একদিন মরুঅঞ্চলের একশো বিশ বছরের এক বয়োঃবৃদ্ধ ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ হলো, জিজ্ঞেস করলাম, চাচা! আপনার সুদীর্ঘ জীবনের রহস্য কি? এ বয়সে ও আপনার চলাচল স্বাভাবিক এবং তৎপরতার কমতি ও ঘাটতি নেই যে?
তিনি বললেনঃ
تركت الحسد فبقى الجسد
আমি আমার মনের গহীনে কারও প্রতি হিংসা বিদ্বেষ পোষণ করি না, তাই আমার দেহ সুরক্ষিত ও স্বাভাবিক আছে।
–
আমরা যদি জানতাম আমাদের অনুপস্থিতিতে আমাদের সম্পর্কে মানুষ কি বলে! তবে হয়ত অধিকাংশ মানুষের সামনে হাসতে পারতাম না।
–
এক বিজ্ঞ হাকীমকে জিজ্ঞেস করা হলো,বলুন তো আকাশটা এত স্বচ্ছ কেন?
তিনি হেসে উঠে বললেন, কারণ ওখানে মানুষ বসবাস করে না তো তাই আকাশটা এত নির্মল।
–
প্রচন্ড পিপাসায় এক ঢোক পানিই আপনার জীবন বাঁচাতে সহায়ক হয়,কিন্তু কখনো হয়তো গভীর পানিই আপনার ডুবে মরার ও কারণ হয়।
–
জীবনে সফলতার জন্য দুটি জিনিস দরকার হয়,আস্থা অর্জন ও অজ্ঞতার ভান করা।
–
মেধা হীনতা এক প্রকার ত্রুটি,কিন্তু মেধাহীনতার ভান করা পূর্নতার প্রতীক। অনুরূপভাবে উদাসীনতা ধ্বংস ডেকে আনে কিন্তু উদাসীনতার ভাব দেখানোর মধ্যে ই রয়েছে হিকমা।
–
অজানা অস্বস্তি বোধ ?? নিশ্চিত কোন পাপের কারণেই ঘটেছে, এটি আপনাকে ইসতিগফারের ইঙ্গিত দিচ্ছে, আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন,সব ঠিক হয়ে যাবে।
–
আল কুরআন আমাদের জন্য স্বস্তি ও প্রশান্তির নিয়ামক, জীবনের ধুম্রোজালে আমাদের জীবন যখন অতিষ্ঠ হয়ে উঠে, তখন একমাত্র কুরআন তিলাওয়াত করলেই আমাদের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়, স্বস্তি ফিরে আসে, আমাদের মানোন্নয়ন ঘটে, সুতরাং কখন ই কেউ কুরআন প্রত্যাখান করবেন না।
–
নিয়মিত স্বলাত আদায়ে আমাদের সার্বিক তৎপরতা বৃদ্ধি পায়।এ প্রসঙ্গে আল্লাহ ইরশাদ করেনঃ
ان الإنسان خلق هلوعا إذا مسه الشر جزوعا وإذا مسه الخير منوعا الا المصلين الذين هم على صلاتهم دائمون
মানুষ কে অস্থির চিত্তের অধিকারী হিসেবে ই সৃষ্টি করা হয়েছে, তাকে যখন অকল্যাণ স্পর্শ করে তখন সে বড্ড হা-হুতাশ কারী হয়ে উঠে, আর যখন তাকে কল্যাণ স্পর্শ করে তখন সে বড্ড কৃপণ হয়, তবে মুসল্লীরা ব্যতিত,যারা সালাতে দায়েম ও কায়েম থাকে। সূরা আল মা’আরিজ আয়াত ১৯-২৩
হিংসুক সব সময়ই আপনাকে অহংকারী মনে করে, কিন্তু ভালবাসার মানুষগুলো আপনাকে অনন্য উচ্চতায় আছেন মনে করে থাকেন।
–
কেউ আপনার অনুগ্রহ অস্বীকার করলে ব্যথিত হবেন না, দিনের বেলায় রাস্তায় আলোর কথা কেউ মনে রাখেনা।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর এক বার সালাত ও সালাম পেশ করা হলে তা দশ গুণ বেশি হয়ে সালাম পেশ কারীর উপরে শান্তি ও রহমত হিসেবে ফিরে আসে, সুতরাং রাসূলের প্রতি সালাম পেশ করতে যারা কৃপণতা করে তাদের জন্য আফসোস!
– একটি প্রকান্ড গাছ উপড়ে পড়লে পতনের শব্দ সবাই শোনে, কিন্তু জঙ্গলে প্রতিদিন কত বৃক্ষ বেড়ে উঠে সেই শব্দ কার ও কানে পৌঁছায় না, মানুষ কেবলমাত্র আপনার পতনের খবর ই পায়, আপনার অর্জনের প্রতি তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই।
চলার পথে ভিড় এড়াতে কার ও সাথে অনিচ্ছা সত্তেও ধাক্কা লাগা রূঢ়তা বটে, তবে চলা অব্যাহত রাখতে তা অপরিহার্য ও ।
–
মানুষের কাছে কুরআন ও ইসলামের আলো আরো ব্যপকভাবে কি ভাবে পৌঁছান যায় সেই পন্থা আয়ত্ত করুন,যদি ও আপনার গোপন ত্রুটি বিচ্যুতি গুলোর অবস্থা আরও ভয়াবহ!
–
সব সময় লাভের মুখ দেখবেন আর কাঁড়ি কাঁড়ি স্বর্নমুদ্রা অর্জন করবেন এটা আপনার সৌভাগ্য মনে করার কোন কারণ নেই, প্রতি মহুর্তে আপনি পাপের স্তুপে নিমজ্জিত হচ্ছেন যার
সিংহ ভাগ ভুলে ও যাচ্ছেন, অথচ পাপ আল্লাহর নেয়ামত সমূহ দূর করে থাকে ।
–
হালাল ও হারাম প্রসঙ্গে বিবাহ একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ, ইসলামের প্রাথমিক যুগে মুসলমানরা হালালকে সহজ করেছিলেন,তাই তখন অবৈধভাবে যৌনাচার কঠিন ছিল, বর্তমানে তারা হালাল কে কঠিন ও জটিল করে ফেলেছে, তাই খুব অনায়াসেই হারাম কাজ বেজায় সস্তা ও সহজলভ্য হয়েছে, যত্র তত্র যেনা ব্যাভিচার চলছে।
–
এক গরীব ছেলে বিয়ের প্রস্তাব দিলে মেয়ে পক্ষ পাত্র গরীব বলে উপেক্ষা করে থাকেন, কিন্তু আরেকজন বিত্তবানের ছেলে হিসেবে তার প্রস্তাব সাদরে গৃহীত হয়, তার চরিত্র নিয়ে কথা উঠলে বলা হয় আল্লাহ হিদায়েত দান করবেন সব ঠিক হয়ে যাবে, তবে গরীব পাত্র সম্পর্কে কেন বললেন না যে আল্লাহ তাকে বিত্তবান করবেন। আল্লাহ কি কেবল হিদায়াত ই দান করে থাকেন ? তিনি ই তো রাযযাক ও।
–
ফকীর মিসকীনকে কিছু দান করার সময় পকেটে হাত দিয়ে সবচে ছোট টাকাটা দিলেন, আর মনে মনে বললেন আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদাউসের উঁচু মাকাম দান করিও,কী চমৎকার! কত তুচ্ছ মূল্যে কত মূল্যবান সম্পদ কামনা !
–
যেখানে ই থাকুন আল্লাহ আপনাকে সুখে রাখুন এবং আমরা রব্বে কারীমের দরবারে ফরিয়াদ জানাই
আল্লাহ আমাদের জীবনের শুভ সমাপ্তি দান করুন।
মৃত্যুর পূর্বে খালেস তাওবার সুযোগ দিন।
হে আল্লাহ! তোমার দীনের উপর অটল রাখ।
কল্যাণকর কাজ তা যত ছোট ই হোক তা ঘৃণা করার সুযোগ নেই আমরা জানিনা আমাদের কোন কাজটি জান্নাত লাভে সহায়ক হবে।