় বিধায় রাত্রে ইবাদতে মগ্ন থাকেন।৩৯
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, কানায়াত (অল্পে সন্তুষ্টি) এমন সম্পদ যা ক্ষয় হয় না, এমন খনি যা বিলুপ্তও হয় না।৪০ নবী করীম (ﷺ) বলেন, পারিবারিক খরচে মিতব্যয়ীতা অর্ধেক উপার্জন, মানুষের সাথে ভালবাসার সম্পর্ক বোধশক্তির অর্ধেক এবং যুক্তিসঙ্গত প্রশ্ন জ্ঞানের অর্ধেক।৪১
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৩৮. শামাইল শরীফ, মাওয়াহিবুল লুদনিয়া।
৩৯. শু‘আবুল ঈমান লিল্-বয়হাকী, باب الشتاء ربيع المؤمن পৃষ্ঠা: ৪৬৫
৪০. মসনদ আশ-শিহাবুল ক্বাযায়ী, باب القناعة مال لاينفد পৃষ্ঠা: ১০২
৪১. মিশকাতুল মাসাবিহ, باب السلام পৃষ্ঠা: ৯৮
وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِجَمَالِهَا وَمَالِهَا وَدِيْنِهَا وَحَسَبِهَا فَعَلَيْكَ بِذَاتِ اَىْ صَاحِبَةِ الدِّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ اَىْ اِفْتَقَرْتَ اِذَا خَالَفْتَ . وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلشِّتَاءُ رَبِيْعُ الْمُؤْمِنِ، قَصُرَ نَهَارُهُ فَصَامَهُ، وَطَالَ لَيْلُهُ فَقَامَهُ، وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْقَنَاعَةُ مَالٌ لَا يَنْفَدُ وَكَنْزٌ لَايَفْنٰى، وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْاِقْتِصَادُ فِى النَّفْقَةِ نِصْفُ الْمَعِيْشَةِ، وَالتَّوَدُّدُ اِلٰى النَّاسِ نِصْفُ الْعَقْلِ، وَحُسْنُ السُّوَالِ نِصْفُ الْعِلْمِ، وَقَالَ عَلَيْهِ الصَّلوٰةُ وَالسَّلَامُ مَا خَابَ مَنْ اِسْتَخَارَ، وَلَا نَدِمَ مَنْ اِسْتَشَارَ، وَلَا عَالَ مَنِ اقْتَصَدَ، اَىْ لَمْ يَفْتَقِرْ مَنِ اقْتَصَدَ فِىْ
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, যে ইস্তেখারা করে সে ব্যর্থ হয় না, যে পরামর্শ করে সে লজ্জিত হয় না, যে মিতব্যয়ীতা অবলম্বন করে দৈনিক জীবিকায় অপচয় না করে সে অভাবগ্রস্থ হয় না।৪২
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, সে ব্যক্তি যার রসনা ও হাত থেকে মুসলমানগণ মুক্ত থাকে, মুহাজির সে ব্যক্তি যে আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক হারামকৃতকে বর্জন করে।৪৩
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, যে তোমার কাছে আমানত রাখে তুমি তা যথাযথ আদায় কর, যে তোমার খেয়ানত করে তুমি তার খেয়ানত করো না।৪৪
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, দু’ধরনের লোভী ব্যক্তি পরিতৃপ্তি লাভ করে না, জ্ঞান অন্বেষণকারী ও দুনিয়া অন্বেষণকারী।৪৫
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, প্রত্যেক কর্মের বিশুদ্ধতা নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।৪৬
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, হালালের বর্ণনা ও হারামের বর্ণনা সুস্পষ্ট।৪৭
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, বাদীর জন্যে প্রমাণ ও বিবাদীর জন্যে শপথ আবশ্যক।৪৮
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৪২. শামাইল শরীফ, মাওয়াহিবুল লুদনিয়া।
৪৩. সহীহ আল্-বুখারী, باب المسلم من سلم المسلمون পৃষ্ঠা: ১৫
৪৪. সুনান আত্-তিরমিযী, باب ماجاء فى النهى للمسلم পৃষ্ঠা: ৫৭
৪৫. মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, পৃষ্ঠা: ১৮৭
৪৬. সহীহ আল্-বুখারী, باب بدء الوحى পৃষ্ঠা: ৩
৪৭. সহীহ আল্-বুখারী, باب فضل من استبراء لدينه পৃষ্ঠা: ৯০
৪৮. সুনানে দারে কুত্নী, باب الحدود والديات পৃষ্ঠা: ৪৮৪
النَّفْقَةِ اَىْ لَمْ يُبَذَّرْ فِيْهَا، وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُوْنَ مِنْ لِسَانِه وَيَدِه وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ مَا حَرَّمَ اللهُ، وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ الصَّلوٰةُ وَالسَّلَامُ اَدِّ الْاَمَانَةَ اِلٰى مَنْ اِئْتَمَنَكَ وَلَا تَخُنْ مَنْ خَانَكَ وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْهُوْ مَانِ لَايَشْبَعَانِ طَالِبُ عِلْمٍ وَطَالِبُ دُنْيَا .
وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّمَا الْاَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَقَالَ عَلَيْهِ الصَّلوٰةُ وَالسَّلَامُ اَلْحَلَالُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ وَقَالَ عَلَيْهِ الصَّلوٰةُ وَالسَّلَامُ اَلْبَيِّنَةُ عَلٰى مَنْ اِدَّعٰى وَالْيَمِينُ عَلٰى مَنْ اَنْكَرَ، وَقَالَ عَلَيْهِ الصَّلوٰةُ وَالسَّلَامُ لَايَكْمُلُ اِيْمَانُ الْمَرْءِ حَتّٰى يُحِبَّ
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, মানুষের ঈমান ততক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণতা লাভ করবে না, যতক্ষণ সে তার ভাইয়ের জন্য পছন্দ করবে না যা নিজের জন্য পছন্দ করে।৪৯
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, উপকারীর প্রতি ভালবাসা ও অনিষ্টকারীর প্রতি রাগান্বিত হওয়া আত্মার স্বভাবে পরিণত হয়েছে।৫০
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে তার পরিচিতি ঐ সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত হয়।৫১
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, যে যাকে ভালবাসে তার স্মরণ বেশী করে।৫২
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, ঐ ব্যক্তির ইসলামই উত্তম যে নিরর্থক কার্যকলাপ পরিহার করে।৫৩
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, কিয়ামত দিবসে অত্যাচারের পরিণতি অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই নয়।৫৪
➖➖➖➖➖➖➖
৪৯. আল্ মু‘জমুল আউসত্ লিত -তব্রানী, باب من اسمه: مقدام পৃষ্ঠা: ১৯০
৫০. শু‘আবুল ঈমান লিল্-বায়হাকী, باب كيف لاتحب واجدك পৃষ্ঠা: ৩৭
৫১. সুনানে আবি দাউদ, باب فى لبس الشهرة পৃষ্ঠা: ৪৮
৫২. শু‘আবুল ঈমান লিল্-বায়হাকী, باب علامة حب الله دوام ذكره পৃষ্ঠা: ৭২
৫৩. সুনানে তিরমিযী, باب فيمن تكلم بكلمة يضحك পৃষ্ঠা: ২৯৪
৫৪. সহীহ বুখারী শরীফ, باب الظلم ظلمات يوم القيامة পৃষ্ঠা ৩১৯
لِاَخِيْهِ مَايُحِبُّ لِنَفْسِه وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جُبِلَتْ اَىْ طُبِعَتِ الْقُلُوْبُ عَلٰى حُبِّ مَنْ اَحْسَنَ اِلَيْهَ وَبُغْضِ مَنْ أَسَاءَ اِلَيْهَا، وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ، وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحَبَّ شَيْئًا اَكْثَرَ مِنْ ذِكْرِه .
وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ حُسْنِ اِسْلَامِ اَلْمَرْءِ تَرْكُهُ مَالَا يَعْنِيْهِ وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلظُّلْمُ ظُلْمَاتُ يَوْمِ الْقِيَامَـةِ .
وَبِالْجُمْلَةِ فَقَدْ عَلِمَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْسِنَةَ الْعَرَبِ فَكَانَ يُخَاطِبُ كُلَّ اُمَّةٍ بِلِسَانِهَا وَيُحَاوِرُهَا بِلُغَاتِهَا وَكَانَ كَلَامُهُ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
এক কথায় নবী করীম (ﷺ) আরবের সব ভাষাভাষীদের ভাষা সম্পর্কে অবগত ছিলেন। তাই প্রত্যেক সম্প্রদায়ের তাদের নিজ নিজ ভাষায় হুযূর (ﷺ) সম্বোধন ও প্রয়োজনীয় বিষয়াদি উপস্থাপন করতেন। তাঁর (ﷺ) ভাষা ছিল অধিক বিজ্ঞান সম্মত পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু।
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, দুগ্ধপান স্বভাবের পরিবর্তন ঘটায়।৫৫
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, জমিনে নিহিত রুজি চাষাবাদের মাধ্যমে তালাশ কর।৫৬
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, তোমার ভাইয়ের বিপদাপদের খবরা-খবর প্রচার করে তুমি আনন্দিত হইও না। হয়ত: আল্লাহ তা‘আলা তাকে উহা থেকে মুক্ত করে তোমাকে এতে লিপ্ত করতে পারে।৫৭
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, দয়ালু খোদা দয়াশীল ব্যক্তিদেরকে দয়া করেন। তোমরা জমিনের অধিবাসীদেরকে দয়া কর, আসমানে অবস্থানকারী (আল্লাহ) তোমাদেরকে দয়া করবেন।৫৮
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৫৫. মুসনদে আশ-শিহাবুল ক্বাযায়ী, باب الرضاع يتغير الطباع পৃষ্ঠা: ৫৮
৫৬. আল্-মু‘জমুল আউস্ত লিত্-তবরানী, باب من اسمهُ احمد পৃষ্ঠা: ৪০৬
৫৭. আল্ মু‘জমুল আউসত্ লিত্-তবরানী, باب من اسمهُ على , পৃষ্ঠা: ৪৩৪
৫৮. সুনানে তিরমিযী, باب ماجاء فى رمحة الناس , পৃষ্ঠা: ১৬১
حِكَمًا بَالِغَةً جَامِعَةً لِعِلْمِ الْاَوَّلِيْنَ وَالْاٰخِرِيْنَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ . قَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلرِّضَاعُ يُغَيِّرُ الطِّبَاعَ وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلْتَمِسُوْا اَلرِّزْقَ فِىْ خَبَايَا الْاَرْضِ اَلْمُرَادُ اَلزَّرْعُ، قَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تُظْهِرِ الشَّمَاتَةَ بِاَخِيْكَ فَيُعَافِيَهُ اللهُ وَيَبْتَلِيْكَ .
قَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلرَّاحِمُوْنَ يَرْحَمُهُمُ الرَّحْمٰنُ تَبَارَكَ وَتَعَالٰى اِرْحَمُوْا مَنْ فِى الْاَرْضِ يَرْحَمُكُمْ مَنْ فِىْ السَّمَاءِ، وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحَسْبِ اِبْنِ اٰدَمَ لَقِيْمَاتُ اَىْ يَكْفِيْهِ اَكَـلَاتٌ يُقِمْنَ صُلْبَهُ اَىْ ظَهْرَهُ فَاِنْ كَانَ لَامُحَالَـةَ اَىْ لَابُـدَّ
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, মানব জাতি তাদের মেরুদন্ড সোজা রাখার (সু-স্বাস্থ্যের জন্য) জন্যে কয়েক গ্রাস খাবার যথেষ্ট। হ্যাঁ যদি তাদের আরও অধিক খাবারের প্রয়োজন হয় তাহলে এক তৃতীয়াংশ খাদ্যের জন্যে, এক তৃতীয়াংশ পান করার জন্যে এবং এক তৃতীয়াংশ আত্মার জন্যে।৫৯
❏ নবী করীম (ﷺ) বলেন, হে আল্লাহর বান্দাগণ চিকিৎসা কর। কেননা আল্লাহ তা‘আলা এমন কোন রোগ সৃষ্টি করেনি, যার বিপরীতে ঔষধ সৃষ্টি করা হয়নি। তবে মরণ ব্যাধি ব্যতীত।৬০
➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৫৯. সুনানে তিরমিযী, باب ماجاء فى كراهية كثيرة , পৃষ্ঠা: ৩৮৭
৬০. আল্ মুসতাদ্রাক আলাস্-সহীহাইন, باب الله وضع الحرج الامن পৃষ্ঠা: ৮৮
নবী করীম (ﷺ) এর অলৌকিক ঘটনাবলী সম্পর্কে কিছু আমাদেরকে বর্ণনা কর।
নবী করীম (ﷺ) এর অলৌকিক ঘটনা সমূহের মধ্যে সবচেয়ে মহান মু’জিযা হচ্ছে মহান আল কুরআন যা- ফিরিস্তা ও মানব- দানব সকলকে অপারগ করে দিয়েছে। তাঁর অলৌকিক মু’জিযাবলীর অন্যতম হচ্ছে পূর্ণিমার রাত্রে চন্দ্র দ্বিখন্ডিত করণ, আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে একটি ছোট পেয়ালায় পানির ঝর্ণা নির্গত হওয়া। যা হতে সেনা বাহিনী পান করেছেন ও অজু করেছেন। এক চা (দুই সের চৌদ্দ ছটাক চার তোলা) থেকেও কম পরিমাণে কম খাবার এক হাজার লোক উদর ভরে ভক্ষণ করণ। গাছ ও পাথর তার (ﷺ) সাথে কথোপকথন করণ।
(ﷺ) مِنَ الزِّيَادَةِ فَثُلُثٌ لِطَعَامِهِ وَثُلُثٌ لِشَرَابِهِ وَثُلُثٌ لِنَفْسِهِ وَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَدَاوَوْا عِبَادَ اللهِ فَاِنَّ اللهَ لَمْ يَضَعْ دَاءً اِلَّا وَضَـعَ لَهُ دَوَاءً غَيْرَ دَاءٍ وَاحِدٍ اَلْـهَـرَمُ .
اُذْكُرْ لَـنَا بَعْضًا مِنْ مُعْجِزَاتِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟
اَعْظَمُ مُعْجِزَةٍ لِلنَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هُوَالْقُرْاٰنُ الَّذِىْ اَعْجَزَ الْمَلَكَ وَالْاِنْسَ وَالْجَانَّ، وَمِنْ مُعْجِزَاتِه اِنْشِقَاقُ الْقَمَرِ لَيْلَةَ اَرْبَعَةَ عَشَرَ، وَمِنْهَا نَبْعُ الْمَاءِ مِنْ بَيْنِ اَصَابِعِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِىْ قَدْحٍ صَغِيْرٍ حَتّٰى شَرِبَ الْعَسْكَرُ وَتَوَضَّؤُا، وَمِنْهَا اِطْعَامُ اَلْفٍ مِنْ أَقَلِّ مِنْ صَاعٍ ، مِنْهَا كَـلَامُ الشَّجْرِ وَالْحَجَرِ، وَمِنْهَا حَنِيْنُ الْجَذْعِ اَىْ
খেজুর গাছের শুকনা খুঁটির ক্রন্দন করা অর্থাৎ তাঁর বিচ্ছেদ জ্বালার বহি:প্রকাশার্থে উষ্ট্রীর আওয়াজের ন্যায় উচ্চস্বরে ক্রন্দন করা যা উপস্থিত সকলেই শুনেছিলেন। অবশেষে রাসুলে পাক (ﷺ) তাকে জড়িয়ে ধরলে শান্ত হয়ে যায়। ভূমি তাঁর (ﷺ) জন্যে গুটিয়ে যাওয়া (সঙ্কুচিত হওয়া) অর্থাৎ পৃথিবীর একপ্রান্ত অন্যপ্রান্তের সাথে মিলে যাওয়া যা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন এবং পৃথিবীর পূর্বপশ্চিম প্রান্ত (গোটা পৃথিবী) দেখতে পেয়েছেন। তাঁর (ﷺ) হাতে কংকরের তাসবীহ পাঠ এবং উপস্থিতকৃত খাবারের তাসবীহ পাঠ করণ। হযরত ক্বাতাদার (رضي الله عنه) একটি চক্ষু ফিরায়ে দেয়া যা পরবর্তীতে অন্যটির তুলনায় অধিক ভাল ছিল।
হযরত আলীর (رضي الله عنه) রুগ্ন চোখে থুথু মোবারক দিয়ে আরোগ্য করণ যা পরবর্তীতে কখনো রুগ্ন হয়নি। হযরত আলীর (رضي الله عنه) জন্যে ঠান্ডা ও গরম প্রতিরোধের দো‘আ করা। পরবর্তীতে তিনি কোনদিন গরম ঠান্ডা অনুভব করেননি। হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাসের জন্য ধর্মীয় জ্ঞানে বিচক্ষণতার দো‘আ করলে তিনি ধর্মীয় জ্ঞানের সাগরে পরিণত হন। হযরত আনাস বিন মালিকের জন্য ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি ও দীর্ঘায়ুর জন্যে দোয়া করলে তাঁকে একশ’ সন্তান-সন্ততি ও একশ’ বছরের হায়াত দান করা হয়। তাঁর খেজুর বাগান বৎসরে দু’বার ফলদায়ক হয়।
شَوْقُهُ لَمَّا فَارَقَهُ حَتّٰى سَمِعَ مِنْهُ كَحَنِيْنِ الْنَاقَةِ فَضَمَّهُ اِلَيْهِ فَسَكَنَ وَمِنْهَا اِنْزَاوَاءُ الْاَرْضِ اَىْ جَمْعُ الْاَرْضِ وَضَمُّ بَعْضِهَا اِلٰى بَعْضٍ لَهُ عَلَيْهِ الصَّلوٰةُ وَالسَّلَامُ حَتّٰى شَاهَدَهَا فَرَائَ مَشَارِقَهَا وَمَغَارِبَهَا، وَمِنْهَا تَسْبِيْحُ الْحَصٰى بِكَفِّهِ وَالطَّعَامِ لِحَضَرَتِه، وَمِنْهَا رَدُّ عَيْنِ قَتَادَةَ فَكَانَتْ اَحْسَنَ عَيْنَيْهِ .
وَمِنْهَا تَفْلُهُ اَىْ بَصَقُهُ فِىْ عَيْنِ عَلِىٍّ وَهِىَ رَمْدَاءُ فَبَرِئَتْ وَلَمْ يَرْمُدْ بَعْدُ. وَمِنْهَا دُعَائُهُ لَهُ بِمَنْعِ الْحَرِّ وَالْبَرْدِ فَلَمْ يُحِسُّ بِهِمَا بَعْدُ، وَمِنْهَا دُعَاؤُهٗ لِاِبْنِ عَبَّاسٍ بِالتَّفَقُّهِ فِىْ الدِّيْنِ، فَصَارَ الْبَحْرَ اَلْمُعِيْنَ اَىْ اَلْوَاسِعَ، وَمِنْهَا دُعَائُهُ لِاَنَسِ بْنِ مَالِكٍ بِالْمَالِ وَالْوَلَدِ وَالْعُمْرِ فَرُزِقَ مِائَةَ وَلَدٍ، وَعَاشَ مِائَةَ سَنَةٍ، وَصَارَ نَخْلُهُ يَحْمِلُ فِى الْعَامِ مَرَّتَيْنِ، وَمِنْهَا مَسْحُ رِجْلِ اِبْنِ عَتَيْكٍ لَمَّا اِنْكَسَرَتْ فَصَحَّتْ،
ইবনে আতিকের পা ভেঙ্গে যাওয়ার পর রাসুলে খোদা (ﷺ) হাত মসেহ করে দিলে তা সম্পূর্ণ ভাল হয়ে যায়। বদর ও হুনাইন যুদ্ধে একমুষ্টি মাটি নিয়ে কাফিরের দিকে নিক্ষেপ করলে তা তাদের প্রত্যেকের চোখে পতিত হয়, ফলে তারা যুদ্ধে শোচনীয় ভাবে পরাজয় বরণ করে। বন্ধ্যা ছাগলের স্তনে তাঁর (ﷺ) হাত মোবারক মসেহ করলে তৎক্ষণাৎ দুধে স্তন পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এছাড়া অসংখ্য অলৌকিক ঘটনা আছে, যা গণনা করে আয়ত্তে আনা সম্ভব নয়।
নবী করীম (ﷺ) এর নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে কিছু আমাদেরকে বর্ণনা কর।
নবী করীম (ﷺ) এর অগণিত নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে অন্যতম- তিনি নবীদের মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বোত্তম নবী। সর্বপ্রথম পুনর্জীবনের অধিকারী। তিনি প্রথমে জান্নাতের দরজায় করাঘাত করবেন ও জান্নাতে প্রবেশ করবেন। সর্বপ্রথম সুপারিশকারী ও সুপারিশ গৃহীত ব্যক্তিত্ব। মানব-দানব উভয় জাতির কাছে রাসুল হিসেবে প্রেরিত। নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর জীবনের শপথ করেছেন। তাঁর অন্তর ঘুমায় না। তিনি সামনে-পিছনে ও অন্ধকারে দেখেন। তাঁর ছায়া ছিল না।
وَمِنْهَا رَمَةُ الْكُفَّارِ فِىْ بَدْرٍ وَحُنَيْنٍ بِقَبْضَةٍ مِنْ تُرَابٍ، فَأَمْتَلَائَتْ اَعْيُنُهُمْ فَهُزِمُوْا، وَمِنْهَا مَسْحُهُ بِيَدِه الْكَرِيْمَةِ عَلٰى ضَرْعٍ شَاةٍ حَائِلٍ فَدَرَّتْ مِنْ حِيْنِهَا اِلٰى غَيْرِ ذٰلِكَ مِنَ الْمُعْجِزَاتِ الَّتِىْ لَاتَدْخُلُ تَحْتَ حَصْرٍ.
اُذْكُرْ لَـنَا بَعْضًا مِنْ خَصَائِصِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟
مِنْ خَصَائِصِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَوْنُهُ خَاتَمَ الْاَنْبِيَاءِ وَاَفْضَلَهُمْ وَاَوَّلَ مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الْاَرْضُ. وَيَقْرَعُ بَابَ الْجَنَّةِ وَيَدْخُلُهَا وَاَوَّلَ شَافِعٍ وَاَوَّلَ مُشَفَّعٍ اَىْ تُجَابُ شَفَاعَتُهُ وَرَسُوْلًا اِلٰى الثَّقَلَيْنِ اَىْ اَلْاِنْسِ وَالْجِنِّ وَاَنَّ اللهَ تَعَالٰى اَقْسمَ بِحَيَاتِهِ وَلَا يَنَامُ قَلْبُهُ وَيَرٰى مَنْ خَلْفَهُ وَيُبْصِرُ فِى الظُّلْمَةِ وَلَا ظِلَّ
❏ আল্লাহ তা‘আলার বাণী,‘তাঁদের (ঈমানদার পুরুষ ও নারী) সম্মুখভাগে ও ডান পাশের্ব তাদের আলো ও জ্যোতি ছুটোছুটি করছে।৬১
❏ আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ‘এবং আল্লাহর আদেশক্রমে তাঁর প্রতি আহবানকারী আর আলোকোজ্জ্বলকারী প্রদীপরূপে।’৬২
তাঁর পবিত্র শরীরে মশা-মাছি অবস্থান করত না। ইত্যাদি।
➖➖➖➖➖➖➖➖➖
৬১. আল-কুরআন, সূরা হাদীদ, আয়াত: ১২
৬২. আল-কুরআন, সূরা আহযাব, আয়াত: ৪৬
রাসূলে করিম (ﷺ) এর স্বভাব সম্পর্কে কিছু আমাদেরকে বর্ণনা কর।
রাসূলে করিম (ﷺ) সুগন্ধি পছন্দ করতেন এবং তা কখনো প্রত্যাখান করতেন না। তিনি দুর্গন্ধ পছন্দ করতেন না। প্রতিটি চোখে তিনবার করে সুরমা ব্যবহার করতেন। ক্রয়-বিক্রয় করতেন। কোন কিছু ভাড়া দিতেন ও ভাড়ায় নিতেন, ইহাই অধিক করেছেন। তিনি নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে গৃহপালিত পশু চরানো ও ব্যবসার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। শরিকানা ব্যবসা করেছেন, উকিল নিযুক্ত করেছেন ও উকিল নিযুক্ত হয়েছেন। উপঢৌকন দিয়েছেন এবং উপঢৌকন গ্রহণও করেছেন। ঋণ নিয়েছেন, সুপারিশ করেছেন এবং সুপারিশের আবেদন গ্রহণ করেছেন।
لَهُ قَالَ اللهُ تَعَالٰى يَسْعٰى نُوْرَهُمْ بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَبِاَيْمَانِهِمْ وَدَاعِيًا اِلٰى اللهِ بِاِذْنِه وَسِرَاجًا مُّنِيْرًا وَلَا يَقَعُ عَلَيْهِ الذُّبَابُ وَغَيْرَ ذٰلِكَ .
اُذْكُرْ لَـنَا شَيْئًا مِنْ اَحْوَالِه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟
كَانَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُحِبُّ الطِّيْبَ وَلَا يَرُدُّهُ، وَيَكْرَهُ الْرَّائِحَةَ الْكَرِيْهَةَ وَكَانَ يَكْتَحِلُ فِىْ كُلِّ عَيْنٍ ثَلَاثًا، وَبَاعَ وَاِشْتَرٰى، وَاَجَرَ وَاِسْتَاجَرَ وَهُوَ الْاَغْلَبُ، وَاَجَرَ نَفْسَهُ قَبْلَ النَّبُوَّةِ لِلرَّعِى وَالتِّجَارَةِ وَشَارَكَ وَوَكَّلَ، وَتَـوَكَّلَ، وَوَهَبَ، وَوُهِبَ لَهُ، وَاسْتَعَارَ وَتَشَفَّعَ وَتُشَفَّعَ اِلَيْهِ وَضَافَ
আতিথিয়তা গ্রহণ করেছেন, নিজেও অতিথি হয়েছেন। তিনি নিজে চিকিৎসা করেছেন ও অপরকে চিকিৎসাও করায়েছেন। বেশী খাবার থেকে ভয় প্রদর্শন করেছেন। শেষ জীবনে পরিবার-পরিজনের জন্য এক বছরের খাবার জমা রেখেছেন। তাঁর অতি প্রিয় আমল ছিল যা সর্বদা ও সহজে করা হয়- যদিও তা স্বল্প হয়। তিনি রাত্রে জাগ্রত থেকে ইবাদতে মগ্ন থাকতেন, ফলে তাঁর পবিত্র কদমদ্বয় ফুলে যেত। তাই একদা আয়শা ছিদ্দিকা (رضي الله عنه) আরয করলেন, ‘আপনি এত কষ্ট কেন করছেন❓ অথচ আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘আমি কি কৃতজ্ঞ বান্দা হব না❓’ তিনি ছদকা প্রত্যাখ্যান করতেন, উপঢৌকন গ্রহণ করতেন। তিনি অধিকাংশ সময় দো‘আ করতেন, ‘হে আল্লাহ! হে আত্মার পরিবর্তনকারী! আমার আত্মাকে আপনার দ্বীনের ওপর অটল ও মজবুত রাখুন।’
ইমাম বুখারী (رحمة الله) বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য তোমাদের শিষ্টাচার বন্টন করে দিয়েছেন যেমন তোমাদের রিযিক বন্টন করেছেন।’ নবী করিম (ﷺ) এর শিষ্টাচার অতীব পবিত্র, সুন্দর ও পরিপূর্ণ ছিল এবং তাঁর সিরত বা স্বভাব অত্যধিক শরীফ, মর্যাদাবান, মনোরম ও মনোনীত ছিল। নিশ্চয় তিনি তৎকালীন বন্য
وَاُضِيْفَ، وَدَاوَى وَتَــدَاوَى وَحَذَّرَ مِنَ التُّخْمَةِ اَىْ كَثْرَةِ الْاَكْلِ وَكَانَ اٰخَرَ عُمْرِه يَدَّخِرُ قُوْتَ سَنَةٍ لِاَهْلِهِ، وَكَانَ اَحَبُّ الْعَمَلِ اِلَيْهِ اَدْوَمَهُ وَاَيْسَرَهُ وَاِنْ قَلَّ، وَكَانَ يَقُوْمُ مِنَ اللَّيْلِ حَتّٰى تَتَفَطَّرَ قَدْمَاهُ فَتَقُوْلُ عَائِشَةُ أَتَتَكَلَّفَ هٰذَا وَقَدْ غُفِرَ اللهُ لَكَ؟ فَيَقُوْلُ اَفَـلَا اَكُوْنُ عَبْدًا شَكُوْرًا وَكَانَ يَرُدُّ الصَّدْقَةَ وَيَقْبَلُ الْهَدِيَّةَ وَكَانَ اَكْثَرُ دُعَائِه اَللّٰهُمَّ يَامُقِلَّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلٰى دِيْنِكَ .
هٰذَا وَقَدْ قَالَ الْبُخَارِىُّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّ اللهَ قَسَّمَ لَكُمْ اَخْلَاقَكُمْ كَمَا قَسَّمَ اَرْزَاقَكُمْ . فَكَانَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
পশু তুল্য নিকৃষ্ট আরব জাতির মধ্যে উৎকৃষ্ট স্বভাবগুলো একত্রিত করেছিলেন এবং এমন ঘৃণিত, মানবতার সাথে দূরত্বের সম্পর্কিত স্বভাবের নিকৃষ্ট জাতিকে পরিবর্তন করে এতে ধৈর্য্যধারণ করার মত গুণে গুণান্বিত করে গড়ে তুলেছিলেন। এমনকি তারা তাদের সম্প্রদায়ের যারা নবীর বিপক্ষে ছিলেন তাদের বিপক্ষে যুদ্ধ করেছেন এবং নবীর সন্তুষ্টির জন্যে স্বীয় মাতৃভূমি ত্যাগ করে অন্যত্র হিজরত করেছেন। অথচ নবী করিম (ﷺ) উম্মি (কারো কাছে শিক্ষা অর্জন করেননি) ছিলেন। পিতৃ মাতৃহীন, অসহায় এতিম অবস্থায় অশিক্ষিত বর্বর জাতির মাঝে লালিত পালিত হয়েছেন। তাই আল্লাহ তা‘আলা তাঁকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের শিষ্টাচারের শিক্ষা দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে স্বয়ং নবী (ﷺ) বলেন, ‘আমার প্রভূ আমাকে শিষ্টাচার শিক্ষা দিয়েছেন তাইত আমার শিষ্টাচার কতই না সুন্দর হয়েছে!’
নবী করীম (ﷺ) এর তাবলীগ বা প্রচার সংক্রান্ত আলোচনা।
اَكْمَلَ الْاَخْلَاقِ الزَّكِيَّةِ وَاَشْرَفَ السِّيَرِ الْمَرْضِيَّةِ، وَقَدْ جَمَعَ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَارِمَ الْاَخْلَاقِ، فَسَاسَ الْعَرَبَ الَّذِيْنَ هُمْ كَالْوُحُوْشِ الشَّارِدَةِ، وَصَبَرَ عَلٰى طِبَاعِهِمْ الْمُتَنَافِرَةِ الْمُتَبَاعِدَةِ حَتّٰى قَاتَلُوْا دُوْنَهُ اَهْلَهُمْ وَهَجَرُوْا فِىْ رَضَاهُ اَوْ طَانَهُمْ مَعَ اَنَّهُ اُمِّـىُّ نَشَأَ بَيْنَ جُهَّالٍ يَتِيْمًا مِنْ اَبْوَيْهِ فِىْ فَقْرٍ فَعَلَّمَهُ اللهُ تَعَالٰى مَكَارِمَ الْاَخْلَاقِ حَتّٰى قَالَ اَدَّبَنِىْ رَبِّىْ فَاَحْسَنَ تَأْدِيْبِىْ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ .
اَلتَّبْلِيْغُ لِلنَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
اَلنَّبِـىُّ هُـوَ بَـشَـرٌ اِنْــسَانٌ كَامِــلٌ
নবী করীম (ﷺ) হলেন নির্বাচিত, মনোনীত ও পরিপূর্ণ মানব, যাকে আল্লাহ তা‘আলা ধর্মীয় বিধানসমূহ প্রচারে সর্বপ্রকারের দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত করে সৃষ্টিকুলের প্রতি প্রেরণ করেছেন। তিনি সর্বপ্রকারের নূরানী ও বশরি গুণাবলীর সমন্বয়কারী ছিলেন, তবে কখনো বাস্তবিক ও কার্যকর হিসেবে এবং কখনো ক্ষমতাধীন থেকেও স্বভাবগতভাবে নূরানী ও বশরি গুণাবলী সমূহ আত্ম প্রকাশ করত।
তাবলীগ হচ্ছে বশরী যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘হে হাবীব (ﷺ) আপনি বলুন! (প্রকাশ্য মানবীয় আকৃতিতে তো) আমি তোমাদের মতো, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ আসে যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ।’৬৩
➖➖➖➖➖➖➖
৬৩. আল-কুরআন, সূরা কাহ্ফ, আয়াত: ১১০
তাঁর ইবাদতের দিক নূরানী তাইতো তাঁর কোন ছায়া ছিল না। কেননা তাঁর আপাদমস্তক সম্পূর্ণ শরীর নূরানী ছিল। তাঁর শারীরিক নূর তাদের চতুপাশের্ব আলোক সজ্জার ন্যায় ঘুরতে থাকত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট নূর এসেছে।’ অনুরূপ আরও অনেক আয়াত রয়েছে।
❏ ওহী (ঐশীবাণী) কি❓
আল্লাহ তা‘আলা তাঁর প্রিয় হাবীব (ﷺ)কে স্বীয় ইচ্ছানুযায়ী অদৃশ্য শরয়ী বিধানাবলী ও অদৃশ্য যাবতীয়
مُجْتَبٰى مُرْتَضٰى بَعَثَهُ اللهُ تَعَالٰى اِلٰى الْخَلْقِ لِتَبْلِيْغِ الْاَحْكَامِ الَّذِىْ هُوَ السَّلِيْمُ مِنْ كُلِّ عَيْبٍ وَهُوَ جَامِـعُ الصِّفَاتِ النُّوْرَانِيَّةِ وَالْبَشَرِيَّةِ وَقَدْ تَكُوْنُ فِعْلًا وَتَكُوْنُ قَوَّةً مِنْ طَرْفِ الْعَادَةِ وَالتَّبْلِيْغُ بَشْرِىٌّ قَالَ اللهُ تَعَالٰى: قُلْ اِنَّمَا اَنَا بَشَرٌ مِثْلُكُمْ يُوْحٰى اِلَىَّ الخ وَطَرْفُ الْعِبَادَةِ نُوْرَ انِـىٌّ فَلِذَا لَاظِلَّ لَهُ لِاَنَّهُ جِسْمٌ نُوْرَانِـىٌّ. يَسْعٰى نُوْرُهُمْ بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَبِاَيْمَانِهِمْ الخ وَقَدْ جَاءَ كُمْ مِنَ اللهِ نُـوْرٌ الخ وَغَيْرَهَا .
اَلْـوَحِـىٌّ
اَطْلَعَهُ اللهُ تَعَالٰى عَلٰى الْغُيُوْبِ بِـمَا شَاءَ مِنَ الْاَحْكَـامِ الدِّيْـنِـيَّـةِ
বিষয়াবলীর জ্ঞান দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলার বাণী, ‘আর আল্লাহর শান এমন নয় যে, তোমাদেরকে অদৃশ্য জ্ঞান দিয়ে দিবেন। তবে আল্লাহ তাঁর রাসূলগণের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছে মনোনীত করেন।’৬৪
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ‘তিনি (আল্লাহ) অদৃশ্য বিষয় বর্ণনা করার ব্যাপারে কৃপণতা করেন না।’৬৫
➖➖➖➖➖➖➖➖
৬৪. আল-কুরআন, সূরা আল্-ইমরান, আয়াত: ১৭৯
৬৫. আল-কুরআন, সূরা তাকভীর, আয়াত: ২৪
❏ নবী করীম (ﷺ) এর নাম মোবারক সমূহ কি কি❓
নবী করীম (ﷺ) এর অনেক প্রসিদ্ধ নাম আছে। তন্মধ্যে অধিকতর প্রসিদ্ধ নাম মুহাম্মদ (ﷺ) ও আহমদ (ﷺ)।
নবী করীম (ﷺ) এর পরিবার-পরিজন
সায়্যিদিনা মুহাম্মদ (ﷺ) এর পিতৃকুলের বংশানুক্রম বর্ণনা কর।
الشَّـرِيْعَةِ وَالْمَكْنُوْنَاتِ الْغَيْبِيَةِ الْمَخْفِيَّةِ قَوْلُهُ تَعَالٰى وَمَا كَانَ اللهُ لِيَطْلِعَكُمْ عَلَى الْغَيْبِ وَلٰكِنَّ اللهَ يَجْتَبِـىْ مِنْ رُسُـلِه مَنْ يَّشَاءُ الخ . وَمَا هُوَ عَلٰى الْغَيْبِ بِضَنِيْنَ وَغَيْرَهَا.
مَاهِىَ اَسْمَاءُ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟
اَسْمَاءُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَثِيْرَةٌ مَشْهُوْرَةٌ وَاشْهَرُهَا مُحَمَّدٌ وَاَحْمَدُ .
مَا نَسَبُ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ جِهَةِ اَبِيْهِ؟
هُوَ سَيِّدُنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِالْمُطَّلِبِ بْنِ هَاشِمِ ابْنِ عَبْدِ مُنَافِ بْنِ قُصَىِّ بْنِ حَكِيْمِ بْنِ مُرَّةَ بْنِ كَعْبِ بْنِ لُؤَىِّ بْنِ غَالِبِ بْنِ فِهْرِ بْنِ مَالِكِ بْنِ النَّضَرِبْنِ كِنَانَةَ
তিনি সায়্যিদিনা মুহাম্মদ (ﷺ) বিন আবদুল্লাহ বিন আবদুল মুত্তালিব বিন হাশিম বিন আবদে মুনাফ বিন কুসাই বিন হাকিম বিন মুর্রা বিন কা‘ব বিন লুওয়াই বিন গালিব বিন ফিহ্র বিন মালিক বিন নাদর বিন কিনানাহ্ বিন খুযাইমা বিন মুদরাকা বিন ইলিয়াছ বিন মুদার বিন নিযার বিন মা’য়াদ বিন আদ্নান।
সায়্যিদিনা মুহাম্মদ (ﷺ) এর মাতৃকুল ও বংশানুক্রম বর্ণনা কর।
তিনি মুহাম্মদ (ﷺ) বিন সায়্যিদা আমিনা বিন্তে ওয়াহ্হাব বিন আবদে মুনাফ বিন যুহরা বিন হাকিম- যিনি পিতৃ ধারায় উলেখ রয়েছেন। অর্থাৎ হাকিম থেকে পরবর্তী বংশধারা পিতৃ বংশ ধারার সাথে মিল রয়েছে।
❏ রাসূলে পাক (ﷺ) এর সন্তানের সংখ্যা কত❓
রাসূলে পাক (ﷺ) এর সন্তানের সংখ্যা সাত জন। তম্মধ্যে তিন জন ছেলে- ক্বাসিম, আবদুল্লাহ ও ইব্রাহিম (رضي الله عنه)। চার জন কন্যা- ফাতিমা, জয়নব, রুকাইয়া ও উম্মে কুলসুম (رضي الله عنه)। হযরত ইব্রাহিম (رضي الله عنه) ব্যতীত প্রত্যেকই হযরত খদিজাতুল কোবরা (رضي الله عنه) এর ঔরশজাত সন্তান, আর হযরত ইব্রাহিম (رضي الله عنه) মারিয়া কিবতিয়ার ঔরশজাত সন্তান।
بْنِ خُزَيْمَةَ بْنِ مُدْرَكَةَ بْنِ اِلْيَاسَ بْنِ مُضَرَبْنِ نِزَارَبْنِ مَعَدِ بْنِ عَدْنَانَ.
مَا نَسَبُ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ جِهَةِ اُمِّهِ ؟
هُوَ سَيِّدُنَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ابْنُ السَّيِّدَةِ اَمِنَةَ بِنْتِ وَهْبِ بْنِ عَبْدِ مُنَافِ بْنِ زُهْرَةَ بْنِ حَكِيْمِ اَلْمَذْكُوْرُ فِىْ نَسَبِه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ جِهَةِ اَبِيْهِ .
كَمْ اَوْلَادُهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟
اَوْلَادُهُ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَبْعَةٌ . ثَلَاثَةٌ ذُكُوْرٌ وَهُمْ اَلْقَاسِمُ وَعَبْدُ اللهِ وَاِبْرَاهِيْمُ وَاَرْبَعُ اُنَاثٍ. وَهُنَّ فَاطِمَةُ وَزَيْنَبُ وَرُقَيَّةُ وَاُمُّ كُلْثُوْمٍ وَكُلُّهُمْ مِنَ السَّيِّدَةِ خَدِيْجَةَ اِلَّا سَيِّدَنَا اِبْرَاهِيْمَ فَمِنْ مَارِيَةَ الْقِبْطِيَّةِ.
❏ নবী করীম (ﷺ) এর সহধর্মিনীর সংখ্যা কত জন❓
নবী করীম (ﷺ) এর সহধর্মিনীর সংখ্যা এগার জন। এঁরা হলেন হযরত খদিজা, হযরত আয়শা, হযরত হাফছা, হযরত জয়নব, হযরত হিন্দ, হযরত জুওয়াইরিয়া, হযরত রামলা, হযরত সাওদা, হযরত মাইমুনা, হযরত ছফিয়া ও হযরত জয়নব উম্মুল মাসাকিন (رضي الله عنه)।
নবী করীম (ﷺ) এর চাচা ও ফুফুদের সংখ্যাঃ
রাসূলে করীম (ﷺ) এর চাচাদের সংখ্যাঃ
রাসূলে করীম (ﷺ) এর চাচার সংখ্যা বার জন। এঁদের মধ্যে দুই জন মুসলমান- হযরত হামজা (رضي الله عنه) ও আব্বাস (رضي الله عنه)।
নবী করীম (ﷺ) এর ফুফুদের সংখ্যাঃ
নবী করীম (ﷺ) এর ফুফুর সংখ্যা ছয় জন। এঁদের মধ্যে তিনজন ঈমান এনেছেন। হযরত ছফিয়া, আতিকা ও আরওয়া (رضي الله عنه)।
كَمْ اَزْوَاجُـهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟
اَزْوَاجُ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِحْدٰى عَشَرَةَ وَهُنَّ خَدِيْجَةُ وَعَائِشَةُ وَحَفْصَةُ وَزَيْنَبُ وَهِنْدٌ وَجُوَيْرِيَةُ وَرَمْلَةُ وَسَوْدَةُ وَمَيْمُوْنَةُ وَصَفِيَّةُ وَزَيْنَبُ اَمُّ الْمَسَاكِيْنِ .
بَيِّنْ لَـنَا اَعْمَامَهُ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟
اَعْمَامَهُ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِثْنَا عَشَرَ مُسْلِمُهُمْ اِثْنَانِ وَهُمَا حَمْزَةُ وَالْعَبَّاسُ.
بَيِّنُ لَـنَا عَمَّاتِه صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟
عَمَّاتُهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سِتَّةٌ مُؤْمِنُهُنَّ ثَـلَاثَةُ وَهُنَّ صَفِيَّةُ وَعَاتِكَةُ وَاَرْوٰى.
❏ প্রিয় নবী (ﷺ) এর খাদিমের সংখ্যা কত❓
প্রিয় নবী (ﷺ) এর খাদিমের সংখ্যা একশ’ সত্তর জন। তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ ছিলেন হযরত আনাস, হযরত মারিয়া ও হযরত উম্মে আয়মন (رضي الله عنه)।
❏ নবী করীম (ﷺ) এর মামার সংখ্যা কত ❓
নবী করীম (ﷺ) এর মামার সংখ্যা তিন জন। তাঁরা হলেন- আসওয়াদ, উমাইর ও আবদু ইয়াগুস। এঁরা সবাই ফতরতের (নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বে) সময় ইন্তিকাল করেন।
❏ রাসূলে করীম (ﷺ) এর খালার সংখ্যা কত ❓
রাসূলে করীম (ﷺ) এর খালার সংখ্যা দুই জন- ফরিছা ও ফাখেতা। দু’জনই নবী করীম (ﷺ) এর নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্বে মারা যান।
আল্লাহর কিতাব ও ফেরেশতামন্ডলি
পূর্বোলিখিত আলোচনায় অবহিত হয়েছি, অতএব আসমানী কিতাবের সংখ্যা কত বর্ণনা কর।
অবতীর্ণ আসমানী কিতাবের সংখ্যা অনেক। তম্মধ্যে প্রসিদ্ধ তাওরাত হযরত মুসা (عليه السلام) এর ওপর, ইঞ্জিল হযরত ঈসা (عليه السلام) এর ওপর,
كَمْ خُدَّامُهُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟
خُدَّامَهُ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِائَةُ وَسَبْعُوْنَ مِنْهُمْ اَنَسٌ وَمَارِيَةُ وَاُمُّ اَيْمَنَ .
كَمْ اَخْوَالُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟
اَخْوَالُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَةٌ. اَسْوَدٌ وَعُمَيْرٌ وَعَبْدُ يَغُوْثَ وَقَدْ مَاتُوْا فِى الْفَتْرَةِ .
كَمْ خَالَاتُ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ؟
لِلنَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَالَتَانِ وَهُمَا فَرِيْصَةُ وَفَاخِتَةُ وَقَدْ مَاتَتَا فِى الْفَتْرَةِ .
قَدْ عَرِفْنَا ذٰلِكَ، فَمَا هِىَ الْكُتُبُ الْمُنَزَّلَةُ مِنَ السَّمَاءِ ؟
اَلْكُتُبُ الْمُنَزَّلَةُ مِنَ السَّمَاءِ كَثِيْرَةٌ وَمِنْهَا تَوْرَاةُ مُوْسٰى وَاِنْجِيْلُ عِيْسٰى وَزَبُوْرُ دَاؤُدَ وَقُرْاٰنُ
জবুর হযরত দাউদ (عليه السلام) এর ওপর এবং পবিত্র কোরআন হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর ওপর অবতীর্ণ হয়েছে। সৃষ্টিকুল সরদার হযরত সাইয়্যিদিনা মুহাম্মদ (ﷺ) এর ওপর পবিত্র কোরআন শরীফ- যার দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা অন্যান্য অবতীর্ণ কিতাবসমূহ রহিত করে দিয়েছেন।
উপরোক্ত আলোচনায় আমরা উহা অনুধাবন করতে পেরেছি, অতএব ফিরিস্তার সংজ্ঞা কি❓
ফিরিস্তাগণ নূরানী শরীর বিশিষ্ট সৃষ্টি, যাদের সংখ্যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জ্ঞাত নয়। তাদের কোন বংশানুক্রম নেই এবং তাঁরা পানাহারও করেন না। আল্লাহ তা‘আলার তাসবীহ ও প্রশংসা করাই তাদের জীবনী শক্তি। তাঁরা আল্লাহর হুকুম অমান্য করেন না, যথাযতভাবে আল্লাহর হুকুম পালন করেন। আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে বিভিন্নরূপ ধারণ করার ও স্বল্প সময়ে দূর-দূরান্ত পথ অতিক্রম করার ক্ষমতা দান করেছেন। তাঁদের ক্ষেত্রে মৃত্যু বৈধ।
❏ ফিরিশতাদের মধ্য হতে কাদের সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত হওয়া ওয়াজিব❓
مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلَيْهِمْ اَجْمَعِيْنَ .
وَقُرْاٰنُ سَيِّدُنَا مَحَمَّدٍ اَفْضَلُ الْجَمِيْعِ وَقَدْ نَسَخَ اللهُ بِه جَمِيْعَ الْكُتُبِ الْمُنَزَّلَةِ .
فَهِمْنَا ذٰلِكَ، فَمَا هِىَ الْمَلَائِكَةُ ؟
اَلْمَلَائِكَةُ هُمْ اَجْسَامُ نُوْرَانِيَّةٌ لَايَعْلَمُ عَدَدَهُمْ اِلَّا اللهُ تَعَالٰى لَايَتَنَاسَلُوْنَ وَلَا يَأْكُلُوْنَ وَلَا يَشْرَبُوْنَ وَاِنَّمَا قُوْتُهُمْ اَلتَّسْبِيْحُ وَالتَّحْمِيْدُ لَايَعْصُوْنَ اللهَ مَا اَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُوْنَ مَا يُؤْمَرُوْنَ اَعْطَاهُمُ اللهُ قُدْرَةً عَلٰى التَّشَكُّلِ وَقَطْعِ الْمَسَافَاتِ الْبَعِيْدَةِ فِىْ مُدَّةٍ وَجِيْزَةٍ وَالْمَوْتُ جَائِزٌ عَلَيْهِمْ .
مَنْ هُوَ الْوَاجِبُ مَعْرِفَتُهُ مِنَ الْمَلَائِكَةِ تَفْصِيْلًا؟
ফিরিশতাদের মধ্য হতে দশ জন ফিরিশতার বিস্তারিত পরিচিতি জানা আবশ্যক। হযরত জিব্রাঈল (عليه السلام), হযরত মিকাঈল (عليه السلام), হযরত ইসরাফিল (عليه السلام), আজরাঈল (عليه السلام), জান্নাতের নিয়ন্ত্রক রিদুওয়ান (عليه السلام), দোযখের নিয়ন্ত্রক মালেক (عليه السلام), আমলনামা লেখক দু’জন ফিরিশতা রকিব ও আতিদ (عليه السلام) এবং কবরে প্রশ্নকর্তা দু’জন ফিরিশতা মুনকার ও নকির (عليه السلام)।
কিয়ামত
❏ কিয়ামত দিবস কি❓ এ সম্পর্কে কি ধরনের ধারণা রাখা আবশ্যক❓
কিয়ামত দিবসের সূচনা হচ্ছে মৃত্যু, প্রত্যেক মৃত নির্ধারিত সময় অনুযায়ী মৃত্যুবরণ করে, যদিও হত্যাকৃত অবস্থায় মৃত্যু হয়। কবরে দু’জন ফিরিশতা কর্তৃক প্রশ্ন সম্পর্কে বিশ্বাস রাখা আমাদের ওপর আবশ্যক। তারা (ফিরিশতাদ্বয়) প্রত্যেক মৃত ব্যক্তিকে তার প্রভূ, নবী ও দ্বীন সম্পর্কে প্রশ্ন করবেন; যদিও সে মাছের পেটে কিংবা হিংস্র প্রাণীর উদরেই হোক না কেন- তবে যারা এ বিধানভূক্ত নয় যেমন- নবীগণ ও ফিরিশতাগণ। কবরের আযাব ও নি‘য়ামত এবং কবরের
اَلْوَاجِبُ مَعْرِفَتُهُ مِنَ الْمَلَائِكَةِ تَفْصِيْلًا عَشَرَةٌ وُهُمْ جِبْرَائِيْلُ وَمِيْكَائِيْلُ وَاِسْرَافِيْلُ وَعَزْرَائِيْلُ. وَرِضْوَانٌ خَازِنُ الْجَنَّةِ وَمَالِكُ خَازِنُ النَّارِ وَكَاتِبَا الْاَعْمَالِ رَقِيْبٌ وَعَتِيْدٌ وَسَائِلًا الْقَبْرِ مُنْكَرٌ وَنَكِيْرٌ.
مَا هُوَالْيَوْمُ الْاٰخِرُ، وَمَاالَّذِىْ يَجِبُ اِعْتِقَادُهُ؟
اَلْيَوْمُ الْاٰخِرُ اَوَّلُهُ الْمَوْتُ وَكُلُّ مَيَّتٍ بِاَجَلِه وَلَوْ مَقْتُوْلًا وَيَجِبُ عَلَيْنَا اَنْ نُؤْمِنَ بِسُوْالِ الْمَلَكَيْنِ فِىْ الْقِبْرِ، يَسْأَلَانِ كُلَّ مَيْتٍ عَنْ اِلٰهِهِ وَنَبِيِّه وَدِيْنِه وَلَوْ بِاَجْوَافِ السَّمَكِ اَوْبُطُوْنِ السِّبَاعِ اِلَّا مَنِ اسْتُثْنِىَّ كَالْاَنْبِيَاءِ وَالْمَلَائِكَةِ
সংকীর্ণতা (কবরের চাপ) সম্পর্কেও বিশ্বাস করা আমাদের আবশ্যক। কিয়ামতের বড় বড় নিদর্শন সমূহের প্রতি বিশ্বাস করাও ওয়াজিব। যেমন- ইমাম মাহদী (عليه السلام) এর আবির্ভাব ও কানা দাজ্জালের বহিঃপ্রকাশ এবং অলৌকিক ঘটনা প্রদর্শন, হযরত ঈসা বিন মরিয়ম (عليه السلام) আসমান থেকে অবতরণ, ইয়াজুজ-মাজুজ বের হওয়া, দাব্বাতুল আরদ নামক চতুষ্পদ জন্তু বের হওয়া যে মানুষের সাথে কথা বলবে, ‘হে অমুক! তুমি জান্নাতী, হে অমুক! তুমি জাহান্নামী। হযরত ঈসা (عليه السلام) এর ইন্তিকালের পর সূর্য পশ্চিম দিকে উদিত হওয়া, আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে বাতাস প্রেরণ- যা সকল ঈমানদারদের আত্মাকে কেড়ে নিবে, অতঃপর মানুষ এ পৃথিবীতে শত বৎসর পর্যন্ত অবস্থান করবে কিন্তু কেউ আল্লাহ তা‘আলার ইবাদত করবে না।
❏ এরপর কি ঘটবে❓
এরপর আল্লাহ তা‘আলা হযরত ইস্রাফিল (عليه السلام)কে শিঙ্গায় ফুঁক দেওয়ার নির্দেশ দিবেন। পরপর এতে তিনি দু’টি ফুঁক দিবেন; তৃতীয় ফুঁতে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে তবে যাদেরকে আল্লাহ বহাল রাখতে ইচ্ছা করবেন।
وَنُؤْمِنَ بِعَذَابِ الْقَبْرِ وَنَعِيْمِه، وَضَمَّةِ الْقَبْرِ، وَنُؤْمِنُ بِاِشْرَاطِ السَّاعَةِ الْكُبْرٰى، كَظُهُوْرِ الْمَهْدِىِّ، وَالْمَسِيْحِ الدَّجَّالِ، وَتَظْهَرُ عَلٰى يَدَيْهِ خَوَارِقُ الْعَادَاتِ وَنُزُوْلُ عِيْسٰى بْنَ مَرْيَمَ عَلَيْهِ السَّلَامِ وَخُرُوْجِ يَأْجُوْجَ وَمَأجُوْجَ وَخُرُوْجَ الدَّابَّةِ تُكَلِّمُ النَّاسَ تَقُوْلُ: يَافُلَانُ اَنْتَ مِنْ اَهْلِ الْجَنَّةِ، يَافُلَانُ اَنْتَ مِنْ اَهْلِ النَّارِ وَطُلُوْعِ الشَّمْسِ مِنْ مَغْرِبِهَا بَعْدَ مَوْتِ سَيِّدِنَا عِيْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامَ وَاِرْسَالِ اللهِ رِيْحًا تَقْبِضُ اَرْوَاحَ الْمُؤْمِنِيْنَ وَيَبْقٰى النَّاسُ مِائَةَ سَنَةٍ لَايَعْبُدُوْنَ اللهَ تَعَالٰى.
اَىُّ شَيْئٍ يَحْصُلُ بَعْدَ ذٰلِكَ ؟
بَعْدَ ذٰلِكَ يَأْمُرُ اللهُ تَعَالٰى اِسْرَافِيْلَ أَنْ يَنْفَخَ فِىْ الصُّوْرِ،
যেমন- মুসা কলিমুল্লাহ, আরশ বহনকারী ফিরিশতা। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ফিরিশতাদের জীবনের অবসান ঘটাবেন এবং আটটি জিনিস ব্যতীত সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। আট বিষয় হলো- আরশ, কুরসি, জান্নাত, দোযখ, লেজের গোড়ালি অংশ (মেরুদন্ডের নীচের অংশ), আত্মাসমূহ, লৌহ ও কলম। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা সকল বিচ্ছিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো একত্রিত করে ঠিক সেভাবে যেভাবে মূল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো পূর্বে ছিল আজবুজ জম্ব তথা লেজের গোড়ালি বা মেরুদন্ডের নিম্নাংশের হাঁড় থেকে পুনরায় গঠন করবেন। যেমন- আকাশ থেকে অবতীর্ণ পানি দ্বারা তরিতরকারি এবং শস্যাদি বীজ থেকে উৎপাদন করা হয়। এরপর আরশ বহনকারী ফিরিশতা ও ফিরিশতাদের সর্দারকে জীবিত করবেন। এরপর সকল আত্মাকে শিঙ্গায় একত্রিত করবেন এবং হযরত ইস্রাফিলকে পুনর্জীবনের জন্যে ফুঁ দেয়ার নির্দেশ দিবেন। হযরত ইস্রাফিল এতে পুনর্জীবনের ফুঁ দিবেন এবং সমস্ত রূহগুলো তাদের সংখ্যানুপাতে স্বীয় গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে এবং জমিনে স্ব-স্ব শরীরে প্রবেশ করবে।
فَيَنْفُخُ فِيْهِ نَفْخَتَيْنِ، وَبِالثَّالِثَةِ يَصْعَقُ بِه كُلُّ شَيْئٍ اِلَّا مَنْ شَاءَ اللهُ. كَمُوْسٰى الْكَلِيْمُ، وَحَمَلَةِ الْعَرْشِ، ثُمَّ يُمِيْتُ اللهُ الْمَلَائِكَةَ وَيَفْنٰى كُلُّ شَيْئٍ اِلَّا ثَمَانِيَةً وَهِىَ الْعَرْشُ وَالْكُرْسِىُّ، وَالْجَنَّةُ، وَالنَّارُ، وَعَجْبُ الْذَّنَبِ، وَالْاَرْوَاحُ وَاللَّوْحُ وَالْقَلَمُ ثُمَّ يُعِيْدُ اللهُ الْاَجْسَامً كَمَا كَانَتِ الْاَجْزَاءُ الْاَصْلِيَّةُ يَجْمَعُهَا بَعْدَ تَفَرُّقِهَا بِاِنْبَاتِهَا كَالْبَقْلِ مِنْ عَجْبِ الذَّنْبِ بِمَاءٍ يُنَزِّلُـهُ مِنَ السَّمَاءِ وَيَحْـىٰ حَمَلَةَ الْعَرْشِ، وَرُؤُسَاءَ الْمَلَائِكَةِ وَيَجْمَعُ الْاَرْوَاحَ فِى الصُّوْرِ وَيَأْمُرُ اِسْرَافِيْلَ فَيَنْفُخُ فِيْه نَفْخَةَ الْبَعَثِ فَتَخْرُجُ الْاَرْوَاحُ مِنْ ثَـقُوْبِ فِيْهِ بَعَدَهَا فَتَـدْخُلُ اَجْسَادَهَا فِىْ الْاَرْضِ ثُمَّ تَنْشَقُّ عَنْهُمْ فَيَخْرُجُوْنَ
অতঃপর জমিন তাদের জন্যে বিদীর্ণ হবে এবং কবর থেকে তারা দ্রুতগতিতে বের হয়ে আসবে। সর্বপ্রথম আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর জন্যে জমিন বিদীর্ণ হবে। অতঃপর মানুষদেরকে হাঁকিয়ে অবস্থান স্থলে (হাশরের ময়দান) নিয়ে যাওয়া হবে। যা এ জমিন ব্যতীত অন্য জমিনই হবে। সূর্য তাদের অতি নিকটে হবে। তাই মানুষ তাদের আমল অনুপাতে ঘামের মধ্যে থাকবে। আবার কিছু লোক আরশের ছায়ায় অবস্থান করবে। কিয়ামতের ময়দান অসহনীয় কষ্টের হবে। তাই লোকেরা যথাক্রমে হযরত আদম (عليه السلام), হযরত নূহ (عليه السلام), হযরত ইব্রাহিম (عليه السلام), হযরত মুসা (عليه السلام) ও হযরত ঈসা (عليه السلام) এর কাছে সুপারিশের জন্যে উপস্থিত হবে। তাঁরা সবাই অপারগতা প্রকাশ করবেন। অতঃপর তাঁরা সাইয়্যেদুনা মুহাম্মদ (ﷺ) এর কাছে সুপারিশের জন্যে শরণাপন্ন হবেন। তখন তিনি তদের মহাসংকটাপন্ন বিপদে সুপারিশ করবেন। ইহাই হল মাকামে মাহমুদ (প্রশংসনীয় স্থান)। অতঃপর হিসাব-নিকাশ শুরু হবে। তবে যাদের জন্যে অকাট্য দলীল রয়েছে তাঁরা হিসাব-নিকাশের ঊর্ধ্বে থাকবেন।
مِنَ الْاَجْدَاثِ اَىْ اَلْقُبُوْرِ سَـرَاعًا وَاَوَّلُ مَنْ تَنْشَقُّ عَنْهُ الْاَرْضُ نَبِيُّنَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ يُسَاقُ النَّاسُ اِلٰى الْمَوْقِفِ فِىْ اَرْضِ غَيْرِ هٰذِهِ الْاَرْضِ وَتَدْنُوْ الشَّمْسُ مِنْهُمْ، فَيَكُوْنُ النَّاسُ عَلٰى قَدْرِ اَعْمَالِهِمْ فِىْ الْعَرَقِ وَمِنْهُمْ مَنْ يَّكُوْنَ فِىْ ظِلِّ الْعَرْشِ، وَيَشْتَدُّ الْكُرْبُ فِى الْمَوْقِفِ فِيَسْتَشْفِعُ النَّاسُ بِاٰدَمَ، فَنُوْحِ، فَاِبْرَاهِيْمَ، فَمُـوْسٰـى ، فَعِيْسٰى .
فَيَعْتَذَرُوْنَ اِلَيْهِمْ، فَيَسْتَشْفِعُوْنَ بِسَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ . فَيَشْفَعُ لَهُمْ فِـىْ فَصْلِ الْقَضَاءِ وَهُوَ الْمَقَامُ الْمَحْمُوْدُ ثُمَّ يُحَاسَبُوْنَ اِلَّا مَنْ وَرَدَ النَّصُّ بِاِسْتِثْنَائِهِمْ، وَيَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ اُمَّةِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَلْقٌ كَثِيْرٌ بِغَيْرِ
নবী করিম (ﷺ) এর উম্মত থেকে অনেক লোক বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। অতঃপর তাদের আমল সমূহ পরিমাপকের মাধ্যমে পরিমাণ করা হবে। তবে যাঁরা এ হুকুমের ঊর্ধ্বে তাদের আমলগুলো পরিমাণ করা হবে না। অতঃপর বান্দারা আমলনামা হাতে পাবে। হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর উম্মতগণ হাউসে কাউসারে অবতরণ করবেন। যার পানি দুধের চেয়েও সাদা এবং মধুর চেয়েও অধিকতর মিষ্টি। যে ব্যক্তি এখান থেকে পান করবে সে পরে কখনো তৃষ্ণার্থ হবে না। অতঃপর তারা পুলসিরাত অতিক্রম করবে। উহা জাহান্নামের ওপর সুদীর্ঘ সরু সেতু যার প্রারম্ভ হাশরের ময়দান ও শেষাংশ জান্নাতের প্রবেশ পথ। সর্বপ্রথম পুলসিরাত অতিক্রম করবেন সাইয়্যেদুনা মুহাম্মদ (ﷺ) ও তাঁর উম্মতগণ। অতঃপর পর্যায়ক্রমে হযরত ঈসা (عليه السلام) ও তাঁর উম্মতগণ, হযরত মুসা (عليه السلام) ও তাঁর উম্মতগণ, অন্যান্য নবীগণ ও তাঁদের উম্মতগণ পুলসিরাত অতিক্রম করবেন। অত:পর হয়ত তারা প্রত্যাবর্তন করবে সুউচ্চ মর্যাদাবান জান্নাতে যার ফলরাজি অবনমিত থাকবে অথবা অতি উত্তপ্ত জাহান্নামের কঠিন আগুনে! স্বর্গ-নরক উভয়ই বর্তমানে বিদ্যমান আছে।
حِسَابٍ، ثُمَّ تُوْزَنُ اَعْمَالُهُمْ بِالْمِيْزَانِ اِلَّا مَنِ اسْتُثْنِـىَ . ثُمَّ تَأْخُذُ الْعِبَادُ الصُّحُفَ وَتَرِدُ اُمَّةُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَوْضَهُ الشَّرِيْفَ مَاؤُهُ اَبْيَضُ مِنَ الْلَّبْنِ وَاَحْلٰى مِنَ الْعَسْلِ مَنْ شَرِبَ مِنْهُ لَا يَظْمَأُ بَعْدَهُ اَبَدًا، ثُمَّ بَعْدَ ذٰلِكَ يَمُرُّوْنَ عَلٰى الصِّرَاطِ، وَهُوَ جَسْرٌ مَمْدُوْدُ عَلٰى مَتْنِ جَهَنَّمَ، اَوَّلُهُ مِنَ الْمَوْقِفِ وَاٰخِرُهُ عَلٰى بَابِ الْجَنَّـةِ، وَاَوَّلُ مَنْ يَمُرُّ عَلٰى الصِّرَاطِ سَيِّدُنَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاُمَّتُهُ ثُمَّ عِيْسٰى وَاُمَّتُهُ ثُمَّ عِيْسٰى وَاُمَّتُهُ ثُمَّ مُوْسٰى وَاُمَّتُهُ، ثُمَّ بَاقِىُ الْاَنْبِيَاءِ وَاُمَمُهُمْ ثُمَّ بَعْدَ ذٰلِكَ الْمَصِيْرُ اِمَّا اِلٰى جَنَّةٍ عَالِيَةٍ قُطُوْفُهَا دَانِيَّةٌ ، وَاِمَّا اِلٰى نَارٍ حَامِيَّةٍ، وَالْجَنَّةُ وَالنَّـارُ، مَوْجُوْدَتَانِ اَلْاٰنَ .
❏ পূর্বোলিখিত বিষয়াদি ব্যতীত অত্যাবশ্যকীয় আর কিছু বিষয় আছে কি❓
হ্যাঁ! অবশ্যই আছে। নবী করীম (ﷺ) এর পক্ষ থেকে যে সমস্ত বিষয়াদি আমাদের কাছে পৌঁছেছে, যা সর্বসাধারণের নিকট প্রসিদ্ধি লাভ করেছে ঐসব বিষয়াদির প্রতি বিশ্বাস রাখা আবশ্যক। যেমন- নবী করীম (ﷺ) ইসরা ও মি’রাজ শরীফে জাগ্রত অবস্থায় গমনাগমন করেন এবং শহীদদের জীবিত থাকা, যারা আল্লাহ তা‘আলার দ্বীন প্রতিষ্ঠায় কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শাহাদত বরণ করেন, এমনকি তারা পানাহার ও জান্নাতে আমোদ-ফুর্তি করছেন। আমাদের ওপর ফয়সালা ও তাকদীর সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস রাখা ওয়াজিব-তা হল আল্লাহ তা‘আলা সৃষ্টি জগত সৃষ্টি করার পূর্বে ভাল-মন্দ সৃষ্টি করেছেন এবং সমগ্র সৃষ্টি তারই ফয়সালা মোতাবেক নির্ধারণ অনুযায়ী এবং প্রতিটি ভাল-মন্দ বিষয়াদি তারই পক্ষ হতে, তিনি মহানত্বের অধিকারী প্রত্যেক কিছুর সৃষ্টিকর্তা। তবে আদব হচ্ছে ভাল বিষয়গুলোর সম্পর্ক আল্লাহ তা‘আলার প্রতি করা এবং মন্দগুলোর সম্পর্ক অবাধ্য আত্মা বা বিতাড়িত শয়তানের প্রতি করা। তাও আবার সৃষ্টি হিসেবে নয় বরং বিপথগামী করার নিমিত্তে।
هَلْ يَجِبُ شَيْئٌ غَيْرُ مَا تَقَـدَّمَ ؟
نَعَمْ . يَجِبُ الْاِيْمَانُ بِكُلِّ مَاوَرَدَ عَنِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ كُلِّ حُكْمٍ صَارَ مُشْتَهِرًا بَيْنَ الْعَامَّةِ كَالْاِسْرَاءِ وَالْمِعْرَاجِ بِجَسَدِهِ الشَّـرِيْفِ فِـى الْيَقْظَةِ وَكَحَيَاةِ الشُّهَدَاءِ، وَهُمْ مَنْ قُتِلُوْا فِىْ جِهَادِ الْكُفَّارِ لِأِعْلَاءِ كَلِمَةِ اللهِ تَعَالٰى حَتّٰى اِنَّهُمْ يَأْكُلُوْنَ وَيَشْرَبُوْنَ وَيَتَمَتَّعُوْنَ فِى الْجَنَّةِ، وَيَجِبُ عَلَيْنَا الْاِيْمَانَ بِالْقَضَاءِ وَالْقَدْرِ وَهُوَ اَنْ نَعْتَقِدَ اَنَّ اللهَ تَعَالٰى قَدَّرَ الْخَيْرَ وَالشَّرَّ قَبْلَ خَلْقِ الْخَلْقِ وَاَنَّ جَمِيْعَ الْكَائِنَاتِ بِقَضَاءِ اللهِ وَقَدَرِهِ . وَخَيْرَالْاُمُوْرِ وَشَرَّهَا مِنْهُ تَعَالٰى جَلَّ شَاْنُهُ، فَهُوَ الْمُوْجِدُ لِكُلِّ شَيْئٍ . اِنَّمَا الْاَدَبُ نِسْبَةُ الْخَيْرِ لِلّٰهِ عَزَّ وَجَلَّ وَنِسْبَةُ الشَّرِّ اِلَى النَّفْسِ الْاَمَّارَةِ اَوِ الشَّيْطَانِ الْمَرْدُوْدِ لَا عَلٰى سَبِيْلِ الْاِيْجَادِ بَلِ الْاِغْوَاءِ .
❏ উপরোলিখিত বিষয়াদি সম্পর্কে ঈমান আনয়ন করা কেবলমাত্র মাদ্রাসা ছাত্র ও শিক্ষিত সমাজের ওপর ওয়াজিব ❓
উপরোলিখিত বিষয়াদির ওপর ঈমান আনয়ন সমগ্র মুসলমান নর-নারীর জন্যে অত্যাবশ্যকীয়, অন্যথায় তাদের ঈমান পরিপূর্ণ হবে না।
❏ পূর্ববর্তী বিষয়াদির ওপর আত্ম বিশ্বাস রাখার উপকারিতা কি❓
যে সকল লোকেরা উপরোলিখিত বিষয়াদির ওপর বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং উহার মহত্ত্ব ও গুরুত্ব সম্পর্কে অবগত হবে তারাই ইহ ও পরকালে সৌভাগ্যবান হবে এবং আল্লাহ তা‘আলা তাদের জন্যে পূণ্যবান ও সফলকাম হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। মহান আল্লাহর দরবারে আমাদের প্রার্থনা, হে আল্লাহ! আমাদের শেষ অবস্থায় আমাদের সর্দার, নবুয়তের যুগ সমাপনকারী নবীকুলের সম্রাট হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর সম্মানের খাতিরে ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করার তাওফীক দান করুন। সমস্ত
هَلْ اِعْتِقَادُ مَاتَقَدَّمَ وَاجِبٌ عَلٰى تَلَامِذَةِ الْمَدَارِسِ وَالْمَكَاتِبِ فَقَطْ؟
اِعْتِقَادُ مَاتَقَدَّمَ وَاجِبٌ عَلٰى جَمِيْعِ الْمُسْلِمِيْنَ وَالْمُسْلِمَاتِ وَمَنْ لَمْ يَعْتَقِدْ مَا تَقَّدَمَ كَانَ اِيْمَانُهُ نَاقِصًا .
اَىُّ شَيْئٍ يَتَـرَتَّبُ عَلٰى اِعْتِقَادِمَا تَقَدَّمَ؟
مَنْ اِعْتَقَدَ مَا تَقَدَّمَا وَعَرَفَ مَعْنَاهُ كَانَ سَعِيْدُ الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ وَخَتَمَ لَـهُ اللهُ بِالسَّعَادَةٍ نَسْأَلُكَ اَللّٰهُمَّ حُسْنَ الْخِتَامِ بِجَاهِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ خَاتِمِ الرُّسُلِ الْكِرَامِ وَالْحَمْدُ الِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ وَصَلَّى اللهُ عَلٰى سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ كُلَّمَا ذَكَرَهُ
প্রশংসা সমগ্র জাহানের পালনকর্তা আল্লাহর জন্যে এবং সাইয়্যেদুনা হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর ওপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন, ‘স্মরণকারীগণ যখনই স্মরণ করেন ও অলসগণ যখনই অলসতা ও অবহেলা করে।
হে আল্লাহ! আমাদেরকে নবী ও রাসূলগণের সম্রাটের শাফায়াত নসিব করুন এবং তোমারই সুন্দর নামসমূহের ফুয়ুজাত ও বরকতের ধারা প্রবাহিত করুন। হে আমাদের প্রতিপালক! হে আমাদের মাওলা! আমিন!
الذَّاكِرُوْنَ وَغَفَلَ عَنْ ذِكْرِهِ الْغَافِلُوْنَ .
اَللّٰهُمَّ ارْزُقْنَا شَفَاعَةَ سِيِّدَالْاَنْبِيَاءِ وَالْمُرْسَلِيْنَ، وَاَفِضْ عَلَيْنَا مِنْ فِيُوْضٍ بِاَسْمَائِكَ الْحُسْنٰى يَا رَبَّـنَا يَا مَوْلَانَا .
সমাপ্ত
১৫ই সেপ্টেম্বর ২০০৯ইং, ২৫ই রমজানুল মোবারক, মঙ্গলবার আছরের ওয়াক্তের পূর্বে। ]
১৫ ستمبر ২০০৯ -২৫ رمضان المبارك
بوقت قبل العصر فى يوم الثلاثاء .