১. রিজিক বৃদ্ধির দোয়া ও আমল
আল্লাহর অপর একটি নাম রাজ্জাক, যার অর্থ হলো রিজিকদাতা। ইরশাদ হচ্ছে, নিশ্চয়ই আমার রব তার বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিজিক প্রশস্ত করেন এবং সংকুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় করো, তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনিই শ্রেষ্ঠ রিজিকদাতা।’ সুরা সাবা-৩৯।
রিজিক বৃদ্ধির জন্য একটি তাসবিহ আমল রয়েছে, যা প্রত্যহ সুবহে সাদিকের সময়ে ১০০ বার পাঠের মাধ্যমে আয়ে বরকত পাওয়া যায়। তাসবিহটি হলো, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম, আস্তাগফিরুল্লাহ।’ রিজিক বৃদ্ধি করতে চাইলে আল্লাহর ইবাদতকে প্রাধান্য দিতে হবে। ব্যস্ততাকে পেছনে ফেলে আল্লাহর ইবাদতে নিজকে সঁপে দিতে হবে।
হাদিস ১:
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মাগফির লি জাম্বি, ওয়া ওয়াসসি লি ফি দারি, ওয়া বারিক লি ফিমা রাজাকতানি।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমার গুনাহ ক্ষমা করে দিন, আমার ঘর প্রশস্ত করে দিন এবং আপনি আমাকে যে জীবিকা দান করেছেন তাতে বরকত দান করুন।
উপকারিতা : আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবীজি (ﷺ)-কে রাতে উল্লিখিত দোয়া পাঠ করতে শোনেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৫০০)
হাদিস ২:
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিনাল ফাকরি ওয়াল কিল্লাতি ওয়াল জিল্লাতি; ওয়া আউজু বিকা মিন আন আজলিমা আউ উজলামা।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাইছি দরিদ্রতা থেকে, আপনার অনুগ্রহ কমে যাওয়া থেকে এবং অসম্মানিত হওয়া থেকে। আমি আপনার কাছে আরো আশ্রয় চাইছি জুলুম করা থেকে অথবা অত্যাচারিত হওয়া থেকে।
উপকারিতা : আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) উল্লিখিত দোয়া পাঠ করতেন।
(সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৫৪৪)
হাদিস ৩:
হজরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, রাসুল (ﷺ) বলেছেন, ‘আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য তুমি ঝামেলামুক্ত হও, আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্যতা দিয়ে পরিপূর্ণ করে দিব এবং তোমার দারিদ্র্যতা ঘুছিয়ে দিব। আর যদি তা না কর, তবে তোমার হাত ব্যস্ততায় ভরে দিব এবং তোমার অভাব দূর করব না।’ (সুনানে তিরমিজি)
২. তওবা-ইস্তিগফার করা
তওবা-ইস্তিগফার করার মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়ে। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের বাগবাগিচা এবং নদীনালা দান করবেন।’ (সুরা নুহ, আয়াত: ১০-১২; সুরা ওয়াকিয়া, আয়াত: ৮২)
হাদিস ৪:
ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه)–র বিবরণে আছে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তিগফার করবে; আল্লাহ–তাআলা সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’
(আবু দাউদ, হাদিস: ১,৫১৮; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩,৮১৯; মুস্তাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২৯১, হাদিস: ৭,৬৭৭)
সুতরাং বেশি বেশি তাওবাহ-ইসেতগফার করা-
> أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
> أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।‘
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।
> رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ
উচ্চারণ : ‘রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।’
অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়।’
> أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।’
অর্থ : ‘আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তাওবাহ করে) ফিরে আসি।’
৩. আল্লাহর রাস্তায় দান বা ব্যয় করা
قُلۡ اِنَّ رَبِّیۡ یَبۡسُطُ الرِّزۡقَ لِمَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِهٖ وَ یَقۡدِرُ لَهٗ ؕ وَ مَاۤ اَنۡفَقۡتُمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ فَهُوَ یُخۡلِفُهٗ ۚ وَ هُوَ خَیۡرُ الرّٰزِقِیۡنَ
‘(হে রাসুল! আপনি) বলুন, নিশ্চয়ই আমার রব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিজিক প্রশস্ত করেন এবং সঙ্কুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনিই উত্তম রিজিকতা।’ (সুরা সাবা : আয়াত ৩৯)
৪. তাকওয়ার ওপর অটল থাকা
> وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰهَ یَجۡعَلۡ لَّهٗ مَخۡرَجًا – وَّ یَرۡزُقۡهُ مِنۡ حَیۡثُ لَا یَحۡتَسِبُ ؕ وَ مَنۡ یَّتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰهِ فَهُوَ حَسۡبُهٗ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بَالِغُ اَمۡرِهٖ ؕ قَدۡ جَعَلَ اللّٰهُ لِکُلِّ شَیۡءٍ قَدۡرًا
‘আর যে কেউ আল্লাহকে ভয় করবে, আল্লাহ তার নিষ্কৃতির পথ করে দেবেন। আর তাকে তার ধারণাতীত উৎস হতে রুযী দান করবেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করবে, তার জন্য তিনিই যথেষ্ট হবেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর ইচ্ছা পূরণ করবেনই। আল্লাহ সবকিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা।’ (সুরা তালাক : আয়াত ২-৩)
> وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُواْ وَاتَّقَواْ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَاتٍ مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ وَلَـكِن كَذَّبُواْ فَأَخَذْنَاهُم بِمَا كَانُواْ يَكْسِبُونَ
‘আর যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং পরহেযগারী অবলম্বন (তাকে ভয়) করত, তবে আমি তাদের প্রতি আসমানি ও দুনিয়ার নেয়ামতসমূহ উম্মুক্ত করে দিতাম। কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি তাদের কৃতকর্মের বদলাতে।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৯৬)
৫. আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা
রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম আরেকটি আমল হচ্ছে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা। আত্মীয়ের সঙ্গে সদাচরণ করতে এবং তাঁদের হক যথাযথভাবে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ–তাআলা। (সুরা নিসা, আয়াত: ৩৬; সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ২৬)
হাদিস ৫:
আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه) বলেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ)–কে আমি বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কামনা করে তার রিজিক প্রশস্ত করে দেওয়া হোক এবং আয়ু দীর্ঘ করা হোক—সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।’ (বুখারি, হাদিস: ৫,৯৮৫; মুসলিম, হাদিস: ৪,৬৩৯)
৬. হজ-ওমরাহ পালন
হাদিস ৬:
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه)–র বিবরণে আছে যে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘তোমরা লাগাতার হজ ও ওমরাহ পালন করতে থাকো। কারণ, এর দ্বারা এমনভাবে অভাব ও গুনাহ দূরীভূত হয়; যেমনভাবে কামারের হাপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে দেয়।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৮১০; নাসায়ি, হাদিস: ২,৬৩১)
৭. বিয়ে করা
আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَأَنكِحُوا الْأَيَامَى مِنكُمْ وَالصَّالِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَائِكُمْ إِن يَكُونُوا فُقَرَاء يُغْنِهِمُ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
‘তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন, তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা নুর : আয়াত ৩২)
৮. আল্লাহর কাছে বেশি বেশি প্রার্থনা করা
অভাব থেকে মুক্ত থাকতে চাইলে, রিজিকে বরকত পেতে চাইলে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়ার বিকল্প নেই। যে কোনো বিষয়ে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করার কথা মহান আল্লাহ এভাবে বলেছেন-
وَ قَالَ رَبُّکُمُ ادۡعُوۡنِیۡۤ اَسۡتَجِبۡ لَکُمۡ ؕ اِنَّ الَّذِیۡنَ یَسۡتَکۡبِرُوۡنَ عَنۡ عِبَادَتِیۡ سَیَدۡخُلُوۡنَ جَهَنَّمَ دٰخِرِیۡنَ
‘তোমাদের প্রতিপালক বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। যারা অহংকারে আমার উপাসনায় বিমুখ, ওরা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা গাফির/মুমিনুন : আয়াত ৬০)
৯. অসহায়দের প্রতি সদয় আচরণ ও দান করা
হাদিস ৭:
অসাহয়ের প্রতি দান ও সদাচরণে এ তাগিদ দিয়েছেন প্রিয় নবি (ﷺ)- ‘দান করার কিছু যদি না থাকে তবে একটি খেজুরের অংশ দিয়ে হলেও দান করার মাধ্যমে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা কর।’
১০. ইবাদতের জন্য নিজেকে ব্যস্ত রাখা
আল্লাহ–তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ (সুরা ত্বহা, আয়াত: ১৩২)
হাদিস ৮:
আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ–তাআলা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি তোমার অন্তরকে খালি করো। আমি তোমার অন্তরকে অভাবমুক্ত হিসেবে পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার দরিদ্র্যের পথ দূর করে দেব। আর যদি তা না করো; আমি তোমার হাত (দুনিয়ার) ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেবো এবং তোমার অভাব মেটাব না।’ (তিরমিজি, হাদিস–২,৪৬৬; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪,১০৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ৮,৬৯৬)
১১. যে কোনো কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন খাবার খায় আর যদি বিসমিল্লাহ বলে; তবে শয়তান ওই খাবারে অংশ নিতে পারে না। যেটুতু খাবার আছে তা (পরিমাণে কম হলেও) তার জন্য কল্যাণ বয়ে আনে।
অনুরূপভাবে কেউ যদি ঘরে প্রবেশ করার সময় বিসমিল্লাহ বলে তখনও শয়তান তার সঙ্গে বাসায় ঢুকতে পারে না। এভাবে বান্দা যখন সব কাজ বিসমিল্লাহ বলে শুরু করে, তখন শয়তান সব কাজ থেকে মাহরুম হয়। আর আল্লাহ তাআলা সব কাজেই বরকত দান করেন।
১২. কুরআনের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানো
আল্লাহ তাআলা একাধিক আয়াতে বলেন-
> وَهَـذَا كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ مُبَارَكٌ فَاتَّبِعُوهُ وَاتَّقُواْ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ
‘এটি এমন একটি কিতাব, যা আমি অবতীর্ণ করেছি, খুব মঙ্গলময়, অতএব, এর অনুসরণ কর এবং ভয় কর; যাতে তোমরা করুণাপ্রাপ্ত হও।’ (সুরা আনআম : আয়াত ১৫৫)
> وَهَـذَا كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ مُبَارَكٌ مُّصَدِّقُ الَّذِي بَيْنَ يَدَيْهِ وَلِتُنذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا وَالَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالآخِرَةِ يُؤْمِنُونَ بِهِ وَهُمْ عَلَى صَلاَتِهِمْ يُحَافِظُونَ
‘এ কুরআন এমন কিতাব, যা আমি নাজিল করেছি; বরকতময়, আগের গ্রন্থের সত্যতা প্রমাণকারী এবং যাতে আপনি মক্কাবাসী ও পাশ্ববর্তীদেরকে ভয় প্রদর্শন করেন। যারা পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তার স্বীয় নামাজ সংরক্ষণ করে।’ (সুরা আনআম: আয়াত ৯২)
হাদিস ৯:
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা এ কিতাব (কুরআন) দিয়ে বহু মানুষকে (বরকতের মাধ্যমে) ওপরে ওঠাবেন। আবার বহু মানুষকে নিচে নামাবেন।’(মুসলিম)
১৩. সকালবেলা কাজ শুরু করা
হাদিস ১০:
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) দোয়া করেছেন-
اللَّهُمَّ بَارِكْ لِأُمَّتِي فِي بُكُورِهَا
হে আল্লাহ! আপনি আমার উম্মতকে সকালবেলা বরকত দান করবেন। অন্য বর্ণনায় এসেছে- তিনি বলেছেন, আমার উম্মতের জন্য সকালবেলার সময়টাতে বরকত দেয়া হয়েছে।
১৪. আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা
আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আর যে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না ।’ (সুরা সাদ, আয়াত: ৩৫)
হাদিস ১১:
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথার্থভাবে ভরসা রাখো। তিনি তোমাদের সেভাবে রিজিক দান করবেন, যেভাবে তিনি পাখিদের দান করে থাকেন। পাখিরা সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় (খালি পেটে) বাসা থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে বাসায় ফেরে।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২,৩৪৪; ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪,১৬৪)
১৫. সালামের ব্যাপক প্রচলন করা
পরিপূর্ণ, সুস্পষ্ট বিশুদ্ধ সালামের ব্যাপক প্রচলন করা বরকত লাভের অন্যতম মাধ্যম। পরিপূণ সালাম হলো-
اَلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَ رَحْمَةُ اللهِ وَ بَرَكَاتُهُ
উচ্চারণ : ‘আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।’
অর্থ : ‘আপনার উপর শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।’
ঠিক সালামের উত্তরদানকারী ব্যক্তিও ঠিক একই দোয়া করেন-
‘আপনার ওপরও শান্তি, রহমত ও বরকত নাজিল হোক।’