তৃতীয় শতাব্দীর এক বিখ্যাত মুহাদ্দীস ইমাম আবু ইয়া’আল(রঃ) তাঁর মুসনাদ(ভলি. ২, পেজ ৭১) সহীহ চেইনে উল্লেখ করেনঃ
হযরত আবু উবায়দাহ বিন জারাহ(রাঃ) থেকে বর্ণীত, রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন – “মুসলিম উম্মাহ এর যাবতীয় কাজ কারবারে ততক্ষণ পর্যন্ত ন্যায়পরায়ণতা পরিলক্ষিত হবে যখন বনি উম্যায়াহ গোত্রের এক জন এসে দ্বীনের মধ্যে ফাটল ধরাবে। তার নাম হবে ইয়াজিদ”
হাদীসটির বর্ণনাকারীর সকলেই সৎ এবং নির্ভরযোগ্য।
▪ আরেক বিখ্যাত মুহাদ্দীস ইমাম সাহাবুদ্দীন আহমেদ বিন হাজর হায়তামী(রঃ) তাঁর আস-সাবাক আল-মুহরিকা গ্রন্থের ১৩২ পৃঃ একই হাদীস উল্লেখ করেছেন।
হযরত আবু দারদা(রাঃ) বলেছেন, “আমি শুনেছিলাম রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন – আমার সুন্নাহকে পরিবর্তনকারী প্রথম ব্যক্তি হবে বনি উম্যায়াহ গোত্রের ইয়াজিদ”।
▪ হাফিজ ইবন কাথীর(রঃ) একই হাদীস উল্লেখ করেছেন তাঁর সুবিখ্যাত আল-বিদ্যায়াহ আন-নিহ্যায়াহ গ্রন্থের ভলি. ৬, পেজ ২৫৬ তে হযরত আবুযার ঘিফারী(রাঃ) থেকে। এই বর্ণনায় ‘যার নাম ইয়াজিদ হবে’ এই কথাটি অনুপস্থিত।
▪ হাদীসটি এই গ্রন্থেও বর্ণীত আছে
মুসান্নাফ ইবন আবি শায়বা- ভলি. ৮, পেজ ৩৪১, হাদীস নং ১৪৫; দালাইল উন নবুয়্যাত লিল বায়হাকী আবওয়াব ঘাজওয়া তাবুক- হাদীস নং ২৮০২; মাতালিব আল-আলিয়্যাহ- হাদীস নং ৪৫৮৪।
▪ আমর বিন ইয়াহিয়া সায়ে’দ বিন আমর বিন সায়ে’দ তাঁর দাদার সূত্রে বর্ণনা করেন, আমি হযরত আবু হুরায়রা(রাঃ) এর সাথে মসজিদে নববীতে বসেছিলাম এবং মারওয়ান আমাদের সাথে ছিলেন। হযরত আবু হুরায়রা(রাঃ) বলেছিলেনঃ “আমি শুনেছিলাম রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন, কুরাইশ বংশের কিছু যুবকদের দ্বারা আমার উম্মত ধ্বংস প্রাপ্ত হবে”। মারওয়ান বলেন, আল্লাহ এই ধরণের যুবকদের অভিশাপ দেন। হযরত আবু হুরায়রা(রাঃ) বলেন, আমি বলতে পারি অমুক, অমুকের পুত্র অমুক, তমুকের পুত্র তমুক যদি আমি চাই। হযরত আমর বিন ইয়াহিয়া বলেন, আমি আমার দাদার সাথে বনী মারওয়ানে গিয়েছিলাম যখন তারা সিরিয়া নিয়ন্ত্রণ করছিল এবং এক জন যুবককে দেখতে পেলাম। আমার দাদা বললেন তারাও তাদের একজন হবে। আমরা বললাম তা আপনি ভাল বলতে পারবেন।
[সহীহ বুখারী ভলি. ২, কিতাবুল ফিতনা]
▪ হযরত আবু হুরায়রা(রাঃ) সূত্রে বর্ণীত, রাসূলুল্লাহ(ﷺ) বলেছেন- আল্লাহ তা’আলার সাহায্য প্রার্থনা কর ৭০ দশক হতে এবং এক যুবকের রাজত্বকাল হতে।
[মুসনাদ ইমাম আহমদ, হাদীস নং ৩৮০০]
▪ সহীহ বুখারী শারীফের ব্যাখ্যাকারী এবং ফাতহুল বারীর লেখক হাফিজ আহমদ বিন হাজর আসকলানী(রঃ) মুসান্নাফ ইবন আবি শায়বা সূত্রে বর্ণনা করে লিখেন, মুসান্নাফ ইবন আবি শায়বার হাদীসে বলা আছে, হযরত আবু হুরায়রা(রাঃ) বাজারে যাওয়ার সময় প্রার্থনা করত ‘ও আল্লাহ, আমাকে ৬০ A.H. এবং যুবকের রাজত্বকাল পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখ না’
হাফিজ ইবন হাজর আসকলানী(রঃ) এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, এই হাদীসে ৬০A.H. এ এক জন শাসকের কথা বলা হয়েছে। হাদীস অনুসারে তাই ঘটে। ইয়াজিদ বিন মুয়্যাবিয়্যা এই বছরেই শাসনে বসেন ৬৪A.H. পর্যন্ত এবং এই সময়ে মারা যান।
▪ সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যাকারী ইমাম বদরুদ্দীন আইনি(রঃ) সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ‘প্রথম বালক যে শাসন করবে’ এই কথা দ্বারা ইয়াজিদকে বুঝানো হয়েছে।
[উমদাত উল কাদরী ভলি. ১৬, পেজ ৩৩৩]
মূলত এই কারণে আগেরকার যুগের বড় বড় আলেমগণ ইয়াজিদ বিন মুয়্যাবিয়্যার নামের শেষে ‘আল্লাহ এর লানত বর্ষিত হোক’ কথাটি লিখতেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েক জন হলেন –
▪ Imam Ibn Hajr (rah) made the whole title in his book al-Imta bil al-Arb’ain as “SENDING LANAH ON YAZID (لعن يزيد)”
وأما المحبة فيه والرفع من شأنه فلا تقع إلا من مبتدع فاسد الاعتقاد فإنه كان فيه من الصفات ما يقتضي سلب الإيمان عمن يحبه لأن الحب في الله والبغض في الله من الإيمان والله المستعان
Translation: Loving and glorifying him (Yazid) is not done “EXCEPT BY A HERETIC” who has void belief because he (Yazid) had such characteristics that his lover deserves to be faithless, because to love and hate just for the sake of God is a sign of faith.
[Publisher’s name: Dar ul Kutb al iLmiyyah, Beirut, Lebanon, Book name: al-Imta bil al-Arba’in al-Matbainatus Samah (الإمتاع بالأربعين المتباينة السماع), Author: Imam Ibn Hajr al Asqalani (rah), Publication date: 1997, Page No. 96]
قال يحيـى بن عبد الملك بن أبـي غنية أحد الثقات، ثنا نوفل بن أبـي عقرب ثقة قال: كنت عند عمر بن عبد العزيز فذكر رجل يزيد بن معاوية، فقال: قال أمير المؤمنين يزيد، فقال عمر: تقول أمير المؤمنين يزيد، وأمر به فضرب عشرين سوطاً
Translation: Yahya bin Abdul Mulk bin Abi Ghania “WHO WAS AMONGST THIQA NARRATORS” he heard from Nawfl bin Abi Aqrab “WHO IS THIQA” he narrates: Once in the gathering of Umar Bin Abdul Aziz [R.A] people talked about Yazid bin Muawiya,
someone among the people mentioned Yazid with the title of Ameer ul Momineen, hearing this Hadrat Umar bin Abdul Aziz [ra] replied (in anger): You have called Yazeed Amir Ul Mominein?
Then he gave order of 20 lashes to be given to the persion.
[Imam Ibn Hajr al Asqalani in Tahdhib ut Tahdhib, Volume No. 6, Page No. 313].
▪ নবম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতি(রঃ) তাঁর সুবিখ্যাত ইতিহাসগ্রন্থ “তারিখ উল খুলাফা” গ্রন্থে ইয়াজীদ সম্পর্কে লিখেনঃ
“You (Imam Hussain – Radhi Allaho Anho) were martyred and your head was brought to Ibn Ziyad on a plate. “May Allah’s Lanah (Curse) be upon the person who killed you, also Ibn Ziyad “AND UPON YAZID.”
[As-Suyuti in Tarikh ul Khulafa, Page No. 165]”
The Proof of sending Lanah upon Yazid is derived from this (ayah), as was mentioned by
▪ Al-Barzanji (rah) in his Al-Ashaat and
▪ Imam Haythami (rah) in As-Sawaiq from
▪ Imam Ahmed (rah) that his son Abdullah
asked him about sending Lanah on Yazid, and how sending Lanah upon him is mentioned in the book of Allah (i.e. Quran). Imam Ahmed (rah) in proof of (sending Lanah upon Yazid) mentioned these verses:Would ye then, if ye were given the command, work corruption in the land and sever your ties of kinship? Such are the men whom Allah has cursed…(47:22-23), So could there be a greater fitnah than the actions committed by Yazid? [Ruh ul Ma’ani by Imam Al-Alusi, Volume 9 Under Surah Muhammad 22-23]
▪ Allama Alusi said: And I say what is prevalent over my mind that (Yazid) Khabith did not testify to the messengership of the Holy Prophet (Peace Be Upon Him). According to me it is correct to curse a person like Yazid, although one cannot imagine a Fasiq like him and apparently he never repented, the possibility of his repentance is weaker than the possibility of his faith (Iman). Along with Yazid, Ibn Ziyad, Ibn Sa’ad and his group shall also be included. Verily, may Allah’s curse be upon all of them, their friends, their supporters, their group and upon everyone who inclines towards them until Qayamah and until an eye sheds a tear for Abu Abdullah Hussain (ra). [Tafsir Ruh al-Ma’ani, Volume 26, Page No. 73]
অথচ এই শেষ যুগে এসে ওহাবী/সালাফী/আহলে হাদীস নামের দলটির নেতারা এই ব্যক্তির নামের শেষে ‘আল্লাহ এর রহমত বর্ষিত হোক’ কথাটি ব্যবহার করে চলেছে। আল্লাহ তা’আলা আমাদের রক্ষা করুন এদের হাত থেকে। সুম্মা আমিন।