ইসলামে হজ্জের গুরুত্ব
আবু হোরায়রা বর্ণিত এক হাদিসে ইসলামের
নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম
বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য হজ্জ করে
এবং অশ্লীল ও গোনাহের কাজ থেকে বেঁচে
থাকে, সে হজ্জ থেকে এমতাবস্খায় ফিরে আসে
যেন আজই মায়ের গর্ভ থেকে বের হয়েছে।
অর্থাৎ জন্মের পর শিশু যেমন নিষ্পাপ থাকে,
সেও তদ্রূপই হয়ে যায়।” [৩] আরেকটি হাদিসে
তিনি বলেছেনঃ “শয়তান আরাফার দিন হতে
অধিক লজ্জিত ও অপদস্থ আর কোনো দিন
হয় না, কেননা ওই দিন আল্লাহতায়ালা স্বীয়
বান্দার প্রতি অগণিত রহমত বর্ষণ করেন ও
অসংখ্য কবিরা গুনাহ ক্ষমা করে দেন।” তিনি
আরো বলেছেনঃ “একটি বিশুদ্ধ ও মকবুল হজ্জ
সমগ্র পৃথিবী ও পৃথিবীর যাবতীয় বস্তুর চেয়ে
উত্তম। বেহেস্ত ব্যতীত অন্য কোনো বস্তু
তার প্রতিদান হতে পারে না।”
অর্থ
ইসলামের বর্ননা অনুসারে হজ্জ একটি
আবশ্যকীয় বা ফরজ উপাসনা। এটি ইসলামের
৫ম স্তম্ভ। হজ্জ শব্দের আভিধানিক অর্থ
“ইচ্ছা” বা “সংকল্প” করা। আচার ও আদব-
কায়দার বিবেচনায় হজ্জ হলো বৎসরের
নির্দ্দিষ্ট দিনে নির্দ্দিষ্ট পোশাকে কয়েকটি
স্থানে অবস্থান বা ওকুফ, ক্বাবা শরীফের
তাওয়াফ, পশু কোরবানী, নির্দ্দিষ্ট স্থানে
পরপর ৩দিন কংকর নিক্ষেপ এবং সাফা-মারওয়া
টিলাদ্বয়ের মধ্যে হাঁটা।
হজ্বের ঐতিহাসিক পটভূমি
কাবাঘরে সর্বপ্রথম হজ্জ আদায় করেন
ইসলামের নবী আদম ; তারপর নূহ সহ অন্য
ইসলামের অন্যান্য নবী-রাসূল এ দায়িত্ব পালন
করেন। ইব্রাহিম (আ:) এর সময় থেকে হজ্জ
ফরয বা আবশ্যকীয় ইবাদত হিসেবে নির্ধারিত
করা হয়। হিজরি সনের ১২তম মাস হলো
জিলহজ্জ মাস। ইসলামের বর্ননা অনুসারে এই
সময়ই স্রষ্টা ইব্রাহিম কে হজ্জ ফরজ হওয়ার
কথা ঘোষণা করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
কোনো কোনো বর্ণনায় আছেঃ এ আদেশের
পর ইব্রাহিম আবু কোবাইস পাহাড়ে আরোহণ
করে দুই কানে অঙ্গুলি রেখে ডানে-বামে এবং
পূর্ব-পশ্চিমে মুখ ফিরিয়ে ঘোষণা করেছিলেনঃ
লোক সব, তোমাদের পালনকর্তা নিজের গৃহ
নির্মাণ করেছেন এবং তোমাদের ওপর এই গৃহের
হজ্জ ফরজ করেছেন। তোমরা সবাই
পালনকর্তার আদেশ পালন করো”। এই বর্ণনায়
আরো উল্লেখ আছে যে ইব্রাহিম এর ঘোষনা
স্রষ্টার পক্ষ থেকে বিশ্বের সবখানে পৌঁছে
দেয়া হয়।[৪]
হজ্জ-এর বিভিন্ন আচার-কায়দা ইব্রাহিম এর
জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিভিন্ন ইসলামিক
বর্ননায় উল্লেখ আছে ইব্রাহিম স্রষ্টার
নির্দেশে তাঁর স্ত্রী বিবি হাজেরাকে নির্জন
মরুভূমিতে রেখে এসেছিলেন। সেখানে, ক্বাবা
শরীফের অদূরে, বিবি হাজেরা নবজাত শিশু
ইসমাইল কে নিয়ে মহাবিপদে পড়েছিলেন।
সাহায্যের জন্য কাউকে না পেয়ে তিনি পানির
খোঁজে সাফা-মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে
দৌড়াদৌড়ি করেছিলেন। এই ঘটনাকে স্মরন
করেই হজ্জের সময় মুসলিমদের জন্য সাফা-
মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে হাঁটার নিয়ম রয়েছে।
ইসলামিক বর্ননায় উল্লেখ আছে স্রষ্টা
বেহেশত বা স্বর্গ থেকে আদম ও হাওয়া কে
যখন পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন, এতে তারা পরস্পর
বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে উভয়ে
আরাফাত ময়দানে এসে মিলিত হন। এই ঘটনার
কৃতজ্ঞতাস্বরূপ হজ্বের একটি অংশ হিসেবে
মুসলিমরা আরাফাতের ময়দানে এসে উপস্খিত
হয়ে স্রষ্টার কাছে কান্নাকাটি করে ইবাদতে মগ্ন
হন।
ইসলামে হজ্জের গুরুত্ব
পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।





Users Today : 359
Users Yesterday : 759
This Month : 5393
This Year : 177264
Total Users : 293127
Views Today : 6398
Total views : 3461510