“আমি তখনো নবী ছিলাম যখন আদম (আ) দেহ এবং আত্মার (রুহের) মধ্যবর্তী ছিলেন।” এই হাদিসটির পর্যালোচনা :

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

আমি তখনো নবী ছিলাম যখন আদম (عليه السلام) দেহ এবং আত্মার (রুহের) মধ্যবর্তী ছিলেন।” এই হাদিসটির পর্যালোচনা :লেখক, গবেষক ও সংকলক : মাসুম বিল্লাহ সানি
ওহাবী সালাফীদের দ্বারা এ হাদিস কখনো জাল, কখনো দ্বয়ীফ বলে অপপ্রচার চলছে কারন ১টাই তারা রাসুল (ﷺ) এর প্রতি বিদ্বেশ পোষন করে তাই রাসুলের প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কিত হাদিসগুলোকে তারা পছন্দ করে না বলে জাল, জ্বয়ীফ বলে প্রচার করে।

হাদিসটির সুত্র :  সামান্য ভিন্ন রকম বর্ননাগুলো পাওয়া গেছে এই সকল সুত্রে কিন্তু মুল বিষয়বস্তু একই।

“আমি তখনও নবী ছিলাম,

“যখন আদম (عليه السلام) দেহ ও রুহের মধ্যবর্তী ছিল” অথবা,

“যখন আদম (عليه السلام) দেহ ও মাটির মধ্যে মিশ্রিত ছিল”

এক নজরে হাদিসটি বিভিন্ন সুত্র :

১ম সুত্র :

হযরত মাইসিরা আল ফজর (رضي الله عنه) এর সুত্রে যারা যারা বর্ননা করেছেন

১) ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله) : মুসনাদে আহমদ

২) ইমাম বুখারী (رحمة الله) : আত তারিখুল কবীর

৩) ইমাম ত্বাবারানী (رحمة الله)

৪) ইমাম হাকিম (رحمة الله)

৫) ইমাম বায়হাকী (رحمة الله)

৬) ইমাম আবু নু’আইম (رحمة الله)

২য় সুত্র :

হযরত আল-ইরবাদ্ব ইবনে সারিয়া (رضي الله عنه) ওনার সুত্রে বর্ননা করেছেন

১) ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله)

২) ইমাম হাকিম (رحمة الله)

৩) ইমাম বায়হাকী (رحمة الله)

৩য় সুত্র :

হযরত আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) ওনার সুত্রে বর্ননা করেছেন

১) ইমাম হাকিম (رحمة الله)

২) ইমাম বায়হাকী (رحمة الله)

৩) ইমাম আবু নু’আইম (رحمة الله)

৪র্থ সুত্র :

হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) ওনার সুত্রে বর্ননা করেছেন

১) ইমাম বাযযার (رحمة الله)

২) ইমাম তাবারানী (رحمة الله) : আল-আওসাত

৩) ইমাম আবু নু’আইম (رحمة الله) তিনি

ইমাম শাবী (رحمة الله) এর সনদে ➡ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে। 

৫ম সুত্র :

হযরত ওমর ইবনে খাত্তাব (رضي الله عنه) থেকে

১) ইমাম আবু নু’আইম (رحمة الله) : উক্ত হাদিসটি মুরসাল

২) ইমাম তাবারানী (رحمة الله)

৩) ইবনে কাসীর (رحمة الله)

৪) ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতী (رحمة الله)

৬ষ্ট সুত্র :

ইবনে আবুল জাদ’আ (رضي الله عنه) থেকে ইমাম ইবনে সা’দ (رحمة الله)

৭ম সুত্র :

হ্যরত মুত্বরিফ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আশ-শাখী (رضي الله عنه) থেকে ইমাম ইবনে সা’দ (رحمة الله)

৮ম সুত্র :

হযরত আমির (رضي الله عنه) থেকে ইমাম ইবনে সা’দ (رحمة الله)

সূত্রঃ হাফিজুল হাদিস (১লক্ষ হাদিসের হাফিজ) ইমাম জালালুদ্দিন সুয়ুতী (رحمة الله) এর বিখ্যাত কিতাব : খাসাইসুল কুবরা, খন্ড : ১, পৃষ্টা: ৩-৪, (প্রকাশনী : বইরুত, দারুল দারুল কিতাবিল আরাবী)

৯ম সুত্র :

হযরত জাবির (رضي الله عنه) থেকে ইমাম ইবনে সা’দ (رحمة الله)

১০ম সুত্র :

হযরত আব্দুল্লাহ বিন সাকীক (رضي الله عنه) থেকেঅনুরুপ বর্নিত [আদম (عليه السلام) যখন দেহ ও রুহের মধ্যবর্তী ছিল]

উপরের হাদিসগুলোকে আরো শক্তিশালী করে এই হাদিসটি :

