ইমাম বায়হাক্বী ( رَحْمَةُ الله عليه) ছহীহ্ সনদে হাদিস উল্লেখ করেছেন,
أَخْبَرَنَا أَبُو عَبْدِ اللهِ الْحَافِظُ، وَأَبُو نَصْرٍ أَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ أَحْمَدَ الْفَامِيُّ قَالَا: ثنا أَبُو الْعَبَّاسِ مُحَمَّدُ بْنُ يَعْقُوبَ، ثنا مُحَمَّدُ بْنُ عَوْفٍ ثنا عَلِيُّ بْنُ عَيَّاشٍ ثنا شُعَيْبُ بْنُ أَبِي حَمْزَةَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ قَالَ حِينَ يَسْمَعُ النِّدَاءُ: اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِحَقِّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ الْمَقَامَ الْمَحْمُودَ الَّذِي وَعَدْتَهُ إِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيعَادَ حَلَّتْ لَهُ شَفَاعَتِي رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ فِي الصَّحِيحِ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ عَيَّاشٍ
-“হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলে পাক ( ﷺ) বলেছেন: যখন আযান শুনে বলবে: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আছআলুকা বি হাক্কে হাজিহী দাওয়াতীত তাম্মাত ওয়াছ ছালাতিল কায়িমা আতি মুহাম্মাদাল ওয়াছিলাতা ওয়াল ফাদ্বিলা ওয়াবায়াছহু মাকামান মাহমুদা আল্লাজি ওয়াদতাহু ইন্নাকা লা তুখলিফুল মিয়াদ’ ইল্লা হাল্লাত লাহু শাফায়াতী।” ৪১৪১, ইমাম বায়হাকী: সুনানে কুবরা, ১ম খন্ড, ৭৬৯ পৃ:; ফতোয়ায়ে শামী, ২য় খন্ড, ৬৮ পৃ:; ইবনুল হুমাম: ফাতহুল কাদির, ১ম খন্ড, ২৫৬ পৃ:;
ইহার সকল রাবীগণ বিশ্বস্ত।
ইহা ছহীহ্ হাদিস, যা দ্বারা প্রমাণিত হয় আযানের দোয়ার শেষে:
إِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيعَادَ বলা জায়েয। যেমন শারিহে বুখারী ওয়াত তিরমিজি মাওলানা আনওয়ার শাহ্ কাশ্মিরী ( رَحْمَةُ الله عليه) ছাহেব বলেন:-
وزيادة إنك لا تخلف الميعاد ثابتة في السنن الكبرى بسند قوي
-“ইন্নাকা লা তুখলিফুল মিআদ’ এই অতিরিক্ত অংশটুকু বায়হাক্বীর সুনানে কুবরার শক্তিশালী হাদিস থেকে প্রমাণিত।” ৪২৪২, আল্লামা কাশ্মিরী: আরফুশ শাজী শরহে তিরমিজি, ১ম খন্ড, ২২৩ পৃ:;
قال السخاوي وثبتت هذه الزيادة أيضاً عند البخاري في رواية الكشميهني
-“ইমাম সাখাবী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন, অনুরূপভাবে এই অতিরিক্ত অংশটি ইমাম বুখারী ( رَحْمَةُ الله عليه) নিকট কাশমিহানীর রেওয়ায়েতে প্রমাণিত আছে।” ৪৩৪৩, তাখরিজু এহইয়ায়ে উলুমুদ্দিন, ১ম খন্ড, ৩২২ পৃ:; ইমাম ছাখাবী: মাকাছিদুল হাছানাহ, হাদিস নং ৪৮৪ এর ব্যাখ্যায়; ইমাম আজলুনী: কাশফুল খাফা, ১২৮৯ নং হাদিসের ব্যাখ্যায়;
এই হাদিসের রাবী ‘মুহাম্মদ ইবনে মুনকাদির ও শুয়াইব’ বুখারী-মুসলীমের রাবী। ‘আলী ইবনে আইয়াশ’ ছহীহ্ বুখারীর রাবী। ‘মুহাম্মদ ইবনে আউফ’ বিশ্বস্ত রাবী, তার হাদিসকে ইমাম হাকেম ( رَحْمَةُ الله عليه) ছহীহ্ বলেছেন ও ইমাম যাহাবী একমত পোষন করেছেন, সকল ইমামগণই তাকে বিশ্বস্ত ও সত্যবাদী বলেছেন।
‘আবুল আব্বাস মুহাম্মদ ইবনে ইয়াকুব’ এর মূল নাম হল:
محمد بْن يعقوب بْن يوسف بْن مَعْقِل الَّنْيسابوريّ الأصمّ ‘মুহাম্মদ ইবনে ইয়াকুব ইবনে ইউছুফ ইবনে মাকিল নিছাপুরী আল আছম্মা’। ইমাম আবু হাতিম ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: أنّه ثقة صدوق -“নিশ্চয় তিনি বিশ্বস্ত ও সত্যবাদী।” ৪৪৪৪, ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং ২৪৩;
এর আকেজন রাবী ‘আহমদ ইবনে আলী ইবনে আহমদ ফামী’ এর মূল নাম হল: أحمد بن علي بن أحمد بن محمد بن شبيب ‘আহমদ ইবনে আলী ইবনে আহমদ ইবনে মুহাম্মদ ইবনে শাবিব’। তার ব্যাপারে ইমাম যাহাবী ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: قال عبد الغافر: شيخ ثقة معروف، -“ইমাম আব্দুল গাফির ( رَحْمَةُ الله عليه) বলেন: সে শায়েখ বিশ্বস্ত ও সুপ্রসিদ্ধ।” ৪৫৪৫, ইমাম যাহাবী: তারিখুল ইসলাম, রাবী নং ১৬৯;
অতএব, এই হাদিসের সকল রাবীগণ বিশ্বস্ত, সত্যবাদী ও গ্রহণযোগ্য। সুতরাং ইহা ছহীহ্ হাদিস এবং ইহাকে দুর্বল হাদিস বলা অজ্ঞতা বৈ কিছুই নয়। হাদিসটি শক্তিশালী সনদে প্রমাণিত থাকার পরেও কথিত ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর তার লিখিত ‘হাদিসের নামে জালিয়াতী’ গ্রন্থে বলেছেন ইহা নাকি দূর্বল সনদে প্রমাণিত।