কোরআন ও হাদিসের আলোকে-হক্কানী আলেমের আলামত
রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, ‘‘তোমরা কিরূপ লোক থেকে তোমাদের দ্বীন (ইলম বা নছীহত) গ্রহণ করছো, তা ভালোরূপে লক্ষ করো।’’ (মুসলিম, তিরমিযী, মেশকাত, শরহে নববী, মায়ারেফুস সুনান, মেরকাত, লুমাত, আশয়াতুল লুমাত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ, মোজাহেরে হক্ব) শরীয়তের দৃষ্টিতে আলেম ঐ ব্যক্তিই যিনি ইলমে ফিকাহ ও ইলমে তাসাউফের অধিকারী এবং আল্লাহ্’পাককে ভয় করেন এবং ইলম অনুযায়ী আমল করেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্’পাক পবিত্র কালামে পাকে এরশাদ করেন, ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্’পাকের বান্দাদের মধ্য হতে শুধুমাত্র আলেমগণই আল্লাহ্’পাককে ভয় করে।’’ (সূরা ফাতির-২৮) এ আয়াতের তাফসীর সম্পর্কে হাম্বলী মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম, ইমামুল আইম্মা, শায়খুল মুহাদ্দেসীন হযরত আহমদ বিন হাম্বল (রঃ) বলেন, ‘‘যার ভিতর যত বেশী খোদাভীতি রয়েছে তিনি ততবড় আলেম।’’ এ আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ ‘‘তাফসীর খোলাছায়’’ উল্লেখ আছে যে, ‘‘শুধুমাত্র কিতাবসমূহ পাঠকারীদেরকে বুঝানো হয়নি। বরং কোরআন শরীফে বর্ণিত আলেম তাঁরাই যারা মহান আল্লাহ’ পাক-এর জাত ও অসীম গৌরবময় ছিফাতসমূহে ঈমান ও মারেফতের নূরের আলোকে অবলোকন করেছেন। হুজুর (সাঃ) এর প্রিয়তম সাহাবীগণ (রাঃ) ও তাবেয়ীনগণ, তাবে তাবেয়ীনগণ এবং ওলি আল্লাহ্ গণ সর্বোচ্চ স্তরের উপকারী ইলমের অধিকারী ছিলেন। অর্থাৎ তাঁরাই কোরআন শরীফে বর্ণিত প্রকৃত আলেম ছিলেন। উল্লেখিত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত আলেম, ইমামুল মুফাস্সিরীন হযরত ইবনে কাছীর (রহঃ) তাঁর প্রসিদ্ধ ‘‘তাফসীরে ইবনে কাছীরে’’ উল্লেখ করেন যে, ‘‘হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি অধিক হাদীস জানে সে ব্যক্তি আলেম নয়। বরং যার মধ্যে আল্লাহ্’র ভীতি অধিক সে ব্যক্তিই আলেম।’’ আর আহমদ সবিন ছালেহ্ মিছরী (রহঃ) বলেন, অধিক রেওয়াত শিক্ষা করলেই আলেম হওয়া যায় না। মূলতঃ ইলম হচ্ছে নূর বা জ্যোতিঃস্বরূপ। আল্লাহ্’পাক তা মানুষের অন্তকরণে দান করেন।’’ উক্ত ‘‘তাফসীরে ইবনে কাছীরে’’ উল্লেখিত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় আরো উল্লেখ আছে যে, হযরত ইমাম সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) বলেন, ‘‘আলেমগণ তিনভাগে বিভক্ত। যথাঃ-(১) আলেম বিল্লাহ্ অর্থাৎ যারা শুধু আল্লাহ্’পাককেই জানেন। কিন্তু তাঁর হুকুম-আহকাম সম্পর্কে অজ্ঞ। (২) আলেম বিআমরিল্লাহ্ অর্থাৎ যারা শুধু হুকুম-আহকাম সম্পর্কে জানেন। কিন্তু আল্লাহ্’পাক সম্পর্কে অজ্ঞ বা আল্লাহ্ ভীতি নেই। (৩) আলেম বিল্লাহ্ ওয়া বিআমরিল্লাহ্ অর্থাৎ যারা আল্লাহ্’পাক ও তাঁর শরীয়তের হুকুম-আহকাম, ফারায়েজ সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত এবং আল্লাহ্’পাককে ভয় করেন। (তাঁরাই হাক্বীকী বা প্রকৃত আলেম) আর হাক্বীকী বা প্রকৃত আলেম সম্পকে রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেছেন, ‘‘নিশ্চয়ই আলেমগণ নবী (আঃ)-গণের ওয়ারিশ। আর নিশ্চয়ই নবী (আঃ)-গণ কোন দিনার-দিরহাম রেখে যাননি। বরং ইলম রেখে গেছেন। (তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ, আহমদ, মেশকাত, মায়ারেফুস সুনান, সুনান উরফুশ শাযী, বজলুল মাযহুদ, মেরকাত, লুময়াত, আশায়াতুল লুময়াত, শরহুত্ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ, মোযাহেরে হক্ব) উল্লেখ্য যে, নবী-রাসূলগণ ওয়ারিশ স্বত্ব হিসেবে দু’প্রকার ইলম রেখে গেছেন। অর্থাৎ ইলমে ফিকাহ ও ইলমে তাসাউফ। এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে, … Read More