হাদিসের নামে জালিয়াতি” বইয়ের ১৮৪-১৮৫পৃষ্ঠায় একটি হাদিস পর্যালােচনা করে প্রমান করার জন্য ব্যর্থ চেষ্টা করেছেন যে, ইমাম তিরমিযী অনেক জাল হাদিসকে নাকি ‘হাসান’ বা সহিহ বলেছেনন। নাউযুবিল্লাহ অপরদিকে আরও উল্লেখ করা হয়েছে,“ইমাম তিরমিযীর এগুলাে ঢিলেমীজাত ভূলের উদাহারন।” নাউযুবিল্লাহ! দেখুন এত বড় একজন ইমাম যিনি কোন হাদিসটি সহিহ,হাসান,গরীব হবে তা সাথে সাথে সমাধান দিয়েছেন। তাই তার দ্বারাই বুঝা যায়, তিনি হাদিস শাস্ত্রের উপর কত বেশী পরিশ্রম করেছেন। আর তিনি ইমাম তিরমিযীর সারা জীবনের সাধনার ভূল ধরতে এসেছেন। তাও শতশত বছর পরে তবে হ্যা, ইজতেহাদি দুই একটি হাদিসের ক্ষেত্রে এ রূপ হযেই থাকে। কোন রাবির কারনে এমনওতাে হতে পারে যে তার নিকট সিকাহ অন্য মুহাদ্দীসের নিকট দ্বঈফ বা পরিত্যাজ্য। তাই বলে তিনি দোষী নন।
❏ তাই আমি সর্বশেষ বলতে চাই, ইমাম তিরমিযী নিজের গ্রন্থে মতামত নিজেই পেশ করেন এভাবেঃ
ﺻﻨﻔﺖ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﻭ ﻋﺮﺿﺘﻪ ﻋﻠﻰ ﻋﻠﻤﺎﺀ ﺍﻟﺤﺠﺎﺯ ﻭ ﺍﻟﻌﺮﺍﻕ ﻭ ﺧﺮﺍﺳﺎﻥ , ﻭ ﻓﺮﺿﻮﺍﺑﻪ ﻭ ﻣﻦ ﻛﺎﻥ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﻳﻌﻨﻲ ﺍﻟﺠﺎﻣﻊ ﻓﻲ ﺑﻴﺘﻪ ﻓﻜﺎﻥ ﻓﻲ ﺑﻴﺘﻪ ﻧﺒﻲ ﻳﺘﻜﻠﻢ –
-“আমি এ কিতাবটি হিযাজ,ইরাক এবং খুরাসানের আলিমগনের নিকট পেশ করি। তারা সকলেই এ গ্রন্থেও উপর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং এটিকে উত্তম গ্রন্থ বলে অভিহিত করেন। তারপর বলেন, যার গৃহে আমার এ “আল-জামি” গ্রন্থটি রয়েছে তার গৃহে যেন স্বয়ং নবি করীম (ﷺ) অবস্থান করছেন এবং কথা বলছেন।”
তথ্যসূত্রঃ
●আবু ঈসা তিরমিযী,আল-জামে,১-দরুল ফিকর ইসলামিয়্যাহত,লেবানন।
●যাহাবী,সিয়ারু আলামিন আন-নুবালা,১৩২৭৪.গ) ইমাম যাহাৰী,তাযকিরাতুল হুফফাষ,১৬৩৪
●ইমাম যাহাৰী,তাযকিরাতুল হুফফাষ,১৬৩৪
●ইমাম ইবনুল আসির জামেউল উসূল,১১৮৯৭ আল্লামা তাশ কোবরা, মিফতাহস সাআদ্যহ ২১২২-১২৩,
●আল্লামা তাশ কোবরা, মিফতাহস সাআদ্যহ ২১২২-১২৩,
❏ ইমাম তিরমিযীর প্রশংসায় মুহাদ্দিসকুল শিরমনি ইমাম বুখারী(رحمة الله)বলেন
ﺍﻧﺘﻔﻌﺖ ﺑﻚ ﺍﻛﺜﺮ ﻣﻤﺎ ﺍﻧﺘﻔﻌﺖ ﺑﯽ
“আপনি (তিরমিযী) আমার দ্বারা যতটুকু উপকৃত হয়েছেন আমি আপনার দ্বারা তার চাইতেও বেশী উপকৃত হয়েছি।
তথ্যসূত্রঃ
●ইবনে হাজার আসকালানী,তাহযীবুত তাহযীব, ৭/৫৬৫পৃ.
●শুধু তাই নয় ইমাম বুখারী (رحمة الله) কিছু হাদিস ইমাম তিরমিযী (رحمة الله) এর থেকেও রেওয়ায়েত করেছেন।
●আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী, তাহযীবুত তাহযীব,৭/৩৬৫পৃ
❏ অপরদিকে ইমাম হাকিম নিশাপুরী (رحمة الله) ইমাম তিরমিযী (رحمة الله) এর সম্পর্কে বলেন,
ﺳﻤﻌﺖ ﻋﻤﺮ ﺑﻦ ﻋﻠﻚ ﻳﻘﻮﻝ : ﻣﺎﺕ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﻓﻠﻢ ﻳﺨﻠﻒ ﺑﺨﺮﺍﺳﺎﻥ ﻣﺜﻞ ﺍﺑﻲ ﻋﻴﺴﻲ ﻓﻲ ﺍﻟﻌﻠﻢ ﻭ ﺍﻟﺤﻔﻆ ﻭ ﺍﻟﻮﺭﻉ ﻭ ﺍﻟﺰﻫﺪ ﺑﻜﯽ ﺣﺘﯽ ﻋﻤﯽ ﻭ ﺑﻘﻲ ﺿﺮﻳﺮﺍ ﺳﻨﯿﻦ۔
-“হাকিম নিশাপুরী (رحمة الله) তিনি ওমর ইবনে আলাক (رحمة الله) থেকে শুনে বলেন ইমাম বুখারী (رحمة الله) তার ইন্তেকালের পর (খুরাসানে) জ্ঞান, পরহেযগারী এবং দুনিয়া বিমুখতার ক্ষেত্রে ইমাম আবু ঈসা (رحمة الله)-এর অনুরুপ আর কাউকে রেখে যাননি। তিনি অধিক কান্নার কান্নার জন্য শেষ বয়সে অন্ধ হয়ে গিয়েছেন এবং কয়েক বছর পর্যন্ত অন্ধাবস্থায় জীবন-যাপন করেন।
তথ্যসূত্রঃ
●ইমাম যাহাবী, তাযকিরাতুল হুফফায, ২৩৪.
●যাহাৰী, সিয়ারু আলামিন আন্-নুবালা,১৩২৭৩.
●যাহাৰী, সিয়ারু আলামিন আন্-নুবালা,১৩২৭৩.
❏ ইমাম শামসুদ্দীন যাহাবী (رحمة الله) বলেন,
ﺍﻟﺤﺎﻓﻆ ﺍﻟﻌﺎﻟﻢ ﺻﺎﺣﺐ ﺍﻟﺠﺎﻣﻊ ﻭ ﺛﻘﺔ ﻣﺠﻤﻊ ﻋﻠﻴﻪ .
-“তিনি ছিলেন হাফি,আলিম,জামি গ্রন্থের সংকলক সিকাহ এবং বিশ্বস্ততার ব্যাপারে সকলেই একমত।”
তথ্যসূত্রঃ
●ইমাম যাহাবী, মিনুল ই’তিদাল,৩/৬৭৮পৃ.
কিন্তু আমার বড় আফসুস যে আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর, শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী মত লােকদের জন্য যে সকল ইমাম মুহাদ্দিস তিরমিযির বিশ্বস্ততার উপর একমত হয়েছেন, তাতে তারা সকলে হতে পারেনি।
❏ শুধু তাই নয়, বিখ্যাত মুহাদ্দীস আবু ই’য়ালা (رحمة الله) বলেন,
ﺛﻘﺔ ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﻣﺸﻬﻮﺭ ﺑﺎﻷﻣﺎﻧﺔ ﻭ ﺍﻟﻌﻠﻢ
-“তিনি যে সিকাহ বা বিশ্বস্ত ছিলেন তার উপর ইমাম ও আলেমগন একমত পােষন করেছেন। তিনি আমানতদারী ও জ্ঞানের ক্ষেত্রে ছিলেন প্রসিদ্ধ।
তথ্যসূত্রঃ
●ইবনে কাছির, জামিউল মাসানীদ, আল-মুকাদ্দামা, ১/১০৯ পৃ.
সম্মানিত পাঠকগণ! আপনারাই বলুন,আমরা কি গ্রহনযােগ্য ইমামদের অভিমত শুনব নাকি গণ্ড মূর্ণ লেখকদেও কথা শুনব?
সূত্রঃ প্রমানিত হাদীস কে জাল বানানোর স্বরুপ উন্মোচন
মুফতি মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাহাদুর