আল আনআম আয়াত নং : ০
بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
কানযুল ঈমান
০. আল্লাহ্র নামে আরম্ভ, যিনি পরম দয়ালু, করুণাময় (১)
ইরফানুল কুরআন
০. আল্লাহর নামে শুরু, যিনি পরম করুণাময়, সতত অসীম দয়ালু।
আল আনআম আয়াত নং : ১
اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ وَ جَعَلَ الظُّلُمٰتِ وَ النُّوۡرَ ۬ؕ ثُمَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا بِرَبِّہِمۡ یَعۡدِلُوۡنَ ﴿۱﴾
কানযুল ঈমান
১. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই জন্য, যিনি আস্মান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন(২) এবং অন্ধকাররাশি ও আলো সৃষ্টি করেছেন(৩); অতঃপর(৪) কাফিরগণ তাদের প্রতিপালকের সমকক্ষ দাঁড় করায়(৫) ।
ইরফানুল কুরআন
১. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই জন্যে, যিনি সৃষ্টি করেছেন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং সৃজন করেছেন অন্ধকার ও আলো। এরপরও কাফেরেরা (মিথ্যা উপাস্যদেরকে) তাদের প্রতিপালকের সমকক্ষ নির্ধারণ করে।
আল আনআম আয়াত নং : ২
ہُوَ الَّذِیۡ خَلَقَکُمۡ مِّنۡ طِیۡنٍ ثُمَّ قَضٰۤی اَجَلًا ؕ وَ اَجَلٌ مُّسَمًّی عِنۡدَہٗ ثُمَّ اَنۡتُمۡ تَمۡتَرُوۡنَ ﴿۲﴾
কানযুল ঈমান
২. তিনিই হন, যিনি তোমাদেরকে(৬) মাটি হ’তে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর একটা নির্দিষ্ট কালের হুকুম রেখেছেন(৭) এবং একটা নির্ধারিত প্রতিশ্রুতি তারই নিকট রয়েছে(৮); অতঃপর তোমরা সন্দেহ করছো ।
ইরফানুল কুরআন
২. (আল্লাহ্) তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন কর্দমাক্ত মাটি থেকে (অর্থাৎ এ থেকে পৃথিবী নামক গ্রহের উপরিভাগে মানব জীবনের রাসায়নিক সূচনা করেছেন)। অতঃপর তিনি (তোমাদের মৃত্যুর) নির্দিষ্ট মেয়াদ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। (কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার) নির্ধারিত সময় তাঁরই কাছে (সুনির্দিষ্ট) রয়েছে। এরপর(ও) তোমরা সন্দেহ্ করো।
আল আনআম আয়াত নং : ৩
وَ ہُوَ اللّٰہُ فِی السَّمٰوٰتِ وَ فِی الۡاَرۡضِ ؕ یَعۡلَمُ سِرَّکُمۡ وَ جَہۡرَکُمۡ وَ یَعۡلَمُ مَا تَکۡسِبُوۡنَ ﴿۳﴾
কানযুল ঈমান
৩. এবং তিনিই আল্লাহ্ আস্মানসমূহ এবং যমীনের(৯), তোমাদের গোপন ও প্রকাশ্য সবই তার জানা আছে এবং তিনি তোমাদের কর্ম (সম্পর্কে) জানেন ।
ইরফানুল কুরআন
৩. আর আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে তিনিই (সত্য উপাস্য) আল্লাহ্, যিনি তোমাদের গোপন ও প্রকাশ্য (সকল বিষয়) জানেন এবং যা কিছু তোমরা উপার্জন করছো তিনি (তাও) জানেন।
আল আনআম আয়াত নং : ৪
وَ مَا تَاۡتِیۡہِمۡ مِّنۡ اٰیَۃٍ مِّنۡ اٰیٰتِ رَبِّہِمۡ اِلَّا کَانُوۡا عَنۡہَا مُعۡرِضِیۡنَ ﴿۴﴾
কানযুল ঈমান
৪. এবং তাদের নিকট কোন নিদর্শনই আপন প্রতিপালকের নিদর্শনসমুহ থেকে আসেনা, কিন্তু তা থেকে (তারা) মুখ ফিরিয়ে নেয় ।
ইরফানুল কুরআন
৪. আর তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনসমূহের মধ্যে তাদের নিকট এমন কোনো নিদর্শনই আসেনি যা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়নি।
আল আনআম আয়াত নং : ৫
فَقَدۡ کَذَّبُوۡا بِالۡحَقِّ لَمَّا جَآءَہُمۡ ؕ فَسَوۡفَ یَاۡتِیۡہِمۡ اَنۡۢبٰٓؤُا مَا کَانُوۡا بِہٖ یَسۡتَہۡزِءُوۡنَ ﴿۵﴾
কানযুল ঈমান
৫. অতঃপর নিঃসন্দেহে তারা সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে(১০) যখন তাদের নিকট এসেছে । সুতরাং অদূর ভবিষ্যতে তাদের নিকট খবর আসবে ঐ বিষয়ে যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করতো(১১)।
ইরফানুল কুরআন
৫. অতঃপর নিশ্চয়ই তারা (একইভাবে) সত্যকে (অর্থাৎ কুরআনকেও) মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে বসলো, যখন তা তাদের নিকট (আল্লাহ্র নিদর্শন হিসেবে) আগমন করলো। আর অচিরেই তাদের নিকট সেসব সংবাদ আসছে, যা তারা উপহাস করতো।
আল আনআম আয়াত নং : ৬
اَلَمۡ یَرَوۡا کَمۡ اَہۡلَکۡنَا مِنۡ قَبۡلِہِمۡ مِّنۡ قَرۡنٍ مَّکَّنّٰہُمۡ فِی الۡاَرۡضِ مَا لَمۡ نُمَکِّنۡ لَّکُمۡ وَ اَرۡسَلۡنَا السَّمَآءَ عَلَیۡہِمۡ مِّدۡرَارًا ۪ وَّ جَعَلۡنَا الۡاَنۡہٰرَ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہِمۡ فَاَہۡلَکۡنٰہُمۡ بِذُنُوۡبِہِمۡ وَ اَنۡشَاۡنَا مِنۡۢ بَعۡدِہِمۡ قَرۡنًا اٰخَرِیۡنَ ﴿۶﴾
কানযুল ঈমান
৬. তারা কি দেখে নি যে, আমি তাদের পূর্বে(১২) কতো মানবগোষ্ঠীকে বিনাশ করেছি? তাদেরকে আমি দুনিয়ায় ঐ প্রতিষ্ঠা দান করেছি(১৩) যা তোমাদেরকে দান করিনি এবং তাদের উপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করেছি(১৪) আর তাদের নিম্নদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত করেছি(১৫); অতঃপর তাদেরকে তাদের পাপরাশির কারণে ধ্বংস করেছি(১৬) এবং তাদের পরে অন্য নতুন মানবগোষ্ঠি সৃষ্টি করেছি(১৭) ।
ইরফানুল কুরআন
৬. তারা কি দেখেনি যে, আমরা তাদের পূর্বে কতো সম্প্রদায়কেই না বিলীন করে দিয়েছি, যাদেরকে আমরা পৃৃথিবীতে (এতো সুদৃঢ়) শাসনক্ষমতা দিয়েছিলাম যে, সেরূপ আধিপত্য (ও সুদৃঢ় অবস্থান) তোমাদেরকেও প্রদান করিনি। আর আমরা তাদের উপর অবিরাম বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলাম এবং তাদের (বসতি ও প্রাসাদগুলোর) নিচ দিয়ে স্রোতধারা প্রবাহিত করেছিলাম। অতঃপর (এমন বিলাসবহুল জীবন প্রদান করা সত্তেও) তাদের পাপের কারণে আমরা তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছি এবং তাদের পরে অন্যান্য সম্প্রদায়কে সৃষ্টি করেছি।
আল আনআম আয়াত নং : ৭
وَ لَوۡ نَزَّلۡنَا عَلَیۡکَ کِتٰبًا فِیۡ قِرۡطَاسٍ فَلَمَسُوۡہُ بِاَیۡدِیۡہِمۡ لَقَالَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اِنۡ ہٰذَاۤ اِلَّا سِحۡرٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۷﴾
কানযুল ঈমান
৭. এবং যদি আমি আপনার উপর কাগজের মধ্যে লিখিত কিছু অবতারণ করতাম(১৮), অতঃপর তারা তা তাদের হাত দ্বারা স্পর্শ করতো তবুও কাফিরগণ বলতো যে, ‘এটা তো নয়, কিন্তু স্পষ্ট যাদু’।
ইরফানুল কুরআন
৭. আর যদি আমরা আপনার প্রতি কাগজে লিপিবদ্ধ কিতাব অবতীর্ণ করতাম এবং তারা হাত দিয়ে তা স্পর্শও করতো, তবু(ও) কাফেরেরা (এ কথাই) বলতো, ‘এটি সুস্পষ্ট যাদু ব্যতীত (কিছু) নয়’।
আল আনআম আয়াত নং : ৮
وَ قَالُوۡا لَوۡ لَاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡہِ مَلَکٌ ؕ وَ لَوۡ اَنۡزَلۡنَا مَلَکًا لَّقُضِیَ الۡاَمۡرُ ثُمَّ لَا یُنۡظَرُوۡنَ ﴿۸﴾
কানযুল ঈমান
৮. এবং (তারা) বললো, ‘তার উপর কোন ফিরিশ্তা কেন অবতারণ করা হয় নি?’ এবং যদি আমি ফিরিশ্তা অবতারণ করতাম, তবে চূড়ান্ত ফয়সালাই হয়ে যেতো অতঃপর তাদেরকে কোন অবকাশ দেওয়া যেতো না ।
ইরফানুল কুরআন
৮. আর এরা (এ কাফেরেরা) বলতো, ‘(এ সম্মানিত রাসূল)-এঁর প্রতি কোনো ফেরেশতা কেন অবতীর্ণ করা হয়নি (যাকে আমরা প্রকাশ্যভাবে দেখতে পেতাম এবং সে তাঁকে সত্যায়ন করতো)?’ আর যদি আমরা ফেরেশতা অবতীর্ণ করতাম, তবে (তাদের) যাবতীয় বিষয়েরই চূড়ান্ত ফায়সালা হয়ে যেতো, অতঃপর তাদেরকে (সামান্যতমও) অবকাশ দেয়া হতো না।
আল আনআম আয়াত নং : ৯
وَ لَوۡ جَعَلۡنٰہُ مَلَکًا لَّجَعَلۡنٰہُ رَجُلًا وَّ لَلَبَسۡنَا عَلَیۡہِمۡ مَّا یَلۡبِسُوۡنَ ﴿۹﴾
কানযুল ঈমান
৯. এবং যদি আমি নবীকে ফিরিশ্তা করতাম তবুও তাকে পুরুষই করতাম এবং তাদের উপর ঐ সন্দেহ রাখ্তাম, যার মধ্যে তারা এখন পতিত হয়েছে ।
ইরফানুল কুরআন
৯. আর যদি আমরা রাসূলকে ফেরেশতা করতাম তবে তাঁকেও মানুষ (আকারেই) বানাতাম এবং আমরা তাদের উপর (তখনও) অনুরূপ দ্বিধাদ্বন্দ্ব যুক্ত করে দিতাম, যে সন্দেহ (ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব) তারা (ইতিমধ্যেই) করছে (অর্থাৎ তাঁর বাহ্যিকরূপ দেখে বলতো, ‘তিনি তো আমাদের মতোই মানুষ’)।
আল আনআম আয়াত নং : ১০
وَ لَقَدِ اسۡتُہۡزِیٴَ بِرُسُلٍ مِّنۡ قَبۡلِکَ فَحَاقَ بِالَّذِیۡنَ سَخِرُوۡا مِنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا بِہٖ یَسۡتَہۡزِءُوۡنَ ﴿۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১০. এবং নিশ্চয়, হে মাহবূব! আপনার পূর্বে রসূলগণের সাথেও ঠাট্টা বিদ্রূপ করা হয়েছে । সুতরাং ঐ সব লোক, যারা তাদের ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতো, তাদের ঠাট্টা-বিদ্রূপ তাদেরকেই পেয়ে বসেছে ।
ইরফানুল কুরআন
১০.আর নিশ্চয়ই আপনার পূর্বে(ও) রাসূলগণের সাথে ঠাট্টাবিদ্রুপ করা হয়েছে, অতঃপর তাদের মধ্যে যারা ঠাট্টাবিদ্রুপ করতো তাদেরকে (বাস্তবিকই সে শাস্তি) এসে পাকড়াও করলো যা নিয়ে তারা উপহাস করতো।
আল আনআম আয়াত নং : ১১
قُلۡ سِیۡرُوۡا فِی الۡاَرۡضِ ثُمَّ انۡظُرُوۡا کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُکَذِّبِیۡنَ ﴿۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১. আপনি বলে দিন, ‘ভূ-পৃষ্ঠে ভ্রমণ করো । অতঃপর দেখো মিথ্যা প্রতিপন্নকারীদের কী পরিণাম হয়েছে’!
ইরফানুল কুরআন
১১. বলে দিন, ‘তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো এবং (সতর্কদৃষ্টিতে) দেখো যে, (সত্যকে) মিথ্যাপ্রতিপন্নকারীদের কী পরিণতি হয়েছিল’।
আল আনআম আয়াত নং : ১২
قُلۡ لِّمَنۡ مَّا فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ قُلۡ لِّلّٰہِ ؕ کَتَبَ عَلٰی نَفۡسِہِ الرَّحۡمَۃَ ؕ لَیَجۡمَعَنَّکُمۡ اِلٰی یَوۡمِ الۡقِیٰمَۃِ لَا رَیۡبَ فِیۡہِ ؕ اَلَّذِیۡنَ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ فَہُمۡ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১২. আপনি বলুন, ‘কার, যা কিছু আস্মানসমূহ এবং যমীনের মধ্যে রয়েছে?’ আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্র’ । তিনি নিজ করুণার দায়িত্বে রহমত লিপিবদ্ধ করে নিয়েছেন । নিঃসন্দেহে তোমাদেরকে ক্বিয়ামত দিবসে একত্রিত করবেন, এর মধ্যে কোন সন্দেহ নেই । ঐ সব লোক, যারা আপন প্রাণকে ক্ষতিতে ফেলেছে তারা ঈমান আনে না ।
ইরফানুল কুরআন
১২.আপনি (তাদেরকে এ প্রশ্ন) জিজ্ঞেস করুন, ‘আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে, তা কার?’ (আর এও) বলে দিন, ‘তা আল্লাহ্রই’। তিনি নিজ সত্তার উপর রহমত আবশ্যক করে নিয়েছেন। তিনি অবশ্যই তোমাদেরকে একত্রিত করবেন কিয়ামতের দিন – যাতে কোনো সন্দেহ নেই। যারা নিজেদের প্রাণকে (চিরস্থায়ী) ক্ষতিতে নিমজ্জিত করেছে তারা ঈমান আনয়ন করবে না।
আল আনআম আয়াত নং : ১৩
وَ لَہٗ مَا سَکَنَ فِی الَّیۡلِ وَ النَّہَارِ ؕ وَ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১৩. এবং তারই, যা কিছু অবস্থান করে রাতে আর দিনে; এবং তিনিই হন শ্রবণকারী, জ্ঞানী ।
ইরফানুল কুরআন
১৩.আর (সমস্ত সৃষ্টি) তাঁরই, যা রাতে ও দিনে বিশ্রাম নেয়। আর তিনি সর্বশ্রোতা, সম্যক অবগত।
আল আনআম আয়াত নং : ১৪
قُلۡ اَغَیۡرَ اللّٰہِ اَتَّخِذُ وَلِیًّا فَاطِرِ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ ہُوَ یُطۡعِمُ وَ لَا یُطۡعَمُ ؕ قُلۡ اِنِّیۡۤ اُمِرۡتُ اَنۡ اَکُوۡنَ اَوَّلَ مَنۡ اَسۡلَمَ وَ لَا تَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪. আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ ব্যতীত কি অন্য কাউকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করবো? ঐ আল্লাহ্ যিনি আস্মান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি আহার করান নিজে আহার থেকে পবিত্র’। আপনি বলুন, ‘আমি আদিষ্ট হয়েছি যেন সবার আগে আমিই আত্নসমর্পণ করি এবং যেন কখনো অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত না হই’।
ইরফানুল কুরআন
১৪. বলে দিন, ‘আমি কি আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীর সৃষ্টা (সেই) আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাউকে (ইবাদতের জন্যে আমার) বন্ধু বানিয়ে নেবো? অথচ তিনি (সকলকে) পানাহার করান এবং (তাঁর সত্তাকে) পানাহার করানো হয় না।’ বলে দিন, ‘আমাকে (তাঁর সমীপে মস্তক অবনতকারী) সর্বপ্রথম মুসলমান হওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে’ এবং (এও নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে,) ‘তোমরা কখনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না’।
আল আনআম আয়াত নং : ১৫
قُلۡ اِنِّیۡۤ اَخَافُ اِنۡ عَصَیۡتُ رَبِّیۡ عَذَابَ یَوۡمٍ عَظِیۡمٍ ﴿۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১৫. আপনি বলুন, ‘যদি আমি আপন প্রতিপালকের আদেশ অমান্য করি তবে আমার মহা দিবসের শাস্তির ভয় রয়েছে’।
ইরফানুল কুরআন
১৫. বলে দিন, ‘নিশ্চয়ই আমি (তো) ভয়ানক শাস্তির দিবসকে ভয় করি, যদি আমি আমার প্রতিপালকের নাফরমানী করি, (সুতরাং তা কিভাবে সম্ভব?)’
আল আনআম আয়াত নং : ১৬
مَنۡ یُّصۡرَفۡ عَنۡہُ یَوۡمَئِذٍ فَقَدۡ رَحِمَہٗ ؕ وَ ذٰلِکَ الۡفَوۡزُ الۡمُبِیۡنُ ﴿۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১৬. সেদিন যার দিক থেকে শাস্তি ফিরিয়ে নেয়া হবে অবশ্যই তার উপর আল্লাহ্র দয়া হয়েছে এবং এটাই হচ্ছে স্পষ্ট সফলতা ।
ইরফানুল কুরআন
১৬. সে দিন যার থেকে তা (অর্থাৎ শাস্তি) ফিরিয়ে দেয়া হবে, তবে নিশ্চয়ই তার প্রতি (আল্লাহ্ কর্তৃক) অনুগ্রহ করা হবে। আর এটি (পরকালীন ক্ষমা,) সুস্পষ্ট সফলতা।
আল আনআম আয়াত নং : ১৭
وَ اِنۡ یَّمۡسَسۡکَ اللّٰہُ بِضُرٍّ فَلَا کَاشِفَ لَہٗۤ اِلَّا ہُوَ ؕ وَ اِنۡ یَّمۡسَسۡکَ بِخَیۡرٍ فَہُوَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ ﴿۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১৭. এবং যদি তোমাকে আল্লাহ্ কোন ক্ষতি পৌছান, তবে তিনি ব্যতীত তা মোচনকারী অন্য কেউ নেই । আর যদি তোমাকে কোন মঙ্গল দান করেন তবে তিনি সবকিছু করতে পারেন।
ইরফানুল কুরআন
১৭. আর যদি আল্লাহ্ তোমাকে কোনো কষ্টে পতিত করেন, তবে তিনি ব্যতীত তা মোচনকারী অন্য কেউ নেই। আর যদি তিনি তোমাকে কোনো কল্যাণ দান করেন, তবে তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান।
আল আনআম আয়াত নং : ১৮
وَ ہُوَ الۡقَاہِرُ فَوۡقَ عِبَادِہٖ ؕ وَ ہُوَ الۡحَکِیۡمُ الۡخَبِیۡرُ ﴿۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১৮. এবং তিনিই পরাক্রমশালী আপন বান্দাদের উপর এবং তিনিই প্রজ্ঞাময়, অবহিত ।
ইরফানুল কুরআন
১৮. আর তিনিই তাঁর বান্দাদের উপর আধিপত্যশীল এবং তিনি অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান, সর্বজ্ঞ।
আল আনআম আয়াত নং : ১৯
قُلۡ اَیُّ شَیۡءٍ اَکۡبَرُ شَہَادَۃً ؕ قُلِ اللّٰہُ ۟ۙ شَہِیۡدٌۢ بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنَکُمۡ ۟ وَ اُوۡحِیَ اِلَیَّ ہٰذَا الۡقُرۡاٰنُ لِاُنۡذِرَکُمۡ بِہٖ وَ مَنۡۢ بَلَغَ ؕ اَئِنَّکُمۡ لَتَشۡہَدُوۡنَ اَنَّ مَعَ اللّٰہِ اٰلِہَۃً اُخۡرٰی ؕ قُلۡ لَّاۤ اَشۡہَدُ ۚ قُلۡ اِنَّمَا ہُوَ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ وَّ اِنَّنِیۡ بَرِیۡٓءٌ مِّمَّا تُشۡرِکُوۡنَ ﴿ۘ۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১৯. আপনি বলুন, ‘সর্বশ্রেষ্ঠ সাক্ষ্য কার?’ আপনি বলে দিন! ‘আল্লাহ্ সাক্ষী আমার ও আমার প্রতি এ ক্বোরআনের ওহী এসেছে যেন আমি তা দ্বারা তোমাদেরকে সতর্ক করি এবং যে যে লোকের নিকট এটা পৌছে তাদেরকেও’। তাহলে তোমরা কি এ সাক্ষ্য দিচ্ছো যে, ‘আল্লাহ্র সাথে অন্য খোদাও রয়েছে?’ আপনি বলুন! ‘আমি এ সাক্ষ্য দিই না’ । আপনি বলুন, ‘তিনি তো একমাত্র মা’বুদ এবং আমি অসন্তুষ্ট ঐগুলো থেকে যেগুলোকে তোমরা শরীক সাব্যস্ত করছো ।
ইরফানুল কুরআন
১৯. আপনি (তাদেরকে) জিজ্ঞেস করুন, ‘সাক্ষ্য দেয়ার ক্ষেত্রে কে শ্রেষ্ঠ?’ আপনি(ই) বলে দিন, ‘আল্লাহ্ আমার এবং তোমাদের মাঝে সাক্ষী। আর আমার প্রতি এ পবিত্র কুরআন এ জন্যে প্রত্যাদেশ করা হয়েছে যেন এর মাধ্যমে তোমাদেরকে এবং এমন প্রত্যেককে সতর্ক করতে পারি যার নিকট (এ কুরআন) পৌঁছুবে। তোমরা কি সত্যিই এ বিষয়ের সাক্ষ্য দিচ্ছো যে, আল্লাহ্র সাথে অন্যান্য উপাস্য(ও) রয়েছে?’ বলে দিন, ‘আমি (তো এ ভুল বিষয়ের) সাক্ষ্য দেই না’। বলে দিন, ‘উপাস্য তো কেবল একজনই, আর আমি সেসব বিষয় থেকে বিমুখ যেগুলোকে তোমরা (আল্লাহ্র) অংশীদার সাব্যস্ত করো।’
আল আনআম আয়াত নং : ২০
اَلَّذِیۡنَ اٰتَیۡنٰہُمُ الۡکِتٰبَ یَعۡرِفُوۡنَہٗ کَمَا یَعۡرِفُوۡنَ اَبۡنَآءَہُمۡ ۘ اَلَّذِیۡنَ خَسِرُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ فَہُمۡ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۲۰﴾
কানযুল ঈমান
২০. যাদেরকে আমি (আল্লাহ্) কিতাব দিয়েছি তারা এ নবীকে চিনে, যেমন তারা আপন সন্তানদেরকে চিনে; যারা আপন প্রাণকে ক্ষতির মধ্যে নিক্ষেপ করেছে তারা ঈমান আনে না ।
ইরফানুল কুরআন
২০. যাদেরকে আমরা কিতাব প্রদান করেছিলাম তারা তাঁকে (অর্থাৎ সর্বশেষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামকে) এরকমভাবে চিনে যেমন তারা নিজেদের সন্তানদেরকে চিনে; যারা নিজেদেরকে (চিরস্থায়ী) ক্ষতিতে নিক্ষেপ করেছে। সুতরাং তারা ঈমান আনয়ন করবে না।
আল আনআম আয়াত নং : ২১
وَ مَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اَوۡ کَذَّبَ بِاٰیٰتِہٖ ؕ اِنَّہٗ لَا یُفۡلِحُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۲۱﴾
কানযুল ঈমান
২১. এবং সেই ব্যক্তির চেয়ে অধিক যালিম কে? যে আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে, অথবা তার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে । নিঃসন্দেহে যালিম সাফল্য পাবে না।
ইরফানুল কুরআন
২১. আর তার চেয়ে বড় যালিম আর কে হতে পারে, যে আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা অপবাদ রচনা করে অথবা যে আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে? নিশ্চয়ই যালিমেরা সাফল্য লাভ করবে না।
আল আনআম আয়াত নং : ২২
وَ یَوۡمَ نَحۡشُرُہُمۡ جَمِیۡعًا ثُمَّ نَقُوۡلُ لِلَّذِیۡنَ اَشۡرَکُوۡۤا اَیۡنَ شُرَکَآؤُکُمُ الَّذِیۡنَ کُنۡتُمۡ تَزۡعُمُوۡنَ ﴿۲۲﴾
কানযুল ঈমান
২২. এবং যেদিন আমি সবাইকে উঠাবো, অতঃপর অংশীবাদীগণকে বলবো, ‘কোথায় তোমাদের ঐ সব শরীক, যাদের তোমরা দাবী করতে’?
ইরফানুল কুরআন
২২. আর যেদিন আমরা তাদের সবাইকে একত্রিত করবো এবং যারা আমাদের সাথে অংশীদার যুক্ত করতো তাদেরকে জিজ্ঞেস করবো: ‘তোমাদের সেসব অংশীদারেরা কোথায়, যাদেরকে তোমরা (উপাস্য) ধারণা করতে?’
আল আনআম আয়াত নং : ২৩
ثُمَّ لَمۡ تَکُنۡ فِتۡنَتُہُمۡ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوۡا وَ اللّٰہِ رَبِّنَا مَا کُنَّا مُشۡرِکِیۡنَ ﴿۲۳﴾
কানযুল ঈমান
২৩. অতঃপর তাদের কোন অজুহাতই থাকলো না কিন্তু এই যে, তারা বলবে, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্রই শপথ, আমরা মুশরিক ছিলাম না’।
ইরফানুল কুরআন
২৩. অতঃপর এছাড়া তাদের আর (কোনো) অযুহাত থাকবে না, তারা বলবে, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্র শপথ! আমরা মুশরিক ছিলাম না’।
আল আনআম আয়াত নং : ২৪
اُنۡظُرۡ کَیۡفَ کَذَبُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِہِمۡ وَ ضَلَّ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿۲۴﴾
কানযুল ঈমান
২৪. দেখো, কেমন মিথ্যা রচনা করলো নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে? এবং হারিয়ে গেলো তাদের নিকট ঐ সব মিথ্যা কথা, যেগুলো তারা রচনা করতো।
ইরফানুল কুরআন
২৪. লক্ষ্য করুন, কিভাবে তারা নিজেরা নিজেদের উপর মিথ্যা আরোপ করে এবং যে মিথ্যা অপবাদ তারা (পৃথিবীতে) উদ্ভাবন করতো, তা তাদের থেকে উধাও হয়ে গেছে।
আল আনআম আয়াত নং : ২৫
وَ مِنۡہُمۡ مَّنۡ یَّسۡتَمِعُ اِلَیۡکَ ۚ وَ جَعَلۡنَا عَلٰی قُلُوۡبِہِمۡ اَکِنَّۃً اَنۡ یَّفۡقَہُوۡہُ وَ فِیۡۤ اٰذَانِہِمۡ وَقۡرًا ؕ وَ اِنۡ یَّرَوۡا کُلَّ اٰیَۃٍ لَّا یُؤۡمِنُوۡا بِہَا ؕ حَتّٰۤی اِذَا جَآءُوۡکَ یُجَادِلُوۡنَکَ یَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اِنۡ ہٰذَاۤ اِلَّاۤ اَسَاطِیۡرُ الۡاَوَّلِیۡنَ ﴿۲۵﴾
কানযুল ঈমান
২৫. এবং তাদের মধ্যে কতেক এমন রয়েছে, যারা আপনার দিকে কান পেতে রাখে; আর আমি তাদের অন্তরসমূহের উপর আবরণ পরিয়ে দিয়েছি যেন তারা তা উপলব্ধি করতে না পারে এবং তাদের কানের মধ্যে বধিরতা; এবং যদি তারা সমস্ত নিদর্শন দেখে নেয় তবুও সেগুলোর উপর ঈমান আনবে না । এমনকি তারা যখন আপনার নিকট আপনার সাথে বিতর্ক করতে উপস্থিত হয় তখন কাফিরগণ বলে, ‘এ’তো নয়, কিন্তু পূর্ববর্তী লোকদের গল্প কাহিনী মাত্র’।
ইরফানুল কুরআন
২৫. আর তাদের মধ্যে কতিপয় এমন(ও) রয়েছে যারা আপনার দিকে কান পেতে রাখে। আর (তাদের অসৎ উদ্দেশ্যের কারণে) আমরা তাদের অন্তরে পর্দা ফেলে দিয়েছি, (কাজেই এখন তাদের পক্ষে সম্ভব নয় যে) তারা এটি (এ কুরআন) বুঝবে, এবং (আমরা) তাদের কানে ছিপি এঁটে দিয়েছি। আর যদি তারা সব নিদর্শন (পরিস্কার) দেখে তবু(ও) এর উপর ঈমান আনয়ন করবে না। এমনকি যখন তারা আপনার নিকট আসে, (সে সময়) কাফেরেরা আপনার সাথে বিবাদে লিপ্ত হয় এবং বলে, ‘এ (কুরআন) পূর্ববর্তী লোকদের মিথ্যা কাহিনী ব্যতীত (কিছু ) নয়’।
আল আনআম আয়াত নং : ২৬
وَ ہُمۡ یَنۡہَوۡنَ عَنۡہُ وَ یَنۡـَٔوۡنَ عَنۡہُ ۚ وَ اِنۡ یُّہۡلِکُوۡنَ اِلَّاۤ اَنۡفُسَہُمۡ وَ مَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۲۶﴾
কানযুল ঈমান
২৬. আর তারা তা থেকে বিরত রাখে এবং তা থেকে দূরে পলায়ণ করে; আর ধ্বংস করে না কিন্তু নিজেদের প্রাণসমূহকে; অথচ তারা উপলব্ধি করে না ।
ইরফানুল কুরআন
২৬. আর তারা (অন্যদেরকে) এ (নবীর আনুগত্য ও কুরআন) থেকে বিরত রাখে এবং (নিজেরাও) এ থেকে দূরে পলায়ন করে। আর তারা কেবল নিজেদেরকেই ধ্বংস করছে অথচ তারা (এ ধ্বংস) অনুধাবন(ও) করে না।
আল আনআম আয়াত নং : ২৭
وَ لَوۡ تَرٰۤی اِذۡ وُقِفُوۡا عَلَی النَّارِ فَقَالُوۡا یٰلَیۡتَنَا نُرَدُّ وَ لَا نُکَذِّبَ بِاٰیٰتِ رَبِّنَا وَ نَکُوۡنَ مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۲۷﴾
কানযুল ঈমান
২৭. এবং আপনি যদি কখনো দেখতেন যখন তাদেরকে আগুনের উপর দাঁড় করানো হবে, তখন তারা বলবে, ‘কোন প্রকারে যদি আমাদেরকে পুনরায় প্রেরণ করা হতো এবং আপন প্রতিপালকের নিদর্শন সমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন না করতাম ও মুসলমান হয়ে যেতাম’!
ইরফানুল কুরআন
২৭. যদি আপনি (তখন তাদেরকে) দেখেন যখন তাদেরকে অগ্নির (কিনারার) উপর দাঁড় করানো হবে, তখন এরা বলবে, ‘হায়! যদি আমাদেরকে (পৃথিবীতে) ফিরে যেতে দেয়া হতো, তবে (তখন) আমরা আমাদের প্রতিপালকের আয়াতসমূহকে (কখনো) মিথ্যাপ্রতিপন্ন করতাম না এবং ঈমানদারগণের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’
আল আনআম আয়াত নং : ২৮
بَلۡ بَدَا لَہُمۡ مَّا کَانُوۡا یُخۡفُوۡنَ مِنۡ قَبۡلُ ؕ وَ لَوۡ رُدُّوۡا لَعَادُوۡا لِمَا نُہُوۡا عَنۡہُ وَ اِنَّہُمۡ لَکٰذِبُوۡنَ ﴿۲۸﴾
কানযুল ঈমান
২৮. বরং তাদের নিকট প্রকাশ পেয়েছে যা তারা পূর্বে গোপন করতো; এবং যদিও তাদেরকে পুনরায় প্রেরণ করা হয় তবুও তারা তাই করবে যা থেকে তাদেরকে বারন করা হয়েছিলো এবং নিঃসন্দেহে তারা মিথ্যুক ।
ইরফানুল কুরআন
২৮. (এ স্বীকারোক্তিতে কোনো সত্যতা নেই।) বরং তাদের নিকট তা (থেকে সকল কিছু) প্রকাশিত হয়ে পড়েছে যা তারা পূর্বে গোপন করতো। আর যদি তাদেরকে (পৃথিবীতে) ফিরিয়ে(ও) দেয়া হয় তবুও (পুনরায়) তাতেই ফিরে যাবে যা তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছিলো এবং তারা নিঃসন্দেহে (ডাহা) মিথ্যাবাদী।
আল আনআম আয়াত নং : ২৯
وَ قَالُوۡۤا اِنۡ ہِیَ اِلَّا حَیَاتُنَا الدُّنۡیَا وَ مَا نَحۡنُ بِمَبۡعُوۡثِیۡنَ ﴿۲۹﴾
কানযুল ঈমান
২৯. তারা বলে, ‘সেটাতো আমাদের এ পার্থিব জীবনই এবং আমাদের পুনরুত্থান নেই ।
ইরফানুল কুরআন
২৯. আর তারা (একথাই) বলতে থাকবে (যেমনটি তারা পূর্বে বলতো), ‘আমাদের এ পার্থিব জীবন ব্যতীত (জীবন বলতে আর) কিছু নেই এবং আমাদেরকে (মৃত্যুর পর) উত্থিত করা হবে না’।
আল আনআম আয়াত নং : ৩০
وَ لَوۡ تَرٰۤی اِذۡ وُقِفُوۡا عَلٰی رَبِّہِمۡ ؕ قَالَ اَلَیۡسَ ہٰذَا بِالۡحَقِّ ؕ قَالُوۡا بَلٰی وَ رَبِّنَا ؕ قَالَ فَذُوۡقُوا الۡعَذَابَ بِمَا کُنۡتُمۡ تَکۡفُرُوۡنَ ﴿۳۰﴾
কানযুল ঈমান
৩০. এবং কখনো আপনি যদি দেখেন, যখন তাদেরকে তাদের প্রতিপালকের সম্মুখে দাঁড় করানো হবে, (তিনি) বলবেন, ‘এটা কি সত্য নয়?’ (তারা) বলবে, ‘কেন নয়? আমাদের প্রতিপালকের শপথ!’ (তিনি) বলবেন, ‘অতঃপর এখন শাস্তি ভোগ করো তোমাদের কুফরের পরিণাম স্বরূপ’।
ইরফানুল কুরআন
৩০. আর যদি আপনি (তাদেরকে সে সময়ে) দেখেন যখন তাদেরকে তাদের প্রতিপালকের সম্মুখে দাঁড় করানো হবে, (এবং তাদেরকে আল্লাহ্) বলবেন, ‘এ (জীবন) কি সত্য নয়’? (তখন) তারা বলবে, ‘কেন নয়! আমাদের প্রতিপালকের শপথ (এ সত্য।’ তখন) আল্লাহ্ বলবেন, ‘কাজেই (এখন) তোমরা শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করো, কারণ তোমরা কুফরী করতে।’
আল আনআম আয়াত নং : ৩১
قَدۡ خَسِرَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِلِقَآءِ اللّٰہِ ؕ حَتّٰۤی اِذَا جَآءَتۡہُمُ السَّاعَۃُ بَغۡتَۃً قَالُوۡا یٰحَسۡرَتَنَا عَلٰی مَا فَرَّطۡنَا فِیۡہَا ۙ وَ ہُمۡ یَحۡمِلُوۡنَ اَوۡزَارَہُمۡ عَلٰی ظُہُوۡرِہِمۡ ؕ اَلَا سَآءَ مَا یَزِرُوۡنَ ﴿۳۱﴾
কানযুল ঈমান
৩১. নিঃসন্দেহে, ক্ষতির মধ্যে রয়েছে ঐ সব লোক, যারা আপন প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতকে অস্বীকার করেছে, এমনকি যখন তাদের উপর ক্বিয়ামত আকস্মিকভাবে এসে গেলো, তখন তারা বললো, ‘হায় আফ্সোস আমাদের! এজন্য যে, তা মেনে নেওয়ার বিষয়কে আমরা কম গুরুত্ব দিয়েছি’। এবং তারা নিজেদের বোঝা নিজেদের পিঠের উপর বহন করে আছে । ওহে, তারা কতোই নিকৃষ্ট বোঝা বহন করে আছে!
ইরফানুল কুরআন
৩১. সুতরাং সেসব লোকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যারা আল্লাহ্র সাথে সাক্ষাতকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে; এমন কি তাদের নিকট যখন অকস্মাৎ কিয়ামত উপস্থিত হবে (তখন) তারা বলবে, ‘হায়! আফসোস আমাদের (সেই ত্রুটির) জন্যে, যা আমরা এ (কিয়ামতের উপর ঈমান আনয়নের) ব্যাপারে করেছি।’ আর তাদেরকে তাদের পিঠে নিজেদের (পাপের) বোঝা চাপিয়ে দেয়া হবে। শুনে নাও! তা খুবই ভারী বোঝা যা তারা বহন করছে।
আল আনআম আয়াত নং : ৩২
وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا لَعِبٌ وَّ لَہۡوٌ ؕ وَ لَلدَّارُ الۡاٰخِرَۃُ خَیۡرٌ لِّلَّذِیۡنَ یَتَّقُوۡنَ ؕ اَفَلَا تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۳۲﴾
কানযুল ঈমান
৩২. এবং পার্থিব জীবন তো নয়, কিন্তু খেলাধুলা মাত্র। এবং নিঃসন্দেহে পরকালের ঘর শ্রেয় তাদেরই জন্য, যারা ভয় করে । সুতরাং তোমাদের কি বিবেক নেই?
ইরফানুল কুরআন
৩২. আর পার্থিব (বিলাসিতার) জীবন খেল-তামাশা ব্যতীত কিছুই নয়। আর অবশ্যই তাদের জন্যে পরকালের আবাসই উত্তম যারা খোদাভীতি অবলম্বন করে। তোমরা কি (এ প্রকৃত বাস্তবতা) বুঝো না?
আল আনআম আয়াত নং : ৩৩
قَدۡ نَعۡلَمُ اِنَّہٗ لَیَحۡزُنُکَ الَّذِیۡ یَقُوۡلُوۡنَ فَاِنَّہُمۡ لَا یُکَذِّبُوۡنَکَ وَ لٰکِنَّ الظّٰلِمِیۡنَ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ یَجۡحَدُوۡنَ ﴿۳۳﴾
কানযুল ঈমান
৩৩. আমি জানি যে, আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে ঐ কথা, যা এরা বলছে । অতঃপর তারা তো আপনাকে অস্বীকার করছে না বরং যালিমগণ আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে অস্বীকার করছে ।
ইরফানুল কুরআন
৩৩. (হে হাবীব!) নিশ্চয়ই আমরা জানি যে, এ (বিষয়) অবশ্যই আপনাকে কষ্ট দেয়, যা এরা বলে থাকে। সুতরাং তারা আপনাকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে না বরং (প্রকৃতপক্ষে) যালিমেরা আল্লাহ্র আয়াতসমূহকেই অস্বীকার করে।
আল আনআম আয়াত নং : ৩৪
وَ لَقَدۡ کُذِّبَتۡ رُسُلٌ مِّنۡ قَبۡلِکَ فَصَبَرُوۡا عَلٰی مَا کُذِّبُوۡا وَ اُوۡذُوۡا حَتّٰۤی اَتٰہُمۡ نَصۡرُنَا ۚ وَ لَا مُبَدِّلَ لِکَلِمٰتِ اللّٰہِ ۚ وَ لَقَدۡ جَآءَکَ مِنۡ نَّبَاِی الۡمُرۡسَلِیۡنَ ﴿۳۴﴾
কানযুল ঈমান
৩৪. এবং আপনার পূর্বেও রসূলগণকে অস্বীকার করা হয়েছে । তখন তারা ধৈর্যধারণ করেছিলেন এ অস্বীকার করা ও কষ্ট পাওয়ার উপর, যে পর্যন্ত তাদের নিকট আমার সাহায্য এসেছে; এবং আল্লাহ্র বাণীগুলোকে পরিবর্তনকারী কেউ নেই আর আপনার নিকট রসূলগণের খবরাদি এসেই গেছে ।
ইরফানুল কুরআন
৩৪. আর নিশ্চয়ই আপনার পূর্বেও (অনেক) রাসূলকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করা হয়েছিল, কিন্তু তারা এই প্রত্যাখ্যান ও নির্যাতনের উপর ধৈর্য ধারণ করেছিলেন যতক্ষণ না তাদের নিকট আমাদের সাহায্য এসে পৌঁছেছিল। আর আল্লাহ্র বাণীসমূহের (অর্থাৎ অঙ্গীকারের) কোনো পরিবর্তনকারী নেই এবং নিঃসন্দেহে (অন্তরের প্রশান্তির জন্যে) আপনার নিকট রাসূলগণের সংবাদ এসে পৌঁছেছে।
আল আনআম আয়াত নং : ৩৫
وَ اِنۡ کَانَ کَبُرَ عَلَیۡکَ اِعۡرَاضُہُمۡ فَاِنِ اسۡتَطَعۡتَ اَنۡ تَبۡتَغِیَ نَفَقًا فِی الۡاَرۡضِ اَوۡ سُلَّمًا فِی السَّمَآءِ فَتَاۡتِیَہُمۡ بِاٰیَۃٍ ؕ وَ لَوۡ شَآءَ اللّٰہُ لَجَمَعَہُمۡ عَلَی الۡہُدٰی فَلَا تَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡجٰہِلِیۡنَ ﴿۳۵﴾
কানযুল ঈমান
৩৫. এবং যদি তাদের মুখ ফিরিয়ে নেয়া আপনার নিকট কষ্টকর হয় তাহলে যদি আপনার জন্য সম্ভবপর হয়, তবে ভূ-গর্ভে কোন সুড়ঙ্গ তালাশ করুন কিংবা আসমানে কোন সিড়ি; অতঃপর তাদের জন্য নিদর্শন নিয়ে আসুন! এবং আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তাদেরকে হিদায়তের উপর একত্রিত করতেন । সুতরাং, হে শ্রোতা! তুমি কখনো মূর্খ হয়ো না!
ইরফানুল কুরআন
৩৫. আর যদি আপনার নিকট তাদের অনীহা ও মুখ ফিরিয়ে নেয়া কষ্টদায়ক হয় (এবং আপনি সর্বাবস্থায় তাদের ঈমান আনয়নের আকাঙ্ক্ষী হন,) তবে যদি আপনার পক্ষে (এ) সম্ভব হয় যে পৃথিবীর (অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে এমন) কোনো সুরঙ্গ অথবা আসমানে (আরোহনের) কোনো সিঁড়ি অন্বেষণ করে নিন এবং (তাদেরকে দেখানোর জন্যে) কোনো (বিশেষ) নিদর্শন নিয়ে আসুন (তারা তখনও ঈমান আনয়ন করবে না)। আর যদি আল্লাহ্ চাইতেন, তবে তাদেরকে অবশ্যই হেদায়াতে একত্র করতেন। সুতরাং আপনি (আপনার অনুগ্রহ ও মমতার সীমাহীন আতিশয্যে তাদের দুর্ভাগ্য সম্পর্কে) অনবগত হবেন না।
আল আনআম আয়াত নং : ৩৬
اِنَّمَا یَسۡتَجِیۡبُ الَّذِیۡنَ یَسۡمَعُوۡنَ ؕؔ وَ الۡمَوۡتٰی یَبۡعَثُہُمُ اللّٰہُ ثُمَّ اِلَیۡہِ یُرۡجَعُوۡنَ ﴿ ۳۶﴾
কানযুল ঈমান
৩৬. মানে তো তারাই, যারা শোনে । আর ঐ মৃত অন্তরগুলোকে আল্লাহ্ পুনর্জীবিত করবেন; অতঃপর তার দিকে তাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে ।
ইরফানুল কুরআন
৩৬. সত্য এ যে, (সত্যের দাওয়াত) কেবল সে-ই গ্রহণ করে যে (একে খাঁটি অন্তরে) শ্রবণ করে। আর মৃতদেরকে (অর্থাৎ সত্য অস্বীকারকারীদেরকে) আল্লাহ্ (কুফরী অবস্থাতেই কবর থেকে) উত্থিত করবেন। অতঃপর (যাকে তারা অস্বীকার করতো) সেই (প্রতিপালক) সত্তার দিকে তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।
আল আনআম আয়াত নং : ৩৭
وَ قَالُوۡا لَوۡ لَا نُزِّلَ عَلَیۡہِ اٰیَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہٖ ؕ قُلۡ اِنَّ اللّٰہَ قَادِرٌ عَلٰۤی اَنۡ یُّنَزِّلَ اٰیَۃً وَّ لٰکِنَّ اَکۡثَرَ ہُمۡ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۳۷﴾
কানযুল ঈমান
৩৭. এবং বললো, ‘তার উপর তার প্রতিপালকের নিকট থেকে কোন নিদর্শোন কেন অবতীর্ণ হয়নি?’ আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ সক্ষম এর উপর যে, তিনি কোন নিদর্শন নাযিল করবেন;’কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকে নিরেট মূর্খ রয়েছে ।
ইরফানুল কুরআন
৩৭. আর তারা বললো, ‘তাঁর (অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লামের) প্রতি তাঁর প্রতিপালকের নিকট থেকে (স্থায়ী) কোনো নিদর্শন কেন অবতীর্ণ করা হলো না?’ বলে দিন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্র (এরূপ কোনো) নিদর্শন অবতীর্ণ করার ক্ষমতা রয়েছে; কিন্তু তাদের মধ্যে অধিকাংশ লোক (তাঁর প্রজ্ঞা সম্পর্কে) অবগত নয়।’
আল আনআম আয়াত নং : ৩৮
وَ مَا مِنۡ دَآبَّۃٍ فِی الۡاَرۡضِ وَ لَا طٰٓئِرٍ یَّطِیۡرُ بِجَنَاحَیۡہِ اِلَّاۤ اُمَمٌ اَمۡثَالُکُمۡ ؕ مَا فَرَّطۡنَا فِی الۡکِتٰبِ مِنۡ شَیۡءٍ ثُمَّ اِلٰی رَبِّہِمۡ یُحۡشَرُوۡنَ ﴿۳۸﴾
কানযুল ঈমান
৩৮. এবং নেই কোন ভূ-পৃষ্ঠে বিচরণকারী এবং নেই কোন পাখী, যা আপন ডানার সাহায্যে ওড়ে, কিন্তু সবই তোমাদের মতো উম্মত । আমি এ কিতাবের মধ্যে কোন কিছু লিপিবদ্ধ করতে ত্রুটি করি নি। অতঃপর স্বীয় প্রতিপালকের দিকে উঠানো হবে ।
ইরফানুল কুরআন
৩৮. আর (হে মানব জাতি!) ভুপৃষ্ঠে বিচরণশীল এমন কোনো (প্রাণী) অথবা স্বীয় ডানায় ভর দিয়ে উড়ে চলা এরূপ পাখি নেই যা (বহু বৈশিষ্ট্যে) তোমাদেরই অনুরূপ প্রজাতি নয়।* আমরা কিতাবে কোনো কিছুই বাদ দেইনি (যা সুস্পষ্টভাবে অথবা ইঙ্গিতে বর্ণনা করা হয়নি)। অতঃপর সবাইকে (সব মানুষকে) তাদের প্রতিপালকের নিকট একত্রিত করা হবে। [,*এদের সাদৃশ্যের কারণে মানবজাতির ক্রমবিকাশের ক্ষেত্রে ডারউইন এবং তার সমমনা বিজ্ঞানীদের এ ভুল ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে হয়তো মানুষ এ সব প্রাণীরই এক বিকশিত রূপ। أُمَمٌ أَمثَالُکُمۡ এ শব্দসমূহ সুস্পষ্ট করে দিয়েছে যে, প্রাণীকুল, পক্ষীকুল এবং মানুষের মাঝে শারীরিক, জীবতাত্ত্বিক ও বৈশিষ্ট্যগত সাদৃশ্য অবশ্যই বিদ্যমান। আর এগুলো সৃষ্টিতত্ত্বের একত্ববাদের দলিল, কিন্তু এ সবগুলো পৃথক পৃথক প্রজাতির সৃষ্টি। এ কথা সত্য যে, পৃথিবীর আয়ুষ্কালের বিভিন্ন পর্যায় ও আবর্তনের শেষকালে মানবজীবনের প্রকাশ ঘটেছে। এটি তাদের পরিপূর্ণতম এবং সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টিতে পরিগণিত হওয়ার প্রমাণ।]
আল আনআম আয়াত নং : ৩৯
وَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا صُمٌّ وَّ بُکۡمٌ فِی الظُّلُمٰتِ ؕ مَنۡ یَّشَاِ اللّٰہُ یُضۡلِلۡہُ ؕ وَ مَنۡ یَّشَاۡ یَجۡعَلۡہُ عَلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۳۹﴾
কানযুল ঈমান
৩৯. এবং যারা আমার আয়াতগুলোকে অস্বীকার করেছে তারা বধির ও মূক; অন্ধকাররাশিতে রয়েছে । আল্লাহ যাকে চান বিপথগামী করেন এবং যাকে ইচ্ছা সরল পথে নিয়ে ঢেলে দেন ।
ইরফানুল কুরআন
৩৯. আর যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে তারা বধির ও বোবা, অন্ধকারে (বিপথগামী) রয়েছে। আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা তাকে (সত্য অস্বীকার ও একগুঁয়েমির কারণে) গোমরাহ্ করে দেন এবং যাকে ইচ্ছা তাকে (সত্য গ্রহণ করার কারণে) সরল পথে পরিচালিত করেন।
আল আনআম আয়াত নং : ৪০
قُلۡ اَرَءَیۡتَکُمۡ اِنۡ اَتٰىکُمۡ عَذَابُ اللّٰہِ اَوۡ اَتَتۡکُمُ السَّاعَۃُ اَغَیۡرَ اللّٰہِ تَدۡعُوۡنَ ۚ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۴۰﴾
কানযুল ঈমান
৪০. আপনি বলুন, ‘হাঁ, তোমরা বলো, যদি তোমাদের উপর আল্লাহ্র শাস্তি আসে অথবা কিয়ামত অনুষ্ঠিত হয়, তবে কি তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাউকে ডাকবে?’ যদি তোমরা সত্যবাদী হও!
ইরফানুল কুরআন
৪০. আপনি (এসব কাফেরদেরকে) বলুন, ‘আচ্ছা বলো তো, যদি তোমাদের উপর আল্লাহ্র শাস্তি আপতিত হয় অথবা তোমাদের উপর কিয়ামত সংঘটিত হয় তবে কি (সে সময় শাস্তি থেকে বাঁচার জন্যে) আল্লাহ্ ব্যতীত আর কাউকে আহ্বান করবে? (বলো) যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’
আল আনআম আয়াত নং : ৪১
بَلۡ اِیَّاہُ تَدۡعُوۡنَ فَیَکۡشِفُ مَا تَدۡعُوۡنَ اِلَیۡہِ اِنۡ شَآءَ وَ تَنۡسَوۡنَ مَا تُشۡرِکُوۡنَ ﴿۴۱﴾
কানযুল ঈমান
৪১. বরং (তোমরা) তাকেই ডাকবে। সুতরাং তিনি ইচ্ছা করলে যে কারণে তোমরা তাকে ডাকছো তা দূর করবেন এবং শরীকদের ভুলে যাবে ।
ইরফানুল কুরআন
৪১. (কখনো তা সম্ভব নয়) বরং তোমরা (এখনো) সেই (আল্লাহ্র) সত্তাকেই আহ্বান করছো। যদি তিনি চান, তবে সেসব (বিপদাপদ) দূরীভুত করে দেন, যার জন্যে তোমরা (তাকে) আহ্বান করো। আর (সে সময়) তোমরা ঐসব (মূর্তি) ভুলে যাবে, যাদেরকে (আল্লাহ্র) অংশীদার সাব্যস্ত করতে।
আল আনআম আয়াত নং : ৪২
وَ لَقَدۡ اَرۡسَلۡنَاۤ اِلٰۤی اُمَمٍ مِّنۡ قَبۡلِکَ فَاَخَذۡنٰہُمۡ بِالۡبَاۡسَآءِ وَ الضَّرَّآءِ لَعَلَّہُمۡ یَتَضَرَّعُوۡنَ ﴿۴۲﴾
কানযুল ঈমান
৪২. এবং নিশ্চয় আমি আপনার পূর্বেও বহু জাতির প্রতি রসূল প্রেরণ করেছি; অতঃপর তাদেরকে কঠোরতা ও কষ্ট দিয়ে পাকড়াও করেছি, যাতে তারা কোন মতে হীনতা ও বিনয়ের সাথে প্রার্থনা করে ।
ইরফানুল কুরআন
৪২. আর নিশ্চয়ই আমরা আপনার পূর্বেও অনেক জাতির নিকট রাসূল প্রেরণ করেছিলাম; অতঃপর আমরা তাদেরকে (নাফরমানীর কারণে) অভাব-অনটন ও চরম দুর্দশার মাধ্যমে পাকড়াও করেছিলাম, যাতে তারা (বিনয় ও নম্রতার মাধ্যমে) সনির্বন্ধ প্রার্থনা করে।
আল আনআম আয়াত নং : ৪৩
فَلَوۡلَاۤ اِذۡ جَآءَہُمۡ بَاۡسُنَا تَضَرَّعُوۡا وَ لٰکِنۡ قَسَتۡ قُلُوۡبُہُمۡ وَ زَیَّنَ لَہُمُ الشَّیۡطٰنُ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۴۳﴾
কানযুল ঈমান
৪৩. সুতরাং কেন (এমন ) হলো না যে, যখন তাদের উপর আমার শাস্তি এলো, তখন যদি অত্যন্ত বিনয়ের সাথে প্রার্থনা করতো! কিন্তু তাদের অন্তর তো কঠিন হয়ে গেছে; এবং শয়তান তাদের পর্যায়ক্রমকে তাদের দৃষ্টিতে ভাল করে দেখিয়েছে ।
ইরফানুল কুরআন
৪৩. অতঃপর যখন তাদের উপর আমাদের শাস্তি নেমে এলো তখন তারা কেন বিনয় ও নম্রতা অবলম্বন করেনি? কিন্তু (প্রকৃত সত্য হলো,) তাদের অন্তর কঠোর হয়ে গিয়েছিল এবং শয়তান তাদের জন্যে সেসব (পাপ) কর্ম চিত্তাকর্ষক ও মোহনীয় করে দেখিয়েছিল যা তারা সম্পন্ন করতো।
আল আনআম আয়াত নং : ৪৪
فَلَمَّا نَسُوۡا مَا ذُکِّرُوۡا بِہٖ فَتَحۡنَا عَلَیۡہِمۡ اَبۡوَابَ کُلِّ شَیۡءٍ ؕ حَتّٰۤی اِذَا فَرِحُوۡا بِمَاۤ اُوۡتُوۡۤا اَخَذۡنٰہُمۡ بَغۡتَۃً فَاِذَا ہُمۡ مُّبۡلِسُوۡنَ ﴿۴۴﴾
কানযুল ঈমান
৪৪. অতঃপর যখন তারা ভুলে গেলো ঐ সব উপদেশ যেগুলো তাদেরকে দেওয়া হয়েছিলো, তখন আমি তাদের জন্য প্রতিটি বস্তুর দ্বারগুলো উন্মুক্ত করে দিয়েছি; এমনকি, যখন তারা আনন্দিত হলো সেটার উপর, যা তারা পেয়েছিল তখন আমি অকস্মাৎ তাদেরকে পাকড়াও করলাম; তখন তারা নিরাশ হয়ে রইলো।
ইরফানুল কুরআন
৪৪. অতঃপর যখন তারা সে উপদেশ ভুলে গেল যা তাদেরকে প্রদান করা হয়েছিল, তখন আমরা (তাদেরকে তাদের পরিণতি পর্যন্ত পৌঁছাতে) তাদের জন্যে সকল (প্রাচুর্যের) দরোজা খুলে দিলাম। এমনকি যখন তাদেরকে দেয়া ওইসব বস্তুর (আমোদ ও পরিতৃপ্তির) কারণে তারা আনন্দে উৎফুল্লিত হয়ে গেল, তখন আমরা অকস্মাৎ তাদেরকে (শাস্তির মাধ্যমে) পাকড়াও করলাম। ফলে, তারা নিরাশ হয়ে গেল।
আল আনআম আয়াত নং : ৪৫
فَقُطِعَ دَابِرُ الۡقَوۡمِ الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا ؕ وَ الۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۴۵﴾
কানযুল ঈমান
৪৫. অতঃপর মূলোচ্ছেদ করা হলো অত্যাচারীদের; এবং সমস্ত প্রশংস আল্লাহ্র, যিনি সমগ্র বিশ্বজগতের প্রতিপালক ।
ইরফানুল কুরআন
৪৫. অতঃপর অত্যাচারী সম্প্রদায়ের শিকড় কেটে দেয়া হলো, আর সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই জন্যে, যিনি সমস্ত জগতের প্রতিপালক।
আল আনআম আয়াত নং : ৪৬
قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ اَخَذَ اللّٰہُ سَمۡعَکُمۡ وَ اَبۡصَارَکُمۡ وَ خَتَمَ عَلٰی قُلُوۡبِکُمۡ مَّنۡ اِلٰہٌ غَیۡرُ اللّٰہِ یَاۡتِیۡکُمۡ بِہٖ ؕ اُنۡظُرۡ کَیۡفَ نُصَرِّفُ الۡاٰیٰتِ ثُمَّ ہُمۡ یَصۡدِفُوۡنَ ﴿۴۶﴾
কানযুল ঈমান
৪৬. আপনি বলুন, ‘আচ্ছা বলোতো, ‘যদি আল্লাহ্ তোমাদের কান ও চোখ কেড়ে নেন এবং তোমাদের অন্তরগুলোর উপর মোহর করে দেন, তবে আল্লাহ্ ব্যতীত কোন খোদা আছে, যে তোমাদের এসব বস্তু এনে দেবে?’ দেখো, কী কী রূপে আমি আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করি । অতঃপর তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় ।
ইরফানুল কুরআন
৪৬. (তাদেরকে) বলুন, ‘তোমরা বলো তো, যদি আল্লাহ্ তোমাদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি ছিনিয়ে নেন এবং তোমাদের অন্তরকে মোহরাঙ্কিত করে দেন (তবে) আল্লাহ্ ব্যতীত এমন কোন্ উপাস্য রয়েছে যে এ সকল (নিয়ামত পুনরায়) তোমাদের কাছে নিয়ে আসতে পারে?’ দেখুন, আমরা কিভাবে বিভিন্নরূপে আয়াতসমূহ বর্ণনা করি। এরপর(ও) তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়।
আল আনআম আয়াত নং : ৪৭
قُلۡ اَرَءَیۡتَکُمۡ اِنۡ اَتٰىکُمۡ عَذَابُ اللّٰہِ بَغۡتَۃً اَوۡ جَہۡرَۃً ہَلۡ یُہۡلَکُ اِلَّا الۡقَوۡمُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۴۷﴾
কানযুল ঈমান
৪৭. আপনি বলুন! আচ্ছা বলো তো, ‘যদি তোমাদের উপর আল্লাহ্র শাস্তি আসে হঠাৎ অথবা প্রকাশ্যে, তবে কারা ধ্বংস হবে অত্যাচারীগণ ব্যতীত?’
ইরফানুল কুরআন
৪৭. আপনি (তাদেরকে এও) বলে দিন, ‘তোমরা আমাকে বলো, যদি তোমাদের উপর আল্লাহ্র শাস্তি আসে হঠাৎ অথবা প্রকাশ্যে, তবে কি যালিম সম্প্রদায় ব্যতীত (অন্য কাউকে) ধ্বংস করা হবে?’
আল আনআম আয়াত নং : ৪৮
وَ مَا نُرۡسِلُ الۡمُرۡسَلِیۡنَ اِلَّا مُبَشِّرِیۡنَ وَ مُنۡذِرِیۡنَ ۚ فَمَنۡ اٰمَنَ وَ اَصۡلَحَ فَلَا خَوۡفٌ عَلَیۡہِمۡ وَ لَا ہُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿۴۸﴾
কানযুল ঈমান
৪৮. এবং আমি প্রেরণ করি না রসূলগণকে কিন্তু সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপেই; সুতরাং যারা ঈমান আনে এবং সংশোধন করে, তাদের জন্য না আছে কোন আশঙ্কা, না আছে কোন দুঃখ।
ইরফানুল কুরআন
৪৮. আর আমরা রাসূলগণকে তো সুসংবাদাতা ও সতর্ককারীরূপেই প্রেরণ করি। সুতরাং যারা ঈমান আনয়ন করেছে অথবা (বাস্তবে) সংশোধিত হয়ে গিয়েছে, তবে তাদের জন্যে না থাকবে কোনো ভয়, আর তারা না হবে চিন্তান্বিত।
আল আনআম আয়াত নং : ৪৯
وَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا یَمَسُّہُمُ الۡعَذَابُ بِمَا کَانُوۡا یَفۡسُقُوۡنَ ﴿۴۹﴾
কানযুল ঈমান
৪৯. এবং যারা আমার আয়াতগুলোকে অস্বীকার করেছে, তাদের নিকট শাস্তি পৌছবে পরিণামরূপে তাদের নির্দেশ অমান্য করার ।
ইরফানুল কুরআন
৪৯. আর যারা আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে, অবশ্যই তাদের উপর শাস্তি নেমে আসবে, কারণ তারা নাফরমানী করতো।
আল আনআম আয়াত নং : ৫০
قُلۡ لَّاۤ اَقُوۡلُ لَکُمۡ عِنۡدِیۡ خَزَآئِنُ اللّٰہِ وَ لَاۤ اَعۡلَمُ الۡغَیۡبَ وَ لَاۤ اَقُوۡلُ لَکُمۡ اِنِّیۡ مَلَکٌ ۚ اِنۡ اَتَّبِعُ اِلَّا مَا یُوۡحٰۤی اِلَیَّ ؕ قُلۡ ہَلۡ یَسۡتَوِی الۡاَعۡمٰی وَ الۡبَصِیۡرُ ؕ اَفَلَا تَتَفَکَّرُوۡنَ ﴿۵۰﴾
কানযুল ঈমান
৫০. আপনি বলে দিন, ‘আমি তোমাদেরকে একথা বলি না যে, আমার নিকট আল্লাহর ধন ভাণ্ডার আছে এবং না একথা বলছি যে, আমি নিজে নিজেই অদৃশ্য বিষয়ে জেনে নিই । আর না তোমাদেরকে এটা বলছি যে, আমি ফিরিশ্তা হই । আমি তো সেটারই অনুসারী, যা আমার নিকট ওহী আসে। ‘আপনি বলুন, ‘তবে কি সমান হয়ে যাবে অন্ধ ও চক্ষুষ্মান? তবে কি তোমরা গভীরভাবে চিন্তা ভাবনা করো না ?’
ইরফানুল কুরআন
৫০. আপনি (এসব কাফেরকে) বলে দিন, ‘আমি তোমাদেরকে (এ কথা) বলিনা যে, আমার নিকট আল্লাহ্র ধনভান্ডার রয়েছে, না আমি নিজ থেকে অদৃশ্য জানি এবং না আমি তোমাদেরকে (এ কথা) বলি যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো কেবল (নির্দেশ হিসেবে) তারই অনুসরণ করি যা আমার৭ প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়।’ বলে দিন, ‘অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান? সুতরাং তোমরা কি চিন্তা করো না?’
আল আনআম আয়াত নং : ৫১
وَ اَنۡذِرۡ بِہِ الَّذِیۡنَ یَخَافُوۡنَ اَنۡ یُّحۡشَرُوۡۤا اِلٰی رَبِّہِمۡ لَیۡسَ لَہُمۡ مِّنۡ دُوۡنِہٖ وَلِیٌّ وَّ لَا شَفِیۡعٌ لَّعَلَّہُمۡ یَتَّقُوۡنَ ﴿۵۱﴾
কানযুল ঈমান
৫১. এবং এ ক্বোরআন দ্বারা তাদেরকেই সতর্ক করুন, যাদের এ ভয় আছে যে, তাদেরকে তাদের প্রতিপালকের প্রতি এভাবে উঠানো হবে যে, আল্লাহ্ ব্যতীত তাদের না কোন রক্ষকারী থাকবে, না থাকবে কোন সুপারিশকারী; এ আশায় যে, তারা পরহেয্গার হয়ে যাবে ।
ইরফানুল কুরআন
৫১. আর আপনি (এ কুরআন)-এর মাধ্যমে তাদেরকে সতর্ক করুন যারা ভয় করে যে, তাদেরকে তাদের প্রতিপালকের নিকট এমন অবস্থায় একত্রিত করা হবে যখন তাদের জন্যে তিনি ব্যতীত না কোনো সাহায্যকারী থাকবে আর না (কোনো) সুপারিশকারী; যাতে তারা খোদাভীতি অবলম্বন করতে পারে।
আল আনআম আয়াত নং : ৫২
وَ لَا تَطۡرُدِ الَّذِیۡنَ یَدۡعُوۡنَ رَبَّہُمۡ بِالۡغَدٰوۃِ وَ الۡعَشِیِّ یُرِیۡدُوۡنَ وَجۡہَہٗ ؕ مَا عَلَیۡکَ مِنۡ حِسَابِہِمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ وَّ مَا مِنۡ حِسَابِکَ عَلَیۡہِمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ فَتَطۡرُدَہُمۡ فَتَکُوۡنَ مِنَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۵۲﴾
কানযুল ঈমান
৫২. এবং বিতাড়িত করবেন না তাদেরকে, যারা আপন প্রতিপালককে ডাকে প্রাতঃকালে ও সন্ধ্যায়, তার সন্তুষ্টি চায় । আপনার উপর তাদের হিসাব নিকাশের কিছুই নেই এবং তাদের উপরও আপনার হিসাবের কিছুই নেই; অতঃপর তাদেরকে আপনি বিতাড়িত করলে এ কাজ ন্যায় বিচার বহির্ভূত হবে ।
ইরফানুল কুরআন
৫২. আর আপনি সে সকল (ভগ্ন হৃদয় ও বিপর্যস্ত) লোকদেরকে (আপনার সাহচর্য ও নৈকট্য থেকে) দূরে সরিয়ে দেবেন না, যারা সকাল-সন্ধায় তাদের প্রতিপালককে কেবল তাঁর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই ডাকে। তাদের (আমল ও প্রতিদানের) হিসাবের কিছুই আপনার উপর (বাধ্যতামূলক) নয়, আর না আপনার হিসাবের কিছু তাদের উপর (অত্যাবশ্যকীয়) রয়েছে। এরপরেও যদি আপনি (আপনার দয়া ও অনুগ্রহ থেকে) তাদেরকে দূর করে দেন, তবে আপনি অধিকার বিনষ্টকারীদের মধ্যে পরিগণিত হবেন (যা আপনার মর্যাদার জন্যে সমীচিন নয়)।
আল আনআম আয়াত নং : ৫৩
وَ کَذٰلِکَ فَتَنَّا بَعۡضَہُمۡ بِبَعۡضٍ لِّیَقُوۡلُوۡۤا اَہٰۤؤُلَآءِ مَنَّ اللّٰہُ عَلَیۡہِمۡ مِّنۡۢ بَیۡنِنَا ؕ اَلَیۡسَ اللّٰہُ بِاَعۡلَمَ بِالشّٰکِرِیۡنَ ﴿۵۳﴾
কানযুল ঈমান
৫৩. এবং এভাবে আমি তাদের মধ্যে এককে অপরের জন্য ফিত্না রূপে স্থির করেছি যে, ধনবান কাফির দরিদ্র মুসলমানদেরকে দেখে বলবে, ‘কী এরাই, যাদের উপর আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছেন আমাদের মধ্য থেকে?’ আল্লাহ্ কি ভালই জানেন না সত্য মান্যকারীদেরকে?
ইরফানুল কুরআন
৫৩. আর এভাবে আমরা তাদের কিছু লোককে কিছু লোক দ্বারা যাচাই করি যাতে সে সব (সম্পদশালী কাফের দরিদ্র মুসলমানদেরকে দেখে ঠাট্টাচ্ছলে এ কথা) বলে, ‘আমাদের মধ্যে তারাই কি সেসব লোক যাদের উপর আল্লাহ্ অনুগ্রহ করেছেন?’ আল্লাহ্ কি কৃতজ্ঞতা আদায়কারীদের ব্যাপারে সর্বাধিক অবগত নন?
আল আনআম আয়াত নং : ৫৪
وَ اِذَا جَآءَکَ الَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِاٰیٰتِنَا فَقُلۡ سَلٰمٌ عَلَیۡکُمۡ کَتَبَ رَبُّکُمۡ عَلٰی نَفۡسِہِ الرَّحۡمَۃَ ۙ اَنَّہٗ مَنۡ عَمِلَ مِنۡکُمۡ سُوۡٓءًۢ ابِجَہَالَۃٍ ثُمَّ تَابَ مِنۡۢ بَعۡدِہٖ وَ اَصۡلَحَ فَاَنَّہٗ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۵۴﴾
কানযুল ঈমান
৫৪. এবং যখন আপনার নিকট তারা উপস্থিত হবে, যারা আমার নিদর্শনসমূহের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে, তখন তাদেরকে আপনি বলুন, ‘তোমাদের উপর শাস্তি! তোমাদের প্রতিপালক নিজ করুণার দায়িত্বে রহমত অবতীর্ণ করে যে, তোমাদের মধ্যে যে কেউ মূর্খতাবশতঃ কোন মন্দকাজ করে বসে, অতঃপর এর পরে তাওবা করে নেয় এবং সৎ হয়ে যায়, তবে নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, দয়ালু’।
ইরফানুল কুরআন
৫৪. আর যখন আমাদের আয়াতসমূহের উপর ঈমান আনয়নকারী লোকজন আপনার নিকট আগমন করে, তখন আপনি (তাদেরকে অনুগ্রহবশত) বলুন, ‘তোমাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক’! তোমাদের প্রতিপালক অনুগ্রহ করাকে নিজ সত্তার উপর (মহান দায়িত্ব হিসেবে) আবশ্যক করে নিয়েছেন। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে কেউ না জেনে কোনো মন্দ কাজ করে ফেলে, এরপর তওবা করে এবং (নিজেকে) সংশোধন করে নেয়; তবে অবশ্যই তিনি মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।
আল আনআম আয়াত নং : ৫৫
وَ کَذٰلِکَ نُفَصِّلُ الۡاٰیٰتِ وَ لِتَسۡتَبِیۡنَ سَبِیۡلُ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۵۵﴾
কানযুল ঈমান
৫৫. আর এভাবে আমি আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করি এবং এ জন্য যে, অপরাধীদের পথ প্রকাশ হয়ে যাবে ।
ইরফানুল কুরআন
৫৫. আর এভাবে আমরা আয়াতসমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করি এবং (তা) এ জন্য যে, যাতে অপরাধীদের পথ (সকলের কাছে) স্পষ্ট হয়ে যায়।
আল আনআম আয়াত নং : ৫৬
قُلۡ اِنِّیۡ نُہِیۡتُ اَنۡ اَعۡبُدَ الَّذِیۡنَ تَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ ؕ قُلۡ لَّاۤ اَتَّبِعُ اَہۡوَآءَکُمۡ ۙ قَدۡ ضَلَلۡتُ اِذًا وَّ مَاۤ اَنَا مِنَ الۡمُہۡتَدِیۡنَ ﴿۵۶﴾
কানযুল ঈমান
৫৬. আপনি বলুন, ‘আমাকে নিষেধ করা হয়েছে ঐ সবের ইবাদত করতে, যাদের তোমরা আল্লাহ ব্যতীত উপাসনা করো’। আপনি বলুন, ‘আমি তোমাদের কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ করি না; এমন হলে আমি পথভ্রষ্ট হয়ে যাবো এবং সঠিক পথের উপর থাকবো না ।
ইরফানুল কুরআন
৫৬. বলে দিন, ‘আমাকে তাদের (অর্থাৎ মিথ্যা উপাস্যদের) ইবাদত করতে নিষেধ করা হয়েছে, আল্লাহ্ ব্যতীত তোমরা যাদের উপাসনা করো’। বলে দিন, ‘আমি তোমাদের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করতে পারি না; যদি তা করি তবে অবশ্যই আমি বিপথগামী হবো এবং আমি হেদায়াতপ্রাপ্ত লোকদের মধ্যে(ও) গণ্য হবো না (যা অসম্ভব)।’
আল আনআম আয়াত নং : ৫৭
قُلۡ اِنِّیۡ عَلٰی بَیِّنَۃٍ مِّنۡ رَّبِّیۡ وَ کَذَّبۡتُمۡ بِہٖ ؕ مَا عِنۡدِیۡ مَا تَسۡتَعۡجِلُوۡنَ بِہٖ ؕ اِنِ الۡحُکۡمُ اِلَّا لِلّٰہِ ؕ یَقُصُّ الۡحَقَّ وَ ہُوَ خَیۡرُ الۡفٰصِلِیۡنَ ﴿۵۷﴾
কানযুল ঈমান
৫৭. আপনি বলুন, ‘আমি তো আপন প্রতিপালকের নিকট থেকে স্পষ্ট প্রমাণের উপর রয়েছি এবং তোমরা সেটাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছো । আমার নিকট নেই যা তোমরা শীঘ্রই চাচ্ছো । নির্দেশ নেই, কিন্তু আল্লাহ্র । তিনি সত্য বিবৃত করেন এবং তিনি সবচেয়ে উত্তম ফয়সালাকারী’।
ইরফানুল কুরআন
৫৭. বলে দিন, ‘(হে কাফেরেরা!) নিশ্চয়ই আমি আমার প্রতিপালকের নিকট থেকে সুস্পষ্ট দলিলের উপর (অটল) আছি অথচ তোমরা একে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করো। আমার নিকট তা নেই, যা (অর্থাৎ শাস্তি) তোমরা দ্রুত কামনা করো। কর্তৃত্ব তো কেবলমাত্র আল্লাহ্রই। তিনি সত্য বিবৃত করেন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ ফায়সালাকারী।’
আল আনআম আয়াত নং : ৫৮
قُلۡ لَّوۡ اَنَّ عِنۡدِیۡ مَا تَسۡتَعۡجِلُوۡنَ بِہٖ لَقُضِیَ الۡاَمۡرُ بَیۡنِیۡ وَ بَیۡنَکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ اَعۡلَمُ بِالظّٰلِمِیۡنَ ﴿۵۸﴾
কানযুল ঈমান
৫৮. আপনি বলুন, ‘যদি আমার নিকট থাকতো ঐ বস্তু, যার জন্য তোমরা তাড়াহুড়া করছো, তবে আমার ও তোমাদের মধ্যেকার মতভেদের পরিসমাপ্তি ঘটতো এবং আল্লাহ্ ভালভাবে জানেন অত্যাচারীদেরকে’।
ইরফানুল কুরআন
৫৮. (তাদেরকে) বলে দিন, ‘যদি তা (অর্থাৎ শাস্তি) আমার নিকট থাকতো, যা তোমরা দ্রুত কামনা করছো, তবে অবশ্যই আমার এবং তোমাদের মাঝের ব্যাপার একবারেই চুকে যেতো। আর আল্লাহ্ যালিমদের ব্যাপারে সম্যক অবগত।’
আল আনআম আয়াত নং : ৫৯
وَ عِنۡدَہٗ مَفَاتِحُ الۡغَیۡبِ لَا یَعۡلَمُہَاۤ اِلَّا ہُوَ ؕ وَ یَعۡلَمُ مَا فِی الۡبَرِّ وَ الۡبَحۡرِ ؕ وَ مَا تَسۡقُطُ مِنۡ وَّرَقَۃٍ اِلَّا یَعۡلَمُہَا وَ لَا حَبَّۃٍ فِیۡ ظُلُمٰتِ الۡاَرۡضِ وَ لَا رَطۡبٍ وَّ لَا یَابِسٍ اِلَّا فِیۡ کِتٰبٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۵۹﴾
কানযুল ঈমান
৫৯. আর তারই নিকট রয়েছে অদৃশ্য ভাণ্ডারের চাবিসমূহ । সেগুলো একমাত্র তিনিই জানেন; এবং জানেনে যা কিছু স্থলে ও জলে রয়েছে; আর যে পাতাটা ঝরে পড়ে তিনি সেটা সম্বন্ধেও অবগত । এবং এমন কোন শস্যকণা নেই যমীনের অন্ধকাররাশির মধ্যে আর না আছে এমন কোন তাজা ও শুষ্ক বস্তু, যা একটা সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ নেই ।
ইরফানুল কুরআন
৫৯. আর অদৃশ্যের চাবি রয়েছে তাঁরই (ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের) নিকট; (চাবি অর্থাৎ ‘পথ’ ও ‘মাধ্যম’ যার দ্বারা কারো নিকট অদৃশ্য বিষয় উন্মোচিত হয়)। তা তিনি ব্যতীত (নিজের প্রচেষ্টায়) কেউ জানে না। আর ভুপৃষ্ঠে ও সমুদ্রে যা কিছু আছে তা তিনি (সরাসরি) অবগত এবং তাঁর অবগতি ব্যতীত একটি পাতাও পড়ে না। পৃথিবীর অন্ধকার ভাঁজে এমন কোনো শস্য নেই, নেই সতেজ বা শুকনো কিছুই যা সমুজ্জ্বল গ্রন্থে (সংরক্ষিত) নেই।
আল আনআম আয়াত নং : ৬০
وَ ہُوَ الَّذِیۡ یَتَوَفّٰىکُمۡ بِالَّیۡلِ وَ یَعۡلَمُ مَا جَرَحۡتُمۡ بِالنَّہَارِ ثُمَّ یَبۡعَثُکُمۡ فِیۡہِ لِیُقۡضٰۤی اَجَلٌ مُّسَمًّی ۚ ثُمَّ اِلَیۡہِ مَرۡجِعُکُمۡ ثُمَّ یُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۶۰﴾
কানযুল ঈমান
৬০. এবং তিনিই হন, যিনি রাত্রিকালে তোমাদের রূহসমূহ হনন করেন এবং জানেন যা কিছু দিনের বেলায় অর্জন করো । অতঃপর তোমাদেরকে দিনে উঠান, যাতে নির্ধারিত সময়সীমা পরিপূর্ণ হয় । অতঃপর তারই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন হবে । অতঃপর তিনি বলে দেবেন যা তোমরা করতে ।
ইরফানুল কুরআন
৬০. আর তিনিই রাত্রিতে তোমাদের প্রাণ অধিকার করে নেন এবং তিনি জানেন যা কিছু তোমরা দিবসে অর্জন করো; অতঃপর তাতে তিনি তোমাদেরকে পুনর্জাগরিত করেন, যাতে (তোমাদের জীবনের) নির্ধারিত মেয়াদ পূর্ণ হয়; সুতরাং তাঁরই দিকে তোমাদের প্রত্যাবর্তন; অতঃপর তিনি (হাশরের দিন) তোমাদেরকে এ (সমস্ত আমল) সম্পর্কে অবগত করবেন যা তোমরা (এ জীবনকালে) করতে।
আল আনআম আয়াত নং : ৬১
وَ ہُوَ الۡقَاہِرُ فَوۡقَ عِبَادِہٖ وَ یُرۡسِلُ عَلَیۡکُمۡ حَفَظَۃً ؕ حَتّٰۤی اِذَا جَآءَ اَحَدَکُمُ الۡمَوۡتُ تَوَفَّتۡہُ رُسُلُنَا وَ ہُمۡ لَا یُفَرِّطُوۡنَ ﴿۶۱﴾
কানযুল ঈমান
৬১. এবং তিনিই পরাক্রমশালী আপন বান্দাদের উপর আর তোমাদের উপর রক্ষক প্রেরণ করেন; অবশেষে যখন তোমাদের মধ্য থেকে কারো নিকট মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন আমার ফিরিশ্তাগণ তার রূহ্ হনন করে এবং তারা ত্রুটি করে না ।
ইরফানুল কুরআন
৬১. আর তিনিই তাঁর বান্দাদের উপর আধিপত্যশীল এবং তিনি তোমাদের উপর (ফেরেশতাদেরকে) প্রহরী (হিসেবে) প্রেরণ করেন। অবশেষে যখন তোমাদের কারো মৃত্যু উপস্থিত হয়, (তখন) আমাদের প্রেরিত (ফেরেশতারা) তাঁর প্রাণ হরণ করে নেয় এবং তারা ত্রুটি (বা অপারগতা প্রকাশ) করে না।
আল আনআম আয়াত নং : ৬২
ثُمَّ رُدُّوۡۤا اِلَی اللّٰہِ مَوۡلٰىہُمُ الۡحَقِّ ؕ اَلَا لَہُ الۡحُکۡمُ ۟ وَ ہُوَ اَسۡرَعُ الۡحٰسِبِیۡنَ ﴿۶۲﴾
কানযুল ঈমান
৬২. অতঃপর তারা প্রত্যানীত হয় তাদের প্রকৃত মুনিব আল্লাহ্র দিকে । শুনছো! তারই নির্দেশ এবং তিনিই সর্বাপেক্ষা ত্বরিত হিসাব গ্রহণকারী ।
ইরফানুল কুরআন
৬২. অতঃপর তারা (সবাই) প্রত্যাবর্তিত হবে আল্লাহ্র সমীপে, যিনি তাদের প্রকৃত মালিক। জেনে রেখো! নির্দেশ (প্রদান) তাঁরই (কাজ)। আর তিনি সবচেয়ে দ্রুত হিসাবগ্রহণকারী।
আল আনআম আয়াত নং : ৬৩
قُلۡ مَنۡ یُّنَجِّیۡکُمۡ مِّنۡ ظُلُمٰتِ الۡبَرِّ وَ الۡبَحۡرِ تَدۡعُوۡنَہٗ تَضَرُّعًا وَّ خُفۡیَۃً ۚ لَئِنۡ اَنۡجٰىنَا مِنۡ ہٰذِہٖ لَنَکُوۡنَنَّ مِنَ الشّٰکِرِیۡنَ ﴿۶۳﴾
কানযুল ঈমান
৬৩. আপনি বলুন! ‘তিনি কে হন, যিনি তোমাদেরকে রক্ষা করেন স্থল ও সমুদ্রের বিপদাপদ থেকে , যাকে তোমরা ডাকছো কাতরভাবে এবং নীরবে যে, ‘যদি তিনি আমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেন, তবে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞতা স্বীকার করবো’।
ইরফানুল কুরআন
৬৩. আপনি (তাদেরকে) জিজ্ঞেস করুন, ‘স্থলভাগ ও সমুদ্রের অন্ধকার থেকে তোমাদেরকে কে রক্ষা করেন? (সে সময় তো) তোমরা অনুনয় বিনয়ের সাথে এবং চুপিচুপি(ও) তাঁর কাছেই প্রার্থনা করো, যদি তিনি আমাদেরকে এ (মুসিবত) থেকে রক্ষা করেন, তবে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হবো।’
আল আনআম আয়াত নং : ৬৪
قُلِ اللّٰہُ یُنَجِّیۡکُمۡ مِّنۡہَا وَ مِنۡ کُلِّ کَرۡبٍ ثُمَّ اَنۡتُمۡ تُشۡرِکُوۡنَ ﴿۶۴﴾
কানযুল ঈমান
৬৪. আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্ তোমাদেরকে মুক্তি দেন তা থেকে এবং প্রত্যেক অস্থিরতা থেকে; অতঃপর তোমরা তার শরীক স্থির করছো’।
ইরফানুল কুরআন
৬৪. বলে দিন, ‘আল্লাহ্ই এ (মুসিবত) থেকে এবং অন্যান্য সকল দুর্দশা থেকে উদ্ধার করেন। এরপর(ও) তোমরা অংশীদার সাব্যস্ত করো।’
আল আনআম আয়াত নং : ৬৫
قُلۡ ہُوَ الۡقَادِرُ عَلٰۤی اَنۡ یَّبۡعَثَ عَلَیۡکُمۡ عَذَابًا مِّنۡ فَوۡقِکُمۡ اَوۡ مِنۡ تَحۡتِ اَرۡجُلِکُمۡ اَوۡ یَلۡبِسَکُمۡ شِیَعًا وَّ یُذِیۡقَ بَعۡضَکُمۡ بَاۡسَ بَعۡضٍ ؕ اُنۡظُرۡ کَیۡفَ نُصَرِّفُ الۡاٰیٰتِ لَعَلَّہُمۡ یَفۡقَہُوۡنَ ﴿۶۵﴾
কানযুল ঈমান
৬৫. আপনি বলুন, ‘তিনিই সক্ষম তোমাদের প্রতি শাস্তি প্রেরণ করতে তোমাদের উপর থেকে কিংবা তোমাদের পায়ের নিচে থেকে, অথবা তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে দিতে এবং এককে অপররের কঠোর নিপীড়নের আস্বাদ গ্রহন করাতে’। দেখো, আমি কীভাবে বিভিন্ন প্রকারে আয়তগুলো বিবৃত করছি, যাতে কখনো তাদের বোধশক্তির উদয় হয় ।
ইরফানুল কুরআন
৬৫. বলে দিন, ‘তিনি তোমাদের উপর শাস্তি প্রেরণ করতে সক্ষম; (হতে পারে তা) তোমাদের উপর থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে অথবা তোমাদেরকে দলে দলে বিভক্ত করে পরস্পরে মুখোমুখি করে এবং তোমাদের এক দলকে অপর দলের কঠোর নিপীড়ন আস্বাদন করিয়ে।’ লক্ষ্য করুন! আমরা কতো বিচিত্রভাবে আয়াতসমূহ বর্ণনা করি, যাতে তারা অনুধাবন করতে পারে।
আল আনআম আয়াত নং : ৬৬
وَ کَذَّبَ بِہٖ قَوۡمُکَ وَ ہُوَ الۡحَقُّ ؕ قُلۡ لَّسۡتُ عَلَیۡکُمۡ بِوَکِیۡلٍ ﴿ؕ۶۶﴾
কানযুল ঈমান
৬৬. এবং ওটাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে তোমার সম্প্রদায় এবং ওটাই সত্য । আপনি বলুন, ‘আমি তোমাদের উপর কোন কার্যনির্বাহক নই’।
ইরফানুল কুরআন
৬৬. আর আপনার সম্প্রদায় একে (কুরআনকে) মিথ্যাপ্রতিপন্ন করেছে, অথচ এটি চরম সত্য। বলে দিন, ‘আমি তোমাদের অভিভাবক নই’।
আল আনআম আয়াত নং : ৬৭
لِکُلِّ نَبَاٍ مُّسۡتَقَرٌّ ۫ وَّ سَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿۶۷﴾
কানযুল ঈমান
৬৭. প্রতিটি বস্তুর একটা নির্ধারিত সময় রয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে তোমরা অবহিত হবে ।
ইরফানুল কুরআন
৬৭. প্রত্যেক সংবাদের (সংঘটিত হবার) নির্ধারিত সময় রয়েছে এবং তোমরা অচিরেই জেনে যাবে।
আল আনআম আয়াত নং : ৬৮
وَ اِذَا رَاَیۡتَ الَّذِیۡنَ یَخُوۡضُوۡنَ فِیۡۤ اٰیٰتِنَا فَاَعۡرِضۡ عَنۡہُمۡ حَتّٰی یَخُوۡضُوۡا فِیۡ حَدِیۡثٍ غَیۡرِہٖ ؕ وَ اِمَّا یُنۡسِیَنَّکَ الشَّیۡطٰنُ فَلَا تَقۡعُدۡ بَعۡدَ الذِّکۡرٰی مَعَ الۡقَوۡمِ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۶۸﴾
কানযুল ঈমান
৬৮. এবং হে শ্রোতা! যখন তুমি তাদেরকে দেখবে, যারা আমার নিদর্শনসমূহের মধ্যে লেগে আছে, তখন তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে যে পর্যন্ত না তারা অন্য প্রসঙ্গে লিপ্ত হয়, এবং যখনই তোমাকে শয়তান ভুলিয়ে দেবে, অতঃপর স্মরণে আসতেই যালিমদের নিকটে বসো না !
ইরফানুল কুরআন
৬৮. আর যখন তুমি তাদেরকে দেখো, যারা আমাদের আয়াতসমূহে (কুটিলতা অন্বেষণ ও উপহাসে) মগ্ন হয়, তবে তাদের থেকে দূরে থাকো যতক্ষণ না তারা অপর কোনো প্রসঙ্গে প্রবৃত্ত হয়। আর যদি শয়তান তোমাদেরকে (এ বিষয়) ভুলিয়ে দেয় তবে স্মরণ হওয়ার পর (কখনো) যালিম সম্প্রদায়ের সাথে বসো না।
আল আনআম আয়াত নং : ৬৯
وَ مَا عَلَی الَّذِیۡنَ یَتَّقُوۡنَ مِنۡ حِسَابِہِمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ وَّ لٰکِنۡ ذِکۡرٰی لَعَلَّہُمۡ یَتَّقُوۡنَ ﴿۶۹﴾
কানযুল ঈমান
৬৯. এবং পরহেয্গারদের উপর তাদের হিসাব থেকে কিছুই নেই; হাঁ, (আছে) উপদেশ দেওয়া, হয়তো তারা ফিরে আসবে ।
ইরফানুল কুরআন
৬৯. আর পরহযেগারদের উপর তাদের (অর্থাৎ কাফেরদের) হিসাবের জবাবদিহিতার কিছুই (আবশ্যক) নেই, তবে (উচিত) তাদেরকে উপদেশ দেয়া, যাতে তারা (কুফরী থেকে এবং কুরআনের নিন্দা করা থেকে) সুরক্ষিত থাকে।
আল আনআম আয়াত নং : ৭০
وَ ذَرِ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا دِیۡنَہُمۡ لَعِبًا وَّ لَہۡوًا وَّ غَرَّتۡہُمُ الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا وَ ذَکِّرۡ بِہٖۤ اَنۡ تُبۡسَلَ نَفۡسٌۢ بِمَا کَسَبَتۡ ٭ۖ لَیۡسَ لَہَا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ وَلِیٌّ وَّ لَا شَفِیۡعٌ ۚ وَ اِنۡ تَعۡدِلۡ کُلَّ عَدۡلٍ لَّا یُؤۡخَذۡ مِنۡہَا ؕ اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ اُبۡسِلُوۡا بِمَا کَسَبُوۡا ۚ لَہُمۡ شَرَابٌ مِّنۡ حَمِیۡمٍ وَّ عَذَابٌ اَلِیۡمٌۢ بِمَا کَانُوۡا یَکۡفُرُوۡنَ ﴿۷۰﴾
কানযুল ঈমান
৭০. এবং বর্জন করো তাদেরকে, যারা নিজেদের দ্বীনকে খেলা তামাশারূপে গ্রহণ করেছে আর তাদেরকে পার্থিব জীবন প্রতারিত করেছে; এবং ক্বোরআন থেকে তাদেরকে উপদেশ দাও যাতে কখনো কোন প্রাণ নিজের কৃতকর্মের জন্য গ্রেফতার না হয় । আলাহ ব্যতীত তার জন্য না কোন অভিভাবক থাকবে, না কোন সুপারিশকারী; আর যদি নিজের বিনিময়ে সবকিছুও দেয় তবুও তার নিকট থেকে গ্রহণ করা হবে না । এরা হচ্ছে তারাই; যাদেরকে তাদের কৃতকর্মের উপর পাকড়াও করা হয়েছে । তাদের জন্য রয়েছে অত্যুষ্ণ পানিয় এবং বেদনাদায়ক শাস্তি, তাদের কুফরের বদলা স্বরূপ।
ইরফানুল কুরআন
৭০. আর আপনি তাদের সঙ্গ বর্জন করুন যারা তাদের দ্বীনকে খেল-তামাশায় পরিণত করেছে এবং যাদেরকে পৃথিবীর জীবন প্রতারিত করে রেখেছে। আর (তাদেরকে অবহিত করতে এ কুরআন)-এর মাধ্যমে উপদেশ দিতে থাকুন যাতে কোনো আত্মাকে তার কৃতকর্মের পরিণতিতে ধ্বংসে সমর্পণ করা না হয়। (অধিকন্তু) তার জন্যে আল্লাহ্ ব্যতীত না কোনো সাহায্যকারী থাকবে আর না কোনো সুপারিশকারী। আর যদি সে (আত্মা নিজের পাপের) পুরোপুরি বিনিময় (অর্থাৎ মুক্তিপণও) প্রদান করে, তবু(ও) তার নিকট থেকে মোটেই তা গ্রহণ করা হবে না। এরাই সেসব লোক যারা তাদের কৃতকর্মের পরিণতিতে ধ্বংসপ্রাপ্ত, তাদের জন্যে রয়েছে উত্তপ্ত পানীয় এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি; কারণ তারা কুফরী করতো।
আল আনআম আয়াত নং : ৭১
قُلۡ اَنَدۡعُوۡا مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ مَا لَا یَنۡفَعُنَا وَ لَا یَضُرُّنَا وَ نُرَدُّ عَلٰۤی اَعۡقَابِنَا بَعۡدَ اِذۡ ہَدٰىنَا اللّٰہُ کَالَّذِی اسۡتَہۡوَتۡہُ الشَّیٰطِیۡنُ فِی الۡاَرۡضِ حَیۡرَانَ ۪ لَہٗۤ اَصۡحٰبٌ یَّدۡعُوۡنَہٗۤ اِلَی الۡہُدَی ائۡتِنَا ؕ قُلۡ اِنَّ ہُدَی اللّٰہِ ہُوَ الۡہُدٰی ؕ وَ اُمِرۡنَا لِنُسۡلِمَ لِرَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿ۙ۷۱﴾
কানযুল ঈমান
৭১. আপনি বলুন, ‘আমরা কি আল্লাহ্ ব্যতীত এমন কিছুর উপাসনা করবো, যা আমাদের না কোন উপকার করতে পারে, না অপকার? এবং আমাদেরকে কি পশ্চাদপদে ফিরিয়ে দেওয়া হবে এর পরে যে, আল্লাহ্ আমাদেরকে সৎপথ দেখিয়েছেন তারই মতো, যাকে শয়তান যমীনের মধ্যে পথ ভুলিয়ে দিয়েছে, হতবুদ্ধি হয়ে আছে?’ তার সাথী তাকে পথের দিকে আহ্বান করছে, ‘এদিকে এসো!’ আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্র হিদায়তই হিদায়ত এবং আমাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন আমরা তার জন্য গর্দান ঝুঁকিয়ে দিই, যিনি প্রতিপালক সমগ্র বিশ্বের’।
ইরফানুল কুরআন
৭১. বলে দিন, ‘আমরা কি আল্লাহ্ ব্যতীত এমন কিছুর উপাসনা করবো, যা আমাদের না উপকার করতে পারে আর না আমাদের (কোনো) ক্ষতি করতে পারে? আর আল্লাহ্ আমাদেরকে হেদায়াত দানের পর আমরা কি সে ব্যক্তির ন্যায় আমাদের পশ্চাতে ফিরে যাবো যাকে শয়তানেরা ভুপৃষ্ঠে পথ ভুলিয়ে বিপদগ্রস্ত ও পেরেশান করে দিয়েছে, যার সঙ্গীরা তাকে সরল পথের দিকে ডেকে বলছে: “আমাদের নিকট আসো” (কিন্তু তার কোনোই উপলব্ধি নেই)।’ বলে দিন, ‘আল্লাহ্র হেদায়াতই (প্রকৃত) হেদায়াত। আর (এ জন্যেই) আমাদেরকে সমস্ত জাহানের প্রতিপালকের নিকট আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
আল আনআম আয়াত নং : ৭২
وَ اَنۡ اَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اتَّقُوۡہُ ؕ وَ ہُوَ الَّذِیۡۤ اِلَیۡہِ تُحۡشَرُوۡنَ ﴿۷۲﴾
কানযুল ঈমান
৭২. এবং এ যে, নামায কায়েম রাখো এবং তাকেই ভয় করো; আর তিনিই হন, যার প্রতি তোমাদের উত্থান ।
ইরফানুল কুরআন
৭২. আর এও (নির্দেশ দেয়া হয়েছে), ‘তোমরা নাযাম কায়েম করো এবং তাঁকে ভয় করতে থাকো। আর তিনিই আল্লাহ্ যাঁর দিকে তোমাদের (সকলকে) একত্রিত করা হবে।’
আল আনআম আয়াত নং : ৭৩
وَ ہُوَ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ بِالۡحَقِّ ؕ وَ یَوۡمَ یَقُوۡلُ کُنۡ فَیَکُوۡنُ ۬ؕ قَوۡلُہُ الۡحَقُّ ؕ وَ لَہُ الۡمُلۡکُ یَوۡمَ یُنۡفَخُ فِی الصُّوۡرِ ؕ عٰلِمُ الۡغَیۡبِ وَ الشَّہَادَۃِ ؕ وَ ہُوَ الۡحَکِیۡمُ الۡخَبِیۡرُ ﴿۷۳﴾
কানযুল ঈমান
৭৩. এবং তিনিই, যিনিআস্মান ও যমীনকে যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছেন; আর যেদিন প্রতিটি ধ্বংসপ্রাপ্ত বস্তুর উদ্দেশ্যে বলবেন, ‘হয়ে যাও!’ সেটা তখনই হয়ে যাবে । তার বাণী সত্য; এবং তারই রাজত্ব হবে যেদিন শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেওয়া হবে; প্রতিটি গোপন ও প্রকাশ্য সম্বন্ধে জ্ঞান । এবং তিনিই প্রজ্ঞাময়, অবহিত ।
ইরফানুল কুরআন
৭৩. আর তিনিই (আল্লাহ্), যিনি (ত্রুটিহীন কৌশলে) যথাবিধি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং যেদিন তিনি বলবেন, ‘হয়ে যাও’ তখন (হাশর দিবস সংঘটিত) হয়ে যাবে। তাঁর কথাই সত্য। আর সেদিন রাজত্ব তাঁরই হবে, যেদিন (ইসরাফীল আলাইহিস সালামের মাধ্যমে) সিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে। (তিনিই) সকল অদৃশ্য ও দৃশ্যমান বিষয়ে অবগত এবং তিনি বড়ই প্রজ্ঞাবান, পরিজ্ঞাত।
আল আনআম আয়াত নং : ৭৪
وَ اِذۡ قَالَ اِبۡرٰہِیۡمُ لِاَبِیۡہِ اٰزَرَ اَتَتَّخِذُ اَصۡنَامًا اٰلِہَۃً ۚ اِنِّیۡۤ اَرٰىکَ وَ قَوۡمَکَ فِیۡ ضَلٰلٍ مُّبِیۡنٍ ﴿۷۴﴾
কানযুল ঈমান
৭৪. এবং স্মরণ করুন, যখন ইব্রাহিম আপন পিতা আযরকে বললো, ‘তুমি কি মূর্তিগুলোকে খোদা বানাচ্ছো? নিঃসন্দেহে আমি তোমাকে ও তোমার সম্প্রদায়কে সুস্পষ্ট ভ্রান্তির মধ্যে পাচ্ছি’।
ইরফানুল কুরআন
৭৪. আর (স্মরণ করুন) যখন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) তাঁর পিতা আযরকে (যে প্রকৃতপক্ষে চাচা, আরবদের পরিভাষায় তাকে পিতা বলা হয়,) বললেন, ‘তোমরা কি মূর্তিসমূহকে উপাস্য নিরূপণ করছো? নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে এবং তোমাদের সম্প্রদায়কে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে (নিমজ্জিত) দেখতে পাচ্ছি।’
আল আনআম আয়াত নং : ৭৫
وَ کَذٰلِکَ نُرِیۡۤ اِبۡرٰہِیۡمَ مَلَکُوۡتَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ لِیَکُوۡنَ مِنَ الۡمُوۡقِنِیۡنَ ﴿۷۵﴾
কানযুল ঈমান
৭৫. এবং যেভাবে আমি ইব্রাহীমকে দেখাচ্ছি সমগ্র বাদশাহী আস্মানসমূহের ও যমীনের এবং এ জন্য যে, তিনি সচক্ষে-দেখা নিশ্চিত বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন ।
ইরফানুল কুরআন
৭৫. আর এভাবে আমরা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-কে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সমস্ত রাজত্ব (অর্থাৎ সৃষ্টির বিস্ময়) প্রদর্শন করেছিলাম যাতে তিনি স্বচক্ষে দেখা নিশ্চিত বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হন।
আল আনআম আয়াত নং : ৭৬
فَلَمَّا جَنَّ عَلَیۡہِ الَّیۡلُ رَاٰ کَوۡکَبًا ۚ قَالَ ہٰذَا رَبِّیۡ ۚ فَلَمَّاۤ اَفَلَ قَالَ لَاۤ اُحِبُّ الۡاٰفِلِیۡنَ ﴿۷۶﴾
কানযুল ঈমান
৭৬. অতঃপর যখন তার উপর রাতের অন্ধকার নেমে এলো তখন একটা নক্ষত্র দেখলেন । বললেন, ‘এটাকেই কি আমার প্রতিপালক স্থির করছো?’ অতঃপর যখন তা অস্তমিত হলো তখন বললেন, ‘আমি পছন্দ করি না যা অস্তমিত হয়’।
ইরফানুল কুরআন
৭৬. অতঃপর যখন তাঁকে রাতের অন্ধকার আচ্ছন্ন করলো তখন তিনি (একটি) তারকা দেখতে পেলেন এবং বললেন, ‘(তোমাদের দৃষ্টিতে কি) এটি আমার প্রতিপালক?’ অতঃপর যখন এটি অস্তমিত হলো, তখন (নিজের সম্প্রদায়কে শুনিয়ে) বলতে লাগলেন, ‘আমি অস্তগামীকে পছন্দ করি না’।
আল আনআম আয়াত নং : ৭৭
فَلَمَّا رَاَ الۡقَمَرَ بَازِغًا قَالَ ہٰذَا رَبِّیۡ ۚ فَلَمَّاۤ اَفَلَ قَالَ لَئِنۡ لَّمۡ یَہۡدِنِیۡ رَبِّیۡ لَاَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡقَوۡمِ الضَّآلِّیۡنَ ﴿۷۷﴾
কানযুল ঈমান
৭৭. অতঃপর যখন চাদকে চমকিত অবস্থায় দেখলেন তখন বললেন, ‘এটাকেই কি আমার প্রতিপালক স্থির করছো?’ অতঃপর যখন তা অস্তমিত হলো, তখন বললেন, ‘যদি না আমাকে আমার প্রতিপালক হিদায়ত করতেন, তবে আমিও সেই পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হতাম’ ।
ইরফানুল কুরআন
৭৭. অতঃপর যখন চাঁদকে জ্যোতির্ময় দেখলেন (তখন) তিনি বললেন, ‘(তোমাদের ধারণা অনুযায়ী) এটি (কি) আমার প্রতিপালক?’ অতঃপর যখন এটি(ও) অদৃশ্য হয়ে গেল, তখন তিনি (নিজ সম্প্রদায়কে শুনিয়ে) বলতে লাগলেন, ‘যদি আমার প্রতিপালক আমাকে হেদায়াত প্রদান না করতেন, তবে অবশ্যই আমিও (তোমাদের মত) পথভ্রষ্ট সম্প্রদায়ের একজনে পরিগণিত হতাম।’
আল আনআম আয়াত নং : ৭৮
فَلَمَّا رَاَ الشَّمۡسَ بَازِغَۃً قَالَ ہٰذَا رَبِّیۡ ہٰذَاۤ اَکۡبَرُ ۚ فَلَمَّاۤ اَفَلَتۡ قَالَ یٰقَوۡمِ اِنِّیۡ بَرِیۡٓءٌ مِّمَّا تُشۡرِکُوۡنَ ﴿۷۸﴾
কানযুল ঈমান
৭৮. অতঃপর যখন সূর্যকে ঝিলিমিলি করতে দেখলেন তখন বললেন, ‘এটাকে কি আমার প্রতিপালক বলছো? এটাতো সেগুলো অপেক্ষা বড়’। অতঃপর যখন সেটা অস্তমিত হলো, তখন বললেন, ‘হে আমার সম্প্রদায় । আমি অসন্তুষ্ট ঐ সব বস্তুর প্রতি, যেগুলোকে তোমরা শরীক স্থির করছো ।
ইরফানুল কুরআন
৭৮. অতঃপর যখন তিনি সূর্যকে জ্যোতির্ময় দেখলেন (তখন) বললেন, ‘(এখন কি তোমাদের ধারণায়) এটি আমার প্রতিপালক, (কেননা) এটি সবচেয়ে বড়?’ অতঃপর যখন এটি(ও) ডুবে গেল তখন তিনি বলে উঠলেন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমি এ (সব কিছু) থেকে নির্লিপ্ত, যেগুলোকে তোমরা (আল্লাহ্র) অংশীদার সাব্যস্ত করো।
আল আনআম আয়াত নং : ৭৯
اِنِّیۡ وَجَّہۡتُ وَجۡہِیَ لِلَّذِیۡ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ حَنِیۡفًا وَّ مَاۤ اَنَا مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿ۚ۷۹﴾
কানযুল ঈমান
৭৯. আমি আমার মুখমণ্ডল তারই দিকে করলাম, যিনি আস্মান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তারই হয়ে এবং আমি অংশীবাদীদের অন্তর্ভুক্ত নই’।
ইরফানুল কুরআন
৭৯. অবশ্যই আমি আমার মুখমন্ডল (সকল দিক থেকে গুটিয়ে) একনিষ্ঠভাবে তাঁর (সত্তার) দিকে ফেরালাম, যিনি আকাশমন্ডলী এবং পৃথিবীকে উপমাবিহীন সৃষ্টি করেছেন এবং (জেনে রেখো) আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।’
আল আনআম আয়াত নং : ৮০
وَ حَآجَّہٗ قَوۡمُہٗ ؕ قَالَ اَتُحَآجُّوۡٓنِّیۡ فِی اللّٰہِ وَ قَدۡ ہَدٰىنِ ؕ وَ لَاۤ اَخَافُ مَا تُشۡرِکُوۡنَ بِہٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ یَّشَآءَ رَبِّیۡ شَیۡئًا ؕ وَسِعَ رَبِّیۡ کُلَّ شَیۡءٍ عِلۡمًا ؕ اَفَلَا تَتَذَکَّرُوۡنَ ﴿۸۰﴾
কানযুল ঈমান
৮০. এবং তার সম্প্রদায় তার সাথে বিতর্ক করতে লাগলো । (তিনি) বললেন, ‘তোমরা কি আল্লাহ্ সম্বন্ধে আমার সাথে বিতর্ক করছো? তিনি তো আমাকে পথ বাতলিয়ে দিয়েছেন এবং আমার নিকট ঐ সবের ভয় নেই, যেগুলোকে তোমরা (তার) শরীক বলছো; হাঁ, কোন বিষয়ে আমারই প্রতিপালক যা চান । আমার প্রতিপালকের জ্ঞান সব কিছুকে পরিবেষ্টনকারী, তোমরা কি উপদেশ মানবে না?
ইরফানুল কুরআন
৮০. আর তাঁর সম্প্রদায় তাঁর সাথে বাদানুবাদ ও ঝগড়া শুরু করলো, (তখন) তিনি বললেন, ‘আশ্চর্য! তোমরা আল্লাহ্র ব্যাপারে আমার সাথে ঝগড়া করছো, অথচ তিনি আমাকে হেদায়াত দান করেছেন? আর আমি এ (মিথ্যা উপাস্যদের) ব্যাপারে ভয় করি না, যাদেরকে তোমরা তাঁর অংশীদার সাব্যস্ত করো। তবে (এ যে,) আমার প্রতিপালক যা কিছু (ক্ষতি) চান (তা করতে পারেন)। আমার প্রতিপালক সকল কিছুকে (নিজ) জ্ঞানের মাধ্যমে বেষ্টন করে আছেন। সুতরাং তোমরা কি উপদেশ গ্রহণ করবে না?
আল আনআম আয়াত নং : ৮১
وَ کَیۡفَ اَخَافُ مَاۤ اَشۡرَکۡتُمۡ وَ لَا تَخَافُوۡنَ اَنَّکُمۡ اَشۡرَکۡتُمۡ بِاللّٰہِ مَا لَمۡ یُنَزِّلۡ بِہٖ عَلَیۡکُمۡ سُلۡطٰنًا ؕ فَاَیُّ الۡفَرِیۡقَیۡنِ اَحَقُّ بِالۡاَمۡنِ ۚ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ ﴿ۘ۸۱﴾
কানযুল ঈমান
৮১. আমি তোমাদের শরীকদেরকে কীভাবে ভয় করবো? আর তোমরা (এতে) ভয় করছো না যে, তোমরা আল্লাহ্র শরীক ওটাকেই স্থির করছো, যার সম্পর্কে তোমাদের উপর তিনি কোন সনদ অবতীর্ণ করেন নি । সুতরাং দু’দলের মধ্যে নিরাপত্তার অধিক উপযোগী কে? যদি তোমরা জানো।
ইরফানুল কুরআন
৮১. আর আমি কিভাবে ভয় করতে পারি এদেরকে (এ বাতিল উপাস্যদেরকে) যাদেরকে তোমরা (আল্লাহ্র) অংশীদার সাব্যস্ত করো? অথচ তোমরা এ বিষয়কে ভয় করো না যে, তোমরা আল্লাহ্র সাথে (মূর্তিদের) অংশীদার সাব্যস্ত করে রেখেছো, (যেখানে এ শিরক)-এর কোনো দলিল তিনি তোমাদের জন্যে অবতীর্ণ করেননি। (এখন তোমরা নিজেরাই উত্তর দাও) দু’টি দলের মধ্যে কোনটি (শাস্তি থেকে) নিরাপদ থাকার অধিকতর দাবীদার? যদি তোমরা জানো।’
আল আনআম আয়াত নং : ৮২
اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ لَمۡ یَلۡبِسُوۡۤا اِیۡمَانَہُمۡ بِظُلۡمٍ اُولٰٓئِکَ لَہُمُ الۡاَمۡنُ وَ ہُمۡ مُّہۡتَدُوۡنَ ﴿۸۲﴾
কানযুল ঈমান
৮২. ঐ সব লোক যারা ঈমান এনেছে এবং আপন ঈমানের মধ্যে কোন অসত্যের সংমিশ্রণ করে নি; তাদেরই জন্য নিরাপত্তা এবং তারাই সৎপথের উপর রয়েছে ।
ইরফানুল কুরআন
৮২. যারা ঈমান আনয়ন করেছে এবং তাদের ঈমানকে (শিরকের) যুলুমের সাথে মিশ্রিত করেনি, তাদের জন্যে রয়েছে শান্তি (অর্থাৎ পরকালীন নিঃশঙ্কতা) এবং তারাই হেদায়াতপ্রাপ্ত।
আল আনআম আয়াত নং : ৮৩
وَ تِلۡکَ حُجَّتُنَاۤ اٰتَیۡنٰہَاۤ اِبۡرٰہِیۡمَ عَلٰی قَوۡمِہٖ ؕ نَرۡفَعُ دَرَجٰتٍ مَّنۡ نَّشَآءُ ؕ اِنَّ رَبَّکَ حَکِیۡمٌ عَلِیۡمٌ ﴿۸۳﴾
কানযুল ঈমান
৮৩. এবং এটা আমার দলীল যে, আমি ইব্রাহীমকে তার সম্প্রদায়ের মোকাবেলায় দান করেছি । আমি যাকে চাই বহু মর্যাদায় উন্নীত করি । নিঃসন্দেহে, আপনার প্রতিপালক জ্ঞান ও প্রজ্ঞার অধিকারী ।
ইরফানুল কুরআন
৮৩. আর এটিই আমাদের (একত্ববাদের) দলিল ছিল যা আমরা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-কে তাঁর (বিরোধী) সম্প্রদায়ের বিপক্ষে দিয়েছিলাম। আমরা যাকে চাই উচ্চ মর্যাদায় সমুন্নত করি। নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক প্রজ্ঞাবান, সম্যক অবগত।
আল আনআম আয়াত নং : ৮৪
وَ وَہَبۡنَا لَہٗۤ اِسۡحٰقَ وَ یَعۡقُوۡبَ ؕ کُلًّا ہَدَیۡنَا ۚ وَ نُوۡحًا ہَدَیۡنَا مِنۡ قَبۡلُ وَ مِنۡ ذُرِّیَّتِہٖ دَاوٗدَ وَ سُلَیۡمٰنَ وَ اَیُّوۡبَ وَ یُوۡسُفَ وَ مُوۡسٰی وَ ہٰرُوۡنَ ؕ وَ کَذٰلِکَ نَجۡزِی الۡمُحۡسِنِیۡنَ ﴿ۙ۸۴﴾
কানযুল ঈমান
৮৪. এবং আমি তাকে ইসহাক্ব ও ইয়া’কুবকে দান করেছি । তাদের সবাইকে আমি সৎপথ দেখিয়েছি এবং তাদের পূর্বে নূহকে সৎপথ প্রদর্শন করেছি আর তার সন্তানদের মধ্য থেকে দাঊদ, সুলায়মান, আইয়ূব, ইয়ূসুফ, মূসা এবং হারূনকেও; এবং আমি অনুরূপভাবে প্রতিদান দিয়ে থাকি সৎকর্মপরায়ণদেরকে ।
ইরফানুল কুরআন
৮৪. আর আমরা তাঁকে (অর্থাৎ ইবরাহীম আলাইহিস সালামকে পুত্র) ইসহাক (আলাইহিস সালাম) ও (পৌত্র) ইয়াকুব (আলাইহিস সালাম) দান করলাম। আমরা (তাদের) সবাইকে হেদায়াত দিয়ে অনুগ্রহ করলাম। আর আমরা (তাদের) পূর্বে নূহ (আলাইহিস সালাম)-কেও হেদায়াত দিয়ে অনুগ্রহ করেছিলাম এবং তাদের সন্তান-সন্ততির মধ্য থেকে দাউদ, সুলাইমান, আইয়ূব, ইউসূফ, মূসা এবং হারুন (আলাইহিমুস সালামকেও হেদায়াত দান করেছিলাম)। আর আমরা এভাবে পূণ্যবানদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।
আল আনআম আয়াত নং : ৮৫
وَ زَکَرِیَّا وَ یَحۡیٰی وَ عِیۡسٰی وَ اِلۡیَاسَ ؕ کُلٌّ مِّنَ الصّٰلِحِیۡنَ ﴿ۙ۸۵﴾
কানযুল ঈমান
৮৫. এবং যাকারিয়া, ইয়াহ্য়া, ঈসা এবং ইলিয়াসকেও । এরা সবাই আমার নৈকট্যের উপযোগী ।
ইরফানুল কুরআন
৮৫. আর (আমরা) যাকারিয়্যা, ইয়াহইয়া এবং ইলিয়াস (আলাইহিমুস সালামকেও হেদায়াত দান করেছি)। তাঁরা সবাই পূণ্যবান (এবং নৈকট্যবান ও ঐশীচেতনা সম্পন্ন) ছিলেন।
আল আনআম আয়াত নং : ৮৬
وَ اِسۡمٰعِیۡلَ وَ الۡیَسَعَ وَ یُوۡنُسَ وَ لُوۡطًا ؕ وَ کُلًّا فَضَّلۡنَا عَلَی الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿ۙ۸۶﴾
কানযুল ঈমান
৮৬. আর ইসমাঈল, য়াসা’, ইয়ূনুস এবং লূতকেও; আর আমি প্রত্যেককে তারই যুগের সবার উপর শ্রেষ্টত্ব দিয়েছি ।
ইরফানুল কুরআন
৮৬. আর (আমরা) ইসমাইল, আল-ইয়াসা’, ইউনুস এবং লূত (আলাইহিমুস সালামকেও হেদায়াতের মাধ্যমে মর্যাদাবান করেছিলাম)। আর আমরা তাঁদের সবাইকে (তাঁদের সময়ে) সারা জাহানের অধিবাসীদের উপর মর্যাদা দিয়েছিলাম।
আল আনআম আয়াত নং : ৮৭
وَ مِنۡ اٰبَآئِہِمۡ وَ ذُرِّیّٰتِہِمۡ وَ اِخۡوَانِہِمۡ ۚ وَ اجۡتَبَیۡنٰہُمۡ وَ ہَدَیۡنٰہُمۡ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ﴿۸۷﴾
কানযুল ঈমান
৮৭. এবং তাদের পিতৃপুরুষগণ, বংশধর এবং ভ্রাতৃবৃন্দের মধ্য থেকে কতেককেও; এবং আমি তাদেরকে মনোনীত করেছি ও সোজা পথ দেখিয়েছি ।
ইরফানুল কুরআন
৮৭. আর তাঁদের পূর্বপুরুষ, সন্তান-সন্ততি এবং তাঁদের ভাইদের মধ্য থেকেও (কতিপয়কে অনুরূপ মর্যাদা দিয়েছিলাম); আর আমরা তাঁদেরকে (আমাদের বিশেষ কৃপা ও মহত্বের জন্যে) নির্বাচিত করেছিলাম এবং তাঁদেরকে সরলপথের দিকে হেদায়াত দান করেছিলাম।
আল আনআম আয়াত নং : ৮৮
ذٰلِکَ ہُدَی اللّٰہِ یَہۡدِیۡ بِہٖ مَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ ؕ وَ لَوۡ اَشۡرَکُوۡا لَحَبِطَ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۸۸﴾
কানযুল ঈমান
৮৮. এটা আল্লাহ্র হিদায়ত যে, আপন বান্দাদের মধ্যে যাকে চান প্রদান করে থাকেন; এবং তারা যদি শির্ক করতো তবে অবশ্যই তাদের কৃতকর্ম নিষ্ফল হতো ।
ইরফানুল কুরআন
৮৮. এ আল্লাহ্র হেদায়াত, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে চান এর দ্বারা পথপ্রদর্শন করেন। আর যদি (ধরে নেয়া হয় যে) তারা অংশীদার সাব্যস্ত করতেন, তবে তাদের সে সমস্ত (উত্তম) আমল জব্দ (অর্থাৎ বিলীন) হয়ে যেতো যা তাঁরা সম্পাদন করেছিলেন।
আল আনআম আয়াত নং : ৮৯
اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ اٰتَیۡنٰہُمُ الۡکِتٰبَ وَ الۡحُکۡمَ وَ النُّبُوَّۃَ ۚ فَاِنۡ یَّکۡفُرۡ بِہَا ہٰۤؤُلَآءِ فَقَدۡ وَکَّلۡنَا بِہَا قَوۡمًا لَّیۡسُوۡا بِہَا بِکٰفِرِیۡنَ ﴿۸۹﴾
কানযুল ঈমান
৮৯. এরা হচ্ছে ঐ সব লোক, যাদেরকে আমি কিতাব, ফয়সালা করার ক্ষমতা ও নুবূয়ত প্রদান করেছি; অতঃপর যদি এসব লোক তা অস্বীকার করে, তবে আমি সেটার জন্য এমন একটা জনগোষ্ঠীকে নিয়োজিত রেখেছি যারা অস্বীকারকারী নয় ।
ইরফানুল কুরআন
৮৯. (তারাই) সেসব ব্যক্তি যাদেরকে আমরা কিতাব, (শরীয়তের) হুকুম এবং নবুয়্যত দান করেছিলাম। অতঃপর যদি তারা (অর্থাৎ কাফেরেরা) এ বিষয়গুলো অস্বীকার করে বসে তবে নিশ্চয়ই আমরা এগুলোর উপর (ঈমান আনয়নের জন্যে) সে সম্প্রদায়কে নিযুক্ত করে রেখেছি যারা কখনো এগুলোর অস্বীকারকারী (হবার) নয়।
আল আনআম আয়াত নং : ৯০
اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ ہَدَی اللّٰہُ فَبِہُدٰىہُمُ اقۡتَدِہۡ ؕ قُلۡ لَّاۤ اَسۡـَٔلُکُمۡ عَلَیۡہِ اَجۡرًا ؕ اِنۡ ہُوَ اِلَّا ذِکۡرٰی لِلۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۹۰﴾
কানযুল ঈমান
৯০. এরা হচ্ছে এমন সব লোক, যাদেরকে আল্লাহ্ হিদায়াত করেছেন। সুতরাং আপনি তাদেরই পথে চলুন । আপনি বলে দিন, ‘আমি ক্বোরআনের জন্য তোমাদের নিকট কোন পারিশ্রমিক চাইনা’। তাতো নয়, কিন্তু উপদেশ সমগ্র বিশ্বের জন্য ।
ইরফানুল কুরআন
৯০. (তাঁরাই) সেসব ব্যক্তি (অর্থাৎ আল্লাহ্র রাসূলগণ) যাদেরকে আল্লাহ্ হেদায়াত দান করেছেন; অতঃপর (হে সর্বশেষ রাসূল!) আপনি তাঁদের (মর্যাদাপূর্ণ সকল) পন্থাকে (নিজের পবিত্র জীবনে একত্রিত করে তাঁদেরকে) অনুসরণ করুন (যাতে আপনার পবিত্র সত্তায় সে সকল নবী ও রাসূলগণের সকল মর্যাদা ও পরিপূর্ণতা একত্রিত হয়)। বলে দিন, ‘(হে লোকসকল!) আমি তোমাদের নিকট (এ হেদায়াতের বিনিময়ে) কোনো পারিশ্রমিক চাই না; এ তো কেবল জগতবাসীর জন্যে উপদেশ।’
আল আনআম আয়াত নং : ৯১
وَ مَا قَدَرُوا اللّٰہَ حَقَّ قَدۡرِہٖۤ اِذۡ قَالُوۡا مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ عَلٰی بَشَرٍ مِّنۡ شَیۡءٍ ؕ قُلۡ مَنۡ اَنۡزَلَ الۡکِتٰبَ الَّذِیۡ جَآءَ بِہٖ مُوۡسٰی نُوۡرًا وَّ ہُدًی لِّلنَّاسِ تَجۡعَلُوۡنَہٗ قَرَاطِیۡسَ تُبۡدُوۡنَہَا وَ تُخۡفُوۡنَ کَثِیۡرًا ۚ وَ عُلِّمۡتُمۡ مَّا لَمۡ تَعۡلَمُوۡۤا اَنۡتُمۡ وَ لَاۤ اٰبَآؤُکُمۡ ؕ قُلِ اللّٰہُ ۙ ثُمَّ ذَرۡہُمۡ فِیۡ خَوۡضِہِمۡ یَلۡعَبُوۡنَ ﴿۹۱﴾
কানযুল ঈমান
৯১. এবং ইহুদীগন আল্লাহ্র প্রকৃত মর্যাদা জানে নি যেমন জানা উচিত ছিলো । যখন তারা বললো, ‘আল্লাহ্ কোন মানুষের উপর কিছুই অবতারণ করেন নি । আপনি বলুন, ‘কে অবতারণ করলো সেই কিতাব, যা মূসা নিয়ে এসেছিলো, আলো ও মানুষের জন্য হিদায়তরূপে; যার তোমরা পৃথিক পৃথিক কপি তৈরী করে নিয়েছো; সেগুলোকে প্রকাশ করছো এবং অনেক কিছু গোপন করছো আর তোমাদেরকে সেটাই শিক্ষা দেওয়া হয় যা না তোমাদের জানা ছিলো, না তোমাদের পিতৃপুরুষদের’? ‘আল্লাহ্’ বলুন! অতঃপর, তাদেরকে ছেড়ে দিন তাদের অনর্থক কাজের মধ্যে খেলতে ।
ইরফানুল কুরআন
৯১. আর তারা (অর্থাৎ ইহুদীরা) আল্লাহ্র যথার্থ মর্যাদা উপলব্ধি করেনি যেমনটি করা উচিত ছিল; যখন তারা (রাসূল সাল্লাল্লাহ্ আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়াসাল্লামের রিসালাতকে অস্বীকার করে) এ কথা বলে দিল যে, আল্লাহ্ কোনো মানুষের প্রতি কোনো কিছুই অবতীর্ণ করেননি। বলে দিন, ‘কে অবতীর্ণ করেছিলেন সেই কিতাব যা মূসা (আলাইহিস সালাম) নিয়ে এসেছিলেন, মানুষের জন্যে আলোকবর্তিকা এবং হেদায়াত রূপে, যা তোমরা পৃথক পৃথক কাগজে পরিণত করেছিলে? তোমরা এর কিছু অংশ (মানুষের জন্যে) প্রকাশ করতে এবং অনেক কিছু গোপন(ও) করতে; আর তোমাদেরকে সে সব (কিছু) শিখিয়ে দেয়া হয়েছিল যা না তোমরা জানতে আর না তোমাদের পিতৃপুরুষগণ।’ বলে দিন, ‘(এ সবকিছুই) আল্লাহ্ (প্রদত্ত অনুগ্রহ)’। অতঃপর আপনি তাদেরকে (তাদের অবস্থার উপর) ছেড়ে দিন যাতে তারা নিজেদের অনর্থক কথাবার্তায় খেলতে থাকে।
আল আনআম আয়াত নং : ৯২
وَ ہٰذَا کِتٰبٌ اَنۡزَلۡنٰہُ مُبٰرَکٌ مُّصَدِّقُ الَّذِیۡ بَیۡنَ یَدَیۡہِ وَ لِتُنۡذِرَ اُمَّ الۡقُرٰی وَ مَنۡ حَوۡلَہَا ؕ وَ الَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡاٰخِرَۃِ یُؤۡمِنُوۡنَ بِہٖ وَ ہُمۡ عَلٰی صَلَاتِہِمۡ یُحَافِظُوۡنَ ﴿۹۲﴾
কানযুল ঈমান
৯২. এবং এটা বরকতময় কিতাব, যা আমি অবতারণ করেছি, প্রত্যায়নকারী ঐ সব কিতাবের যেগুলো পূর্বে ছিলো; এবং এ জন্য যে, আপনি সতর্ক করবেন ‘সমস্ত বস্তির সরদার’কে এবং তাকে যে সমগ্র জাহানে সেটার চতুর্পাশে রয়েছে; এবং যারা পরকালের উপর ঈমান আনে তারা ঐ কিতাবের উপর ঈমান আনে এবং নিজেদের নামাযের সংরক্ষণ করে ।
ইরফানুল কুরআন
৯২. আর এই (সেই) মহাকল্যাণময় কিতাব যা আমরা অবতীর্ণ করেছি। (প্রকৃতপক্ষে) এটি এর পূর্ববর্তী কিতাবগুলোকে সত্যায়ন করে। আর (তা) এ জন্যে (অবতীর্ণ করা হয়েছে) যাতে আপনি (প্রথমত) সকল (মানব) সম্প্রদায়ের কেন্দ্র (মক্কা)-এর অধীবাসীদেরকে এবং (দ্বিতীয়ত বিশ্বব্যাপী) এর চারপাশের অধীবাসীদেরকে সতর্ক করেন। আর যারা পরকালে বিশ্বাস রাখে তারাই এর উপর ঈমান আনয়ন করে এবং তারাই তাদের নামাযকে পরিপূর্ণরূপে রক্ষণাবেক্ষণ করে।
আল আনআম আয়াত নং : ৯৩
وَ مَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا اَوۡ قَالَ اُوۡحِیَ اِلَیَّ وَ لَمۡ یُوۡحَ اِلَیۡہِ شَیۡءٌ وَّ مَنۡ قَالَ سَاُنۡزِلُ مِثۡلَ مَاۤ اَنۡزَلَ اللّٰہُ ؕ وَ لَوۡ تَرٰۤی اِذِ الظّٰلِمُوۡنَ فِیۡ غَمَرٰتِ الۡمَوۡتِ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ بَاسِطُوۡۤا اَیۡدِیۡہِمۡ ۚ اَخۡرِجُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اَلۡیَوۡمَ تُجۡزَوۡنَ عَذَابَ الۡہُوۡنِ بِمَا کُنۡتُمۡ تَقُوۡلُوۡنَ عَلَی اللّٰہِ غَیۡرَ الۡحَقِّ وَ کُنۡتُمۡ عَنۡ اٰیٰتِہٖ تَسۡتَکۡبِرُوۡنَ ﴿۹۳﴾
কানযুল ঈমান
৯৩. এবং তার চেয়ে বড় যালিম কে, যে আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে? অথবা বলে, ‘আমার প্রতি ওহী হয়েছে’; অথচ তার প্রতি কোন ওহী হয় নি; এবং যে বলে, ‘এখনই আমি অবতীর্ন করছি তেমনি, যেমন আল্লাহ্ অবতীর্ণ করেছেন;’ এবং কখনো আপনি দেখতে পাবেন, যখন যালিম মৃত্যু যন্ত্রণা ভুগতে থাকে এবং ফিরিশ্তাগণ হাত বিস্তার করে রয়েছেন ‘বের করো নিজেদের প্রাণসমূহ আজ তোমাদেরকে লাঞ্ছনার শাস্তি দেওয়া হবে এর পরিণামস্বরূপ যে, আল্লাহ্র উপর মিথ্যারোপ করছিলে এবং তার আয়াতগুলো থেকে অহংকার করতে’।
ইরফানুল কুরআন
৯৩. আর তার চেয়ে বড় যালিম কে, যে আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা অপবাদ রচনা করে অথবা (নবুয়্যতের মিথ্যা দাবী করে এ কথা) বলে, ‘আমার প্রতি ওহী অবতীর্ণ করা হয়েছে’, অথচ তার প্রতি কোনো ওহীই অবতীর্ণ করা হয়নি? আর (তার চেয়ে বড় যালিম কে হবে) যে (খোদা হওয়ার মিথ্যা দাবী করে) বলে, ‘আমি(ও) অচিরেই এমন (কিতাব) অবতীর্ণ করবো, যেমনটি আল্লাহ্ অবতীর্ণ করেছেন’। আর আপনি যদি (সে সময়ের দৃশ্য) দেখেন যখন যালিমেরা মৃত্যু যন্ত্রণায় (আচ্ছন্ন) থাকবে, তখন ফেরেশতারা (তাদের দিকে) হাত প্রসারিত করবে, (তাদেরকে বলতে থাকবে) ‘তোমরা তোমাদের আত্মাকে শরীর থেকে বের করো। আজ তোমাদেরকে অপমানজনক শাস্তি প্রতিদান দেয়া হবে। কারণ, তোমরা আল্লাহ্ সম্পর্কে অন্যায় কথাবার্তা বলতে এবং তোমরা তাঁর আয়াতসমূহ অমান্য ও উপেক্ষা করতে।’
আল আনআম আয়াত নং : ৯৪
وَ لَقَدۡ جِئۡتُمُوۡنَا فُرَادٰی کَمَا خَلَقۡنٰکُمۡ اَوَّلَ مَرَّۃٍ وَّ تَرَکۡتُمۡ مَّا خَوَّلۡنٰکُمۡ وَرَآءَ ظُہُوۡرِکُمۡ ۚ وَ مَا نَرٰی مَعَکُمۡ شُفَعَآءَکُمُ الَّذِیۡنَ زَعَمۡتُمۡ اَنَّہُمۡ فِیۡکُمۡ شُرَکٰٓؤُا ؕ لَقَدۡ تَّقَطَّعَ بَیۡنَکُمۡ وَ ضَلَّ عَنۡکُمۡ مَّا کُنۡتُمۡ تَزۡعُمُوۡنَ ﴿۹۴﴾
কানযুল ঈমান
৯৪. এবং নিশ্চয় তোমরা আমার নিকট নিঃসঙ্গ অবস্থায় এসেছো যেমন আমি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম; আর পৃষ্ঠ-পশ্চাতে ফেলে এসেছো যে ধন সম্পদ আমি তোমাদেরকে দিয়েছিলাম; এবং আমি তোমাদের সাথে তোমাদের ঐ সুপারিশকারীদেরকে দেখছি না, যাদেরকে তোমরা নিজেদের মধ্যে শরীক মনে করতে । নিশ্চয় তোমাদের পরস্পরের মধ্যেকার সম্পর্কের রশি কেটে গেছে এবং তোমাদের নিকট থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে যা দাবী করছিলে ।
ইরফানুল কুরআন
৯৪. আর নিশ্চয়ই তোমরা (কিয়ামতের দিন) আমাদের নিকট সেরূপ একাকী আগমন করবে যেরূপ তোমাদেরকে প্রথমবার (একাকী) সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং (ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির) যা কিছু আমরা তোমাদেরকে দিয়েছিলাম, সেসবই তোমাদের পশ্চাতে রেখে আসবে। আর আমরা তোমাদের সাথে তোমাদের সে সুপারিশকারীদের দেখবো না, যাদের ব্যাপারে তোমরা (এ) ধারণা করতে যে, তারা তোমাদের (বিষয়ের) মাঝে আমাদের অংশীদার। নিশ্চয়ই (আজ) তোমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক (ও বিশ্বাস) ছিন্ন হয়ে গিয়েছে এবং তোমরা যা দাবী করতে তা তোমাদের থেকে নিষ্ফল হয়ে গিয়েছে।
আল আনআম আয়াত নং : ৯৫
اِنَّ اللّٰہَ فَالِقُ الۡحَبِّ وَ النَّوٰی ؕ یُخۡرِجُ الۡحَیَّ مِنَ الۡمَیِّتِ وَ مُخۡرِجُ الۡمَیِّتِ مِنَ الۡحَیِّ ؕ ذٰلِکُمُ اللّٰہُ فَاَنّٰی تُؤۡفَکُوۡنَ ﴿۹۵﴾
কানযুল ঈমান
৯৫. নিশ্চয় আল্লাহ্ শস্যবীজ ও আটি ভেদ করে অঙ্কুর উৎপাদনকারী, জীবন্তকে মৃত থেকে এবং মৃতকে জীবন্ত থেকে নির্গতকারী। ইনিই হন আল্লাহ্; তোমরা কোথায় উল্টো দিকে যাচ্ছো?
ইরফানুল কুরআন
৯৫. নিশ্চয়ই আল্লাহ্ শস্যকণা এবং বীজ বিদীর্ণ ও অঙ্কুরিত করেন, তিনি মৃত থেকে জীবন্তকে নির্গত করেন এবং জীবন্ত থেকে মৃতকে নির্গত করেন। এরূপ (শানের অধিকারী) তো আল্লাহ্ই; সুতরাং তোমরা কোথায় বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরছো?
আল আনআম আয়াত নং : ৯৬
فَالِقُ الۡاِصۡبَاحِ ۚ وَ جَعَلَ الَّیۡلَ سَکَنًا وَّ الشَّمۡسَ وَ الۡقَمَرَ حُسۡبَانًا ؕ ذٰلِکَ تَقۡدِیۡرُ الۡعَزِیۡزِ الۡعَلِیۡمِ ﴿۹۶﴾
কানযুল ঈমান
৯৬. অন্ধকারের বুক চিরে ঊষার উন্মেষকারী; এবং তিনি রাতকে শান্তিদায়ক করেছেন আর সূর্য ও চন্দ্রকে গণনার জন্য । এটা পরাক্রমশালী জ্ঞানীর অগ্রে নিরূপণ ।
ইরফানুল কুরআন
৯৬. (তিনিই) রাতের অন্ধকার ভেদ করে বের করে আনেন প্রভাত (-দ্যুতি) এবং তিনিই রাতকে সৃষ্টি করেছেন বিশ্রামের জন্যে এবং সূর্য ও চন্দ্রকে গণনার জন্যে। এটি মহাপরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞ (প্রতিপালক) কর্তৃক নির্ধারিত পরিমাপ।
আল আনআম আয়াত নং : ৯৭
وَ ہُوَ الَّذِیۡ جَعَلَ لَکُمُ النُّجُوۡمَ لِتَہۡتَدُوۡا بِہَا فِیۡ ظُلُمٰتِ الۡبَرِّ وَ الۡبَحۡرِ ؕ قَدۡ فَصَّلۡنَا الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ ﴿۹۷﴾
কানযুল ঈমান
৯৭. এবং তিনিই হন, যিনি তোমাদের জন্য নক্ষত্ররাজি সৃষ্টি করেছেন যেন সেগুলো দ্বারা সঠিক পথের দিশা পাও স্থল ও সমুদ্রের অন্ধকারে । আমি নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বিবৃত করেছি জ্ঞানীদের জন্য ।
ইরফানুল কুরআন
৯৭. আর তিনিই তোমাদের জন্যে সৃষ্টি করেছেন তারকারাজি, যেন তোমরা এগুলোর মাধ্যমে স্থল ও সমুদ্রে পথ খুঁজে পেতে পারো। নিশ্চয় আমরা জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্যে (আমাদের) নিদর্শনাবলী সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেছি।
আল আনআম আয়াত নং : ৯৮
وَ ہُوَ الَّذِیۡۤ اَنۡشَاَکُمۡ مِّنۡ نَّفۡسٍ وَّاحِدَۃٍ فَمُسۡتَقَرٌّ وَّ مُسۡتَوۡدَعٌ ؕ قَدۡ فَصَّلۡنَا الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّفۡقَہُوۡنَ ﴿۹۸﴾
কানযুল ঈমান
৯৮. এবং তিনিই হন, যিনি তোমাদেরকে একই প্রাণ (সত্ত্বা) থেকে সৃষ্টি করেছেন অতঃপর কোথাও তোমাদেরকে অবস্থান করতে হবে এবং কোথাও গচ্ছিত থাকতে হবে। নিশ্চয় আমি বিশদভাবে নিদর্শনসমূহ বিবৃত করেছি বুদ্ধিসম্পন্ন লোকদের জন্য ।
ইরফানুল কুরআন
৯৮. আর তিনিই (আল্লাহ্), যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন একক আত্মা (অর্থাৎ একটি মাত্র কোষ) থেকে, অতঃপর (তোমাদের জন্যে রয়েছে) একটি বসবাসের স্থান, একটি সংরক্ষণের স্থান (অর্থাৎ মায়ের জরায়ু ও পৃথিবী অথবা পৃথিবী ও কবর)। নিশ্চয়ই আমরা বোধশক্তিসম্পন্নদের জন্যে (আমাদের ক্ষমতা ও শক্তির) নিদর্শনাবলী সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছি।
আল আনআম আয়াত নং : ৯৯
وَ ہُوَ الَّذِیۡۤ اَنۡزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً ۚ فَاَخۡرَجۡنَا بِہٖ نَبَاتَ کُلِّ شَیۡءٍ فَاَخۡرَجۡنَا مِنۡہُ خَضِرًا نُّخۡرِجُ مِنۡہُ حَبًّا مُّتَرَاکِبًا ۚ وَ مِنَ النَّخۡلِ مِنۡ طَلۡعِہَا قِنۡوَانٌ دَانِیَۃٌ وَّ جَنّٰتٍ مِّنۡ اَعۡنَابٍ وَّ الزَّیۡتُوۡنَ وَ الرُّمَّانَ مُشۡتَبِہًا وَّ غَیۡرَ مُتَشَابِہٍ ؕ اُنۡظُرُوۡۤا اِلٰی ثَمَرِہٖۤ اِذَاۤ اَثۡمَرَ وَ یَنۡعِہٖ ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکُمۡ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یُّؤۡمِنُوۡنَ ﴿۹۹﴾
কানযুল ঈমান
৯৯. এবং তিনিই হন, যিনি আস্মান থেকে বারি বর্ষণ করেছেন । অতঃপর আমি তা দ্বারা প্রতিটি উদ্ভিদ উদ্গম করেছি; অনন্তর তা থেকে উদ্গত করেছি; সব্জি, যা থেকে শস্যদানা উৎপাদন করি একটা অপরের উপর চড়াবস্থায়; এবং খেজুরের মাথি থেকে পাশাপাশি গুচ্ছ; এবং আঙ্গুরের বাগান; এবং যায়তূন ও আনার কোন কোন বিষয়ে সদৃশ ও কোন কোন বিষয়ে বিসদৃশ । সেটার ফলের দিকে লক্ষ্য করো যখন ফলবান হয় এবং সেটার পরিপক্ক হবার প্রতি । নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনসমূহ রয়েছে ঈমানদারদের জন্য ।
ইরফানুল কুরআন
৯৯. আর তিনিই আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন। সুতরাং আমরা এর (অর্থাৎ বৃষ্টির) মাধ্যমে প্রত্যেক প্রকারের উদ্ভিদ উদ্গত করি, অতঃপর এ থেকে উৎপন্ন করি সবুজ (শস্য), যা থেকে একে অপরের উপর যুক্ত গুচ্ছদানা উৎপাদন করি; খেজুর বৃক্ষের শীর্ষভাগ থেকে ঝুলন্ত গুচ্ছ, আঙ্গুরের বাগান, যয়তূন এবং ডালিমও (সৃষ্টি করি, যা বিভিন্ন দিক থেকে) পরস্পরের সদৃশ (মনে হয়); আর কিছু (ফলন, স্বাদ ও প্রভাবের দিক থেকে) ভিন্ন ভিন্ন। তোমরা বৃক্ষের ফলের দিকে লক্ষ্য করো যখন তা ফল দেয় এবং এর পেঁকে যাওয়ার দিকেও (লক্ষ্য করো)। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শনাবলী রয়েছে তাদের জন্যে যারা ঈমানদার।
আল আনআম আয়াত নং : ১০০
وَ جَعَلُوۡا لِلّٰہِ شُرَکَآءَ الۡجِنَّ وَ خَلَقَہُمۡ وَ خَرَقُوۡا لَہٗ بَنِیۡنَ وَ بَنٰتٍۭ بِغَیۡرِ عِلۡمٍ ؕ سُبۡحٰنَہٗ وَ تَعٰلٰی عَمَّا یَصِفُوۡنَ ﴿۱۰۰﴾
কানযুল ঈমান
১০০. এবং তারা আল্লাহ্র শরীক স্থির করেছে জিন্দেরকে, অথচ তিনিই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার জন্য পুত্র ও কন্যা সন্তান গড়ে নিয়েছে মূর্খতাবশতঃ তিনি পবিত্র ও ঐ সব কথাবার্তার ঊর্ধ্বে, যেগুলো তারা বলে থাকে ।
ইরফানুল কুরআন
১০০. আর সেসব কাফেরেরা জ্বিনদেরকে আল্লাহ্র অংশীদার সাব্যস্ত করে, অথচ তিনিই তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। আর (এছাড়াও) তারা কোনো জ্ঞান (ও যুক্তি) ব্যতীত আল্লাহ্র প্রতি পুত্র-কন্যা(ও) আরোপ করে। তিনি সে (সমস্ত) বিষয়াদি থেকে পবিত্র ও সমুন্নত, যে গুণাগুণ তারা (তাঁর সম্বন্ধে) বর্ণনা করে।
আল আনআম আয়াত নং : ১০১
بَدِیۡعُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ اَنّٰی یَکُوۡنُ لَہٗ وَلَدٌ وَّ لَمۡ تَکُنۡ لَّہٗ صَاحِبَۃٌ ؕ وَ خَلَقَ کُلَّ شَیۡءٍ ۚ وَ ہُوَ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمٌ ﴿۱۰۱﴾
কানযুল ঈমান
১০১. কোন নমূনা ব্যতিরেকেই আস্মানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা; তার সন্তান হবে কোত্থেকে? অথচ তার কোন স্ত্রী নেই; এবং তিনি প্রত্যেক বস্তু সৃষ্টি করেছেন আর তিনি সবকিছু জানেন ।
ইরফানুল কুরআন
১০১. তিনিই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীকে অস্তিত্বদানকারী। আশ্চর্য! তাঁর সন্তানাদি কিভাবে হতে পারে যখন তাঁর স্ত্রী(ই) নেই? বরং তিনিই সৃষ্টি করেছেন সকল কিছু এবং তিনি সমস্ত কিছু ভালোভাবে অবগত।
আল আনআম আয়াত নং : ১০২
ذٰلِکُمُ اللّٰہُ رَبُّکُمۡ ۚ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ۚ خَالِقُ کُلِّ شَیۡءٍ فَاعۡبُدُوۡہُ ۚ وَ ہُوَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ وَّکِیۡلٌ ﴿۱۰۲﴾
কানযুল ঈমান
১০২. ইনিই আল্লাহ্, তোমাদের প্রতিপালক; তিনি ব্যতীত অন্য কারো উপাসনা নেই; সবকিছুর স্রষ্টা সুতরাং তারই ইবাদত করো । তিনি সবকিছুর রক্ষক ।
ইরফানুল কুরআন
১০২. তিনিই (আল্লাহ্,) তোমাদের প্রতিপালক। তিনি ব্যতীত উপাসনার যোগ্য কেউই নেই। (তিনিই) সকল কিছুর স্রষ্টা। সুতরাং তোমরা তাঁরই ইবাদত করো এবং তিনি সকল কিছুর রক্ষক।
আল আনআম আয়াত নং : ১০৩
لَا تُدۡرِکُہُ الۡاَبۡصَارُ ۫ وَ ہُوَ یُدۡرِکُ الۡاَبۡصَارَ ۚ وَ ہُوَ اللَّطِیۡفُ الۡخَبِیۡرُ ﴿۱۰۳﴾
কানযুল ঈমান
১০৩. চক্ষুসমূহ তাকে আয়ত্ত করতে পারে না এবং সমস্ত চক্ষু তারই আয়ত্তে রয়েছে; আর তিনিই পরিপূর্ণ সূক্ষ্মদর্শি, সম্যক পরিজ্ঞাত ।
ইরফানুল কুরআন
১০৩. দৃষ্টিসমূহ তাকে বেষ্টন করতে পারে না বরং তিনিই দৃষ্টিসমূহকে পরিবেষ্টন করে আছেন। তিনি অতিশয় সূক্ষ্মদর্শী, খুবই সচেতন।
আল আনআম আয়াত নং : ১০৪
قَدۡ جَآءَکُمۡ بَصَآئِرُ مِنۡ رَّبِّکُمۡ ۚ فَمَنۡ اَبۡصَرَ فَلِنَفۡسِہٖ ۚ وَ مَنۡ عَمِیَ فَعَلَیۡہَا ؕ وَ مَاۤ اَنَا عَلَیۡکُمۡ بِحَفِیۡظٍ ﴿۱۰۴﴾
কানযুল ঈমান
১০৪. তোমাদের নিকট, চোখ খুলে দেয় এমন প্রমাণাদি এসেছে তোমাদের প্রতিপালকের নিকট থেকে; সুতরাং যে ই দেখেছে তা তার নিজেরই মঙ্গলার্থে দেখেছে এবং যে অন্ধ হয়েছে সে নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; এবং আমি তোমাদের রক্ষক নই ।
ইরফানুল কুরআন
১০৪. নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে (হেদায়াতের) নিদর্শনাবলী এসেছে। সুতরাং যে (তার অন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমে এগুলো) প্রত্যক্ষ করে সে তার নিজের জন্যেই (করে) এবং যে অন্ধ থাকে (সেও) নিজের ক্ষতি সাধন করে। আর আমি তোমাদের রক্ষণাবেক্ষণকারী নই।
আল আনআম আয়াত নং : ১০৫
وَ کَذٰلِکَ نُصَرِّفُ الۡاٰیٰتِ وَ لِیَقُوۡلُوۡا دَرَسۡتَ وَ لِنُبَیِّنَہٗ لِقَوۡمٍ یَّعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۰۵﴾
কানযুল ঈমান
১০৫. এবং আমি এমনভবে নিদর্শনসমূহ বিভিন্ন ভাবে বর্ণনা করি এবং এই জন্য যে, কাফিরগণ বলে উঠবে, ‘আপনি তো অধ্যয়ন করেছেন, ‘ এবং এ জন্য যে, সেটাকে জ্ঞানীদের সম্মুখে সুস্পষ্ট করে দিই ।
ইরফানুল কুরআন
১০৫. আর এভাবে আমরা (আমাদের) আয়াতসমূহ পুনঃপুনঃ (বৈচিত্র্যময় শৈলীতে) বর্ণনা করি এবং তা এ জন্যে, যাতে সে সব (কাফের) বলে উঠে, ‘(তুমি তো কোনো স্থান থেকে) অধ্যয়ন করে এসেছো’। আর আমরা তা জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্যে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করি।
আল আনআম আয়াত নং : ১০৬
اِتَّبِعۡ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیۡکَ مِنۡ رَّبِّکَ ۚ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّا ہُوَ ۚ وَ اَعۡرِضۡ عَنِ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿۱۰۶﴾
কানযুল ঈমান
১০৬. সেটারই অনুসরণ করুন, যা আপনার প্রতি আপনার প্রতিপালকের নিকট থেকে ওহী হয়; তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ (উপাস্য) নেই এবং মুশরিকদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন।
ইরফানুল কুরআন
১০৬. আপনি (এ কুরআন)-এর অনুসরণ করুন যা আপনার প্রতি আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে প্রত্যাদেশ করা হয়েছে। আল্লাহ্ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই। আর আপনি মুশরিকদের থেকে দূরে থাকুন।
আল আনআম আয়াত নং : ১০৭
وَ لَوۡ شَآءَ اللّٰہُ مَاۤ اَشۡرَکُوۡا ؕ وَ مَا جَعَلۡنٰکَ عَلَیۡہِمۡ حَفِیۡظًا ۚ وَ مَاۤ اَنۡتَ عَلَیۡہِمۡ بِوَکِیۡلٍ ﴿۱۰۷﴾
কানযুল ঈমান
১০৭. আর যদি আল্লাহ্ ইচ্ছা করতেন, তবে তারা শির্ক করতো না; এবং আমি আপনাকে তাদের উপর রক্ষক করি নি; আর আপনিও তাদের উপর রক্ষক নন ।
ইরফানুল কুরআন
১০৭. আর যদি আল্লাহ্ (তাদেরকে জোরপূর্বক প্রতিহত করতে) চাইতেন, তবে তারা (কখনো) শিরক করতো না। আর আমরা না আপনাকে তাদের উপর প্রহরী নিয়োজিত করেছি আর না আপনি তাদের রক্ষাকারী।
আল আনআম আয়াত নং : ১০৮
وَ لَا تَسُبُّوا الَّذِیۡنَ یَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ فَیَسُبُّوا اللّٰہَ عَدۡوًۢا بِغَیۡرِ عِلۡمٍ ؕ کَذٰلِکَ زَیَّنَّا لِکُلِّ اُمَّۃٍ عَمَلَہُمۡ ۪ ثُمَّ اِلٰی رَبِّہِمۡ مَّرۡجِعُہُمۡ فَیُنَبِّئُہُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۰۸﴾
কানযুল ঈমান
১০৮. এবং তোমরা ঐ সবকে গালি দিও না, যে গুলোর তারা আল্লাহ্ ব্যতীত পূজা করছে; কেননা, তারা আল্লাহ্র শানে বেয়াদবী করবে সীমালঙ্ঘন ও মূর্খতাবশতঃ । এভাবে প্রত্যেক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিতে আমি তাদের কার্যকলাপকে সুশোভন করেছি; অতঃপর, তাদের প্রতিপালকের নিকট তাদেরকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে; এবং তিনি তাদেরকে বলে দেবেন যা তারা করতো ।
ইরফানুল কুরআন
১০৮. আর (হে মুসলমানগণ!) আল্লাহ্কে ছেড়ে এ সব (মুশরিকেরা) যাদের পূজা করে, তোমরা সে সব (মিথ্যা উপাস্য)-কে গালি দিও না; তাহলে সে সব লোকও (প্রতিউত্তরে) অজ্ঞতাবশত অন্যায়ভাবে আল্লাহ্র শানে গালি দেয়া শুরু করবে। এভাবে আমরা সকল সম্প্রদায়ের (ও দলের) কর্মকান্ড (তাদের চোখে) আকর্ষণীয় করে রেখেছি (এবং তারা শুধু একেই সত্য মনে করে)। অতঃপর তাদের প্রতিপালকের দিকেই সকলের প্রত্যাবর্তন। আর তিনি তাদের এমন কর্মকান্ডের পরিণতি সম্পর্কে অবগত করবেন, যা তারা সম্পন্ন করতো।
আল আনআম আয়াত নং : ১০৯
وَ اَقۡسَمُوۡا بِاللّٰہِ جَہۡدَ اَیۡمَانِہِمۡ لَئِنۡ جَآءَتۡہُمۡ اٰیَۃٌ لَّیُؤۡمِنُنَّ بِہَا ؕ قُلۡ اِنَّمَا الۡاٰیٰتُ عِنۡدَ اللّٰہِ وَ مَا یُشۡعِرُکُمۡ ۙ اَنَّہَاۤ اِذَا جَآءَتۡ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۰۹﴾
কানযুল ঈমান
১০৯. এবং তারা আল্লাহ্র নামে শপথ করেছে, নিজেদের শপথের মধ্যে পূর্ণ প্রচেষ্টা সহকারে, এ মর্মে যে, যদি তাদের নিকট কোন নিদর্শন আসে, তবে অবশ্যই যেন সেটার উপর ঈমান আনে। আপনি বলে দিন যে, নিদর্শনসমূহ তো আল্লাহ্রই নিকট; এবং তোমাদের কি জানা আছে যে, যখন সেগুলো আসবে তখন তারা ঈমান আনবে না?
ইরফানুল কুরআন
১০৯. তারা আল্লাহ্র নামে দৃঢ়ভাবে শপথ করে যে, যদি তাদের নিকট (সুস্পষ্ট) কোনো নিদর্শন আগমন করে তবে তারা এর উপর অবশ্যই ঈমান আনয়ন করবে। (তাদেরকে) বলে দিন, ‘নিদর্শনাবলী তো কেবল আল্লাহ্রই নিকট। আর (হে মুসলমানগণ!) তোমাদেরকে কীভাবে বোঝানো যাবে যে, যখন এ নিদর্শনাবলী আগমন করবে তারা (তখনও) ঈমান আনয়ন করবে না।’
আল আনআম আয়াত নং : ১১০
وَ نُقَلِّبُ اَفۡـِٕدَتَہُمۡ وَ اَبۡصَارَہُمۡ کَمَا لَمۡ یُؤۡمِنُوۡا بِہٖۤ اَوَّلَ مَرَّۃٍ وَّ نَذَرُہُمۡ فِیۡ طُغۡیَانِہِمۡ یَعۡمَہُوۡنَ ﴿۱۱۰﴾
কানযুল ঈমান
১১০. এবং আমি ফিরিয়ে দিচ্ছি তাদের অন্তরসমূহ ও নয়নসমূহকে যেমন তারা প্রথমবার ঈমান আনে নি এবং তাদেরকে ছেড়ে দিচ্ছি যেন তারা তাদের গোড়ামীতে ঘুরে বেড়ায় ।
ইরফানুল কুরআন
১১০. আমরা তাদের অন্তর ও দৃষ্টিশক্তিকে (তাদের নিজেদের মন্দ সংকল্পের কারণে সত্য গ্রহণ থেকে এমনভাবে) ঘুরিয়ে দেবো যেভাবে তারা (এ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম)-এঁর প্রতি প্রথমবার ঈমান আনয়ন করেনি। (সুতরাং তারা নিদর্শনাবলী দেখেও ঈমান আনয়ন করবে না।) আর আমরা তাদেরকে তাদের অবাধ্যতার উপর(ই) ছেড়ে দেবো যাতে তারা বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়ায়।
আল আনআম আয়াত নং : ১১১
وَ لَوۡ اَنَّنَا نَزَّلۡنَاۤ اِلَیۡہِمُ الۡمَلٰٓئِکَۃَ وَ کَلَّمَہُمُ الۡمَوۡتٰی وَ حَشَرۡنَا عَلَیۡہِمۡ کُلَّ شَیۡءٍ قُبُلًا مَّا کَانُوۡا لِیُؤۡمِنُوۡۤا اِلَّاۤ اَنۡ یَّشَآءَ اللّٰہُ وَ لٰکِنَّ اَکۡثَرَہُمۡ یَجۡہَلُوۡنَ ﴿۱۱۱﴾
কানযুল ঈমান
১১১. এবং যদি আমি তাদের প্রতি ফিরিশ্তা অবতারণ করতাম এবং তাদের সাথে মৃতরা কথা বলতো আর আমি সকল বস্তুকে তাদের সম্মুখে উঠিয়ে আন্তাম তবুও তারা ঈমান আনয়নকারী ছিলো না, কিন্তু আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে; কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই নিরেট মূর্খ।
ইরফানুল কুরআন
১১১. আর যদি আমরা তাদের প্রতি ফেরেশতা অবতীর্ণ করতাম, মৃতেরা তাদের সাথে কথা বলতে শুরু করতো এবং আমরা সকল বস্তুকে (তাদের চোখের সম্মুখে) গুচ্ছ করে উপস্থিত করতাম, তখনো তারা আল্লাহ্র ইচ্ছা ব্যতীত ঈমান আনয়ন করতো না। আর তাদের অধিকাংশই অজ্ঞতায় আচ্ছন্ন।
আল আনআম আয়াত নং : ১১২
وَ کَذٰلِکَ جَعَلۡنَا لِکُلِّ نَبِیٍّ عَدُوًّا شَیٰطِیۡنَ الۡاِنۡسِ وَ الۡجِنِّ یُوۡحِیۡ بَعۡضُہُمۡ اِلٰی بَعۡضٍ زُخۡرُفَ الۡقَوۡلِ غُرُوۡرًا ؕ وَ لَوۡ شَآءَ رَبُّکَ مَا فَعَلُوۡہُ فَذَرۡہُمۡ وَ مَا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿۱۱۲﴾
কানযুল ঈমান
১১২. এবং এরূপে, আমি প্রত্যেক নবীর শত্রু করেছি মানবকুল ও জিন্দের মধ্যেকার শয়তানকে, তাদের মধ্যে একে অপরকে প্রতারনার উদ্দেশ্যে বানোয়াট কথাবার্তার প্ররোচিত করে আর আপনার প্রতিপালক ইচ্ছা করলে তারা এমন করতো না । সুতরাং তাদেরকে তাদের মিথ্যা রচনার উপর ছেড়ে দিন ।
ইরফানুল কুরআন
১১২. আর এভাবে আমরা প্রত্যেক নবীর জন্যে মানুষ ও জ্বিনের মধ্য থেকে শয়তানদেরকে দুশমন বানিয়ে দেই, যারা ধোঁকা দেয়ার জন্যে একে অপরের অন্তরে চমকপ্রদ (তোষামোদপূর্ণ) কথাবার্তা নিক্ষেপ করতে থাকে। আর যদি আপনার প্রতিপালক (তাদেরকে জোরপূর্বক প্রতিহত করতে) চাইতেন, (তবে) তারা এমনটি করতো না। সুতরাং আপনি তাদেরকে(ও) ছেড়ে দিন এবং তারা যা কিছু মিথ্যা অপবাদ রচনা করে (তাও)।
আল আনআম আয়াত নং : ১১৩
وَ لِتَصۡغٰۤی اِلَیۡہِ اَفۡـِٕدَۃُ الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡاٰخِرَۃِ وَ لِیَرۡضَوۡہُ وَ لِیَقۡتَرِفُوۡا مَا ہُمۡ مُّقۡتَرِفُوۡنَ ﴿۱۱۳﴾
কানযুল ঈমান
১১৩. এবং এ জন্য যে, সেই দিকে তাদেরই অন্তর ঝুকবে, যাদের পরকালের উপর ঈমান নেই এবং সেটাকে পছন্দ করবে ও পাপ অর্জন করবে, যা তাদের অর্জন করার রয়েছে ।
ইরফানুল কুরআন
১১৩. আর (এর) উদ্দেশ্য হলো যাতে সেসব লোকের অন্তর এ (প্রতারণার) দিকে ধাবিত হয় যারা পরকালের উপর ঈমান রাখে না, আর (এই) যে তারা একে পছন্দ করতে শুরু করে এবং (এ জন্যেও) যাতে তারা (সে সব মন্দ কাজে) লিপ্ত হয় যেগুলোতে তারা নিজেরা (লিপ্ত) রয়েছে।
আল আনআম আয়াত নং : ১১৪
اَفَغَیۡرَ اللّٰہِ اَبۡتَغِیۡ حَکَمًا وَّ ہُوَ الَّذِیۡۤ اَنۡزَلَ اِلَیۡکُمُ الۡکِتٰبَ مُفَصَّلًا ؕ وَ الَّذِیۡنَ اٰتَیۡنٰہُمُ الۡکِتٰبَ یَعۡلَمُوۡنَ اَنَّہٗ مُنَزَّلٌ مِّنۡ رَّبِّکَ بِالۡحَقِّ فَلَا تَکُوۡنَنَّ مِنَ الۡمُمۡتَرِیۡنَ ﴿۱۱۴﴾
কানযুল ঈমান
১১৪. তবে কি আমি আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো মীমাংসা চাইবো? এবং তিনিই হন, যিনি তোমাদের প্রতি বিশদভাবে কিতাব অবতীর্ন করেছেন; আর যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তারা জানে যে, এটা তোমার প্রতিপালকের নিকট থেকে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে । সুতরাং হে শ্রোতা! তুমি কখনো সন্দিহানদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না ।
ইরফানুল কুরআন
১১৪. (বলে দিন,) ‘আমি কি আল্লাহ্ ব্যতীত অপর কাউকে নির্দেশদাতা (ও বিচারক) হিসেবে অন্বেষণ করবো, অথচ তিনিই (অর্থাৎ আল্লাহ্ই) তোমাদের নিকট বিশদ বর্ণিত (অর্থাৎ সুস্পষ্ট কার্যপ্রণালীকে অন্তর্ভুক্ত করে এমন) কিতাব অবতীর্ণ করেছেন?’ আর যে সমস্ত লোকদেরকে আমরা (পূর্বে) কিতাব দিয়েছিলাম তারা (মনেপ্রাণে) জানে যে, এ (কুরআন) আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে সত্যের উপর (ভিত্তি করে) অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং (তারা কুরআনকে ওহী হিসেবে জানুক বা না জানুক) আপনি (সে সব আহলে কিতাবের ব্যাপারে) সন্দেহ পোষণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না ।
আল আনআম আয়াত নং : ১১৫
وَ تَمَّتۡ کَلِمَتُ رَبِّکَ صِدۡقًا وَّ عَدۡلًا ؕ لَا مُبَدِّلَ لِکَلِمٰتِہٖ ۚ وَ ہُوَ السَّمِیۡعُ الۡعَلِیۡمُ ﴿۱۱۵﴾
কানযুল ঈমান
১১৫. এবং তোমার প্রতিপালকের বাণি পরিপূর্ণ হয়েছে সত্য ও ন্যায়ের দিক দিয়ে । তার বাণীগুলোর কেউ পরিবর্তনকারী নেই এবং তিনিই শ্রবণকারী, জ্ঞানী ।
ইরফানুল কুরআন
১১৫. আপনার প্রতিপালকের বাণী সত্য ও ন্যায়ের দিক থেকে সম্পূর্ণ। এমন কেউই নেই যে তাঁর বাণী পরিবর্তন করতে পারে। আর তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
আল আনআম আয়াত নং : ১১৬
وَ اِنۡ تُطِعۡ اَکۡثَرَ مَنۡ فِی الۡاَرۡضِ یُضِلُّوۡکَ عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ ؕ اِنۡ یَّتَّبِعُوۡنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنۡ ہُمۡ اِلَّا یَخۡرُصُوۡنَ ﴿۱۱۶﴾
কানযুল ঈমান
১১৬. এবং হে শ্রোতা, ভূ-পৃষ্ঠে অধিকাংশ লোক এমনই রয়েছে যে, যদি তুমি তাদের কথা মতো চলো, তবে তারা তোমাকে আল্লাহ্র পথে থেকে বিচ্যুত করে ফেলবে। তারা তো শুধু অনুমানের পেছনে রয়েছে এবং নিরেট কল্পনার ঘোড়া দৌড়াচ্ছে ।
ইরফানুল কুরআন
১১৬. আর (হে শ্রোতা!) যদি তুমি ভুপৃষ্ঠে (অবস্থানরত) অধিকাংশের কথা মেনে নাও তবে তারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ থেকে বিচ্যুত করবে। তারা (সত্য ও দৃঢ় বিশ্বাসের পরিবর্তে) কেবল ধারণা ও অনুমানের অনুসরণ করে এবং কেবল ভুল অনুমানে (এবং মিথ্যা কথাবার্তায়) নিমজ্জিত থাকে।
আল আনআম আয়াত নং : ১১৭
اِنَّ رَبَّکَ ہُوَ اَعۡلَمُ مَنۡ یَّضِلُّ عَنۡ سَبِیۡلِہٖ ۚ وَ ہُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُہۡتَدِیۡنَ ﴿۱۱۷﴾
কানযুল ঈমান
১১৭. তোমার প্রতিপালক ভালোভাবে জানেন তার পথ থেকে কে বিপথগামী হয়েছে এবং তিনি জানেন সৎপথ-প্রাপ্তদেরকে ।
ইরফানুল কুরআন
১১৭. নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত ব্যক্তির ব্যাপারে অধিকতর অবগত এবং তিনিই হেদায়াতপ্রাপ্ত লোকদের ব্যাপারে(ও) সম্যক অবহিত।
আল আনআম আয়াত নং : ১১৮
فَکُلُوۡا مِمَّا ذُکِرَ اسۡمُ اللّٰہِ عَلَیۡہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ بِاٰیٰتِہٖ مُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۱۸﴾
কানযুল ঈমান
১১৮. সুতরাং তোমরা আহার করো তা থেকে, যার উপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারন করা হয়েছে, যদি তোমরা তার নিদর্শনসমূহ মান্য করো ।
ইরফানুল কুরআন
১১৮. সুতরাং তোমরা এ (যবাইকৃত প্রাণী) থেকে ভক্ষণ করো, (যবাইয়ের কালে) যার উপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করা হয়েছে; যদি তোমরা তাঁর আয়াতসমূহের উপর ঈমান আনয়নকারী হও।
আল আনআম আয়াত নং : ১১৯
وَ مَا لَکُمۡ اَلَّا تَاۡکُلُوۡا مِمَّا ذُکِرَ اسۡمُ اللّٰہِ عَلَیۡہِ وَ قَدۡ فَصَّلَ لَکُمۡ مَّا حَرَّمَ عَلَیۡکُمۡ اِلَّا مَا اضۡطُرِرۡتُمۡ اِلَیۡہِ ؕ وَ اِنَّ کَثِیۡرًا لَّیُضِلُّوۡنَ بِاَہۡوَآئِہِمۡ بِغَیۡرِ عِلۡمٍ ؕ اِنَّ رَبَّکَ ہُوَ اَعۡلَمُ بِالۡمُعۡتَدِیۡنَ ﴿۱۱۹﴾
কানযুল ঈমান
১১৯. তোমাদের কী হয়েছে যে, তা থেকে আহার করছোনা, যার উপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করা হয়েছে? তিনি তো তোমাদের নিকট বিশদভাবে বিবৃত করেছেন যা কিছু তোমাদের উপর হারাম হয়েছে, কিন্তু যখন তোমরা তাঁতে নিরুপায় হও; এবং নিঃসন্দেহে অনেকে নিজেদের খেয়াল খুশী দ্বারা বিপথগামী করে দেয় অজ্ঞানবশতঃ; নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক সীমালঙ্গনকারীদেরকে খুব জানেন।
ইরফানুল কুরআন
১১৯. আর তোমাদের কী হলো যে, তোমরা এ (যবাইকৃত প্রাণী) থেকে ভক্ষণ করো না, (যবাই করার সময়) যার উপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করা হয়েছে? (কোনো কারণ ব্যতিরেকেই এমন হালাল প্রাণীকে তোমরা হারাম সাব্যস্ত করছো) অথচ তিনি তোমাদের উপর হারামকৃত (সব) বিষয় তোমাদের জন্যে বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন; তবে এ (অবস্থা) ব্যতীত যে, তোমরা (নিরূপায় অবস্থায় কেবল প্রাণ রক্ষা হয় এমন পরিমাণ ভক্ষণে) চূড়ান্ত বাধ্য হও। (সুতরাং এখন তোমরা নিজের পক্ষ থেকে আর কোনো বস্তুকে হারাম সাব্যস্ত করো না।) নিশ্চয় অনেক লোক (পরিপক্ক) জ্ঞান ব্যতীত নিজেদের কুপ্রবৃত্তির (এবং মনগড়া চিন্তাচেতনার) মাধ্যমে (মানুষকে) বিভ্রান্ত করছে। আর অবশ্যই আপনার প্রতিপালক সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে ভালোভাবে জানেন।
আল আনআম আয়াত নং : ১২০
وَ ذَرُوۡا ظَاہِرَ الۡاِثۡمِ وَ بَاطِنَہٗ ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ یَکۡسِبُوۡنَ الۡاِثۡمَ سَیُجۡزَوۡنَ بِمَا کَانُوۡا یَقۡتَرِفُوۡنَ ﴿۱۲۰﴾
কানযুল ঈমান
১২০. এবং ছেড়ে দাও প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য পাপ; ঐসব লোক, যারা পাপার্জন করে, অবিলম্বে তাদের কৃতকর্মের শাস্তি পাবে ।
ইরফানুল কুরআন
১২০. আর প্রকাশ্য ও গোপন (উভয় প্রকারের) পাপ বর্জন করো। নিশ্চয়ই যারা পাপ করে অচিরেই তাদেরকে তাদের (মন্দ) কৃতকর্মের জন্যে শাস্তি দেয়া হবে।
আল আনআম আয়াত নং : ১২১
وَ لَا تَاۡکُلُوۡا مِمَّا لَمۡ یُذۡکَرِ اسۡمُ اللّٰہِ عَلَیۡہِ وَ اِنَّہٗ لَفِسۡقٌ ؕ وَ اِنَّ الشَّیٰطِیۡنَ لَیُوۡحُوۡنَ اِلٰۤی اَوۡلِیٰٓئِہِمۡ لِیُجَادِلُوۡکُمۡ ۚ وَ اِنۡ اَطَعۡتُمُوۡہُمۡ اِنَّکُمۡ لَمُشۡرِکُوۡنَ ﴿۱۲۱﴾
কানযুল ঈমান
১২১. এবং সেটা আহার করোনা, যার উপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করা হয়নি এবং সেটা নিশ্চয় নির্দেশ অমান্য করা এবং নিশ্চয় শয়তান স্বীয় বন্ধুদের অন্তরে এ প্ররোচনা দেয় যেন তোমাদের সাথে বিবাদ করে এবং তোমরা যদি তাদের কথা মান্য করো তবে তখন তোমরা অংশীবাদী হবে ।
ইরফানুল কুরআন
১২১. আর তোমরা সে সব (প্রাণীর মাংস) ভক্ষণ করো না, (যবাই করার সময়) যার উপর আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করা হয়নি এবং এ (মাংস ভক্ষণ করা) অবশ্যই পাপ। আর নিশ্চয়ই শয়তানেরা তাদের বন্ধুদের অন্তরে (কুমন্ত্রণা) ঢেলে দেয়, যাতে তারা তোমাদের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। আর যদি তোমরা তাদের কথায় চলো, (তবে) তোমরাও মুশরিক হয়ে যাবে।
আল আনআম আয়াত নং : ১২২
اَوَ مَنۡ کَانَ مَیۡتًا فَاَحۡیَیۡنٰہُ وَ جَعَلۡنَا لَہٗ نُوۡرًا یَّمۡشِیۡ بِہٖ فِی النَّاسِ کَمَنۡ مَّثَلُہٗ فِی الظُّلُمٰتِ لَیۡسَ بِخَارِجٍ مِّنۡہَا ؕ کَذٰلِکَ زُیِّنَ لِلۡکٰفِرِیۡنَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۲۲﴾
কানযুল ঈমান
১২২. এবং যে ব্যক্তি মৃত ছিলো, অতঃপর আমি তাকে জীবিত করেছি এবং তার জন্য একটা আলো সৃষ্টি করে দিয়েছি, যা দ্বারা সে মানুষের মধ্যে চলাফেরা করে সে কি ঐ ব্যক্তির ন্যায় হয়ে যাবে, যে অন্ধকাররাজিতে রয়েছে, তা থেকে বের হবার নয়? এভাবে কাফিরদের দৃষ্টিতে তাদের কৃতকর্মসমূহ শোভন করে দেয়া হয়েছে ।
ইরফানুল কুরআন
১২২. আশ্চর্য! যে ব্যক্তি মৃত (অর্থাৎ ঈমান থেকে বঞ্চিত) ছিল, অতঃপর আমরা তাকে (হেদায়াতের বদৌলতে) জীবিত করলাম এবং তার জন্যে (ঈমান ও মারিফাতের) আলোও সৃষ্টি করে দিলাম, যার মাধ্যমে সে (এখন অন্যান্য) লোকদের মাঝেও (আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্যে) বিচরণ করে; সে কি ওই ব্যক্তির মত হতে পারে যে (অজ্ঞতা ও গোমরাহীর) অন্ধকারে (এমনভাবে বেষ্টিত হয়ে) পড়ে আছে যা থেকে সে বেরই হতে পারছে না? এভাবে কাফেরদের জন্যে তাদের কৃতকর্মকে (তাদের দৃষ্টিতে) মনোমুগ্ধকর করে দেখানো হয়।
আল আনআম আয়াত নং : ১২৩
وَ کَذٰلِکَ جَعَلۡنَا فِیۡ کُلِّ قَرۡیَۃٍ اَکٰبِرَ مُجۡرِمِیۡہَا لِیَمۡکُرُوۡا فِیۡہَا ؕ وَ مَا یَمۡکُرُوۡنَ اِلَّا بِاَنۡفُسِہِمۡ وَ مَا یَشۡعُرُوۡنَ ﴿۱۲۳﴾
কানযুল ঈমান
১২৩. এবং সেভাবে, প্রত্যেক জনপদে আমি সেটার অপরাধীদের সর্দার করেছি, যেন তারা সেখানে চক্রান্ত করে । আর, তারা চক্রান্ত করে না কিন্তু নিজেদের আত্নার বিরুদ্ধে; এবং তাদের উপলব্ধি নেই।
ইরফানুল কুরআন
১২৩. আর এভাবেই আমরা প্রত্যেক জনপদে নৃপতিদেরকে (ও গণ্যমান্যদেরকে) সেখানকার অপরাধের প্রধান হোতা বানিয়েছি, যাতে তারা (সেই জনপদে) চক্রান্তে লিপ্ত হয়। আর (প্রকৃতপক্ষে) তারা নিজেদের ব্যতীত (অন্য) কারো সাথে প্রতারণায় লিপ্ত হয় না এবং তারা (তাদের মন্দ কাজের পরিণতির) উপলব্ধি করে না।
আল আনআম আয়াত নং : ১২৪
وَ اِذَا جَآءَتۡہُمۡ اٰیَۃٌ قَالُوۡا لَنۡ نُّؤۡمِنَ حَتّٰی نُؤۡتٰی مِثۡلَ مَاۤ اُوۡتِیَ رُسُلُ اللّٰہِ ؕۘؔ اَللّٰہُ اَعۡلَمُ حَیۡثُ یَجۡعَلُ رِسَالَتَہٗ ؕ سَیُصِیۡبُ الَّذِیۡنَ اَجۡرَمُوۡا صَغَارٌ عِنۡدَ اللّٰہِ وَ عَذَابٌ شَدِیۡدٌۢ بِمَا کَانُوۡا یَمۡکُرُوۡنَ ﴿۱۲۴﴾
কানযুল ঈমান
১২৪. এবং যখন তাদের নিকট কোন নিদর্শন আসে তখন বলে, ‘আমরা কখনো ঈমান আনবো না যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদেরকেও তেমনি দেওয়া হবে না, যেমন আল্লাহ্র রসূলগণকে দেওয়া হয়েছে; আল্লাহ্ ভালো জানেন কোথায় আপন রিসালতকে স্থাপন করবেন; অনতিবিলম্বে অপরাধীদের প্রতি আল্লাহ্র নিকট লাঞ্ছনা পৌঁছাবে এবং কঠোর শাস্তি, তাদের চক্রান্তের বদলা হিসেবে ।
ইরফানুল কুরআন
১২৪. আর যখন তাদের নিকট কোনো নিদর্শন আসে (তখন) তারা বলে, ‘আমরা কখনো ঈমান আনবো না যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদেরকেও এমনই (নিদর্শন) দেয়া হয়, যেভাবে আল্লাহ্র রাসূলগণকে প্রদান করা হয়েছিল।’ আল্লাহ্ খুব ভালোভাবেই জানেন কার প্রতি নিজ রিসালাতের দায়িত্ব-ভার অর্পন করবেন। অচিরেই আল্লাহ্র সমীপে অপরাধীরা লাঞ্ছিত হবে এবং কঠিন শাস্তিও (মিলবে), কারণ, তারা চক্রান্ত (ও ধোঁকাবাজী) করতো।
আল আনআম আয়াত নং : ১২৫
فَمَنۡ یُّرِدِ اللّٰہُ اَنۡ یَّہۡدِیَہٗ یَشۡرَحۡ صَدۡرَہٗ لِلۡاِسۡلَامِ ۚ وَ مَنۡ یُّرِدۡ اَنۡ یُّضِلَّہٗ یَجۡعَلۡ صَدۡرَہٗ ضَیِّقًا حَرَجًا کَاَنَّمَا یَصَّعَّدُ فِی السَّمَآءِ ؕ کَذٰلِکَ یَجۡعَلُ اللّٰہُ الرِّجۡسَ عَلَی الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۲۵﴾
কানযুল ঈমান
১২৫. এবং যাকে আল্লাহ্ সৎপথ দেখাতে চান তার বক্ষদেশকে ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দেন আর যাকে পথভ্রষ্ট করতে চান তার বক্ষকে সংকীর্ণ, খুব সংকোচিত করে দেন, যেন (সে) কারো দ্বারা জোরপূর্বক আস্মানের উপর আরোহন করছে । আল্লাহ্ এরূপে শাস্তি আপতিত করেন তাদের উপর, যারা ঈমান আনে না ।
ইরফানুল কুরআন
১২৫. অতঃপর আল্লাহ্ যাকে (অনুগ্রহবশত) হেদায়াত দানের ইচ্ছা করেন তার অন্তরকে ইসলামের জন্যে প্রশস্ত করে দেন এবং যাকে (স্বীয়) গোমরাহীর উপরই রেখে দিতে চান (যথার্থ বিচারের ভিত্তিতে) তিনি তার অন্তরকে (এতোই) সংকুচিত করে দেন যে, সে যেন কষ্টেসৃষ্টে আসমানে (অর্থাৎ উপরের দিকে) আরোহণ করছে; এভাবেই আল্লাহ্ তাদের প্রতি (অপমানের) শাস্তি আপতিত করেন, যারা ঈমান আনয়ন করে না।
আল আনআম আয়াত নং : ১২৬
وَ ہٰذَا صِرَاطُ رَبِّکَ مُسۡتَقِیۡمًا ؕ قَدۡ فَصَّلۡنَا الۡاٰیٰتِ لِقَوۡمٍ یَّذَّکَّرُوۡنَ ﴿۱۲۶﴾
কানযুল ঈমান
১২৬. এবং এটা আপনার প্রতিপালকের সরল পথ । আমি আয়াতগুলোকে বিশদভাবে বিবৃত করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্য ।
ইরফানুল কুরআন
১২৬. আর এ (ইসলাম) তোমাদের পালনকর্তার (একমাত্র) সরল পথ। নিশ্চয় আমরা তাদের জন্যে আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেছি যারা উপদেশ গ্রহণ করে।
আল আনআম আয়াত নং : ১২৭
لَہُمۡ دَارُ السَّلٰمِ عِنۡدَ رَبِّہِمۡ وَ ہُوَ وَلِیُّہُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۲۷﴾
কানযুল ঈমান
১২৭. তাদের জন্য নিরাপত্তার ঘর রয়েছে তাদের প্রতিপালকের নিকট এবং তিনি তাদের প্রভু হন । এটা তাদের কৃতকর্মের ফল ।
ইরফানুল কুরআন
১২৭. তাদের জন্যে তাদের প্রতিপালকের সমীপে রয়েছে শান্তি ও নিরাপত্তার আবাস। আর তাদের কৃত সৎকর্মের কারণে তিনিই তাদের অভিভাবক।
আল আনআম আয়াত নং : ১২৮
وَ یَوۡمَ یَحۡشُرُہُمۡ جَمِیۡعًا ۚ یٰمَعۡشَرَ الۡجِنِّ قَدِ اسۡتَکۡثَرۡتُمۡ مِّنَ الۡاِنۡسِ ۚ وَ قَالَ اَوۡلِیٰٓؤُہُمۡ مِّنَ الۡاِنۡسِ رَبَّنَا اسۡتَمۡتَعَ بَعۡضُنَا بِبَعۡضٍ وَّ بَلَغۡنَاۤ اَجَلَنَا الَّذِیۡۤ اَجَّلۡتَ لَنَا ؕ قَالَ النَّارُ مَثۡوٰىکُمۡ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَاۤ اِلَّا مَا شَآءَ اللّٰہُ ؕ اِنَّ رَبَّکَ حَکِیۡمٌ عَلِیۡمٌ ﴿۱۲۸﴾
কানযুল ঈমান
১২৮. এবং যেদিন তিনি তাদের সবাইকে উঠাবেন আর বলবেন, ‘হে জিন্ সম্প্রদায়! তোমরা অনেক মানুষকে পরিবেষ্টিত করে নিয়েছো’ এবং তাদের বন্ধু মানুষগণ আরয করবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের মধ্যে একে অপরের দ্বারা লাভবান হয়েছে এবং আমরা আমাদের ঐ সময়সীমায় পৌছে গেছি যা আপনি আমাদের জন্য নির্ধারন করেছেন’। (আল্লাহ্) বলবেন, ‘আগুন তোমাদের ঠিকানা, সর্বদা সেটার মধ্যে থাকো; কিন্তু যাকে আল্লাহ্ চান । হে মাহ্বূব! নিঃসন্দেহে আপনার প্রতিপালক প্রজ্ঞাময়, জ্ঞানী ।
ইরফানুল কুরআন
১২৮. আর যেদিন তিনি তাদের সবাইকে একত্রিত করবেন (তখন বলবেন), ‘হে জ্বিন সম্প্রদায়! (অর্থাৎ শয়তান,) নিশ্চয়ই তোমরা অনেক মানুষকে পথভ্রষ্ট করেছিলে।’ আর মানব সম্প্রদায় থেকে তাদের বন্ধুরা বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা একে অপরের দ্বারা (যথেষ্ট) লাভবান হয়েছি এবং (এমন উদাসীনতা ও উপভোগে) আমরা আমাদের সে সময়সীমায় পৌঁছে গিয়েছি যা তুমি আমাদের জন্যে নির্ধারণ করে রেখেছিলে।’ (কিন্তু আমরা এর জন্যে কোনো প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারিনি।) আল্লাহ্ বলবেন, ‘(এখন) জাহান্নামই তোমাদের ঠিকানা, আল্লাহ্ অন্য রকম ইচ্ছে না করলে চিরকাল এতেই থাকবে।’ নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক প্রজ্ঞাবান, সর্বজ্ঞ।
আল আনআম আয়াত নং : ১২৯
وَ کَذٰلِکَ نُوَلِّیۡ بَعۡضَ الظّٰلِمِیۡنَ بَعۡضًۢا بِمَا کَانُوۡا یَکۡسِبُوۡنَ ﴿۱۲۹﴾
কানযুল ঈমান
১২৯. এবং এরূপেই আমি যালিমদের এক দলকে অন্য দলের উপর আধিপত্য দিয়ে থাকি তাদের কৃতকর্মের বদলা স্বরূপ ।
ইরফানুল কুরআন
১২৯. এভাবে আমরা যালিমদের মধ্যে একদলকে অন্য দলের উপর প্রবল করে দেই, তাদের উপার্জিত (মন্দ) কর্মের কারণে।
আল আনআম আয়াত নং : ১৩০
یٰمَعۡشَرَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ اَلَمۡ یَاۡتِکُمۡ رُسُلٌ مِّنۡکُمۡ یَقُصُّوۡنَ عَلَیۡکُمۡ اٰیٰتِیۡ وَ یُنۡذِرُوۡنَکُمۡ لِقَآءَ یَوۡمِکُمۡ ہٰذَا ؕ قَالُوۡا شَہِدۡنَا عَلٰۤی اَنۡفُسِنَا وَ غَرَّتۡہُمُ الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا وَ شَہِدُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِہِمۡ اَنَّہُمۡ کَانُوۡا کٰفِرِیۡنَ ﴿۱۳۰﴾
কানযুল ঈমান
১৩০. হে জিন ও মানব সম্প্রদায়! তোমাদের নিকট কি তোমাদের মধ্য থেকে রসূলগণ আসেন নি, যারা তোমাদের উপর আমার আয়াতসমূহ পাঠ করতেন এবং তোমাদেরকে এ দিনের সাক্ষাৎ সম্বন্ধে সতর্ক করতেন? (তারা) বলবে, ‘আমরা আমাদের আত্নাগুলোর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছি; এবং তাদেরকে পার্থিব জীবন প্রতারিত করেছে এবং নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে যে, তারা কাফির ছিলো ।
ইরফানুল কুরআন
১৩০. হে জ্বিন ও মানব সম্প্রদায়! তোমাদের নিকট কি তোমাদেরই মধ্য থেকে রাসূলগণ আগমন করেননি, যাঁরা তোমাদের নিকট আমার আয়াতসমূহ বর্ণনা করতেন এবং তোমাদেরকে এ দিনে (আমার সম্মুখে) উপস্থিতির ব্যাপারে সতর্ক করতেন? (তখন) তারা বলবে, ‘আমরাই আমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিচ্ছি’। তাদেরকে পার্থিব জীবন ধোঁকায় নিমজ্জিত রেখেছিল এবং তারা তাদের নিজেদের বিরুদ্ধে (এ বিষয়ে) সাক্ষ্য দেবে যে, তারা (পৃথিবীতে সত্য অস্বীকারকারী) কাফের ছিল।
আল আনআম আয়াত নং : ১৩১
ذٰلِکَ اَنۡ لَّمۡ یَکُنۡ رَّبُّکَ مُہۡلِکَ الۡقُرٰی بِظُلۡمٍ وَّ اَہۡلُہَا غٰفِلُوۡنَ ﴿۱۳۱﴾
কানযুল ঈমান
১৩১. এটা এ জন্য যে, তোমার প্রতিপালক বস্তিগুলোকে যুলুমের কারণে ধ্বংস করেন না, যখন সেগুলোর অধিবাসীরা অনবহিত থাকে ।
ইরফানুল কুরআন
১৩১. এ (রাসূলগণের প্রেরণ) এজন্যে ছিল যে, আপনার প্রতিপালক জনপদগুলোকে যুলুমের কারণে সে অবস্থায় ধ্বংস করবেন না যেখানে এর অধিবাসীরা (সত্যের শিক্ষা থেকে সম্পূর্ণরূপে) অনবহিত (অর্থাৎ তাদেরকে কেউই সত্য সম্পর্কে অবগত করেনি)।
আল আনআম আয়াত নং : ১৩২
وَ لِکُلٍّ دَرَجٰتٌ مِّمَّا عَمِلُوۡا ؕ وَ مَا رَبُّکَ بِغَافِلٍ عَمَّا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۳۲﴾
কানযুল ঈমান
১৩২. এবং প্রত্যেকের জন্য তাদের কৃতকর্মের ফলশ্রুতিতে মর্যাদার স্তরসমূহ রয়েছে আর তোমার প্রতিপালক তাদের কৃতকার্যাদি সম্পর্কে গাফিল নন।
ইরফানুল কুরআন
১৩২. আর প্রত্যেকের জন্যে তাদের কর্মকান্ড অনুসারে মর্যাদার স্তরসমূহ (নির্ধারিত) রয়েছে। আর আপনার প্রতিপালক সেসব কর্মকান্ড অনবগত নন যা তারা সম্পাদন করছে।
আল আনআম আয়াত নং : ১৩৩
وَ رَبُّکَ الۡغَنِیُّ ذُو الرَّحۡمَۃِ ؕ اِنۡ یَّشَاۡ یُذۡہِبۡکُمۡ وَ یَسۡتَخۡلِفۡ مِنۡۢ بَعۡدِکُمۡ مَّا یَشَآءُ کَمَاۤ اَنۡشَاَکُمۡ مِّنۡ ذُرِّیَّۃِ قَوۡمٍ اٰخَرِیۡنَ ﴿۱۳۳﴾ؕ
কানযুল ঈমান
১৩৩. এবং হে মাহ্বূব! আপনার প্রতিপালক বেপরোয়া দয়াশীল । হে লোকেরা! তিনি ইচ্ছা করলে তোমাদেরকে অপসারিত করতে পারেন এবং যাকে চান তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করতে পারেন, যেমনিভাবে তোমাদেরকে অন্যান্যদের বংশ থেকে সৃষ্টি করেছেন ।
ইরফানুল কুরআন
১৩৩. আর আপনার প্রতিপালক অমুখাপেক্ষী, (অসীম) দয়ালু। যদি তিনি চান তবে তোমাদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন এবং তোমাদের পর যাদেরকে চান (তোমাদের) স্থলাভিষিক্ত করবেন, যেমন তিনি অন্যান্য মানব সম্প্রদায়ের বংশধর থেকে তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন।
আল আনআম আয়াত নং : ১৩৪
اِنَّ مَا تُوۡعَدُوۡنَ لَاٰتٍ ۙ وَّ مَاۤ اَنۡتُمۡ بِمُعۡجِزِیۡنَ ﴿۱۳۴﴾
কানযুল ঈমান
১৩৪. নিশ্চয় তোমাদেরকে যেটার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে তা অবশ্যই আগমনকারী এবং তোমরা ব্যর্থ করতে পারো না ।
ইরফানুল কুরআন
১৩৪. নিশ্চয়ই তোমাদের সাথে কৃত (শাস্তির) অঙ্গীকার অবশ্যম্ভাবী এবং তোমরা (আল্লাহ্কে) দুর্বল করতে পারবে না।
আল আনআম আয়াত নং : ১৩৫
قُلۡ یٰقَوۡمِ اعۡمَلُوۡا عَلٰی مَکَانَتِکُمۡ اِنِّیۡ عَامِلٌ ۚ فَسَوۡفَ تَعۡلَمُوۡنَ ۙ مَنۡ تَکُوۡنُ لَہٗ عَاقِبَۃُ الدَّارِ ؕ اِنَّہٗ لَا یُفۡلِحُ الظّٰلِمُوۡنَ ﴿۱۳۵﴾
কানযুল ঈমান
১৩৫. বলুন, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আপন স্থানে কাজ করতে থাকো, আমিও আমার কাজ করছি । সুতরাং এখন তোমরা জানতে চাচ্ছো কার জন্য থাকছে আখিরাতের ঘর; নিঃসন্দেহে যালিম সাফল্য পায় না’।
ইরফানুল কুরআন
১৩৫. বলে দিন, ‘হে (আমার) সম্প্রদায়! তোমরা নিজ নিজ অবস্থানে আমল করতে থাকো, আর অবশ্যই আমি (আমার অবস্থানে) আমল করছি। অতঃপর তোমরা অচিরেই জানবে যে, পরকালের পরিণতি কার জন্যে (উত্তম)। নিঃসন্দেহে অত্যাচারীরা রক্ষা পাবে না।’
আল আনআম আয়াত নং : ১৩৬
وَ جَعَلُوۡا لِلّٰہِ مِمَّا ذَرَاَ مِنَ الۡحَرۡثِ وَ الۡاَنۡعَامِ نَصِیۡبًا فَقَالُوۡا ہٰذَا لِلّٰہِ بِزَعۡمِہِمۡ وَ ہٰذَا لِشُرَکَآئِنَا ۚ فَمَا کَانَ لِشُرَکَآئِہِمۡ فَلَا یَصِلُ اِلَی اللّٰہِ ۚ وَ مَا کَانَ لِلّٰہِ فَہُوَ یَصِلُ اِلٰی شُرَکَآئِہِمۡ ؕ سَآءَ مَا یَحۡکُمُوۡنَ ﴿۱۳۶﴾
কানযুল ঈমান
১৩৬. এবং আল্লাহ্ যে ক্ষেত ও গবাদি পশু সৃষ্টি করেছেন, সেটার মধ্যে তারা তাকে একটা অংশের প্রাপক সাব্যস্ত করেছে, তখন বললো, ‘এটা আল্লাহ্রই, তাদের ধারণার মধ্যে এবং এটা আমাদের শরীকদের (দেবতার)’। সুতরাং সেটা, যা তাদের শরীকদের জন্য, তাতো আল্লাহ্র কাছে পৌছে না এবং যা আল্লাহ্র জন্যই তা তাদের শরীকদের নিকট পৌছে । তারা কতোই মন্দ ফয়সালা দিচ্ছে ।
ইরফানুল কুরআন
১৩৬. তারা আল্লাহ্র জন্যে সেসব (বস্তু) থেকে একটি অংশ নির্ধারণ করে থাকে, যেগুলোকে তিনি শষ্যক্ষেত্র এবং গবাদিপশু থেকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তারা নিজেদের (ভ্রান্ত) ধারণায় বলে, ‘এ অংশটি আল্লাহ্র জন্যে এবং সেটি আমাদের (তথা-কথিত) অংশীদারদের জন্যে’। অতঃপর যা তাদের অংশীদারদের জন্যে, তা আল্লাহ্ পর্যন্ত পৌঁছে না এবং যা আল্লাহ্র জন্যে তা তাদের অংশীদার পর্যন্ত পৌঁছে। (তারা) কতোই না নিকৃষ্ট ফায়সালা করছে!
আল আনআম আয়াত নং : ১৩৭
وَ کَذٰلِکَ زَیَّنَ لِکَثِیۡرٍ مِّنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ قَتۡلَ اَوۡلَادِہِمۡ شُرَکَآؤُہُمۡ لِیُرۡدُوۡہُمۡ وَ لِیَلۡبِسُوۡا عَلَیۡہِمۡ دِیۡنَہُمۡ ؕ وَ لَوۡ شَآءَ اللّٰہُ مَا فَعَلُوۡہُ فَذَرۡہُمۡ وَ مَا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿۱۳۷﴾
কানযুল ঈমান
১৩৭. এবং এরূপে বহু অংশীবাদীর দৃষ্টিতে তাদের শরীকগণ সন্তান হত্যাকে শোভন করে দেখিয়েছে যেন তাদেরকে ধ্বংস কর দেয় এবং তাদের ধর্মকে তাদের নিকট সন্দেহপূর্ণ করে তোলে; এবং আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে তারা এমন করতো না । সুতরাং আপনি তাদেরকে ছেড়ে দিন তারা থাকুক আর তাদের মিথ্যা রচনা ।
ইরফানুল কুরআন
১৩৭. আর এভাবে তাদের দেবতাগণ অনেক মুশরিককে নিজ সন্তানদের হত্যা করাকে (তাদের দৃষ্টিতে) শোভনীয় করে দিয়েছে, যাতে তারা তাদেরকে ধ্বংস করে এবং যেন তাদের (পরবর্তী প্রজন্ম)-কে তাদের ধর্ম সম্পর্কে(ও) বিভ্রান্ত করে তোলে। আর যদি আল্লাহ্ (তাদেরকে জোরপূর্বক প্রতিহত করতে) চাইতেন, তবে তারা এমনটি করতে পারতো না। সুতরাং আপনি তাদেরকে এবং তারা যে মিথ্যা উদ্ভাবন করে (তাতে মনোযোগ না দিয়ে) তা উপেক্ষা করুন।
আল আনআম আয়াত নং : ১৩৮
وَ قَالُوۡا ہٰذِہٖۤ اَنۡعَامٌ وَّ حَرۡثٌ حِجۡرٌ ٭ۖ لَّا یَطۡعَمُہَاۤ اِلَّا مَنۡ نَّشَآءُ بِزَعۡمِہِمۡ وَ اَنۡعَامٌ حُرِّمَتۡ ظُہُوۡرُہَا وَ اَنۡعَامٌ لَّا یَذۡکُرُوۡنَ اسۡمَ اللّٰہِ عَلَیۡہَا افۡتِرَآءً عَلَیۡہِ ؕ سَیَجۡزِیۡہِمۡ بِمَا کَانُوۡا یَفۡتَرُوۡنَ ﴿۱۳۸﴾
কানযুল ঈমান
১৩৮. এবং তারা বললো, ‘এসব গবাদি পশু ও ক্ষেত নিষিদ্ধ; এগুলোকে তারাই খাবে, যাকে আমরা ইচ্ছা করি,’ তাদের মিথ্যা ধারণা অনুসারে । এবং কতেক গবাদি পশু রয়েছে, যেগুলোর পৃষ্ঠে আরোহন করা হারাম সাব্যস্ত করেছে; আর কতেক পশু যবেহ করার সময় তারা আল্লাহ্র নাম বলে না; এসবই হচ্ছে আল্লাহ্র নামে মিথ্যা রচনা করা । অনতিবিলম্বে তিনি তাদেরকে প্রতিফল প্রদান করবেন তাদের মিথ্যা রচনাদির ।
ইরফানুল কুরআন
১৩৮. আর নিজেদের (ভ্রান্ত) ধারণা থেকে তারা (এও) বলে, ‘এ (সুনির্দিষ্ট) গবাদিপশু ও শস্যক্ষেত্র নিষিদ্ধ; আমরা যাদেরকে চাই তারা ব্যতীত কেউ এসব খেতে পারবে না।’ আর এমন (কিছু) চতুষ্পদ জন্তু রয়েছে, যেগুলোর পৃষ্ঠ (আরোহণের জন্যে) হারাম করা হয়েছে এবং এমন (কিছু) গবাদিপশু রয়েছে, (যবাই করার সময়) যেগুলোর উপর এরা আল্লাহ্র নাম উচ্চারণ করে না, (এসব) আল্লাহ্র উপর মিথ্যা অপবাদ রচনার উদ্দেশ্যে; অচিরেই তিনি তাদেরকে মিথ্যা অপবাদ রচনার কারণে শাস্তি দেবেন।
আল আনআম আয়াত নং : ১৩৯
وَ قَالُوۡا مَا فِیۡ بُطُوۡنِ ہٰذِہِ الۡاَنۡعَامِ خَالِصَۃٌ لِّذُکُوۡرِنَا وَ مُحَرَّمٌ عَلٰۤی اَزۡوَاجِنَا ۚ وَ اِنۡ یَّکُنۡ مَّیۡتَۃً فَہُمۡ فِیۡہِ شُرَکَآءُ ؕ سَیَجۡزِیۡہِمۡ وَصۡفَہُمۡ ؕ اِنَّہٗ حَکِیۡمٌ عَلِیۡمٌ ﴿۱۳۹﴾
কানযুল ঈমান
১৩৯. এবং তারা বলে, ‘যা এসব গবাদি পশুর গর্ভে রয়েছে, তা শুধু আমাদের পুরুষদের জন্যই এবং তা আমাদের স্ত্রীদের জন্য হারাম । আর যদি মৃত অবস্থায় বের হয় তবে তারা সবাই তাঁতে অংশীদার । শীঘ্রই আল্লাহ্ তাদেরকে তাদের এসব উক্তির প্রতিফল দেবেন । নিশ্চয় তিনি প্রজ্ঞাময়, জ্ঞানী ।
ইরফানুল কুরআন
১৩৯. আর তারা (এও) বলে, ‘যা (অর্থাৎ শাবকটি) এ চতুষ্পদ জন্তুর গর্ভে রয়েছে তা আমাদের পুরুষদের জন্যে নির্দিষ্ট এবং আমাদের স্ত্রীদের জন্যে হারাম করা হয়েছে। আর যদি সেটি মৃত (অবস্থায় প্রসব) হয় তবে সকল (নারী পুরুষ) এতে অংশীদার হবে।’ অচিরেই তিনি তাদেরকে তাদের (মনগড়া) মতবাদের শাস্তি দেবেন। নিশ্চয়ই তিনি প্রজ্ঞাবান, সম্যক অবগত।
আল আনআম আয়াত নং : ১৪০
قَدۡ خَسِرَ الَّذِیۡنَ قَتَلُوۡۤا اَوۡلَادَہُمۡ سَفَہًۢا بِغَیۡرِ عِلۡمٍ وَّ حَرَّمُوۡا مَا رَزَقَہُمُ اللّٰہُ افۡتِرَآءً عَلَی اللّٰہِ ؕ قَدۡ ضَلُّوۡا وَ مَا کَانُوۡا مُہۡتَدِیۡنَ ﴿۱۴۰﴾
কানযুল ঈমান
১৪০. নিশ্চয় ধ্বংস হয়েছে তারাই, যারা নিজেদের সন্তানদেরকে হত্যা করে নির্বুদ্ধিতাসুলভ মূর্খতাবশতঃ এবং হারাম সাব্যস্ত করে ঐ বস্তুকে, যা আল্লাহ্ তাদেরকে জীবিকা দিয়েছেন আল্লাহ্ সম্পর্কে মিথ্যা রচনার উদ্দেশ্যে । নিঃসন্দেহে তারা বিপথগামী হয়েছে এবং পথ পায়নি ।
ইরফানুল কুরআন
১৪০. বাস্তবিকই এসব লোকেরা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে যারা তাদের সন্তানদেরকে (সত্য) জ্ঞানের অভাবে (কেবলমাত্র) অজ্ঞতাবশত হত্যা করেছে এবং আল্লাহ্র উপর মিথ্যা অপবাদ রচনা করে সেসব (বস্তু) হারাম সাব্যস্ত করেছে যা আল্লাহ্ তাদেরকে (রিযিক হিসেবে) দান করেছেন। নিশ্চয়ই তারা গোমরাহ্ হয়ে গিয়েছে এবং হেদায়াতপ্রাপ্ত হতে পারেনি।
আল আনআম আয়াত নং : ১৪১
وَ ہُوَ الَّذِیۡۤ اَنۡشَاَ جَنّٰتٍ مَّعۡرُوۡشٰتٍ وَّ غَیۡرَ مَعۡرُوۡشٰتٍ وَّ النَّخۡلَ وَ الزَّرۡعَ مُخۡتَلِفًا اُکُلُہٗ وَ الزَّیۡتُوۡنَ وَ الرُّمَّانَ مُتَشَابِہًا وَّ غَیۡرَ مُتَشَابِہٍ ؕ کُلُوۡا مِنۡ ثَمَرِہٖۤ اِذَاۤ اَثۡمَرَ وَ اٰتُوۡا حَقَّہٗ یَوۡمَ حَصَادِہٖ ۫ۖ وَ لَا تُسۡرِفُوۡا ؕ اِنَّہٗ لَا یُحِبُّ الۡمُسۡرِفِیۡنَ ﴿۱۴۱﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১৪১. এবং তিনিই হন, যিনি সৃষ্টি করেছেন উদ্যানসমূহ, কিছু যমীনের উপর ছাইয়ে নেই আর খেজুরবৃক্ষ ও ক্ষেত, যাতে রয়েছে রং বেরং এর খাদ্য এবং যায়তূন ও আনার কোন কোন বিষয়ে একে অন্যের সাথে সদৃশ এবং কোন কোন বিষয়ে বিসদৃশও । আহার করো সেটার ফল যখন ফলবান হয় আর সেটার প্রাপ্য প্রদান করো যেদিন তা কাটবে এবং অযথা ব্যয় করো না । নিশ্চয়, অযথা ব্যয়কারীগণ তার পছন্দনীয় নয় ।
ইরফানুল কুরআন
১৪১. আর তিনিই লতা ও গুল্ম বিশিষ্ট উদ্যানসমূহ সৃষ্টি করেছেন (অর্থাৎ এমন বাগান যার কিছু গুল্মলতা মাচার উপরে তোলা হয় এবং কিছু মাচার উপরে তোলা হয় না); আর খেজুর (বৃক্ষ), বিভিন্ন প্রকারের শস্যবিশিষ্ট উদ্ভিদ, যয়তূন এবং ডালিম (আকৃতিতে) পরস্পরে সাদৃশ্যপূর্ণ কিন্তু (স্বাদের দিক থেকে) ভিন্ন ভিন্ন। যখন (এসব বৃক্ষ) ফল দেয়, তোমরা এর ফল ভক্ষণও করো, আর এ (ফল ও ফসল) কাটার দিনে (আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত) প্রাপ্যও প্রদান করো। আর অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না।
আল আনআম আয়াত নং : ১৪২
وَ مِنَ الۡاَنۡعَامِ حَمُوۡلَۃً وَّ فَرۡشًا ؕ کُلُوۡا مِمَّا رَزَقَکُمُ اللّٰہُ وَ لَا تَتَّبِعُوۡا خُطُوٰتِ الشَّیۡطٰنِ ؕ اِنَّہٗ لَکُمۡ عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۴۲﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১৪২. আর গবাদি পশুর মধ্যে কতেক ভারবাহী এবং কতেক যমীনের উপর বিছানো; আহার করো তা থেকে, যা আল্লাহ্ তোমাদেরকে জীবিকা দিয়েছেন এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না । নিঃসন্দেহে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু ।
ইরফানুল কুরআন
১৪২. আর (তিনি সৃষ্টি করেছেন) চতুষ্পদ প্রাণীদের মধ্যে কতকগুলো ভারবাহী (বৃহদাকৃতির) এবং ভুপৃষ্ঠের উপর (যবাইয়ের জন্যে অথবা ক্ষুদ্র আকৃতির কারণে) শায়িত (গবাদিপশু); তোমরা এ (রিযিক) থেকে (যবাই করে) ভক্ষণ করো, যা আল্লাহ্ তোমাদেরকে প্রদান করেছেন। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করোনা, নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন।
আল আনআম আয়াত নং : ১৪৩
ثَمٰنِیَۃَ اَزۡوَاجٍ ۚ مِنَ الضَّاۡنِ اثۡنَیۡنِ وَ مِنَ الۡمَعۡزِ اثۡنَیۡنِ ؕ قُلۡ ءٰٓالذَّکَرَیۡنِ حَرَّمَ اَمِ الۡاُنۡثَیَیۡنِ اَمَّا اشۡتَمَلَتۡ عَلَیۡہِ اَرۡحَامُ الۡاُنۡثَیَیۡنِ ؕ نَبِّـُٔوۡنِیۡ بِعِلۡمٍ اِنۡ کُنۡتُمۡ صٰدِقِیۡنَ ﴿۱۴۳﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১৪৩. আটটা নর ও মাদি এক জোড়া ভেড়ার এবং এক জোড়া ছাগলের । আপনি বলুন, ‘তিনি কি নর দু’টিকে হারাম করেছেন কিংবা মাদি দু’টিকে, অথবা ওটাকে, যা মাদি দু’টি গর্ভে ধারণ করেছে? কোন জ্ঞান দ্বারা বলো যদি তোমরা সত্যবাদী হও।
ইরফানুল কুরআন
১৪৩. (আল্লাহ্) জোড়ায় আটটি (নর ও মাদি) সৃষ্টি করেছেন, ভেড়া থেকে (নর ও মাদি) দু’টি এবং বকরী থেকে (নর ও মাদি) দু’টি। (আপনি তাদেরকে) বলুন, ‘তিনি কি উভয় নরকে হারাম করেছেন নাকি উভয় মাদিকে, নাকি সে (শাবক)-টি যা উভয় মাদির গর্ভাশয়ে বিদ্যমান রয়েছে? আমাকে জ্ঞান ও বিবেচনার সাথে বলো, যদি তোমরা সত্যবাদী হও।’
আল আনআম আয়াত নং : ১৪৪
وَ مِنَ الۡاِبِلِ اثۡنَیۡنِ وَ مِنَ الۡبَقَرِ اثۡنَیۡنِ ؕ قُلۡ ءٰٓالذَّکَرَیۡنِ حَرَّمَ اَمِ الۡاُنۡثَیَیۡنِ اَمَّا اشۡتَمَلَتۡ عَلَیۡہِ اَرۡحَامُ الۡاُنۡثَیَیۡنِ ؕ اَمۡ کُنۡتُمۡ شُہَدَآءَ اِذۡ وَصّٰکُمُ اللّٰہُ بِہٰذَا ۚ فَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنِ افۡتَرٰی عَلَی اللّٰہِ کَذِبًا لِّیُضِلَّ النَّاسَ بِغَیۡرِ عِلۡمٍ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ ﴿۱۴۴﴾
কানযুল ঈমান
১৪৪. এবং এক জোড়া উটের এবং এক জোরা গরুর । আপনি বলুন, ‘তিনি কি নর দু’টি হারাম করেছেন, না মাদি দু’টিকে, কিংবা ওটাকে, যা মাদি দু’টি গর্ভে ধারণ করেছে? তোমরা কি উপস্থিত ছিলে যখন আল্লাহ্ তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন?’ সুতরাং তার চেয়ে বড় যালিম আর কে, যে আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে, যেন লোকদেরকে নিজ মূর্খতা দ্বারা পথভ্রষ্টতা করে? নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ যালিমদেরকে পথ দেখান না ।
ইরফানুল কুরআন
১৪৪. আর দু’টি (নর ও মাদি) উট থেকে, দু’টি (নর ও মাদি) গরু থেকে। (আপনি তাদেরকে) বলুন, ‘তিনি কি উভয় নরকে হারাম করেছেন নাকি মাদিকে নাকি সে (শাবক)টি যা উভয় মাদির গর্ভাশয়ে বিদ্যমান রয়েছে? তোমরা কি সে সময় উপস্থিত ছিলে যখন আল্লাহ্ তোমাদেরকে (এ হারাম)-এর নির্দেশ দিয়েছিলেন?’ অতঃপর তার চেয়ে বড় যালিম কে হতে পারে, যে আল্লাহ্র উপর মিথ্যা অপবাদ রচনা করে, যাতে মানুষকে অজ্ঞানতাবশত গোমরাহ্ করে ফেলতে পারে? নিশ্চয়ই আল্লাহ্ যালিম সম্প্রদায়কে হেদায়াত দান করেন না।
আল আনআম আয়াত নং : ১৪৫
قُلۡ لَّاۤ اَجِدُ فِیۡ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیَّ مُحَرَّمًا عَلٰی طَاعِمٍ یَّطۡعَمُہٗۤ اِلَّاۤ اَنۡ یَّکُوۡنَ مَیۡتَۃً اَوۡ دَمًا مَّسۡفُوۡحًا اَوۡ لَحۡمَ خِنۡزِیۡرٍ فَاِنَّہٗ رِجۡسٌ اَوۡ فِسۡقًا اُہِلَّ لِغَیۡرِ اللّٰہِ بِہٖ ۚ فَمَنِ اضۡطُرَّ غَیۡرَ بَاغٍ وَّ لَا عَادٍ فَاِنَّ رَبَّکَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۴۵﴾
কানযুল ঈমান
১৪৫. আপনি বলুন!’আমার প্রতি যে ওহী হয়েছে তা’তে কোন আহারকারীর উপর আমি কোন খাদ্য নিষিদ্ধ পাচ্ছি না কিন্তু মৃত হলে, অথবা শিরা উপশিরা থেকে প্রবহমান রক্ত, অথবা শূকরের মাংস ওটা অপবিত্র, অথবা ঐ অবাধ্যতার পশু, যাকে যবেহ করার সময় আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো নাম উচ্চারণ করা হয়েছে’। সুতরাং, যে নিরুপায় হয়েছে, এমন নয় যে, নিজেই তাঁতে আগ্রহ প্রকাশ করে এবং এমনও নয় যে, প্রয়োজনীয়তার সীমালঙ্ঘন করে; তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু ।
ইরফানুল কুরআন
১৪৫. বলে দিন, ‘আমার প্রতি যা ওহী করা হয়েছে তাতে আহারকারীর জন্যে তো আমি এমন কিছু (বস্তু) নিষিদ্ধ পাইনি যা সে খেয়ে থাকে; তবে এ ব্যতীত যে, মৃত জন্তু অথবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শুকরের মাংস; কেননা, তা অপবিত্র অথবা নাফরমানীর জন্তু, যবাই করার সময় যার উপর আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যের নাম উচ্চারণ করা হয়েছে। অতঃপর যে ব্যক্তি (ক্ষুধার কারণে) একেবারে নিরূপায় হয়, না সে নাফরমানী করে আর না সীমালঙ্ঘন, তখন নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়ালু।’
আল আনআম আয়াত নং : ১৪৬
وَ عَلَی الَّذِیۡنَ ہَادُوۡا حَرَّمۡنَا کُلَّ ذِیۡ ظُفُرٍ ۚ وَ مِنَ الۡبَقَرِ وَ الۡغَنَمِ حَرَّمۡنَا عَلَیۡہِمۡ شُحُوۡمَہُمَاۤ اِلَّا مَا حَمَلَتۡ ظُہُوۡرُہُمَاۤ اَوِ الۡحَوَایَاۤ اَوۡ مَا اخۡتَلَطَ بِعَظۡمٍ ؕ ذٰلِکَ جَزَیۡنٰہُمۡ بِبَغۡیِہِمۡ ۫ۖ وَ اِنَّا لَصٰدِقُوۡنَ ﴿۱۴۶﴾
কানযুল ঈমান
১৪৬. এবং ইহুদীদের জন্য আমি হারাম করেছি প্রত্যেক নখ বিশিষ্ট পশু এবং গরু ও ছাগলের চর্বিও তাদের জন্য নিষিদ্ধ করেছিলাম; কিন্তু যা সেগুলোর পিঠের মধ্যে লেগে থাকে, অথবা অন্ত্র কিংবা অস্থির সাথে সংলগ্ন থাকে । আমি এটা তাদেরকে তাদের অবাধ্যতার প্রতিফল দিয়েছি এবং নিশ্চয় নিশ্চয় আমি সত্যবাদী ।
ইরফানুল কুরআন
১৪৬. আর ইহুদীদের জন্যে আমরা প্রত্যেক নখ-বিশিষ্ট (প্রাণী) হারাম করে দিয়েছিলাম এবং গাভী ও বকরীর চর্বি তাদের জন্যে হারাম করে দিয়েছিলাম, তবে সেসব (চর্বি) ব্যতীত যা উভয়ের পিঠে রয়েছে অথবা নাড়ীভুঁড়িতে লেগে রয়েছে অথবা যা অস্থি-সংলগ্ন। তা আমরা তাদের অবাধ্যতার কারণে শাস্তিস্বরূপ তাদেরকে দিয়েছিলাম এবং অবশ্যই আমরা সত্যবাদী।
আল আনআম আয়াত নং : ১৪৭
فَاِنۡ کَذَّبُوۡکَ فَقُلۡ رَّبُّکُمۡ ذُوۡ رَحۡمَۃٍ وَّاسِعَۃٍ ۚ وَ لَا یُرَدُّ بَاۡسُہٗ عَنِ الۡقَوۡمِ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۱۴۷﴾
কানযুল ঈমান
১৪৭. অতঃপর যদি তারা আপনাকে অস্বীকার করে, তবে আপনি বলুন, ‘তোমাদের প্রতিপালক ব্যাপক দয়াময় এবং তার শাস্তি অপরাধীদের উপর থেকে রদ্দ করা যায় না’।
ইরফানুল কুরআন
১৪৭. অতঃপর যদি তারা আপনাকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে তবে বলে দিন, ‘তোমাদের প্রতিপালক অপরিসীম অনুগ্রহের অধিকারী এবং অপরাধীদের থেকে তাঁর শাস্তি প্রত্যাহার করা হবে না’।
আল আনআম আয়াত নং : ১৪৮
سَیَقُوۡلُ الَّذِیۡنَ اَشۡرَکُوۡا لَوۡ شَآءَ اللّٰہُ مَاۤ اَشۡرَکۡنَا وَ لَاۤ اٰبَآؤُنَا وَ لَا حَرَّمۡنَا مِنۡ شَیۡءٍ ؕ کَذٰلِکَ کَذَّبَ الَّذِیۡنَ مِنۡ قَبۡلِہِمۡ حَتّٰی ذَاقُوۡا بَاۡسَنَا ؕ قُلۡ ہَلۡ عِنۡدَکُمۡ مِّنۡ عِلۡمٍ فَتُخۡرِجُوۡہُ لَنَا ؕ اِنۡ تَتَّبِعُوۡنَ اِلَّا الظَّنَّ وَ اِنۡ اَنۡتُمۡ اِلَّا تَخۡرُصُوۡنَ ﴿۱۴۸﴾
কানযুল ঈমান
১৪৮. এখন মুশরিকগণ বলবে, ‘আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে না আমরা শির্ক করতাম, না আমাদের পিতৃপুরুষগণ; না আমরা কোন কিছু হারাম সাব্যস্ত করতাম’। এ রূপেই, তাদের পূর্ববর্তীগণ মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিলো । শেষ পর্যন্ত আমার শাস্তি ভোগ করেছে । আপনি বলুন, ‘তোমাদের নিকট কি কোন জ্ঞান আছে যে, তা আমার নিকট পেশ করতে পারো? তোমরা তো নিছক কল্পনারই অনুসরণ করছো; এবং তোমরা এভাবেই অনুমান করছো’।
ইরফানুল কুরআন
১৪৮. অচিরেই মুশরিকেরা বলবে, ‘যদি আল্লাহ্ চাইতেন তবে না আমরা শিরক করতাম আর না আমাদের পিতৃপুরুষগণ; আর না (দলিল ব্যতীত) কোনো বস্তুকে হারাম করতাম’। এভাবে তাদের পূর্ববর্তীরাও আমাদের শাস্তি আস্বাদন করার পূর্ব পর্যন্ত মিথ্যাচার করেছিল। বলে দিন, ‘তোমাদের নিকট (দলিল ভিত্তিক) কোনো জ্ঞান রয়েছে কি যা আমাদের জন্যে উপস্থাপন করবে? (যদি এরূপ হয় তবে তা নিয়ে আসো।) তোমরা (অকাট্য জ্ঞান ছেড়ে) শুধুমাত্র কল্পনা ও ধারণারই আনুসরণ করো। আর তোমরা কেবল (অনুমানের উপর ভিত্তি করে) নিছক মিথ্যা বলো।’
আল আনআম আয়াত নং : ১৪৯
قُلۡ فَلِلّٰہِ الۡحُجَّۃُ الۡبَالِغَۃُ ۚ فَلَوۡ شَآءَ لَہَدٰىکُمۡ اَجۡمَعِیۡنَ ﴿۱۴۹﴾
কানযুল ঈমান
১৪৯. আপনি বলুন, ‘আল্লাহ্রই দলীল চূড়ান্ত । সুতরাং তিনি যদি ইচ্ছা করতেন তবে তোমাদের সবাইকে সৎপথে পরিচালিত করতেন’।
ইরফানুল কুরআন
১৪৯. বলে দিন, ‘অকাট্য দলিল তো আল্লাহ্রই জন্যে। সুতরাং যদি তিনি (তোমাদেরকে বাধ্য করতে) ইচ্ছে করতেন, তবে অবশ্যই তোমাদের সকলকে সৎপথে (নিয়মানুবর্তী করে) পরিচালিত করতেন।’*
* তিনি সত্য মিথ্যার পার্থক্য এবং উভয়ের পরিণতি বুঝিয়ে দেয়ার পর প্রত্যেককে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ পথ বেছে নেয়ার সুযোগ দেন, যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজের কর্মকান্ডের জন্যে দায়ী থাকে এবং এর উপর পুরস্কার ও শাস্তির অধিকারী সাব্যস্ত হয়।
আল আনআম আয়াত নং : ১৫০
قُلۡ ہَلُمَّ شُہَدَآءَکُمُ الَّذِیۡنَ یَشۡہَدُوۡنَ اَنَّ اللّٰہَ حَرَّمَ ہٰذَا ۚ فَاِنۡ شَہِدُوۡا فَلَا تَشۡہَدۡ مَعَہُمۡ ۚ وَ لَا تَتَّبِعۡ اَہۡوَآءَ الَّذِیۡنَ کَذَّبُوۡا بِاٰیٰتِنَا وَ الَّذِیۡنَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِالۡاٰخِرَۃِ وَ ہُمۡ بِرَبِّہِمۡ یَعۡدِلُوۡنَ ﴿۱۵۰﴾
কানযুল ঈমান
১৫০. আপনি বলুন, ‘হাযির করো নিজেদের ঐ সব সাক্ষীকে, যারা এ মর্মে সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ সেটা নিষিদ্ধ করেছেন’। অতঃপর যদি তারা সাক্ষ্য দিয়ে বসে, তবে হে শ্রোতা! তুমি তাদের সাথে সাক্ষ্য দিও না এবং তাদের কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, যারা আমার আয়াতগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে, যারা আখিরাতের উপর ঈমান আনে না এবং নিজেদের প্রতিপালকের সমকক্ষ দাঁড় করায় ।
ইরফানুল কুরআন
১৫০. (ঐসব মুশরিকদেরকে) বলে দিন, ‘তোমরা তোমাদের সে সব সাক্ষী উপস্থিত করো, যারা (এসে) এ বিষয়ের সাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ্ এটি হারাম করেছেন’। অতঃপর যদি তারা (মিথ্যা) সাক্ষ্য দিয়েই দেয়, তবে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করো না (বরং তাদের মিথ্যাচার তাদের সম্মুখে উন্মোচিত করে দাও)। আর এমন লোকদের কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, যারা আমাদের আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে এবং যারা পরকালের উপর ঈমান আনয়ন করে না। আর তারা (তাদের বাতিল উপাস্যদেরকে) তাদের প্রতিপালকের সমকক্ষ সাব্যস্ত করে।
আল আনআম আয়াত নং : ১৫১
قُلۡ تَعَالَوۡا اَتۡلُ مَا حَرَّمَ رَبُّکُمۡ عَلَیۡکُمۡ اَلَّا تُشۡرِکُوۡا بِہٖ شَیۡئًا وَّ بِالۡوَالِدَیۡنِ اِحۡسَانًا ۚ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَوۡلَادَکُمۡ مِّنۡ اِمۡلَاقٍ ؕ نَحۡنُ نَرۡزُقُکُمۡ وَ اِیَّاہُمۡ ۚ وَ لَا تَقۡرَبُوا الۡفَوَاحِشَ مَا ظَہَرَ مِنۡہَا وَ مَا بَطَنَ ۚ وَ لَا تَقۡتُلُوا النَّفۡسَ الَّتِیۡ حَرَّمَ اللّٰہُ اِلَّا بِالۡحَقِّ ؕ ذٰلِکُمۡ وَصّٰکُمۡ بِہٖ لَعَلَّکُمۡ تَعۡقِلُوۡنَ ﴿۱۵۱﴾
কানযুল ঈমান
১৫১. আপনি বলুন, ‘এসো! আমি তোমাদেরকে পড়ে শুনাবো যা তোমাদের উপর তোমাদের প্রতিপালক হারাম করেছেন; তোমরা তার কোন শরীক করবে না; এবং মাতাপিতার সাথে সদ্ব্যবহার করো ও তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না দারিদ্রের কারণে; আমি তোমাদেরকে এবং তাদের সবাইকে জীবিকা দেবো; আর অশ্লীল কাজকর্মের নিকটে যেও না, যা সেগুলোর মধ্যে প্রকাশ্য রয়েছে এবং যা গোপন; আর যেই জীবের হত্যা আল্লাহ্ নিষিদ্ধ করেছেন সেটাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করো না’। এটা তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন তোমাদের সুবোধোদয় হয় ।
ইরফানুল কুরআন
১৫১. বলে দিন, ‘এসো! আমি তোমাদের সেসব বিষয় পাঠ করে শুনাই, যা তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন। (আদেশ) এই যে, তোমরা তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না, পিতামাতার সাথে সদাচরণ করো এবং দরিদ্রতার কারণে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। আমরাই তোমাদেরকে রিযিক দেই এবং তাদেরকেও (দেবো)। আর অশ্লীল কর্মকান্ডের ধারেকাছেও যেয়ো না, (যদিও) হোক তা প্রকাশ্য অথবা গোপন। ন্যায়সঙ্গত কারণ ব্যতীত কোনো প্রাণ বধ করো না যাকে (হত্যা করা) আল্লাহ্ নিষেধ করেছেন (অর্থাৎ আইন অনুসারে আত্মরক্ষার্থে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে হত্যা ব্যতীত)।’ এটিই সেই (বিষয়), যে ব্যাপারে তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন তোমরা বুদ্ধি-বিবেচনায় কার্য সম্পন্ন করো।
আল আনআম আয়াত নং : ১৫২
وَ لَا تَقۡرَبُوۡا مَالَ الۡیَتِیۡمِ اِلَّا بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ حَتّٰی یَبۡلُغَ اَشُدَّہٗ ۚ وَ اَوۡفُوا الۡکَیۡلَ وَ الۡمِیۡزَانَ بِالۡقِسۡطِ ۚ لَا نُکَلِّفُ نَفۡسًا اِلَّا وُسۡعَہَا ۚ وَ اِذَا قُلۡتُمۡ فَاعۡدِلُوۡا وَ لَوۡ کَانَ ذَا قُرۡبٰی ۚ وَ بِعَہۡدِ اللّٰہِ اَوۡفُوۡا ؕ ذٰلِکُمۡ وَصّٰکُمۡ بِہٖ لَعَلَّکُمۡ تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۱۵۲﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১৫২. এবং এতিমদের সম্পত্তির নিকটে যেও না, কিন্তু (যাবে) খুব উত্তম পন্থায় যে পর্যন্ত সে যৌবনে উপনীত হয়; এবং পরিমাপ ও ওজন ন্যায়সঙ্গন্ত পূর্ণ করো; আমি কোন ব্যক্তির উপর বোঝা অর্পণ করি না, কিন্তু তার সাধ্য পরিমাণ; এবং তোমরা যখন কথা বলবে তখন ন্যায্যই বলবে যদিও তোমাদের স্বজনের মামলা হয়; আর আল্লাহ্রই অঙ্গীকার পূর্ণ করো; এটা তোমাদেরকে তাকীদ দিয়েছেন যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো;
ইরফানুল কুরআন
১৫২. আর উত্তম পন্থা ব্যতীত এতিমের সম্পদের কাছেও যেয়ো না যে পর্যন্ত না সে বয়ঃপ্রাপ্ত হয়। আর পরিমাপ ও ওযন ন্যায়সঙ্গতভাবে পূর্ণ করো। আমরা কোনো আত্মাকে তার সামর্থের বাইরে বোঝা চাপিয়ে দেই না। আর যখন তোমরা (কারো ব্যাপারে কিছু) বলো তখন ন্যায্যই বলো, যদিও সে (তোমাদের) নিকটাত্মীয় হয়। আর আল্লাহ্র অঙ্গীকার পূর্ণ করো। এগুলোই (বিষয়) যার ব্যাপারে তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন তোমরা উপদেশ ও হেদায়াত গ্রহণ করতে পারো।
আল আনআম আয়াত নং : ১৫৩
وَ اَنَّ ہٰذَا صِرَاطِیۡ مُسۡتَقِیۡمًا فَاتَّبِعُوۡہُ ۚ وَ لَا تَتَّبِعُوا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِکُمۡ عَنۡ سَبِیۡلِہٖ ؕ ذٰلِکُمۡ وَصّٰکُمۡ بِہٖ لَعَلَّکُمۡ تَتَّقُوۡنَ ﴿۱۵۳﴾
কানযুল ঈমান
১৫৩. আর এও যে, এটা হচ্ছে আমার সরল পথ । সুতরাং সেটার অনুসরন করো এবং ভিন্ন পথে চলো না; যাতে তা তোমাদেরকে তার পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় । তিনি তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিয়েছেন যেন তোমরা খোদাভীতি অর্জন করো ।
ইরফানুল কুরআন
১৫৩. আর এই যে, এই (শরীয়তই) আমার সরল পথ। সুতরাং তোমরা এর অনুসরণ করো এবং (ভিন্ন) পথে চলো না, কারণ সেগুলো তোমাদেরকে আল্লাহ্র পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে। এগুলোই সেই বিষয় যেসবের ব্যাপারে তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন তোমরা খোদাভীরু হতে পারো।
আল আনআম আয়াত নং : ১৫৪
ثُمَّ اٰتَیۡنَا مُوۡسَی الۡکِتٰبَ تَمَامًا عَلَی الَّذِیۡۤ اَحۡسَنَ وَ تَفۡصِیۡلًا لِّکُلِّ شَیۡءٍ وَّ ہُدًی وَّ رَحۡمَۃً لَّعَلَّہُمۡ بِلِقَآءِ رَبِّہِمۡ یُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۱۵۴﴾
কানযুল ঈমান
১৫৪. অতঃপর আমি মূসাকে কিতাব দান করেছিলাম পূর্ণ অনুগ্রহ করার উদ্দেশ্যে তারই উপর, যে সৎকর্মপরায়ণ এবং প্রত্যেক কিছুর বিশদ বিবরণ, পথ নির্দেশনা দয়ারূপে; যেন তারা তাদের প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাতের উপর ঈমান আনে।
ইরফানুল কুরআন
১৫৪. অতঃপর আমরা মূসা (আলাইহিস সালাম)-কে কিতাব প্রদান করেছিলাম সেসব ব্যক্তির প্রতি (নিয়ামত) পূর্ণ করার জন্যে যে সৎকর্মশীল; আর (এটি) সকল কিছুর বিস্তারিত বর্ণনা, হেদায়াত ও রহমত হিসেবে (অবর্তীণ করেছিলাম), যাতে তারা (কিয়ামতের দিন) তাদের প্রতিপালকের সাক্ষাতের বিষয়ে ঈমান আনয়ন করে।
আল আনআম আয়াত নং : ১৫৫
وَ ہٰذَا کِتٰبٌ اَنۡزَلۡنٰہُ مُبٰرَکٌ فَاتَّبِعُوۡہُ وَ اتَّقُوۡا لَعَلَّکُمۡ تُرۡحَمُوۡنَ ﴿۱۵۵﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১৫৫. এ বরকতময় কিতাব আমি নাযিল করেছি; সুতরাং সেটার অনুসরণ করো এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করো যেন তোমাদের উপর দয়া হয় ।
ইরফানুল কুরআন
১৫৫. আর এ (কুরআন) বরকতময় কিতাব যা আমরা অবতীর্ণ করেছি। সুতরাং (এখন) তোমরা এর অনুসরণ করো এবং (আল্লাহ্কে) ভয় করতে থাকো, যাতে তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করা হয়।
আল আনআম আয়াত নং : ১৫৬
اَنۡ تَقُوۡلُوۡۤا اِنَّمَاۤ اُنۡزِلَ الۡکِتٰبُ عَلٰی طَآئِفَتَیۡنِ مِنۡ قَبۡلِنَا ۪ وَ اِنۡ کُنَّا عَنۡ دِرَاسَتِہِمۡ لَغٰفِلِیۡنَ ﴿۱۵۶﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১৫৬. কখনো একথা বলবে যে, ‘কিতাব তো আমাদের পূর্বে দু’সম্প্রদায়ের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছিলো; আর আমাদের নিকট তাদের পঠন-পাঠন সম্বন্ধে কোন খবরই ছিলো না’!
ইরফানুল কুরআন
১৫৬. (কুরআন এ জন্যে অবতীর্ণ করা হয়েছে ) যাতে তোমরা (এ কথা না) বলো, ‘(ঐশী) কিতাব আমাদের পূর্বে তো কেবল (ইহুদী ও খৃষ্টান, এ) দু’দলের প্রতিই অবতীর্ণ করা হয়েছিল এবং নিশ্চয়ই আমরা সেগুলোর পঠন-পাঠনে অনবহিত ছিলাম’।
আল আনআম আয়াত নং : ১৫৭
اَوۡ تَقُوۡلُوۡا لَوۡ اَنَّاۤ اُنۡزِلَ عَلَیۡنَا الۡکِتٰبُ لَکُنَّاۤ اَہۡدٰی مِنۡہُمۡ ۚ فَقَدۡ جَآءَکُمۡ بَیِّنَۃٌ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ ہُدًی وَّ رَحۡمَۃٌ ۚ فَمَنۡ اَظۡلَمُ مِمَّنۡ کَذَّبَ بِاٰیٰتِ اللّٰہِ وَ صَدَفَ عَنۡہَا ؕ سَنَجۡزِی الَّذِیۡنَ یَصۡدِفُوۡنَ عَنۡ اٰیٰتِنَا سُوۡٓءَ الۡعَذَابِ بِمَا کَانُوۡا یَصۡدِفُوۡنَ ﴿۱۵۷﴾
কানযুল ঈমান
১৫৭. অথবা বলবে যে, ‘যদি আমাদের উপর কিতাব অবতীর্ণ হতো তবে আমরা তাদের চেয়ে অধিক সঠিক পথের উপর থাকতাম’। অতঃপর তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের স্পষ্ট দলীল, পথ নির্দেশনা ও দয়া এসেছে । অতঃপর তার চেয়ে বড় যালিম কে, যে আল্লাহ্র নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে এবং সেগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়? অবিলম্বে ঐ সব লোক, যারা আমার নিদর্শনগুলো থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, আমি তাদেরকে মন্দ আযাবের সাজা দেবো, প্রতিফল স্বরূপ তাদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার ।
ইরফানুল কুরআন
১৫৭. অথবা যেন (এ কথা না) বলো, ‘যদি আমাদের প্রতি কিতাব অবতীর্ণ হতো তবে আমরা অবশ্যই তাদের চেয়ে অধিকতর হেদায়াতপ্রাপ্ত হতাম’। সুতরাং এখন তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সুস্পষ্ট দলিল, হেদায়াত ও রহমত আগমন করেছে। অতঃপর তার চেয়ে বড় যালিম কে হতে পারে, যে আল্লাহ্র আয়াতসমূহকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে এবং এগুলো এড়িয়ে চলে? যারা আমাদের আয়াতসমূহ থেকে পলায়নপর থাকে, আমরা অচিরেই তাদেরকে প্রতিদানস্বরূপ দেবো নিকৃষ্ট শাস্তি। কারণ, তারা (আল্লাহ্র আয়াতসমূহ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
আল আনআম আয়াত নং : ১৫৮
ہَلۡ یَنۡظُرُوۡنَ اِلَّاۤ اَنۡ تَاۡتِیَہُمُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ اَوۡ یَاۡتِیَ رَبُّکَ اَوۡ یَاۡتِیَ بَعۡضُ اٰیٰتِ رَبِّکَ ؕ یَوۡمَ یَاۡتِیۡ بَعۡضُ اٰیٰتِ رَبِّکَ لَا یَنۡفَعُ نَفۡسًا اِیۡمَانُہَا لَمۡ تَکُنۡ اٰمَنَتۡ مِنۡ قَبۡلُ اَوۡ کَسَبَتۡ فِیۡۤ اِیۡمَانِہَا خَیۡرًا ؕ قُلِ انۡتَظِرُوۡۤا اِنَّا مُنۡتَظِرُوۡنَ ﴿۱۵۸﴾
কানযুল ঈমান
১৫৮. (তারা) কিসের অপেক্ষায় রয়েছে? কিন্তু এরই যে, তাদের নিকট ফিরিশ্তারা আসবে; অথবা আপনার প্রতিপালকের শাস্তি, অথবা আপনার প্রতিপালকের একটা নিদর্শন আসবে । যেদিন আপনার প্রতিপালকের ঐ একটা নিদর্শন আসবে, সেদিন কোন ব্যক্তির ঈমান আনা কোন কাজে আসবে না, যে প্রথমে ঈমান আনে নি কিংবা স্বীয় ঈমানের মধ্যে কোন মঙ্গল অর্জন করে নি । আপনি বলুন, ‘অপেক্ষা করো, আমিও অপেক্ষা করছি’।
ইরফানুল কুরআন
১৫৮. তারা কি কেবল এ অপেক্ষাই করছে যে, তাদের নিকট (শাস্তির) ফেরেশতারা এসে পৌঁছুবে অথবা (স্বয়ং) আপনার প্রতিপালক আগমন করবেন অথবা আপনার প্রতিপালকের কিছু (সুনির্দিষ্ট চাক্ষুষ) নিদর্শনাবলী আগমন করবে? (তাদেরকে বলে দিন,) ‘যেদিন আপনার প্রতিপালকের কিছু নিদর্শন (এরকম প্রকাশ্যরূপে) এসে পৌঁছুবে, (তখন) তার ঈমান (আনয়ন) তাকে উপকৃত করবে না যে পূর্ব থেকে ঈমান আনয়ন করেনি, অথবা সে তার ঈমান (অবস্থায় তা) দ্বারা কোনো নেকী উপার্জন করেনি’। বলে দিন, ‘তোমরা অপেক্ষা করো, আমরা(ও) অপেক্ষা করছি’।
আল আনআম আয়াত নং : ১৫৯
اِنَّ الَّذِیۡنَ فَرَّقُوۡا دِیۡنَہُمۡ وَ کَانُوۡا شِیَعًا لَّسۡتَ مِنۡہُمۡ فِیۡ شَیۡءٍ ؕ اِنَّمَاۤ اَمۡرُہُمۡ اِلَی اللّٰہِ ثُمَّ یُنَبِّئُہُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿۱۵۹﴾
কানযুল ঈমান
১৫৯. ঐ সব লোক, যারা আপন দ্বীনের মধ্যে পৃথক পৃথক রাস্তা বের করেছে এবং কয়েক দলে বিভক্ত হয়েছে, হে মাহবূব! তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই । তাদের মামলা আল্লাহ্রই হাতে সোপর্দকৃত । অতঃপর তিনি তাদেরকে বলে দেবেন যা কিছু তারা করছিলো ।
ইরফানুল কুরআন
১৫৯. নিশ্চয়ই যারা (পৃথক পৃথক পথে বের হয়ে) তাদের ধর্মকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে এবং (ভিন্ন ভিন্ন) দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, আপনি কোনো বিষয়েই তাদের সাথে (সংশ্লিষ্ট ও দায়ী) নন। তাদের ব্যাপার আল্লাহ্রই নিকট। অতঃপর তিনি তাদেরকে সে কর্মকান্ড সম্পর্কে অবগত করবেন যা তারা করতো।
আল আনআম আয়াত নং : ১৬০
مَنۡ جَآءَ بِالۡحَسَنَۃِ فَلَہٗ عَشۡرُ اَمۡثَالِہَا ۚ وَ مَنۡ جَآءَ بِالسَّیِّئَۃِ فَلَا یُجۡزٰۤی اِلَّا مِثۡلَہَا وَ ہُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ ﴿۱۶۰﴾
কানযুল ঈমান
১৬০. যে কেউ একটা সৎকর্ম করবে, তবে তার জন্য তদনুরূপ দশগুণ রয়েছে আর যে ব্যক্তি কোন পাপ কাজ করে, তবে তার প্রতিফল মিলবে না, কিন্তু সেটারই সমান; এবং তাদের উপর অত্যাচার করা হবে না ।
ইরফানুল কুরআন
১৬০. যে কেউ একটি ভালো কাজ করবে, সে এর জন্যে (পুরস্কার হিসেবে) অনুরূপ দশটি নেকী পাবে। আর যে কেউ একটি মন্দ কাজ করবে তবে তাকে অনুরূপ একটি (গোনাহের) শাস্তিই দেয়া হবে। আর তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।
আল আনআম আয়াত নং : ১৬১
قُلۡ اِنَّنِیۡ ہَدٰىنِیۡ رَبِّیۡۤ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ ۬ۚ دِیۡنًا قِیَمًا مِّلَّۃَ اِبۡرٰہِیۡمَ حَنِیۡفًا ۚ وَ مَا کَانَ مِنَ الۡمُشۡرِکِیۡنَ ﴿۱۶۱﴾
কানযুল ঈমান
১৬১. আপনি বলুন, ‘নিশ্চয় আমার প্রতিপালক আমাকে সোজা পথ দেখিয়েছেন; সঠিক দ্বীন, ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ, যিনি সমস্ত বাতিল থেকে পৃথক ছিলেনে এবং মুশরিক ছিলেন না’।
ইরফানুল কুরআন
১৬১. বলে দিন, ‘নিশ্চয়ই আমাকে আমার প্রতিপালক সরল পথের দিকে হেদায়াত দান করেছেন। (এটি সরল পথের উপর) সুদৃঢ় দ্বীন (এবং এটিই) ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম)-এঁর মতাদর্শ যা আল্লাহ্র প্রতি একনিষ্ঠ এবং সকল মিথ্যা থেকে পৃথক। আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।’
আল আনআম আয়াত নং : ১৬২
قُلۡ اِنَّ صَلَاتِیۡ وَ نُسُکِیۡ وَ مَحۡیَایَ وَ مَمَاتِیۡ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۶۲﴾ۙ
কানযুল ঈমান
১৬২. আপনি বলুন, ‘নিঃসন্দেহে আমার নামায, আমার ক্বোরবানীগুলো, আমার জীবন এবং আমার মরণ-সবই আল্লাহ্র জন্য, যিনি প্রতিপালক সমগ্র জাহানের;
ইরফানুল কুরআন
১৬২. বলে দিন, ‘নিশ্চয়ই আমার নামায, হজ্জ, কুরবানী (-সহ সকল ইবাদত), জীবন এবং মৃত্যু আল্লাহ্রই জন্যে, যিনি সমগ্র জগতের প্রতিপালক।
আল আনআম আয়াত নং : ১৬৩
لَا شَرِیۡکَ لَہٗ ۚ وَ بِذٰلِکَ اُمِرۡتُ وَ اَنَا اَوَّلُ الۡمُسۡلِمِیۡنَ ﴿۱۶۳﴾
কানযুল ঈমান
১৬৩. তার কোন শরীক নেই; আমার প্রতি এটাই হুকুম হয়েছে এবং আমি সর্বপ্রথম মুসলমান’।
ইরফানুল কুরআন
১৬৩. তাঁর কোনো অংশীদার নেই এবং আমাকে এরই নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং আমি (সমগ্র সৃষ্টি জগতে) সর্বপ্রথম মুসলমান।’
আল আনআম আয়াত নং : ১৬৪
قُلۡ اَغَیۡرَ اللّٰہِ اَبۡغِیۡ رَبًّا وَّ ہُوَ رَبُّ کُلِّ شَیۡءٍ ؕ وَ لَا تَکۡسِبُ کُلُّ نَفۡسٍ اِلَّا عَلَیۡہَا ۚ وَ لَا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی ۚ ثُمَّ اِلٰی رَبِّکُمۡ مَّرۡجِعُکُمۡ فَیُنَبِّئُکُمۡ بِمَا کُنۡتُمۡ فِیۡہِ تَخۡتَلِفُوۡنَ ﴿۱۶۴﴾
কানযুল ঈমান
১৬৪. আপনি বলুন, ‘আমি কি আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য প্রতিপালক খুজবো? অথচ তিনিই সবকিছুর প্রতিপালক । আর যে কেউ কিছু অর্জন করবে তা তারই যিম্মায় থাকবে; এবং কোন বোঝা বহনকারী ব্যক্তি অপরের বোঝা বহন করবে না । অতঃপর তোমাদেরকে তোমাদের প্রতিপালকের দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে, তিনি তোমাদেরকে বলে দেবেন যে বিষয়ে তোমরা মতভেদ করে আসছিলে।
ইরফানুল কুরআন
১৬৪. বলে দিন, ‘আমি কি আল্লাহ্ ব্যতীত দ্বিতীয় কাউকে প্রতিপালক হিসেবে অন্বেষণ করবো, অথচ তিনিই সকল কিছুর প্রতিপালক? আর প্রত্যেক ব্যক্তি যেটুকুই (গোনাহ) করে, (এর মন্দ পরিণতি) তারই। আর কোনো বোঝা বহনকারী অন্য কারো বোঝা বহন করবে না। অতঃপর তোমাদের প্রতিপালকের দিকেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে সেসব (বিষয়ের সত্যতা) সম্পর্কে অবগত করবেন, যেগুলো নিয়ে তোমরা মতবিরোধ করতে।’
আল আনআম আয়াত নং : ১৬৫
وَ ہُوَ الَّذِیۡ جَعَلَکُمۡ خَلٰٓئِفَ الۡاَرۡضِ وَ رَفَعَ بَعۡضَکُمۡ فَوۡقَ بَعۡضٍ دَرَجٰتٍ لِّیَبۡلُوَکُمۡ فِیۡ مَاۤ اٰتٰکُمۡ ؕ اِنَّ رَبَّکَ سَرِیۡعُ الۡعِقَابِ ۫ۖ وَ اِنَّہٗ لَغَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۶۵﴾
কানযুল ঈমান
১৬৫. আর তিনিই হন, যিনি পৃথিবীতে তোমাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করেছেন এবং তোমাদের মধ্যে এককে অপরের উপর বহু মর্যাদায় উন্নীত করেছেন যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন ঐ সব বিষয়ের মধ্যে, যেগুলো তোমাদেরকে দান করেছেন; নিশ্চয় আপনার প্রতিপালকের বেশীক্ষণ সময় লাগে না শাস্তি প্রদানে এবং নিঃসন্দেহে তিনি অবশ্যই ক্ষমাশীল, দয়াময়।
ইরফানুল কুরআন
১৬৫. আর তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছেন এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে কারো উপর মর্যাদায় সমুন্নত করেছেন, যাতে তিনি সেসব (বিষয়) সম্পর্কে তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যা তিনি তোমাদেরকে (আমানতস্বরূপ) দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক (শাস্তির উপযুক্তদেরকে) দ্রুত শাস্তিপ্রদানকারী। আর নিশ্চয়ই তিনি (ক্ষমা প্রত্যাশীদের জন্যে) মহাক্ষমাশীল, অসীম দয়লু।