“আদম (عليه السلام) সৃষ্টিরও প্রায় ১৪ হাজার বছর পুর্বে রাসুল (ﷺ) নুর হিসেবে বিদ্যমান ছিলেন ।”

✪ হাদিস ১:

▄▄▄▄▄▄▄▄

এ হাদিসটি হাযরাত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রা., আব্দুল্লাহ্ ইবনে সাক্বিক্ব, উমার বিন খাত্তাব রাদ্বীয়াল্লহু তাআ’লা আনহুম থেকেও বর্ণিত আছে।

হাযরাত মাইসিরা আল ফাজর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত; তিনি প্রিয়নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  ‘কে জিজ্ঞেস করেছিলেন:

আপনি কখন থেকে নাবী? প্রিয়নাবী রাসূলুন কারিম (صلى الله عليه و آله وسلم)  ইরশাদ করেন: ‘আদম যখন দেহ আর আত্মার মাঝে’ আমি তখনো নাবী ছিলাম।

তথ্যসূত্রঃ

[আলবানী; সিলসিলাতুল আহাদিস আস সাহিহাহ, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৪৭১, হাদিস ১৮৫৬, আল মারিফ লিন নাশর; রিয়াদ, সৌদিআরব।]

✪ হাদিস ২:

▄▄▄▄▄▄▄▄

আবু হুরায়রা (رضي الله عنه) থেকে বর্নিত সাহাবীগন জিজ্ঞেস করলেন , ”ইয়া রাসুলুল্লাহ (ﷺ) আপনে কখন নবী ছিলেন? রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, আমি তখনো নবী ছিলাম যখন আদম (عليه السلام) দেহ এবং রুহের মধ্যবর্তী ছিলেন।”

তথ্যসূত্রঃ

১.

সুনানে তিরমিযী; আল মানাকিব, পরিচ্ছেদ ফাজল আন নাবী (صلى الله عليه و آله وسلم) , খণ্ড ৫, পৃ., ৫৮৫, হাদিস ৩৬০৯;

২.

আহমাদ ইবনু হাম্বাল (رحمة الله); আল মুসনাদ, খণ্ড : ৪, ৫; পৃষ্ঠা ৬৬, ৫৯, হাদিস ২৩৬২০;

৩.

হাকিম (رحمة الله); আল মুস্তাদরাক, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৬৬৫-৬৬৬, হাদিস ৪২০৯-৪২১০;

৪.

ইবনু আবি শায়বাহ্ (رحمة الله); আল মুসান্নাফ, খণ্ড :৭, পৃষ্ঠা ৩৬৯, হাদিস ৩৬৫৫৩।

৫.

তাবরানী (رحمة الله); মা’জাম আল আওসাত, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ২৭২, হাদিস ৪১৭৫।

৬.

তাবরানী (رحمة الله); মা’জাম আল কাবীর, খণ্ড : ১২, পৃষ্ঠা ৯২, হাদিস ১২৫৭১।

৭.

আবু নাইম (رحمة الله); হিলইয়াতুল আউলিয়া, খণ্ড ৭, ৯, পৃষ্ঠা ১২২, ৫৩।

৮.

বুখারী (رحمة الله); তারিখ আল কাবীর, খণ্ড ৭, পৃষ্ঠা ৩৭৪, হাদিস ১৬০৬।

৯.

খালাল (رحمة الله); আস সূন্নাহ্, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৮৮, হাদিস ২০০। সূত্রটি সহীহ্।

১০.

ইবনু আবি ‘আসিম (رحمة الله); আস সূন্নাহ্, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৭৯, হাদিস ৪১১। এর সূত্র সহীহ্।

১১.

শাইবানী (رحمة الله); আহাদ ওয়াল মাসানী, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৩৪৭, হাদিস ২৯১৮।

১২.

আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ বিন হাম্বাল (رحمة الله); আস সূন্নাহ্, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩৯৮, হাদিস ৮৬৪। এর সূত্র সহীহ্।

১৩.

ইবনু সা’দ (رحمة الله); তাবাকাত আল কুবরা, খণ্ড ১, ৭; পৃষ্ঠা ১৪৮, ৬০।

১৪.

ইবনু হিব্বান (رحمة الله); সিক্বাত, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪৭।

১৫.

ইবনু ক্বানী (رحمة الله); মা’জাম আস সাহাবা, খণ্ড ২, ৩; পৃষ্ঠা ১২৭, ১২৯, হাদিস ৫৯১, ১১০৩।

১৬.

ইবনু খিয়াস (رحمة الله); তাবাকাত, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৫৯, ১২৫।

১৭.

মুকাদ্দাসী (رحمة الله); আহাদিস আল মুখতারাহ, খণ্ড, ৯, পৃষ্ঠা ১৪২, ১৪৩; হাদিস ১২৩-১২৪।

১৮.

আবু আল মাহাসীন (رحمة الله); মুতাসীর আল মুখতাসার, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১০।

১৯.

দায়লামী (رحمة الله); মুসনাদ আল ফিরদউস, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৮৪।

২০.

ইবনে আসাকীর (رحمة الله); তারিখে দামিষ্ক আল কাবীর, খণ্ড ২৬, ৪৫, পৃষ্ঠা ৩৮২, ৪৮৮-৪৮৯।

২১.

লিয়ালকালাইয়ী (رحمة الله); ‘ইতিকাদ আহলুস সূন্নাহ্, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৭৫৩, হাদিস ১৪০৩।

২২.

খতীব বাগদাদী (رحمة الله); তারিখে বাগদাদ; খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৭০, হাদিস ১০৩২।

২৩.

আসকালানী (رحمة الله); তাহজিব আত তাহজিব; খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ১৪৭, হাদিস ২৯০।

২৪.

আসকালানী (رحمة الله); আল আসাবাহ, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ২৩৯।

২৫.

আসকালানী (رحمة الله); তা’জিল আল মুনফি’আহ, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৫৪২, হাদিস ১৫১৮।

২৬.

ইবনে ‘আব্দুল বার (رحمة الله); আল ইস্তিয়াব, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১৪৮৮, হাদিস ২৫৮২।

২৭.

যাহাবী; সিয়ারু আল ‘আলাম আন নূবালা; খণ্ড ৭, ১১, পৃষ্ঠা ৩৮৪, ১১০। এই হাদিসটির সূত্র সহীহ্।

২৮.

জালাল উদ দ্বীন সুয়ূতি (رحمة الله); খাসাইস আল কুবরা; খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ১৮।

২৯.

জালাল উদ দ্বীন সুয়ূতি; আল হাওয়ী লিল ফাতাওয়া; খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১০০।

৩০.

ইবনু কাসীর; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩০৭, ৩২০-৩২১।

৩১.

জুরজানী (رحمة الله); তারিখে জুরজান; খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা ৩৯২, হাদিস ৬৫৩।

৩২.

ক্কুস্তালানী (رحمة الله); মাওয়াহিব আল লাদুন্নিয়া, খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা ৬০।

৩৩.

হাইসামী (رحمة الله); মাজমাউজ জাওয়ায়িদ, খণ্ড : ৮, পৃষ্ঠা ১২২;

৩৪.

আবু সা’দ আন নিশাবুরী (رحمة الله); শারাফ আল মুস্তাফা; খণ্ড : ১, পৃষ্ঠা ২৮৬। হাদিস ৭৫।

✪ হাদিস ৩:

▄▄▄▄▄▄▄▄

عن العرباض بن سارية الفزاري قال : سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول : ( إني عند الله مكتوب بخاتم النبيين وإن آدم لمنجدل في طينته (صحيح ابن حبان، كتاب التاريخ، باب من صفته صلى الله عليه و سلم وأخباره، رقم الحديث-৬৪০৪)

অনুবাদ-হযরত ইরবায বিন সারিয়্যা (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন-আমি রাসূল (ﷺ) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন-নিশ্চয় আমি আল্লাহ তাআলার কাছে সর্বশেষ নবী হিসেবে লিপিবদ্ধ ছিলাম তখন, যখন আদম (عليه السلام) মাটিতে মিশ্রিত ছিলেন। অপর সহিহ বর্ননায় আছে, যখন আদম (عليه السلام) রুহ ও দেহের মধ্যে ছিলেন।

তথ্যসূত্রঃ

●সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৬৪০৪,

●মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৭১৬৩,

●মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৪১৯৯,

●মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-১৪৫৫,

●শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৩২২২,

●মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদীস নং-৫৭৫৯,

●আল মু’জামুল কাবীর, হাদীস নং-৬৩১

✪ হাদিস ৪:

▄▄▄▄▄▄▄▄

عن عبد الله بن شقيق ؛ أن رجلا سأل النبي صلى الله عليه وسلم : متى كنت نبيا ؟ قال : كنت نبيا وآدم بين الروح والجسد (مصنف ابن ابى شيبة، كتاب المغازى، ما جاء في مبعث النبي صلى الله عليه وسلم، رقم الحديث-৩৭৭০৮)

অনুবাদ- আব্দুল্লাহ বিন শাকিক থেকে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) কে এক লোক প্রশ্ন করল-আপনি কখন থেকে নবী? তিনি বললেন-আমি তখন থেকেই নবী যখন আদম (عليه السلام) রুহ ও শরীরের মাঝামাঝি ছিলেন।

তথ্যসূত্রঃ

●মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৩৭৭০৮,

●মাশকিলুল আসার লিত তাহাবী, হাদীস নং-৫২২২,

●কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল 

●আফআল, হাদীস নং-৩১৯১৭,

●জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-১৫৮৩৫

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment