আবু বকর সিদ্দিক রাযিআল্লাহু আনহু।

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

এটা বিশ্বাসের বিষয় ভাই। এ বিষয়ে তাই, ইমামদের পথে থাকো। এ থেকে বিচ্যূত হয়ে পথভ্রষ্ট হয়ো না, প্রিয় ভাই। শুনো ইমামদের কথা-

১. ইমাম ত্বহাবী রহ.(ও.-৩২১ হি.) বলছেন, “রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর সমস্ত উম্মাতের মধ্যে সর্বাধিক মর্যাদাবান ও অগ্রগণ্য হিসেবে প্রথমতঃ আবু বাকার সিদ্দীক রা. কে খিলাফতের হক্বদার মানি।”(1)

(ইবনু আবিল ইযয র. কৃত ‘শরহু আক্বীদাতিত ত্বহাভিয়্যাহ’, পৃ.-৪৮০)

২. ইমাম আবুল হাসান আশ’আরী রহ. (ও.-৩২৪ হি.) বলছেন,

“(আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের) সবাই একমত যে, আশারায়ে মুবাশশারাহদের মধ্যে চার ইমাম সবচে উত্তম: আবু বাকার, তাঁরপর ওমর, তাঁরপর ওসমান এবং তাঁরপর আলী রিদওয়ানুল্লাহি ‘আলাইহিম।”(2)

(ইমাম আবুল হাসান আল আশআরী র. কৃত ‘রিসালাতু ইলা আহলিছ ছাগর’, পৃ.-২৯৯)

৩. ইমাম আবু বাকার কালাবাজী রহ.(ও.-৩৭৮ হি.) বলেন,

“আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত একমত যে, নিশ্চয় রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ আবু বাকার ও ওমার রা.।”(3)

(ইমাম কালাবাজী র. কৃত ‘বাহরুল ফাওয়াইদ’, ১/২৭৯)

৪. আব্দুল গনী আল মাকদিসী র.(ও.-৬০০ হি.) বলেন, “আহলুস সুন্নাহর আক্বীদাসমূহের একটি আক্বীদা হচ্ছে, নিশ্চয় উম্মাতে মুহাম্মদী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাঝে সর্বাধিক মর্যাদাবান আবু বাকার সিদ্দীক রা.। সাধারণভাবে সর্বাধিক মর্যাদাবান সাহাবী তিনিই।”(4)

(হাফিয আব্দুল গনী আল মাকদিসী র. কৃত ‘শরহু আক্বীদাহ’, পৃ.-৩৫০)

৫. ইমাম নববী র.(ও.-৬৭৬ হি.) বলেন, “আহলুস সুন্নাহ একমত যে, নিশ্চয় উম্মতের মধ্যে সর্বাধিক মর্যাদাবান আবু বাকার, তারপর উমার রা.।”(5)

(ইমাম নববী র. কৃত ‘শরহু সহীহ মুসলিম’,৫/১৪৮)

৬. ইমাম জালালুদ্দীন আস সুয়ূতী র.(ও.-৯১১ হি.) বলেন, “আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের ইজমা যে, রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর সমস্ত মানুষের মধ্যে সর্বাধিক মর্যাদাবান হযরত আবু বাকার সিদ্দীক রা.। তারপর হযরত ওমার রা., তারপর হযরত ওসমান গনী রা., তারপর হযরত সাইয়িদুনা আলী রা.।”(6)

(ইমাম সুয়ূতী র. কৃত ‘তারীখুল খুলাফা’, পৃ.-৩৮)

## অনেকে বলেন, ত্বরীকতের দৃষ্টিতে সাইয়্যেদী মাওলায়ী আলী রা. শ্রেষ্ঠ। এ বিষয়ে অভাজন কিছু বলছি না। জাস্ট ত্বরীকতের ইমামদের উক্তিই যথেষ্ট-

১. সাইয়্যিদ আহমাদ রিফায়ী র.(ও.-৫৭৮ হি.) বলেন,

“সর্বাধক মর্যাদাবান সাহাবী সাইয়্যিদুনা আবু বাকার সিদ্দীক রা., তারপর সাইয়্যিদুনা ওমার ফারুক রা., তারপর সাইয়্যিদুনা ওসমান যিন নুরাইন রা., তারপর আলী আল মুরতাদ্বা কার্রামাল্লাহু ওয়াজহাহু ওয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু।”(7)

(সাইয়্যিদ আহমাদ রিফায়ী র. কৃত ‘আল বুরহানুল মুয়াইআদ’, পৃ.-২৩)

২. হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নক্সবন্দ র.(ও.-৭৯১ হি.) বলেন,

“আকাবেরে আউলিয়াদের ইজমা যে, মা’রিফাত ও বিলায়াতের মধ্যে আবু বাকার সিদ্দীক রা. এর কাছে কেউ পৌঁছেনি।”(8)

(‘আফদ্বালিয়্যাতে সিদ্দীকে আকবার’ গ্রন্থে ‘আর রাঈহাতুল আনবরিয়্যাহ’ এর পৃ.-২৫ সূত্রে)

৩. সাইয়্যিদ আলী ইবন ওসমান হাজভিরী দাতা গঞ্জ বখশ র. (ও.-৪৬৫ হি.) বলেন, “সাহাবায়ে কেরামদের মধ্যে শাইখুল ইসলাম, নবীদের পর সর্বোত্তম সৃষ্টি, নবীর খলীফা, দুনিয়াত্যাগীদের ইমাম ও সাইয়্যেদ, নির্জনবাসীদের পেশওয়া, নফসের বিপদাপদ দূরকারীদের একজন হচ্ছেন আবু বাকার আব্দুল্লাহ বিন ওসমান আস সিদ্দীক রা.।”(9)

(দাতা আলী হাজভিরী র. কৃত ‘কাশফুল মাহজূফ’, পৃ.-৪২)

৪. আবু লাইস সমরকন্দী র. বলেন,

“তারা একমত যে, নবীর পরে এই উম্মতের সর্বোত্তম ব্যক্তি আবু বাকার, তারপর ওমার রা.।”(10)

(আবু লাইস সমরকন্দী কৃত “বুস্তানুল আরিফীন”, পৃ.-১৮৬)

৫. সানাদুল আরাবি ওয়াল আজাম, নূরুস সাক্বালাইন, গাউসুল আজম মহীউদ্দীন আব্দুল কাদীর জিলানী আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী রা.(ও.-৫৬১ হি.) বলেন,

“চার খলিফার মধ্যে শ্রেষ্ঠতম আবু বাকার, তারপর ওমার, তারপর ওসমান, তারপর আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম।”(11)

(হুযুর গাউছেপাক কৃত ‘আল গুনিয়াতু লি ত্বলিবি ত্বরিক্বিল হক্বি আয্যা ওয়া জাল্লা’, পৃ.-১১০)

হুযুর গাউছেপাকের পর আরো কারো উক্তি দিতে হবে বলে বোধ হচ্ছে না। তবু যদি না মানো আর বিশ্বাসের সংস্কার না করো তো, ক্ষতি তোমারই। উঁহু, ছোটখাটো ক্ষতি নয়। বেশ বড়সড়ো ক্ষতিই। যেমনটা জানিয়েছেন,

১. মুল্লা আলী ক্বারী র.। তিনি বলেন,

“গোপন নেই যে, নিশ্চয় হযরত আবু বাকার ও উমার রা. এর উপরে হযরত আলী রা. কে মর্যাদা দেয়াটা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের খেলাফ। এটাই সমস্ত আকাবেরদের মত।”(12)

(মুল্লা আলী ক্বারী র. কৃত ‘শরহু ফিকহি আকবার’, পৃ.-৬৪)

২. ইমাম ইবন হুমাম র.। তিনি বলেন,

“নিশ্চয় যে মাওলা আলী রা. কে তিনজনের উপর(আবু বাকার, উমার, ওসমান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমের উপর) মর্যাদা দেবে সে বিদআতী।”(13)

(ইবন হুমাম র. কৃত ‘ফাতহুল কাদীর’,১/৩৫০)

আর জানোই তো, বিশ্বাসগত বিদআতীর পেছনে নামায পড়া মাকরূহে তাহরিমী।

——————

সাধারণ পাঠকদের জন্য এতটুকুই। বাকীটা কেবল আলিমদের জন্য। এ অংশে আছে উপর্যুক্ত উক্তিগুলোর মূল রূপ।

——————

1. “وتثبت الخلافة بعد رسول الله صلى الله عليه وسلم اولا لابي بكر الصديق رضي الله عنه، تفضيلا له و تقديما على جميع الامة”

2.”وخير العشرة الأئمة الاربعة ابو بكر، ثم عمر، ثم عثمان، ثم علي- رضوان الله عليهم”

3. “اجمع اهل السنة والجامعة ان خير الناس بعد رسول الله صلى الله عليه وسلم ابا بكر ثم عمر”

4. “هذا من جملة اعتقاد اهل السنة: اعتقاد ان افضل امة محمد صلى الله عليه وسلم ابو بكر صديق فهو افضل الصحابة على الاطلاق”

5. “اتفق اهل السنة ان افضلهم ابو بكر و عمر”

6. “اجمع أهل السنة أن أفضل الناس -بعد رسول الله عليه الصلاة والسلام- أبو بكر، ثم عمر، ثم عثمان، ثم علي،…”

7. “افضل الصحابة سيدنا ابو بكر صديق ثم سيدنا عمر فاروق ثم سيدنا عثمان ذو النوعين ثم علي المرتضى كرم الله وجهه و رضي الله عنه”

8. “اکابر اولیاء کا اجماع ہے کہ معرفت و ولایت میی صدیق رضی اللہ عنہ کو کوئی نہیں پہنچا”

9. “منہم: شیخ الاسلام، و بعد از انبیاء بھترین انام، کہ خلیفہ پیغمبر بود و امام و سید اہل تجرید، و پیشواے ارباب تفرید و از آفات نفسانی بعید، ابوبکر عبد اللہ ابن عثمان، الصدیق، رضی اللہ عنہ.”

10. “اجمعوا ان خير هذه الامة بعد نبيها ابو بكر ثم عمر رضي الله عنهما”

11. “وافضل الاربعة ابو بكر ثم عمر ثم عثمان ثم علي رضي الله عنهم”

12. “ولا يخفى ان تقديم علي رضي الله عنه على الشيخين مخالف لمذهب اهل السنة والجامعة على ما عليه جميع السلف.”

13. “ان من فضل عليا على الثلاثة فمبتدع”

~ফা লা ক্ব

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment